শ্রাবন আধারে তুমি
লেখিকা:আফরিন ইসলাম
পার্ট:৫
হাড় কাপাঁনো শীতের মধ্যে দাড়িয়ে রাই ৷ স্বচ্ছ থাই দরজায় বার বার আঘাত করছে সে ৷রাই দুঃখ ভরা কন্ঠে বলল
আবরার দয়া করে দরজাটা খুলুন ৷আমি বাইরে থাকতে পারছি না ৷আমার খুব কষ্ট হচ্ছে ৷আমি ফ্লোরে শুয়ে থাকবো ৷তবুও আমাকে ভেতরে যেতে দিন ৷আবরার আমার কথা শুনছেন ৷আমি ঠান্ডা বাতাসে ঘুমাতে পারছি না ৷আমার মাথায় খুব ব্যাথা করছে ৷
রাইয়ের কথা গুলো আবরার শুনতে পারছিল ৷কিন্তু সে বিছানা থেকে উঠছে না ৷রাইয়ের যা ইচ্ছা হোক তাতে তার কি ৷
এতটা নিষ্ঠুর হবেন না ৷একটু দয়া করুন আমার উপর ৷আবরার অন্তত্য মাথা ব্যাথার ঔষুধটা দিন আমাকে ৷আমি আর সহ্য করতে পারছি না ৷
এবার আবরার ভিষন রাগ হলো ৷নিজেও ঘুমাচ্ছে না আর তাকেও ঘুমাতে দিচ্ছে না ৷আবরার রাগ হয়ে দরজার কাছে গেল তারপর বলল
এভাবে চিৎকার করছো কেন ৷অভদ্র লোকের মতো চিৎকার করে আমার ঘুমের বারোটা না বাজালে শান্তি হচ্ছিল না ৷
আবরার বাইরে প্রচুর ঠান্ডা বাতাস ৷আমি একটুও ঘুমাতে পারছি না ৷আমার মাথাটা অনেক ব্যাথা করছে ৷একটা ঔষুধ দিন না প্লিজ ৷
কি ভেবেছ আমি কিছু বুঝি না ৷সব তোমার রুমে ঘুমানোর ধান্দা ৷তাড়াতাড়ি ঔষুধ নাও আর চলে যাও ৷রাই ঔষুধের পাতা থেকে একটা ঔষুধ নিল ৷তারপর আবার ডিভানে চলে গেল ৷কিন্তু অশ্রুসজল চোখে আবরার দিকে একবার তাকিয়ে ছিল ৷আবরার রাইয়ের সেই চোখ কি দেখে ছিল ৷রাই ডিভানে যেতেই আবরার আবারো দরজা আটকে দিল ৷একটু একটু করে রাত পার হয়ে গেল ৷কিন্তু রাইয়ের চোখে ঘুম ধরা দিল না ৷শেষ রাতের দিকে রাই ঘুমিয়ে গেল ৷
এই মেয়ে আর কতক্ষন ঘুমাবে ৷আবরার চিৎকারে রাইয়ের ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷ আমার মা বাবাকে দেখাতে চাও যে আমি তোমাকে সারারাত বাইরে রেখেছি তাই না ৷রাই আবরার দিকে তাকিয়ে রইলো ঘুম ঘুম চোখে ৷তোমাদের মতো মেয়েদের আমার ভালো করে চেনা আছে ৷এখন তাড়াতাড়ি ওঠো ৷রাই ফ্লোর থেকে উঠে ওয়াস রুমে যাবে তখন আবরার বলল
আমাদের মধ্যে যা হয়েছে তা যেন মা বাবা না জানে বুঝেছো ৷
রাই আবরার দিকে তাকিয়ে রইল ৷রাই মুখে কিছু বলতে পারলো না ৷ভেতরটা শেষ হয়ে যাচ্ছে রাইয়ের ৷ তবুও কাউকে কিছু বুঝতে দেবে না সে ৷
কিছুক্ষন আগে রাই নাস্তা করে বেড়িয়ে গেছে মিশকার সাথে ৷রাই আর মিশকা যাচ্ছে ৷হঠাৎ রাই মিশকাকে বলল
আপু গাড়ীটা একটু থামাতে বল না ড্রাইভার আংকেল কে ৷
কেন কিছু লাগবে মিশকা বলল ৷
রাই বলল আসলে আপু আমার একটু কাজ আছে ৷তুমি যাও আমি একটু পরে যাবো ৷
মিশকা রাইকে নামিয়ে দিল ৷আর যাওয়ার সময় রাইকে সাবধানে থাকতে বলল ৷
মিশকার গাড়ী যেতেই রাই একটা রিকশা ডেকে নিল ৷তারপর রওনা দিল হাসপাতালের দিকে ৷
রাই এখন বসে আছে ডাক্তারের চেম্বারে ৷ডাক্তার রাইকে বলল
আপনার মাথা ব্যাথা আজ কত দিন যাবত ৷
আজ প্রায় ছয় মাস ম্যাডাম ৷
এতদিন মাথা ব্যাথা আর আপনি এখন ডাক্তারের কাছে এসেছেন ৷আর কোনো উপসর্গ আছে আপনার ৷
মাঝে মাঝে আমার জ্বর আসে রাতে ৷আজকাল মাথার পেছনে খুব ব্যাথা করে ৷বেশিক্ষন বসে থাকতে পারি না ৷আর দুই দিন আগে নাক থেকে রক্ত এসে ছিল ৷
আপনাকে আমি কিছু টেস্ট দিচ্ছি ৷এগুলো তাড়াতাড়ি করে আমার কাছে আসবেন ৷একদম দেরি করবেন না ৷
রাই চেম্বার থেকে বের হয়ে টেস্ট গুলো তাড়াতাড়ি করিয়ে নিল ৷টেস্ট করার পর রাই আবারো কলেজের দিকে রওনা দিল ৷মিশকা ক্লাস থেকে বের হয়ে রাইকে না পেলে সন্দেহ করবে ৷রাই সিএনজি নিয়ে তাড়াতাড়ি চলে গেল কলেজে ৷
অপরদিকে আবরার হাজার চেয়েও গাড়ী ব্রেক করতে পারছে না ৷আজ বাবার অফিসে সে এসেছে ৷আফজাল খান আবরারকে ব্যবসার হাল ধরতে বলছেন ৷আবরার আসার সময় নতুন গাড়ী নিয়েই অফিসে এসেছে ৷কিন্তু গাড়ীটা ব্রেক কেন করছে না ৷সেটাই আবরার বুঝতে পারছে না ৷বার বার ব্রেক করতে চেয়েও ব্যর্থ সে ৷আবরার গাড়ীর সামনে হঠাৎ একটা ট্রাক চলে আসে ৷আবরার নিজের গাড়ী ঘুড়িয়ে অন্য দিকে নিয়ে যায় ৷কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না ৷আবরার গাড়ীটা বিরাট বড় একটা গাছের সাতে ধাক্কা খায় ৷
রাই আর মিশকা কিছুক্ষন আগে বাসায় এসেছে ৷রাই রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিল ৷রাই নিচে যেতেই দেখলেন আফজাল খান কাউকে কল করছে ৷তার মুখে চিন্তার ছাপ ৷রাই আফজাল খানের পাশে বসলো ৷তারপর বলল বাবা আপনাকে চিন্তিত লাগছে ৷কিছু কি হয়েছে ৷
আফজাল খান হালকা হেসে বললেন না মা কিছু হয় নি ৷আবরার ফোন ধরছে না ৷তাই একটু চিন্তা হচ্ছে ছেলেটার জন্য ৷যাও খেয়ে নাও এখন ৷
(আপনাদের রেসপন্স কমে কেন যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না ৷আমাকে কারনটা বলবেন কমেন্ট করে ৷আর গল্প আমি এক ঘন্টার বেশি লিখতে পারি না ৷এর কারন অনেকেই জানে ৷আমার বোন অনেক অসুস্থ ৷ আর আমিও বেশিক্ষন ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকতে পারি না ৷)
চলবে