ছোট গল্প — হেলোসিনেশন
~ সবুজ আহম্মদ মুরসালিন
৪.
আনিকার সাথে ভুল বোঝাবুঝিটা মিটে যাওয়ার পরে সবকিছু আবার স্বাভাবিক হয়ে গেলো রাসেলের। সবকিছু ঠিকঠাক চলছে। রাসেলের অফিসের ব্যস্ততা বেড়ে গেলো, সেই সাথে সময় খুব দ্রুত চলে যেতে লাগলো। সে অনিকাকে ঘুরিয়ে পেচিয়ে কয়েকবার বোঝাতে চেয়েছে যে সে তাকে ভালোবাসে। আনিকা কিছুতেই বুঝছেই চাচ্ছে না।
সেদিনের মেসেজে আনিকা উত্তর দিয়েছিলো,
— স্বপ্নে কাউকে ছুঁতে নেই। কারণ সেটা বাস্তব না। আর যেটা বাস্তব না যার অস্তিত্ব নেই সেটা ভেবে সময় নষ্ট করা উচিত না।
মেসেজটা রাসেল যখন দেখল তখন তার ইচ্ছে হয়েছিলো আনিকার সাথে এটা নিয়ে ঝগড়া করতে। কিন্তু কয়দিন আগেই আনিকার সাথে সবকিছু স্বাভাবিক হয়েছে। তাই সে চায়নি আনিকা আবার তাকে ভুল বুঝুক।
রাসেল সেদিন আনিকার সাথে দেখা করার জন্য পার্কে বসে ছিলো দুই ঘন্টা। আনিকা বলেছিল সে আসবে। কিন্তু সে আসেনি। দুই ঘন্টা পর আনিকা মেসেজ দিয়ে জানিয়ে দিলো সে একটা কাজে আটকে পরেছে। আজকে কোনো ভাবেই আসতে পারবে না। রাসেলের মন খারাপ হলো। মন খারাপ করে সে পার্কের ব্যাঞ্চে বসে রইল। কিছুক্ষণ পর আকাশ ভেঙে বৃষ্টি শুরু হলো। রাসেল কোথাও গেলো না। সে সেখানেই বসে রইল যতক্ষণ না বৃষ্টি কমলো।
পরের দিন সকালে রাসেল আনিকাকে মেসেজ দিলো
— কোথায় আপনি?
— বাসায়!
— এতো দ্রুত পৌঁছে গেছেন?
— হ্যাঁ।
— এতোটা পথ এতো কম সময়ে পৌঁছে গেলেন কীভাবে?
— এতোটা পথ, মানে?
— আমার বাসা থেকে আপনার বাসাতো অনেকটা দূর। ঘন্টাখানেক সময় তো লাগবেই পৌঁছাতে।
— আপনার বাসা! মানে?
— একটু আগেই না আপনি আমাদের বাসায় ছিলেন! কফি খেলাম, আড্ডা দিলাম?
— আপনি কি আবার জ্বর বাধিয়েছেন?
— না তো, তবে শরীর কিছুটা গরম।
— থার্মোমিটার আছে?
— কেনো থাকবে না। আপনিই তো গিফট করেছিলেন। সেবার যখন সুস্থ হলাম তারপর আমাদের দেখা হওয়ার দিন আপনি থার্মোমিটার উপহার দিয়ে বলেছিলেন, আবার জ্বর হলে যেনো আবোলতাবোল না ভাবি।
— শরীরের তাপমাত্রা একটু মেপে জানান।
— ১০৪°
— ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাবেন ঠিকমতো।
রাসেল আর কিছুই লিখলো না। তার সাথেই কেনো এমন হচ্ছে বারবা। স নিজের উপর মহাবিরক্ত। ধুর! সবকিছু আজাইরা। বেঁচে থাকতে আর ভালো লাগে না।
অনেকটা সময় পর সে আনিকাকে মেসেজ করতে গিয়েই অজ্ঞান হয়ে গেলো৷ ঘুমিয়ে গেলো গভীর ঘুমে।
চলবে…