তোর নামের রোদ্দুর২ পর্ব 33

0
1189

#তোর_নামের_রোদ্দুর-২
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্বঃ৩৩

-এই হ্যাকিং,রোবারি,এসব নিয়ে কোনো আলোচনাই চাইছি না আমি আর।আয়ান যা করেছে,সেটা আমিই বুঝ্….

বলতে বলতেই পিছন ফিরলেন শুদ্ধ।কিন্তু আমাকে দেখে থেমে গেলেন উনি।অনেকটা অপ্রস্তুতও হয়ে গেছেন সেটা টের পেয়েছি আমি।আজ সকালটায় শুদ্ধর কপালে আমিই ঠোট ছুইয়েছি।ওনার তবুও ঘুম ভাঙে নিয়ে।কিছুক্ষন নিরবে চেয়ে রইলাম।কতোটা শান্ত,কতোটা নিস্পাপ ঘুমন্ত চেহারা।তবুও ওই চেহারার আড়ালে চাপা কষ্টের আনাগোনা।উঠে ফ্রেশ হয়ে শুদ্ধের জন্য একদম কফি বানিয়ে নিয়ে রুমে ঢুকলাম।এসে দেখি শুদ্ধ উঠে গেছেন।অন্যদিক ঘুরে ফোনে কথা বলছিলেন উনি।টি টেবিলে কফিটা রাখতে যাবো,শুদ্ধ ফোনে কথাটা বলে উঠলেন।আমাকে দেখে ফোন কান থেকে নামিয়ে ঠান্ডা আওয়াজে বললেন,

-কখন এসেছিস?

-দ্ দু সেকেন্ড আগে!

আর কিছু বললেন না উনি।কফিটা এগিয়ে দিয়ে বললাম,

-আপনার কফি।

নিশব্দে ওটা নিলেন শুদ্ধ।তারপর ফাইল আর কাগজপত্র গোছাতে লাগলেন উনি।তার উচ্চারন করা হ্যাকিং,রোবারি শব্দদুটো মাথায় জট পাকিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু সে বিষয়ে শুদ্ধ বলতে চাননি আমাকে।তাই কথা‌ বাড়াই নি আর আমিও।বেরিয়ে আসছিলাম রুম থেকে।উনি বললেন,

-তুই বিশ্বাস করিস আমাকে,তাইনা‌ সিয়া?

পিছন ফিরলাম।শুদ্ধ উত্তরের অপেক্ষায়।মৃদ্যু হেসে বললাম,

-আমার বিশ্বাস মানেই তো আপনি।

-ঠিক কতোটা বিশ্বাস করিস আমাকে?

-বিশ্বাস পরিমাপ করা যায়?

-যদি কোনোদিন তোকে পুরো পৃথিবী আর এই বিশ্বাসের মাঝে কোনো একটা বেছে নিতে হয়,তোর সিদ্ধান্ত কোনটা হবে‌ সিয়া?

ধক করে উঠলো ভেতরটা আমার।তবুও নিজেকে সামলে তারদিক এগিয়ে গেলাম।তার চোখে চোখ রেখে‌ শক্তভাবে বললাম,

-আপনার জন্য সব করতে শিখেছি আমি শুদ্ধ।সব করতে পারবো আপনার জন্য।তাহলে আপনাকেই কি করে বিকল্পে রাখবো বলুন?

শুদ্ধ শক্ত করে জরিয়ে ধরলেন আমাকে।আলতোভাবে তার পিঠে হাত রাখলাম।নিজের অজান্তেই খামচে নিলাম তার মেরুন শার্টটা।এই বাহুডোরে থাকতে পারাটাই যে আমার জীবনের প্রাপ্তি।আর কিছুই চাইনা আমার।কিছুই‌ না!

.
ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই খাওয়াতেই পুর্ন মনোযোগী।আমার ভেতরটা শুধু খচখচ করছে।কাল থেকে যেসব কথা শুনতে হচ্ছে আমাকে,তা যেনো কোনো ঝড়ের আভাস দিচ্ছে।যা সবটা এলোমেলো করে দেবে আমার।বারবার মনে হচ্ছে কোনোভাবে শুদ্ধ কোনো বিপদে জরিয়ে যাচ্ছেন।কিছু তো হয়েছে ওনার।কিন্তু কি?উনি তো কোনো খারাপ কাজে জরাবেন না।তবে কেউ কি ফাসাতে চাইছে ওনাকে?কেউ কোনো ক্ষতি চায় তার?কে?কেনো?

-মিস্টার রায়হানের ব্যাংক একাউন্ট পুরোটাই হ্যাক হয়ে গেছে শুদ্ধ!

আব্বুর কথায় ধ্যান ভাঙলো আমার।আবারো হ্যাকিং?শুদ্ধ খাওয়া থামিয়ে আবারো স্বাভাবিকভাবে খেতে লাগলেন।বললেন,

-শুনেছি।

-এটা জানো?ব্যাংক রোবাররা শুধুমাত্র তার একাউন্টই টার্গেট করে থেমে নেই।মিস্টার আসলাম,মিস্টার তৌহিদসহ আরো কয়েকজন বিখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট আর রাজনৈতিক‌ নেতাদের একাউন্টও হ্যাক করার প্লান ছিলো ওদের।আর সবচেয়ে শকিং যেটা হলো,হ্যাকারদের ইউআরএল‌ আমাদের অফিসেই ট্র্যাক হয়েছে।

শুদ্ধ খাওয়া থামিয়ে দিলেন এবার।আব্বুর দিকে তাকিয়ে বললেন,

-সো হোয়াট আব্বু?আমাদের অফিসে ট্র্যাক হওয়াটা আমাদের অফিসের কেউ সে কাজ করেছে তার কোনো এভিডেন্স নয়।অফিসে হাজারো ক্লায়েন্টস্ আসে,তাদের পিএ,নন অফিসিয়াল পিওনসহ,বিভিন্ন গ্রুপের ম্যানেজারস্,এমনকি ওনাররা‌ পর্যন্ত বিজনেস ডিল করতে আসে।যদি কেউ অফিসে বসে এইসব করে থাকে তবে সেটা আমাদের দায় নয়।ঠিকমতো ইনভেস্টিকেট না করে এইসব রোবারিতে আজাদ গ্রুপের নাম জরাতে পারেন না ওনারা।

-এক্সাক্টলি।একারনেই মিডিয়া চুপ।পুলিশ ইনভেস্টিকেশন ছাড়া যদি কোনো এলিগেশনস্ আনে,তাদের দেখে নেবে এই আসাদুজ্জামান আজাদ।এটা ওরা জানে।তাই বিষয়টা এখনো আড়ালে।বাট শুদ্ধ,ওরা আমাদের কাছেও হেল্প চায়।সিটিজেন হিসেবে,যে অফিসের দিকে আঙুল উঠেছে সে অফিসটা আমাদের,আজাদ গ্রুপের ফাউন্ডার হিসেবে আমাদেরও উচিত ওদেরকে‌ যতোদুর সম্ভব হেল্প করা তাইনা?তাই আমি সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ পাঠিয়ে দিয়েছি ওদের।

শুদ্ধ একটু ভ্রুকুচকে থেকে‌ শান্তভাবে বললেন,

-ভালো করেছো।

-তোমার কাউকে সন্দেহ হয় শুদ্ধ?

শুদ্ধ চুপ করে গেলেন আবারো।আমি শুধু তার দিকে তাকিয়েই আছি।আম্মু বললো,

-এসব কথা এখন থাক না!খেতে দিন ছেলেটাকে।আর আপনিও খেয়ে নিন।যা হবার তা দেখা যাবে।পুলিশ তদন্ত করে অবশ্যই বের করবে আসল অপরাধীকে।তাছাড়া,সে যেই হোক,অফিসের কেউ,বা বাইরের,শাস্তি তো পাবেই।এ নিয়ে আপনারা এতো বেশি ডিস্টার্বড্ হবেন না!

আম্মুর কথা শেষে পরিবেশটা আরো ভারী হয়ে উঠলো।মাহি বললো,

-ফুপি,শুদ্ধ ভাইয়া আর ইনসিয়া ভাবির বাইরে কোথায় যাওয়া দরকার তাইনা?

মাথা নিচু করে রইলাম আমি।অপেক্ষা!শুদ্ধের মতামতের!আম্মু বললো,

-ঠিক‌ বলেছিস মাহি!শুনছেন?ছেলেমেয়েদুটো বিয়ের পর থেকে সেই বাসাতেই রয়েছে।ওদের….

আব্বু বললেন,

-কোথায় যেতে চাও শুদ্ধ?ইনসু?তোর কি মত?

আমি কিছু বলার আগেই শুদ্ধ একদম স্বাভাবিকভাবে বললেন,

-মাস তিনেক পর ইউএসে সেটেল্টড্ হওয়ার প্লান আছে।

বিস্ফোরিত চোখে শুদ্ধের দিকে তাকালাম আমি।বাকি সবাইও অবাক চোখে তাকিয়ে তার দিকে।শুদ্ধ ওভাবেই খাওয়ায় ব্যস্ত।আম্মু বললো,

-মানে?

খাওয়া থামিয়ে শুদ্ধ মাথা তুলে বললেন,

-এক‌ ফ্রেন্ডের ফিয়ন্সের।ও বলছিলো,ওর ফিয়ন্সে নাকি ইউএস যাচ্ছে,স্টাডির জন্য।আর এসব কথা ওই ফ্রেন্ড আজই জানলো।ও ইনস্ট্যান্টলি ডিসাইড করে ফেলেছে ওর সাথে যাওয়ার।ইনফ্যাক্ট,বিয়েটাও করে ফেলবে,এজ সুন এজ পসিবল।

শ্বাস ফেললাম আমি।শুদ্ধ যদি আগের কথার সাথে এই ফ্রেন্ডের ফিয়ন্সে জুরে না দিতো,দম আটকে মরে যেতাম।মাহি বললো,

-ওই ভাইয়ার ফ্যামিলি?

-সবাই মিলেই যাচ্ছে।

বিষয়টা ভাবতেও ভালো লাগছিলো।কোনোভাবে এমনটা কি আমার সাথেও হতে পারতো?হয়তো পারতো।শুদ্ধ কতো ভালোবাসেন আমাকে।আম্মু,আব্বুও।কিন্তু আমি আমার জন্য শুধুশুধু কেনো সবাইকে…
শুদ্ধ বললেন,

-হাহ!ব্যাপারটা ওয়াইরড্ তাইনা?যারা লাইফটাইম একসাথে থাকার প্লান করছে,তাদের মধ্যে ক্ষনিকের বিচ্ছেদের কতো ভয়!এই আজব জিনিসটাই ভালোবাসা!

-হুউউউম।তা শুদ্ধ ভাইয়া?কোথায় যেতে চাচ্ছো বউকে নিয়ে?বললে না?

-অফিসিয়াল এতোসব ঝামেলার মধ্যে বেরোতে চাচ্ছি না কোথাও।সিয়া?তুই কি….

-ন্ না।আমারো কোথাও যাওয়ার ইচ্ছে নেই।

কথা এ অবদিই থামলো।কিন্তু সবার দিকে তাকিয়ে একটু অদ্ভুত লাগছিলো।শুদ্ধ বাদে মুচকি মুচকি হাসছে সবাই।কিন্তু কেনো?কি এমন কথা হলো এখানে?আমার হাসি আসছে না কেনো তবে?

__________

অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছেন শুদ্ধ।বইখাতা কিছুক্ষন ঊল্টেপাল্টে বিদ্যানদী ভাব ধরে বেরিয়ে এলাম রুম থেকে।সোজা মাহির রুম।কিছুক্ষন একথা সেকথা বলতেই ফোন বেজে উঠলো আমার।আননোন নাম্বার।কেটে গেলো কয়েকবার।আবারো কল আসলো।মাহি বললো,

-রিসিভ করো।হয়তো কারো আর্জেন্ট!

কিছুটা সময় নিয়ে রিসিভ করে সালাম দিলাম।ওপাশে পুরুষালি কন্ঠ।সালামের উত্তর নিয়ে বললেন,

-কেমন আছো ইনসিয়া?

-জ্বী,আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি…

-আয়ান চৌধুরী।

অপ্রস্তুত হয়ে পরলাম আমি।এই লোকটা আমার নাম্বার কোথায় পেলো?আমাকে কেনো কল করেছে?

-হ্যালো?

-জ্ জ্বী ভাইয়া।বলুন।

-ফ্রি আছো?

-জ্ জ্বী মানে….

-একটা গল্প শুনবে?

কপাল কুচকে আসলো আমার।গল্প শুনাতে ফোন করেছেন উনি আমাকে?জোরপুর্বক হেসে বললাম,

-ক্ কিসের?

-একজনের জীবনের গল্প।

-আসলে,ভাইয়া….

-প্লিজ!অল্প একটু সময় নেবো!

ভালো লাগছিলো‌ না তার কথা শুনতে।কিন্তু ফোনটা কেটে দিলে বিষয়টা বাজে দেখাবে।পাশে মাহি অতিআগ্রহ নিয়ে বসে।শুনেছে হয়তো আয়ান চৌধুরীর গলা।এখন কথা না বললে যদি শুদ্ধ জানতে পারেন কোনোভাবে,কষ্ট পাবেন উনি।আয়ান বলতে তো সে আবার…বললাম,

-জ্ জ্বী ঠিক আছে।বলুন।

-ভাইয়ু জানিস?ছেলেটা একদম আলাদা।সবার থেকে আলাদা।হাজারজনের মধ্যেও চোখ পরে যাবে তারদিকে।শত মানুষের ভীড়েও তার হাসিটা চোখে পরবে তোর।জানিস,ছেলেটা কেমন যেনো।সামনে আসলে সাথে করে কিছু ম্যাজিকাল মোমেন্টস্ নিয়ে আসে।যখন সে সামনে আসে,ভেতরে এক অদ্ভুত সুখ অনুভুত হয়।চারপাশ আনন্দে আন্দোলিত হতে শুরু করে।প্রথমবার যখন তাকে দেখেছিলাম,তার গাড়ি রাস্তার কাদায় জরিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো আমাকে।কিন্তু তার কথা,ব্যবহার,সেদিনই ভালোবাসায় জরিয়ে দিয়েছিলো আমার মনকে।

যখন সে কথা বলে,বাকা হেসে আমায় চাদ সওদাগর বলে ডাকে,প্রতিবার,প্রতিবার জানিস তো ভাইয়ু?আমার মনে হয় আমি হয়তো সত্যিই তার মনের সওদাগর হয়ে উঠেছি।যখন এসে শাষনের মতো করে বলবে,এইযে সওদাগর,বিদেশ থেকে কি সওদা করেছো হুম?এইসব লেইট নাইট পার্টির সংস্কৃতি?এইসব হাজারটা বন্ধুবান্ধবী বানানো?এগুলো কিন্তু এদেশে নট আলাউড!তখন আমার মনে হতো জানিস ভাইয়ু,মনে হতো,এই শাষনটার জন্য আজীবন সবটা সওদা করতে রাজি আমি।সবটা!জানিস ভাইয়ু?সে মানুষটা কিন্তু….

শেষ হয়নি তার বলা।কান থেকে নামিয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম ফোনের দিকে।হুট করে একটা মেয়ের আওয়াজে এতোগুলো কথা শুনে অবাক হলাম।তবে এটা বুঝতে সমস্যা হলো না কথাগুলোতে কারো জন্য অনেকটা ভালোলাগার বসবাস।

-কি বুঝলে ইনসিয়া?

-ক্ কে ইনি?

-আমার বোন।মুনিয়া।

-ওনার….

-যাকে এতোটা ভালোবেসেছিলো,সে ওকে রিফিউজ করেছে ইনসিয়া।তবুও মুন বিশ্বাস করতো,একদিন সে ঠিক তার ভালোবাসা বুঝবে।কিন্তু তা হয়নি।আমার বোনের এতো ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে সে ইনসিয়া!বিয়ে করে নিয়েছে!তার বিয়ের দিনই বোন আমার সুইসাইড এটেমপ্ট করে।মেন্টাল ট্রমাটা এতো বেশি ছিলো ওর,আমার ফুলের মতো ফুটফুটে বোন এখন মেন্টাল এসাইলামে।শুনতে পাচ্ছো তুমি ইনসিয়া?মুনিয়া এখন একজন মানসিক রোগী!সারাদিন শুধু সেই ছেলেটাকে নিয়ে এভাবেই বলতে থাকে।বলার কোনো শেষ নেই ওর।সেই‌ ছেলের বিয়ে হয়েছে,ও…ও এটাও মানতে পারে না।শুনতে চায় না।বলা যায়,কানেই তোলে না।এখনো বিশ্বাস ওর,সে ফিরবে।ওর কাছেই ফিরবে।

কি দোষ ছিলো ওর বলো ইনসিয়া?কি দোষ ছিলো?শুধু ভালোবেসেছিলো।অনেকটা ভালোবেসেছিলো।তার ফল এভাবে ভোগ করতে হচ্ছে ওকে।আমি ভাই হয়ে কি করে সবটা মেনে নেবো বলো?কি করে?কি করে‌ দেখবো নিজের বোনকে এভাবে কুড়ে কুড়ে মরতে?বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই যাকে কোনোদিন কোনোকিছুর অভাব অনুভব করতে দেই নি।কি করে তার জীবনে এতোবড় অভাব রাখি আমি‌ বলো?ভালোবাসার অভাব রাখি কি করে?বলো ইনসিয়া?বলো?

কি বলা উচিত আমার কিছুই‌ বুঝে উঠছিলাম না।আয়ান আবারো বললেন,

-আমি ভেবে নিয়েছি জানোতো ইনসিয়া।সেই‌ ছেলেকে যে করেই হোক,আমি ফিরিয়ে দেবো ওর জীবনে।যে করেই হোক!

এবার কোনো অজানা ভয় হতে লাগলো আমার মনে।একটা শুকনো ঢোক গিলে বললাম,

-ছ্ ছেলেটা ক্ কে?

-জানলে কি করবে?ওকে মুনিয়ার জীবনে ফিরিয়ে দেবে?তুমি পারবে ইনসিয়া!প্লিজ ফিরিয়ে দাও ওকে।ছেলেটা শ্….

বাকিটা শোনার সাহস ছিলো না আমার।চেচিয়ে বলে উঠলাম,

-মুনিয়ার ভালোবাসাটা একপাক্ষিক ছিলো ভাইয়া।আর সে মানুষটাও বিবাহিত!তার বউ আছে,সংসার আছে।সে তার জীবনে…

আমার কথা শেষ করতে না দিয়ে এবার আয়ান ভাইয়া চেচিয়ে উঠলেন।বললেন,

-ও!তাহলে তোমাকে বলার মানে সেই একই দাড়ালো?তুমিও এটাই বলবে?আমার বোনের দিকটা তুমিও ভাববে না!বেশ!ভাবতে হবে না কাউকে!আমিই‌ ভেবে নেবো!এন্ড ইয়েস,যেভাবে ভেবেছি,সবটা ঠিক সেভাবেই হবে।দেখে নিও!জাস্ট ওয়েট,এন্ড ওয়াচ্!

ফোনটা কেটে গেলো।একছুটে রুমে চলে আসলাম আমি।ভয় করছে।শুদ্ধকে নিয়ে প্রচন্ড ভয় করছে আমার।বারবার মনে হতে লাগলো,যদি মুনিয়ার বলা সেই ছেলেটা শুদ্ধ হয়ে থাকে?কি করবে তবে এই আয়ান চৌধুরী?এ কারনেই কি শুদ্ধর প্রতি তার ব্যবহারের ধরন এমন?শুদ্ধ কেনো তবে এখনো এভাবে বিহেভ করেন ওনার সাথে?সবটা কি আড়ালে ওনার?নাকি পুরোটাই জানেন?আর ঠিক কি কি রহস্য আছে শুদ্ধর মাঝে?তার এই রহস্যর বেড়াজালে কোনোভাবে আমাদের সম্পর্কটা…
না।শুদ্ধকে এই মুখোশধারী বন্ধুর থেকে সাবধান করতে হবে আমাকে।এই লোক পাগল হয়ে গেছে তার বোনের মতোই।যে কারো,যে কোনো কিছু করে দিতে পারে।আর যাই হোক,কোনোভাবে আমার আর শুদ্ধের সম্পর্কে কোনো আঁচ আসতে দেবো না আমি।কোনোভাবে,কোনো ক্ষতি হতে দেবো না শুদ্ধর!কিছুতেই না!

#চলবে….

[ আমি আগেই বলেছি,কাউকে গল্প পড়তে জোর করতে পারি না আমি।এটা নিতান্তই আপনাদের ব্যাপার।আর গল্প প্যাচানো বা টেনে বড় করারও ইচ্ছা নেই আমার।থিম যেভাবে ভাবা সেভাবেই এগোচ্ছে গল্পটা।সেভাবেই লিখবো আমি।গল্পের শুরুটা ছিলো সিয়া শুদ্ধের রোমান্স দিয়ে।আর সামনের পর্বগুলোতে থাকবে রহস্য উন্মোচন,আর নামের সার্থকতা।এন্ডিংটাও সবদিক ভেবেই লিখবো আমি।সবদিক ভেবে!
ভুলত্রুটি মাফ করবেন। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here