স্বর্ণলতা part 15

0
438

#স্বর্ণলতা
পর্বঃ১৫
____________________________
পাখির কিচিরমিচির আওয়াজ জানান দিচ্ছে ভোর হয়ে গেছে।আজকে স্বর্ণলতার শরীর ভালো।পায়ের ক্ষত টাও কমে আসছে।জ্বর নেই বললেই চলে।আজকে উঠে মেহুল কে তার পাশে না পেয়ে বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো।কালকের ঘটনা সবকিছু মন কে উথাল-পাথাল করে দিচ্ছে।স্বর্ণলতা আন্দাজে বলেছিলো মেহুলের সাথে যা হয়েছে সে দেখেছে।কিন্তু সত্যতা যে এতোটা তিক্ত সেটা সে কল্পনা করতে পারেনি।
চুল গুলো দুহাত দিয়ে খোপা করে শাড়িল আচল কোমড়ে গুজে ফ্রেশ হয়ে পাকা গিন্নির মতো রান্না ঘরে চলে গেলো।
গিয়ে দেখলো নিত্যদিনের দৃশ্য।তাড়াহুড়ো করে মেহুল এটা করছে ওটা করছে।রুটি বানিয়ে রাখছে।সাথে সাথে তরকারি টা পুড়ে গেলো কিনা সেদিকেও খেয়াল আছে।অন্য চুলায় চা-এর পানি বসানো।
রূপক ঘরে বসে পত্রিকা পড়ছে।মামা পা-এর ওপর পা তুলে বাজখাঁই কন্ঠে গান গাইছে।স্বর্ণলতা বিরক্তবোধ করলো।পাশেই রূপক পত্রিকা পড়ছে এটা তো মামার চোখে পড়বে নাকি!কিন্তু রূপকের কোন ভ্রক্ষেপ নেই।মনে হচ্ছে তার অভ্যাস আছে এভাবে পত্রিকা পড়ার।

অপর রুম থেকে চিৎকার করে হাকডাক-
—“মেহুল।আমার ফোনটা ড্রইং রুমে আছে দিয়ে যা তো।নীরব বাইরে গেছে ওকে দুটা ডাব আনতে বলি।”
মেহুল কে হাতের ইশারায় স্বর্ণলতা বুঝিয়ে দিলো যে, সে ফোন নিয়ে ও ঘরে যাচ্ছে।

—“মা এই নাও ফোন।”

—“স্বর্ণলতা কেমন লাগছে শরীর?”

—“ভালো”।
স্বর্ণলতার মা আরও কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু সুযোগ দিলোনা স্বর্ণলতা।রুমের বাইরে চলে আসলো।
স্বর্ণলতার মা নীরবকে ফোন দিয়ে দেখলো নীরবের ফোন তার ঘরে রিং হচ্ছে।তার মানে সে ফোন ঘরে রেখে চলে গেছে।
একরাশ বিরক্তি নিয়ে শোভা বললো-
—“এই ছেলে ঘরে কেনো ফোন রেখে গেলো!দুটা যে ডাব আনতে বললো তার কোন জো নেই”।

স্বর্ণলতা হাঁটতে হাঁটতে থমকে গেলো।নিজের মনে মনে বলতে লাগলো-
—“নীরব বাইরে!ফোন ঘরে।তার মা তার শ্বাশুড়ির সাথে গল্পে মজেছে।মামা মনের সুখে গান গাচ্ছে।এতবড় সুযোগ মিস করে বোকা হতে চাইনা”।
পা টিপেটিপে নীরবের ঘরে গেলো।এই ঘরে তার মা আর নীরব থাকে।অন্যসময় এ ঘর খালি পাওয়া যায়না।আজকে ভাগ্যক্রমে খালি পেয়ে গেছে।
চার্জার থেকে ফোন টা খুললো।
—“আশ্চর্য! কোন রকম লক নেই ফোনে!এতো বড় বোকামি কেউ করে!কথায় আছেনা “পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে”। উক্তিটি নীরবের সাথে পারফেক্ট ম্যাচ হয়েছে।
পুরো ফোন ঘেটে সেই দুটো মেসেজ পেয়ে গেলো যেই মেসেজ গুলো নীরব রূপক কে পাঠিয়েছিলো।ডিলিট পর্যন্ত করেনি!
তার এখন মেসেজ গুলো নিয়ে কি করা উচিত!রাগে ক্ষোভে গা জ্বলে যাচ্ছে তার।একে কালকে মেহুলের ঘটনায় নীরব কে থাপ্পড়াতে মন চাচ্ছে আবার এখন এই মেসেজ প্রমান করে দিলো সে যে কতবড় অপরাধ করেছে।

শুধু তাকে মেসেজ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। নীরব আরও বিভিন্ন মেয়েকে বাজে প্রস্তাব পাঠিয়েছে।কতজন কে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা ও নিচ্ছে।কিছু মেয়ে তাকে হাতজোড় করে অনুরোধ ও করছে তবুও তার মন গলেনি।নীরবের ফোনে প্রত্যেকটা মেসেজ,স্কিনসর্ট তার কূকীর্তির চাক্ষুষ প্রমান।
স্বর্ণলতার ধৈর্যের সীমা পেড়িয়ে গেলো।

স্বর্ণলতা সোজা তার মা-এর রুমে গেলো।তার মা শুয়ে ছিলো।স্বর্ণলতা কে দেখে বিদখুটে একটা হাসি দিয়ে বললো
—”স্বর্ণলতা!হঠাৎ আমাকে তোর মনে পড়লো?শ্বশুরবাড়ি আসার পর আমাকে তো ভুলে গেছিস।তখন আসলি দুটো কথাও বললি না ভালো করে।”

—“তুমি এমন কোন ভালো কাজ আমার সাথে করো নি যে তোমাকে আমার মনে রাখতে হবে।আমার শৈশব নষ্ট করেছো এখন সংসার টাও নষ্ট করতে চাচ্ছো?”

—“কি বলিস এগুলো!আমি তোর সংসার কেনো নষ্ট করতে চাইবো?”

—“অভিনয়ে পাকা খেলোয়াড় তুমি তা তো আমি জানি।আমার সামনে মুখোশ পড়ে কোন লাভ হবেনা।মুখোশ টেনে ছিড়ে ফেলবো আজ”।

মেহুল রান্না বাদ দিয়ে ব্যস্ত পায়ে ছুটে আসলো।
—“আপামনি কি হইছে?আপনে তো এমনি অসুস্থ। এইহানে চিল্লাচিল্লি কইরেন না”।

—“এরা আমার সংসার নষ্ট করতে চায় এদের আমি ছেড়ে দিবো?”
মেহুল স্বর্ণলতার দু-চোখে আগুন দেখতে পেলো।বরফের খনির মতো শীতল দুই চোখ আর নেই।দাও দাও করে জলন্ত অগ্নিকান্ডের মতো টগবগিয়ে ফুটছে। সেই আগুনের উত্তাপ স্বর্ণলতার চোখে,মুখে সবত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে গিয়েছে।
স্বর্ণলতার এতো রাগ!….
আগে কখনো দেখেনি মেহুল।
সে একা সামলাতে পারবেনা বেশ বুঝতে পারছিলো।দৌড়ে গিয়ে রূপককে ডেকে আনলো।
—“ভাইজান! স্বর্ণ আপা যেনো কেমন করতাছে।বাইরে
আহেন”।

—“মানে?।কি হয়েছে ওর?”

—“হের সৎমা-এর লগে যেন কি হই
ছে।অনেক রাগারাগি করতাছে”।

রূপক দ্রুত পায়ে সামনে এগিয়ে এলো।স্বর্ণলতার চোখ-মুখ ক্রোধে লাল হয়ে গিয়েছে।ফর্সা গাল দুটো লাল টকটকে হয়ে গিয়েছে।আজকে কি ভয়ংকর কিছু হতে চলেছে!রূপক স্বর্ণলতার এই রূপ দেখে নিজেই বিস্মিত হয়ে গেলো।
মামা বাজখাঁই কন্ঠে গান থামিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করার চেষ্টা করছিলো অবশেষে বাইরে বেড়িয়ে এলো।স্বর্ণলতার শ্বাশুড়ি ঐ রুমে থাকার পরেও মুখ দিয়ে একটা শব্দ ও বের করলোনা।সে অবাক দৃষ্টিতে স্বর্ণলতার দিকে তাকিয়ে রইলো।শান্ত সমুদ্র গর্জনে অশান্ত হয়ে গিয়েছে। স্বর্ণলতার হুংকারে পুরো বাড়ি গরম।
অন্যসময় হলে মামা ও ধমক দিয়ে দিতো।কিন্তু আজ সে স্বর্ণলতাকে দেখে ভয় পাচ্ছে।স্বর্ণলতার কেনো এমন ব্যবহার! কেউ স্পষ্ট বুঝতে পারছেনা।
এর মাঝে স্বর্ণলতার মা-এর ফোনে একটা কল আসলো।
ফোন টা রিসিভ করতেই ওপার থেকে শোনা গেলো-
—-“মা আমি ফোনটা ভুলে রেখে এসেছি।দোকান থেকে কল করছি।তোমার জন্য কিছু আনতে হবে?আনতে হলে বলো পরে কিন্তু আমি বাইরে বের হতে পারবো না”।

স্বর্ণলতা ফোনটা কেড়ে নিয়ে নীরব কে বললো-
—“কিচ্ছু আনতে হবেনা।তুই শুধু আজকে বাসায় আয়”।

—“কে স্বর্ণলতা?
তুই আমার সাথে এভাবে কথা বলার সাহস কই পাইছোস?”

—“তুই আজকে বাসায় আয়।তোর সব বেয়াদবি,নোংরামির ফল আমি সুদে-আসলে ফেরত দিবো”।
নীরবকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই কল কেটে দিলো স্বর্ণলতা।
রূপক ভয় দূরে ঠেলে স্বর্ণলতাকে আমতা আমতা করে বললো-
—“ইয়ে,স্বর্ন!এমন করছো কেনো?কি হয়েছে আমাদের সবাই কে বলো।এতো চেচামেচি তোমার শরীরের জন্য ভালো না।তুমি প্রেগনেন্ট।তার ওপর অসুস্থ তুমি।”

—“আপনি জানেন না কি হয়েছে।তাই এতো শান্ত আছেন।জানলে আপনি ঝড় তুলে দিতেন।”

—“সেটাই তো শুনতে চাচ্ছি কি হয়েছে?”

—“নীরব আসুক তারপর আমি সবকিছু বলবো।কি হয়েছে আর কি হয়নি”।

আজকে স্বর্ণলতার ক্রোধ কে স্বর্ণলতা নিজেই সামলাতে পারছেনা।সবচেয়ে ভীতু টাইপ নম্র,কোমল মেয়েটা এতো রাগী হবে।রাগে ফুলন দেবী হয়ে যাবে তা কেউ কল্পনাতেও আনেনি।এতোদিন যার ওপর অত্যাচার করে এসেছে।যাকে দেখে স্বর্ণলতা এতোদিন ভয় পেতো সেই আজকে স্বর্ণলতা কে ভয় পাচ্ছে।

প্রায় ২০ মিনিট পর নীরব আসলো।কলিং বেলের শব্দে আৎকে উঠলো নীরবের মা।আজ কি হবে কিছুই বুঝতে পারছেনা।
দরজা খুলে দিলো মেহুল।দরজা খুলতে না খুলতেই সজোরে লাথি মেরে ভেতরে ঢুকলো নীরব।এবার মুখোমুখি দুই প্রতিপক্ষ।
—“তোর এতো বড় সাহস তুই আমাকে ফোনে হুমকি দিস।এসেছি তোর সামনে।সুদে-আসলে কি নিবি নে।”
নীরবের ফোন টা উঁচুতে ধরে বললো-
—“তোর জিভ টেনে ছিড়ে ফেলার জন্য আমার এই ফোন-ই যথেষ্ট। ”

নীরব দ্রুত গতিতে স্বর্ণলতার সামনে এগিয়ে এলো।তার হাত থেকে ফোন কেড়ে নেওয়ার প্রস্তুতি করছিলো আর বললো-
—“তোর এতো বড় সাহস তুই আমার ফোনে হাত দিয়েছিস!
এখন ফোন দে আমার।তোর হাত আমি ভেঙে গুড়িয়ে দিবো”।

—“তুই আমার হাত ভেঙে গুড়িয়ে দিবি?”
এই কথা বলা মাত্রই স্বর্ণলতা সজোরে থাপ্পড় দিলো নীরবের গালে।একসাথে কতগুলো থাপ্পড় খাওয়ার পর নীরব স্বর্ণলতাকে ধেয়ে মারতে আসলো।
রূপক এগিয়ে আসতে লাগলো নীরবকে মারার জন্য।এর আগেই স্বর্ণলতা ওর হাত মুচড়িয়ে পেছনে নিয়ে গেলো।আর নীরব ব্যাথায় কাতরাতে লাগলো।
তারপর পেছন দিকে ওকে লাথি মেরে ফ্লোরে ফেলে দিলো।নীরব মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
নীরবের মা চিৎকার করে উঠলো আর বললো-
—“আমার ছেলেকে মেরে ফেলতেছে।কেউ ওরে থামাও।”

স্বর্ণলতা ধমকের সূরে বলতে লাগলো-
—“আজ এতো মায়া লাগছে!এতোদিন অন্যের সন্তানকে মেরেছো।তার কেমন লেগেছিলো এখন বুজছো?
আম্মা এবং আপনি(রূপক) দুজনেই শুনেন।আমার বিয়ের পর যে মেসেজ গুলো আপনার এবং আম্মার ফোনে দেওয়া হতো সেগুলো মেসেজ ও দিতো।এই জানোয়ার দিতো।আমার চরিত্র নিয়ে বাজে কথা বলে সংসার নষ্ট করতে চাইতো।এবার বলুন আমি চুপ থাকবো?ও শুধু তাই করতো না ওর ফোনে এমন অসংখ্য মেসেজ আছে যেগুলোর মধ্যে মেয়েদের ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নেওয়ার প্রমান আছে।ওর ফোনে আপনাকে এবং আম্মাকে পাঠানো সকল মেসেজ আছে দেখুন।

রূপক রেগে আগুন হয়ে গেলো।রাগান্বিত হয়ে বললো-
—“এতো বড় সাহস তোকে কে দিয়েছিলো?তুই স্বর্ণলতার গায়ে হাত তুলতে এসেছিলি!তোর হাত আমি ভেঙে গুড়িয়ে দিবো।”
মামা রূপককে ঠেকিয়ে দিলো।
—“ভাগ্নে শান্ত হ।ও যা করছে শাস্তি ও পাইবো।কিন্তু ওরে মাইরা ফেললে আমরা শাস্তি পামু।
আর তোমারেও বলি, ছিঃছিঃছিঃ বোনের সংসারে আগুন লাগাইতে চাও?তোমার না বইন ও?সৎ বোইন কি বইন না?
রূপকের মা কঠিন স্বরে বললো-
—”আমার ছেলের সংসারে আগুন লাগানোর জন্য কি আপনারা মা ছেলে এসেছিলেন?আমার এতো সুন্দর বউ টা কে আমি কতকিছু বলেছি।এগুলো সব শুধু আপনাদের জন্য।
স্বর্ণলতা ফ্লোরেই ওকে আরেকটা লাথি মারলো।
—“স্বর্ণ লতা আমার পোলাডারে ছাড়।আমি এগুলা কিছু জানিনা।আমার পোলা তো খারাপ না।ক্যান এমন করছে আমি জিগাই ওরে!”
—“তোমার ছেলে খারাপ না?আমার সাথে কি করছিলো ভুলে গেছো?আর ও তো মেহুল কেও বাধ্য করেছে ওর পাপের কাজের অংশীদার হতে।মেহুল কে দিয়ে আমাকে ঘুমের ঔষধ খাওয়াতো।আর মেহুল কে রাতের আধারে সবার অগোচরে পশুর মতো ছিড়ে খেতো।ও কি একবারও ভাবলোনা যে আমি প্রেগনেন্ট।ঘুমের ঔষধ আমার বাচ্চার ওপর এফেক্ট পড়তে পারে?”

রূপক আড়চোখে মেহুলের দিকে তাকিয়ে বললো-
—“এগুলো কি সত্যি মেহুল?”
মেহুল মামার দিকে ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে রূপকের দিকে তাকিয়ে বললো-
—“হ ভাইজান সত্য!”
রূপক এগিয়ে গিয়ে নীরবকে কয়েকটা লাথি মেরে বললো —“যদি বাচ্চার কিছু হয় তোকে আমি জানে মেরে ফেলবো।”
জাফর বললো-
—“জানে মারন লাগবোনা।ঐ পোলা তুমি বাইর হও অহন।তোমার এই বাড়িতে কোন জায়গা নাই।”
—“জাফর ঠিক কথা বলেছে।আমার ছেলের বাড়িতে আপনাদের দুই মা ছেলের কোন জায়গা নেই।এই মূহুর্তে বের হয়ে যান।
নীরবের ঠোঁট বেয়ে রক্ত ঝরছে।স্বর্ণলতার হাতে সে এমন মার খাবে কে কখনো কল্পনা করেনি।তার চোখেও আগুন জ্বলছে।কিন্তু এ আগুণ শীতল আগুন।এ আগুনের উত্তাপ নেই।স্বর্ণলতার চোখের প্রখর আগুনের উত্তাপে নীরবের চোখের আগুন নিভে ছাই হয়ে উড়ে যাচ্ছে।

দুজন ঐ মূহুর্তেই সবকিছু নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
স্বর্ণলতা কে সবাই মিলে শান্ত করলো।এতো টা রেগে গিয়েছিল যে তার প্রচন্ড মাথা ব্যাথা শুরু করলো।সারাটাদিন পুরো বাড়ি নিরব ছিলো।কেউ ঠিকমতো খায়নি পর্যন্ত।স্বর্ণলতা তার অন্যায়ের প্রতিশোধ আজ নিতে পেরে মনে মনে খুব খুশি হচ্ছিলো।শুধু তার না মেহুলের অন্যায়ের ও প্রতিবাদ করেছে। খুশিতে তার চোখে পানি চলে এসেছে।আকাশের দিকে তাকিয়ে বলেছে-
—-“বাবা আমি পেরেছি বাবা।তোমার ভীতু স্বর্ণলতা আজ সাহসী হয়ে গেছে।অন্যায়ের কালো হাত গুড়িয়ে দিয়েছে আজ।তুমি আমার জন্য গর্বিত বোধ করবে না বাবা?”

দুপুর গড়িয়ে রাত হলো।সবাই সবার মতো খেয়ে শুয়ে পড়লো।স্বর্ণলতা কে সবাই স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলেও স্বর্ণতা সবাইকে সাফ না করে দিলো তাকে যাতে একা থাকতে দেওয়া হয়।
রাতে মেহুল শোয়ার জন্য এলো না।স্বর্ণলতা বাইরে বের হলো মেহুল কে খুঁজতে।

মেহুল উল্টোপাশ ঘুরে দাড়িয়ে আছে..
—“মেহুল ঘুমাবে না?বাইরে কি করছো?এদিক ঘুরো।ওমা তুমি কান্না করছো কেনো?”
—“আজকে আমার অপমানের প্রতিশোধ আমার হয়ে আপনি নিছেন।আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকমু আপনার কাছে।”
—“বোকা মেয়ে”!- মৃদুহেসে কথাটি বলেছিলো স্বর্ণলতা।
স্বর্নলতা মেহুল কে বুকে জড়িয়ে ধরে বললো-
—“এখন থেকে নিজের অন্যায়ের প্রতিবাদ নিজেই করবে।দেখবে তোমার সাথে কেউ আর অন্যায় করার সাহস দেখাবে না।চলো ঘুমাতে চলো।রাত হয়ে গেছে।”
……………………..
সকাল-৭ টা।
প্রতিদিনের মতো সকালে বিছানায় মেহুল কে দেখতে পেলোনা স্বর্ণলতা।মুচকি হেসে মনে মনে বলতে লাগলো
—“মেয়েটা সকাল সকাল রান্না ঘরে গেছে”!
চুল মুঠো করে খোঁপা করে।ফ্রেশ হয়ে সেও রান্নাঘরে চলে গেলো তাকে সাহায্য করার জন্য। ও ছাড়া আর কেউ নেই মেহুল কে সাহায্য করার।

একি! রান্নাঘর ও ফাঁকা! মেহুল রান্নাঘরে নেই।বাড়ির একটা ঘরেও মেহুল নেই!
স্বর্ণলতা জোরে জোরে মেহুল মেহুল বলে ডাকতে শুরু করলো।
নাহ্ মেহুলের কোন সাড়াশব্দ নেই!কি হলো!!
হাকডাক শুনে মামা রুম থেকে বেড়িয়ে এসে বললো-
—“মেহুল চলে গেছে”।

চলবে…………
?️Sharmin Sumi

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here