#শুধু_তুই
#পর্বঃ০৫
#Rifat_Amin
সদ্য জ্ঞান ফিরেছে প্রেমের। চোখ খুলেই সে নিজেকে আবিষ্কার করলো হসপিটালে। মাথার উপর স্যালাইনের নল। মাথাটা ঝিমঝিম করছে, প্রচন্ড ব্যাথায় অসহনীয় হয়ে যাচ্ছে চোখ খুলে রাখা। চোখটা আবারো বন্ধ করলো সে। পুরো রুমজুড়ে ফিনাইলের উদ্ভট গন্ধ। ছোট্ট এই জীবনে কখনো হাসপাতালের মতো নরকে নিজেকে পেসেন্ট হিসেবে দেখেনি সে। কিন্তু আজ কি থেকে কি হয়ে গেলো। একটা নার্স সাথে সাথেই রুমের ভীতর প্রবেশ করে বললো,
-কেমন লাগছে তোমার?(নার্স)
-আলহামদুলিল্লাহ ভালো।(প্রেম)
প্রেম মনে করতে চেষ্টা করলো কিভাবে এক্সিডেন্ট করলো। রাস্তার ধারে যথেষ্ট সেভ যায়গায় ছিলো সে। কিন্তু তবুও কেনো ট্রাক চালক এদিকে এসে ধাক্কা দিলো। ধাক্কা দিলো তাও সামান্য স্পিডে। তাতেই যে হাল হলো আমার। বাপ্রে!
যখন নার্স বাইরে এসে আমাকে আর প্রহরভাইকে ভীতরে যাওয়ার অনুমতি দিলো। তখন হসপিটালের এই পাশটায় কেউ যাতায়াত করছে না। প্রেমের সাথে যে মেয়েটা ওখানে পরে ছিলো তাকেও এখানে আনা হয়েছিলো। কিন্তু তাঁর জ্ঞান ফিরেছে একটু পরই আর প্রেমের জ্ঞান ফিরতে সময় লাগলো চার ঘন্টা। জ্ঞান ফিরার সাথে সাথেই মেয়েটার ফ্যামিলি ওকে নিয়ে গেছে৷ এদিকে আমি প্রহরভাইয়ের চোখের দিকে তাকাতে পারছি না। এতো রাগ উনার কই থেকে আসে বুঝি না। এক্সিডেন্ট কি ইচ্ছাকৃত হয়? এখন এইটা বুঝাতে গেলে নিশ্চই গালে কয়টা পড়বে আমার। থাক বাবা। উনার মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে ভীতরে প্রেমের সাথে দেখা হলে ওখানেই ওরে আবার মারবে। আমি কাঁপাকাঁপা কন্ঠে বললাম,
– ভীতরে গিয়ে রাগারাগি করবেন না ভাইয়া। এক্সিডেন্ট কি ইচ্ছাকৃত হয়? (আমি)
প্রহরভাই একবার আমাকে সুক্ষ্ম চোখে স্ক্যান করে বললেন,
– আমি যে ভীতরে গিয়ে ওরে মারবো এর মতো ননসেন্স ভাবনা তোর মাথায় আসলো কেমনে? (প্রহর)
আমরা ভীতরে প্রবেশ করলাম। দুটো বেড ভীতরে, একটায় প্রেম শুয়ে আছে আরেকটা ফাঁকা। আমরা দুজন সেখানে গিয়ে বসলাম। প্রহরভাই বললেন,
-কেমন লাগছে এখন তোর? (প্রহর)
-জি ভালো। মা জানে এসব? (প্রেম)
-না জানে না। কেমনে এমন হলো? (প্রহর)
– আমি আসলে জানি না। রাস্তার ধারে ঐ মেয়েটার সাথে কথা বলতে ধরছিলাম। হঠাৎ দেখলাম ট্রাক আগায় আসলো এদিকে। (প্রেম)
?️
তারপর কেঁটে গেলো সাতদিন। প্রেম এখন যথেষ্ট সুস্থ। হাটাহাটি থেকে শুরু করে দৌড়াদৌড়ি করে। আগের মতো এলাকার ছেলেপেলে নিয়ে বাইকে করে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু প্রহরভাই প্রেমের এক্সিডেন্টের পর কেমন জানি চেন্জ হয়ে গেছে। আমাকে তেমন জ্বালাতে আসে না। নিজেও তেমন কথা বলেনা। সবসময় মুড অফ করে থাকে। ভাবতেছি আজ কথা বলতে যাবো ওনার বাসায়। এই সাতটা দিনে তেমন দেখাই হলো না। অবশ্য না দেখা হয়ে ভালোই হয়েছে। শান্তিতে কয়টা দিন পার করছি। আজ চৌদ্দ ফেব্রুয়ারী। প্রেমিক-প্রেমিকার বাসর রাত লাইট। কিন্তু আমার তো একটা প্রেমিক নাই। বাংলাদেশের যদি কোনো পিওর সিঙ্গেল মেয়ে থাকে সেটা আমি। এই দুঃখ ঘুচাতে স্নেহাকে ফোন করলাম। বেচারার সাথে তেমন কথাই হচ্ছে না। ফোন করার সাথেই ফোন ধরলো স্নেহা। ফোন ধরেই একটা উদ্ভদমার্কা গালি ছুঁড়ে দিয়ে বললো,
– তুই বেঁচে আছিস কু*ত্তী। আমি তো ভাবলাম তুই ম*রে গিয়ে ভূত হয়েছিস। তোর কোনো খবর নাই যে। (স্নেহা)
-তুই নিজে আমার কোনো খোঁজ নিয়েছিস? (আমি)
– আচ্ছা বাদ দে। আজ তো ১৪ ফেব্রুয়ারী। তোর প্লানটা কি বলতো। দুলাভাইকে নিয়ে কই কই ঘুরার প্লান করছিস?(স্নেহা)
– দেখ ভাই মানছি আমি সিঙ্গেল। তবে আমি নিজে সেটা নিয়ে স্যাটিসফাইড। কিন্তু তুই কেনো আবার কাটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটা দিচ্ছিস? তোর মনে কি দয়ামায়া নাই? (আমি)
– শোন তোকে একটা বুদ্ধি দেই। তুই প্রেমকে নিয়ে পার্কে ঘুরে বেরা আর আমাকে প্রহরভাই দিয়ে দে। বিনিময়ে যা খেতে চাইবি তাই দেবো। (স্নেহা)
– তার আগে না প্রহরভাই আমাকে আর তোকে খেয়ে ফেলে। নিজের সেফটি খোঁজ আগে তারপর প্রহরভাইয়ের সাথে ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন দেখিস। ( আমি)
-শোন না রশ্নি। এতো রাগ করিস কেন? (স্নেহা)
– বল (আমি)
– প্রহরভাই কি আমার কথা তোকে কখনো বলছিলো? মানে মেয়েটা অনেক সুন্দর। বা বাসা কোথায়? এমন টাইপ? (স্নেহা)
আমি কথাটা শোনা মাত্রই হাসিতে ফেটে পরলাম। যে ছেলে নিজের পড়াশোনা ছাড়া কিছু বুঝে না। সে নাকি এসব বলবে। তবে ভাবলাম মেয়েটা যখন এত কষ্ট করে জিজ্ঞেস করলো তাহলে বলেই দেই,
– হ্যাঁ বলছিলো দোস্ত। (আমি)
– কি কি বললো রে। (স্নেহা)
– বলছিলো মেয়েটা এতো আমাকে ফলো করে কেন? নেহাত তোর বান্ধবী বলে পার পেয়ে যায়। নাহলে…
আর কিছু বলতে হলো না। স্নেহা ঠাস করে ফোনটা কেটে দিলো। এদিকে আমি তার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে কষ্টে কষ্টিত হলাম। কিন্তু পরক্ষণেই ভাবলাম স্নেহা তো দারুণ আইডিয়া দিয়েছে। প্রেমকে একদিনের জন্য ভাড়া নিলে কেমন হয়? ঘুরাফেরা করা যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। প্রেমকে ফোন লাগালাম। দুএকবার রিং হতেই ফোন ধরে বললো,
– হ্যাঁ আপু বলো। (প্রেম)
-তোকে ভাড়া পাওয়া যাবে? (আমি)
-মানে? (প্রেম)
বিষ্ময়ে হকচকিয়ে কথাটা বললো প্রেম। আমি বললাম,
-আজ তো ১৪ ফেব্রুয়ারী। তোর গার্লফ্রেন্ড নেই? (আমি)
-না। তুমি তো সব জানো (প্রেম)
– আসলে সিওর হয়ে নিলাম। চল আজ আমার সাথে প্রেম করবি। বাইক নিয়ে আমার বাসার সামনে ১মিনিটের মধ্যে দাড়া আমি ২০মিনিটের মধ্যে আসছি। (আমি)
কথাটা বলেই ফোন কেটে দিলাম। এদিকে প্রেম হাবলার মতো ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে। আর মনে মনে ভাবছে আপুটা পাগল টাগল হয়ে গেলো নাকি?
৩০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে নিলাম। আমি আবার বেশী সময় লাগাই না সাজতে। রুম থেকে বের হবো এমন সময় ঐশী বাম হাত বাড়ালো। আমি বিরক্ত কন্ঠে বললাম,
– কিছু বলবি? (আমি)
-অভিয়েসলি কিছু বলবো। তুই যাচ্ছিস কই? (ঐশী)
-প্রেম করতে যাচ্ছি। তুইও যাবি আমার সাথে? না তুই গিয়ে কি করবি। তোর তো প্রেমিক আছে। সে ডাকেনি আজ? (আমি)
খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললাম কথাটা। কিন্তু তখনই ঘটে গেলো অঘটন। ঐশী মাইকের মতো চিৎকার করে আম্মুকে ডাকলো,
– আম্মিইই ও আম্মিইই তোমার মেয়ে দেখো প্রেম করতে ঢ্যাং ঢ্যাং করে চলে যাচ্ছে। কতবড় সাহস একবার দেখেছো?
আপুর ডাকাডাকিতে আম্মাজান চলে আসলো। অতঃপর যা হওয়ার তাই হলো। আম্মির চোখের অগ্নিদৃষ্টি আর কথার তোড়ে ভষ্ম করে দিলো আমায়। শেষে নিজে আর কথা বলতে না পেরে প্রহরভাইকে ডাকলো। যখন প্রহরভাই আসলো তখন আমার যাই যাই অবস্থা। প্রেমের সাথে ঘুরতে যাবো শুনলে হয়তো রাগ করবে না। কিন্তু শুরুতে আম্মি যদি ভাইয়ার মগজধোলাই করে তাহলে নিশ্চই বাড়ির ছাদ থেকে ঠাস করে ফেলে দিবে আমায়। প্রহরভাই মূখ খুলে বললেন,
– থাক না আন্টি। একটা দিন নাহয় ঘুরতেই যাবে। আমিও যাচ্ছি ওর সাথে। দেখি ও কার সাথে দেখা করতে যায়। বড়ভাই হিসেবে আমার একটা রেসপন্সিবিলিটি আছে। (প্রহর)
এদিকে প্রহরভাইয়ের কথা শুনে জ্বলজ্বল করে উঠলো আম্মির দুটো চোখ। মনে হয় যেনো অতি মহান কার্য সম্পাদন করে ফেলেছে প্রহরভাই। আম্মি বললেন,
-তাহলে তো ভালোই হয় বাবু। এই মেয়েকে নিয়ে আমার কোনো বিশ্বাস নাই (আম্মি)
আমি চেঁচিয়ে উঠে বললাম,
-তা থাকবে কেনো? সব বিশ্বাস তো এই প্রহর নামক মানুষটা আর ঐশীর প্রতি। আমি এবার সিওর হলাম যে আমাকে তোমরা কুড়িয়ে পেয়েছো! তাই এত কষ্টে আমাকে রাখো। (আমি)
প্রহরভাই পকেটে হাত ঢুকিয়ে বললেন,
– তুই তো দেখি অনেক টেলেন্ডেট গার্ল রশ্নি। তোকে যে আমরা কুড়িয়ে পেয়েছি তুই সেটা একায় একায় ধরে ফেললি। গুড জব। (প্রহর)
প্রহরভাইয়ের কথায় আমর মনটা আরো খারাপ হয়ে গেলো।প্রহরভাইকে বললাম,
– বাইরে প্রেম দাঁড়িয়ে আছে ভাইয়া। আপনাকে যেতে হবে না। (আমি)
-আরে ও ছোট তো। আয় আমি দিয়ে আসি। (প্রহরভাই)
আম্মি প্রহরভাইয়াকে অন্ধ বিশ্বাস করে বললেন,
– তুমি থাকলে আর কোনো চিন্তা আমার নেই বাবা। সাবধানে যেও। (আম্মি)
এ্যাঁ। ঢং দেখে বাঁচিনা। আমাকে বাড়ির ভীতরে রেখেই প্রহরভাই উনার বাসার ভীতর চলে গেলেন। একটু পর যে লুক নিয়ে এলেন তাতে আমি বরবরের মতোই পুরো ক্রাশিত। এবার তো ক্রাশ না খেয়ে থাকাই যাবে না মনে হচ্ছে। ভালোই হলো বাবা। রাস্তায় চলতে গেলে সব মেয়েরা চেয়ে থাকবে। আর ভাব নেবো আমি। একটা হলুদ পান্জাবী পরে হিমুর স্টাইল নিয়েছেন উনি, হাতে এ্যাপল ব্রান্ড ওয়াচ। আর চুলগুলা স্পাইক করে হালকা উপরের দিকে তোলানো। এতেই তো পুরা আগুন। আর আমি কি পরেছি? শুধু একটা নীল শাড়ি। তাও সেই শাড়িতে হাঁটাহাঁটি করা অসহ্য। হঠাৎ মনে হলো আমি কেনো উনার সাথে যাচ্ছি। উনি ওনার জিএফের সাথে দেখা করবে আজ নিশ্চই। সেখানে কাবাব মে হাড্ডি হবো কেনো আমি? আমি চটপট বললাম,
– আমি যাবো না প্রহরভাই। আপনি যান। (আমি)
– না গেলে সমস্যা নাই। আমি যে রেডি হয়ে তোর জন্য এত কষ্ট করলাম তার পারিশ্রমিক দে। হিসাব মতো ১০০০০ টাকা হয়। তুই যেহেতু ছোট তাই ৯৫০০ টাকা দে। ডিসকাউন্ট! (প্রহর)
প্রহরভাইয়ের কথা শুনে আমার চোখ কপালে। এত দেখছি বড় শয়তানের শয়তান। অগত্যা আর কথা না বাড়িয়ে ওনার সাথে চললাম। বাইরে এসে দেখি প্রেম বাইকে বসে ফোন টিপছে। আহারে ছোটভাই! কত ওয়েট করালাম তোকে। ভেবেই মনটা খারাপ হচ্ছে। অবশ্য সব দোষ তোর ভাইয়ের। আমি নির্দোষ মানুষ। প্রেমকে ডাক দিয়ে বললাম,
– এখানে কি করিস? (আমি)
-ওমা! তুমি না বললা কোথায় যাবা (প্রেম)
প্রহরভাই প্রেমকে বললো,
– থাক তোকে কষ্ট করে এই শয়তানটাকে নিয়ে যেতে হবে না। আমি নিজেই নিয়ে যাচ্ছি। অতঃপর আমার দিকে তাকিয়ে বললো, বাইকে যাবি নাকি রিক্সায়?
আমি সরাসরি রিক্সা উত্তর দিলাম। বাইকে চড়তে চড়তে আমি অতিষ্ট। প্রহরভাই প্রেমকে আবার ১০০ টাকা দিয়ে বললো,
– এই টাকা নিয়ে কিছু খেয়েনিস (প্রেম)
এদিকে প্রেমবাবু হাবলার মতো তাকিয়ে রইলো। হা না কিছুই করলো না। আজ বোধহয় তার দিনটাই খারাপ। প্রচন্ডরকম খারাপ। একটা রিক্সা ডাক দিলো প্রহরভাই। রিক্সায় উঠার পর প্রহরভাই বললেন, আমার কাছে কিন্তু কোনো টাকা নাই। তুই যেহেতু ঘুরতে চাইছিস। নিশ্চই তোর কাছে অনেক টাকা আছে। তোর টাকা মানেই তো আমার টাকা তাইনা?
আমি কটমট দৃষ্টিতে ওনার দিকে তাকালাম। তীব্র কন্ঠে বললাম,
– আমার কাছে এক টাকার এক পয়সাও নাই। তারাতারি টাকা বের করেন। আজ আপনার টাকায় ছিনিমিনি খেলবো আমি।
রাস্তার মানুষজন হা হয়ে এদিকে তাকিয়ে আছে। তারা হয়তো ভাবছে এই ভালোবাসার দিনে আরো একটা প্রেমিকযুগল রিক্সায় করে শহর ঘুরছে। কিন্তু তাদের ধারণা যে কয় লেভেলের ভুল তা তারা নিজেও জানে না। নিরবতা কাটিয়ে প্রহরভাই বললেন,
– তোকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। তো কয়বস্তা ময়দা ওয়েস্ট করলি?
প্রথম বাক্যে খুশি হলেও দ্বিতীয় বাক্যে রেগে গিয়ে বললাম,
– আপনি খুবই খারাপ প্রহরভাই।
– আমি জানি, আমি খারাপ। সব প্রেমিকদের আসলে ভালো হতে নেই। প্রেমিকরা হবে খারাপ। অদ্ভুত রকম খারাপ।
প্রহরভাইয়ের সাহিত্যিক কথায় ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম আমি। উনি রিক্সা দাঁড় করিয়ে একটা বেলীফুলের মালা কিনলেন। আমার দিকে দৃষ্টি রেখে বললেন,
– আমি আসলে তোর সাথে আজ কখনই বেরোতাম না। কিন্তু তোর নীল শাড়িয়ে দেখার পর ভাবলাম লাইফে প্রথম ভালোবাসা দিবসটা প্রিয় কোনো মানুষের সাথে স্পেন্ড করি। সব দিক দিয়ে তোকে সুন্দর লাগছে। শুধু বেলীফুলের মালাটার বোধহয় অভাব ছিলো। বেলীফুল ছাড়া প্রেমিক হওয়ার নিয়ম নেই। ওটা নিয়ম বহির্ভূত।
চলবে?
( সবাইকে ভালোবাসা)