বান্ধবীর ভাই যখন বর ? Part – 6

0
1281

? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 6
________________________________
6.
নীল লন্ডনে আছে তিন বছর প্রায়।
এই তিন বছরের মাঝে সে একটি দিনের জন্য ও বিডিতে ফিরে যায় নি ।
ইচ্ছে করে নি এমন নয় কিংবা যাওয়ার কোনো স্পেস ছিলো না এমনটা ও নয়।
ফিরে যায় নি শুধুমাত্র তার পরির জন্য।
পরির সামনে নিজেকে সামলে রাখা যে খুব ই কঠিন।
কিন্তু এই হাজার হাজার মাইল দূরে সরে থাকা টা ও খুব কঠিন।
তাতে কি তার পরি তো ভালো থাকবে এটাই গুরুত্বপূর্ণ ।
তাই তো বুকে হাজারো পাথর চাঁপা দিয়ে লন্ডনে ই পড়ে আছে।
লন্ডন তার জন্য লাকি দেশ ই বটে।
লন্ডনে আসার পর নিজ হাতে যে বিজনেস গড়ে তুলেছে তা সত্যি অবিশ্বাস্য ই বটে।
প্রধান কারন ছিলো পরির থেকে দূরে থাকা। সারাদিন ব্যস্ততার মধ্যে কাটলে ও রাত টা নির্ঘুম ই কেটে যেতে নীলের।
এতো শত ক্লান্তির মাঝে কয়েক টা ঘন্টা ও ঘুমাতে পারতো না নীল,,,,, ঘুম যেন পরির মাঝেই স্তব্ধ হয়ে গেছে।
তাই শুরু হয় কষ্ট ভুলে থাকার জন্য রাত জেগে ও কাজ করা।
যার ফলে আজ তিন বছর পরে নীলের বিশাল কোম্পানি।
নীল পরির থেকে দূরে গেলে ও পরির প্রতিটা কদমের খবর সে রাখতো।
একদিন আগে বিডি থেকে খবর পেয়েছে পরি কে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
তা ও ওর রাসকেল নেশাখোর ফুফাতো ভাই প্রান্তের সাথে ।
নীল এক মুহূর্ত দেরি না করে তখনি বিডি তে ফেরার ব্যবস্থা করে।
ফ্লাইটে উঠার আগে জানতে পারে এই বিয়ে তে পরি ও রাজি নয়।
আর পরির ফুপির সমস্ত কারসাজির ও খবর পেয়ে যায় নীল।
ফ্লাইট 4 টার সময় ল্যান্ড করতেই নীলের লোকেরা খবর দেয় আজ কেই পরির বিয়ে।
এ কথা শুনে নীল পাগল প্রায় হয়ে পড়ে।
যদি একটু ও ভুল হয়ে যায় তো সে তার পরি কে সারাজীবনের জন্য হাড়িয়ে ফেলবে।
নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছিল না নীল।
নীল কে শান্ত করে নীলের বিজনেস ইনভেস্টার অথার্ৎ নীলের বন্ধু অনিক।
মাথা ঠান্ডা করে নীল পরিকল্পনা সাজায়।
এয়াপোর্ট থেকে বাসা তে ব্যাক না করে সোজা গাড়ি নিয়ে চলে যায় পরির বাড়িতে।
আর তারপর সমস্ত টাই মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে সম্পূর্ণ হয়।
যার ফলে আছ পুরোপুরি ভাবে পরি তার।
পুরো পৃথিবীকে বলতে পারবে পরি আমার স্ত্রী,,,,,, পরি আমার অর্ধাংগিনী।

_______________________

নীল ফ্রেস হয়ে আসতেই দেখে পরি এখনো ঘুমিয়ে আছে।
নীল ঘড়িতে টাইম দেখে নিল,,,,,, 11’40 বাজে।
পরি কে ফ্রেস হতে হবে আর তাছাড়া খাওয়া দাওয়া ও করতে হবে।
নীল হাফসা কে বলল
– পরি কে জাগিয়ে তুলতে হবে তুই বরং খাবার নিয়ে আয়।

হাফসা মৃদু হেসে মাথা ঝাঁকিয়ে খাবার আনতে চলে গেল।
হাফসা চলে যেতেই নীল পরির মাথার কাছে বসল।
এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ চেয়ে রইলো।
কি আছে এই মেয়ে টার মাঝে ?
যার কারনে বাকি সবাই কে পানসে মনে হয়।
এতো মায়া কেন এই মেয়ে টার মাঝে ?
নীল এইসব ভাবতে ভাবতেই হাফসা খাবার নিয়ে এলো।
হাফসা সাইট টেবিলে খাবার টা রেখে ভ্রু কুঁচকে বলল
– ভাইয়া তুই এতোক্ষন ধরে কি করলি ।
মেয়ে টা তো এখনো ঘুমে আছে তাহলে ?

নীল বোকা হাসি দিয়ে বলল
– এই তো এখনি জাগিয়ে দিবো।
তুই যাহহহ

হাফসা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল
– ওকে।
কিন্তু ভাইয়া তুই ও তো কিছু খাস নি ?
আর তাছাড়া নিচে তোর বন্ধুরা ও অপেক্ষা করছে।
ওরা তো এখানেই ডিনার করবে তাই না ?

নীল হেসে বলল
– ইসসস এতো দিন তো আমার একটু ও খেয়াল রাখলি না।
যেই না পরি এসেছে আর তুই খেয়াল রাখা শুরু করে দিয়েছিস।

হাফসা মেকি হাসি দিয়ে বলল
– তা না হলে এই পাগল মেয়ে টা আমার একটা চুল ও রাখবে না।
এতো দিন তো তুই ওর ভালোবাসা ছিলি।
আর আজ থেকে তো বর।
এখন তো একদম ই ছাড় দিবে না আমায়।

হাফসার কথাতে নীল হেসে উঠে।
তারপর বলে
– সমস্যা নেই এখন আর তোর চুল ছিড়বে না।
হাজার হোক তুই তো ওর ননদিনী তাই না।

নীলের কথাতে হাফসা হালকা হাসে তারপর বলে
– তাহলে ভাইয়াদের গিয়ে কি বলব?

নীল মাথা টা ট্রাওয়াল দিয়ে ভালো করে মুছতে মুছতে বলল
– তেমন কিছু বলতে হবে না ওরা জানে আমি পরি কে খাইয়ে তারপর আসবো।
আর ওদের খেয়ে নিতে বলিস,,,,,, না খেতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে আর কি।
আমি তাড়াতাড়ি ই আসবো,,, তুই যা ।

হাফসা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালো।তারপর মৃদু হেসে চলে গেল।

_______________________

হাফসা চলে যেতেই নীল ধীর কন্ঠে পরি কে ডাকতে লাগলো।
বেশ কয়েকবার ডাকার পর পরির ঘুম হালকা হলো। নীল পরি কে উঠে বসতে সাহায্য করলো।
নীল কে দেখেই পরির মনে হাজারো প্রশ্ন উঁকি মারা শুরু করলো ।
,,,,,,,,, আচ্ছা নীল কেন পরি কে বিয়ে করলো?
তাছাড়া নীল কে তো পরি কখনোই তার ভালোবাসার কথা জানায় নি।
যদি ও পরির হাফ ভাব এ নীলের উচিত ছিলো পরির ভালোবাসা বোঝা।
কিন্তু কি জানি বুঝেছিলো কিনা ।
যদি বুঝেই থাকে তো তখন কেন কিছু বলে নি।
আর নীল ও যদি তাকে ভালোবেসেই থাকে তো কখনো বলে নি কেন?
তাছাড়া সবসময় কেন ইগনোর করতো ওকে।
এতো সব প্রশ্নের একটা ও উত্তর খুজে পেল না পরি।
বাজে অনুভূতি হচ্ছে তার,,,,,

নীল মৃদু স্বরে বলল
– পরি তুমি খেয়ে নাও একটু,,,, তারপর ফ্রেস হতে যাবে ঠিক আছে ।

পরির প্রচন্ড খিদে পেয়েছে তাই আর বারন করলো না।
নীল নিজ হাতে পরি কে খাইয়ে দিতে লাগলো আর পরি পরম আয়েষে নীলের হাতে খেতে লাগলো।
নীল পরি কে খাইয়ে দিতে লাগলো আর মুচকি হেসে ভাবলো
– সত্যি ই মেয়েটা পাগলি একটা।
________________

Boishakhi Jhor
আপু কে অনেক শুকরিয়া । আপুর মাধ্যমে আমি একজন রিডার্স পেয়েছি,,, যে নাকি টপ রিডার্স এর মধ্যে আছে। এভাবেই পাশে থাকো।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস। গল্প কেমন হচ্ছে জানাবেন প্লিজ ।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

? হ্যাপি রিডিং ?

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here