স্বর্ণলতা part 17

0
466

#স্বর্ণলতা
পর্বঃ১৭
_____________________
“না এটা মেহুল না”
স্বর্ণলতা থমকে গেলো।নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছিলো।স্বর্ণলতা করুন সুরে বললো-
—“আমি কি মেহুল কে খুঁজে পাবোনা!”
রূপক স্বর্ণলতা কে জড়িয়ে ধরলো।রূপকের খুব মায়া হতে লাগলো স্বর্ণলতার জন্য।
ইচ্ছে হচ্ছিলো যদি মেহুল কে এনে তার সামনে হাজির করতে পারতো!একটা মানুষ একটা মানুষকে এতো ভালোবাসতে পারে!স্বর্নলতার প্রধান শাস্তি-ই যেনো মেহুল কে তার কাছ থেকে দূরে সরানো।

—“স্বর্ণ বাড়ি চলো।তুমি খুব ক্লান্ত।ডক্টর আজকে কি বলেছে শোনো নি?তুমি একদম দুশ্চিন্তা করবেনা।দুশ্চিন্তা করা বাচ্চার জন্য ভালো না।”

—“আমার কি মনে হচ্ছে জানেন?পুরো পৃথিবীতে আমি শুধু একা।আমার কেউ নেই।কেউ নেই।”

—“আমি আছি স্বর্ণ! তুমি একা নও।”
স্বর্ণলতা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললো-
—“চলুন বাড়ি যাওয়া যাক”।
স্বর্ণলতা চুপচাপ হয়ে গেলো।সারা রাস্তা একটাও কথা বললো না সে।ঘরে এসে চুপচাপ বিছানায় শুয়ে পড়লো।তার জ্বরটা আবার এসেছে।ডক্টর বারবার নিষেধ করে দিয়েছে দুশ্চিন্তা না করতে। নিয়মিত ঔষধ খেতে।

রূপকের মা-এর প্রবেশ….
—“স্বর্ণলতা এসেই শুয়ে পড়েছো?শরীর খুব বেশি খারাপ লাগছে?”

—“আম্মা জ্বরটা আবার এসেছে।”

—”কি বলো তুমি! জ্বরটা কিছুতেই যাচ্ছেনা!কি অদ্ভুত! ঔষধ চেন্জ করতে হবে।আর তুমি দুশ্চিন্তা করে বাচ্চাটার কোন ক্ষতি করোনা অনুরোধ করে বলছি।আর আজকে স্নেহা আসবে।সেদিন আসার কথা ছিলো কিন্তু আমি না করে দিয়েছি আজকে আসবে।”

—“আমি একটু পর উঠে যাবো আম্মা”।

—“না তোমাকে উঠতে হবেনা।তুমি রেস্ট করো।আমি দারোয়ান এর বউ কে নিয়ে এসেছি।আমার কাজে হেল্প করার জন্য।আমরা দুজন করে নিবো।তুমি রেস্ট করো।”

স্নেহা আসার কথা শুনে স্বর্ণলতা খুশি হলো কিনা সে নিজেই বুঝতে পারছেনা।তার সাথে কাটানো বিগত দিনগুলো সুখের ছিলো না।নানা বাহানায় রূপকের থেকে দূরে দূরে রাখতো।সে যাই হোক,স্নেহা তার বড় বোনের মতো।এখন সে এ বাসার অতিথি।সাথে ভাইয়াও আসবে।যেহুতু বাসায় অতিথি আসছে।তার এভাবে শুয়ে থাকে চলেনা।উঠে ফ্রেশ হতে হবে।গোসল সেড়ে নামাজ পরে নিতে হবে।প্রচুর রান্না বান্না হবে আজ।মেয়ে আর মেয়ে জামাই আসছে বলে কথা।
স্বর্ণলতা ও উঠে সবকিছু শেষ করে নিলো।মুখটা আজকে ম্লান লাগছে।শুকনো দেখাচ্ছে।
সে সোজা রান্নাঘরে চলে গেলো।রান্না ঘরে গিয়ে দেখলো রূপকের মা এবং দারোয়ান এর বউ রিজিয়া কাজে ব্যস্ত।দ্রুত এটা ওটা করছে।

—“আম্মা ডিমের কোরমা টা আমি করে দেই?”

—“না না তুমি অসুস্থ।তুমি শুয়ে রেস্ট করো।”

—“আম্মা দুলাভাই আর আপু আমার হাতের ডিমের কোরমা খুব পছন্দ করে।আমি একটু সুস্থ আছি।আমি পারবো রান্না করতে”।

কিছুক্ষন চুপ থেকে রূপকের মা বললো-
—“আচ্ছা এসো করো।সবকিছু রেডি করা আছে কিছু দরকার হলে বলবে।”

—“ঠিক আছে আম্মা”।

—“রান্নাঘরে কেডা?স্বর্ণলতা নাকি?তোমার না শরীর খারাপ। আগুনের কাছে গেলা ক্যান?”
বুবু তুমি ওরে রান্নাঘরে ঢুকতে দিলা ক্যান?”-জাফর কথাগুলো রূপকের মা কে উদ্দেশ্য করে বলছিলো।
—“থাক করুক।ওর মন চাচ্ছে তাই দিয়েছি।আর আমি তো আছি-ই সমস্যা নেই।”

—“কর তোমগো যেইডা ভালা মনে হয়।”

রিজিয়া এতো ঝটপটে একটা মেয়ে।সব কাজ ঝটপট করে শেষ করে ফেলছে।তাকে কোন কিছু করতে বলতেই হচ্ছেনা।সারা দুপুর রান্না করতে করতে পার হয়ে গেলো।অনেক রকমের রান্না হয়েছে আজ।
গরুর কালাভুনা,রোস্ট,মুরগির ঝাল,পোলাও,ফিরনি,সরষে ইলিশ,পায়েস,ডিমের কোরমা।পুরো টেবিল ভর্তি খাবারে।
আজকে যদি মেহুল থাকতো বেচারী ভালো মন্দ কিছু খেতে পারতো।সব কাজ শেষে রিজিয়ার এবার চলে যাওয়ার পালা।হাত মুখ ধুয়ে সে চলে যাচ্ছিলো।সোফায় রূপকের মা বসে চা খাচ্ছিলো।আর স্বর্ণলতা টেবিল সাজাচ্ছিলো।তখন দরজার কাছে গিয়ে রিজিয়া জোরে জোরে বললো-

—“আমি যাই গো খালা।আপনের তো রান্দন শ্যাষ।আর কোন দরকার পড়লে আমারে জানাইবেন”।

—“একটু দাড়াও রিজিয়া বু্ুবু।তোমাকে তুমি করে বললাম কিছু মনে করোনা। বয়সে তুমি আমার ছোট-ই হবে।সারাদিন এতো খাটনি খাটলে আর কিছু না নিয়েই চলে যাচ্ছো?”

—“কি নিমু আপা!”

একটা টিফিন বক্স এগিয়ে দিয়ে স্বর্ণলতা বললো-
—“এই নাও এগুলো তোমার”।

—“কি এইগুলা?”

—“আজকে যা যা রান্না করলে সব খাবার এই বক্সের মধ্যে দিয়ে দিয়েছি।”

—”না আমার এগ্লা লাগবো না আপা।কি যে কন!”

—“লাগবে না কেনো?আজকের এতো আয়োজনে তুমি আমাদের পাশে ছিলে তাহলে প্রয়োজনে আমরা কেনো থাকবো না?”

—“কি কন আপা!বুঝিনাই তো!”

—“যখন রান্না করছিলে তখন তোমার মেয়ে এসে বলেছিলো তার ক্ষুধা লেগেছে।সে আজকে মাংস ভাত খেতে চায়।আর তুমি তাকে তাড়িয়ে দিয়েছো।আজকে তোমার এগুলো প্রয়োজন”।

স্বর্ণলতার উদারতায় রিজিয়ার চোখে পানি চলে আসলো।পানি লুকিয়ে উজ্বল একটা হাসি দিলো।আর প্রাণ ভরে দোয়া করলো-
—“আল্লাহ আপনারে ভালা রাখুক আপা।আপনার বাচ্চারে ভালা রাখুক”।
এর মধ্যেই রূপক এসে দরজার সামনে দাড়ালো।আর স্বর্ণলতা কে বললো –
—দূর থেকে সবকিছু দেখলাম আমি।একটা কথা না বলে পারছিনা।তুমি যেমন সুন্দর।তোমার মনটা ঠিক ততটাই সুন্দর।”
স্বর্ণলতা মৃদু একটা হাসি দিয়ে ঘরে চলে গেলো।রাতে স্নেহা এবং স্নেহার হাজবেন্ড সৈকত আসলো।
সৈকত এসেই স্বর্ণলতা কে খুঁজতে লাগলো।

—“কই তোমার স্বর্ণ কই?তোমার স্বর্ণ কে তো খুঁজে পাইনা।”
কি অবস্থা শরীরের?”

—“দুলাভাই স্বর্ণলতার হালকা একটু জ্বর এসেছিলো।আবার পায়ে কাটা ফুটেছিলো কয়েকদিন আগে।সব মিলিয়ে ও একটু অসুস্থ।আপনারা আসবেন দেখে রান্নাবান্না করেছে আবার সবার সাথে। ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে।হয়তো ঘরে শুয়ে আছে।”

—“তাহলে থাক।ওকে বিরক্ত না করি”।
স্নেহা মামা কে খুঁজতে লাগলো।
—“মা, মামা কই?আমরা আসলাম আর তার পাত্তা নেই?”
—“জাফর তোদের জন্য দই আনতে গেছে।বিশ্রাম কর ও এসে যাবে”।

—“তাহলে আমি স্বর্ণলতার ঘর থেকে একটু ঘুরে আসি।”

স্বর্ণলতার চোখ বন্ধ।বুকের ওপর একটা বই।হয়তো পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গিয়েছে।টেবিলে ঔষধের ছড়াছড়ি।স্নেহা খাটের ওপর বসলো।স্বর্ণলতার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।এই মেয়েটা কি অপরূপ সুন্দরী!ঘুমন্ত অবস্থায় ও তাকে কি চমৎকার লাগছে।
স্নেহা উঠে দাড়ালো।বেলকুনিতে চলে গেলো।বাইরে ঠান্ডা বাতাস।এর মধ্যেই সৈকতের প্রবেশ।স্নেহা কে বলতে লাগলো-
—“আজ কি এখানে থাকবে?”

—“কখনোই না! আমি প্রেগনেন্ট না?আমি আজকেই চলে যাবো।”

এরই মধ্যে স্বর্নলতার তন্দ্রা ভাব কেটে গেছে।
কিন্তু সে উঠলো না।সে চোখ বুজে রইলো।
—“একরাত থাকলে মহাভারত অশুদ্ধ হবেনা।”

—“না আমি বাচ্চার কোন ক্ষতি চাইনা”।

—“পাগল নাকি তুমি?বাচ্চার কেনো ক্ষতি হবে?”

—“চুপ আস্তে।স্বর্ণলতা আছে।আর ওকে যদি কিছু জানানোর চেষ্টা করো তাহলে আমাদের বাচ্চাকে আমি পৃথিবীতে আনবো না।বাচ্চার কসম খেয়ে বলেছিলে তুমি কিছু বলতে পারবেনা”।

নিমিষেই সৈকতের মুখ চুপসে গেলো।সে কিছু না বলেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো।স্নেহা খাটে বসে রইলো।
কিছুক্ষণ পর স্বর্ণলতা চোখ খুললো।খুলে স্নেহাকে দেখে অবাক হওয়ার ভান করে বললো-
—“আপু! তুমি কখন এলে?সরি আমি একটু ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম”।

—“তুমি শুয়ে থাকো।তুমি নাকি অসুস্থ রেস্ট করো।”

—“না আমি ঠিক আছি।”

—“তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে স্বর্ণলতা।”

—“ধন্যবাদ আপু।”

—“আচ্ছা তুমি ফ্রেশ হও।আমি বরং মা-এর ঘরে যাই।”
স্বর্ণলতা মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
মনে মনে তার অনেক প্রশ্ন দানা বাঁধছে। দুলাভাই কে কি না বলতে বললো।দুলাভাইএর সাথে একা কথা বলা প্রয়োজন।কি এমন কথা যেটা দুলাভাই আমাকে জানাতে চায় কিন্তু আপু সেটা চায়না!

এরই মধ্যে রূপক ঘরে ঢুকলো।
—“স্বর্ণলতা উঠে গেছো?ফ্রেশ হও দ্রুত।আপুরা খেতে বসবে।”

—”আচ্ছা শুনুন আমি ভাবছিলাম কি আপুর জন্য একটা গিফ্ট কিনলে কেমন হয়?”

—“হুম কেনা যায় তো।পরে একটা গিফ্ট কিনে দিবো।”

—“পরে না আজকে এখন-ই”।

—“আজকে এখন-ই!”

—“জ্বী।কারন আপু অনেকদিন পর এসেছে আমি চাই আপুকে একটু সারপ্রাইজড দিতে।আপনাকে আগে কিছু বলতে পারিনি কারন আমি অসুস্থ ছিলাম।আপনি আপুকে নিয়ে মার্কেটে বেড়িয়ে পড়েন।আপুর যেটা ভালো লাগবে কিনে দেন”।

—“এটা কোন সারপ্রাইজড হলো! এ কেমন সারপ্রাইজড যেখানে ও নিজের গিফ্ট দেখতে পায়!”

—“দেখতাম আপু দুলাভাই এর সাথে মাঝেমাঝে রাগ করতো।আর বিষয় বস্তু থাকতো গিফ্ট পছন্দ হয়নি।আপুকে পড়েও দেওয়া যেতো কিন্তু আমি এটা আগে থেকে প্ল্যান করে রেখেছিলাম।জানেন কে কে প্ল্যান করেছি?আমি আর মেহুল।মেহুল আজকে যদি থাকতো আমার প্ল্যান সফল হতো”।

কথাগুলো বলতেই বলতেই স্বর্ণলতার চোখ ভিজে উঠলো।
—“আচ্ছা আচ্ছা কান্না করো না।মেহুলের কথা বাদ দাও।আমি আপুকে সাথে করে নিয়ে এখুনি কিছু কিনে দিচ্ছি।খুশি?”

—“অনেক খুশি অনেক।আচ্ছা শুনেন আপুকে আগে কিছু বলবেন না।বলবেন আমার জন্য গিফ্ট কিনবেন।আপু একটা মেয়ে মানুষ তাই মেয়ে মানুষের চয়েজ মেয়ে মানুষ ভালো বুঝবে”।

—“ঠিক আছে স্বর্ণলতা।তুমি উঠে ফ্রেশ হও।”
রূপক বেড়িয়ে সোজা স্নেহার কাছে গেলো।স্নেহা কিছুতেই যাবেনা।স্নেহা সৈকত কেও নিয়ে যেতে চাচ্ছে।কিন্তু সৈকত ক্লান্ত থাকায় সৈকত নিষেধ করছে।স্নেহার জেদ। সৈকত না গেলে সে ও যাবেনা।শেষমেশ সৈকত ঠিকি রাজি হলো।
স্বর্ণলতার প্ল্যান মাঠে মারা গেলো।এতো বিরক্ত লাগছিলো। এই সুযোগে একা কথা বলার সুযোগ পেতো কিন্তু তা না হয়ে উল্টো হয়ে গেলো।

স্বর্ণলতার এখন বেশ চিন্তা হচ্ছে যদি রূপক বাইরে গিয়ে স্নেহাকে বলে স্বর্ণলতা সারপ্রাইজড দিবে তাহলে হীতে বিপরীত হবে।স্নেহা বুঝে যাবে স্বর্ণলতা কিছু একটা আন্দাজ করেছে।তখন আরও সাবধানী হয়ে যাবে।স্বর্ণলতা একটু বুদ্ধি খাটিয়ে রূপককে বললো-
—“আমারও আপনাদের সাথে খুব যেতে ইচ্ছে করছে।”

—“তো চলোনা।আপু দুলাভাই মিলে মজা হবে”।

—“জ্বী আমি চাচ্ছিলাম সেই মজা টা উপভোগ করতে কিন্তু আজকে সারাদিন কাজ করেছি তো শরীর টা একটু ক্লান্ত লাগছে।খুব যেতো মন চাচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই।আপনারা যান।”

জোরালে কন্ঠে সৈকত বললো-
—“না না স্বর্ণলতা কে ছেড়ে তাহলে যাওয়া যাবেনা।”

—“হুম দুলাভাই আমারও মত এক। ওর যেহেতু যেতে খুব ইচ্ছে করছে তাহলে ওকে ছাড়া আমরা যাবো না।আমরা বরং কাল যাই।কাল তো সবাই থাকবেই”।

স্নেহা পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষন করছিলো।এরপর স্মিত হেসে রূপককে বললো-
—“আসলে কি বলতো রূপক,আমার এবং তোর ভাইয়ার দুজনের-ই বাসায় খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে।মা এতো জোরাজোরি করেছে বলেই আসা।তাছাড়া আমি আসতাম না আজকে।আমরা ডিনার করেই বেড়িয়ে পড়বো।”

রূপকের মা বললো-
—” সে কি কথা! আমি না বলেছি তুই কিছুদিন থাকবি? এখন বলছিস একটু পর-ই চলে যাবি?”

—” মা রাগ করোনা প্লিজ।আরেকদিন এসে থাকবো।আজ না হয় যাই।কথা দিলাম আরেকদিন থাকবো।”

—“স্নেহা আজইকা থাইকা গেলে পারতা।বুবু বড় সাধ করছিলো।মার কাছে গুরত্বপূর্ণ কাজ আবার কি?”

—“না মামা খুব সমস্যা না হলে বলতাম না।এবারের মতো আমাদের দুজন কে মাফ করে দিন। নেক্সট টাইম সত্যি মিস হবেনা।”

—“কি আর করার যাও তাইলে।যাইবা যহন তহন তাড়াতাড়ি খাওয়ার কাম ডা শ্যাষ কইরা ফালাও।আমার তো বাপু হেই কহন থিকা ক্ষিধা লাগছে।আজকে যা যা রান্দন হইছে না! উফ!পুরা জইমা ক্ষীর।”

জাফরের কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।স্বর্ণলতার কৌতুহলী মনে বারবার একটা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছিলো।স্নেহা প্রেগনেন্ট হলে এ বাড়িতে কেনো থাকতে পারবেনা?সে নিজেও তো প্রেগনেন্ট।তাহলে এ বাড়িতে কি তার থাকা বিপদজনক!এ বাড়ির কে ভালো কে খারাপ!মামা,নীরব আর তার সৎ মা যে এক নায়ের মাঝি সেটা সে ভালো মতো বুঝতে পারছে।কিন্তু রূপকের মা কোন দলে?স্নেহা কোন দলে?যাকে ভাইয়ের মতো ভালোবাসে সেই-ই বা কোন দলে?এখানে কি দুটো দল?নাকি সবার দল-ই এক!শুধু দুই দলের অভিনয়ে একে অন্যে ব্যস্ত!

স্বর্ণলতা কারও থেকে কোন প্রকার ক্লু পাচ্ছেনা।যদি সে সৈকত কে একা পেতো হয়তো অনেক কিছু জানতে পারতো।এখন সেটা সম্ভব না।তাহলে তার এখন কি করা উচিত!
স্নেহা নিজের বাড়িতে ভয় পাচ্ছে।আর স্বর্ণলতা দিব্যি এ বাড়িতে আছে।তার কি জীবনের ঝুঁকি? মেহুল কে কি করলো এরা!
উফ্ এতো প্রশ্নের উত্তর কোথায় পাবে সে?গোলক ধাঁধার মধ্যে আটকে গেছে।
আর এটা শুধু ধাঁধা না সে হয়তো জীবন মরনের মাঝখানে ঝুলে আছে।
স্নেহা একটু আড়চোখে স্বর্ণলতার দিকে তাকিয়ে বললো-
—“স্বর্ণলতা! কি ভাবছো এতো?

—“না আপু কিছুনা।চলো খাবার বেড়ে দেই।”

খাবার টেবিলে সবাই মজা করে খেতে লাগলো।স্বর্ণলতার রান্নাকরা ডিমের কোরমার প্রশংসায় পন্ঞ্চমুখ সবাই।নানারকম গল্প শুরু করলো সবাই।এর মধ্যে রূপক একটা হরর গল্প বলছিলো।তার কোন এক বন্ধুর ঘটনা।জঙ্গলে ঘুরতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিলো।
জঙ্ল কথাটা শোনা মাত্রই স্বর্ণলতার মাথায় চলে আসলো
নিজের মনে মনে সে বলতে লাগলো-
—“তাহলে ঐ জঙ্গল টা কি সব কিছুর সমাধান!ওখানে গেলে কি কিছু পাবো?
মেহুল! মেহুল কে কি ওখানে লুকিয়ে রেখেছে?
ধুর কি ভাবছি এসব!এটাও কি করে হতে পারে!একটা মানুষকে জঙলে কি করে লুকিয়ে রাখবে!
তবুও তার একবার জঙলে যাওয়া উচিত।এবং সেটা আজ রাতেই।তার ঘর ফাঁকা আজকে। জঙলে গেলে অনেক কিছু হয়তো খোলাসা হবে।

চলবে………..
?️Sharmin Sumi

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here