গোধূলিলগ্ন ২৭

0
382

উপন্যাসঃ”গোধূলিলগ্ন”
শান্তনা আক্তার
পর্বঃ২৭

ঘোর অমানিশায় মুড়ানো পরিবেশটা কান পেতে ঝিঝি পোকার ডাক শুনতে ব্যস্ত। কিছু সংখ্যক জোনাকিপোকাও যোগ হয়ে সবুজ দীপ্তি ছড়িয়ে যাচ্ছে। অর্ধবৃত্ত চাঁদটা অর্ধবৃত্ত অবস্থাতেই উঁকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। ভূ-পৃষ্ঠের গভীরতা চুইয়ে গরম হাওয়া বেড়িয়ে এসে স্নিগ্ধ রাতকে আলিঙ্গন করে নিচ্ছে বারংবার। ভ্যাপসা গরম যেন রাতকেও ছাড় দিতে নারাজ। এদিকে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে দুস্ত গ্রামবাসীর নাজেহাল অবস্থা প্রায়। এ যেন কাটা গায়ে নুনেরছিটে। গরমে মায়ার কাঁচা ঘুম ভেঙে গেল হুট করেই। মিতু তখন বেঘোরে ঘুমায়। মায়ার কান্না কর্ণকুহর স্পর্শ করতেই চোখ জোড়া মেলে যায়। সে গুমোট অন্ধকার হাতড়ে মায়ার শরীরের সন্ধান পেল। কাছে টেনে বলল, ‘গরম লাগতাছে তোর? খাড়া হাতপাখাডা নিয়া আহি মায়।’

মায়া চটজলদি মিতুকে জাপ্টে ধরল। ভয়কাতুরে কন্ঠে বলল, ‘আমার ডর লাগে আম্মু, যাইও না।’

মিতু হেসে বলল, ‘যাইনা আমি, এইহানেই মাথার ধারে রাখছিলাম পাখাডা। খুঁইজ্যা নেই খাড়া। তুই একটু ফাঁক ফাঁক হইয়া থাক, তাইলে গরম কম লাগবো৷ মরার কারেন্ট যাওয়ার সময় পায়না! জানলা দিয়া একটু বাতাসও ঢুকে না।’

হাতপাখা খুঁজে পেল মিতু৷ হাত চালিয়ে বাতাস করতে করতে বলল, ‘ঘুমাইয়া যা মা, আমি বাতাস দিতাছি।’

মায়া বলল, ‘আমার ঘুম গেছেগা। তুমি একটা গল্প হুনাও না মা।’

‘গল্প হুনতে মন চাইতাছে? আইজ তোরে একটা অন্যরকম গল্প হুনামু। তারপর কিন্তু ঘুমাইয়া যাইবি!’

মায়া বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নেড়ে বলল,
‘আইচ্ছা আম্মু।’

মিতু বলতে শুরু করল, ‘এক গ্রামে দুইজন মিতা আছিল। অনেক ভাব দুইজনার মইধ্যে।’

মায়া হুট করে বলে ওঠে,
‘আমার আর মণির লাগান আম্মু?’

মিতু হেসে বলল, ‘তোগো থেইক্যাও ভালো বান্ধবী আছিল তারা।’

‘ও, তারপর আম্মু?’

‘তারপর আর কি? তারা একজন অন্যজনরে ছাড়া কিছুই ভাবতে পারতো না। হঠাৎ এক বান্ধবী মইরা যায়। অন্যজন চোখের পানিতে গাঙ বানায়।’
মিতু থেমে গিয়ে নিঃশব্দে কান্না করছে। আচমকাই কারেন্ট চলে আসায় মিতু দ্রুত হাত চালিয়ে চোখের পানি আড়াল করে নিল। মায়া মিতুকে ধাক্কা দিয়ে বলল, ‘বাকীটা কও মা। চুপ কইরা আছো ক্যান? তারপর হেই বান্ধবী একা একা কি করছিল?’

মিতু আহত কন্ঠে বলল, ‘হেই বান্ধবী পুরাপুরি একা হইতে পারে নাই তো। তার একটা ছেলে বন্ধু আছিল। কলেজ পড়ুয়া ছেলে বন্ধু। হেই বন্ধু হগল সময় চেষ্টা করত কেমনে তার বান্ধবীর মন ভালা রাহন যায়। হঠাৎ বান্ধবীর বিয়া হইয়া যায়। ছেলে বন্ধুডা অনেক কান্দে বান্ধবীর লাইগ্যা। হেয় চাইত না তার বান্ধবীর বিয়া হোক।’

‘চাইত না ক্যান আম্মু? বিয়া হইলে তো বউ সাজা যায়।’

‘বিয়া মানে খালি কি বউ সাজা রে মা! আমিও এইডাই ভাবতাম এক সময়। যাজ্ঞা হেইসব, হেই ছেলে বন্ধু তো চায়না তার বান্ধবীর বিয়া হোক। কারণ বিয়া হইলে যে তার সাথে আর জীবনও দেখা হইব না। তার থেইক্যা হারায় যাইব তার বান্ধবী। এই ভাইব্যা ছেলে বন্ধুর ঘুম আহে না।তারপর করল কি, বিয়ার আগের দিন ছেলে বন্ধু আর মেয়ে বন্ধু দেহা করে। মেয়ে বন্ধুর বাজানে খবর পাইয়া সেইহানে পৌঁছায়। তারপর মেয়ের সামনেই তার বন্ধুরে অনেক মারে। মেয়েডায় কিছুই করতে পারেনাই তার এত ভালো বন্ধুর লাইগ্যা। শেষে হেয় বিয়া কইরা চইল্যা যায় শ্বশুর বাড়ি।’

মায়া ফুপিয়ে কেঁদে ওঠে। মিতু তা দেখে ফিক করে হেসে দিয়ে বলে, ‘কি হইছে আমার আম্মুর?’

মায়া চোখভর্তি জল নিয়ে বলে, ‘আমার হেই ছেলে বন্ধুর লাইগ্যা কষ্ট লাগতাছে। ক্যান মারল তারে?’

মায়ার কথার পিঠে দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করল মিতু। বলল, ‘চল এইবার ঘুমাই আমরা। মেলাক্ষণ আগে কারেন্ট আইছে।’

মায়া হিচকি তুলে তুলে কেঁদেই চলেছে। মিতু মায়াকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরে বলে,
‘ছেলে বন্ধুডায় গ্রাম ছাইড়া শহরে চইল্যা যায়৷ অনেক ভালো আছে তারা।’

‘আর মাইয়া বন্ধু? হের কি তার ছেলে বন্ধুর কথা মনে আহে না?’

মিতু কিছু সময় মায়ার মুখের দিকে চেয়ে থেকে বলে, ‘মনে তো আহেই। কিন্তু আইলেও কিছু যে করার নাই মা। তার তো হাত-পাও বান্ধা। সেও ভালোই আছে। তার একটা রাজকন্যা আছে। হেই রাজকন্যা নিয়া হেয় অনেক সুখে আছে।’

এতক্ষণে মায়ার মুখে হাসির দেখা মেলে। সে প্রফুল্লচিত্তে বলল, ‘তাইলে ঠিক আছে আম্মু।’

মায়ার হাসিতে মিতু প্রাণ ফিরে পেল। চোখে আটকে রাখা কান্নার ফোয়ারা থেমে গেল মায়ার এক চিলতে হাসির তালে। চাপা কষ্টের ঢেউ শান্ত হলো মুহুর্তেই।
***
রাতের বেলা। ঘড়ির কাটা প্রায় ১টা ছুঁই ছুঁই। কাব্য বারান্দায় বসে বিস্তৃত খোলা আকাশে তারার মেলা দেখছিল। চোখের ভাষায় মাপছিল রাতের ঘনত্ব। আগামীকাল চিরচেনা সেই পিছুটানে যাবে। যেখান থেকে সে সব পেয়েও সব হারিয়েছে। বিশেষ করে তার ভালবাসাকে। কাব্য মনে মনে নানান ধরনের স্মৃতি আওড়ে যাচ্ছে। এমন সময় পিঠে কারো হাতের অস্তিত্ব অনুভব করল। সঙ্গে সঙ্গে পিছনে ফিরতেই তৌসিফ সাহেবকে আবিষ্কার করল। কিছুটা অবাক হয়ে বলল,
‘আব্বু তুমি এত রাতে? ঘুমাওনি?’

‘চলো বসি দুজনে।’ শান্ত গলায় বললেন তৌসিফ সাহেব।

‘আমার ঘুম পাচ্ছে, ঘুমোতেই যাচ্ছিলাম।’ কথাটা বলে নতজানু হয় কাব্য।

তৌফিক কিছু না বলে বারান্দায় পাতানো চেয়ারে গিয়ে বসল। আকাশের পানে চেয়ে বললেন,
‘ভুল বুঝে বাবাকে পর করে দিলে? বাবার স্নেহময় বৃক্ষছায়ায় ভালোবাসার পরশ খুঁজলে না একটাবারও!’

কাব্য সময় নিয়ে বলল, ‘আমাকে দুনিয়ার আলো দেখিয়েছো, চাইলেও পর করা সম্ভব না। পর করতে পারলে ছেড়ে ছুড়ে চলে যেতাম কবেই।’

‘তাহলে সময় দাওনা কেন এই স্বার্থপর বাবাকে? কেন এড়িয়ে যাও এই অধম পিতাকে?’

‘আব্বু!’ আঁতকে উঠল কাব্য।

‘ভুল বলেছি কিছু?’

‘তুমি অধম নও আব্বু, তবে তুমি স্বার্থপর বটে। তুমি একজন স্বার্থপর বাবা। যে সবসময় তার ছেলেকে নিয়ে ভেবেছে। নিজেকে অধম কেন বললে আব্বু? আমার আব্বু অধম নয়! আমার আব্বুর স্থান সকল আব্বুর উপরে।’

তৌফিক তাচ্ছিল্যের সুরে বললেন, ‘এই জন্য বাবাকে অবহেলা করে চলো। দেখেও না দেখার ভান করো। পালিয়ে বেড়াতে চাও বাবার থেকে। এ থেকে আমি কি বুঝব কাব্য?’

‘আমার কিছু বলার মতো শব্দ নেই আব্বু। আমি একা থাকতে ভালবাসি৷ খুব ভালো থাকি একা থেকে। শান্তি পাই।’

‘তাই?’

কাব্য ক্ষীণ স্বরে জবাব দেয়, ‘হুঁ।’

তৌসিফ তাচ্ছিল্য করে হাসল। বলল,
‘সময় আসলেই পরিবর্তনশীল বাবা। আমাদের সেই পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়, তা আমরা না চাইলেও। কিছুই করার নেই আমাদের। কথাটি সবসময় আমি বলে এসেছি তোমায়।’

কাব্য বেশ শাসনের সুরে বলল, ‘আব্বু তুমি এত রাতে পরিবর্তনের কথা বলতে এসেছো? তুমি জানো না ডক্টর তোমাকে রাত জাগতে নিষেধ করেছে! এখনই গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।’

‘তা করেছে। তবে আমার ছেলেটা জেগে থাকলে আমি কি করে ঘুমাই বলো?’

‘আজ ঘুম পাচ্ছিলো না কেন জানি। তাই বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। এখন পাচ্ছে তো। তুমিও যাও।’

‘হা হা।’ তৌসিফ সাহেব হেসে উঠে পরমুহূর্তেই হাসি থামিয়ে বললেন, ‘আমি তোমার বাবা কাব্য! তোমার মায়ের মতো আমি তোমার বন্ধু না হলেও পিতৃত্বের টানে একটু হলেও তোমার মন পড়তে পারি।’

‘আব্বু তুমি কি বলতে চাচ্ছো?’

‘তুমি বড্ড ভালো একটি ছেলে। বাবা হয়ে নয়, একজন মানুষ ও শিক্ষক হিসেবে বললাম। তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত। তুমি আমার মুখ উজ্জ্বল করেছো। তুমি আমার কুলাঙ্গার সন্তান নও৷ তুমি আমার অহংকার। তুমি আরও অনেক দূর এগিয়ে যাও দোয়া করি। তবে একটা কথা শুনবে বাবা?’

‘কি আব্বু?’

‘পেছনের কথা চিন্তা করে দুর্বল হয়ে যেওনা। তাহলে কিন্তু হেরে যাবে তুমি। তুমি আজ একজন নামকরা সাংবাদিক। সাংবাদিক নামের তকমার সাথে কিন্তু অনেক বড়ো দায়িত্ব জড়িয়ে থাকে। আর একজন সাংবাদিকের প্রধান বৈশিষ্ট্য এরা দেশপ্রেমিক। এদের প্রধান কাজ হচ্ছে দেশের কাজে সর্বদাই নিজেকে নিয়োজিত রাখা। তবে সবাই এক না। যার কাছে সাংবাদিকতা মানে দেশের সেবা, একমাত্র সেই ধরনের সাংবাদিকই দেশের আসল সম্পদ। শুধু তাদের ক্ষেত্রেই দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধের কথাটি প্রযোজ্য। দালালদের ক্ষেত্রে নয়।’

‘আমি তা জানি আব্বু।’

‘তুমি যে জানো, সেটা আমিও জানি। তাইতো তোমাকে নিয়ে গর্বিত আমি।’

‘তাহলে আব্বু?’

‘তাহলে তুমি পিছুটানের স্রোতে ভেসে কেন যাচ্ছো? তোমাকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কি হয়েছিল না হয়েছিল সেসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে হবে চিরতরে।’

‘আব্বু আমি সেটাও জানি।’

‘না বাবা,তুমি সেটা জানো না। তুমি জানলে, হতাশার মায়াজাল এখনো তোমাকে গ্রাস করে রাখতো না। কোনো উপায় না পেয়ে তোমাকে মিথ্যে বলে গ্রাম থেকে শহরে নিয়ে এসেছিলাম। সেই দুঃসহ মুহুর্তে আমি যা যা পেরেছিলাম সবই করেছি। আমার মাথায় তখন একটাই উদ্দেশ্য খেলা করেছিল। আর সেটা আমার ছেলের ভবিষ্যৎ। আবেদন করে স্কুলের চাকরিটা ঢাকাতে ট্রান্সফার করিয়ে রেখেছিলাম আরও আগেই। নাহলে কি একটা অবস্থা হয়ে যেত বলো! আমি কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে পড়েছিলাম সেই মুহুর্তে। অচেনা এক গোলক ধাঁধাঁয় নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলাম, শুধুই তোমার জন্য। তুমি কি জানো তোমাকে শক্ত করতে আমার কতটা সময় লেগেছিল?’

কাব্য চোখের পানি আটকে রেখেছে বহু কষ্টে। সে শীতল কণ্ঠে বলল, ‘জানি আব্বু। তুমি বলেছিলে আমায়। দু’মাস লেগেছিল।’

‘হুম, প্রায় দুটি মাস তোমাকে সময় দিয়েছি আমি। অক্লান্ত পরিশ্রম করে তোমার মনে জোর বাড়িয়েছি। তবে আমি এটা খুব ভালো করে জানি, আমি তোমাকে উপর থেকে স্বাভাবিক করতে পেরেছি ঠিকই, তবে ভেতর থেকে পারিনি। সেক্ষেত্রে আমি ব্যর্থ বলা যায়।’

‘আব্বু তুমি ভুল ভাবছো। আমি ভালো আছি। আগের কিছুই আমার মনে নেই।’

‘থাক না বাবা। আমি তোমার পিতা ছাড়াও একজন পুরুষ। আর এই পুরুষ জাত খুবই কঠোর প্রকৃতির। পুরুষদের কষ্ট হলেও এরা মেয়েদের মতো হাত পা ছড়িয়ে কাঁদতে জানে না। পুরুষের মনকে পাথরের সাথে তুলনা করা যায়। তবে তাই বলে এদের কষ্ট কম তা কিন্তু নয়। এরাও রক্ত মাংসের মানুষ। তাই এদেরও অনুভূতি আছে। শুধু প্রকাশ করার ক্ষমতা কম। তাই বলবো আমাকে বোঝাতে এসো না। তুমি ভালো করেই জানো আমি যা বলছি সত্যি বলছি। তবে আমি আগেও একই কথা বলেছি। এখনো তাই বলছি, বয়সকালে সবারই আবেগ থাকে। সেই আবেগে পড়ে অনেকেই খারাপ হয়ে যায়। যেমন তুমিও যাচ্ছিলে। তবে আমার মতে তুমি খুব বুদ্ধিমান ছেলে। তাইতো পরিস্থিতি সামলে নিতে পেরেছো। তবে ভেতরে ভেতরে ঠিকই তুমি অসহায় ও দুর্বল। তোমাকে এই দুর্বলতাটাই কাটাতে হবে। কারণ দেখা যায়, সামান্য দুর্বলতা এক সময় সফলতার পথে বিরাট বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। তোমাকে খারাপ লোকেদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে পাপ কর্মের সেই ভয়াবহ পরিণতি। শাস্তি দিতে হবে দেশের সকল অত্যাচারীদের। জুলুমকারীদের আসল রূপ তুলে ধরতে হবে দেশের মানুষের সামনে। এতটা ভয়ংকর শাস্তি দিতে হবে, যাতে পাপাচারীর পাপাচার করতে হাটু কাঁপে। যেসব আইনজীবী ঘুষের লোভে উল্টো ন্যায়বিচার করে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমি জানি তুমি পারবে। তবে পুরো উদ্যমে পারতে হবে। এভাবে ভেতরে ভেতরে মরে গিয়ে নয়। যদি তুমি পুরো উদ্যমে নিজের লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাও, তাহলে সফলতার শেষ চূড়ায় যেতে তোমাকে কেউ আটকাতে পারবে না। কেউ না। আর তখনই তুমি প্রকৃত অর্থে সফল হবে, এর আগে না।’

‘কিন্ত আব্বু,আমি একা আর কতটা পারবো? একদিন না একদিন তো আমি মারা যাবো।’

‘কতটা পারবে মানে? শেষ নিশ্বাস অবধি লড়ে যাবে। দেখবে যখন অপরাধীরা শাস্তি পাবে, তখন অন্য কারো না কারো মধ্যে তোমার মতো কাব্য হওয়ার অনুপ্রেরণা জন্ম নেবে। অন্যকেউ তোমাকে আদর্শে রেখে এগিয়ে আসবে দেশের কল্যাণে। সেদিন তুমি ধন্য হবে। এমনকি মারা গিয়েও সকলের মনে গেঁথে রবে চিরকালের জন্য। বুঝলে বাবা?’

কাব্য বুক ভরে নিশ্বাস নিল। বলল,
‘জ্বি আব্বু। আমি তাই করবো৷ হাজার বাঁধা পেড়িয়ে হলেও,ন্যায়ের পথে চলবো। আমার শেষ নিশ্বাসটুকু মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত রাখবো। আমার ওয়াদা রইল।’

তৌসিফ ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলল। ছেলের বুকে মাথা রেখে বলল,
‘I proud of you my son. Wish you all the best for your bright future. Go-ahead.’

‘Thank you so much. You are my energy, power, inspiration, well-wisher, instructor. love you forever. তুমি ছাড়া আমি কিছুই না আব্বু। কিছুই না।’
কথাগুলো বলে কাব্য দু-হাত দ্বারা শক্তভাবে তৌসিফ সাহেবকে জড়িয়ে ধরল।
চলবে ইনশাআল্লাহ…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here