হৃদস্পর্শ পর্ব ১১

0
806

#হৃদস্পর্শ ( পর্ব ১১)
#লেখিকা : জামিয়া পারভীন তানি

সাইমা নিচে নেমে আসলেই সজীব ওকে কোলে তুলে নেয়, সুইমিংপুল এর কাছে নিয়ে গিয়ে নামায়।
• “ কি ভারী হয়ে গেছো! একটু কোলে নিতেই হাপিয়ে গেলাম। ”
• “ আরোও মোটা হবো! তাতে তোমার কি? ”
• “ দেখতেও তো কালো পেঁচার মতো হয়ে গেছো! ওই জন্যই তো আর ভালো লাগে না! ওয়াক!!!”

সাইমা রেগে লাগ হয়ে গেছে, ফরসা গালে লাল রক্তিম আভা। চোখ দুটো বড়ো বড়ো করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
• “ ওভাবে তাকিয়ে লাভ নেই! কালি মুখে বড়ো চোখে হুতুম পেঁচা লাগছে। ”

সাইমা রেগে সজীবের দিকে এগিয়ে যেতে নিলে শাড়ির কুচি তে পা বেঁধে সজীবের গায়ের উপর পড়ে। সজীব ব্যালেন্স হারিয়ে সাইমাকে বুকের উপর নিয়ে পানিতে গিয়ে পড়ে। সাইমা প্রথমে পানিতে হাবুডুবু খেতে থাকে, সজীব গিয়ে জড়িয়ে ধরে।
সাইমা হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,
• “ যদি পানি না থাকতো তাহলে কি হতো! ”
• “ তোমাকে নিয়ে খেলবো বলেই তো পানি ছেড়ে এসেছি সোনা! ”
• “ কিহহহ!”

সাইমা রেগে সজীবের শার্ট খামচিয়ে ধরে, সজীব সাইমাকে আরোও কাছে টেনে নেয়। সাইমার ফরসা গলাতে ঠোঁটের স্পর্শ দিতে থাকে। সাইমাকে এতো কাছে থেকে অনেকদিন পর দেখছে, তারউপর আবার ভেজা অবস্থায়। শাড়ির আঁচল সরে গেছে, সাইমার লুকানো সম্পদ এর কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে। সজীব সাইমাকে আরোও কাছে টেনে নেয়, সাইমার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয়। সাইমা ভালোবাসার স্পর্শ গুলো উপভোগ করতে থাকে।

• “ উঁহু ভাইয়া! আর কতো প্রেম করবে তুমি। তোমার মেয়ে তো কেঁদে কেটে অস্থির হয়ে গেলো। ”

সুপ্তির কথায় সাইমা কে ছেড়ে দেয়, সাইমা লজ্জায় মুখ ঘুরিয়ে নেয়। সজীব সুপ্তি কে বলে৷
• “ ফুপি হয়েছিস কি করতে, একটু ভাস্তি কে চুপাতে যদি না পারিস! দিলি তো প্রেমে ব্যঘাত ঘটিয়ে। তোরা সব গুলো ভিলেন বুঝলি! ”
• “ হাহাহা ভাইয়া! করো প্রেম করো, আমি দেখি। ”
• “ থাম উঠতে দে, তোর মজা দেখাচ্ছি। ”

সজীব সাইমাকে ধরে উঠিয়ে দিয়ে নিজে উঠে পড়ে। সুপ্তি এরই মাঝে পালিয়ে গিয়ে ঘরের দরজা অফ করে দেয়। সাইমা কোন রকম পানি ঝেড়ে ঘরের দিকে যায়।

ঘরের দরজা দিয়ে শাড়ি চেঞ্জ করে নেয়, পিছনে ঘুরতে ই দেখে সজীব দাঁড়িয়ে আছে।
• “ তু তু তুমি কখন এলে ঘরে!”
• “ তোমার আগেই তো এসে ওয়াশরুমে ঢুকে ছিলাম। ” মুখে দুষ্টুমি হাসি।
• “ মানে! দরজা তো খোলা ছিলো! ”
• “ জানি তো বউ ছাড়া কেউ ঘরে আসবেনা! ” মুখ ভেঙিয়ে হাসতে থাকে সজীব।

সাইমা রেগে চলে যেতে নিলে সাইমা কে টেনে ধরে, দুই হাত সাইমার পেটের উপর দিয়ে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে। কানের কাছে চুমু দিয়ে বলে,

• “ আমারই তো বউ! এতো রাগের কি আছে বলো! ”
• “ ছাড়ো ন্যাকামি করোনা এখন! স্নেহা কাঁদছে, খাবে ও।”
• “ মেয়েকেই খাওয়াও যাও! মেয়ের বাবা কিছুই না! হুহহ। ”

সাইমা মুচকি হাসি দিয়ে চলে আসে।

°°°
মাহিরাকে ফোন দেয় রেহান, ফোন রিসিভ করেই মাহিরা বলে,
• “ সমস্যা কি আপনার? কতো বার বলেছি আমি আপনাকে ভালোবাসি না! আমি সজল কে পছন্দ করি। তাও কেনো আমার পিছনে পড়ে আছেন? ”
• “ এই ধোকা কেনো দিলে মাহিরা? ”
• “ আমি ইচ্ছে করে কিছুই করিনি! আমার ফ্যামিলি তে বিয়ে ঠিক করেছিলো, আমার পছন্দ হয়নি, তাই পালিয়ে গেছি। ব্যাস!”
• “ আর প্রথম দেখায় তোমাকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলাম তার কি হবে? ”
• “ আমি কি আপনাকে স্বপ্ন দেখতে বলেছিলাম? ”
• “না, তোমার বাবা মা দেখতে বলেছিলো। ”
• “ আমি দেখতে বলিনি! সো ধোঁকা ও আমি দিইনি । সো প্লিজ ডোন্ট ডিস্টার্ব মি! ”

মাহিরা আর কথা না বাড়িয়ে ফোন রেখে দেয়। জানে রেহান আবারোও ফোন দিবে, সেইজন্য রেহান কে ব্লক লিস্ট এ রেখে দেয়।
রেহানের মন খারাপ হয়ে যায়, বারবার কল দিয়েও যাচ্ছেনা তাই। মনে মনে প্লান করে তোমাকে কিছুতেই সুখী হতে দিবোনা মাহিরা! তুমি আমার নও তো অন্যকারোও নও।

°°°

সজলের ফোনে কল দেয় মাহিরা,

• “ সজল, আমি তোমার সাথে মিট করতে চাই আজকে। ”
• “ কি শপিং করবে আর! সবিই তো কেনা শেষ। ”
• “ শপিং না! দেখতে ইচ্ছে করছে তাই। এক্ষুণি আসতে হবে। ”

বাধ্য হয়ে সজল কাছের একটা রেস্টুরেন্টে আসে, মাহিরা এসেই সজল কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে।

• “ এই পাগলি, কি হয়েছে। ”

মাহিরা কিছুক্ষণ কেঁদে তারপর বলে,

• “ সজল আমি তোমার সাথে সেই ছোট বেলা থেকে পড়াশোনা করি। তখন থেকেই তোমাকে ভালোবাসি। আমার মনে হচ্ছে আমার ভালোবাসাতে পূর্ণতা পাবেনা। ”
• “ আর কিছুদিন পরেই আমাদের বিয়ে! তখন সব ঠিক হয়ে যাবে। চিন্তা করোনা তো। ”
• “ জানো, যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো, সে ফোন দিয়ে কেমন করে যেনো কথা বলে, আমি নাকি ধোঁকা দিয়েছি। ”
• “ ভয় পেয়োনা তো! সব ঠিক হয়ে যাবে। ”
• “ ও ই লোক যদি আমাদের এক হতে না দেয়! চলো আজ বিয়ে টা করে ফেলি। অনুষ্ঠানের দিন অনুষ্ঠান হোক। ”
• “ আচ্ছা বাবু তাই করবো! এতো কাঁদিস না তো। ”

°°°

সাইমা সজীব এর পাশে শুয়ে আছে আজ অনেকদিন পর। সজীবের বুকে মাথা দিয়ে সেই প্রথম প্রথম ঘুমিয়েছিলো। তখন বিরক্ত লাগলেও এখন বেশ লাগছে! সজীব ঘুমিয়ে আছে আর ও প্রতিটি নিঃশ্বাস উপভোগ করছে। লোমশ বুকে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। সাইমার মাথায় একটু দুষ্টু বুদ্ধি আসে, লোম ধরে টান দেয়। সজীব ঘুমের ঘোরে সরিয়ে দিচ্ছে, সাইমা এবার জোরে টান দেয়। সজীব ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে। সাইমা খিলখিল করে হাসতে শুরু করে।

সজীব মুগ্ধ হয়ে সাইমার হাসি দেখছে। হটাৎ করে সাইমার চুল ধরে নিজের গলাতে জড়িয়ে নেয়। এখন তুমি হাসো, আমি মন ভরে দেখি। সাইমা দুষ্টুমি করে সজীবের মুখের উপর হাঁচি ফেলে দেয়।

• “ ইয়াক! এটা কি হলো!”
• “ রাখবেনা, আমাকে নিজের কাছে?”
• “ অবশ্যই রাখবো। ”

সজীব সাইমাকে জড়িয়ে ধরে ধরে ঠোঁটে কিস করে।
এমন সময় সুপ্তি এসে দরজায় ডাকছে…

• “ ভাবী, ভাইয়া নিচে দেখো! সারপ্রাইজ আসছে। ”
সজীব সাইমা দুজনেই নিচে নেমে আসে, একে অপরের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে।

[ বি:দ্র : আসলে কালকে বাইরে গিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম বাসায় এসে লিখেই গল্প দিবো রাত ১০ টাই হলেও। কিন্তু কাল ছোট একটা এক্সিডেন্ট এ সব গুলো জয়েন্ট ব্যথা হয়ে গেছে। তাই আর কাল লিখিনি! আজও ব্যথা আছে তাই অল্প একটু লিখেই দিয়ে দিলাম। ”

চলবে……

যারা রেহান কে আলিফ ভেবেছিলেন তাদের জন্য এক বালতি সমবেদনা ????

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here