#হৃদয়জুড়ে_প্রেয়সীর_আভাস
#মোহনা_হক
#পর্ব_২৩
সকাল সকাল আমজাদ আলী আর আয়াজ সোফায় বসে বসে কথা বলছে। যখন ছয়টা পঞ্চাশ বাজে তখনই আমজাদ আলী আয়াজ কে রুম থেকে ডেকে নিয়ে আসে। এখন ধরে বেঁধে তার সাথে কথা বলছে। সারারাত না ঘুমানোর ফলে এখন চোখ ফেঁটে ঘুম আসছে আয়াজের। কিন্তু তার নানা শ্বশুড় যে হাড়ে কথা বলা শুরু করেছে। ঘুম একবার যাচ্ছে তো আবার আসছে।
মেহরুবা আমজাদ আলী কে চা আর আয়াজ কে কফি দেয়।
-‘বাবা রুয়াত উঠেনি এখনো?’
মেহরুবার কথায় আয়াজ তার মোবাইলে সময় দেখলো সবেমাত্র সাতটা আটত্রিশ বাজে। কাল রুয়াত ও ঘুমোতে পারেনি। এখন হয়তো রুয়াত কে উঠালে নিশ্চয়ই তার মাথা ব্যাথা করবে।
-‘না। এখন ঘুমিয়ে থাকুক। আরও পরে তুলে দিলেই হবে।’
মেহরুবা মাথা নেড়ে চলে যায়। আয়াজ তার একহাত মাথায় দিয়ে আছে। কফি শেষ করার পর ও ঘুম যাচ্ছে না আরও মাথা ধরে আছে। আমজাদ আলী চা খেতে খেতে ভ্রু কুচকে তাকালেন আয়াজের দিকে।
-‘তুমি পুরুষ মানুষ হয়ে এতো ঝিমোচ্ছ কেনো? আমায় দেখেছো? না দেখে থাকলে এখনই তাকাও আমার দিকে। তোমার থেকে তো দশগুণ ভালো আছি।’
এভাবে আর বসে থাকতে ভালো লাগছে না আয়াজের। তখন না উঠলেই হতো। এখন বউকে বুকে জড়িয়ে ঘুমোতে পারতো।
-‘আপনি তো স্ট্রং ম্যান তা দেখেই বোঝা যায়।’
আমজাদ আলী একটু মুচকি হাসলেন। এসব বললে তার কাছে খুব ভালো লাগে। কিন্তু অনবরত কথা বলেই চলেছেন। আয়াজ চুপচাপ শুনে যাচ্ছে। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কি আর করার সকালটা এভাবেই আজ কাঁটিয়ে দিতে হবে।
মেহরুবা ইচ্ছে করেই রুয়াত কে জাগিয়ে দেয় যদিও আয়াজ বলেছি পরে জাগিয়ে দিতে। কারণ এ বাড়িতে আয়াজ এখন নতুন জামাই। আগে অন্য হিসেবে আসলেও সে বর্তমানে এ বাড়ির জামাই। আর রুয়াতের এতক্ষণ ঘুমিয়ে থাকাটা পছন্দ করলেন না মেহরুবা। আয়াজ কে বলা হয়েছে নাস্তা করার জন্য কিন্তু সে এখন করবে না রুয়াত ঘুম থেকে উঠলে তারপর করবে। আর এজন্য হান্নান মজুমদার ও নতুন জামাইকে ফেলে রেখে আর নাস্তাটা করেননি। তিনি ও বসে আছেন। তাই মেহরুবা রুয়াত কে ঘুম থেকে তুলে দেয়।
রুয়াত তাড়াতাড়ি করে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে। আয়াজ যে কেনো তাকে ঘুম থেকে তুলে দেয়না সেটার হিসেব বুঝছে না রুয়াত। মেহরুবা রুয়াতের হাতে সব নাস্তা টেবিলে এনে রাখে। আয়াজ মাঝেমধ্যে তার বউকে আড়চোখে দেখে। এখন একদম গিন্নি মনেহচ্ছে প্রেয়সীকে। টেবিলে সব খাবার রাখার পর রুয়াত উচ্চস্বরে বলে-
-‘আপনারা খেতে আসুন।’
হান্নান মজুমদার আয়াজের হাত ধরে নিয়ে যায়। মেহরুবা অনেক্ক্ষণ যাবত রুয়াত কে বলছে তাদের সাথে বসে নাস্তা করতে কিন্তু প্রতিবারই রুয়াত বলছে সে পরে খাবে। আয়াজ শেষের বারের সময় চোখ রাঙায় রুয়াত কে। ব্যস আর কি চাই কোনো রকম কথা ছাড়াই রুয়াত খেতে বসে পড়ে।
মেহরুবা তার মেয়ে কে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। তার পাশেই সবাই দাঁড়িয়ে আছে। আয়াজ গিয়ে গাড়িতে উঠে বসেছে। সবার একটা আবদার ছিলো আয়াজ আর রুয়াত যেনো দুপুরে খেয়ে যায় কিন্তু আয়াজ কোনো মতেই রাজি হয়নি। টানা দুটো দিন সে তার কাজ থেকে দূরে ছিলো। এখন আর এভাবে বসে থাকতে পারবে না। প্রচুর কাজ জমা হয়ে আছে। গাড়িতে বসে আয়াজ অপেক্ষা করছে রুয়াতের জন্য। মেজাজ খারাপ হচ্ছে। আর এই মেয়ের ও চোখের পানি শেষ হয়না। বিয়ের দিন এতো কেঁদেছে এতো কেঁদেছে তারউপর এখনো আবার কাঁদছে। রুয়াত আসলে কতো কাঁদতে পারে সেটাই ভাবছে আয়াজ। হান্নান মজুমদার রুয়াত কে নিয়ে আসে। রুয়াত গাড়িতে উঠার পরপরই আয়াজ সবার থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়। অলমোস্ট তার প্রেয়সী এক ঘন্টা লেট করে ফেলেছে।
ওড়না দিয়ে চোখ বারবার মুছে যাচ্ছে রুয়াত। কাঁদার কোনো শব্দ হচ্ছে না। তাও বিরক্ত লাগছে আয়াজের।
-‘কাঁদছো কিসের জন্য? তুমি জানো না আমি সহ্য করতে পারি না?’
আয়াজের দিকে তাকায় রুয়াত। আয়াজ ও তার দিকে তাকিয়ে আছে। মুখে কোনো উত্তর দিচ্ছে না রুয়াত। সে কিভাবে আয়াজ কে তার মনের কষ্ট বোঝাবে?আদোও কি আয়াজ বুঝবে? মুখটা ঘুরিয়ে রুয়াত সিটে হেলান দিয়ে বসেছে। ভ্রু কুচকে চেয়ে আছে আয়াজ। এমনটা মোটেও সহ্য হচ্ছে না। প্রেয়সীর উপর ঝুঁকে আসে। ঘাড়ের চুলগুলো সরিয়ে সেখানে অধর কাঁটে। মুহুর্তেই ব্যাথায় কুঁকিয়ে উঠে। সেখানটায় হাত চেপে ধরে রুয়াত।
-‘ব্যাথা পেয়েছি না আমি?’
আবারও গাড়ি স্টার্ট দেয় আয়াজ। নজর তার সামনের দিকে। তবুও গম্ভীর স্বরে বলে-
-‘ব্যাথা পাওয়ার জন্যই দিয়েছি। আমার সাথে এমন করার শাস্তি এটা।’
অবাক হয়ে রুয়াত শুধু চেয়ে আছে আয়াজের দিকে। তার প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ায় এমন করেছে? আর সে যে কাল রুয়াত কে এতোবার ইগনোর করেছে সেটা? রাগে মুখ সরিয়ে নেয় রুয়াত। মানুষটা কে কিছু বলার ভাষা নেই। আয়াজের ইগনোরের পরেও তো তার পাগলামোতে সাড়া দিয়েছে৷ আর আজ সে এমন করছে? মোবাইলে কথা বলছে আয়াজ। পাশে বসা মেয়েটির দিকে তাকাচ্ছে বারবার। কিন্তু তার সেদিকে খেয়াল নেই। বাহিরের দিকে দৃষ্টি। রুয়াত কে বাসার সামনে নামিয়েই আয়াজ আবার বেরিয়ে পড়ে। বাসায় একবারও ঢুকলো না। রুয়াত ও কিছু বলেনি সোজা বাসায় এসে পড়ে।
রুয়াত মায়া চৌধুরীর রুমে যায় প্রথমেই। আজ বাসায় কেউ নেই বললেই চলে। ফজলুল চৌধুরী আর আরহাম ও বাসায় নেই। যে যার কাজে ব্যস্ত। মায়া চৌধুরী একা একা রুমে শুয়ে আছে। রুয়াত বাহির থেকে দরজায় হালকা আওয়াজ করে বলে-
-‘মা আসবো?’
রুয়াতের কন্ঠস্বর চিনতে ভুল করলেন না মায়া চৌধুরী।
-‘আসো রুয়াত।’
শাড়ির আঁচল মাথায় দেয় রুয়াত। অতঃপর রুমে প্রবেশ করে। মায়া চৌধুরী ইশারা করলেন রুয়াত কে তার পাশে বসার জন্য।
-‘আয়াজ আসেনি মা?’
রুয়াত দু’পাশে মাথা নাড়ায়।
-‘আমাকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে আবার কোঁথায় যেনো চলে গিয়েছে।’
-‘তুমি জানো না কেঁথায় গিয়েছে?’
আমতা আমতা করে রুয়াত বলে-
-‘আমি আসলে জিগ্যেস করিনি মা।’
-‘ওহ্ আচ্ছা। মনেহয় একদম সরাসরি আমার সাথে দেখা করতে এসেছো। এখনো ফ্রেশ ও হওনি বোধহয়। যাও ফ্রেশ হয়ে আসো। আর শুনো এখানে শাড়ি পড়া লাগবে না। তোমার যেটাতে ভালো লাগবে তুমি ওটাই পড়ো। আমি ইনিমার রুমে যাচ্ছি। তুমি চেঞ্জ করে ওখানে এসো।’
রুয়াত মুচকি হেসে মাথা নাড়ায়। তারপর আয়াজ আর তার রুমের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ফ্রেশ হয়ে নেয়। শাড়ি চেঞ্জ করে একটা থ্রি পিস পড়ে নেয়। শাড়ি পড়ে হাঁটাচলা করতে ভীষণ কষ্ট হয়ে যায়।
জাফরির জ্বর একবিন্দু ও কমেনি। ডক্টর দেখানোর মেডিসিন দিয়েছে তারপরও জ্বর কমছেনা। এটা মুলত ভাইরাস জ্বর। একটু সময় লাগবে সারতে। মায়া চৌধুরী ইনিমা কে স্বান্তনা দিচ্ছে। সে কতক্ষণ ধরে জাফরির জন্য কাঁদেই চলেছে৷ মেয়ের এমন অসুখ প্রথমবার হয়েছে। অনেক বেশিই নার্ভাস ইনিমা। চেয়েও নিজেকে শক্ত করে রাখতে পারছে না। কাল রাত থেকে জাফরি কোনো কথা বলছে না। কাঁদলেও আওয়াজ করছে না শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে। ইনিমা মা হয়ে মেয়ের এমন কষ্ট সইতে পারছে না। রুয়াত ইনিমার কাঁধে হাত দিয়ে দাঁড়ায়। সে ও যেভাবে পারছে সেভাবেই বোঝাচ্ছে ইনিমাকে। মায়া চৌধুরী একসময় আরহাম কে কল দেয়।
-‘শ্বাশুড়ি মায়ের থেকে কিছুই শিখোনি?’
আরহামের এরূপ কথায় রক্তিম চোখে ইনিমা তাকায় তার দিকে। মন মেজাজ খারাপ মেয়ের এমন অসুস্থতায়। আর এইদিকে বাবা হয়ে আরহাম উল্টো পাল্টা কথা বলছে।
-‘তুমি রুম থেকে বের হও। কে বলেছে আসতে এখানে? তোমার কি কোনো চিন্তা আছে আমার মেয়েকে নিয়ে? কিসের বাবা হয়েছো তুমি? খালি উল্টো পাল্টা কথাই বলতে পারো। কাজের কাজ তো কিছুই পারো না।’
ইনিমার কথায় ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলো আরহাম। সে তো একটা যুক্তিসংগত কথা বলতে নিয়েছিলো কিন্তু বলার আগেই তো চুপ করিয়ে দিলো তার বউ।
-‘না মানে ওইদিন দেখলে না? রুয়াত কষ্ট পাবে বলে তোমার মা দূরে গিয়ে কেঁদেছে। এখন যে তুমি কাঁদছো দেখো আমার মেয়ে কিভাবে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। তারও তো খারাপ লাগছে বলো।’
ইনিমা একদম চুপ হয়ে গিয়েছে। আরহাম গলা দিয়ে দু’বার আওয়াজ করলো। মায়া চৌধুরীর কল পেয়ে তাড়াতাড়ি করে ছুটে আসে তার অফিস বাদ দিয়ে। এসেই দেখছে ইনিমা কাঁদছে। আরহাম রুম থেকে বের হয়ে আসে। জাফরি কে বুকে জড়িয়ে আধশোয়া হয়ে শুয়ে আছে ইনিমা।
রাত এগারোটায় আয়াজ বাসায় আসে। ঘামে পুরো পাঞ্জাবী ভিজে একাকার। আরহাম, মায়া চৌধুরী আর ফজলুল চৌধুরী বসে বসে কথা বলছে। চারপাশে তাকিয়ে দেখে রুয়াত এখানে নেই। সোজা তার রুমে চলে যায়। শাওয়ার নিয়ে বের হয়। রুয়াত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আয়াজের চুল থেকে টুপ টুপ করে পানি পড়ছে। আয়াজ চুলের পানি মুছলো না। রুয়াতের হাতের কব্জি ধরে তার কাছে নিয়ে আসে। ভ্রু কুচকে রুয়াত আয়াজের দিকে তাকিয়ে আছে। সকালের ব্যবহার কিন্তু এখনো ভুলেনি।
-‘তোমার ওড়না দিয়ে পানি মুছে দাও।’
রুয়াত আয়াজের হাত সরিয়ে দেয়।
-‘পারবো না। আপনার কাজ আপনি নিজেই করুন।’
বুকে হাত গুঁজে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। তাচ্ছিল্য হাসি দেয়। পরক্ষণেই হেসে রুয়াতের কোমড় জড়িয়ে ধরে। রুয়াত চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। মুহুর্তের মধ্যেই কিভাবে আয়াজ তার রূপ পাল্টে ফেলছে। রুয়াতের গলায় আয়াজ তার ভেজা চুল সমেত মাথাটা সেখানে রাখলো।
-‘বউ থাকতে আবার কিসের নিজের কাজ নিজে করবো? তুমি আছো কি করতে তাহলে? এতো বেশি রাগ করো না! হিতে বিপরীত হবে জান।’
বাধ্য হয়েই রুয়াত তার ওড়না দিয়ে আয়াজের চুলের পানি মুছে দেয়। আলমিরা থেকে আয়াজ কে একটা টি-শার্ট বের করে দেয়।
-‘শুনুন জাফরি না অনেক অসুস্থ। চলুন আগে ওকে দেখে আসবেন তারপর আমি খাবার বেড়ে দিবো আপনাকে।’
মাথা নেড়ে আয়াজ রুয়াতের হাত ধরে ইনিমার রুমে যায়। ইনিমার চোখ ফুলে আছে। টানা কতক্ষণ কাঁদার পর এমন হয়েছে। রুমে জাফরি আর ইনিমা ছাড়া কেউই ছিলো না। জাফরি কে কোলে নিয়ে ইনিমা রুমে পায়চারি করছে। আয়াজ রুয়াতের হাত ছেড়ে জাফরি কে কোলে নেয়। মুখটা একদম ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে জাফরির এমন অবস্থা দেখে।
-‘দু’বোনের কি সারাদিন কাঁদার অভ্যাস আছে নাকি? একজন তো পারে কেঁদে কেঁদে চোখের পানি শুকিয়ে ফেলতে। এখন কি আপনিও সে তালিকায় নাম দিয়েছেন নাকি?’
রুয়াত ইনিমা একসঙ্গে আয়াজের দিকে তাকায়। আয়াজ জাফরি কে আদর করতে ব্যস্ত। ইনিমা রুয়াতের কাঁধে হাত দিয়ে বলে-
-‘আমরা বোন আমাদের মধ্যে একটু আধটু মিল থাকবেই।’
ইনিমার বলা কথায় আয়াজ রুয়াতের দিকে তাকায়। কিছুক্ষণ জাফরি কে আদর করার পর ইনিমার কোলে দিয়ে বের হয়ে আসে রুম থেকে। রুয়াত সবাই কে রাতের খাবার বেড়ে দেয়। মায়া চৌধুরীর সাথে সব গোছগাছ করে রুয়াত রুমে আসে। যেহেতু ইনিমা জাফরি কাছে কাছে থাকছে তাই রুয়াত বাড়ির বউ হয়ে মায়া চৌধুরীর সব কাজে হেল্প করার চেষ্টা করছে।
আয়াজ রুমে এসে শুয়ে পড়েছে। কার সাথে মোবাইলে কথা বলছে। রুয়াতের রুমে আসার শব্দ শুনে আয়াজ সেদিকটায় তাকায়। চোখের নিচে কালি পড়ে গিয়েছে মেয়েটার। দু রাত না ঘুমানোর ফল। ওয়াশরুম থেকে মুখ ধুঁয়ে আসে। রুয়াত চুপিসারে এসে আয়াজের পাশে শুয়ে পড়ে। আয়াজ এখনো কথা বলছে। শর্টকাটে আয়াজ কথা শেষ করে। রুয়াত ওদিক ফিরে শুয়ে আছে। প্রেয়সীর সাথে ঘেঁষে শুয়েছে আয়াজ।
-‘ঘুমিয়ে গিয়েছো?’
আয়াজের কথা শুনে রুয়াত উঠে বসে।
-‘না ঘুমাইনি।’
-‘উঠেছো কেনো?’
-‘না মানে।’
আয়াজ রুয়াতের কথা শেষ করতে দিলো না। রুয়াতের মাথাটা তার বক্ষে চেপে ধরে।
-‘চুপ কোনো কথা নয়। চোখের নিচ কালো হয়ে গিয়েছে। দেখেছো?’
-‘কিন্তু!’
-‘কোনো কিন্তু নয়। আজ ঘুমাও। শরীর দূর্বল তোমার। কথা কাল সকালে বলো। আর একটা কথা যদি বলো তাহলে কিন্তু আমি আমার বুক থেকে তোমাকে সরিয়ে দিবো৷ ঘুমাও জান। আদর পরে হবে। মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি আমি। তুমি ঘুমাও।’
চুপটি করে রুয়াত শুয়ে আছে। আয়াজ নামের মানুষটা সত্যিই মনমুগ্ধকর। এইযে না বলা সত্ত্বেও ঠিকই তার প্রেয়সীর অবস্থাটা অনুভব করতে পেরেছে। মাথা তুলে রুয়াত আয়াজের কপালে অধর ছুঁয়ে আবারও সেখানটায় শুয়ে পড়ে। শান্তি।
#চলবে….