তোর নামের রোদ্দুর২ পর্ব 31

0
1132

#তোর_নামের_রোদ্দুর-২
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্বঃ৩১

-কলটা রিসিভ করবেন না শুদ্ধ!প্লিজ ওই কল আপনি রিসিভ করবেন না!!!

শুদ্ধ কপাল কুচকে আমার দিক একটু তাকিয়ে থেকে কলটা রিসিভ করলেন।চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম আমি।রাতটা শুদ্ধর বাহুডোরে কেটেছে,সেই সাথেই যেনো কেটে গেছে মনের সমস্ত ভয়।সকালটাও প্রতিদিনের মতো কপালে তার ঠোটের ছোয়ায় এসেছে।কিন্তু সকাল থেকেই জুটেছে আরেক চিন্তা। আলিফ মৌনতা মিলে পঞ্চাশবারের মতো কল করেছে।রিসিভ করার সাহস হয়নি।ব্রেকফাস্ট শেষে রুমে ঢুকতেই আবারো ফোনটা বেজে উঠলো।আমি এগোনোর আগেই শুদ্ধ পৌছে গেলেন ফোনের কাছে।নাম্বারটা দেখে বললেন,

-ইটস্ মৌনতা!

বারবার মানা করলাম রিসিভ না করতে।শুনলেন না উনি।হ্যালো বলার আগেই ওপাশের কথায় চুপ মেরে গেছেন উনি।চেহারায় অভুতপুর্ব কথা শোনার রিয়্যাকশন স্পষ্ট।কয়েক মিনিট পর তার মুখ থেকে ধীর গলায় বেরোলো,

-হোয়াট দ্যা….

ওটুক আমিই শুনেছি।মৌনতা কোনোকালেই শুনতে পাবে না এখন।সে তো বলতে ব্যস্ত!এভাবে বিয়েটা করে নিয়েছি বলে আমাকে ভেবে নির্ঘাত লঙ্কাকান্ড বাধিয়ে দিয়েছে ফোনের ভেতরেই।শুদ্ধ চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নিয়ে একটু জোরে আকুতির স্বরে বললেন,

-উইল ইউ প্লিইইইজ স্টপ ইট মৌনতা?

ফোন কান থেকে নামিয়ে নিলেন উনি।কল কেটে দিয়েছে হয়তো।শুদ্ধ ফোনটার দিকেই হা করে তাকিয়ে।একটা শুকনো ঢোক গিলে এগিয়ে গেলাম।বললাম,

-ক্ কি কি ব্ বলেছে ও?

উনি ফোনটা হাতে ধরিয়ে দিলেন আমার।বললেন,

-কল রিসিভ করার পর কি কি বলেছে তা বলার মতো না।তবে কল কাটার আগে সুন্দরমতো বললো,
“ইউর নেটওয়ার্ক কভারেজ এরিয়া ডাজ নট এলাও টু কন্টিনিউ দিস কল রাইট নাও।প্লিজ রিট্রাই আ ফিউ মোমেন্টস্ লেটার।থ্যাংক ইউ।টুট টুট টুট!”

আমি ফিক করে হেসে দিলাম।কোনোভাবে কেস খেলে আমিও ওদের সাথে এমনটাই করতাম।শুদ্ধর কথা মনে পরতেই হাসি থেমে গেলো আমার।তারদিকে তাকিয়ে দেখি সুক্ষ্মচোখে উনি হাসতে দেখছেন আমাকে।মেকি হাসি দিয়ে বললাম,

-ইয়ে,কল রিসিভ করার পর যা যা বলেছে ওগুলো আ্ আমাকে ভেবে বলেছে।সো,আ্ আপনি কিছু মনে….

শুদ্ধ মাথা নাড়তে নাড়তে বেডে রাখা ব্যাগটা হাতে নিলেন।অফিসের জন্য বেরোতে যাবেন,কি মনে করে আবারো সামনে এসে দাড়ালেন আমার।বললেন,

-তোর জন্য মৌনতা এতোগুলো কথা শোনালো আমাকে!

-ওগুলো তো আমাকে বলেছে!

-শুনতে তো আমাকে হয়েছে!

মাথা‌ নিচু করে আস্তে করে বললাম,

-সরি।

-সকালবেলায় রেগুলার মর্নিং কিস আদায় করে নিতে এক্সপার্ট মিসেস ডট ডট ডট?আপনার সরি দিয়ে আমার পোষাবে না!

ভ্রুকুচকে তাকালাম।শুদ্ধ হাতের ব্যাগটা বিছানায় রেখে দুহাতে কোমড় শক্ত করে চেপে ধরলেন আমার।কড়া গলায় বললেন,

-শাস্তি হিসেবে আজকে একটা স্পেশাল কিস হজম করতে হবে আপনাকে!

চোখ‌ বড়বড় হয়ে গেলো আমার।বললাম,

-কি?

শুদ্ধ একটা ডেভিল হাসি দিলেন।আশেপাশে তাকালাম।শুদ্ধ সুন্দরমতো এগোতে লাগলেন তার মুখ।চোখ খিচে বন্ধ করে নিলাম।হার্টবিট দ্রুত চলতে লাগলো আমার।হাত পা কাপছে।এরমধ্যেই,

-ইনসিয়া ভাবিইইইইই!

চোখ মেললাম আমি।শুদ্ধ আরো শক্ত করে চেপে ধরলেন আমার কোমড়,যেনো কিছু কানেই যায়নি তার।চোখজোড়া বরং বলছে,আজ এই ডাক কোনোমতে তাকে থামাতে পারবে না।কোনোমতে গলা‌ দিয়ে বেরোলো,

-মাহি….

-দরজা লকড্!আসবে না ও!আর কিছু?

-আ্ আমি….

উনি ওভাবে আমাকে ধরে রেখেই‌ বললেন,

-এক পা নড়লে আজ মাহিকে‌ আজাদ ম্যানশন থেকে‌ বের করে‌ দেবো!

চোখ‌ বন্ধ করে ওভাবেই রইলাম।শুদ্ধ আস্তেধীরে কোমড় ছেড়ে দু গাল ধরলেন আমার।নাক লাগিয়ে আমার গালে ঘষতে লাগলেন উনি।কেপে উঠে জামা খামচে ধরলাম।উনি আলতোভাবে মাথা তুলে ধরে ঠোট ছোয়ালেন আমার থুতনিতে।ঘোর লাগা কন্ঠে বললেন,

-দিস ডট সাইন!

এটুক বলেই উনি ছেড়ে দিলেন আমাকে।চোখ খুলে দম আটকে দু সেকেন্ড দাড়িয়ে রইলাম।শুদ্ধর সেই বাকা হাসি!একছুটে দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম রুম থেকে।দরজায় মাহিকে হা করে তাকিয়ে থাকতে‌ দেখলাম।ওর রুমেই এসে খাটে হাটু জরিয়ে বসে পরলাম আমি।কান গরম হয়ে গেছে আমার।মাহি রুমে ঢুকে বললো,

-কি হয়েছে ইনসিয়া ভাবি?এভাবে লাল হয়ে যাচ্ছো কেনো?গরম লাগছে?

কি বলবো ওকে?লজ্জা?লজ্জায় আমি এভাবে…ছিঃএটা মাহির চোখে পরছে?তাহলে তো শুদ্ধও দেখেছেন!দুহাতে মুখ ঢেকে নিতে গিয়েও থেমে গেলাম।কোনোমতে নিজেকে সামলে গলা ঝেড়ে বললাম,

-ক্ কই?কিছু না তো!

-আর ইউ‌ শিওর?অবশ্য তোমার খবর তুমি বলতে পারবে না।ওয়েট!শুদ্ধ ভাইয়াকে জিজ্ঞাসা করি।শুদ্…..

উঠে দাড়িয়ে ওর মুখ চেপে ধরে বললাম,

-আরে আরে করছো টা কি?

-সিয়া?আসছি আমি!

শুদ্ধর গলা।অফিসের জন্য বেরোচ্ছেন।আগে উনি যাক,তারপর এই রুম থেকে বেরোবো আমি।মাহির কথা যদি সত্যি হয় তবে এই লাল মুখ‌চেহারা নিয়ে তার সামনে যাওয়া অসম্ভব আমার।একেবারে ইম্পসিবল যাকে বলে!

__________

বইয়ের দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছি।শুদ্ধ বেরিয়েছেন দশ মিনিটও‌ হয়নি।রুমে এসে বেডে চিরকুট পেলাম।তাতে লেখা,
“লক্ষ্মী বউয়ের মতো লিস্টের টপিকগুলো পড়ে কমপ্লিট করে রাখবি।নইলে আমার শাস্তির ডেমো সবেমাত্র পেয়েছিস তুই!”
টেবিলে তাকালাম।মনে হচ্ছে বইগুলো চেচিয়ে বলছে,তোর আমাদের স্পর্শ করার কোনো অধিকার নেই!দুরে থাক!যতই চেষ্টা করিস,কোনোদিনও তুই আমাদের মন পাবি না!একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।এরমধ্যে ফোনটা বেজে উঠলো।মৌনতা!ফোন রিসিভ করতেই,

-সরি,সরি,সরি,সরি…….

কান থেকে নামিয়ে নিলাম ফোনটা।দশ সেকেন্ড পর কানে নিয়েও,ওর সেই সরি।জোরে শ্বাস ফেলে বললাম,

-এবার থাম!

-ইনসু,আমি কিন্তু শুদ্ধ ভাইয়াকে….

-হয়েছে।আর বলতে হবে না।

-ইনসু,আমি….

-ন্যাকামো থামাবি?

-আমি ন্যাকামো করি?

-মনু!প্লিজ ইয়ার।এই টপিক ছাড়!শুদ্ধকে বলেছি আমি।উনি রাগ করেননি তোর উপর।

-রিয়েলি?গ্রেট!তবে তুই এটা কি করলি‌ বলতো?এভাবে বিয়ে….

এইরে!আবার ওই কথা!শক্তভাবে বললাম,

-আলিফের মতো বিয়ের ভোজনের ভজন শুরু‌ করিস না ইয়ার!রাগটা কিন্তু পুরোপুরি কমেনি তোর উপর আমার!

ডাহা মিথ্যে কথা বললাম।মনেমনে এক চিমটি ভালোবাসা।তোর কথার জন্যই শুদ্ধ তখন…..গলা ঝেড়ে বললাম,

-আছিস?

-হুম।আচ্ছা,ইনসু শোন!আমি এমন একটা কথা বলবো না এখন,তোর রাগ উড়ে যাবে একদম!

-কি এমন কথা?

-বলছি।আগে বল তুই বসে?নাকি দাড়িয়ে?

-কেনো?

-দাড়িয়ে থাকলে জলদি কোথাও বসে পর!কারন আমি তোকে এমন নিউজ দেবো না,তুই লাফিয়ে উঠবি একদম!পরে যাবি!

-হেয়ালি না করে বলনা কি?

-ইনসুউউউউ,ইউএসের যে ভার্সিটিতে তুই এপ্লাই করতে চেয়েছিলি,কালই ওটার এডমিশন এপ্লিকেশন শুরু হয়েছে!এন্ড গেইস হোয়াট?ফরেইনারদের জন্য লাস্ট ডেট ফিক্সড্ করেছে আগামী মাসের বারো তারিখ।আর নতুন সেমিস্টারের ক্লাস শুরু তিনমাস পর থেকেই!

চোখ‌ চকচক করে উঠলো আমার।বসা থেকে দাড়িয়ে গেছি আমি।কিন্তু পরমুহুর্তেই টেবিলে থাকা শুদ্ধর ছবিটায় চোখ পরতে সামলে নিলাম নিজেকে।শুদ্ধকে পেয়ে আমি পরিপুর্ন!এটুক ভেবেই হাসি টানলাম‌ ঠোটে।মৌনতা বললো,

-কিরে?কেমন দিলাম?এবার এটা বলিস না তুই আগেই দেখেছিস এটা।কজ আমি জানি,তুই দেখলে অবশ্যই আমাকে বলতি।আফটার অল তোর লাইফের মটো….

মৃদ্যু হেসে বললাম,

-আমি এপ্লাই করছি না মনু।

-হোয়্…ওয়েট!মজা করিস না ইনসু!আমি সত্যি বলছি!সত্যিই এডমিশন এপ্লাই শুরু হয়েছে!

-আমিও সিরিয়াস!আমার সত্যিই ফরেইন‌ ডিগ্রির কোনো ইচ্ছে নেই আর।

-কি‌ বলছিস টা কি তুই‌ ইনসু?

-ঠিকই বলছি মনু।চাইনা‌ ইউএস যেতে।চাইনা ওখানে পড়তে।আমি সারাটা জীবন শুদ্ধের কাছে,ওনার ছায়া হয়ে থাকতে চাই।পড়াশোনাটা তো এখান থেকেও করতে পারবো!কিন্তু তাকে ছেড়ে থাকতে পারবো না!ওনাকে ছাড়া নিজেকে‌ কল্পনা করতে পারি না আমি মনু!আমি মর্….

-ওকে ওকে রিল্যাক্স!রিল্যাক্স ইনসু!এটা টোটালি তোর ডিসিশন!কেউ জোর করছে না তোকে।কিন্তু এটা তোর স্বপ্ন রাইট?তুই শুদ্ধ ভাইয়াকে বল যে…

-না না!ওনাকে বলা যাবে না কোনোভাবে!

-কেনো?রাগ করবেন ভাইয়া?মানা…

-কি বলছিস তুই মনু?উনি কখনো মানা করবেন‌ না আমাকে।উল্টো যদি কোনোভাবে জানতে পারলে সবরকমের ব্যবস্থা করে জোর করেই আমাকে ওদেশে পাঠিয়ে দেবেন মনু!কিন্তু আমি ওনাকে ছাড়া থাকতে পারবো না!ওনাকে….

-তো ভাইয়াও যাবে তোর সাথে!এতে…

-না।আম্মু,মানে শুদ্ধর আম্মু ওনাকে ছাড়া থাকতে পারে না।তেমনটা শুদ্ধও।আমি আমার জন্য তাদের…তাছাড়া আমার আব্বুও শুদ্ধকে নিয়ে…

-আঙ্কেল?

-ও কিছু না।শোন মনু!তুই‌ এ বিষয়ে আর কোনোদিন কারো সাথে কথা বলবি না।কারো সাথেই‌ না!

-বাট….

-এ নিয়ে কথা বললে আমাদের বন্ধুত্ব এখানেই শেষ মনু!আমিও আজই যীনাত আপুসহ বাসার বাকি সবাইকে‌ও বলে দেবো!এই কথাটা কোনোভাবেই যেনো শুদ্ধর কানে না যায়!আমি সবটা হারাতে রাজি,ওনাকে নয়!

মৌনতা কিছুক্ষন চুপ থেকে বললো,

-ইনসু?তুই‌ ভালোবাসিস শুদ্ধ‌ ভাইয়াকে!

আমিও একটু থেমে গেলাম।ও‌ আবারো বললো,

-তোর কথায় স্পষ্ট ইনসু!তুই‌ শুদ্ধ ভাইয়াকে ভালোবাসিস!তার জন্য সব ছাড়তে পারিস তুই!

চোখ বন্ধ করে একটা জোরে শ্বাস নিলাম।সত্যিই তাই।তার জন্য সবটা ছাড়তে শুরু করেছি আমি।

-ইনসু?ভালোবাসিস তুই ভাইয়াকে!

-হ্যাঁ।ভালোবাসি তাকে।খুব ভালোবাসি।

-কখনো বলেছিস?

….

-কি হলো?কথা‌ বলছিস না কেনো?কখনো বলেছিস?

-উহুম।

-হোয়াট?তোর মনে হয় না ইনসু এতে ভাইয়া ঠিক কতোটা কষ্ট পাচ্ছেন?এই একটা কথা তোদের রিলেশনটাকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারে ইনসু!কেনো শুধুশুধু তাকে অপেক্ষায় রেখেছিস বলতো?

-মনু,সে আমাকে সে সুযোগ্….

-বাহানা‌ দিস না ইনসু!যদি ভালোবাসিস,তবে বাহনাকে কেনো সুযোগ দিচ্ছিস তোদের মাঝে দুরুত্ব এটে দিতে?

-মনু….

-কি?কি বলবি তুই আর?সত্যি করে বল তো!অস্বীকার করতে পারবি,এই ভালোবাসি না বলা কথার ভাজে তোদের মধ্যে দুরুত্ব তৈরী হচ্ছে না?

-জানি না আমি মনু।উনি….

-আর কোনো কথা না ইনসু!ওনাকে কেনো একপক্ষ করে দিচ্ছিস তুই বলতো?বর উনি তোর!তুই বউ ওনার!

….

-লিসেন ইনসু?তুই আজই‌ শুদ্ধ ভাইয়াকে বলবি,তুই তাকে‌ ভালোবাসিস!নইলে…নইলে আমি ভাইয়াকে তোর স্টাডিপ্লান‌ নিয়ে সবটা বলতে বাধ্য হবো!এন্ড ইয়েস!আ’ম সিরিয়াস!

ও‌ ফোনটা কেটে দিলো।চুপচাপ‌ সবটা ভাবতে লাগলাম আমি।ভুলটা কি‌ বলেছে ও?ঠিকই‌ তো!শুদ্ধ আমার বর!আমি বউ‌ হই ওনার!উনি আমাকে‌ ভালোবাসেন!প্রতিমুহুর্তে তার ভালোবাসার উপমায় রাঙাচ্ছেন উনি আমাকে।আর আমি?কেনো বেধে রেখেছি নিজেকে?কেনোই বা নিজের অনুভুতিগুলো প্রকাশ করছি না শুদ্ধর কাছে?কি কারনে?আব্বু?তাকে,তার মেনে নেওয়াকে তো শুদ্ধ পরিস্থিতির উপর বিবেচনায় রেখেছেন।তবে আমাদের ভালোবাসা কেনো সে পরিস্থিতির স্বীকার হবে?আমাদের দুজনের অনুভূতি কেনো আড়ালে রবে?কেনো?

না!কোনো মানে হয় না এর!আর এভাবে থাকতে পারবো না আমি।নাইবা শুদ্ধকে এভাবে আমার অনুভুতির আড়ালে রাখতে পারবো।যা হবার হবে!আজ শুদ্ধকে বলবো,আমিও তাকে ভালোবাসি!তার শ্যামাপাখিও তাকে ভালোবাসে!আজ চিৎকার করে বলবো আপনাকে শুদ্ধ,খুব ভালোবাসি আপনাকে!খুব ভালোবাসি!

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here