বান্ধবীর ভাই যখন বর ? Part – 3

0
1814

? বান্ধবীর ভাই যখন বর ?
Part – 3
___________________________

কিছুক্ষণ আগেই পরি কে অনুষ্ঠান মঞ্চে বসানো হয়েছে।
কাজী সাহেব দোয়া পড়ে বিয়ের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন।
পরির ভাবনা তে শুধু একটি মানুষ ই বিভোর হয়ে আছে।
ইসসস আজকে যদি তার সাথে বিয়ে হতো পরির, তাহলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যেত।
কিন্তু ভাগ্য যে পরি কে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে তা বোঝা দায়।
কাজী সাহেব যখন পরি কে কবুল বলতে বললেন ঠিক সেই সময়ে ই গুলির শব্দ পাওয়া গেল । আতঙ্কে সবাই উত্তকে উঠলো, হৈ হুল্লর পরে গেল ।
আবার গুলির শব্দ হতেই সবাই থমকে গেল।
স্টেজ এর গেট দিয়ে কালো পোশাক ধারী প্রায় 20 জন বন্দুক হাতে ভেতরে ঢুকছে।
ভয়ে জরসর হয়ে গেছে সবাই।
পরির যেন এতে কোন হেলদোল নেই , সে তো মজে আছে তার ভাবনাতে।
কালো পোশাক ধারী লোকদের মাঝ থেকে উঠে এলো এক সুদর্শন তরুন।
সাদা রঙের শার্ট এর সাথে ক্রিম কালারের ব্লেজার।
কি স্নিগ্ধ রূপ তার , অনেক নায়ক কেই হার মানাতে সক্ষম সে।
এই আতঙ্কের মাঝে ও তরুনীরা ছেলেটাকে দেখতে মিস করলো না।
কিন্তু আঁতকে উঠলো তখনি যখন ছেলেটার হাতে বন্দুক দেখলো।
হঠাৎ করেই ছেলেটা স্টেজ এ উঠে গেল, আর পরির পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল।
চারপাশের লোকজনের কৌতুহল সীমা নেই। অফুরন্ত কৌতুহল নিয়ে সবাই তাকিয়ে আছেন।
কিন্তু এই মুহূর্তে কেউ কোনো কথা বলতে ও পারছে না ।
তাই চোখ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে কি হচ্ছে।
বেশকিছুক্ষন কেটে যাওয়ার পর পরির ধ্যান কাঁটে।
পরি সামনের দিকে তাকাতেই চমকে উঠে।
তার সামনে হাঁটু গেড়ে কেউ একজন বসে আছে।
মুখ দেখার জন্য হালকা ঝুকতেই পরির সমস্ত শরীর কাঁপনি দিয়ে উঠে।
নীল
নাহহ নাহহ ওনি কি করে আসবেন।
আর কেন ই বা আসবেন, নিশ্চয়ই পরি কোনো স্বপ্ন দেখছে।
কিন্তু এই মুহূর্তে খুব করে চাইছে সে , স্বপ্ন টা যেন শেষ না হয়ে যায়।
পরি এক দৃষ্টি তে নীলের দিকে চেয়ে থাকে ।
যখনি মনে পড়ে আজ অন্যজনের সাথে তার বিয়ে হয়ে যাবে তখনি পরি জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ে।
নীল দুহাতে আঁকড়ে ধরে পরি কে।
নাহহ চাইতে তো নীলের চোখের কুর্নিশে পানি জমে আসে।
আজ তার জন্য ই মেয়েটার এই অবস্থা শুধু মাত্র তার জন্য।
কী করে পারলো সে মেয়েটিকে এতো কষ্ট দিতে।
যাকে নিজের জীবনের সব টুকু দিয়ে ভালোবেসে গেল, নিজের অজান্তেই তাকে কষ্ট দিয়ে দিলো।
নীল পরির মাথা তে নিজের থুতনি ঠেকিয়ে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে রইলো।
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলো আর কোন কষ্ট পেতে দিবে না তার পরি কে।
কিছুতেই নাহহ কোনো ভাবেই না।
______________________

চোখে পানির ছিটে তে জ্ঞান ফিরলো পরির।
চোখ খুলেই আবিষ্কার করলো কারো বুকে।
কোনো মতে উঠে দাঁড়াতেই সামনের মানুষটার দিকে তাকিয়ে এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল তার পৃথিবী।
নীল দাড়িয়ে আছে তার সামনে , এটা মিথ্যে নয় তাহলে।
এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে পরি, নীল ও তাই ।
দুজোনের ই ইচ্ছে হচ্ছে হাজারো কথা বলতে কিন্তু এক অদৃশ্য দেয়াল কথা বলতে বাঁধা দিচ্ছে।
কতোক্ষন তাঁরা এভাবেই দাড়িয়ে রইলো তা জানা নেই।
একজন ছেলে এসে নীলের কাঁধে হাত রেখে বলল
– নীল 9 টা বেজে গেছে।
এখন এভাবে দাড়িয়ে থাকার সময় নয়।
তাড়াতাড়ি কাজ সারতে হবে।
ছেলেটার কথায় নীলের ধ্যান আসলো।
চোখের পানি আড়াল করে বলল
– ইয়া।
অনিক তুই সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা কর।

অনিক হালকা হেসে চলে গেল।
পরি এখনো সেভাবে ই তাকিয়ে আছে।
নীল পরির কাছে এসে কাঁপাকাঁপা হাত দিয়ে পরির দু গাল স্পর্শ করলো।
নীলের ঠান্ডা হাতের স্পর্শ পেয়ে পরির শরীর জেকে বসলো।
পরি ছলছল চোখে নীলের দিকে তাকিয়ে বলল
– নীল, আপনি।

নীল মলিন হেসে বলল
– হ্যাঁ আমি।
পরি
নীলের মুখে পরি নাম টা শুনে চমকে উঠলো ও।
কতো বছর পর আজ তার মুখ থেকে পরি নাম টা শুনতে পেলো ও।
নীলের পরি বলে ডাকটা বার বার কানে বেজে চলছে।
মনে হচ্ছে কেউ রেকডিং ছেড়ে দিয়েছে ।
নীল পরির গালে হাত রেখেই বলল
– এই মুহূর্তে তোমায় আমি বিয়ে করবো পরি।
তোমার মতামতের প্রয়োজন নেই আমার কাছে।
তুমি যদি বলো আমায় বিয়ে করবে না তবু ও আমি তোমায় এই মুহূর্তে ই বিয়ে করবো।
পরি বিয়ে কথা টা শুনে স্থির হয়ে গেল।
বিয়ে, নীল তাকে বিয়ে করবে।
সমস্ত ঘটনাই আশে পাশের সবাই নীরব দর্শকের মতো দেখে যাচ্ছিলো।
নীল কিছু একটা ভেবে ,পরি কে দুটো বিউটিশিয়ান দিয়ে রুমে পাঠালো।

পরির বাবা আফজাল সাহেব চেঁচিয়ে বললেন
– কি হচ্ছে কি এসব।

নীল আফজাল সাহেবের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।
তারপর কাউকে চোখ দিয়ে কিছু ইশারা করতেই দুটো লোক এসে আফজাল সাহেব কে সরিয়ে নিলো।

ভাই কে সরিয়ে দেওয়ায়
সুলতানা বেগম হুমরি খেয়ে পরল।
সে চেঁচিয়ে বলল
– এই ছেলে তুমি কে ?
আর পরির সাথে তোমার বিয়ে দিবো না আমরা।
পরির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।

সুলতানা বেগমের কথায় নীল উচ্চ শব্দে হেসে উঠলো।
এই মূহুর্তে সুলতানা বেগমের মনে হচ্ছে সে পৃথিবীর সবথেকে বড় জোঁক শুনিয়েছে।
নীল কে এমন ভাবে হাসতে দেখে সুলতানা বেগম ভ্রু কুচকালেন।

নীল হাসি থামিয়ে সুলতানা বেগমের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
তারপর বাঁকা হেসে বললেন
– ফুপি শাশুড়ি যে।
খুব তেজ দেখছি, তা ফুপি আম্মা খুব বেশি লাগলো বুঝি?
সমস্ত প্ল্যান ভন্ডল হয়ে গেল নাকি ?

নীলের কথাতে সুলতানা বেগম ঘাবরে গেলেন।
কোনো রকম নিজেকে সামলে বললেন
– কি বলছ কি তুমি।
প্ল্যান কিসের প্ল্যান ?

নীল কোমরে হাত গুঁজে বলল
– আভী তো পিকচার অর ভি বাকি হে।
বড্ড ধরিবাজ আপনি, ফুপি আম্মা নিজের চালাকি বন্ধ করুন।
আর কতো দিন চালাকি করবেন ,,,,,,, এবার তো নিজেকে সামলান ।
এতো কালে ও তো কিচ্ছুটি করে উঠতে পারলেন না।
আর আজ এতো সুন্দর প্ল্যান করে নিলেন।
বাহহহ ফুপি শাশুড়ি আম্মা বলতে হবে আপনার ধৈর্য আছে।
নাহলে এতো দিন খেটে খুটে সুন্দর প্ল্যান টা করতে পারতেন না ।
কিন্তু জানেন তো পৃথিবী টা গোল , তো আপনি যেই প্ল্যান ই করুন না কেন শেষ মেষ হয়ে যায় গোল্লা।
আর বলা বাহুল্য মানুষ হাত করার জন্য আপনি বেস্ট।
কতো সুন্দর ভুলিয়ে বালিয়ে ভাই আর ভাইয়ের বউ কে হাত করে নিয়েছেন।
কি ট্রিক টাই না ইউস করেছেন।
মৃত মানুষের নামে জলজ্যান্ত মিথ্যে বানিয়ে নিয়েছেন।
তা ও সেই ব্যক্তি টা নিজের মা ।
বাহহহ ফুপি শাশুড়ি আম্মা বাহহহ এই বলেই হাত দিয়ে তালি বাজাতে শুরু করলো নীল।
তারপর আবার বলল
বলতেই হয় আপনার এলেম আছে বটে।
দুই কাল গিয়ে তিন কালে ঠেকেছেন কিন্তু মাথার মধ্যে বধ বুদ্ধি গুলো এখনো ঘোরাঘুরি করছে।
আজ আছেন তো কাল নেই তারপর ও বধ বুদ্ধি গুলো গেলো না।

( আসসালামুআলাই রির্ডাস।গল্প টার প্রথম দিকে রোমান্টিকতা নেই শেষের দিকটা তে পাবেন।
হয়তো একটু এক ঘেয়ামি লাগছে কিন্তু এটাই গল্পের রুলস যে।
গল্পের শুরু তেই তো মিল দিতে পারছি না।
তাই পুরো গল্পের সাথে থাকুন আশা রাখছি ভালো লাগবে।
আমার লেখা গল্প পেতে পেজ এ লাইক ফলো আর বন্ধুদের ইনভাইট দিয়ে পাশে থাকুন )

New top riders
Mim Momo
Sukriya tmk Apu ❤️❤️ avabayi pashy thako ?

বি : দ্র : ভুল ত্রুটি মাপ করবেন ।

?হ্যাপি রিডিং ?

চলবে
ফাতেমা তুজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here