#হৃদস্পর্শ সিজন ২ পর্ব ১১
জামিয়া পারভীন তানি
সাইমা সজীবের অত্যাচার সহ্য করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছে । সকালে ও নিজেকে সজীবের বুকের মাঝে আবিষ্কার করে। সাইমা সজীবের বাহুডোর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার আগেই সজীব আরোও ভালো করে ধরে রাখে নিজের কাছে।
সাইমা রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে কাঁপছে। সজীব সাইমাকে শান্ত করার জন্য বলে,
• “ ওটা আমার বউ না! ওই মেয়েকে আমি ভাড়া করে এনেছিলাম তোমাকে ক্ষেপানোর জন্য। যার ঘরে এতো কিউট একটা বউ থাকে তার কি অন্য মেয়ে চোখে পড়ে নাকি!”
সাইমার গাল লাল হয়ে গেছে রাগের জন্য, আর কাঁপুনি আরোও বেড়ে গেছে। সজীবের কথা শোনার পর সাইমার মেজাজ আরোও খারাপ হয়ে যায়। সজীবের থেকে বারবার নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু সজীব কিছুতেই ছাড়ছে না।
°°°
শিম্মি চুপচাপ কাঁদছে, আলিফ এমন রেগে গেলো কিসের জন্য বুঝতে পারছেনা। ছেলে টা এতো খারাপ তো ছিলো না। তাহলে হটাৎ এমন কেনো করলো, বুঝে গেলো নাকি উনার বোনের দোষ আছে এখানে। বোন কে কিছু না বলতে পেরে সব রাগ আমার উপর ঝাড়লো। খুব খারাপ সে , খুবিই খারাপ। আমি কখনো যা কল্পনা ও করিনি সেটাই হয়ে গেলো আমার সাথে।
• “ওই লোকটা কে শাস্তি দিতে চাও? ” আফিয়া জিজ্ঞেস করে শিম্মি কে।
শিম্মি হটাৎ চমকে উঠে আফিয়ার কথাতে, একটু নড়েচড়ে বসে আবার। সহজ ভঙ্গিতে বলে,
• “ কোন লোক? ”
• “ তোমার স্বামী। ”
• “ এতে লাভ?”
• “ যাই হোক লাভ আছে বলেই বলছি।”
• “ হ্যাঁ চাই, কিন্তু ওকে আমি ভালোবাসতাম!”
• “ যাই হোক, ওর ঠিকানা টা দাও। বাকি সব দেখে নিবো আমি। ”
শিম্মি অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে, কি হয়ে গেলো ওনার আবার। আস্তে করে বলে সব ঠিকানা। আফিয়া সব রেকর্ড করে নিয়ে চলে আসে।
তখন আলিফ শিম্মির কাছে যায়। শিম্মি কে বলে,
• “ তখনকার ব্যবহারের জন্য মাফ করে দিয়েন। ”
মেয়েটা মাথা নীচু করে বসে থাকে। আলিফের দিকে চেয়েও তাকায়নি আর। আলিফ বুঝতে পারে শিম্মি রেগে গেছে। আলিফ শিম্মির সামনে হাটু গেড়ে বসে বললো,
• “ প্লিজ আমি অপরাধ বোধ এ ভুগছি। ক্ষমা করে দিও আমাকে। ”
• “ প্লিজ আপনি সামনে থেকে যান, ঘৃণা হচ্ছে আপনাকে। ”
• “ যাবো না। তোমার সামনেই বসে থাকবো।”
• “ ভালো হবেনা কিন্তু, চলে যান বলছি।”
• “ তোমার পা দেখি!”
• “ মানে?”
• “ দেখাতে বলেছি, দেখাও। ”
• “ আপনি কি পাগল হয়ে গেছেন? আমার পা দিয়ে কি করবেন? ”
আলিফ শিম্মির পা দুটি ধরে বিছানায় সোজা করে দেয়। এতে শিম্মি ব্যালেন্স হারিয়ে মাথায় টোকা খায় দেয়ালে । মুখে উফফ বলে শব্দ করলেও আলিফ খেয়াল করে না। আলিফ শিম্মির শাড়ি হাটু পর্যন্ত তুলে দেয়। শিম্মি পা টেনে নিতে গেলে আলিফ পা চেপে ধরে। আর শিম্মির দিকে তাকিয়ে বললো,
• “ একদম চুপচাপ বসে থাকবে, নইলে পুরো কাপড় খুলে দিবো।”
শিম্মি ভয়ে চুপচাপ বসে থাকে। আলিফ শিম্মির পায়ের আঙুল থেকে ব্যায়াম করানো শুরু করে। সব গুলো জয়েন্ট এ ব্যায়াম করায় হাটু পর্যন্ত। এরপর উঠে চলে আসে আলিফ। আর শিম্মি চোখ বন্ধ করে বসে আছে, আলিফ সম্পর্কে কি ভেবেছিলো আর আলিফ কি করলো তাই।
কিছুক্ষণ পর আলিফ আবার আসে, প্লাজো আর একটা কামিজ নিয়ে। এসে বলে ,
• “ কোমরের ব্যায়াম টা তুমি নিজেই করবে, আমি শিখিয়ে দিচ্ছি। এটা পড়ে নাও আগে। ”
শিম্মি হাত বাড়িয়ে নিয়ে নেয় ঠিকই কিন্তু কামিজ আর প্লাজো পড়তে ইতস্তত বোধ করছে। আলিফ আরেকবার দরজা তে উঁকি দিয়ে তাড়াতাড়ি করতে বলে গেলো। শিম্মি তাও চুপ হয়ে বসে আছে দেখে আলিদ এবার বলে,
• “শাড়ি পরে ব্যায়াম করাবো নাকি, তাহলে সব কিছু দেখা যাবে। তুমি বোধ হয় ওটাই চাচ্ছো। ”
• “ না কখনো ই না, আমি পড়ছি ওইগুলো। ”
আলিফ মুচকি হেসে বেরিয়ে আসে।
°°°
• “আমার ভাই টা এতো খেলোয়াড় আগে বুঝিনি ভাবী, আমাদের তো ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলো। ”
• “ হ্যাঁ তোমার ভাই একটা প্রতারক। ” সাইমা রেগে সুপ্তি কে বলে।
• “ ভাবী ব্লেম করোনা, ভাইয়া মেয়েটার বাবার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দিয়েছে। তাই মেয়েটাকে একটু অভিনয় করতে বলেছিলো আর কি। ”
• “ তোমার ভাইকে তুমি সাপোর্ট দিবেই, আমি নই।”
• “ ভাবী, তোমাকে কি সাপোর্ট দিইনা আমরা!”
• “ বাদ দাও, মা হচ্ছো কবে?”
• “ রেহান বাচ্চা চায় না এখনো।”
• “ কেনো?”
• “ জানিনা। ”
সাইমা চুপ হয়ে যায় আবারো, সজীব যেমন তেমনই আছে। কেউ চেঞ্জ হতে পারে না। ভালোবাসে! হুহহহহ! সব মিথ্যা কথা। আমাকে দিয়ে নিজের চাহিদা পূরণ করে আর কি।
মেজাজ খারাপ করে উঠে যায় সাইমা। সজীবের রাতের অত্যাচার এর কথা মনে করলে প্রথম দিকের ভয়াবহ স্মৃতি মনে পড়ে। ছেলেরা ভালোবাসতে জানেনা। আসলেই জানেনা ওরা।
চলবে….