বান্ধবীর ভাই যখন বর ? Part – 12

0
1019

? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 12
____________________________
12,,,,,,,,,
রাত প্রায় এগারো টা বাজে।
পরি এখনো পড়াশুনা তে ব্যস্ত,,,,,, কালকে ক্লাস এক্সাম আছে কি না।
পরি মন দিয়ে অংক কসছিলো,,,,,, মায়ের ডাকে ধ্যান ভাঙ্গলো তার।
মা কে দেখেই পরির নাক মুখ কুঁচকে গেল।
কারন মিসেস রাহেলার হাতের মধ্যে থাকা গ্লাস টা পরিপূর্ণ দুধ দিয়ে।
পরির মায়ের ভাষ্য মতে ছোট বেলায় নাকি পরি দুধ খুব পছন্দ করতো।
কিন্তু এখন তো পরির খুব বাজে লাগে ,,,,,, তাহলে কি পরির মা পরি কে দুধ খাওয়ানোর জন্য বানিয়ে গল্প বলে।
কিহহ জানি পরির তো দুধের নামে ও এলারজি।
পরি কে নাক মুখ কুঁচকে থাকতে দেখে মিসেস রাহেলা বললেন
– পরি এই মুহূর্তে এটা শেষ করবি ,,,,,, কোনো বারন শুনাবো না আমি।

পরি ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে বলল
– আম্মু তুমি তো জানো এটা আমি একদম ই পছন্দ করি না।
দুধের গন্ধে আমার শরীর ঘিন ঘিন করে।
আর তাছাড়া দুধ খেলে আমি আরো মোটু হয়ে যাবে।
পরির এতো শত যুক্তি মিসেস রাহেলা কে এক চুল ও হেলাতে পারলো না।
মিসেস রাহেলা মেয়ের থুতনি ধরে মুখে দুধের গ্লাস টা দিলেন।
পরি এক হাত দিয়ে নাক চেপে কোনো মতে দুধ টা খেলো।
খাওয়া শেষ হতে দেরি পরির পানি খাওয়াতে দেরি হলো না।
এক নিমিষে এক গ্লাস পানি ঢক ঢক করে সাবার করে দিলো।
পরির কান্ডে মিসেস রাহেলা বিরক্ত হলেন।
বিরক্তি মাখা কন্ঠস্বর দিয়ে বললেন
– এগুলো কি পরি ?
এভাবে কেউ পানি খায় ?
যদি বিষম লেগে যেত ,,,,, তখন তো আরেক বিপদ হতো।

পরি হাঁফাতে হাঁফাতে বলল
– সে হলে হতো ,,,,,, কিন্তু মুখের এই দুধের গন্ধ তার থেকে ও বিপজ্জনক ।
আর তুমি তো শুনতেই না,,,,, রোজ এক গ্লাস দুধ না গেলালে তোমার তো আবার রাতে ঘুম হয় না।
মেয়ের কথাতে মিসেস রাহেলা ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেলেন।
মেয়ে টা হয়েছে ফাজিল ,,,,,, আর নাম্বার ওয়ান বাঁচাল।
আর এর সাথে কথায় পারা তো বড্ড মুশকিল।

মিসেস রাহেলা হালকা হেসে চলে গেলেন।
মিসেস রাহেলা চলে যেতেই পরি বই খুলে বসল।
কিন্তু এখন এই বইয়ের পাতায় লেগে থাকা অক্ষর গুলো কে পরির কাছে বিষের মতো লাগছে।
পড়তে একটু ও ইচ্ছে করছে না।
পরি বই রেখে বেডে আধসোয়া হয়ে ভাবতে লাগলো কি করা যায় এখন।
হঠাৎ ই পরির মাথা তে খেলে গেল ফোনের কথা। পরি বেডের সাইট থেকে ফোন টা বের করে ওপেন করলো কিন্তু একি ফোন অন হচ্ছে না কেন ?

পরি নাক কুঁচকে নিলো ,,,,,, হঠাৎ করেই মনে পড়লো সকালের কথা।
সকালে রেগে যে ফোন টা সুইচ অফ ই করে ফেলেছিলো।
পরি ফোন টা ওপেন করে নেট অন করতেই বেশ অনেক গুলো নোটিফিকেশন এলো। পরি কোনো কিছু না ভেবে সোজা ফেসবুকে চলে গেল।
ফেসবুকে যেতেই নোটিফিকেশন এ গিয়ে দেখলো ইংরেজি অক্ষরে বড় বড় করে লেখা
Rafsan Ahmed Nil accept your request.

পরির চোখ রসগোল্লা হয়ে গেলো।
বেটা গালি না খাইলে কাজ করে না দেখছি।
সকাল বেলা আচ্ছা করে গালি দিছি তাই এখন রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করছে।
বজ্জাত এর শেষ সীমানা।
পরি বাকি নোটিফিকেশন গুলো চেইক করে তারপর ভাবলো নীল কে ম্যাসেজ দিবে কি না ।
বেশ কিছুক্ষণ দৃধা দন্ড কাটিয়ে অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলো ম্যাসেজ দিবে সে।
চটজলদি হ্যালো লিখে ম্যাসেজ পাঠিয়ে দিলো।
ম্যাসেজ সেন্ড করার পর দেখলো নীলের আইডির সাইডে লিখা
Online 5 minutes ago

পরির মেজাজ টা গেল চরে।
বেটা আরেক টু আগে যেতি অনলাইন থেকে তাহলে তো আমি তোরে ম্যাসেজ ই দিতাম।
গুরু ছাগলের পেছনে পড়ছি আমি ,,,,,,, বিজাত।
এমন হাজারো রকমের গালি মেরে পরি অফলাইন হয়ে গেল।
বেশ কিছুক্ষণ বেডে এপাশওপাশ করতে করতে ঘুমিয়ে গেল।

____________________

এই পরি শোন ,,,,,, রিতুর ডাকে পেছন ফিরে তাকালো পরি।
মেয়েটা কে বড্ড অস্বস্তি লাগে ওর,,,,,,যখন তখন ঝগড়া করার জন্য উত পেতে থাকে।
পরি ভ্রু কুঁচকে রিতু কে বলল
– কি হয়েছে ?

রিতু চোখ নাচিয়ে বলল
– শুনলাম আজকাল নাকি শ্রাবনদের সাথে বেশ মাখামাখি করছিস।

রিতুর কথাতে পরির ভ্রু আপনা আপনি ই কুঁচকে গেল।
পরি ধীর কন্ঠে ই বলল
– মাখামাখি বলতে ?

রিতু মুখ বাঁকিয়ে বলল
– কেন বুঝিস না ,,,,, মাখামাখি কাকে বলে ?

পরি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– দেখ রিতু তোর মতো যখন তখন ঝগড়া করার মতো মুড আমার নেই।
আর হ্যা শ্রাবনরা আমার ক্লাসমেট ওদের সাথে বন্ধুত্ব থাকা টা স্বাভাবিক।
এতে তুই মাখামাখির কি দেখলি ?
তোর সাথে বাজে কথা বলার মতো ফালতু ইউসলেজ সময় আমার কাছে নেই।
তুই তোর লো ক্লাসের ধারনা নিয়ে থাক আমি গেলাম।
পরির কথাতে রিতু চুপসে গেল।
খুব রাগ হচ্ছে ওর ,,,,, কিছু তেই এই মেয়ের সাথে পেরে উঠে না ওও।
কিছুক্ষণ ওখানেই দাড়িয়ে থেকে রাগে গজগজ করতে করতে বাসার দিকে রওনা হলো রিতু।
আজকে হাফসা স্কুলে আসে নি ,,,,,, কে জানে কি হয়েছে।
বাসায় গিয়ে ফোন লাগাতে হবে।
পরি বাসায় গিয়ে রোজকার মতো সমস্ত কিছু সেরে ফোন হাতে বেডে শুইয়ে পড়লো।
হাফসা কে ফোন লাগাতে ই ওপাশ থেকে একজন ফোন ধরলো ।
কন্ঠে শুনেই পরি ঢোক গিলল
পরি সালাম জানিয়ে বলল
– হাফসা আছে ?
ওপাশ থেকে
– তুমি কে ?

পরি কোনো মতে নিজেকে সামলে বলল
– আমি হাফসার বান্ধবী,,,, আপনি ?

– ওহহহহ। আমি নীল,,,, ওয়েট করো আমি হাফসা কে ডেকে দিচ্ছি।

নীল নাম টা শুনেই ,,,,, পরির রাগ উঠে গেল।
কিন্তু কথা বলার সময় ও কাপছিলো।
এমনিতে তো কখনো কাঁপে না আজ কেন এমন হলো ?

নীল বলল
– হে শুনো হাফসা বাসা তে নেই।
আসলে কল ব্যাক করতে বলব।
পরি হুম বলেই ফোন কেঁটে দিলো।
নীলের সাথে কথা বলতে যেন পরির দম যায় আর আসে।
পরি ফোন টা বেডে রেখে উপর হয়ে শুয়ে রইলো।
______________________

রাতে পড়া কমপ্লিট করে ফেসবুক ওপেন করলো।
পরি দেখলো নীল রিপলে দিয়েছে।
নীল অনলাইনে থাকাতে পরি ম্যাসেজ দিলো
– কেমন আছেন ?
– আলহামদুল্লিহ আপনি ?
– আলহামদুল্লিহ ,,,,,, কী করছেন ?
নীল – এই তো খাওয়া দাওয়া কমপ্লিট করে ফোনে লেগে পড়েছি।
আপনি ?
– সেইম ই।
তা আপনার জিএফ রূপা কেমন আছে ?
নীল – জি এফ আর রূপা,,,,,, বুঝলাম না ।

– জি এফ এর নাম চিনতে পারছেন না ,,,,,, এক্স বলে ?

নীল – সরি,,,, রূপা তো আমার জিএফ বা এক্স নয়।

– আচ্ছা তাহলে কি?

নীল – জাস্ট ফ্রেন্ড।
কিন্তু আপনি কে ?

– আমাকে চিনতে পারছো না তুমি?

নীল – না বললে চিনব কি করে?

– আমি ই তো রূপা।

নীল – ওহহহহহ।
তা এতো দিন পর হঠাৎ?

– এমনি ভাবলাম তোমার সাথে একটু কথা বলা যাক।
সেই যে কলেজে পিছু নিয়ে ছিলে তার পরে তো আর দেখাই হলো না।

নীল – হাহাহা আমি তোমার পিছু নিই নি তো।
আমরা তো কলেজের পাশে ছাত্র সংগঠন এ গিয়েছিলাম।
হ্যাঁ আসার সময় তোমায় কলেজের পাশে দাড়িয়ে থাকতে দেখেছিলাম।

– ওহহ আচ্ছা। আমি তো ভাবলাম পিছু ই নিয়েছিলে।
তা তোমার জি এফ নেই এখন ?

নীল – উমমম নেই।
কেন হতে চাচ্ছো নাকি ?
হাহাহা

– মোটে ও না।

নীল – আচ্ছা এখন ঘুমাবো।
বাই

– ওকে বাই।
গুড নাইট

নীল লাস্ট ম্যাসেজ সিন করার আগেই অফলাইন হয়ে গেল।

পরি ও অফলাইন হয়ে ভাবতে লাগলো।
রূপা আপু তো বলল
– নীল ভাইয়া নাকি ওনার পেছনে ঘুরে কিন্তু ভাব দেখে তো উল্টো মনে হচ্ছে।
এই সব ভাবতে ভাবতে পরি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস ।গল্প কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

? হ্যাপি রিডিং ?

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here