? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 10
_______________________________
পরীক্ষা শেষ হয়েছে আজ প্রায় পনের দিন।
হাসি মজা আড্ডা দিয়ে দিন কাটলে ও আজ বেশ বাজে অনুভূতি হচ্ছে পরির।
কাল যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ দেওয়ার পালা।
রেজাল্ট এর কথা ভাবতেই গা রি রি করছে পরির।
হাজার ভালো হোক পরীক্ষা
মনের ভেতর তা ও কেমন করছে।
নানান রকমের ভয় ঝেঁকে বসেছে।
পরি জানে ও ফাস্ট হতে পারবে না।
কিন্তু পাঁচ এর মধ্যে তো থাকতে হবে তাই না।
এই সব ভাবতে ভাবতে দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে পড়লো।
সেই সকালে ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করেছে ,,,,,এখনো আর কিছু ই খাওয়া হয় নি।
পরি বেডে হেলান দিয়ে কপালে হাত ঠেকিয়ে আধসোয়া হয়ে আছে।
দরজার কাছে কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে কপাল থেকে হাত সরিয়ে দেখে নিলো।
আম্মু কে দেখে পরি দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
প্লেটে খাবার নিয়ে এসেছেন মিসেস রাহেলা।
পরি মুখ কুচকাতেই মিসেস রাহেলা চোখ রাঙানি দিলেন।
পরি দমে গেল,,,,, মিসেস রাহেলা পরি কে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়ে বললেন
– পরি চিন্তা করিস না মা।
যেমন পরীক্ষা দিয়েছিস তেমন ই ফল হবে।
পরের বার আর ও ভালো করে পড়াশুনা করবি।
এমন নয় তো যে চিন্তা করলেই মার্ক বেশি আসবে।
তাই চিন্তা বাদ দিয়ে শুয়ে পর।
পরি মলিন হেসে সম্মতি জানালো ।
মিসেস রাহেলা ডিম লাইট জালিয়ে দরজা হালকা করে ভেজিয়ে দিয়ে চলে গেলেন।
আম্মু কে আস্বস্ত করলে ও পরির চোখে ঘুম নেই।
চিন্তা তে মাথা টা ফেটে যাচ্ছে।
সারা রাত এপাশ ওপাশ করেই কাটিয়ে দিলো।
সকাল সকাল ক্লান্ত শরীর নিয়ে উঠে দাঁড়ালো ।
সূর্য পরিপূর্ণ ভাবে পৃথিবীতে বিরাজ করতেই পরি ফ্রেস হতে গেল।
ফ্রেস হয়ে এসে রেডি হয়ে নিলো।
খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না পরির ,,,, তবু ও হালকা কিছু মুখে দিয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে বাসা থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
পরি হেঁটে চলছে ঠিক ই কিন্তু মনে হচ্ছে রাস্তা শেষ ই হচ্ছে না
এক পা এগোলে যেন দু পা পিছিয়ে যাচ্ছে।
বেশ কিছুক্ষন পর পরি স্কুলে পৌছোলো।
ক্লান্ত শরীর নিয়ে কোন রকমে অডিটোরিয়ামে দিকে পা বাড়ালো।
দু চোখে রাজ্যের ক্লান্তি বিরাজ করছে ,,,,, মনের ভেতর অজানা সব ভয় কাজ করছে।
কি হয় কি হয় ,,,,,,,,,,,,,,,,
বেশ কিছুক্ষণ
পর রেজাল্ট ঘোষনা করা হলো।
পরি দ্বিতীয় হয়েছে,,,, পরির কানে বোধহয় শব্দ টা পৌছায় নি।
পরি ক্লান্ত দৃষ্টিতে সামনের দিকেই তাকিয়ে আছে।
সবার করতালিতে তে পরির ধ্যান ভাঙ্গলো ।
আশে পাশে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো কি হয়েছে।
পরি কে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে হাফসা বলল
– আরে যা ,,,,,, মার্ক সিট টা নিয়ে আয় ।
পরি কোনো মতে বেঞ্চ ঠেলে সামনের দিকে আগালো।
যখন মার্ক সিট হাতে দিয়ে হেড স্যার বললেন
– কংগ্রেস পরি।
তখন পরির মাথা তে বিষয় টা চড়াও করে উঠলো।
মার্ক সিট খুলেই পরির চোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো।
সে দ্বিতীয় হয়েছে,,,, এটা যেন বিশ্বাস ই হচ্ছে না ওর।
খুশিতে পরি বাকহীন হয়ে গেছে,,,,, মানুষ শুধু অধিক শোকে নয় ,,,, খুশিতে ও বাকহীন হয়ে পড়ে পরি তার আর্দশ প্রমান।
_____________________
স্কুল থেকে বের হতেই বান্ধবীরা সবাই পাকরাও করে ধরেছে পরি কে।
তাদের সবার নাকি ট্রিট চাই।
পরি মুখ গোমড়া করে বলল
– ইসসসসে এতো কষ্ট করেছি আমি আর ট্রিট ও আমি ই দিবো।
হাফসা পরির কাঁধে হাত রেখে বলল
– অবিয়াসলি।
এতে এতো সেন্ট্রি খাওয়ার কি আছে সোনা ?
পরি মুখ গোমড়া করেই বলল
– পকেট তো আমার ই খালি হবে বাবু।
তুমি বুঝবা কেমনে,,,,,,
হাফসা মাথা চুলকোতে চুলকোতে বলল
– তা তো যাবেই একটু।
প্যারা নিছ না চিল কর।
পরি বাকা চোখে তাকিয়ে বলল
– চিল তো তোমরা করবা আর আমি করবো পকেট খালি।
সীমা পরির থুতনিতে হাত দিয়ে বলল
– এখন তো ময়না ট্রিট দাও।
তারপর তোমার সমস্ত কথা শুনবো,,,,,,,
সুখ দুঃখ সব কিছু।
পরি আর কথা না বাড়িয়ে ফুচকার দোকানের দিকে পা বাড়ালো।
সবাই মিলে হৈ হুল্লর করে ফুচকা খেলো।
তারপর সবাই এক গাদা চকলেট দিয়ে পরি কে কংগ্রেস জানালো।
পরি সবাই কে জড়িয়ে বলল
– তোমরা এতো ভালো কেন সোনা?
হাফসা বাঁকা হেসে বলল
– তুমি যে আমাদের ময়না গো সোনা।
তাই তো এতো ভালো আমরা।
সবাই ঠাট্টা রসিকতা করতে করতে বের হয়ে গেল।
রাস্তায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো ওরা।
হঠাৎ একটা বাইক জোড় গতিতে পাশ কাটিয়ে থামলো।
পরি পেছন ফিরে তাকাতেই দেখলো নীল।
এই ছেলেটা কে সরাসরি মাত্র দুবার দেখলে ও হাজার বার ছবি তে দেখেছে।
পরির রাগ উঠে গেল,,,, এই ছেলেটা এতো বাজে কেন ?
পরি নিজেকে সামলে নিয়ে সামনের দিকে আগাতে লাগলো।
কিছুদূর যাওয়ার পর ই রিক্সা পেয়ে গেল।
বাসায় পৌছে সবাই কে রেজাল্ট জানালে সবাই বেশ খুশি হয়।
পরির আব্বু আফজাল হোসেন পরি কে বলেন
– পরি মা কি চাই তোর?
পরি সোজা সাপটা বলে তার তো ফোন নেই তাই তার একটা ফোন চাই।
কিছুদিন পর ই আফজাল হোসেন মেয়ের আবদার পূরন করেন।
এভাবেই পরির দিন কাটতে লাগে।
সকাল সকাল স্কুলে যাওয়া ,,, স্কুল থেকে ফিরে গোসল করে খাওয়া দাওয়া করা।
আর তারপর বাসার পাশের চক টাতে ঘুরে বেরানো। আর রাতে পড়াশুনা কমপ্লিট করে ফোনে গেইম খেলা।
শীত কাল হওয়ার দরুন চকে নেই কোনো ফসল।
থেকে থেকে কয়েকটা জমি তে সরিষা উৎপন্ন করা হচ্ছে।
বিকেল গড়িয়ে যখন সন্ধ্যা হয় ,,,,,,,,, হলুদ সরিষা ক্ষেত কে মনে হয় জলন্ত লাভা।
এই চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য দেখেই পরির বেড়ে উঠা।
এভাবেই নানান ব্যস্ততা,,,, আনন্দ উৎল্লাসে কেটে যায় পরির দিন।
কিছুদিনের মাঝেই পরির এক্সাম শুরু হয়।
পরি যেহেতু জি এস সি পরীক্ষার্থী,,,,,,,তাই প্রতি মাসেই টেস্ট নেওয়া হবে।
প্রথম টেস্ট পরির বেশ ভালোই হয়।
একদিন পরি জানতে পারে তার বান্ধবীরা ফেসবুক থেকে অনেক পড়া কালেক্ট করে।
তাই পরি বাসায় এসে তার আব্বু কে বলে যাতে ওর ফোনে একটা সিম কার্ড দেওয়া হয়।
আর নেট কানেকশন দিয়ে আনেন।
পরির আব্বু পরির কথা মতো সমস্ত ব্যবস্থা করে আনে।
পরি সিম কার্ড হাতে পেয়েই চট জলদি ফেসবুক আইডি খুলে ফেলে।
______________________
New top riders
@Asma Nasima
@Mst Rupa Moni
Sukriya tmdr Apu………aivbyi pashy thako ❤️
( আসসালামুআলাই রির্ডাস। বেশি কিছু বলবো না,,,,, আমি আগের মতো গল্প দিতে পারছি না।তাই আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
গল্প টি কেমন হচ্ছে কমেন্ট এ জানাবেন প্লিজ ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন)
বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।
? হ্যাপি রিডিং ?
চলবে
ফাতেমা তুজ