আমার গল্পে শুধু তুমি পর্ব ৭+৮

0
2830

গল্প: আমার গল্পে শুধু তুমি
লেখক:হাচনাইন হোসেন সাব্বির
পর্ব:৭+৮
অতীত তো অতীতই হয় অতীতকে নিয়ে কি বাঁচা যায় বলুন।আমি আপনার অতীত আর জিনিয়া আপু আপনার বর্তমান।তাই….
-তাই আমি তোকে ডিভোর্স দেবো।হ্যা সত্যিই আমি তোকে ডিভোর্স দেবো….।আমার জীবনে তোর জন্য কোনো জায়গা নেই,, তূর্য কথাগুলো বলে সেখান থেকে যেতে নিলে অন্তী তূর্যর হাত চেপে ধরে,, -তাহলে আমাকে বিয়ে কেন করলে?আর আমার সাথে ওসব …… কেন করলেন বলুন!
-আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই।
-তুমি সত্যিই আমাকে আর ভালোবাসো না তাই না??
-আমার ঘেন্না করে তোর দিকে তাকাতে।
-তাহলে আমাকে ছেড়ে দাও না কেন?আমাকে যেতে দাও আমি তো ভালোই ছিলাম,, এবার তূর্য তেলে বগুনে জ্বলে উঠে।
অন্তীর গলা চেপে ধরে,, -তুই কি ভেবেছিস তুই চাইবি আর আমি তোকে তোর সাগর ভাইয়ের কাছে দিয়ে আসবো!!
ভুল!!ওই শ্রেনীর প্রেমিক আমি না। আমি চাইছি তাই তুই আমার কাছে আছিস যতোদিন আমি চাইবো ততোদিন থাকবি।
-সব কিছু তোমার ইচ্ছে??
-হু
কথাটা বলেই তূর্য অন্তীকে ধাক্কা দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।এদিকে তূর্যর মা সেই কখন থেকে ছেলেকে ডেকেই যাচ্ছে।
তূর্য সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই দেখে বড় ভাবি মা আর বড় ভাই একটি মেয়েকে ঘিরে নিয়ে বসে আছে।
দূর থেকে মেয়েটিকে কেমন যেন তূর্যর খুব চেনা চেনা লাগছিলো তবে যেহেতু মেয়েটি উল্টো দিক মুখ করে বসে ছিলো তাই ঠিক বুঝতে পারছিলো না।
তূর্য একটু এগিয়ে যেতেই তূর্যর মা তূর্যকে ডাক দেয়,,
-বাবু তোকেই তো ডাকছিলাম।একটু তাড়াতাড়ি আসতে পারতিস।মেয়েটা কখন থেকে তোর জন্য অপেক্ষা করছে।
-হুহ শুনতে পেয়েছি।কেন ডাকছিলে আম্মু??
-আমি বলছি!আমি বলছি…..(প্রভা ভাবি)
-তো বলো।অপেক্ষা করছো কোন…..
-তোমার জন্য সার্প্রাইজ…।।
-সার্প্রাইজ মানে…..
কথাগুলো বলে তূর্য এগিয়ে যেতেই মেয়েটি উঠে দাড়ায়।তূর্য হা করে তাকিয়ে আছে মেয়েটির দিকে।
স্টিচ লেডিস্ জিন্স আর ফুল হাতা লেডিস শার্ট পড়ে আছে মেয়েটি।চুলটা পনিটাইল করে বাঁধা।ডান হাতে একটা গর্জিয়াস লেডিস্ ওয়াচ পড়া।মেয়েটির গায়ে কড়া পার্ফিউম দেওয়া।পার্ফিউমের গন্ধটা তূর্যর খুব চেনা।
তূর্য মুখ খোলার আগেই মেয়েটি দুম করে এসে তূর্যকে জড়িয়ে ধরে।ঠিক জড়িয়ে ধরে না বলতে গেলে জাপটে ধরে…!
তমসা বেগমের চোখ তো কপালে উঠে যায়।
বড় বউমা বলেছিলো মেয়েটা নাকি তূর্যর খুব ভালো বন্ধু কিন্তু কি মেয়েরে বাবা এভাবে সবার সামনে আমার ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরলো
তমসা বেগম মনে মনে কথাগুলো ভাবছিলো,, তখনই প্রভা খুব জোড়ে জোড়ে হেসে উঠে.. -জেনি হয়েছে হয়েছে…..এবার ছাড় ছাড়। কিন্তু মেয়েটি তূর্যকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয়। প্রভা একগাল হেসে তূর্যর দিকে তাকিয়ে জবাব দেয়,,
-ও জিনিয়া সম্পর্কে আমার চাচাতো বোন।আমি যখন খুব ছোট তখনই ছোট চাচ্চু বিদেশে পাড়ি জমায়।জিনিয়ার জন্মও বিদেশেই হয়।তো জিনিয়া দুই একবার বাংলাদেশে আসলেও আমার বিয়ের পর এই প্রথম এলো।তাই তোমাদের সাথে ওর পরিচয় করানো হয় নি।
ও বাই দ্যা ওয়ে কিছুদিন আগে জিনিয়ার প্রফাইল চেক।করার সময় তোমার আর জিনিয়ার বেশ কিছু ছবি চোখে পড়ে ব্যাস তরপরই জানতে পারি তোমরা এতো ভালো বন্ধু।আর জিনিয়াও বাংলাদেশে এসেছে তো আমি ভাবলাম তোমাকে সার্প্রাইজ করে দিই…
-কি তূর্য এবার তুমি খুশি তো??
কথাগুলো বলে প্রভা তূর্যর দিকে তাকায়।এদিকে জিনিয়া এখনো তূর্যর বুকে মুখ লুকিয়ে দাড়িয়ে আছে।তূর্য মূর্তির মতো স্থির হয়ে আছে।এভাবে জিনিয়াকে বাড়িতে একদম আশা করেনি তূর্য।
এদিকে তমসা বেগম বোকার মতো হেসেই যাচ্ছে।এখনে কি ঘটছে তার কোনো কিছুই মাথায় ঢুকছে না।
তমসা বেগমের জানা মতে তূর্যর জীবনে মেয়ে বলতে একজনই সে হলো অন্তী।বিদেশে গিয়ে যে ছেলে আরো একটা মেয়ে বন্ধু জুটিয়েছে তা তমসা বেগমের কল্পনারও বাহিরে।
এদিকে বেশ কিছুক্ষন পর তূর্য অনুভব করে তার বুকের সে দিকটায় ভেজা ভেজা অনুভব হচ্ছে যে দিকটায় জিনিয়া মুখ গুজে রেখেছে।
তূর্য আর বুঝতে বাকি নেই যে জিনিয়া কাঁদছে।তূর্য আর সেখানে এ মূহূর্ত দাড়ায় না সোজা জিনিয়াকে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে যায়।
এদিকি দূরে দাড়িয়ে কেউ একজন তাদের কর্মকান্ড বেশ নিখুঁত ভাবে লক্ষ্য করছে সে দিকে কারো খেয়ালই নেই।
তূর্য জিনিয়াকে নিয়ে যাওয়ার সময় তমসা বেগমের মুখে যেমন অবাক হওয়ার রেখা ফুটে উঠেছিলো ঠিক তেমই প্রভার মুখে ফুটে উঠেছিলো এক রাশ বাঁকা হাসির ঝলক।
এদিকে তূর্য জিনিয়াকে ঘরে নিয়ে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।অন্তী তখন সিড়ির উপর দাড়িয়ে।বেশ কিছুক্ষন পর জিনিয়া কাঁদতে কাঁদতে নিজে থেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।জিনিয়া ব্যাগ পত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে নিলে তমসা বেগম আর প্রভা মিলে আটকায়। কিন্তু তার এক কথা যতোক্ষন তূর্য না বলবে সে আর একমূহূর্ত ও এই বাড়িতে দাড়াবে না।
অনেক জোড়া জোড়ির পর তূর্য আসে।জিনিয়ার হাত থেকে ব্যাগগুলো নিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় মেঝেতে।তারপর জিনিয়ার দিকে রাগী চোখে তাকায়।
তখন জিনিয়া ছোটো বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উল্টে কাঁদছে,,
-আমি বলছি তো তোমার এই বাসা থেকে কোথাও যাওয়ার দরকার নাই তুমি এখানেই থাকবা।অন্তত ততোদিন থাকবা যতোদিন তুমি থাকতে চাও।
জিনিয়ার যাওয়া আটকানোর জন্য তূর্যর এই টুকু কথায় যথেষ্ট ছিলো।
সারাদিন বাড়িতে এতো কিছু ঘটে গেছে তার কোনোটাতেই অন্তীর কোনো ভূমিকা ছিলোনা।বলতে গেলে আজ গোটা দিনটাই অন্তী নিজেকে ঘর বন্দী করে রেখেছে।এদিকে অন্যদিনের মতো ফুপ্পি শ্বাশুড়ি ও অন্তীকে নিচে ডাকেনি রান্না করার জন্য।বাড়িতে মহা অতিথি এসেছে।তার জন্য মহা ভোজের আয়জন সম্পূর্নটাই তিনি নিজের হাতে করেছেন।
অবশ্য প্রভাও শ্বাশুড়িকে হেল্প করেছে তবে সব গুলো রান্নাই তমসা বেগম নিজের হাতে করিছেন।
রাতের খাবার শেষে যে যার ঘরে চলে যায়।আজ দুপুরের পরপরই তূর্যকে বিশ্ববিদ্যালয় চওরেই কাটাতেন হয়।জয়েনিং এর ব্যাপ্যারে বেশ কিছু অফিসিয়াল কাজও পড়ে ছিলো।
তূর্যর বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় এগারোটা বেজে গেছে।তূর্য রাতের খাবারও বাহিরে থেকে খেয়ে এসেছে।
তূর্য ঘরে এসে দেখে অন্তী বিছানায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে শুয়ে আছে।তূর্য অন্তীর গায়ে কাথা টেনে দিতে নিলে অন্তী উঠে যায়।কিছুক্ষন তূর্যর দিকে তাকিয়ে থেকে বালিস আর কাথাটা হাতে করে নিয়ে হাটা ধরে বারান্দার দিকে, তূর্য একটু অবাক হয়।অন্তীকে প্রশ্ন ছুড়ে দেয়…
-কই যাচ্ছো?
অন্তী একটু হাসে,
-বারান্দায়!
-কেন?আমি কি বারান্দায় যেতে বলছি?
-না!তবে আপনার ঘরে আমার জন্য কোনো জায়গা নেই।যে ঘরের আসল মালিক সে তো চলে এসেছে তাই আমাকে তো আমার জায়গা ছাড়তেই হবে।
কথাটা বলেই অন্তী বারান্দায় চলে গিয়ে ভেতর দিক থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তূর্যও আর কিছু বলে না।
অন্তীর ধারনা ছিলো তূর্য হয়তো তাকে আটকাবে কিন্তু তূর্য আর তার দিকে ফিরেও তাকায় না।
মাঝরাতে প্রায় তিনটে নাগাত অন্তীর ঘুম ভাঙ্গে পানি পিপাসায়।অন্তী গুটিগুটি পায়ে ঘরে আসে।বেড সাইডের লাইটটা জ্বালানোই ছিলো।অন্তী বিছানার দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় তূর্য তো বিছানায় নেই।মাঝরাতে প্রায় তিনটে নাগাত অন্তীর ঘুম ভাঙ্গে পানি পিপাসায়।অন্তী গুটিগুটি পায়ে ঘরে আসে।বেড সাইডের লাইটটা জ্বালানোই ছিলো।অন্তী বিছানার দিকে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় তূর্য তো বিছানায় নেই।
অন্তী প্রথমে বেশ অবাক হয়।এতো রাতে তূর্য কোথায় গেলো সেটা ভেবে,, পরে জিনিয়ার কথা মাথায় আসে।তূর্য কোথায় গেছে সেটা আর বুঝতে বাকি রইলো না অন্তীর।
অন্তী রাগে গম গম করতে করতে সেখানেই বসে পড়ে।অন্তীর চোখ বেয়ে কয়েক ফোটা পানি পড়ে। অন্তী বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করেও যখন তূর্য ফিরে না তখন অন্তী গুটি গুটি পায়ে হাটা ধরে জিনিয়ার ঘরের দিকে।
অন্তী ধীর পায়ে এগিয়ে যায় জিনিয়ার ঘরে।অন্তীর মস্তিষ্ক বলছে সেখানে না যাওয়াই ভালো কিন্তু মন তো আর মস্তিষ্কের কথা শুনে না। অন্তী প্রায় অনেক ক্ষন জিনিয়ার ঘরের সামনে এসে দাড়িয়ে আছে কিন্তু দরজায় নক করবে কিনা এ নিয়ে দ্বিধা দন্দে ভুগছে সে।
বেশ কিছুক্ষন পর অন্তী যখন দরজা ধাক্কা দেয় দরজাটা আপনা আপনিই খুলে যায়।দরজাটা শুধু ভেরানো ছিলো।অন্তী ভেতরে মুখ বাড়িয়ে দেয়। ড্রিম লাইটের আলোয় ভেতরটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।ঘরটা খালি।ভেতরে কেউ নেই।
অন্তী যেমনটা আশা করেছিলো তেমন কিছুই সে দেখতে পায় নি।অন্তী মনে মনে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস নেয়। তারপর কি মনে করে অন্তী হাটা ধরে ছাদের দিকে।অন্তীর কেন যেন মনে হচ্ছে তূর্যকে সে ছাদেই পাবে,, অন্তী এবার ছুট লাগায় ছাদের দিকে।ছাদ পর্যন্ত পৌছে ভেতর দিকে উকি দেয়।হ্যা তূর্য আর জিনিয়া ছাদেই আছে।
তূর্য উল্টো দিকে মুখ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আর জিনিয়া তূর্যকে পেছন থেকে জড়িয়ে রেখেছে। অন্তী আর সেখানে এক মূহূর্তও দাড়ায় না।একছুটে ঘরে চলে যায়।
এদিকে চলতে থাকে তূর্য অন্তীর কথপোকথন,
-তূর্য…আমি সত্যিই তোমাকে খুব ভালোবাসি
-হুহ
-আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না,
-হুহ
-আমি জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো না বাট আমি তো বাসি।আমাদের সারা জীবন ভালো থাকার জন্য আমার একার ভালোবাসায় যথেষ্ট,,
-জানি না…আমি তোমাকে ভালো বাসি না।
-ভালোবাসো নাই যখন তখন আমার সাথে লিভ ইন করলা কেন??
-লিভ ইন??বার বার লিভ ইন বলে কি প্রমান করতে চাইছো??
-কি করেছি আমি তোমার সাথে??তুমি আমার ভালো বন্ধু ছিলে ব্যাস এইটুকুই।তুমি অসুস্থ ছিলে আমি তোমাকে মেন্টাল সাপোর্ট দিয়েছি।তোমি আমার কাছে আশ্রই চেয়েছিলো আমি দিয়েছি।আমার ভুল এইটুকুই যে আমি তোমার সাথে এক বাসায় থেকেছি বাট এক সাথে তো থাকিনি!!
-সো হোয়াট তূর্য আমরা এতো গুলো দিন একসাথে থেকেছি।তুমি বলো আমাকে কি একদিনও তোমার ভালোবাসাতে ইচ্ছে করে নি?
-জানো ভালোবাসা এক বারই হয়।আমার মনে এলরেডি কেউ একজন আছে তাই তাকে তোমাকে সেই জায়গায় কখনো বসাতে পারি নি।
তূর্য এইটুকুই বলেই সেখান থেকে যেতে নিলে জিনিয়া তূর্যকে পেছন থেকে আবার জাপটে ধরে,, -তূর্য তুমি ছাড়া আমার আর কেউ নেই।আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।
-জেনি অনেক রাত হয়ে গেছে ঘরে যাও আর ঘুমিয়ে পড়ো,,, -প্লিজ তূর্য.
-তোমার দায়িত্ব আমি নিয়েছি তাই তোমার জন্য যতোটুকু করা সম্ভব আমি করবো তবে সেটা শুধু……।তুমি যতোদিন চাও আমার বাসায় থাকতে পারো।আমি তোমাকে যেতে বলবো না।
এবার তূর্য আর এক মূহুর্ত সেখানে দাড়ায় না।দ্রুত গতিতে বেড়িয়ে আসে সেখান থেকে।
এদিকে অন্তী সে বারান্দায় হাটু গেড়ে বসে আছে।সে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে।আর এক দিনও সে এখানে থাকবে না।কাল ভোর বেলাতেই বেরিয়ে যাবে মায়ের কাছে।
চোখের সামনে মানুষগুলোকে পাল্টে যেতে আর দেখতে পারবে না সে। কারো পায়ের আওয়াজ পেয়ে অন্তী আবার ঘুমের ভান করে বিছানায় শুয়ে পড়ে।
তূর্য ঘরে এসবে ধীর পায়ে এগিয়ে যায় অন্তীর দিকে।অন্তী তখন ঘুমের ভান করে শুয়ে আছে। তূর্য অন্তীর কাছে গিয়ে অন্তীকে কোলে তুলে নেয় তারপর ওকে এনে বিছানায় শুয়ে দেয়।
তূর্য অন্তীর কপালে একটা গভীর চুমু এঁকে দিয়ে সিগারেটের প্যাকেটটা হাতে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়। তূর্য চলে যেতেই অন্তী শোয়া থেকে উঠে দাড়ায়। সেদিন সারা রাত দুজনের কারোই ঘুম হলো না।
সকাল বেলা ঘুম ভাঙ্গার পর পরই তূর্য নিচে নেমে আসে।নিচে নামতেই দেখে জিনিয়া খাবার টেবিলে বসে আছে তার পাশেই বসে আছে তমসা বেগম।জিনিয়াকে নিজের হাতে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।
তূর্য মায়ের দিকে একবার তাকায়। নিজে নিজেই হেসে দেয়,,, -আম্মু পারে ও কতো তাড়াতাড়ি জিনিয়ার সাথে ভাব করে নিলো!
তূর্য সেই দিকে আর না এগিয়ে রান্না ঘরের দিকে যায়।অন্য দিনের মতো আজ কেউ কফি হাতে ঘুম ভাঙ্গায় নি। তূর্য অন্তীকে খোজার জন্য রান্না ঘরে উকি দেয়।নেই অন্তী রান্না ঘরে নেই।তূর্য অন্য ঘর গুলো ও খোঁজে কিন্তু অন্তীকে কোথাও দেখতে পায় না সে।
এবার তূর্য চলে যায় তিয়াশের ঘরে।অন্তীর যেকোনো সমস্যা তিয়াশের সাথেই শেয়ার করে।তূর্য তিয়াশের ঘরে যেতেই চোখে পড়ে তিয়াশ বিছানায় উবু হয়ে আছে??
-তিয়াশ
-কিছু বলবে?
-না!!
-ওওও
তূর্য চলে যেতে নিলে তিয়াশ পেছন থেকে ডাক দেয়,,
-ভাইয়া??
-হুহ
-তোমরা সবাই মিলে একটা পিচ্চি মেয়ের পেছনে না লাগলেই পারতে।মামা আমাদের জন্য কি করেছে তা আমার চেয়ে তোমরা বেশি ভালো জানো।আজ মামা অসহায় বলে মেয়েটাকে এভাবে কষ্ট না দিলেও পারতে।তোমার বিদেশীনি প্রেমিকাকেই যদি বাড়িতে এনে এসব নোংরামো করার ইচ্ছে ছিলো তাহলে বাচ্চা মেয়েটাকে বিয়ে করার কি দরকার ছিলো,,
-তিয়াশ
-আমি অন্তুকে মামীর কাছে রেখে এসেছি।পারলে না খেয়ে মরবে তবুও তোমাদের দয়ার কোনো দরকার ওর পড়বে না।আমি ভাই হিসেবে যা পারি করবো।
তূর্য কিছু না বলেই সেখান থেকে চলে যায়। গোটা পৃথিবী যখন ভুল বুঝে তাদের বুঝানো যায়।চাইলে নিজেকেও ঠিক প্রমান করা যায়।কিন্তু কাছের মানুষগুলো যখন ভুল বুঝে তাদের কাছে নিজেকে প্রমান করার ইচ্ছেটাই শেষ হয়ে যায়।তূর্যর ও তাই হয়েছে।
সে চাইছে না কাউকে বুঝাতে,কাউকে কিছু জানাতে……
এদিকে অন্তী বাড়ি এসেই মাকে জড়িয়ে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠে।কেউ কিছু জানতে চাইলে অন্তী শুধু একটাই উওর দেয়,, আমি আর তূর্য ভাইয়ার কাছে যাবো না।কিছুতেই না
অন্তীর দাদী অন্তীকে চোখ মুখ খিঁচিয়ে জবাব দেয়,,
মাইয়া তোর কপাল ম্যাল্যা ভ্যালা আমার নাতীর মতো ভালা ছেলে পাইছোস।ওমন সোনার টুকরা জামাইরে মানুষ মাথাই তুইলা রাখে আর তুই তো তারে পায়ে ঠেইলা দিতাছোস??
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here