#হৃদপিন্ড_২
#জান্নাতুল_নাঈমা
#পার্ট_১০
.
সেদিন ইমনের সাথে মুসকানের প্রায় পঁচিশ মিনিট কথা হয়। এই পঁচিশ মিনিটে ইমন মুসকান কে নতুন ভাবে আবিষ্কার করেছে৷ তাঁর ছোট্ট, কোমল হৃদয়ের অনেকখানি জায়গা জুরে রয়েছে শুধুই ইমন। এটুকু বুঝতে তাঁর খুব একটা সময় লাগেনি। নিজেকে ভীষণ সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছিল। বালিকার প্রথম প্রেম হওয়া,প্রথম অনুভূতি তে থাকাটা প্রত্যেকটা পুরুষের জন্যই ভাগ্যের ব্যাপার। সে যথেষ্ট ম্যাচিওর, এডিউকেটেড এবং ভীষণ সিরিয়াস টাইপ ছেলে। আর মুসকানের বয়স খুবই কম ১৪ রানিং। মেয়েটার বয়স যেমন কম তেমনি প্রচন্ড আল্হাদী টাইপের৷ ভাইসহ ভাইয়ের সকল বন্ধু-বান্ধবদেরও কলিজা সে৷ সেও কখনো মুসকানকে আলাদা চোখে দেখেনি। কে জানতো এমন দিন তাঁর আসবে? যে দিনে তাঁর প্রিয় বন্ধুর একমাএ আদরের ছোট বোনকে অন্য নজরে দেখতে হবে তাঁকে। তাঁর এই নজরকে কি সবাই শোভনীয় চোখে দেখবে? নাকি সকলের চোখে স্পেশালি বন্ধু দের চোখে ইমন নামটাই হয়ে যাবে অশোভনীয়? যদি অনুভূতি টা এক তরফা হতো নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতো সে। কিন্তু যেখানে ঐ বাচ্চা মেয়েটা তাঁর প্রতি এতো দূর্বল সেখানে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা৷ মুসকান তাঁর কাছে খুবই নিষ্পাপ, পবিএ, এবং স্বচ্ছ। তাঁর কিশোরী মনের স্বচ্ছ আবদারকে ফেলে দেওয়ার শক্তি ইমনের নেই। প্রেম কি? ভালোবাসা কি? এগুলোর মানে সত্যি মেয়েটা বুঝেনা মেয়েটা শুধু বুঝে তাঁর এই মানুষ টা শুধুই তাঁর। অবুঝ মনের অবুঝ ভাবনায় শুধুই ইমনের বিচরণ রয়েছে। ভবিষ্যতবানী করতে গেলে ফলাফল এই দাঁড়ায় যে, অবুঝ মনের এই অনুভূতি যদি স্থায়ী হয় তাহলে সে ভালোবাসাময় এক নারীকে পাবে নিজের জীবনসঙ্গিনী হিসেবে। বউয়ের নিঃস্বার্থ,গভীর ভালোবাসা পাওয়ার লোভ কার না আছে? কিন্তু বয়স নিতান্তই কম মেয়েটার সময়ের সাথে যদি তাঁর অনুভূতিরও পরিবর্তন ঘটে যায় ? সহ্য করতে পারবে তো? কম বয়সী মেয়েদের প্রতি ছেলেদের আলাদা একটা আকর্ষণ থাকেই। এটা যেনো চন্দ্র, সূর্যের মতোনই চিরন্তন সত্য৷ কিন্তু তাঁর কি শুধুই আকর্ষণ? শুধু আকর্ষণের ওপর নির্ভর করে এতো বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া কি ঠিক হবে? তাঁর সিদ্ধান্ত কতোটা গ্রহণযোগ্য হবে? তাঁর পরিবার, মুরাদের পরিবার বিষয়টা কতোটা সহজ বা কতোটা কঠিনভাবে হজম করবে?
_____________________
মুরাদের মামা ফোন করে জানালো তাঁর মা আর নেই৷ এটুকু বলেই সে ফোন কেটে দিয়েছে৷ মরিয়ম আক্তার কথাটা শোনামাএই জ্ঞান হারিয়েছে। বেশ কয়েকমাস ছুটি কাটিয়েছে মুরাদ। এক্সিডেন্ট করার পর তিনমাস ছুটিতে ছিলো সে৷ ছুটি কাটানোর পর আজই প্রথম স্কুলে গিয়েছে। মুসকান রুমে বসে ইংরেজি দ্বিতীয় পএ পড়ছিলো। হঠাৎ মায়ের চিৎকার শুনে ছুটে যায় বসার ঘরে৷ মাকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে সেও আম্মু বলে দেয় এক চিৎকার। তাঁর চাচি নিলুফা বেগম আর রিমি ছুটে এসে দেখে মুসকান মাকে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে। নিলুফা বেগম রিমিকে পানি আনতে বলতেই সে ছোট বালতি আর মগে করে পানি নিয়ে আসে। মাথা উঁচু করে ধরতেই রিমি নিচে বালতি রাখে আর নিলুফা বেগম পানি দিতে থাকে। জ্ঞান ফিরতেই মরিয়ম আক্তার হাউমাউ করে কেঁদে ওঠে। আম্মা আম্মা বলে চিৎকার করতে থাকে। “আমার আম্মা আমার আত্নাটা আর নাই গো। আমার আব্বার মতো ফাঁকি দিয়ে চলে গেলো আমার আম্মা ও ভাবি আমি কারে আম্মা ডাক দিব ভাবি। ও ভাবি আম্মা কাল রাতেই ফোন দিয়ে বললো ‘মরিয়ম রে তোর ছেলের বউয়ের মুখ দেখার ভাগ্য বুঝি আমার আর হবো না’ ও ভাবি আমার আম্মা নাই, নাই গো ভাবি নাই আমার আম্মা নাই ” মায়ের কান্না দেখে মুসকানও হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো৷ রিমি তাঁর বাবাকে ফোন করে জানিয়ে মুরাদকে ফোন করে জানালো।
.
পুরো বাড়ির মেইন দরজায় তালা ঝুলিয়ে বাড়ির গেটে বড় একটা তালা ঝুলিয়ে সবাই চলে গেলো নানাবাড়ি৷ জানাজার টাইমে মুরাদের সকল বন্ধু গিয়ে হাজির হলো৷ জানাজা পড়ে মাটি দিয়ে এক একে সবাই বিদায় নিলো। শুধু দিহান আর ইমন বাদে। সায়রী মুসকান কে জরিয়ে ধরে তাঁর মামার রুমে বসে আছে৷ রিমি মুসকানের মামাতো বোনদের সামলাচ্ছে। মরিয়ম আক্তার আর তাঁর বড় বোন মাজেদা বেগম একে অপরকে জরিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে চলেছে।
সন্ধ্যা সাতটা বাজে। বাড়ির বড় ওঠানে চেয়ার বসে আছে মুরব্বিরা। মুরাদ সহ মুরাদে মামাতো,খালাতো চারভাইও রয়েছে। মহিলারা সব ঘরের ভিতরে। সকলের মাঝে থেকে ওঠে গিয়ে ইমনকে ফোন দিলো মুরাদ। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দিহান আর ইমন চলে এলো৷ তাঁরা আশেপাশেই ছিলো। মুরাদ দিহানকে বাড়ির চাবি দিয়ে বললো,
—- মুসুকে নিয়ে তোরা ফিরে যা৷ আমাদের বাড়ি গিয়ে ওর বই আর এক সেট কাপড় নিয়ে ইমনদের বাড়ি যাবি৷ যেহেতু ইমনের বাড়িটাই আগে পড়ে।পরশু ওর পরীক্ষা। পরীক্ষা মিস দিলেই এক বছর গ্যাপ পড়ে যাবে। আর এখানে এতো কান্নাকাটির মাঝে থাকলে অসুস্থ হয়ে পড়বে পড়া তো হবেই না পরীক্ষাও খারাপ হবে। ইংরেজিতে খুব কাঁচা মুসু।
—- মুসু কি যেতে চাইবে? মলিন গলায় প্রশ্ন দিহানের৷
—- কেনো যেতে চাইবেনা? এখানে থেকে কান্নাকাটি ছাড়া আর কি করবে? কাকি মা’কে সারাক্ষণ কান্নাকাটি করতে দেখলে মুসুও ভেঙে পড়বে এর থেকে মুরাদ যা বলছে তাই হোক। একদমে কথাগুলো বললো ইমন।
—- হ্যাঁ সায়রীকে বলে দিয়েছি বাড়ি নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে৷ কাল সকালে সায়রীর সাথে দিহানদের বাড়ি চলে যাবে। পড়ায় কোন ক্ষতি হোক চাইনা৷ বললো মুরাদ।
—- দিহানদের বাড়ি কেনো? আমার বাড়ি কি পড়তে অসুবিধা নাকি? কোথাও যেতে হবেনা আমার ওখানেই থাকবে পরীক্ষা শেষ অবদি।
—- তাহলে সায়রীকেও রেখে দিস৷ আশা করি দিহানের সমস্যা নেই?
দিহান কিছু বলার আগেই ইমন বললো,
—- ওর সমস্যা থাকুক বা না থাকুক এতে আমাদের কি? সায়রী, মুসু দুজনই থাকবে, চাইলে দিহানও থেকে যাবে।
.
আটটার দিকে সকলেই ডালভাত খেয়ে নিলো। মুসকান কিছু খেতে পারলো না৷ সারাদিন না খেয়ে পেটে গ্যাস হয়ে গেছে, মুখেও রুচি নেই তাই সে কিছুই খেলো না। মুরাদ ইমনকে বলে দিলো, যাওয়ার সময় ফার্মেসী থেকে গ্যাসট্রিকের ট্যাবলেট কিনে মুসুকে খাওয়িয়ে দিতে৷ আর বাড়ি গিয়ে কিছু খাবার খাওয়াতে।
ইমনের গাড়িতেই ওঠে পড়লো সকলে। ইমন বসলো সামনে। পিছনের ছিটে মাঝখানে বসলো সায়রী ডানপাশে মুসকান আর বামপাশে দিহান। রাস্তায়ই গ্যাসট্রিকের ট্যাবলেট কিনে খাওয়িয়ে দেওয়া হলো মুসকান কে। বাড়ি ফিরতেই ইরাবতী সাদা ভাত আর পাঁচ মিশালী সবজি দিয়ে ভাত মেখে জোর করে মুসকান কে অল্প খাওয়িয়ে দিলো। পুরোটা সময়ই ইমন সোফায় বসে এক ধ্যানে চেয়ে ছিলো মুসকানের দিকে। সারাদিন মেয়েটা তাঁর সামনে কেঁদেছে। তাঁর বিধ্বস্ত মুখপানে তাকাতেই বুকের ভিতরটা ব্যাথায় টনটন করে ওঠছিলো বারবার। ইচ্ছে করছিলো খুব একটি বার বুকের ভিতর চেপে ধরে বলতে ‘এই পাগলী এভাবে কেনো কাঁদছিস দেখ এখানটায় খুব পুড়ছে। খুব কষ্ট হচ্ছে কেনো এভাবে আমার ভিতরের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিচ্ছিস ‘?
মাথা চেপে ধরে বসে রইলো মুসকান। ইমন ঘোরে থেকে ওঠে তাঁর দিকে এগিয়ে বললো,
—- এই মাথা ব্যাথা করছে? খুব কষ্ট হচ্ছে? চল উপরে গিয়ে এখুনি ঘুমাবি দেখবি সকালেই সব ব্যাথা সেড়ে গেছে৷
টলমল চোখে তাকালো মুসকান বসা অবস্থায়ই ইমনের পেট জরিয়ে ধরে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠলো। আচমকাই এমন কিছু হবে ভাবতে পারেনি ইমন। সেখানে উপস্থিত কারোই বোধগম্য ছিলোনা এটা। ইরাবতী ভাবলো বাচ্চা মানুষ এভাবে নিজের নানুর মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি। চোখের সামনে সেই ছোটবেলায় বাবার লাশ দেখেছে এখন নানুর লাশ। মেয়েটার মনের অবস্থা বড়ই করুন। কিন্তু সায়রী আর দিহান বিষয়টা ঠিকভাবে নিলোনা। তাঁরা একেঅপরের দিকে কেমন দৃষ্টিতে যেনো তাকালো। কিন্তু ইমন বা মুসকানের কারোরি সেদিকে খেয়াল নেই। যেখানে মুসকান এভাবে ভেঙে পড়ে তাঁকে আঁকড়ে ধরেছে সেখানে অন্যকোন বিষয় কে বেশী গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলোনা ইমন৷ মুসকানের প্রতিটা ফুঁপানি যেনো ইমনের হৃদপিন্ডে আঘাত করছিলো।
____________________
সারারাত ঘুম হয়নি ইমনের। ভোরের দিকে দিহানকে তুলে সিরিয়াস ভাবে বললো,
—- তুই সায়রীকে এখুনি ফোন করবি আর বলবি তোর শরীর খারাপ লাগছে।
—- কি বলস? আমি তো দিব্বি আছি।
—- না তুই দিব্বি নাই তুই ফোন করে যা বলতে বললাম তাই বল। আমার মুসকান কে একা চাই।
দিহান আর কিছু বললো না সে মনে মনে ইমনকে বেশ ভালোই সাপোর্ট করে। যদি মুসকান ইমন দুজন দুজনকে চায় তাহলে অন্যদের এতো বাড়াবাড়ি না করাই ভালো। কে কাকে ভালোবাসবে কে কাকে জীবনে নিয়ে আসবে তা আউটসাইট মানুষ দের ডিসাইড করার থেকে যারা সারাজীবন একসাথে থাকবে, যারা একে অপরকে মন থেকে চাইবে,ভালোবাসবে তাঁরা ডিসাইড করাই ভালো।
.
দিহানের অসুস্থতার কথা শুনে সায়রী ছুটে যায় ইমনের রুমে৷ দিহান মাথা ব্যাথায় আহ, উহ করে অভিনয় করতে থাকে। সায়রী তাঁর পাশে বসে মাথা টিপে দেয়৷ মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। ব্যাস্ত হয়ে পড়ে তাকে নিয়ে৷ আশেপাশের আর কোন কিছুতে তাঁর খেয়াল নেই। এদিকে ইমন সোজা মুসকান যে ঘরে আছে সে ঘরে চলে যায়৷ মুসকানের সে নিষ্পাপ ঘুমন্ত মুখটা দেখে তাঁর বুকের ভিতর টা যেনো শান্ত হয় অনেকটাই। অবাধ্য ইচ্ছে রা ঢেউ খেলে যায় বুকজুরে। শ্বাসপ্রশ্বাসে আসে ঘন থেকে ঘনতা। কপালে ছুঁয়িয়ে দেয় ভালোবাসার গভীর স্পর্শ। মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় অনেকটা সময়। বেহায়া চোখ দুটি চলে যায় মুসকানের পাতলা মসৃন ঠোঁট জোরায়। নিচের ঠোঁটের গাঢ় তিলটা যেনো তাঁর হৃদপিন্ড চেপে ধরে। বেহায়া মন চায় একটু খানি শীতল স্পর্শ সেখানে ছুঁয়িয়ে দিতে। ধীরে ধীরে এগিয়ে যায় সে আকর্ষণকারী ওষ্ঠদ্বয়ের দিকে। তাঁর ওষ্ঠদ্বয় যখন মুসকানের ওষ্ঠদ্বয় প্রায় ছুঁই ছুঁই তখনি বেজে ওঠে তাঁর ফোন। চমকে ওঠে ইমন বুকের ভিতরটায় ধুকপুকানি বেড়ে যায় খুব। নড়েচড়ে ওঠে মুসকানও। ইমন প্যান্টের পকেটে চেপে ধরে সড়ে যায়। বেলকনিতে গিয়ে ফোন বের করে রিসিভ করে। এলোমেলো নিঃশ্বাসে এক ঢোক গিলে বলে,
—- হ্যালো।
—- ঘুম থেকে ওঠেছিস? স্পষ্ট গলায় বললো মুরাদ।
—- হ্যাঁ এইমাএ। তুই এতো সকালে ফোন দিয়েছিস এনি প্রবলেম?
—- আর বলিস না। কি বাজে পরিস্থিতিটাই না ঘটলো। আমার মামার বড় মেয়ে আছেনা? ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। নাম মারিয়া ওর বড় ভাইয়ের বন্ধুর সাথে রিলেশনশিপে আছে। তুই ভাব কতো বড় সাহস কেমন দস্যি মেয়ে ভাব এ বয়সেই প্রেম, রিলেশনের কি বুঝে এই মেয়ে?
ইমন নিশ্চুপ।
মুরাদ বলতেই থাকলো,
—- আর ছেলের কতো বড় কলিজা ভাব বন্ধুর বোনের সাথে সম্পর্ক গড়ে৷ মারিয়ার বয়স কম। নিশ্চিত ওকে ভুলিয়ে ভালিয়ে রিলেশন করেছে।
—- তুই কিভাবে জানলি? চাপা কন্ঠে প্রশ্নটি করলো ইমন।
—- আর বলিস না। মারুফ নামাজ পড়ার জন্য ওঠেছে। ওঠে দেখে পাশে বন্ধু সাজিদ নাই। ভাবলো হয়তো বাথরুম গিয়েছে। মামাদের বাথরুম তো ওঠান পরে জানিসই। মারুফ ফোনের ফ্লাশ অন করে বের হয়েছিলো। তখনি নারিকেল গাছের পিছন দিক ফিসফিস আওয়াজ শুনতে পায়৷ ভ্রু কুঁচকে গিয়ে লাইট ধরতেই দেখে মারিয়াকে জরিয়ে ধরে আছে সাজিদ৷ কুত্তার বাচ্চার কতো বড় বুকের পাটা ভাবছিস তুই?
মারুফের তো মাথায় আগুন ধরে যায়৷ গতকাল নানী মারা গেছে সকলের মনের অবস্থা এমনিতেই খারাপ তারওপর ছোট বোনের এমন কীর্তি তাও নিজের বেষ্ট ফ্রেন্ডের সাথে কার মাথা ঠিক থাকে? সাজিদকে ইচ্ছে রকম মাইর লাগাইছে৷ আমাকে ফোন দিতেই বের হয়ে এসব দেখে শালারে একদম পিটাইছি ইচ্ছে রকম। তারপর মারিয়াকে থাপড়াইছি কতোক্ষন। এই খবর আমি মারুফ আর মামি ছাড়া কেউ জানেনা। মামা জানলে মারিয়ার গলা কেটে নদীতে ভাসাই দিবো।
ইমন নিশ্চুপ হয়ে সবটা শুনছে। এতোক্ষণ যা শুনলো এতে তাঁর কোন অনুভূতি কাজ করলো না। মনে হলো সব স্বাভাবিক। আর যাইহোক সাজিদ ছেলেটার মতো অবস্থা তাঁর হবেনা৷ সে এতোটা দূর্বল নয়৷ কিন্তু এরপর মুরাদ যা বললো এতে পায়ের নিচ থেকে যেনো মাটি সড়ে গেলো তাঁর বুকের ভিতরটা যেনো দুমড়ে মুচড়ে যেতে শুরু করলো। মুরাদ বললো,
—- আমি মারুফ কেও ইচ্ছে রকম বকা দিলাম একটু আগে। কেমন ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করে যে তাঁরা বন্ধুত্বের মান রাখতে পারেনা৷ বন্ধুর বোনের দিকে কুনজর দিতে যেসব ছেলের বুক কাঁপেনা সেসব ছেলে বন্ধু কেনো শত্রু হবারও যোগ্যতা রাখেনা৷ মানুষ নামে পশু এরা। তারপর বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে বললাম,আমার বন্ধু দের দেখ সেই কোন বয়স থেকে চলাফেরা তাদের সাথে। আমার বাড়িও তিনটা বোন ছিলো এখন দুজন রয়েছে জীবনে অন্যরকম দৃষ্টি ফেলা তো দূরের কথা কল্পনাও করতে পারেনা৷ বন্ধুত্ব যদি করতেই হয় ইমন,দিহান এদের মতো ব্যাক্তিত্বের লোকদের সাথেই করা উচিত৷ যাদের চোখ বুজে বিশ্বাস করা যায়,ভরসা করা যায়। যারা মনের ভুলেও কখনো বিশ্বাসঘাতকতা বা বেঈমানি করার কথা ভাবতেও পারেনা।
চলবে।
ভুলত্রুটি ক্ষমা করে ভুলগুলো ধরিয়ে দেবেন।