#হৃদপিন্ড
#জান্নাতুল নাঈমা
#পর্ব-২৮
–মি.ইমন চৌধুরী যে সুখের আশায় তুমি রয়েছো সেই সুখ তুমি কোনদিন পাবেনা। ঐ মেয়ের মাধ্যমে তুমি না শারীরিক সুখ পাবে না মানসিক সুখ পাবে। তোমায় ঘুরে ফিরে এই রিতিশার কাছেই আসতে হবে। আমি আমার ভালোবাসা, সন্তান, সম্মান সব হারিয়েছি একদিন। সেদিন তুমি এ বাড়ি থেকে বের না করে দিলে ঐ এক্সিডেন্ট টা হতো না আর না আমি আমার বাচ্চা হারাতাম আর না ও আমায় ছাড়তো। যাকে নিয়ে তোমার এতো গর্ব, যার মাঝে তুমি এতোটা ডুবে আছো কেমন হবে যদি তাঁর
ঐ শরীরে অসংখ্য পুরুষের ছোঁয়া পড়ে??
ভার্জিন মাই ফুট,ঐ ভার্জিনিটি তোমার আগেই অন্য কেউ কেড়ে নেবে হাহাহাহা,,,
–কিরে পাগলের মতো হাসছিস কেনো এভাবে??
–ককই এমনি একটা হাসির কথা মনে পড়লো।
খালামুনি, ঐ মেয়েকে আজ শায়েস্তা করবো নিচে চলো।
সাজিয়া বেগম হাত টেনে দরজার কাছে আসতেই সাজিয়া বেগম বললেন,
–রীতিশা এসব ভুলেও করিস না,ইমন পুরো বাড়িতে সিসি ক্যামেরা সেটআপ করেছে, মুসকান কে সর্বক্ষন নজরে নজরে রাখে।
–হোয়াট, কি বলছো, সিরিয়াসলি??
–হ্যাঁ রে। নয়তো আমি কি ওকে না জ্বালিয়ে থাকি নাকি।
–ওহ আই সি। খালামুনি তুমি কতো বড় উপকার করলে ভাবতেও পারবে না। এবার খেলার গুটি টা পাল্টে নিবো। আমি জানি তোমার থেকে সাপোর্ট পাবো না তাই এবিষয় তোমার থেকে লুকোনোই বেটার। যা হবে আমার আর অভ্রর সিদ্ধান্তেই হবে।
সামনেই পহেলা বৈশাখ এ বাড়িতে নিশ্চই বরাবরের মতো বিশাল আয়োজন হবে আর ঐ দিনটাই কাল হয়ে দাঁড়াবে তোমার জন্য মি.ইমন চৌধুরী।
ইশ বাচ্চা টা কিছু করার নেই তোর সব থেকে বড় ভুল হলো ইমন চৌধুরীর মতো অভিশপ্ত জীবনে চলে আসা।
–কি রে কি ভাবছিস এতো চল নিচে চল।
রিতিশা চমকে ওঠলো, খানিকটা হাসি একে সাজিয়া কে জরিয়ে ধরে বললো চলো চলো।
,
সবাই একসাথে খেতে বসেছে। মুসকান বরাবরই ইমনের খাওয়া শেষে খেতে বসে, ইমনের পাশে বসে বা দাঁড়িয়ে তাঁকে খুব যত্ন সহকারে খাওয়ায়।
দাদী এই স্বভাব টা খুবই পছন্দ করে।
তাঁর সেই পুরোনো দিনের কথা, তাঁর কর্তার কথা মনে পড়ে যায়। মুসকানে মায়া ভরা মুখটা দেখে বার বার সে অতীতে ফিরে যায় এইতো আর কটা দিন তারপর সব পরিষ্কার হয়ে যাবে ভেবেই এক দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
–দেখ দেখ মনে হচ্ছে কাজের লোক তাঁর মালিক কে খেতে দিয়েছে,,,
ফিসফিস করে বললো রিতিশা।
ইয়াশফা মুচকি হাসলো।
–কাজের লোকই তো পায়ের নুপুর গলায় পড়লে সে কি নেকলেস হয়ে যায় নাকি।
ইয়ানা বিরক্তি নিয়ে খেতে শুরু করলো। তাঁদের কথায় কান দিলো না, যাতে তাঁরা আর এসব কথা না বলতে পারে তাই বেশ জোরেই অভ্র কে বললো
–ভায়য়ু বাপি আসসে তো পহেলা বৈশাখে??
–হুম অফকোর্স।
ইয়ানা প্রচন্ড খুশি হলো। সেই খুশি দেখে ইমন বাঁকা হাসলো।
–অভ্র এবার তাহলে ইনামুনি বিয়েটা সেরেই ফেলি ছোট খোকা যখন আসসেই বলে মুচকি হাসলো।
ইয়ানা ক্ষেপে গেলো,,, সবাই মিটি মিটি হাসছে।
মুসকান ও মুচকি হাসলো তা দেখে রিতিশা ফিসফিস করে বললো, –এহ হাসি ফুটেছে মুখে ঐ হাসি যদি কান্নায় পরিনত না করি আমার নাম রিতিশা না।
–ওমা আপি কি করবে, বলো বলো আমিও শুনি।
–নো বাচ্চা মানুষ তুই এসব শুনে কি করবি চুপচাপ খা।
ইয়াশফা গাল ফুলিয়ে খেতে লাগলো। রিতিশা বাঁকা হাসলো।
,
মুসকান বিছানায় বসে পড়াশোনা করছে ইমন সোফায় বসে কিসব লিখালিখি করছিলো।
মাথাটা ধরে আসছে ভীষণ সব গুছিয়ে বিছানায় গিয়ে বসলো। একহাতে কপালে দুআঙুল দিয়ে মালিশ করতে লাগলো। মুসকান বিরবির করে পড়ার ফাঁকে ইমনকে চেয়ে দেখছো। যা বোঝার সে বুঝে গেলো বই টা সাইটে রেখে বালিশ ঠিক করে বিছানাটা একটু গুছিয়ে নিলো।
–আপনি শুয়ে পড়ুন আমি মাথা টিপে দিচ্ছি।
ইমন শুধু হুহ করেই শুয়ে পড়লো।
মুসকান তাঁর অনেকটা কাছে গিয়ে আলতো করে চুলে বুলিয়ে দিতে লাগলো,কখনো দুআঙুলে কপালে গাড় ভাবে বুলাতে লাগলো। ইমন হালকা আরাম পেয়ে চোখ বুজে ফেললো।
মুসকান এক ধ্যানে ইমনের দিকে চেয়ে রইলো।
“ভালো লাগে ভীষন ভালো লাগে এই মানুষ টা কে তাঁর “” সুখ লাগে বড় সুখ লাগে এই মানুষ টার পাশে থাকতে এই মানুষ টার সেবা করতে ”
“ইদানীং বড্ড ছুঁতে মন চায়, বড্ড ছোঁয়া পেতে ইচ্ছে করে”
কিন্তু ওনিতো নিজের ইচ্ছে ছাড়া কখনোই কাছে আসে না। আমার যে সবসময় ওনাকে চাই খুব করে চাই ওনি কেনো বুঝে না।
নিজের অজান্তেই খুব কাছে চলে যায় মুসকান।
আলতো করে কপালে ঠোঁট ছুয়িয়ে দেয়।
পরোক্ষনেই লজ্জায় লাল হয়ে যায় ঘন হয়ে আসে তাঁর শ্বাস। অথচ যে মানুষ টাকে চুমু খেলো সে এখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাতেই এই লজ্জা জেগে থাকলে না জানি কি হতো। লজ্জার ব্যাপার টা এতোই প্রখর ছিলো যে ছুটে বেলকুনিতে চলে গেলো সে।
মুসকান সরে যাওয়ায় মাথা ব্যাথাটা আবারো বাড়তে থাকলো। গভীর ঘুম ও আলগা হতে শুরু করলো।
ইমন অনুভব করলো মুসকান তাঁর পাশে নেই।
,
“তিন্নি বলেছিলো অভ্র ওকে কিস করলে ও যদি সারা না দেয় অভ্র ভীষণ রেগে যায় ”
কিন্তু ওনি যখন আমাকে কিস করে আমাকে তো সুযোগ ই দেয় না। ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো মুসকানের। ধীরপায়ে রুমে চলে এলো উদ্দেশ্য গালে টপ করে একটা চুমু খাওয়া।
–এখন ওনি ঘুমে আছে আমার ইচ্ছে টা পূরন করে ফেলি জেগে থাকলে যা পারবো না ঘুম অবস্থায় তা সেরে ফেলি। আমার ইচ্ছে টাও পূরন হবে লজ্জাও পেতে হবে না ওনিও জানবে না হিহিহি।
,
আস্তে করে পা টিপে টিপে বিছানায় গিয়ে বসলো।
বেশ লজ্জা লাগছে, বুকের ভিতর কেমন ডিপডিপ আওয়াজ হচ্ছে, ভয় লাগছে তবুও মনের ইচ্ছে টা পূরনের তাগিদে ভয় কে জয় করে নিয়ে ঝুঁকে গেলো।
চোখ দুটো বন্ধ করে একহাতে গাল ধরে আরেক হাতে কাঁধে ধরে অন্যগালে আলতো করে চুমু খেলো।
ঘনঘন নিঃশ্বাসের বেগ প্রবল ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গাল থেকে তাঁর ঠোঁট জোরা ওঠিয়ে মোহময় চোখে ইমনের মুখপানে চাইলো, ভালোলাগারা পুরো শরীর জুরে খুব করে ওঁকি দিচ্ছে। মনের ভীতর প্রেম প্রেম পাচ্ছে খুব পাবে নাই বা কেনো??
তাঁর বান্ধবী রা সবাই প্রেম করে সারাক্ষন কানের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে আজ এই করেছে কাল সেই করেছে৷ তন্নি, অভ্রর প্রেমময় মূহুর্তের অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে কতোবার যে শাক্ষী হয়েছে হিসেব নেই।
সেও তো সদ্য যৌবনে পা রাখা এক যুবতী।
তাঁর মনেই বা প্রেম জাগবে না কেনো?
তারওপর যদি সামনের এমন সুশীল দেহের সুপুরুষ টি হয় তাঁর স্বামী তাহলে তো কথাই নাই।
টপ করে আরেকটা চুমু খেলো। এবারেরটা এতোটাই খুশি হয়ে এতো গাড় ভাবেই দিয়েছে যে ইমনের ঘুমটা গেছে আলগা হয়ে।
একটু নড়েচড়ে চোখ খুলতেই খানিকটা অবাক হলো পরোক্ষনেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে চেয়ে রইলো।
মুসকান ভয়ে মুখ টা কাচুমাচু করে মিনমিনে স্বরে চোখ দুটো বন্ধ করে বললো।
–বিশ্বাস করুন আমি চুমু খাচ্ছিলাম না, বিশ্বাস করুন।
–“আমার ঘরে এতোদিন বাঘিনী ছিলো জানতাম”
কিন্তু “চুন্নি ছিলো তা তো জানতাম না চুমু খাওয়া চুন্নি,”চুমু চুন্নি”
একহাতে কোমড় জরিয়ে সম্পূর্ণ নিজের ওপর ফেলে
কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে কথা গুলো বললো ইমন।
মুসকান বড় বড় চোখ করে এক ঢোক গিললো।
ইমনকে ছাড়াতে নিতেই ইমন তাঁকে আরো শক্ত করে নিজের সাথে চেপে নিয়ে বললো।
–এই বউ দিয়ে কি হবে?কোথায় স্বামী অসুস্থ স্বামী সেবা করবে তা না সে চুরি করছে, তাও আবার চুরি করে চুমু খাচ্ছে, বড্ড সাহস বেড়ে গেছে দেখছি।
আমাকে ঘুমন্ত পেয়ে আর কি কি করা হয় হুম??
–আমি সত্যি আর কিছু করিনি। আজকেই দুটো চুমু খেয়েছি বিশ্বাস করুন। আর খাবো না প্রমিস, ভুল হয়ে গেছে আমার।
ইমন মুচকি হাসলো। মুসকানকে গভীর ভাবে জরিয়ে বিছানায় ফেলে দুহাতে তাঁর দুহাত চেপে ধরলো।
ডাগর ডাগর চোখ দুটোটে গভীর দৃষ্টি স্থির করলো।
মুখে দুষ্টু হাসি।
–দুটো চুমু খেয়েছো??
মুসকান ভয়ে ভয়ে ইমনের দিকে চাইলো।
ইমন মুখোভঙ্গিটা কঠোর করে নিলো।
–আর খাবো না, ভুল হয়ে গেছে আমার।
–ইশ,,,কি ইনোসেন্ট। মুখটাতে যতোটা ইনোসেন্ট ভরে আছে মনটাতে ততোটাই নেই ম্যাডাম।
চুমু খাবেন তো খান বরটা তো আপনারই নিষেধ কোথায়?? কিন্তু অজান্তে কেনো আমি জানবো বুঝবো ফিল করবো এভাবে চুমু খেতে হবে।
“চুরি করা মহাপাপ। আর এই মহাপাপ শুধু টাকা-পয়সা,সোনা দানা চুরি করলেই হয় না।
ইমন চৌধুরী কে চুরি করে চুমু খেতে এলেও হয়।
আমি কি করে আপনাকে এই মহাপাপ করতে দেই মিসেস”??
চোখ দুটো পানিতে চিকচিক করছে। এতোবড় ভুল সে কি করে করলো ছিঃ নিজের ওপরই ছিঃ ছিঃ করতে লাগলো।
ইমন মিটিমিটি হাসছে, মুসকান অপরাধীর মতো মুখ করে বললো,
–সত্যি ভুল হয়ে গেছে আর কখনো এমন ভুল হবে না।
–ভুল যখন করেছো সেই ভুলের শাস্তি তো পেতেই হবে।জানোতো আমি যেমন ভালোবাসতে পারি তেমন শাস্তিও দিতে পারি।
মুসকান ভয়ে চোখ সরিয়ে নিলো মিনমিনে স্বরে বললো,
–আচ্ছা শাস্তি দিন ভুল যখন করেছি শাস্তিটাই প্রাপ্য আমার।
ইমন বাঁকা হাসলো অভিমানে ভরা কথা গুলোও তাঁর ভীষণ ভালো লাগলো।
— যে কাজটা চুরি করে করতে যাচ্ছিলে সেটা এবার প্রকাশে করো। আর হ্যাঁ শুধু কিস করলে চলবে না কিস প্রো চাই ওকে আর চুরি করার সময় ভুল জায়গায় করে ফেলেছো এবার ঠিক জায়গায় করবে।
বুকটা ধক করে ওঠলো চোখ তুলে ইমনের মুখের দিকে চাইলো। ইমনের দুষ্টু হাসি মাখা হুমকির স্বরে কথাগুলো যেনো খুবই ভয়ংকর ছিলো এতোটাই যে তাঁর হাত পা কাঁপতে শুরু করলো।
— কি হলো আমার “কাঁপাকাঁপির রানী” এমন করে লাভ নেই নাও স্টার্ট।
ইমন মুখটা এগিয়ে দিলো মুসকানের খুব কাছে।
গভীর দৃষ্টি ছুঁড়ে দিয়ে মুখোমুখি মুখ করে অপেক্ষায় আছে সে।
মুসকান সেই চোখে দৃষ্টি রাখতে পারছে না। যার দিকে তাকাতেই পারছে না তাকে কি করে চুমু খাবে??কিন্তু ইমন যখন একবার বলেছে তাহলে সে তো চুমুটা নিয়েই ছাড়বে শরীর টা অবশ হতে লাগলো। ইমনের অধীর আগ্রহ ভরা মুখটাতে এক পলক তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলো।
–কি হলো লেট কেনো? যতো লেট হবে শাস্তি ততো বেশী পাবে। নাও স্টার্ট,,,
মুসকান এবার কেঁদেই দিলো।
–আপনি ওভাবে তাকিয়ে থাকবেন না প্লিজ।
তাহলে আমি পারবো না। চোখ টা বন্ধ করুন না,,,
ইমন ভ্রু কুঁচকে আরো কাছে চলে গেলো।
কপালে কপাল ঠেকিয়ে, নাকে নাক ঠেকিয়ে ভারী আওয়াজে বললো,
–কেনো তাকালে সমস্যা কোথায়। তুমি আমায় চুমু খাবে আর আমি দেখবো না??
লজ্জায় যেনো মরন হবে এবার। মুখটা সরিয়ে নিয়ে চোখ বন্ধ করে ঘন শ্বাস ফেলতে ফেলতে বললো,
–“আপনার ঐ চোখে মরন হবে আমার”
দোহাই লাগে এভাবে তাকাবেন না।
ইমন বাঁকা হাসলো।
–ওকে ফাইন চোখ বন্ধ করলাম এবার খুশি,,,এবার স্টার্ট করো।
ইমন চোখ দুটো বন্ধ করে অপেক্ষা করছে।
তাঁর প্রত্যেকটা ঘন শ্বাস গিয়ে ঠেকছে মুসকানের মুখের ওপর। যা মুসকানের হৃদস্পন্দন কে প্রবলভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
যে দুটো হাতে ইমন তাঁর হাত চেপে ধরে আছে সেই দুটো হাতের আঙুলের ফাঁকে আঙুল গুঁজে দিলো সে। নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক আনার ব্যার্থ চেষ্টা করলো। ধীরে ধীরে মুখ এগুতে লাগলো।
দুজন দুজনের খুব কাছে, দুজনেই গুনতে পারছে দুজনের শ্বাস-প্রশ্বাস।
মুসকান বার বার গিয়েও ফিরে আসছে।
প্রায় দশবারের মতো সে ফিরে এসেছে।
এবার কয়েকদফা শ্বাস নিয়ে যেই এগোতে যাবে অমনি ইমন নিজেই এগিয়ে তাঁর ঠোঁট জোরা আঁকড়ে ধরলো।
বেশ অনেকটা সময় পর মুসকান কে ছেড়ে বললো,
— নেক্সট টাইম যেনো এতো লেট না হয়।
চোখের কোনে বিন্দু জলকনা বুড়ো আঙুলে মুছে দিয়ে পাশেই শুয়ে পড়লো।
মুসকানকে ঘোর থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য একহাতে টেনে বুকে পুরে নিলো। মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,
–কাঁদছিলে কেনো??
মুসকান কিছু বললো না শুধু চোখ দুটো বন্ধ করে বুকে গভীরভাবে মুখ গুঁজে রইলো।
ইমনও আর কিছু বললো না শান্তির এক শ্বাস ছেড়ে নিজেও চোখ দুটো বুজলো।
,
মুসকান কাজের লোকদের সাথে হাতে হাত লাগিয়ে সব রান্না কমপ্লিট করে নিলো।
আজ তাঁর ফুপু শাশুড়ী মা আসবে।
ইমনের কড়া আদেশ সব যেনো ঠিকঠাক থাকে আর মুসকানও যেনো পরিপাটি হয়ে দাদীর কাছাকাছিই থাকে। সকালে ইমন বেরুনোর সময় তাঁর গাল টিপে দিয়ে বলে গেছে,
— তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।
কিন্তু কি সারপ্রাইজ সেটাই ভেবে পাচ্ছে না মুসকান।
,
–খালামুনি তোমার বড় ননদ আসছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। ওনার নাকি দুটো ছেলে মেয়ে?? ছেলেটা কেমন গো??
রিতিশার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালো সাজিয়া বেগম।
— তা দিয়ে তোর কি? তোর থেকে বয়সে ছোটই হবে অভ্রর থেকে এক বছরের বড়।
–আরে ধূর আমার বয়সটা কি বেশী হয়ে গেলো নাকি??
সাজিয়া বেগম হাসলেন।
— ওরা আসলে আমার প্রচন্ড বিরক্ত লাগে। সারাক্ষন পটের বিবি হয়ে বসে থাকবে আর কাজের লোকের মতো আমাকে খাটতে হবে। অসহ্য তবে এবার বেশ জমবে মুসকান কে আমি না জ্বালাতে পারলাম। নদী,নিপ্রা খুব জ্বালাবে।
— তাই নাকি তাহলে তো বেশ হবে। আমরা যা না পারবো ওদের দিয়েই করাবো। ইমন তো ওদের কিচ্ছু বলবে না হাজার হলেও ওনাকে ইমন মায়ের মতো ভালোবাসে,শ্রদ্ধা করে দাদী আর ওনাকেই তো মান্য করে বেশী।
— ঠিক বলেছিস দেখ না কি হয়। নদী যা সব পছন্দ করে না সব মুসকান কে দিয়ে করাবো আর মজা জমাবো।
,
মিসেস নদী চৌধুরী অনেক বছর পর তাঁর ছেলে নিলয়, মেয়ে নিপ্রাকে নিয়ে চৌধুরী বাড়িতে পা ফেললেন।
তাঁর হাজব্যান্ড বাংলাদেশে আসলেও এ বাড়ি আসেনি। তাঁর নিজের বাড়ি গিয়েছে শশুর বাড়ি তে এসে দীর্ঘ সময় থাকা তাঁর নীতি বিরোধ। সে সময় করে আসবে তাঁর শাশুড়ী মায়ের সাথে দেখা করতে।
নদী বাড়িতে পা ফেলতে না ফেলতেই সাজিয়া বেগম এর মুড টাই পাল্টে গেলো। যেনো সে এ বাড়ির নতুন বউ।
চলবে…….
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।