তুই আমার পর্ব ৫

0
913

#তুই__আমার
#লেখাঃ সাফিয়া_জান্নাত_মুন
#পর্ব ৫ম

——–মেঘা কাব্যর হাত শক্ত করে ধরে আছে। মেঘা এতোটা শক্ত করে ধরেছে যে তার নখের দাগ বসে যাচ্ছে কাব্যর হাতে।
কাব্য নিজের হাতের দিকে একবার তাকিয়ে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়লো।

কাব্য সামনে থাকে দুইজন লোককে ইশারা করলো তারা একজন কে বেধে রেখেছিলো,কাব্যর ইশারায় একজন এসে লোকটির মাথার চুল টেনে কাব্যর দিকে ধরলো।
কাব্য রক্তিম লাল রং ধারন করেছে। তার সমস্ত রাগ আর শক্তি দিয়ে মারতে ধরলো লোকটাকে
হঠাৎ কাব্য লক্ষ করলো মেঘা ভয়ে এখনো কাব্যর হাত ধরে আছে আর স্পষ্ট তার হাত কাঁপছে কাব্য তার ডান হাত দিয়ে সজোরে তিন চার ঘুষি মেরে দিলো লোকটাকে। আর চিল্লায় বলতে লাগলো
তোর সাহস কি করে হয় তুই আমার মেঘকে মারতে চেয়েছিস আমার মেঘকে? তোর জন্য যদি আমার মেঘের কিছুই হয়ে যেতো তোকে আমি খুন করে ফেলতাম তুই আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস
আমি থাকতে মেঘের কেউও কিছুই করতে পারবে না না না।

রনি নামের একটা ছেলে এগিয়ে এসে কাব্যকে ধরলো,, কাব্যর রাগের মাত্রা সবাই জানে। রনি কাব্যকে সরিয়ে দিয়ে বললো।

—-ভাই ওর অবস্থা এমনি খারাপ আর এভাবে মারলে মরে যাবে ছেড়ে দেও ভাই। ভুল করে করে ফেলেছে।

—ভুল তুই কি বলছিস ভুল? এই ভুলের জন্য আমার মেঘের কিছুই হয়ে গেলে তখন আমি কি করতাম বল রনি বল?

—ভাই আল্লাহ রহমত আছে বলে ভাবির কিছুই হয়নি। এখন ভাবির দিকে দেখুন ভাবি ভয় পাচ্ছে প্লিজ ভাই ভাবিকে নিয়ে যান এখান থেকে।

—রনির কথায় কাব্যর হুশ হলো তার সাথে তো মেঘা আছে। মেঘার দিকে তাকাতে দেখলো মেঘা ভয়ে জ্বরে জ্বরে নিশ্বাস নিচ্ছে ওর নিশ্বাস নিতে বড্ড কষ্ট হচ্ছে।
কাব্য এক মুহূর্ত না দারিয়ে মেঘা কে নিয়ে বেরিয়ে এলো।

মেঘার নিশ্বাস আটকে আটকে আসছে, কিছুইক্ষনের জন্য বন্ধ হয়ে আসছে আবার একটু সময়ের জন্য নিশ্বাস নিতে পারছে, মেঘা কে কাব্য নিজের বুকের মধ্য জরিয়ে নিলো। মেঘার থুঁতনিতে হাত দিয়ে একটু উপড়ে তুলে ধরে বললো,
এই মেঘ আমি তোমার কিছুই হতো দিবো না আমি আছি তো মেঘ তুমি কেনো এতো ভয় পাও? একটু শক্ত হয় মেঘ তোমায় কেউ ছুঁইে দেখতে পারবে না আমি আছি তোমার সাথে।

মেঘা একটুআধটু বিশ্বাস করে ফেলছে কাব্যর উপর। কিন্তু কিছুই প্রকাশ করলো না।
কাব্য আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো মেঘাকে। মেঘা নিস্তেজ হয়ে আছে।
!
!
!
মেঘা এখন একটু সুস্থবোধ করছে রোড সাইডে তাদের গাড়ি টা দার করিয়ে রেখে কাব্য কোথায় যে চলে গেলো। মেঘা দারিয়া আছে ল্যাম্পপোস্ট এর আলো চারপাশ টা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে আকাশ টায় কালো মেঘে ডেকে রেখেছে চাঁদ টা কে। আশেপাশে কোনো প্রানী নেই রাত টা কত নিস্তব্ধ এই ব্যস্তনগরীর মানুষ গুলো ব্যস্ততা বোধয় ভুলে যায় যখন রাত গভীর হয়।
আমার ভাবনায় ছেদ ঘটলো
কাব্য ভাইয়া হাত করে একটা প্যাকেট নিয়ে আসলো।
উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে প্যাকেট টার দিকে তাকিয়ে আছি কি আছে তার মধ্য এমন কমন প্রশ্ন জাগচ্ছে মনের মধ্য।

—কাব্য ভাইয়া এক গাল হেসে কাছে এগিয়ে এসে বললো
তুমি জানো মেঘ তোমার প্রেশার সব সময় লো হতে থাকে তার মূল কারন তোমার এই ভয়। যেখানে স্বাভাবিক প্রেশার ৯০/৩০ এর মধ্য থাকবে সেখানে তোমার প্রেশার তার নিচে থাকে এতো করে আরো অসুস্থ হয়ে যাও তুমি। আর তারউপর ঠিক মতো তুমি খাওয়াদাওয়া করো না।

প্যাকেট টা আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে কাব্য ভাইয়া বললো নেও মেঘ খেয়ে নেও।

আমি ইতস্তত বোধ করছি দেখে কাব্য ভাইয়া হালকা করে হেসে উঠলেন আমার কোমড়ে হাত দিয়ে আমায় গাড়ির উপর বসিয়ে দিলেন।
তার এমন কান্ডে আমি লজ্জায় মাথা তুলতে পারছি না।
কাব্য ভাইয়া প্যাকেট টা খুলে আমায় দিলেন খাওয়ার জন্য।
এটা বিরিয়ানির প্যাকেট ছিলো যা আমার খুব প্রিয় তাই আর মানা করতে পারলাম না আর সত্যি তো সারাদিন কিছুই খাওয়া হয়নি।
কিভেবে জানি আমি প্যাকেট টা নিয়ে খেতে লাগলাম।

কাব্য ভাইয়া গালে হাত দিয়ে অপলক ভাবে আমায় দেখে যাচ্ছেন।

যানো মেঘ তুমি না ভয় পেলে বাচ্চাদের মতো করো। ছোট বাচ্চা গুলো যেমন ভয় পেলে নিজেদের কাছের মানুষের কাছে মুখ লুকিয়ে ভরসার হাত খুঁজে তুমি ঠিক তেমনি কিন্তু কি জানো মেঘ তুমি আমায় নিজের আপনজন বা কাছের কেউ মনে করো না আমাকেও ভয় করো আরো বেশি করে ভয় করো।
একদিন তুমি সাহসী মেয়ে হয়ে উঠবে বাচ্চা থেকে বড় মেঘা হয়ে উঠবে আর সেদিন তুমি আমায় ভুলে যাবে হাহাহাহা।

কাব্যর কথায় আজ মেঘার কোনো ভাবান্তর হচ্ছে না তা কাব্য স্পষ্ট বুঝতে পারছে। তার বুকের মধ্য বয়ে চলেছে এক কষ্টের নদী। সে তো মেঘ নয় একটু কেঁদে হালকা হবে। যে মেঘের জন্য সে এতো কিছুই করছে সে মেঘ তাকে বুঝতে পারে না এর থেকে কষ্টের তার কাছে মৃত্যু ও না।

কাব্য নিজের ফোন টা বের করে অনিক নামের একজন কে ফোন দিয়ে বললো,

কি সবাই কি এখনো ঘুমাচ্ছে??

—জ্বী ভাই আমি সবার দরজার সামবে পাহারা বসিয়েছি এমনকি বাড়ির কাজলোকদের রুমের সামনে আপনি এখন ভাবি কে নিয়ে আসতে পারেন ভাই।

—ঠিক আছে আমি আসছি।

কাব্য মেঘা কে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে। কাব্য মেঘা কে নিজের রুমে রেখে এসে।
কাব্য বিছানায় হাত পা মেলে শুয়ে পড়ে আর ভাবতে লাগলে। আমি কি পারবো? ওদের বাঁচাতে নাকি সব?
কাব্য উঠে এসে সিগারেট ধরায়। যদিও সে সিগারেট খায় না কিন্তু অতিরিক্ত টেনশন তার মাথায় চেপে বসে তখন তাদের তাড়াতে সিগারেট ধরায় সে।
কাব্যর মাথায় শুধু তিনটা প্রশ্ন।
মেঘার শত্রু কে? কে ওকে মারতে চায় আর কিসের জন্য চায়?
এটা কি কোনো ভালোবাসার গল্প না শত্রুতার??
কাব্য নিজের ফোন টা নিয়ে রনি কে ফোন দেয়

—-ভাই বলেন

—-ওই লোকটার কি অবস্থ??

—ভাই ও শুধু ওই ক্যান্ডেলা টা লাগিয়ে এর বেশি কিছুই করেনি আর সত্যি ও কিছুই জানে না।

—ঠিক আছে ওকে হসপিটালে ভর্তি করে দিয়া আয় আর সব খরচ আমি দিবো।

কাব্য ফোন টা রেখে গম্ভীর ভাবে চিন্তা করতে লাগলো।
বিষয় টা আরো রহস্যর কুয়াশায় জরিয়ে যাচ্ছে।
!
!
!
!
জাহিদ একজন সিরিয়াল কিলার। টাকার জন্য যেকারো খুন করে সে আর এমনভাবে করে সেটা এক্সিডেন্ট বলে ধামাচাপা দেওয়া যায়।

রাত তিনটা বাজে
তার ফোনে বেজে উঠলো এক নিশংস্ব সুরে। সে ফোন রিসিভ করতে
অপর পাশ থেকে একটা মেয়েলি কন্ঠ ভেসে আসলো,

জাহিদ উত্তেজিত হয়ে বলছে ম্যাডাম এই জাহিদ যখন কাজ নিয়েছে সে তা পূরন করে ছাড়বে আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন টাকা যখন নিয়েছি কাজ তখন করবো।
!
!
!
মেঘা ঘুমিয়ে আছে একজন ধীমি ধীমে পায়ে মেঘার রুমে ঢুকলো আস্তে আস্তে সে মেঘার কাছে এগিয়ে আসছে,,,,

চলবে___________

[আমি জানি ছোট হয়েছে কিন্তু উপায় নাই বাসায় কাজিন রা আসছে ওদের অত্যাচারে লিখতে পারছি না। তার জন্য আগে সরি বলে নিলাম]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here