#হৃৎপিণ্ড_২
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#পর্ব_১৬
#জান্নাতুল_নাঈমা
_____________________
খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছে একজোড়া মানব-মানবী। জোৎস্নার রাত্রিতে প্রকৃতির সকল স্নিগ্ধ হাওয়া ছুঁয়ে দিচ্ছে ওদের। থেমে থেমে দমকা হাওয়ার ঝাপটা এসে লাগতেই শাড়ির আঁচলখানা পতাকার ন্যায় উড়ছে৷ চুল গুলোও শাড়ির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বেঁকে যাচ্ছে। ছাদের কার্নিশে দাঁড়িয়ে আছে ওরা৷ ইমন তার বলিষ্ঠ দেহখানা নিয়ে একদম সোজা হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টি তার দূর আকাশে দৃশ্যমান উপগ্রহ এবং নক্ষত্র গুলোর দিকেই স্থির৷ ওষ্ঠকোণে রয়েছে মৃদ্যু হাসি। তার পাশেই চাঞ্চল্যকর নিঃশ্বাসে দাঁড়িয়ে আছে মুসকান৷ তার দৃষ্টিজোড়া একবার ইমনের দৃষ্টি’কে অনুসরণ করে হাজারো নক্ষত্র’কে গোনার পরিকল্পনা করছে তো আরেকবার আড়চোখে দীর্ঘ সময় নিয়ে উৎসুক অনুভূতি’তে লেপ্টে থাকছে। কেবল মাত্র ইমনের থেকে একটি, দু’টো বাক্য শুনার অপেক্ষায়।
সকল নিরবতা’কে ছিন্ন করে আকাশে মেলে রাখা দৃষ্টিজোড়া পাশের নারী’টির দিকে স্থির করলো ইমন। ছোট করে শ্বাস নিতে নিতে নড়েচড়ে দাঁড়ালো মুসকান। ইমন মুচকি হেসে মুসকানের একটি হাত নিজের হাতের মুঠোতে বন্দি করে ছাদের মাঝ বরাবর নিয়ে দাঁড় করালো। তারপর মৃদু স্বরে বললো,
“ক্লোজ ইউর আই’স ”
এলোমেলো নিঃশ্বাসের বেগে ক্লান্ত দৃষ্টি মেললো মুসকান৷ ইমন তার প্রগাঢ় দৃষ্টি দ্বারা আদেশ সূচক ইশারা করলো। ইমনের যেনো তার প্রগাঢ় দৃষ্টিজোড়া দিয়ে সম্মোহন করে ফেললো মুসকান’কে। এক পলকের নিমিষেই দৃষ্টিজোড়া আবদ্ধ করে ফেললো মুসকান৷ তৎক্ষনাৎ তার হাতটি ছেড়ে দিলো ইমন। বললো,
” খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে কখনো দৃষ্টি মেলে দীর্ঘ সময় পাড় করা উচিত কখনো বা দৃষ্টি বদ্ধ রেখে। এতে কি হয় জানো, আমাদের মন ঠিক আকাশের মতোই বিশাল আকার ধারণ করে। আর আমি চাই আমার অর্ধাঙ্গিনীর মন’টা ঠিক ঐ আকাশের বিশালতায় ভরে ওঠুক। ”
নিঃশ্বাসের চঞ্চলতা অনেকটাই কমে এলো মুসকানের। কেবল মাত্র অনুভব করলো জোৎস্নার রাতে আস্ত এক আকাশে নিচে সে দাঁড়িয়ে আছে। বিশাল ঐ আকাশে দৃশ্যমান চাঁদটি শুধু প্রকৃতিতেই তার কিরণ ছড়াচ্ছে না। বরং তার অন্তঃকরণও উজ্জীবিত করছে। খোলা আকাশের নিচে প্রিয়জনের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আবদ্ধ দৃষ্টিতে প্রকৃতি’কে অনুভব করার ভাগ্য কি সবার হয়? তার হয়েছে তাহলে কি সে ভাগ্যবতী নয়? ইমন চৌধুরী’কে সে পাবে আর ভাগ্যবতী হবে না তাই কখনো হয়? ইমন চৌধুরী আস্ত এক সৌভাগ্য!
মুসকান যখন ঘোরের সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে ইমন তখন বাঁকা হেসে শীতল কন্ঠে ডাকলো,
“মুসকান”
“হুমহ”
মুসকানের সাড়া পেয়ে ইমনের ওষ্ঠকোণে হাসিটা প্রশস্ত হলো। তার প্ল্যান সাকসেসফুল। পেরেছে সে তার মুগ্ধময়ীকে সম্মোহন করতে। অত্যন্ত ধীর গতিতে এক হাঁটু মেঝেতে গেড়ে বসলো ইমন। পকেট থেকে অতিকৌশলে একটি লাল গোলাপ বের করে মুসকানের সম্মুখে ধরলো। গোলাপের সুগন্ধে মুসকানের ঘোরটা আরো তীব্র হলো। চোখ বুজে অবস্থা’তেই সামনের গোলাপটি নিজের হাতে নিয়ে নিলো। ইমন মৃদুহাস্যে এবার আবদার করলো,
“I want to be drunk with the intense touch of your wet lips (তোমার সিক্ত ওষ্ঠজোড়ার প্রগাঢ় স্পর্শে মাতাল হতে চাই) প্লিজ গিভ মি এ্যা কিস ”
আবদ্ধ দৃষ্টিজোড়া তবুও মেললো না মুসকান শুধু নিঃশ্বাস প্রশ্বাস গুলো আন্দোলন শুরু করলো কেবল মাত্র তার ব্যক্তিগত মানুষটির আবদারে। ইমন সেকেন্ড টাইম আবারো আবদার করে বসলো। তৎক্ষনাৎ ঝড়ের বেগে বদ্ধ দৃষ্টিতেই মাথা নিচু করে ওষ্ঠজোড়া ছুঁইয়ে দিলো ইমনের কপালে। চোখ বুজে ফেললো ইমন তার নাক গিয়ে ঠেকলো মুসকানের গলায়। লম্বা এক শ্বাস নিতেই ছিঁটকে সরে গেলো মুসকান। হতভম্ব হয়ে কেবল চোখের পলক ফেলতে শুরু করলো। হৃদস্পন্দনের গতি এতোটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে নিঃশ্বাসের তাড়নায়ই শরীরে ঘাম ছেড়ে দিয়েছে। ইমন মুসকানের অমন অবস্থা দেখে নিঃশ্বব্দে ওঠে দাঁড়ালো। এক পা দু’পা করে একদম মুসকানের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আচমকাই জড়িয়ে ধরলো ওকে। বুকের সঙ্গে একদম লেপ্টে নিয়ে ভারী নিঃশ্বাসের ভীরে শুধু একটি বাক্যই উচ্চারণ করলো,
” আমাদের অল্প দূরত্বে আজীবন পাশে থাকার গল্প আজ থেকেই শুরু আর আমার মুগ্ধময়ীর স্ট্রাগলও। ইটস লাভ স্ট্রাগল”
.
আর মাত্র পনেরো দিন বাকি বিয়ের,চৌদ্দ দিন বাকি গায়ে মেহেন্দির তেরো দিন বাকি গায়ে হলুদের। বিয়ের কার্ড পনেরো আগেই প্রস্তুত করা হয়েছে। কার্ডগুলো যথা যথা স্থানে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পড়েছে দিহান এবং মুরাদের ওপর। দু’বাড়িতে কাছের আত্নীয় স্বজন দু’একজন অলরেডি এসেই পড়েছে। ইমনের একটিমাত্রই ফুপু এবং তার ছেলেমেয়েরা এসে হাজির। দাদার তরফের আপন বলতে এই ফুপু আর ভাই, বোনরাই রয়েছে। নানার তরফের লোকজন এখনো এসে সারেনি। তবে বাড়িতে বিয়ে বিয়ে আমেজ এসেছে বেশ। গতকাল রাতে ফুপু আয়েশা এবং তার ছেলে মেয়ে অভ্র, আলিয়া এসেছে। সকাল থেকে তারা মুসকানকে সরাসরি দেখার জন্য পাগলপ্রায় হয়ে গেছে। ইমন প্রথমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সায়রীর সাথে ওদের মুরাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিবে। কিন্তু পরোক্ষণেই কি যেনো ভেবে সিদ্ধান্ত চেঞ্জ করে ফেললো। মুরাদ রিমিকে নিয়ে ডক্টরের কাছে গেছে তাই দিহানকে বললো মুসকানকে নিয়ে তাদের ওখানে আসতে। এ ক’দিন চৌধুরী বাড়িতে দিহানের প্রবেশ নিষেধ ছিলো হুট করে কোন এক উছুলায় বাড়িতে ঢুকতে পারবে জেনেই আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার ন্যায় খুশি হলো দিহান। মুসকানকে ফোন করে রেডি হতে বলে সে নিজেও রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লো।
.
ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে আছে মুসকান তাকে ঘিরে রয়েছে ইমনের ফুপু আয়েশা এবং আলিয়া। পাশেই দিহান আর অভ্রও বসে আছে। আলিয়া মুসকানের সমবয়সী হলেও অভ্র বয়সে চার বছরের সিনিয়র। সম্পর্কে দেবর হলেও বয়সে এতো পিচ্চি মেয়ের সাথে আর ফাজলামো করলো না অভ্র। সে দিহানের সঙ্গে আলাপে ব্যস্ত। ইরাবতী সকলকেই হালকা নাস্তা পানি দিলো। আলিয়া মুসকানের সাথে বেশ ভাব জমিয়েছে। কথার প্রসঙ্গে বিয়ের কেনাকাটা নিয়ে প্রশ্ন ওঠতেই আলিয়া লাফিয়ে ওঠলো সে মুসকানের সঙ্গে শপিংয়ে যাবে। তখনি নিচে এলো ইমন সে সহজ গলায় বললো,
“ওর সব শপিং কমপ্লিট তোরা যদি শপিংয়ে যেতে চাস যেতে পারিস বাট ওকে নিয়ে না। ”
“কেন ভাইয়া আমরা শপিং করবো টাংগাইল শহর ঘুরে দেখবো প্লাস রেষ্টুরেন্টে গিয়ে একটু খানি খাওয়া-দাওয়াও করবো। ”
ইমন আবার না বলবে তার পূর্বেই ইরাবতী এসে বললো,
“না আলিয়া বিয়ের আগে কনের এতো ঘুরাঘুরি ভালো নয়। তাছাড়া মুসুকে তো জানো না বারো মাসে তেরো রোগে ভুগে এই মেয়ে। যা গরম পড়েছে কাঠফাটা রোদে বাইরে ঘুরাঘুরি না করাই ভালো। ”
প্রসন্ন হেসে বাইরের দিকে হাঁটা ধরলো ইমন। দিহানকে ইশারা করলো সাথে যেতে কিন্তু দিহান এক চুলও নড়লো না। শুধু চারদিকে অস্থির চিত্তে নজর দৃষ্টি ঘোরাতে থাকলো। এদিকে আলিয়া মুখ ভার করে মুসকানকে বললো,
“তাহলে চলো ভাইয়ের আনাগুলোই দেখি দু’জন মিলে সব। তুমি কি দেখেছো আগে? ”
মুসকান মাথা নাড়িয়ে না বোঝালো আলিয়া উৎসুক হয়ে বললো তাহলে চলো আমরা গিয়ে সব দেখি। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত আয়েশার মুসকানকে খুবই পছন্দ হয়েছে। একদম শান্তশিষ্ট মায়াবী চেহারার অধিকারিনী মেয়েটাকে দেখে অপছন্দ করার জো নেই৷ সবচেয়ে বড়ো কথা এই মেয়েকে নিজেদের নতোই গড়ে নেওয়া যাবে। এসব কথাই ইরাবতী’কে বলছিলো সে। অভ্র নিজের মতো ফোনে ব্যস্ত। মুসকান আলিয়ার পিছু পিছু যাচ্ছিলো তখনি দিহান ওকে টেক্সট করলো। “musu tor sayori apu kon room e ase joldi janabi” মুসকান সাথে সাথে বড়ো বড়ো করে পিছন দিক ঘুরলো। দিহান দু’হাত জোরের ভঙ্গিতে ঠোঁট নাড়িয়ে বোঝালো, “প্লিজ বোন আমার একটু হেল্প কর ” বড্ড মায়া হলো মুসকানের। সেই কতো বছর যাবৎ এদের দু’জনের ভালোবাসা দেখে অভ্যস্ত সে। সব সময় একজন আরেকজনের সঙ্গে চুম্বকের মতো আঁটকে থাকতো। দু’জন, দুজনের জন্য কতোই না পাগলামি করতো। সারাক্ষণ ঝগরা অতঃপর কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে না পারা। এদের রিলেশনশিপ টা তো ঠিক টম এন্ড জেরির মতো। হয়তো ছোট ছোট ঝগরাটাই এক পর্যায়ে বিশাল আকার ধারণ করেছে। তাই বলে কি আলাদা হয়ে যাবে নাকি? কোন না কোনভাবে এদের তো এক হতেই হবে। দীর্ঘশ্বাস একটি শ্বাস ছেড়ে মুসকান সিদ্ধান্ত নিলো আজ দু’জনকে একসাথে করবেই। যেহেতু দিহান এক পা এগিয়েই আছে সেহেতু তার কাজটা খুব কঠিন হবে না৷
.
আলিয়া মুসকানের সব জিনিসপত্র ইমনের কাবার্ড থেকে বের করে এলোমেলো করে রেখেই বেরিয়ে গেছে। তার কোন এক বন্ধু ফোন করেছে জরুরি ফোন। এটিই বলেছে। তাই বিছানায় ছড়ানো ছিটানো সব জিনিসপত্র মুসকান গোছাতে শুরু করলো। তখনি রুমে ঢুকলো সায়রী বললো,
“একি অবস্থা এগুলো অগোছালো কে করলো? ”
“আপু আলিয়া আমাকে দেখাচ্ছিলো সেগুলোই গুছাচ্ছি এখন। ”
“ওহ দাঁড়া আমি হেল্প করি একা পারবিনা। ”
মুচকি হেসে মুসকান বললো,
“একাও পারবে শুধু সময় বেশি লাগবে তা তোমাকে কি পানিশমেন্ট দেওয়া যায় বলোতো? ”
“গলা টিপে মেরে ফেল পারলে। ”
মুসকান এক পলক সায়রীকে দেখে নিয়ে আবারপ কাজে মনোযোগ দিলো। হাতে হাতে দু’জন পুরোটাই গুছিয়ে অস্থির হয়ে এক সঙ্গেই বিছানায় বসে পড়লো। তারপর ও আলাপ সে আলাপ করতে কারতে এক পর্যায় দিহানকে ম্যাসেজ করে ইমনের রুমে আসতে বললো। এবং সিওর করলো এ রুমেই সায়রী রয়েছে। সায়রী রিমির শারীরিক অবস্থার কথা খোঁজ নিচ্ছিলো মুসকান শুধু হুম হা করছিলো। ঠিক তখনি দিহানের ম্যাসেজ এলো – musu ami romer baire asi tui kisu akta bahana dea ber ho.
তৎক্ষনাৎ মুসকান সায়রী’কে বললো,
“আপু একটু বসো নিচে আমার একটা দরকারি জিনিস ফেলে এসেছি এখনি আসছি জাষ্ট দুমিনিট। ”
মুসকান ত্বরিত গতিতে বেরিয়ে যেতেই দিহান ঝটপট রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিলো। সায়রী আঁতকে ওঠলো। চট করে ওঠে দাঁড়িয়ে এক চিৎকার করে বললো,
“তুই… ”
দিহান তৎক্ষনাৎ ছুটে এসে ওর মুখ চেপে ধরলো বললো,
“চুপ চুপ কোন কথা নয়। ”
“উমহ ছাড় ছুঁবিনা তুই আমাকে। ইমনননন। ”
আরেক চিৎকার দিতেই দিহান আবারো ওর মুখ চেপে জড়িয়ে ধরলো। দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে গেলো। দিহান যতোই বলে চুপ করতে শান্ত হতে সায়রী ততোই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে। এক পর্যায়ে দু’জনই ধপাস করে বিছানায় পড়ে গেলো। ব্যাপারটা দিহান এমন ভাবে হ্যান্ডেল করলো যে সায়রী পড়লো নিচে আর সে তার উপরে। তারপর ইচ্ছেকৃত নিজের সমস্ত ভার সায়রীর ওপর ছেড়ে দিয়ে এক হাতে মুখ চেপে ধরলো। ব্যস্ত গলায় বললো,
“আমাকে ছাড়া এ’কটা দিন তুই কিভাবে থাকলি এতো বড়ো বেইমানি! ”
এবার শান্ত হলো সায়রী অশ্রুসিক্ত রক্তিম চোখে স্থির হয়ে চেয়ে রইলো। দিহান অনুরোধের সুরে বললো,
“বাড়ি চল ভুল হয়ে গেছে আমার তুই আমাদের সম্পর্কের চেয়েও একটা বাচ্চা’কে ইম্পরট্যান্ট দিচ্ছিলি। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা আমাদের ভালোবাসা’কে অপমান করা। তাছাড়া যেখানে আমার কোন সমস্যা হচ্ছিল না যেখানে আমি তোর কোন সমস্যা আছে কিনা জানতে বিন্দু আগ্রহও পাইনি সেখানে তুই নিজেকে নিজেই সন্দেহ করে বসলি? নিজেকে করেছিস সেটা মেনে নিলাম কিন্তু আমাকে! তুইও আমায় সন্দেহ করতে পারিস তা আমি সেদিন প্রথম জানতে পারলাম। বুঝলাম আমার থেকেও বাচ্চা টা ইমপরট্যান্ট আর বাচ্চা দিতে না পারলে তুই আমাকে ছাড়তেও প্রস্তুত৷ বাড়ি চল সায়ু… তারপর আমি ডক্টর দেখাবো তোর তো সমস্যা নেই যদি আমার সমস্যা থাকে তখন না হয় আমরা আলাদা হয়ে যাবো। একটা অক্ষম ছেলের সঙ্গে তোকে জোর পূর্বক থাকতে হবে না। ”
রুমের সামনে মুসকানকে দেখে সন্দেহ দৃষ্টিতে চেয়ে এগুতে লাগলো ইমন। দরজা বন্ধ আর মুসকান তার সামনে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে? তারপরই দিহানের কথা মাথায় এলো। পায়ের স্পিড বাড়িয়ে একদম মুসকানের সম্মুখে এসে দাঁড়ালো ইমন। হকচকিয়ে গেলো মুসকান। এক ঢোক গিয়ে ভয়ে ভয়ে দরজার দিকে আবার ইমনের দিকে তাকালো। ইমন ভ্রু কুঁচকে বললো,
” ভিতরে কি চলে? ”
মুসকান আমতা আমতা করে বললো,
“দিহু ভাইয়া সায়রী আপুর সাথে বোধহয় সব মিটমাট করছে। ”
“সায়রীর ইচ্ছেয় রুমে ঢুকেছে? ”
“না ”
“তাহলে? ”
মুসকান পুরো কথা বলতেই সজোরে এক ধমক দিলো ইমন। কেঁপে ওঠলো মুসকান চোখ দু’টো টলমল হয়ে গেলো। ইমন চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,
“বেশি পাকনা হয়ে গেছো এতো পাকনামি করতে বলছিলাম আমি? ”
কথাটা বলেই দরজায় বেশ জোরে শব্দ করলো ইমন। মুসকানের চোয়াল বেয়ে অশ্রু ঝরতে শুরু করলো। অভিমানে বুক ভারী হয়ে গেলো তার। ডেকে ডেকে বাড়িতে এনে এভাবে ধমক!
চলবে…
রিচেক দেইনি দশটা বানান ভুল ধরিয়ে দেবেন আশা করি। দেখি কে কয়টা ভুল বের করে। আর সবাই কিন্তু রেসপন্স করবেন।