অবশেষে তোমাকে পাওয়া ১৯

0
410

#অবশেষে_তোমাকে_পাওয়া
#পর্ব_উনিশ
#তারা ইসলাম
মারিয়া বিষন্ন মনে জানালে দিয়ে আকাশ দেখতে ব্যস্ত।তার আজ খুব মন খারাপ”তার এইরকম অবস্থায় তার পাশে কেউ নেই”না নেই তার হাসবেন্ড আমান”আর না আছে প্রিয় বান্ধবি নূর।তার নূরের প্রতি প্রচুর অভিমান হলো কারণ সে কেমন জানি বদলে গেলো হুট করে।

“মারিয়া মনে মনে ভাবলো- নূর তো এমন ছিলো না!তাহলে কি এমন হলো যে সে এভাবে বদলে গেলো?আমার এই অবস্থা যেনেও সে আমার পাশে না থেকে ভাইয়ার কাছে চলে গেলো?আর তার ফোনও বন্ধ!মারিয়া ঠিক করলো নূর ফিরে আসলে তার সাথে আর কথা বলবে না।এসব ভাবতেই মারিয়ার চোখে পানি চলে আসলো!তবে চোখের পানি একহাত দিয়ে মুছে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো কারণ এখন তার মায়ের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।এসময়ে মাকেই বেশি মনে পরে তার।
—————————
দেখ রুদ্র বা*চ্ছা*মো করিস না।এত জেদ,এত রাগ ভালো না,সম্পর্ক ঠিকিয়ে রাখতে হলে অনেক ত্যাগ করতে হয়।নূর বললো সে মু’ক্তি চাই আর তুই দিয়ে দি’লি?সে তো অভিমান করে বলেছে”তুই তার অভিমান না ভাঙ্গিয়ে আরও রাগ করে সবশেষ করে চলে এলি?
আচ্ছা তুই কি সত্যি নূরকে ভালোবেসেছিস?

“আমানের কথা শুনে রুদ্রর রাগ হলো তাই এক-প্রকার রাগ নিয়েই বললো- ওর জন্য কি তুই আমার সাথে ঝগড়া করবি?শুধু আমার দোষটাই তোর চোখে পরলো?বাহ বাহ।সে মু’ক্তি চেয়েছিলো আমি না।সে আমাকে কি বলেছে জানিস? বলেই রুদ্র সেদিনের সব ঘটনা খুলে বললো আমানকে।

“রুদ্রর সব কথা শুনে আমান শান্ত গলায় বললো- নূর’তো ভুল কিছু বলে’নি।আসলেই তো তুই মেয়েটাকে বুঝিস’নি পুরোপুরি ভাবে!একদিন ঠিক বুঝতে পারবি!কি জানিস ছোটবেলা থেকেই তুই “আত্ন-জেদি” সব-সময় নিজে যেটা চাস,নিজে যেটা বলিস,ওইটাই করিস ওইটাই শুনিস।কিন্তু রুদ্র এটা ঠিক নই।নূর তোর ওয়াইফ কাজের লোক নই।তুই একদিন তোর ভুল বুঝতে পারবি কিন্তু সেদিন যেন দেরি হয়ে না যায়।আর আমি কিছু শুনতে চাই’না নূরকে যেভাবে পারিস সেভাবে মানিয়ে নি’বি।যদি মানাতে না পারিস আমাকে বলিস?আমি তোকে কিছু মুভি সিলেক্ট কিরে দিবো!ওগুলা দেখে যদি কিছু শিখতে পারিস।যদি একটু প্রেমিক পুরুষ হতে পারিস।

“আমানের কথা রুদ্র থমথম খেয়ে গেলো তাই অভিমানি গলায় বললো- তুই আমার ভাই নাকি নূরের।হ্যা সব এখন আমার দোষ!নূরের কোনো দোষ নেই।আর ওকে আমি কোনো মানিয়ে-টানিয়ে নিতে পারবো না ব্যস।আমি অতটুক ছ্যাঁ*চড়া নই।

“রুদ্রর কথা শুনে আমান নিজের কপালে চা*প*ড় মে’রে বললো- রুদ্র আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে তোর মতো একটা ছেলে নূরের মতো আলাভোলা মেয়েকে ভালোবাসে।দেখ রুদ্র এত ইগো ভালো না আমি বার বার বলছি নূর শুধুমাত্র তোর উপর অভিমান করে আছে তাই যত-তাড়াতাড়ি পারিস ওকে আবারো নিজের করে’নে

“রুদ্র মনে মনে ভাবলো- তাই তো আমান ভুল কিছু বলে’নি।সে নিজেই তো সেদিন ফোনে নূরের সাথে ‘গেঁয়ো’ আচরণ+ব্যবহার করেছিলো।তবে রুদ্র চোখ মুখ শক্ত করে মুখে বললো- সে এখন আমাকে চাই’না।

“আমান এবার রেগে রুদ্রর কলার ধরে বি’চ্ছি’রি কয়েক’টা গা’লি দিয়ে বললো- ব্যা’টা নিজের ভুল কখনো বুঝতে পারিস’না তুই!তোর এখানে ৯৯%দোষ আছে বুঝেছিস।আমি শেষবারের মতো বলছি নূরকে মানিয়ে নেয়।একবার তো নিজের চরিএ থেকে বের হয়ে প্রেমিক পুরুষ হয়ে দেখা নূর নাচতে নাচতে চলে আসবে।বিয়ের পর নাহয় একটু অন্য-রকম প্রেম শুরু করবি তোরা।

“রুদ্র চোখ মুখ কুঁচকে বললো- এসব আমাকে দিয়ে হবে না।আর নূর কোথায় আমি জানিও না সে এখানে কেন এসেছে সেটাও জানি না?প্রেমিক পুরুষ মাই ফু’ট।

“আমান এবার আরও দিগুন রেগে রুদ্রকে পেটে হাটু দিয়ে আস্তে করে মে’রে বললো- শা*লা এই জন্যই কলেজ লাইফ থেকে তোর কোনো গ*ফ ঠিকতো না।আর হ্যা নূর অন্য কারোর নূরময়ী হওয়ার আগে তোর খাঁচায় বন্দি করে রাখ।নাহলে দেখা যাবে সে উড়ান দিলো!এখনো সময় আছে।

“আর তোর যে এত ইগো একদিন দেখবি তোর এই ইগো ভেঙ্গে গুড়ে যাবে মিলিয়ে নিস।তুই ভয়ংকর প্রমিক পুরুষও হবি!সেদিন দেখবি কি নাচ নাচি আমি!বলেই রুদ্রর হোটেলের রুম ত্যাগ করলো সে।

“আমান যেতেই রুদ্র হু-হা করে হেসে উঠলো আর মনে মনে বললো- রুদ্র আর যায় হোক কখনো প্রেমিক পুরুষ হবে না।তবে কিছু একটা মনে পরতে মনে মনে বললো- নূর যেখানেই থাকুক না কেন!সে ঘুরেফিরে আমার খাঁচায় বন্দি হবে।কারণ আমাদের মাঝে যায় হয়ে যাক সে শুধু আমার আমারি থাকবে।সে আমার ভালোবাসা+বউ!এখন হয়তো আমাদের মধ্যে মান-অভিমান আছে তবে আশা করি আগামীতে তা থাকবে না।সে আবারো আমার কাছে ফিরবে হয় নিজ ইচ্ছা না হয় জোর করে ফে’রাবো।রুদ্র আরও ঠান্ডা মাথায় ভাবলো আমানের কথা তারপর ঠিক করলো সে নূরকে খুঁজবে আর অবশ্যই স্যরি বলবে।আসলেই আমান ছাড়া কেউ তাকে পুরোপুরি ভাবে বুঝতে পারে’না।আর না পারে সমস্যার সমাধান দিতে।

“তারপর রুদ্র হটাৎ নূরের কথা চিন্তা করতেই তার মন খারাপ হয়ে গেলো।নূরকে আসলেই সে মিস করছে!সে অবশ্য একটু হলেও বুঝতে পারছে যে তার দোষ কিন্তু ওই যে ‘ইগো’বলেই রুদ্র দীর্ঘশ্বাস ফে’ললো।
———————————-
এখন রোদ একটু কম পরছে”বিকাল যে হয়েছে”আর আমি ঘেমে-নেয়ে একাকার হয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করছি কাঁধে ব্যাগ নিয়ে।কারণ এখন সে এলাকার মধ্যে আরেক’টা জায়গায় এসেছি।এখানে একবারো আসা হয়’নি!আসার কারণ আম্মুর খুঁজ পাওয়া!কিন্তু কোনো ভাবেই কেউ বলতে পারছেন না শায়লা খাতুন নামে কেউ এই এলাকায় থাকে কি’না।

~~রুদ্র ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের সাথে করে আনা গাড়ির উপর বসে পরলো।কোমড়ে এক হাত দেওয়া আরেক হাতে ফোন ধরা অবস্থায় কানে,ঠোঁট কামড়ে কথা বলছে,সাদা-শার্ট,কালো পেন্ট,হাতে কালো ঘড়ি,চোখে কালো চমশা,মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম,কোনো মেয়ে একবার দেখলেই যেন প্রেমে পরে যাবে।

“রুদ্র কথা বলছে তার বড় অফিসারের সাথে রাসেলের কেস’টা নিয়ে।সে আমান আর বাকি সবাই বেরিয়ে পরেছিলো সকালেই নিজেদের কাজে।কিন্তু তারা এদিকওদিক খুঁজাখুঁজি করলেও রাসেল আর শায়লা খাতুন’কে খুঁজে পাই’নি।সে ব্যাপারেই রুদ্র বড় অফিসারের সাথে কথা বলতে বলতে গাড়ির কাছেই রয়ে গেলো।ফোন কেটে রুদ্র গাড়ি থেকে নামতে গেলেই সামনে অনাকাঙ্ক্ষিত কাউকে দেখে থমকে যায়”রুদ্র দেখলো সামনে নূর কালো জিন্স পেন্ট,কালো টপস,তা-উপর কালো কটি,পায়ে কেডস,কাঁধে মিডিয়াম সাইজের ব্যাগ,চুল গুলা উঁচু করে বাধা,ঘেমে তার মুখশ্রী কেমন জানি একটা হয়ে গেছে তবে দেখতে বেশ ভালো লাগছে।আর সে এদিকওদিক দেখছে আর মাঝে মাঝে কারোর সাথে কি যেনো নিয়ে কথা বলছে।কি বলছে তা রুদ্র শুনতে পারছে না।রুদ্র এক-মনে তাকিয়ে আছে নূরের দিকে!আজ রুদ্র যেনো নূরের অন্যরুপ দেখলো।তবে এখনো নূর থাকে দেখে’নি।

~~ আমি আশে-পাশে লোকদের জিজ্ঞাস করে করে যাচ্ছি কিন্তু কেউই সঠিক খবর দিতে পারছেন না।এবার আমার রাগ হলো রাগে যেনো সারা-শরীর কাঁপতে লাগলো।তখনই আমার মাথায় কেউ ঠু*কা দিলো।আমি বিরক্তি নিয়ে পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখলাম আহনাফ সওদাগর।

“উনাকে দেখে ভ্রু কুচকে বললাম- কি সমস্যা?

“উনি আমার কথা শুনে মুখ কালো করে বললেন- মিস ভাব-ওয়ালী এভাবে কথা বলছো কেন?প্রতিদিন নিমপাতা খাও নাকি?

“উনার অ’হেতুক আ’জাইরা কথায় আমার আরও রাগ হলো তাই কোমড়ে দুইহাত দিয়ে লম্বা হয়ে এক আঙ্গুল তুলে বললাম- যেখান থেকে এসেছেন সেখানে ফু’টেন।আমাকে ডিস্টার্ব করবেন না বলে সামনের দিকে হাটতে লাগলে।উনি হুট করে আমার সামনে এসে দাঁড়ায় যার ফলে একটুর জন্য উনার সাথে ধা*ক্কা লাগে’নি আমার।

“আমার রাগি চেহেরা দেখে উনি বললেন- মিস এলিজা তুমি তো একদম রেগে টে’মেটো হয়ে গিয়েছো বলেই ঠোঁট চেপে হাসলেন।

“উনার কথা শুনে আমি চোখ শক্ত করে বললাম- সামনে থেকে সরুন।নাহলে নাকে এমন একটা ঘু*ষি মা’র’বো না তখন আপনার নাক’টাও টে*মেটোর থেকেও লাল হয়ে যাবে।

“আমার কথায় উনি উচ্চস্বরে হেসে উঠে বুকে এক হাত দিয়ে বললেন- হায় বুকে লাগলো কথা’টা তারপর আবারো হাসতে লাগলেন।

“আমি এবার নিজেকে শান্ত করে বললাম- কি চাই বলবেন?এমন আজাইরা বিহেভ করছেন কেন?

“উনি আমার কথা শুনে হাসি থামিয়ে দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে বললেন- যদি বলি তোমাকে চাই?

“উনার কথা শুনে অবাক হওয়ার বদলে বিরক্ত হলাম।উনাদের বাসায় থাকার পর থেকেই উনি আর উনার ছোট ভাই আমাকে জ্বা’লি’য়ে পু’ড়ি’য়ে মারছেন।তাই এক-প্রকার বিরক্ত নিয়ে বললেন- শেষ হয়ছে আপনার নাটক?আর কিছু বলার আছে?না হলে সামনে থেকে সরুন।

“উনি এবার স্বাভাবিক গলায় বললেন- তুমি এখানে কি করছো?

“আমি ও স্বাভাবিক গলায় বললাম- তাতে আপনার কি?গা’র্জিয়ান নাকি আমার?

“উনি মৃদু হেসে বললেন- কিছু জিজ্ঞাস করতে গা’র্জিয়ান হওয়া লাগে নাকি?

“আমি হটাৎ মুচকি হেসে বললাম- অবশ্যই।

“উনি আমার কথা শুনে আশে-পাশে তাকিয়ে বললেন- প্রচুর গরম পরছে আই’সক্রিম খাবে?

“উনার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে ফে’ললাম।আসলেই গরম লাগছে তাই উনার অফারকে আর ফিরিয়ে না দিয়ে বললাম- সিউর।

“তারপর উনি আর আমি সেখানে থাকা একটা
আই-সক্রিম ওয়ালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম।আহনাফ ভাইয়া উনাকে দুটো আই-সক্রিম দিতে বললেন আর তার মাঝে আমরা ঠুক-ঠাক কথা বলছি।

~~এতক্ষণ পর্যন্ত নূর আর আহনাফকে রাগি চোখে দেখছিলো রুদ্র।তার রাগে ভুমি কম্পের নায় সারা-শরীর মৃদু কাঁপছে।নূরের দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন চোখ দিয়েই গিলে খাবে।রুদ্র এখনো এক-মনে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
———————————–
আহনাফ ভাইয়ার থেকে বিদায় নিয়ে যে’না আমি মেইন রাস্তা দিয়ে হাটতে লাগলাম ওমনি অনাকাঙ্ক্ষিত কাউকে দেখে আমি থমকে গেলাম।আর মনে মনে বলে উঠলাম- রুদ্র”কিন্তু উনি এখানে কি করছেন?উনি তো মনে হয় আমার দিকেই তাকিয়ে আছেন।চোখে চশমা থাকলেও কেমন জানি আমার দিকে আছেন মনে হলো।তবুও আমি বিচলিত না হয়ে আস্তে আস্তে হেটে উনাকে পাশ কাটিয়ে যেতেই আমার হাতে টান অনূভব করলাম।আর সাথে সাথে চমকে পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখতে পেলাম রুদ্রর হাতে আমার হাত।

“উনি আমার হাত ধরায় রেগে বললাম- হাত ছাড়ুন।

“তবে উনি ছাড়লেন না।

“আমি এবার আরও রেগে বললাম- হাত ছাড়ুন বলছি।এটা কি ধরনের অসভ্যতামি?

“উনি আমার হাতে টান দিয়ে নিজের অনেকটা কাছে নিয়ে গিয়ে চোখে চোখ রেখে বললেন- মনে যদি নতুন রঙ লাগে তখন পুরণো রঙ তার কাছে ফ্যাকাসে হয়ে যায়।এই জন্যই বুঝি মু*ক্তি চেয়েছো?বলেই তাচ্ছিল্য হাসলেন।

“উনার কথার মানে এতটুক বুঝতে পেরেছিলাম যে উনি আমাকে আর আহনাফ ভাইয়াকে এক-সাথে দেখেছেন।তবে এবার আমি উনার ভুল না ভাঙ্গিয়ে শান্ত গলায় বললাম- যা বলেছেন একদম ঠিক বলেছেন।এবার ছাড়ুন আর হ্যা আমায় যখন-তখন ছুঁবেন না!আমার ভালো লাগে না।

“উনি যেন এবার আরও ভয়ংকর হয়ে উঠলেন তাই আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে বললেন- আমার ছুঁয়া ভালো লাগবে কি করে।শরীরে যে অন্যের ছুঁয়া লেগেছে।

“উনার কথা শুনে অপমানে আমার সারা-শরীর কেঁপে উঠলো তাই কাঁপতে কাঁপতে বললাম- যে আমাকে এত গুলা দিনেও বুঝে’নি চিনে’নি সে বাকি জীবনেও আমাকে বুঝবেও না চিনবেও না।

“আমার কথায় উনি আশে-পাশে তাকিয়ে আমাকে আরও নিজের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে বললেন- চোখের দেখা কখনো ভুল হয়’না।

“উনার কথা শুনে জেদি গলায় বললাম- তাহলে সে চোখের দেখা নিয়েই পরে থাকেন।আর আমাকে যেতে দিন।আমাদের মাঝে এখন কোনো সম্পর্ক নেই আপনিই সে সম্পর্ক ভেঙ্গে দিয়েছেন।

“আমার কথা শুনে উনি রেগে বললেন- চ*ড়ি*য়ে গাল একদম লাল করে দিবো।আমি সম্পর্ক ভাঙ্গতে চাই’নি বরং তুমিই মু*ক্তি চেয়েছিলে।

“এবার আমি রাগি গলায় বললাম- হ্যা সব দো’ষ আমার হয়েছে?নিজের ভুল বুঝতে না পারা মানুষ গুলা কখনো ভালো মনের হতে পারে না।তারা পারে শুধু নিজের দোষ অন্যর উপর চাপাতে।

“উনি ভ্রু কুঁচকে বললেন- কি বুঝাতে চাইছো তুমি?

“আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম- বিশ্বাস করুন আমি কিছু বুঝাতে চাইছি না!শুধু আমাকে ছাড়ুন দয়া করে।

“উনি বাঁকা হেসে বললেন- যদি না ছাড়ি?

“আমার চঞ্চল চঞ্চল চোখ হটাৎ নিরব হয়ে গেলো।উনার দিকে শান্ত চোখে তাকিয়ে অভিমানি গলায় বললাম- শুধু শুধু ধরে রাখবেন কেন?কে হয় আমি আপনার?

“আমার কথায় উনার হাসি যে আরও চওড়া হলো
তবে স্বাভাবিক গলায় বললেন- স্যরি।

“উনার মুখে স্যরি শুনে থমথম খেয়ে গেলাম।তবে নিজ মনে মনে ভাবলাম লাগলাম- না নূর না!এত সহজে এই ইগো ওয়ালা ছেলেরে তুই ক্ষমা করতে পারিস না।ভুলে যাস’না সে কেমন!এই স্যরি বলবে এই অপমান করবে।তোকে শ*ক্ত হতে হবে!তোর এখনো অনেক কাজ বাকি।

“আমি নিজেকে সামলিয়ে বললাম- হয়েছে এবার ছাড়ুন।

“উনি কাট-কাট গলায় বললেন- দেখো নূর আমি সহজে কাউকে স্যরি বলি’না!আমার মনে হয়েছে কিছুটা ভুল আমার তাই স্যরি বলেছি।আর তুমি এখন আমার সাথেই যাবে।

“উনার কথা শুনে মনে মনে বললাম- ব্যাটা ভাঙ্গবে কিন্তু মুচড়াবে না শা*লা।

“তবে মুখে শ’ক্ত গলায় বললাম- না আপনাকে আমি ক্ষমা করছি।না আপনার সাথে আমি ফিরছি ওকে।

“উনার মনে হয় আমার কথা ইগোতে লাগলো তাই রেগে বললেন- বেশি পাত্তা দিলে মানুষ মাথায় উঠে নাচে!ঠিক তুমিও এমন বিহেভ করছো।আর কি বললি- যাবি না তো আমার সাথে?তাহলে থাক তুই ওই ছেলের সাথে।আমার কাছে কখনো আসলে দেখবি একদম ঠু*কে দিবো! বলেই আমাকে আলতো ধা*ক্কা দিয়ে উনি গাড়ি নিয়ে চলে গেলেন।

“আমি উনার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলাম-যত্তসব ঢং এই লোকটা এমন কেন?
কখনো ভালো কখনো খা’রাপ!উনি যে কি চান?সেটা উনি নিজেও জানেন না।তবে এতটুক বুঝতে পেরেছিলাম লোকটার জ্বলেছে আমাকে আর আহনাফ ভাইয়াকে এক-সাথে দেখে ভেবেই ঠোঁট চেপে হাসলাম।

“লোক’টা বড় অদ্ভুত!এইদিকে স্যরিও বলেছে তাও আবার মুড নিয়ে।ভাবতেই আমি অনেকদিন পর খিলখিল করে হেসে উঠলাম।আর উনি স্যরি বলায় একটু অবশ্য মন ভালো হয়েছিলো~তবে পুরণো কথা মনে পরতেই আমার আবার মন খারাপ হয়ে গেলো।তাই মনে মনে বললাম- রুদ্র আমাদের আগামী-পথ অনেক কঠিন।আমাদের এক হওয়া যে এত সহজ না।জানি না অবশেষে আপনাকে পাবো কি’না।তবে মৃত্যু পর্যন্ত আমি আপনাকেই ভালোবেসে যাবো…
———————————
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here