#তোর_নামের_রোদ্দুর-২
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্বঃ২৪
-আমার আর সিয়ার বিয়েটা আজই হচ্ছে ছোটকাকু!
কথাটা শেহনাজ মন্জিলে বাজের মতো পরলো যেনো।ড্রয়িংরুমে থাকা প্রতিটি মানুষ শুদ্ধর দিকে তাকিয়ে।তাদের একেক জনের চাওনি একেকরকম।কেউ স্বস্তিতে,কেউ খুশিতে,বেশিরভাগ বিস্ময়ে আর কেউ তীক্ষ্মচোখে কপাল কুচকে তাকিয়ে শুদ্ধর দিকে।আমি রিয়্যাক্ট করাটাই ভুলে গেছি।মাথার উপর দিয়ে গেছে কথাটা।জীবনটার মতো চারপাশটাও ধোকা মনে হচ্ছে শুধু।এতোসবের মধ্যেও শুদ্ধ একধ্যানে আমার দিকে তাকিয়ে মৃদ্যু হাসি নিয়ে দাড়িয়ে।কিছুক্ষন আগে বলা কথাটার কিঞ্চিত রেশ নেই তার চেহারায়।ঠিক কাল সন্ধ্যের মতোই।
.
আগেরদিন সন্ধ্যায় শুদ্ধ আর কিছুই বলেন নি আমাকে।কিছুটা সময় ওভাবেই বৃষ্টিতে দাড়িয়ে ছিলেন উনি।তারপর হঠাৎই চোয়াল শক্ত করে এগিয়ে এসে আমার হাত ধরলেন।বিস্ময়ে কান্না থেমে গেলো আমার।রুমে নিয়ে আসছিলেন উনি আমাকে।কিন্তু দীদুন সামনে পরে গেলো।
-দাদুভাই?তুমি কখন এসেছো?এভাবে ভিজেছো কেনো দুজন?
-পরে সবটা বলছি দীদুন।সিয়া ভিজে আছে।জ্বর হবে ওর।
শুদ্ধের কথায় দীদুন পথ ছেড়ে দিলো।শুদ্ধ ওভাবে হাত ধরেই রুমে নিয়ে আসলেন আমাকে।রুমে এসে ইরামকে পেলাম এসাইনমেন্টের কাগজপত্র নিয়ে।শুদ্ধ দরজা লাগিয়ে তোয়ালে দিয়ে আমার মাথা মুছতে মুছতে বললেন,
-ছোটকাকু কোথায় ইরাম?
অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো ও।শুদ্ধর এমন আগমনে ওর ওমন রিয়্যাক্ট করাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়ও।আমি নিজেই তার ব্যবহারে ফ্রিজড হয়ে আছি যেনো।শুদ্ধ ভ্রু নাচিয়ে আবারো ইরামকে বুঝাতেই ও ধ্যান ছেড়ে বলল,
-আব্বুকে সবে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে দেখলাম।উনি কাদছি্….
শুদ্ধ হাত দিয়ে থামিয়ে দিলেন ওকে।তোয়ালেটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে কাবার্ড থেকে একটা জামা এনে হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,
-চেন্জ করে আয়!
-আপনি যান।আমি….
-আমি যা বলছি তাই হবে।কথা বাড়াস না।হুম?
এতোটা শান্ত গলা!শিউরে উঠলাম আমি।শুদ্ধর রাগ দেখানোর চেয়ে এই নিরবতা আর ঠান্ডা আওয়াজে বেশি ভয় আমার।বিস্ময়ে তারদিক তাকিয়ে রইলাম।আবারো হাতে থাকা জামাটার দিকে ইশারা করলেন উনি।চুপচাপ ওটা নিয়ে চেন্জ করে আসলাম।আর যাই হোক,বিয়েটা হবে না।আপাতত আব্বু না আসা অবদি যে করেই হোক ওনাকে শান্ত রাখতে হবে।আমি বেরিয়ে এসে দেখি শুদ্ধ ভেজা জামাকাপড়েই আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুলগুলো হাতে উল্টাচ্ছেন।আয়নায় আমাকে দেখে ইরামকে বললেন,
-ইরাম?ডিনারের পর জ্বরের ওষুধটাও দিয়ে দেবে ওকে ঠিকাছে?আমি খোজ নেবো কিন্তু!আর হ্যাঁ,আমি এসেছি এটা কাউকে বলো না কেমন?কাউকেই না।
ইরাম মাথা দুলালো।শুদ্ধ এগোলেন আমার দিক।আমার গালে একহাত রেখে হাসিমুখে বললেন,
-লক্ষ্মী বউয়ের মতো ওষুধটা খেয়ে নিস হুম?সুইট ড্রিমস্!
শুদ্ধ বেরিয়ে চলে গেলেন।দুহাত বুকে জরিয়ে ধরে বিছানায় বসে পরলাম।কান্না থেমেছে আগেই।কিন্তু শুদ্ধের কথা!ওনার বউ ডাক!কাপতে শুরু করলাম আমি।তাড়াতাড়ি চাদর মুড়িয়ে ইরাম শুইয়ে দিলো আমাকে।রুম থেকে বেরোইনি আর।আম্মু এসে বৃষ্টিতে ভেজা নিয়ে রচনা শুনিয়ে খাইয়ে দিয়ে গেছে,আব্বু একবার এসে পেছন থেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে গেছেন।ইরাম ওষুধও দিয়েছিলো।খাইনি।সারারাত মাথায় শুদ্ধর চিন্তা ঘুরপাক খেয়েছে।সকালে রুমের বাইরে বেরিয়েছিলাম একবার।শুদ্ধ ছিলেন না।কিন্তু দুপুর গরিয়ে যেতেই লাগেজ আর এতোএতো ব্যাগপত্র হাতে বাসায় ঢুকলেন উনি।আব্বু বিস্ময় নিয়ে বললেন,
-তুমি?এখানে?
-আনএক্সপেক্টেড?
এরমধ্যেই সেজোকাকুও বাসায় ঢুকতে ঢুকতে বললেন,
-এই ছেলেকে নিয়ে আর পারি না।হুট করে নিজে বেরিয়ে এলো তো এলো,আবার আমাকেও এভাবে চলে আসতে বললো!
বড়মা বললো,
-আসাদ ভাই?আপনি?আপনাকেও শুদ্ধ…
-এসবের মানে কি সেজোভাই?হঠাৎ এভাবে….
-দু মিনিটে সবটা ক্লিয়ার করে দিচ্ছি ছোটকাকু!তোমার মতো দু বছর নানা রঙে নিজেকে প্রকাশ করে সবার ইমোশোনস্ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কোনো ইচ্ছে আমার নেই!
আব্বুকে সোজা জবাব দিয়ে আমার দিকে তাকালেন শুদ্ধ।চোখ নামিয়ে নিলাম আমি।হাত পা কাপছে আমার।ছুটে চলে যেতে পারলে ভালো হতো।কিন্তু এতোটুকো জোর পাচ্ছি না গায়ে।উনি বললেন,
-রাতে ওষুধটা খাস নি তাইনা?
আমি চুপ রইলাম।এরমধ্যেই যীনাত আপু ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে ডাক লাগালো,
-ইনসু….
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে ওর দিকে।আপু এসে দৌড়ে জরিয়ে ধরলো আমাকে।কান্না পাচ্ছিলো।তবুও কাদিনি।মাথা গুজে থেকে পাথর হয়ে দাড়িয়ে রইলাম।যেনো ও ছেড়ে দিলেই আমি পরে যাবো।আব্বু বললেন,
-যীনাত?তুমি এখন?এখানে?ইমা একা আসতে দিলো তোমাকে?
সেজোকাকু বললেন,
-আসার সময় ইমার বাসায় গিয়ে আমি নিয়ে এসেছি ওকে।তাই আসতে দিয়েছে।
বড়কাকু সবে বাসায় ঢুকলেন।সবাইকে দেখে বললেন,
-কি ব্যাপার?সবাই?এখানে?
-শেহনাজ মন্জিলে আজ বিয়ে।দু একজন বাড়তি লোকজন না আসলে চলে?
বিস্ফোরিত চোখে তাকালাম তারদিক।কি করতে কি চাইছেন উনি?মেজোমা বললো,
-মানে?কার বিয়ে?কিসের বিয়ে শুদ্ধ?
শুদ্ধ আব্বুর দিকে এগিয়ে পকেটে দুহাত গুজে বললেন,
-আমার আর সিয়ার বিয়েটা আজই হচ্ছে ছোটকাকু!
.
কথাটা শেষ হলো ঠিকই,কিন্তু তার ফল?কি হতে চলেছে আবার?চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো আবারো।সেজোকাকু শুদ্ধর পেছন থেকে বললেন,
-আলহামদুলিল্লাহ্!
তারপরই কাউকে ফোন করে বলতে লাগলেন,
-আজাদ ম্যানশনকে নববধুর মতো সাজিয়ে দাও।ও বাসার একমাত্র বউমা আজ বধুবেশে পা ফেলবে ও বাসাতে।আয়োজনে যেনো কোনো ত্রুটি না থাকে।তুমি তো জানোই,তুমি ছাড়া এতোবড় দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার কেউ নেই আমার।আর হ্যাঁ,তোমার আন্টিকেও জানিয়ে দাও।আমি তাড়াতাড়িই ফিরছি।শুদ্ধ আর ওর বউকে নিয়ে।
দম মেরে দাড়িয়ে আমি।শুদ্ধ যীনাত আপুকে লাগেজটা এগিয়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-ওকে সাজিয়ে দাও যীনাত আপু।এই শুনশান শেহনাজ মন্জিল যতটা সাদামাটা হয়ে আছে,আমার সিয়াকে আজ তার থেকে হাজারগুন বেশি সাজে সাজাবে!ইমরোজ,তামিম ভাইয়া,রিফাত ওরা সবাই আমার বাসরঘরের দায়িত্ব নিতে সকালেই আজাদ ম্যানশন পৌছেছে কিন্তু!
তখনই তিনচারটে মেয়ে বাসায় ঢুকলো।চাকমাদের মতো চেহারা,হাতের ব্যাগপত্র বলে দিচ্ছে ওরা পার্লার থেকেই এসেছে।শুদ্ধ হেসে হাত বারিয়ে আমার দিকে পথ দেখিয়ে দিলেন ওদের।তারপর বড়মা, মেজোমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-টুকটাক যেটুকো প্রিপারেশন নেওয়ার,তা এখন থেকেই শুরু করো।তোমাদের অপ্রস্ততির জন্য আমার বউকে নিয়ে দেরীতে বাসায় ফিরবো তা তো আর হয় না তাইনা?ওদিকে আম্মুও বাসায় একা।মামীমা এসেছে কিনা কে জানে।দেরি করাটা ঠিক হবে না।সো কাজে লেগে পরো।
আব্বু মুখ খুললেন এবার।চেচানোপ্রায় আওয়াজে বললেন,
-মানে কি এসবের?কি বলছো টা কি এসব তুমি শুদ্ধ?ভুলে গেছো তিনদিন আগে কি কথা হয়েছে?বেশ,আজ যখন সেজোভাই এসেছেই,আমি….
-কিচ্ছু ভুলিনি আমি ছোটকাকু!তুমি ভুলে গেছো!দাদুভাইকে দেওয়া কথা তুমি ভুলে গেছো!আমি ভুলিনি!এন্ড দ্যাটস্ হোয়াই,আমার আর সিয়ার বিয়েটা কালই হচ্ছে!
আম্মু বললো,
-এভাবে আচমকা…
-আচমকা হোক বা সময় নিয়ে,তোমার মেয়েকে এতোটুকো কষ্ট পেতে দেবো না আমি ছোটমা।এতোটুকো বিশ্বাস করো তো তুমি আমাকে তাইনা?
শুদ্ধর কথায় আম্মুর চোখ ভরে উঠলো।ভাঙা আওয়াজে আম্মু বললো,
-তুমি বলেই তো এতোটা নিশ্চিন্ত আমরা শুদ্ধ।ইনসুর জন্য তোম্…
আব্বু বললেন,
-কোনো বিয়ে হবে না আজ!
দীদুন এতোক্ষনে বললো,
-শুদ্ধ বলে দিয়েছে যখন,বিয়েটা আজই হবে।
-কিন্তু মা,এই বিয়েটা….
আমিও মুখ খুলতে যাচ্ছিলাম।শুদ্ধ সে সুযোগ না দিয়ে বললেন,
-আমার ছোটকাকু আর সিয়ার সাথে আলাদাভাবে কথা বলার আছে!
আব্বু বললেন,
-আজ অবদি সবটা সবার সামনে হয়েছে,আজও সবাই জানবে।আমি চাইনা এই….
-ইয়াদ?তুমি চাও সবাই সবটা জানুক?
দীদুনের গম্ভীর গলায় আব্বু চুপ করলেন।তারপর হনহন করে পা বাড়ালেন পাশের রুমে।শুদ্ধ বাকা হেসে আমার হাত ধরলেন।যীনাত আপু ছেড়ে দিলো আমাকে।আমি কি করবো,কি বলবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।আব্বু যে রুমে,সেখানেই নিয়ে আসলেন শুদ্ধ আমাকে।দরজা লাগিয়ে সোজা আব্বুর সামনে একটা কাগজ ধরে বললেন,
-তোমার আর সিয়ার অনেক মিল।দুজনেই সারপ্রাইজ ভালোবাসো।তাইনা ছোটকাকু?দিস ওয়ান ইজ ফর ইউ!
কাগজটা দেখেই আব্বুর চোখ বড়বড় হয়ে গেলো।অবিশ্বাস,বিস্ময় সবটা এসে ভর করলো ওই চেহারায়।শুদ্ধ নিজের নখ দেখতে দেখতে ভাবলেশহীনভাবে বললেন,
-সিয়ার সাথে আমার বিয়েটা দু মাস আগেই হয়ে গেছে কাকু।আমরা দুজন তো শুধু তোমাদের সবার মতামতের জন্য ওয়েট করছিলাম।এখন যখন তোমার এতই আপত্তি…সবটা জানিয়ে আমার বউ,আমি নিয়ে যাচ্ছি!
আব্বু আমার দিকে অবিশ্বাস নিয়ে তাকিয়ে বললেন,
-ইনসিয়া তুমি…
ঠিক ধরেছি।শুদ্ধ সেই রেজিস্ট্রি পেপার দেখিয়েছেন আব্বুকে।এগিয়ে বলতে গেলাম,
-আব্বু আমি এসব….
-থাক!কিছুই বলতে হবে না তোমাকে।কাল যখন আমাকে কেনো জিজ্ঞাসা করেছিলে তুমি,আমার তখনই বোঝা উচিত ছিলো!তুমি বদলে গেছো!
আর পারলাম না সহ্য করতে।তার জন্য কি না করেছি আমি,আজ আমাকে বলার সুযোগ না দিয়ে,যাকে অপছন্দ করেন,সেই শুদ্ধের কথায় আমাকেই অবিশ্বাস করছেন উনি।কাদতে কাদতে তার সামনে দাড়িয়ে বললাম,
-বদলানো?বদলানো কাকে বলে আপনি জানেন?দুবছর আগে ইমারজেন্সি রুমে দাদুভাইয়ের বেডের পাশে শক্তভাবে বসে থাকা মানুষটা আমার কথা না ভেবেই যখন দুর্বল হয়ে পরেন,তাকে বলে বদলানো।দাদুভাইয়ের সামনে আমার জীবনকে একজনের সাথে জুড়ে দিয়ে তার অনুপস্থিতিতে আমার জীবন থেকে তাকে ভুলে যেতে বলাকে বলে বদলানো।আংটি হাতে তোলার দিনটা রাতে রুপান্তর আগেই সে আংটি খুলে ফেলতে বলাকে বলে বদলানো।সবার সামনে সবটা মেনে নিয়ে,তাদের আড়ালে সবটা অস্বীকার করাকে বলে বদলানো।কিছুদিন আগেই নতুন করে শুরু করতে চেয়ে,হুট করে আবারো সবটা ভুলে যেতে বলাকে বলে বদলানো।এতোকিছুর পরও আপনার এখনো মনে হয়,আমি বদলে গেছি আব্বু?আমি?
শুদ্ধ তার বুকে জরিয়ে ধরলেন আমাকে।বললেন,
-কাদিস না সিয়া!বুঝিস না কেনো?তোর কান্না সহ্য হয় না আমার!
আব্বু শক্তভাবে তাকিয়ে আমার দিকে।আমার চোখ পানিতে ভরে আছে।ঝাপসা দেখছি সবটা।উনি বললেন,
-তারমানে তুমি ভেবে নিয়েছো কি করবে।ভেবে নিয়েছো কেনো বলছি,বিয়েটাই তো করে নিয়েছো।আর কিই বা বলার আছে আমার।যাই হোক,একটা কথা মনে রাখবে,আমি কোনোদিনই খারাপ চাইনি তোমার।যে সিদ্ধান্ত তুমি নিয়েছো,তার দায় তোমারই।ভালো থেকো।
আব্বু বেরিয়ে গেলেন।শব্দ করে কেদে দিলাম আমি।বোঝাতে পারলাম না তাকে।আমার দিকটা আজও বুঝলেন না উনি।শুদ্ধর থেকে ছাড়িয়ে যেতে চাচ্ছিলাম তার পিছনে।শুদ্ধ ছাড়েন নি আমাকে।আরো শক্ত করে আমাকে জরিয়ে ধরে বললেন,
-পাগলামি করিস না সিয়া!
-ছাড়ুন আমাকে!আব্বুর অমতে কোনো বিয়ে হবে না!করবো না কোনো বিয়ে আমি!
শুদ্ধ এবার দুহাত চেপে ধরলেন আমার।অগ্নিচক্ষু করে বললেন,
-আমার মাথা ঠিক নেই সিয়া!দু বছরের রাগটা অনেক বেশি ছিলো।সিফাত ভাইয়ার বাসরঘরের সামনে সে রাতে রাগে তোর গলায় ওড়না পেচিয়েছিলাম।সেটা আম্মু দেখেছিলো।সেদিনই কথা আদায় করিয়েছে আমার থেকে,তোর সাথে যেনো এতোটুকো রাগ না দেখাই।নিজেকে আস্তেআস্তে সামলাতে শিখেছি।তোকে জোর করার পরপর নিজেকেও কষ্ট দিয়েছি।সহ্য হয় না তোর কষ্ট আমার!তাই প্লিজ!তোকে জোর করতে প্লিজ জোর করিস না আমাকে!প্লিজ!
-জোর করা?আপনার মনে হয় না,এই কাজটা আপনিই করছেন?আপনি….
শুদ্ধ আবারো শক্ত করে বুকে জরিয়ে ধরলেন আমাকে।চুলে পাগলের মতো একটানা কয়েকটা চুমো দিয়ে দুগাল ধরলেন আমার।চোখ বন্ধ করে একটা শ্বাস নিয়ে বললেন,
-তোকে আজ কবুল বলতেই হবে সিয়া!ইসলামিক রীতিতে বিয়েটা হতেই হবে আজ!নইলে শেহনাজ মন্জিলে প্রথমবারের মতো পুলিশ আসবে আজ।আর কমপ্লেইনটা হবে মিস্টার ইয়াদুল আজাদের বিরুদ্ধে।আমার বিয়ে করা বউকে তার বাবা নিয়ে যেতে দিচ্ছে না এই দায়ে তার হাতে হাতকড়া পরবে।থানায় নিয়ে যাওয়া হবে ছোটকাকুকে।এন্ড ট্রাস্ট মি,আই,মাইসেল্ফ উইল মেক শিওর অফ দ্যাট!
থেমে গেলাম আমি।শুদ্ধও ছেড়ে দিলেন আমাকে।মুর্তির মতো দাড়িয়ে তারদিকে তাকিয়ে রইলাম।আজ উনিও এক অন্যরুপ দেখালেন আমাকে।সত্যিই আমার জন্য সীমাপারের ঘটনা ঘটাতে উদ্যত উনি।এতোবড় একটা কথা বলতেও বুক কাপে নি তার!যীনাত আপু খোলা দরজায় নক করলো।পার্লারের মেয়েগুলো দরজায় দাড়িয়ে।শুদ্ধ ঘাড় নাড়িয়ে ওদের ভেতরে আসতে বললেন।একপলক আমার দিকে তাকিয়ে চলে যাচ্ছিলেন।কি বুঝে আবারো পিছন ফিরে আমার কপালে ঠোট ছুইয়ে বেরিয়ে গেলেন উনি।
#চলবে….