হৃদস্পর্শ সিজন ২ পর্ব ১০

0
676

#হৃদস্পর্শ সিজন ২ পর্ব ১০

জামিয়া পারভীন তানি

সুপ্তি সজীবের সাথে কথা বলছে আর হাসছে। সাইমা খুব চিন্তিত হয়ে মনে মনে বললো,
• “ লোক দেখানো পিরিতি তাইনা! ভাইকে বাদ দিয়ে নাকি আমার দায়িত্ব নিবে। আর এখন ভাইয়ের সাথে মজা করছে। সবগুলো হচ্ছে স্বার্থপর। রেহান ও কোনো সাহায্য করছে না এই-বার। কিভাবে নিজের মাথা গুজার ঠাই হবে!”
চিন্তায় সাইমা কান্না শুরু করে। তখন সজীব এসে বলে,
• “ কাউকে তো আর জোর করে তাড়িয়ে দিচ্ছি না, চাইলেই এখানে থাকতে পারে।”

সাইমা সাথে সাথে রিয়েক্ট করে,
• “ তোর মতো প্রতারক স্বামীর ঘর নাই বা করলাম!”
• “ কোনো কালেও তো করো নি, তাহলে আর কি বলো!”

সাইমা হটাৎ রেগে গিয়ে সজীবের চুল টানতে শুরু করে। একা একা চিল্লিয়ে বলতে থাকে ,
• “ তোর জন্য আমার শুধু ক্ষতি ই হয়েছে। আমার জীবন টাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছিস তুই ।তুই জীবনেও সুখী হবি না। ”
সাইমার হাত দুটো সজীব ধরে সাইমাকে দূরে সরিয়ে দেয়। আর রাগী গলায় বললো,

• “ আমার জন্য না! নিজের দোষে নিজের সংসার হারাচ্ছো। এখনো ডিভোর্স দিই নি, চাইলেই থাকতে পারো। আর না চাইলে চলেও যেতে পারো। যদি চলে যাও তাহলে ডিভোর্স দিয়ে বাচ্চার মায়া চিরতরে ত্যাগ করে চলে যাবে। তোমার অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ এর আশায় আমার মেয়ের জীবন নষ্ট করতে পারিনা। ”

সাইমা কিছু না বলেই হুট করে দরজা লাগিয়ে দেয়। সজীব খুব ভয় পেয়ে যায় এবার, যদি সাইমা আবেগের বশে নিজের ক্ষতি করে।
সজীব দরজায় ডাকতে শুরু করে, সাইমার সাড়া না পেয়ে আরোও বেশী ভয় পেয়ে যায়। দরজা ভাঙার জন্য চেষ্টা করে সজীব ।

°°°

শিম্মি এখন অনেক টাই সুস্থ, হসপিটালের কেবিনে শুয়ে আছে। আলিফ শিম্মির হাত ধরে জিজ্ঞেস করে,
• “ কি এমন হয়েছিলো? ”
শিম্মি চুপ করে আছে, চোখ দুটো নিচের দিকে নামিয়ে রেখেছে। চোখ লাল হয়ে ফুলে আছে, দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক কেঁদেছে মেয়েটা।
আলিফ এবার ধমক দিয়ে বললো,
• “ কি ব্যাপার, কিছু জিজ্ঞেস করেছি। উত্তর দাও। ”
• “ ফল কাটছিলাম, হাতে লেগে গেছে। ”
আলিফ শিম্মির গলা চেপে ধরে,
• “ অভদ্র মেয়ে , মিথ্যা বলিস, তাও আবার আমাকে। ”
• “ লাগছে তো। ”
• “ লাগুক। ”
• “ আমি তো পঙ্গু মেয়ে, আপনার চরিত্রে কালি লাগাচ্ছি শুধু শুধু। প্লিজ আমাকে একা ছেড়ে দিন। আমি আমার রাস্তা দেখে নিবো। ”
• “ কি কালি লাগাইছিস তুই হ্যাঁ? ”

বলেই শিম্মি কে বিছানার সাথে চেপে ধরে। শিম্মির মুখের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ শিম্মির দিকে তাকিয়ে থাকে। এরপর কানের কাছে এসে বলে,
• “ তাহলে এখন তুই আমার চরিত্রে কালি লাগা। আই কাছে আই, নিজেকে বিলিয়ে দে আমার কাছে। ”

শিম্মি আলিফকে সরানোর চেষ্টা করছে, আলিফ তবুও সরছে না। শিম্মির সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে। আলিফ শিম্মির ঠোঁটের দিকে নিজের ঠোঁট এগিয়ে নিতে শুরু করে , শিম্মি নিজের হাত আলিফের মুখে দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। আলিফ রাগ করে শিম্মির উপর এভাবে ঝাপিয়ে পড়বে শিম্মি এটা ভাবতেও পারেনি। নিজেকে কন্ট্রোল করতে বলছে আলিফ কে। কিন্তু আলিফ শিম্মির কথাই শুনছে না। শিম্মিকে জোর করে ২ মিনিট লিপ কিস করে। তারপর ছেড়ে দিয়ে বলে,
• “ আমার চরিত্র তো খারাপ। তুই নিজেই বলেছিস। তার শাস্তি দিলাম তোকে এবার। ”
বাইরে থেকে আফিয়া সব দেখে, কিন্তু কিছুই বলে না ভয়ে। যদি আলিফ ওর উপর ক্ষেপে যায়। আফিয়া ভালো করে ই বুঝতে পেরেছে ওর উপর রাগ করে আলিফ এতো ক্ষেপে গেছে। নইলে আলিফ এমন কিছু করার ছেলেই না৷

°°°

সজীব সাইমা কে জড়িয়ে ধরে বসে আছে নিজের ঘরে, সাইমা একক ভাবে বলেই যাচ্ছে,
• “ কত তুই সংসার, আমার পিছে পড়েছিস কিসের জন্য? ”
• “ সাইমা কথা টা শুনো, এমন পাগলামি করোনা প্লিজ৷ ”
• “ আমি মরলেই ভালো, তোর নতুন বউ তোকে ডিভোর্স দিবে আর তুই থাকবি জেলে। ”
• “ সাইমা চুপ করো। ”

সাইমা কে থামানোর একটা ই উপায় আছে সজীবের কাছে। সাইমার রাগ আর বাড়তে দেওয়া যাবেনা কিছুতেই। ওকে শাস্তি দিতে চেয়ে সজীব নিজেই নিজের ক্ষতি করেছে। সজীব সুপ্তি কে ইশারা করে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে। সুপ্তি বের হবার সময় দরজা টা লক করে দিয়ে যায়। সুপ্তি যাওয়া মাত্রই সাইমা কে আদর দিতে শুরু করে ।যতক্ষণ না সাইমার রাগ কন্ট্রোল হয় ততক্ষণ সাইমার সাথে ভালোবাসার সমুদ্রে ডুব দেয়। হোক সেটা সাইমার ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। সজীব আর কখনো জোর করতে চাই নি কিন্তু আবারও প্রথম দিনের মতো ভুল করতে বাধ্য হয়।

চলবে…..

প্রতিদিন অল্প করে দেওয়ার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here