ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-২৬

0
513

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_Jahan
#Part_26

ঈশাঃ তুমি এখানে কেন

নেশাঃ আমিই তো ছিলাম এখানে?

ঈশাঃ কিন্তু এখানে তো ওই মেয়ে মানে ভাইয়া বললো?

নীড়ঃ কি বলেছিলাম রে আমি?

ঈশাঃ তুই এখানে!!!!!

নীড়ঃ জি

ঈশাঃ তারমানে এইটা তোদের সবার প্লেন ছিলো আমাকে এইভাবে আনার জন্য?

নীড়ঃ ইয়েস মাইসুইটহার্ট। বাট ইশান কিছুই জানতো নাহ প্লেন টা নেশার ছিল

ইশানঃ কিসের প্লেন

নেশাঃ তোমাদের দুইজনকে দেখে তো মনে হচ্ছে একজন আরেকজনকে ছাড়া থাকতে পারবে নাহ।।তবুও নিজে থেকে কথা বলবে নাহ।।তাই দুইজনকে মিলানোর জন্য এই প্লেন।।নীড় ঈশাকে বলেছে যে তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।।তাই?

ইশানঃ তাই ঈশা এইসব কথা বলছিলো(দুষ্টু হেসে ঈশার দিকে তাকিয়ে)আমি তো ভেবেছিলাম বুঝি আমাদের মাঝে সব শেষ

ঈশাঃ এইটা কিন্তু ঠিক হয়নি নেশা।।তুমি তো এই পঁচা লোকটাকে ও বলতে পারতে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে।।তাহলে ও ছুটে আসতো।।এখন আমাকে কতো লজ্জায় পরতে হলো?

নেশাঃ ?।।আচ্ছা এখন তোমরা তোমাদের মাঝে সব বুঝে নাও।। আমরা দুইজন বরং এখন আসি।।

ঈশাঃ কোথায় যাচ্ছো তোমরা আমিও যাবো চলো
ঈশা যেতে নিলো ইশান পিছন থেকে হাত টেনে ধরলো

নীড়ঃ থাক তুই বরং থাক।।আমরাই যাই

দুইজন হেসে বেরিয়ে গেল।

ঈশাঃ এটা কি হলো আটকালেন কেন আমাকে

ইশানঃ তো কি করবো ওরা আমাদের প্রাইভেসি দিয়ে যাচ্ছে আর তুমি ওদের সাথে চলে যাচ্ছো

ঈশাঃ আমাদের প্রাইভেসি কেন দিবে?

ইশানঃ উফফ তুমি নাহ।।বাদ দাও।।এখন বলো আমি বিয়ে করলে বুঝি এতোই রিয়েক্ট করতে।।বাব্বাহ কি রাগ।।আমাকে নাকি মাটিতেই পুতে ফেলবে।।তো আপনি তো বললেন আমাকে ভালোইবাসেন নাহ।।তাহলে পুতবেন কেন শুনি

ঈশাঃ হুহ আর রিয়েক্ট করবো নাহ।।হেপি।।আপনি যা ইচ্ছা করুন

ইশানঃ তাহলে আর কি।। বাচা গেল।।এখন তাহলে সত্যি একটা বিয়ে করতে হয়

ঈশাঃ মানে,?

ইশানঃ ওমা আমার ওতো বিয়ের বয়স হয়েছে।।কয়দিন আর সিঙ্গেল থাকবো তাই নাহ

ঈশাঃ সখ কতো।বিয়ে করে দেখ নাহ কি করি?

ইশানঃ ওমা নিজে তো বিয়ে করবে নাহ তো আমি কি সারাজীবন না বিয়ে করেই থাকবো নাকি?

ঈশাঃ কখন বলেছি বিয়ে করবো নাহ

ইশানঃ তো করবে আমায় বিয়ে

ঈশাঃ হুম?

ইশানঃ তো ভালো না বাসলে বিয়ে কেন করবো হুম??

ঈশাঃ জানি নাহ ??


রিসোর্টটার পাশেই একটা সুন্দর দীঘি আছে।।নীড় আর নেশা সেখানে দাড়িয়ে আছে চুপচাপ।। নীড় কথা বলতে চাইছে কিন্তু কি নিয়ে বলবে ভেবে পাচ্ছে নাহ।।

নীড়ঃ এবার তাহলে তাদের বিয়েটা ঠিক হয়েই গেল কি বলো

নেশাঃ হুম

নীড় নেশার দিকে তাকালো।।নেশার দৃষ্টি দীঘির পানির দিকে।

নীড়ঃ তোমার কি মন খারাপ নেশা

নেশাঃ নাহ (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে)

নীড়ঃ তুমি কি এই বিয়েটাতে খুশি নাহ???!!!!

নেশাঃ কিসব বলছেন আপনি।।খুশি কেন হবো নাহ

নীড় নেশার কাধে হাত দিলো। নেশা কিছুক্ষণ নীড়ের দিকে তাকিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো।।

নীড়ঃ তুমি কাদছো কেন নেশা?????

নেশাঃ আমি কিছু জানি নাহ নীড়??

নীড়ঃ প্লিজ আমার সাথে এট লাস্ট শেয়ার করো

নেশাঃ আমি জানি নাহ নীড়।।আমার কেন জানি খুব কষ্ট হচ্ছে।।আচ্ছা কেন আমার কষ্ট হচ্ছে।।আমি তো চেয়েছি ভাইয়া নতুন করে সব শুরু করুক।।তাহলে কেন আমার এতো কষ্ট হচ্ছে??

নীড় নেশাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কিছু বলতে যাবে নেশা তার আগেই নীড়ের বুকে ঝাপিয়ে পড়লো।।ঘটনা বুঝতে নীড়ের একটু টাইম লাগলো।

নেশাঃ নীড় বিশ্বাস করুন আমি চাই ঈশা আর ভাইয়ার বিয়ে টা হোক।।আমি চাই তারা স হোক।কিন্তু আমি যে ভাইয়া কে খুব বেশি ভালোবাসতাম নীড়।।আচ্ছা আমি যদি আজ ঈশার জায়গায় থাকতাম তাহলে কি খুব বেশি ভুল হয়ে যেত।।যদি ইশান ভাইয়া আমায় একটু ভালোবাসতো তাহলে কি খুব অন্যায় হয়ে যেত। আমি তো ওর জন্য নিজের জীবন ও দিয়ে দিতে পারবো অথচ উনি তো আমায় ভালোই বাসে নাহ।।আমাকে ভালোনাসার চোখেই দেখে নাহ।।আচ্ছা কেন এমনটাই আমার সাথে হয় নীড়।।কেন আমার এতো খারাপ লাগছে নীড়।।প্লিজ বলুন নাহ আমার এখন কি করা উচিত।। আমি উনার কাছে যেতেও পারবো নাহ আবার উনাকে অন্যের সাথে দেখলেও আমার খুব কষ্ট হয় নীড়।।কি করবো আমি বলুন নাহ।।বলুন নাহ নীড়।।(নীড়ের বুকে হাত দিয়ে ঝাকিয়ে কথা গুলো বলছে নেশা)
নীড় কোন জবাব নাহ দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো নেশাকে।

নীড়ঃ সব ঠিক হয়ে যাবে দেখো।।ধীরে ধীরে তুমিও ইশানকে ভুলতে পারবে।।

নেশাঃ আমি তো চেষ্টা করছি নীড়।।৬ বছর ওর থেকে দুরে থেকেছি।।তবুও কেন আমি ওকে ভুলতে পারছি নাহ।। ভালোবাসা এমন কেন নীড়।।আমি চাই নাহ এই ভালোবাসা।।আমি বাচতে চাই।।একটু শান্তিতে বাচতে চাই।।নাহ আমার ভাইয়াকে চাই নাহ।।আমি উনাকে ভুলে বাঁচতে চাই।।আমি কি পারবো নীড়।।উনাকে কি কখনো ভুলতে পারবো

নীড়ঃ পারবে।।আমি বলছি তো পারবে।। আমাকে বিশ্বাস করো নাহ তুমি।

নেশা আর কোন কথা বললো নাহ।।নীড়ও আর জোর করলো নাহ।।

সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়।।চারপাশ ধীরে ধীরে শান্ত,জনমানবহীন হয়ে যাচ্ছে।।দীঘির পাশ দিয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস নেশা আর নীড়কে শীতল করে যাচ্ছে।।নেশা এখনো নীড় কে জড়িয়ে ফুফিয়ে কাদছে।। আর নীড় আগলে রেখেছে।।অন্য সময় হলে হয়তো নীড় খুশি হতো কারন নেশা তাকে নিজে থেকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।।কিন্তু আপাদত তার খুশি লাগছে নাহ।।কেন যেন কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছে।।হ্যা নীড় নেশার ভালোনাসাটাকে সম্মান করে।।নেশা ইশানকে ভালোবাসে তা নিয়ে নীড়ের কোন রাগ কিংবা অভিযোগ নেই।।কিন্তু নিজের ভালোবাসাকে অন্যের জন্য কাদতে দেখা টা বরাবরই কষ্ট দেয়।।যা এখন নীড়কে ও দিচ্ছে।
নিজের ভালোবাসার মানুষটা নিজের বুকেই আছে অথচ কাদছে অন্য আরেকজনের জন্য এটা নীড় কিভাবে সহ্য করছে তা শুধু নীড়ই হয়তো বলতে পারবে।আবার নেশা কে ও দোষ দেয়া যায় নাহ।। ভালোবাসা তো সঠিক ভুল দেখে হয়নাহ।।হ্যা ইশান যা করেছে তার জন্য নেশা কখনো ইশানকে মন থেকে মাফ করতে পারবে নাহ।।কিন্তু ইশানকে ভালো না বেসেও পারছে নাহ।।শত অন্যায় করলেও কি ভালোবাসা কমে যায়।।
একদিকে একজন কাদছে ভালোবাসার মানুষকে অন্যজনের হতে দেখে আরেকজনের বুক ফাটছে নিজের ভালোবাসাকে অন্যের জন্য কাদতে দেখে।।কার কষ্ট বেশি তা হয়তো পাঠক রাই বলতে পারবে?।





পরেরদিন

নেশাঃ ভাইয়া এইসব কি

ইশানঃ কেন কি হয়েছে

নেশাঃ তুমি ঈশাকে বলেছো তুমি ওকে এখন বিয়ে করবে নাহ???!!!!!

ইশানঃ হ্যা বলেছি তো?

নেশাঃ তোমাদের মাঝে তো সব ঠিক ছিলো তাহলে বিয়ে কেন করবে নাহ???

ইশানঃ করবো নাহ কে বলেছে। করবো তো বাট যখন তুই রাজি হবি

নেশাঃ আমি তো রাজিই!!!

ইশানঃ আমি আমার বিয়েতে রাজির কথা বলছি নাহ।।আমি তোর বিয়েতে রাজি হওয়ার কথা বলছি

নেশাঃ মানেহ!???

ইশানঃ তুই বিয়ে নাহ করলে আমিও বিয়ে করবো নাহ

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here