#ভালোবাসি_হয়নি_বলা
#লেখকঃmahin_al_islam
#পর্বঃ৩৬
মাহিনঃ আরে আম্মু কি বলতেছো আমি তো মাহিন
আম্মুঃ না তুই আমার ছেলে হতেই পারিস না।।
মাহিনঃ আরে আমিতো মজা করতে ছিলাম তুমি আমার মজা বুঝনা তুমি তো দেখতে পাচ্ছ আমি হেসে হেসে কথা বলতেছি সিরিয়াস মুডে না।
আম্মুঃ এখন যদি তুমি বিয়ে করতে চাস তাহলে আমি তোর বিয়েটা করাবো না কারন আমি এই বিয়েটা ক্যানসেল করবো
মাহিনঃ আরে এ সব কি বলতেছো আম্মু প্লিজ ক্ষমা করে দাও আসলে আমি চাইছিলাম যে তোমার সাথে একটু মজা করি কিন্তু তুমি সিরিয়াস হয়ে গেছো বুঝতে পারিনি।।।
আম্মুঃ তোর মজা তোর কাছেই রেখে দে আমাকে দেখাতে আসবি না আমি বলতেছি তো বিয়েটা ক্যানসেল করে দেবো।।।
মাহিনঃ আম্মু না-না প্লিজ প্লিজ তোমার পায়ে পড়তেছি আর কখন এরকম করবো না।।
ছুটকিঃ আম্মু বজ্জাত টার এইবার শিক্ষা হয়েছে শাস্তি দেওয়া ঠিক হবেনা এখন তাড়াতাড়ি ওকে নিয়ে চলো
তারপর আমাকে নিয়ে গিয়ে একটা ছোট্ট স্টেজের উপর বসিয়ে দিল
আমি চারিদিকে তাকিয়ে দেখি বাসায় মেহমান দিয়ে ভর্তি এত তাড়াতাড়ি এত মেহমান আসবে কল্পনাও করতে পারিনি।।
আমি বসা মাত্রই একে একে সবাই হলুদ আমার মুখে মাখিয়ে দেওয়া শুরু করলো।।।
দাদি ভাবি নানীরা মজা করে তো আমার সম্পূর্ণ মুখে হলুদ মেখে একদম শেষ করে দিচ্ছে।।।
এত কষ্ট জানলে কখনই অনুষ্ঠান করে বিয়ে করতাম না।।
এত মানুষ বসে থাকতে থাকতে আমার কোমর ব্যাথা হয়ে গেছে।।।
বেশ কিছুক্ষণ পর হলুদের অনুষ্ঠান শেষ
এইদিকে,,,
আম্মুঃ সবাই এখন খেতে আসো
তারপর আমরা সবাই খেতে গেলাম খাওয়া দাওয়া শেষ করে,,,
সবাই বসে আড্ডা দিতে লাগলাম আড্ডা দিতে দিতে কখন যে রাত হয়ে গেছে
সেই দিকে কারণে কোন খেয়াল নেই কারণ বিয়ে বাড়ি বলে কথা কত কি করবে কালকে সবাই প্লান করতেছে।।
ওদের প্ল্যান শুনে যা বুঝলাম কালকে ওনার অবস্থা কাহিল।।
এদের কথা শুনে আমার কিছুটা হিংসে হচ্ছে কারণ আমার বরের সাথে মেয়েরা কি কি করবে কেমন জানি লাগতাছে কিন্তু বিয়ে বাড়ি বলে কথা তারা তো একটু মজা করবে
তারপর সেদিনের মত আড্ডা শেষ করে যে যার রুমে চলে গেলাম
আজকে আরো কারো নির্দিষ্ট রুম নেই যে যেখানে পাচ্ছে সেখানে ঘুমিয়ে পড়তেছি
আমি তো আমার রুমে গিয়ে অবাক কারণ আমার রুমে বিছানায় ছোট বাচ্চা পোলাপাইন দিয়ে ভর্তি
এখন আমি ঘুমাবো কোথায়
আমিও কম কিসের বিছানার মাঝখানে কয়েকটা বাচ্চাকে তুলে বালিশের ঐদিকে শোয়াই দিলাম এবং আমিও মাঝখানে গুটিসুটি হয়ে ছোট বাচ্চাদের মত শুয়ে পড়লাম
উফফফ কি যন্ত্রণা রে বাবা একটুও নড়তে পারতাছিনা এদিক ওদিক হতে পারতেছি না কি অবস্থা
ধুর এইভাবে কেউ কি বিয়ে করে আমি আগে যদি জানতাম তাহলে বিয়ে করতাম না কি জালারে বাবারে একটুও নড়তে পারতাছিনা
উফফফ আম্মু তোমার মেয়ে শেষ গায়ে ব্যাথা হয়ে গেল একটুও নড়তে পারতাছিনা এদিক থেকে ওদিক হলেই কারো না কারো উপরে চলে যাই
অনেক কষ্টে ঘুমানোর চেষ্টা করতেছি কিন্তু ঘুম বাবাজি চোখে ধরা দিচ্ছে না ?
এইদিকে,,,,,
মাহিনঃ এই ছুটকি
ছুটকিঃ কি হইছে এইরকম বলদ গুলোর মতো চিল্লাচ্ছে কেন
মাহিনঃ দেখ কথা ঠিক মতন বল বলতেছি নইলে কি অবস্থা করব সেটা নিজেও জানিনা
ছুটকিঃ তুই আমার কিছুই করতে পারবিনা একটা কথা ভেবে দেখিস আমার জন্যই কিন্তু তুই বিয়েটা করতে পারতেছি নয়তো আম্মু বিয়ে টা ক্যানসেল করে দিত
মাহিনঃ বললেই হলো বিয়ে ক্যানসেল করে দেবে।
ছুটকিঃ তুই কি দেখতে চাস আমার পাওয়ার কতটা এক্ষুনি তোর বিয়ে ক্যানসেল করে দেবো এখন যদি আমার পাওনাটা আমি না পাই।।
মাহিনঃ তোর আবার কিসের পাওনা ?
ছুটকিঃ বারে তুই বিয়ে করতে যাচ্ছিস অথচ তোর ছোট বোনকে কিছু কিনে দিলি না তার বকসিস দিচ্ছিস না ব্যাপার কি এতো কিপটে কেন তুই???
মাহিনঃ দেখ আমি কোনো তোকে টাকা দিতে পারবোনা।।
ছুটকিঃ ওকে দেখা যাবে টাকা না দিয়ে কই যাস আমিও সময়মতো টাকাটা তুলে নেব।।।
মাহিনঃ আচ্ছা দেখা যাবে তুই কিভাবে টাকাটা নিতে পারি আর শোন যে জন্য তোকে ডাক দিলাম।।।
ছুটকিঃ বল শুনতেছি আমার কান খোলাই আছে।।
মাহিনঃ কালকে কখন আমরা মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেব???
ছুটকিঃ কেন বউকে ছাড়া থাকতে ইচ্ছা করতেছে না তাই তো???
মাহিনঃ দেখ উলটাপালটা কোন রকম কথা বলবি না চুপচাপ যেটা বলছি সেটার উত্তর দিয়ে দে
ছুটকিঃ আমি বলতে পারব না।।
বলেই ছুটকি দৌড়ে দৌড়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল আমিও হতাশ হয়ে
আমার রুমে গিয়ে হাত-পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম
পরের দিন সকাল বেলা ?
উফফফ আমার উপরে এতো বাড়ি- লাগতেছে কেন???
ধুর আর ঘুমিয়ে থাকতে পারলাম না ঘুম বাবাজি উধাও হয়ে গেল চোখ থেকে চোখ দুটো খুলে তাকিয়ে দেখি
সবগুলা পিচ্চি পোলাপাইন আমাকে বালিশ বানিয়ে আমার ওপরে শুয়ে আছে
শেষমেষ এটাও দেখার বাকি ছিল
পিচ্চি পোলাপান গুলো আমার দিকে তাকিয়ে হাহা হাহা করে হাসি দিতে লাগলো
আমিঃ এই পিচ্চি রা তোদেরকে কে বলছিল ওই রুমে থাকতে
একটা পিচ্চি ঃ আমাদের এখানে কেউ থাকতে বলেনি আমরা খেলতে খেলতে এই রুমে এসে দেখি রুমটা অনেক সুন্দর তাই সবাই বুদ্ধি করলাম আজকে রাতে আমরা এখানেই থাকবো তাই সবাই শুয়ে পড়ছি
আমিঃ তাই বলে তোমরা সবাই মিলে আমার বারোটা বাজিয়ে দিলে,,, আজকে আমার বিয়ে আমার বর আমাকে পিটাইবে। আমি যদি তার সাথে গল্প না করি।। আজকে রাতে তো ঘুম হলোই না আর বিয়ে বলে কথা সারাদিন তো আমার উপর দিয়ে কম ধকল যাবে না।। রাতে তো খুব ক্লান্ত থাকব ঘুমিয়ে পড়বো তার ওপর আজকে একটু ঘুমাইতে চাইলাম তোমাদের জন্যে হলো না এখন আমার কি হবে???
আর এক পিচ্ছি: কিন্তু আমাদের কিছুই করার নেই কারণ রুমটা এত সুন্দর ছিল যে মনটা মানতে চাচ্ছিল না তাই ইচ্ছা করেই এখানে ঘুমিয়ে পড়ছি এলোমেলো হয় ??
আমিঃ অরে পিচ্ছির দল
বলেই ওদের ধরতে গেলে ও দৌড়ে পালিয়ে গেল রুম থেকে বাহির হয়ে গেল
আমি ওদের কান্ড দেখে হাসতে হাসতে শেষ কেউ কেউ আবার মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেল।।
বাহিরে সবাই অনেক আনন্দ করতেছে কিন্তু আমি রুম থেকে বাইর হইতে পারতাছিনা লজ্জা লাগতেছে আমি রুমের ভিতর বসে আছি আমার কাজিন গুলো আমার সাথে বসে সবাই মিলে আড্ডা দিতাছি নানা ধরনের কথা
অনিঃ কিরে তাহলে তো তোর আজ থেকে মিশন শুরু হতে যাচ্ছে??
আমিঃ চুপ থাক আর কথা বলবি না লজ্জা লাগে না তোর
শিলাঃ ইসসস কি লজ্জাবতী লাজুকলতা রে তাতে মনে হয় কিছুই করবে না ?
আমিঃ দেখতে একদম ভালো হবে না বলতেছি চুপ থাক।।।
অনিঃ দেখিস আজকে রাতে তোর আবার
আমিঃ অই চুপ?
শিলাঃ আজকে হয়তো জিজু দেখ সারারাত ঘুমাতে দেবেনা কি কি যে করবে সেটা তুই ভালো জানিস ??
আমিঃ চুপ করবি তোরা নাকি ঘর থেকে বাহির করে দেব ?
অনিঃ মুখে তো ঠিকিই বলতেছিস কিন্তু মন থেকে যে তুই কি চাচ্ছিস সেটা তো তোর মুখ দেখেই বুঝতে পারতেছি ??
আমিঃ এতই যদি তোর বিয়ে করার শখ থাকে তো আঙ্কেল আন্টি কে বলে দে তোর বিয়ে দিবে তুই তোর স্বামির সাথে গিয়ে সবকিছু করে নে ?
অনিঃ ইসসস আমার কত ইচ্ছা ছিল স্বামীর বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়বো কিন্তু বাসার লোক সেটা বুঝতেছেনা রে ??
আমিঃ হাহাহাহাহহা
শিলাঃ হাহাহহা
অনিঃ থাক আর বুঝতে হবে না এখন পার্লার থেকে মানুষজন আসবে তুই গোসলটা সেরে নে সাজুগুজু করতে হবে তোকে।।
আমিঃ এইতো আমার কেবল শুরু যন্ত্রনা ??
অনিঃ একটু কষ্ট করো রাতের সবকিছু পুষিয়ে দেবে জিজু।।।
আমিঃ অই কুত্তি চুপ থাক।।
অনিঃ ☺☺☺☺
চলবে……….
