#হৃদয়হরণী
#কলমে সৌমিতা
#পর্ব-৯
-আবিরের মুখে এই রকম ভালোবাসাময় ছন্দ শুনে সবাই অবাক,,তখন পাশ থেকে খুশি বলে ওঠে ভাই কে সে?? আমরাও একটু শুনি,,,
-আবির ওদের কথায় হালকা হেসে পেখমের দিকে তাকায় তার পর সবার উদ্দেশ্যে বলে ওঠে-“সে আমার একান্তই আমার #হৃদয়হরণী”
-কিন্তু তোর সেই হৃদয়হরণী কে??(ইশান)
-আছে কেউ যে আমার এই হৃদয় টা হরণ করে নিয়ে গেছে বহুদিন আগেই,,,(আবির)
-ভাই তোর এই হেয়ালি রাখ,,এখন আমাদের ভিতরে প্রবেশ করতে দে,,(মৈনাক)
-নাআআআআআআ একদম নাআআআআআ(গেটের কাছে যারা ছিল সবাই একসাথে বলে উঠলো)
-তাহলে তোমরা বলো তোমাদের দাবি কি?? মানে কত টাকা লাগবে??(কুশল)
-বেশি না মাত্র দশ হাজার টাকা(মিতা,মৌ)
-এত কম!! আমরা তো ভাবলাম আপনারা বুঝি আরও বেশি চাইবেন,,, কোনো ব্যাপার না,,এই নয়ন তোর কাছে পেন আছে?? আসলে আমি পেন আনতে ভুলে গেছি,,,(মৈনাক)
-পেন কেন?? পেন দিয়ে কি করবেন আপনি??(মিতা)
-এ বাবা,,, বুঝতে পারলেন না,,, চেক লিখবো,,,চেক লিখে আপনাদের দেবো,,(মৈনাক)
-এই শোন মৈনাক একদম মিথ্যা কথা বলবি না,,,শালা যার হাত থেকে দু টাকা সরে না সে আবার দশ হাজার টাকার চেক দেবে,,,(ইশান)
– it’s kidding me bro ( টিনা)
-আচ্ছা ঠিক আছে তোদের আমরা দুই হাজার টাকা দিচ্ছি এবার যেতে দে,,(নয়ন)
– no way (খুশি)
___________________________________________
-অনেক দর কষাকষির পর শেষমেশ পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ওরা ভিতরে যেতে পেরেছে,,, ভিতরটা পুরো এলাহী কান্ডে ভরপুর,,, একদিকে রয়েছে জলের ফোয়ারা অন্য দিকে রয়েছে ফুল দিয়ে সজ্জিত গেট ও আশেপাশে নানান ধরনের গাছ,,,বিয়ের মন্ডপ তৈরি করা হয়েছে সম্পূর্ণ গোলাপ ফুল দিয়ে আর তার উপরে রয়েছে লাল,নীল মৃদু আলো,,,,এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়েছে চারপাশ টা,,,
-খাবারেও এলাহী কান্ড,,,ফ্রায়েড রাইস,বিরিয়ানি, চিকেন ফ্রাই, মটন,বাটার নান,ফিস ফিঙ্গার, বাটার চিকেন,চিকেন শাহী কোর্মা, দই বরা,ফুচকা, আইসক্রিম, মিষ্টি পান,লস্যি,রাজভোগ,ফিস বাটার ফ্রাই,চিকেন রোস্ট,রূপবতী কাতলা,মুগমোহন, আরোও অনেক কিছু,,, মেয়ের বিয়েতে কোনো কিছুর কমতি রাখেননি অশোক বাবু।
-লগ্ন তাড়াতাড়ি ছিল বলে বিয়েটা তাড়াতাড়ি মিটে গেছে,,,কিন্তু বিয়ে মিটলিয়ে বরযাত্রী আর কন্যাযাত্রীদের মধ্যে রয়েছে বেশ ভালোই রেশারেশি,,,এই তো কিছুক্ষণ আগে মেয়ের বান্ধবীরা ছেলের বন্ধুদের শরবতে লবণ মিশিয়ে খাইয়েছে ঠিক তেমনি ছেলের বন্ধুরা মেয়ের বান্ধবীদের চুলে কাটা যুক্ত ফল দিয়ে দিয়েছে ,যার দরুন তাদের অত সাধের স্টাইল করে বাঁধা চুল খুলে ফেলতে হয়েছে,,,
-এইসবের মাঝে অবশ্য পেখম ছিল না কারণ অদ্বিতীয়া ওকে ওর সাথে রেখে দিয়েছে, সেটা অবশ্য আবিরের কথায়,,বুফে সিস্টেম তাই সবাই আবার এক জায়গায় বসে খেয়েছে,,, খাবার পর্ব শেষ করার পর সবাই টেরিসে চলে যায়,, সেখানে বাসর জাগার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে,,,
-এবার সব দুটো টিমে ভাগ হয়ে যায়,, মেয়েরা এক টিমে আর ছেলেরা এক টিমে,,,দুই পাশে দুই দল বসেছে,,মাঝখানে একটা বিয়ারের বতল রাখা হয়েছে,,, একজন ঐ বতল ঘোরাবে আর বতলের মুখ যার দিকে যাবে ,তাকে সে Truth বা dare দেবে,,,,
– সো বাচ্চারা হারার জন্যে প্রস্তুত হয়েছো তো??(নিষ্প্রভ)
-হ্যাঁ সেটা ভালো মতোই জানা যাবে কারা হারবে আর কারা জিতবে মিস্টার বুড়ো,,(রুশা)
-কচি খুকী তুমি একটু চুপ থাকো,,(ইশান)
-ওই খচ্চর তুই ওকে চুপ করতে বলার কে রে??(রুহী)
-সবাই চুপ,,এখন খেলা শুরু কর,,,প্রথমে বর আর বৌ কে দিয়ে শুরু হোক,,,,(মৈনাক)
-অদ্বিতীয়া বতল ঘোরালো,,,আর সেই বতলের মুখটা কুশলের সামনে গিয়ে পড়েছে,,,কুশল বলে ওঠে আমি Truth নেবো,,,অদ্বিতীয়া যেই প্রশ্ন করতে যাবে ঠিক তখনই মিতা ওর কানে কানে কিছু বলে ,,যেটা শুনে অদ্বিতীয়া কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে আপনি জীবনে কোনো মেয়ের কাছে চড় খেয়েছেন দাভাই??
-কুশল একটু হেসে বলে অনেক বার খেয়েছি, কিন্তু সেসব এখন অতীত,,কিন্তু আমার মন বলছে সামনে মনে হয় আবারও খেতে পারি,,,
-এইভাবে খেলা চলতে থাকলো ওদের মধ্যে,, হঠাত আবিরের চোখ যায় পেখমের উপর,,, পিন করে শাড়ি পড়ার দরুন পেটের অর্ধেকাংশ আঁচলের ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে,, যা দেখার পর আবির নিমিষের মধ্যেই রেগে গেল,কারণ ওর চোখে পড়েছে যখন, তখন এখানে উপস্থিত অনেকেরই চোখে পড়েছে, সেটা ভেবে নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলো না আবির,,,আর যখন দেখলো পেখমের খেয়াল নেই বরং সে আরও সবার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে তখন আরোও রাগ হলো ওর,,,না এই মেয়ে বড়ো হবে না,,এরই মধ্যে খেয়াল করলো বতল ঘুরে পেখমের সামনে পড়েছে,,, ও ওর গম্ভীর গলায় বলে ওঠে” পাখিকে আমি dare দেবো,,,আবিরের মুখে এমন কথা শুনে পেখম বলে ওঠে আবির দা আমি তো truth নিচ্ছিলাম,, ঠিক আছে আপনি যখন বলছেন বলুন কি dare??
-তোর ডেয়ার হলো লাইব্রেরী রুমে শরৎরচনা বলী আছে,,,তুই সেখানে গিয়ে বইটা এনে দিবি,,,
-এ আর এমন কি কাজ ঠিক আছে আমি এনে দিচ্ছি,,, পেখম টেরিস থেকে নীচে নেমে সোজা ড্রয়িংরুমে গেল,তারপর এক গ্লাস জল খেয়ে লাইব্রেরি রুমের দিকে যেতে লাগলো,,,কিছুটা যাওয়ার পর দেখলো আলো গুলো আস্তে আস্তে কমে আসছে,,ওর ভয় হতে লাগলো,,তবুও ধীর পায়ে এগিয়ে গেল লাইব্রেরি রুমের দিকে,, দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে বইটা খুঁজতে লাগলো ঠিক তখনই আলো নিভে গেল,, ও চিৎকার করতে যেয়েও করলো না,, নিজেকে সামলে আলো জ্বালানোর জন্যে এগিয়ে যেতে গেলে হাতে হেঁচকা টানের জন্যে কারোর বুকে গিয়ে পড়লো,,,ভয়তে চেঁচানোর কথাও ভুলে গেল পেখম,,তারপর অনুভব করলো কোনো একটা শক্তপোক্ত হাত তার মুখ চেপে রেখেছে,,,, ও হাতটা ছাড়ানোর অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হল,,,এবার রীতিমতো ভয়তে ও ঘামছে,, হঠাৎ পেটে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে চমকে উঠল,,, সাথে সাথেই অনুভব করলো কেউ খুব গভীর ভাবে চুমু খাচ্ছে পেটে,,,,ও তখনি সরতে চাইলেও সরতে পারলো না,,, কিছুক্ষণ পরে খেয়াল করলো শাড়ির আঁচলের পিন টা কেউ খুলে দিয়েছে,, আর ওর মুখের উপর থেকে হাতটাও কেউ সরিয়ে নিয়ে নিয়েছে,,,,কোনো রকমে নিজেকে সামলে ও বলে উঠলো”কে এখানে? আর আমার সাথে অসভ্যতা করার সাহস কি করে হলো??? বলুন কে আছেন”?? কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো উত্তর এলো না,,, পেখম অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে সুইচ খুঁজে আলো জ্জ্বালালো,,,না কেউ কোথাও নেই,,, তাহলে কি সব আমার মনের ভুল,,, কিন্তু পরক্ষণেই মনে হলো তাহলে এই শাড়ির আঁচল একট করে পিন করলো কে??,, হঠাৎ চোখ যায় টেবিলের উপর থাকা শরৎরচনা বলীতে,,ও সেটা নিতে গিয়ে দেখে বইটির তলায় একটা চিরকুট,, আর তাতে লেখা আছে,,
-আমার ব্যক্তিগত জিনিস আমি সবার সামনে প্রদর্শিত করতে চাই না,,,আর সে তো আমার একান্তই ব্যক্তিগত,,তার যাবতীয় সবকিছুই প্রদর্শিত হবে আমার মাঝে,,”
-চিরকুট টা পড়ে পেখম বুঝতে পারলো এটা কার কাজ,,,আর সেই সাথেই কিছুক্ষণ আগের মুহূর্ত চোখে ভেসে উঠলো ,,অজান্তেই হাতটা পেটের উপর চলে যায়,, আর তার সাথে মুখমণ্ডল হয়ে ওঠে লজ্জায় রক্তিমময় আর গরম,,,,,
-পেখম টেরিসে গিয়ে দেখে সবাই সবার মতো আনন্দ করছে,,ও আবিরের দিকে তাকিয়ে দেখলো সে তার মতো বন্ধুদের সাথে মেতে আছে,,,বইটা ওর হাতে দিয়ে নিজের জায়গায় বসলো,,,তারপর প্রিয়া কে জিজ্ঞাসা করলো আবির কি এর মধ্যে একবারের জন্যও ওঠে কোথাও গিয়েছিল? কিন্তু উত্তরে প্রিয়া বলে না তো ,,,প্রিয়ার কথা শুনে পেখম চিন্তায় পড়ে যায়,, আর ওর এই চিন্তিত মুখ দেখে আবির মৃদু হেসে ওঠে,,,কারণ সবাই যখন গল্পে মেতে উঠেছিল ও তখন ফাঁক বুঝেই নীচে চলে গিয়েছিল।
____________________________________________
-খেলা অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে,,সারাদিন দৌড় ঝাঁপ করে সবাই বেশ ক্লান্ত তাই যে যেখানে পেরেছে শুয়ে পড়েছে,,, টেরিসে অবশ্য শোয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল,,, পেখমের আবার একটু নিরিবিলি না হলে ঘুম আসে না,,,, এমনিতেই সারাদিনের ক্লান্তিতে মাথাটা হালকা যন্ত্রণা করছে,তাই ও টেরিস থেকে নীচে চলে গেল,,,
-নীচে এসে নিজের জন্য কফি বানাতে গিয়েও কি ভেবে উপরে আবিরের ঘরের দিকে চলে যায়,,, ছাদে অনেকক্ষণ আবিরকে ও দেখেনি তাই ঘরে আছে কি না সেটা জানার জন্যে,,,আবিরের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে দেখে দরজাটা খোলা আছে,,ও একটু উঁকি দিয়ে দেখে আবির সোফায় মাথা চেপে বসে আছে,, ও তাড়াতাড়ি এগিয়ে গেল সেদিকে,,, তারপর ধীর গলায় বলে ওঠে”আবির দা কফি খাবেন”?
-হঠাৎ পেখমের কথা শুনে আবির চমকে যায়,,দ্রুত নিজেকে সামলে বলে তুই করবি??
-হ্যাঁ আসলে আমার মাথাটা হালকা যন্ত্রণা করছে তাই,,,
-ঠিক আছে করে নিয়ে আয়,,বলেই ব্যালকনিতে চলে গেল আবির,, পেখম দ্রুত পায়ে রান্নাঘরে চলে এলো,,তারপর শাড়ির আঁচল কোমড়ে গুজে, চুল গুলো হাত খোঁপা করে, দুজনের জন্য কফি বানিয়ে আবার উপরে চলে গেল।
-ঘরে গিয়ে দেখে আবির ব্যালকনির রকিং চেয়ারে বসে আছে ,ও টেবিলের উপর কফি মগটা রেখে চলে আসতে নিলেই আবির বলে ওঠে”কোথায় যাচ্ছিস”??
-নীচে ড্রয়িংরুমে,,, আপনার কি আর কিছু লাগবে??
-না,,এখানে এসে বসো,,(সোফার দিকে ইশারা করে)
-পেখম চুপচাপ সোফায় বসে কফি খাচ্ছে আর বারবার আড় চোখে আবিরকে দেখছে,,,আপনার কি শরীর খারাপ লাগছে আবির দা??
-আবির পেখমের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ,, তারপর কফিতে এক চুমুক দিয়ে বলে ওঠে”আবার সেই মিষ্টতার স্বাদ। আমার শরীর খারাপ লাগছে বা এখন আমার এই কফিটার প্রয়োজন ছিল তুমি কি ভাবে জানলে পাখি”??
-আবিরের এইরকম প্রশ্নে পেখম কি বলবে বুঝে উঠতে না পেরে কিছুক্ষণ ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে,,, তারপর বলে”আসলে আপনাকে টেরিসে দেখলাম না তাই ভাবলাম আবার শরীর খারাপ করছে না তো আপনার,, ঐ জন্যে,,,
-পেখমের কথা পূরণ করতে না দিয়ে আবির বলে ওঠে”হঠাৎ আমাকে নিয়ে চিন্তা কেন হচ্ছে তোমার?? আমার জানা মতে চিন্তা তো আমার হওয়ার কথা তোমাকে নিয়ে”
-আবিরের কথা বুঝতে না পেরে প্রশ্নবোধক চোখে তাকিয়ে থাকে পাখি,,
-বুঝতে পারোনি তাই তো,,আমাকে নিয়ে ভাবছো কেন পাখি?? আমি তোমার কে??
-পাখি এতক্ষন মাথা নিচু করে ছিল,,, আবিরের কথা শুনে উপরে তাকাতেই একে অপরের চোখে চোখ পড়ে যায়,,, সাথে সাথেই লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয় পাখি,,,এই প্রশ্নের উত্তর কি ভাবে দেবে ও আবিরকে,,,আবির তখনো পেখমের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, পেখম অসস্তি নিয়ে বলে ওঠে”এমনি আপনার কথা মনে পড়েছিল তাই,,,
-আবির আর বেশি ঘাটালো না,,,কিছু সময় দুজনের মাঝে নিরাবতা চললো,, নিরাবতা ভেঙে আবির বলে”আমাকে হয়তো বৌভাতের পরের দিন চলে যেতে হতে পারে”
-কথাটা শুনে পাখির বুকটা যেন কেঁপে উঠলো,, হঠাৎ ও অনুভব করলো ওর ভীষণ কাঁদতে ইচ্ছা করছে,তাও এই মানুষটার বুকে মাথা রেখে।নিজেকে সামলে নিয়ে বলে ওঠে”এই তো এলেন সবে,,আর কটা দিন না হয় থেকে গেলেন”
-অপর দিক থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে আশাহত হয়ে পেখম কফি খেতে লাগলো আকাশের দিকে তাকিয়ে,, হঠাৎ আবির বলে ওঠে “আজকাল আমি তার কোনো ইচ্ছায় অপূর্ণ রাখিনা।তুমি যখন চাইছো তাহলো হয়তো যাওয়াটা এক সপ্তাহের জন্য পিছিয়ে দিতে পারি” এই বলে আবির কফি খাওয়ায় মনোযোগ দিতে গিয়েও দিতে পারলো না,,,,না এই মেয়েটা সত্যিই নির্বোধ, নাহলে ওর সামনে এই রকম খোঁপা করে ,আঁচল কোমড়ে গুজে আসে,,,,
-আবিরের দৃষ্টি দেখে পাখি বুঝতে পারে এখানে আর তার বেশিক্ষণ থাকা উচিত নয়,,, এরপরে হয়তো অনর্থ কিছু হয়ে যেতে পারে, সেই ভেবেই উঠে চলে যেতে নিতে আঁচলে টান অনুভব করে, পিছন ফিরে দেখে আবির ধরে রেখেছে,,,আবির দা কি করছেন কি??আমি নীচে যাবো,,ঘুম পাচ্ছে ঘুমাবো,,,
-কোথায় ঘুমাবি??
-সোফায়,,, প্রত্যেকটা ঘরেই তো লোকজন,,,আর টেরিসে আমার ঘুম আসবে না তাই,,,
-ঠিক আছে যাবি,,কিন্তু তার আগে একটা কথা শুনে যা,বলেই এবার পাখির হাত ধরে নিজের দিকে টেনে আনলো,এতটাই কাছে দুজন যে একে অপরের নিশ্বাস চোখে মুখে বাড়ি খাচ্ছে,,পেখমের মুখে আসা ওর অবাধ্য চুল গুলো কানের লতিতে গুজে দিয়ে বলে ওঠে,,
-“কখনো কারোর সামনে শাড়ি পিন করে যাবে না।সব সময় আঁচল ছেড়ে রাখবে এবং আমার সামনেও বর্তমানে যেভাবে আছো এই অবস্থায় এসো না নিদিষ্ট সময়ের আগে,,,বলেই পেখমকে ছেড়ে দিয়ে অন্যদিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারপর আবার বলে ওঠে”তার জন্য এই ঘরের দরজা সর্বদাই উন্মুক্ত,,, সে চাইলে বলবো না, তাকে এখন এই ঘরেই থাকতে হবে,,ড্রয়িংরুমে যাওয়ার কোনো দরকার নেই,, আলমারিতে তার একসেট জামা আছে,চেঞ্জ করে এখানেই শুয়ে পড়া হোক, আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না, এমনকি লোকজন কি বলবে সেটা নিয়েও চিন্তা করতে হবে না,, আমি মাকে পাঠিয়ে দিচ্ছি,,,
-কথা গুলো বলেই দ্রুত ঘর থেকে চলে গেল আবির।আর পেখম তার দিকে চেয়ে রইলো শুধু,, মানুষ টার সব দিকে নজর আছে এইসব ভাবতে ভাবতে আলমারি খুলে দেখে একটা কুর্তি আর পালাজো আছে,, ও চেঞ্জ করে এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে,,,কিছুক্ষণ পরে আবির ও তার মা আসে,,,এবং এসে দেখে পেখম গুটিশুটি হয়ে শুয়ে আছে,, অনুপমা একটা চাদর ওর গায়ে দিয়ে আবির কে বলে”তুই যা আমার ঘরে গিয়ে একটু ঘুমিয়ে নে,,,,
-না মা আমি ব্যালকনিতে আছি,,,ঘুম পেলে ওখানে ঘুমিয়ে নেবো,তুমি শুয়ে পড়ো,,,
-অনুপমা আর কথা বাড়ায়নি,,, পাখির পাশে শুয়ে পড়লো,,,ও জানে আবির পেখমকে খুব ভালো বাসে তাই তো ও চাইছিল ওদের বিয়েটাও তাড়াতাড়ি হয়ে যাক,,কিন্তু ছেলে যে চাই না,,,, এই মেয়েটাকে অনুপমা কখনো অদ্বিতীয়ার থেকে কম ভালো বাসিনি,,,,কিন্তু তিনি মনে মনে স্থির করে নেন খুব তাড়াতাড়ি আবিরকে রাজি করিয়ে কথা বলবেন অশোক বাবুর সাথে,,,
চলবে,,,,