#গল্পের_নাম #হটাৎ_এক_বৃষ্টির_দিনে
#পর্বঃ১১ #kiss
#নবনী_নীলা
“তোমার আর অভির মাঝে কিছু কি হয়েছে?” অর্পা আপুর কথায় আমি না সূচক মাথা নাড়লাম। অভি এখনও আমার উপর রেগে আছে তবে আপুকে বলার সাহস হয়ে উঠলো না। আজ রাতে আসার কথা ছিলো সে দুপুরে বাসায় এসে বলে এক্ষনি যাবে। ২ঘণ্টার রাস্তা আসতে আসতে বিকেল হলো। এতক্ষণে আপু সমস্যার আন্দাজ করে ফেলেছেন।
অভির বড়ো বোন অভির মতন না সে পুরো বিপরীত হাসি, খুশি, প্রাণ উজ্জ্বল তবে অসম্ভম সুন্দরী।
বাসার কাজের মহিলা এসে বললো,” আফা, দুলাভাই, ভাইজান আর মামাজান ঐডি খাইতাসে ছাদে বইসা।”
আমি আপুর দিকে তাকালাম। আপু কঠিন গলায় মতিনের মাকে বললো,” কি খাচ্ছে?”
আমি আর আপু ছাদে গিয়ে দেখি তিনটা বেতের চেয়ারে দোতলার ছাদে বসে wine টাইপ কিছু খাচ্ছে তারা। অভি মাথায় হাত দিয়ে গ্লাস হাতে বসে আছে। ব্যাপারটায় আমি অবাক হ়ইনি কারণ এদের বংশের মানুষদের অভ্যাস আছে।
অর্পা আপু দুলাভাইকে টেনে তুলতে তুলতে বললো,” মামা তুমি খাচ্ছো খাবে ওদের না খাওয়ালেই পারতে। অভি নিজেকে একটু হলেও সামলাতে পারবে। আমারটাকে আমি কি করবো? বাবা, মা,ফুফু আছে কি ভাববে যদি এ অবস্থায় এদের দেখে।”
অভির মামা বিয়ে করেনি মদ, উইসকি এইগুলো সে চায়ের মতন খায়।তাকে নেশায় খুব কম ধরে। তিনি হাসতে হাসতে বললেন,” তোর বাবা একটু আগে খেয়ে গেলো, প্রথমে না বললো শেষে ২গ্লাস খেয়ে নিলো।”
অর্পা আপু মামাকে আর কিছু না বলে আমায় অভিকে রুমে নিয়ে যেতে বললেন।আমি অভির হাত ধরে কাধে হাতটা রেখে উঠালাম।মামা আমাকে ডেকে বললেন,” একটু লেবুর শরবত দিও অভিকে বেশ ভালই খেয়ে নিয়েছে।”
আমি কোনো রকমে অভিকে রুমে নিয়ে এলাম। রুমে সে ভালো ভাবেই এলো। মুভিতে যেমন মাতাল দেখেছি ঢুলে ঢুলে যায় তেমন কিছুই করছে না। দরজার সামনে হটাৎ দাড়িয়ে পড়লো।
এবার সে দাড়িয়ে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে। এমন মাতাল তো আমি কোনো মুভিতেও দেখিনি!
আমি বললাম,” কি দেখছেন আপনি?”
অভি ফ্লোর এ বসে পড়লো।
মনে হচ্ছে তার মাথা ব্যাথা করছে। মাথায় হাত দিয়ে আছেন।
” উঠুন আমি আপনাকে বিছানায় নিয়ে যাচ্ছি। আপনার মাথায় ম্যাসেজ করে দিবো।”
অভিকে নিয়ে আমি খাটে বসাতে চাইলাম যাতে তার মাথা ম্যাসেজ করতে পারি। সে খাটে শুয়ে পড়ল দুলতে দুলতে।
ব্যাথায় অভি নড়াচড়া শুরু করেছে। সহ্য করতে না পারলে খেতে কে বলেছে।
আমি অভির মাথা তুলে আমার কোলে রেখে ভালো ভাবে ম্যাসেজ করে দিচ্ছি। অভি চুপ করে চোখ বন্ধ করে আছে।
আমিতো শুনেছি এইগুলো খেলে মানুষ আরো বেশি কথা বলে উল্টা পাল্টা কথা। এর দেখি কথা বন্ধ হয়েগেছে।
অভি হটাৎ আমার হাত ধরে হাতটা বুকের কাছে নিয়ে ধরে রাখলো।
” আচ্ছা আপনি কি আমার উপর রাগ করেছেন?”আমি প্রশ্ন করলাম।
অভি চোখ খুলে বাচ্চাদের মতন মাথা নাড়িয়ে হা বললো।বলেই সে উঠে বসার চেষ্টা করছে কিন্ত ঠিকমতো ব্যালেন্স করতে পারছে না। আমি অভিকে ধরে অভির পিঠের নীচে একটা বালিশ দিয়ে বসলাম।
অভি শক্ত করে আমার দুই বাহু ধরে বললো,” তুমি অন্য ছেলেদের সাথে হেসে হেসে কথা বলবে কেনো? আমার সাথে কখনো হেসে কথা বলেছো।”
আমার বুকের ভিতরটা ধক করে উঠল।
বলেই অভি আমাকে আরো শক্ত করে ধরলো। আমার ভয়ে হাত পা ঠাণ্ডা হয়ে গেছিলো পরে মনে হলো উনিতো একটা ঘোরের মধ্যে আছে এখন। মাতলামি করছে এগুলো ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
আমি হেসে বললাম,”আচ্ছা আর কোনো ছেলের সাথে হেসে কথা বলবেনা শুধু আপনার সাথে হেসে কথা বলবো। এবার ছাড়ুন আমার হাত দুইটা খসে পড়বে নইলে।”
অভি আমাকে ছেড়ে আমার গাল টেনে বললো,” গুড গার্ল।” বলে আমার হাত ধরে বালিশে হেলান দিলো।
ওমা গো কথায় কাজ হইছে। একবার বললাম বুইঝ্যা গেসে এই জিনিস আগে কই ছিলো। এইটা তো আরো আগে খাওয়ানো উচিৎ ছিলো। অভি হাসছে প্রাণ খুলে হাসছে। মুখ থেকে হাসি সরছে না। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি। অভিকে রোজ এই ছাই পাশ খাওয়ানো দরকার এভাবে হাসবে তাহলে।
আচ্ছা আমি যতদুর জানি এইগুলো খেলে কিছু মনে থাকে না মানুষ সত্যি কথা বলে। পরীক্ষা করে দেখলে কেমন হয়।
আমি বললাম,” আচ্ছা আপনি কি অথৈকে এখনো ভালোবাসেন?”
অভি চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে চিন্তায় আমার অবস্থা খারাপ।যদি হা বলে তখন তোর কি হবে নওরীন।
অভি মুখ গম্ভীর করে বললো,” না।”
বাহ্ এইটাই তো শুনতে চাচ্ছিলাম।” খুব ভালো খুবই ভালো। ওর চেহারাও কোনোদিন দেখবেন না ।”রাগী স্বরে বললাম।
অভি ভদ্র বাচ্চার মতন সম্মতি জানিয়ে দুলতে দুলতে মাথা নাড়ল। বাহ্ এমন একটা জিনিস উনি এর আগে খায় নি কেনো। আমিও একদিন খেয়ে দেখবো যে এইটা আবিষ্কার করেছে তাকে অস্কার দেওয়া উচিৎ।
তাহলে কি সেফুদা ঠিক বলতেন ” মদ খাও মানুষ হও।”
অভির পেট থেকে আরেকটা কথা বের করতে হবে।
আমি বললাম,” তাহলে বিয়ের আগে যে বললেন সে আপনাকে ছেড়ে গেছে কিন্তু আপনি ভুলেননি। ওইসব কি ছিলো।”
” ওইগুলো বলেছি জাতে আমাকে কোনো মেয়ে বিয়ে না করে। আমি কেনো ওই চিটারকে ভালোবাসবো।”অভি বলে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে।
আমার ইচ্ছে করছে চিৎকার করে সবার কানের পর্দা ফাটিয়ে দেই। খুশিতে আমি অভিকে জড়িয়ে ধরি। জড়িয়ে ধরে বুঝতে পরলাম অভির শরীর গরম। আমি মাথায় হাত দিয়ে দেখলাম কিন্তু জ্বর নেই। তাহলে শরীর এমন গরম কেনো?
অভি নিজের শার্টের বোতাম বিরক্তি নিয়ে খুলে ফেলছে।
” আরে আরে করছেন কি?” বলে আমি অভির হাত ধরে ফেললাম।
” গরম লাগছে। শার্ট খুলবো”,বলে আমার হাত ছাড়িয়ে নিলো।
” এসি চলছে তারপরও আপনার গরম লাগছে? আমি এসি বাড়িয়ে দিচ্ছে শার্ট খুলবেন না।” ,বলে শেষ না করতে অভি শার্ট খুলে ফেলেছে।
এবার আমার অসস্তি লাগছে। মামার কথা মতন লেবুর শরবত খাওয়াতে হবে। আরো মারাত্বক কিছু করার আগে থামাতে হবে।
” আচ্ছা আমি একটু আসছি আপনি বসুন।”,বলে যেই আমি উঠতে নিয়েছি অভি আমার কোমর জড়িয়ে ধরে আমাকে কাছে নিয়ে এলো।
আমার শরীরের লোম খাড়া হয়ে গেছে। অভির দিকে আমি তাকাতেও পারছিনা, অভির গায়ে শার্ট নেই। একটু আগে বাচ্চাদের মতন করছিলো এখন আবার কি হলো? হটাৎ করে বড়ো হয়ে গেলো কিভাবে।
” তুমি এখানে থাকবে”,বলে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।আমি একটা ঢোক গিললাম। নিশ্বাস ভারী হয়ে আসছে আমার। মনে হচ্ছে আমি বরফ হয়ে গেছি।
” আচ্ছা থাকবো, আমাকে ছাড়ুন।”, গলা শুকিয়ে গেছে আওয়াজও বের হচ্ছে না। অভি আমার কাধ থেকে মুখ তুলে আমার দিকে তাকালো।আমি অভির চোখের দিকে তাকাতে পারছি না।
অভি আমার ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। কিছু সেকেন্ড আমি বুঝতেই পারিনি কি হলো।
মদ খেয়ে বউ পিটানোর কথা শুনেছি কিন্তু এটা কি হলো? জিনিসটা যত ভালো ভেবেছিলাম এতো ভালো না।
[আজকে নেটে সমস্যার কারণে এতো দেরি। নেট ঠিক করতে ফোন করি, লোকটা আসবে আসবে বলে ১ঘন্টা দেরি করছে।]
[ চলবে ]