সূর্যশিশির
২৮.
নদীরপাড়ের রোড ধরে ফাইয়াজের বাইক চলছে। রূপা দূরত্ব রেখে বসেছে। দুই হাতে পিছনের সিটের শেষ অংশ ধরে রেখেছে যেন পড়ে না যায়। নদীতরঙ্গে এক আলোছায়া মায়াবী রূপ খেলা করছে — তা একাগ্রচিত্তে দেখছে সে।
ল্যাম্পপোস্টের আলোয় বাইকের আয়নায় রূপাকে নদীর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ফাইয়াজ বলল, “নদীর পাড়ে কিছুক্ষণ বসবে?”
রূপা সচকিত হয়ে বলল, “না…না স্যার।”
ফাইয়াজ বলল, “মাথায় ক্যাপটা দাও।”
রূপা নিশ্চিত হতে বলল, “আমারটা?”
“এখানে আর কার মাথায় ক্যাপ আছে?”
রূপা মাথায় ক্যাপ খুলে বলল, “নিন।”
“আমার মাথায় রাখো। চুলগুলো লম্বা হয়ে গেছে, বার বার চোখেমুখে এসে পরছে।”
রূপা আলগাভাবে ফাইয়াজের মাথায় ক্যাপ রেখে দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপ বাতাসে উড়ে যায়। রূপা চিৎকার করে, “আরে আমার ক্যাপ… ”
ফাইয়াজ দ্রুত ব্রেক কষে। বাইক থামালে রূপা দৌড়ে গিয়ে রাস্তা থেকে ক্যাপ তুলে নিয়ে আসে।
ফাইয়াজ অপ্রসন্ন হয়ে বলল, “মাথায় রাখতে মানে পরিয়ে দিতে বলেছি। আমার মাথা কি কাকের বাসা যে তোমাকে সাবধানে ডিম রাখতে বলেছি! দাও পরিয়ে দাও।”
ফাইয়াজ মাথা নত করে। সে এমনভাবে হম্বিতম্বি করে যে রূপা তৎক্ষণাৎ পরিস্থিতি বুঝে উঠতে পারে না, কী বলবে তাও গোছাতে পারে না। সে ক্যাপ পরিয়ে দিলে ফাইয়াজ বলল, “এটাকে ক্যাপ পরানো বলে? সব চুল তো কপালেই রয়ে গেছে।”
ফাইয়াজ এক হাতে সামনের চুলগুলো বিপরীত দিকে ঠেলে ক্যাপ পরল। তারপর বলল, “এটাকে বলে ক্যাপ পরানো। শিখে রাখো৷ উঠো এবার।”
কিছুক্ষণ পর তারা গন্তব্যে পৌঁছায়। সানমাদ শপিংমলে বাইক পার্ক করে ফাইয়াজ৷
রূপা প্রশ্ন করল, “আমরা এখানে কেন এসেছি?”
ফাইয়াজ বলল, “শপিংমলে মানুষ যে কাজে আসে।”
রূপা ভাবল, “এই লোক কী সোজা কথা বলতে পারে না, আশ্চর্য!”
মুখে বলল, “আমিতো কেনাকাটা করব না।”
ফাইয়াজ প্রত্যুত্তরে কিছু না বলে রূপার হাতে ধরে সামনের দিকে অগ্রসর হয়৷
শপিংমলের দ্বিতীয় তলায় এসে উত্তর দিলো, “আমার বান্ধবীর জন্য কেনাকাটা করব। বিচ্ছেদও এক ধরনের উৎসব। আর উৎসব উপহার দিয়ে উদযাপন করতে হয়।”
রূপার কপালে ভাঁজ সৃষ্টি হলো, থমকে দাঁড়াল।
বলে কী এই লোক! বান্ধবী কি প্রেমিকাকে বলছে? বিচ্ছেদের কথা কেন বলল? বিয়ে ঠিক হয়েছে বলে প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদ টানবে?
ফাইয়াজ পিছনে ফিরে বলল, “কী ব্যাপার? থামলে কেন?”
রূপা কিছু বলল না। সে মোটেও ঈর্ষান্বিত নয়৷ শুধু অবাক হয়েছে এটা ভেবে, ফাইয়াজের প্রেমিকা আছে আর সে উপহার দিয়ে বিচ্ছেদের স্বাদ নিতে চাইছে৷ আজগুবি কাণ্ড!
ফাইয়াজ রূপাকে নিয়ে প্রথমে একটি শাড়ির শপে ঢুকল। রূপার পছন্দমতো সেখান থেকে দুটো শাড়ি নিলো। রূপা শপে প্রবেশ করে দ্বিধায় পড়ে গিয়েছিল, কী পছন্দ করবে! সে তো জীবনেও শাড়ি পছন্দ করতে শপিংমলে আসেনি। অরুনিকার সঙ্গে এসেছিল। তবে তখন শাড়ি অরুনিকাই পছন্দ করত নিজের জন্য, রূপা শুধু পাশে বডিগার্ড হয়ে দাঁড়িয়ে থাকত। ফাইয়াজের জোরাজুরিতে দুটো শাড়ি বাছাই করেছে সে। এতো দামী শাড়ি যার সাথে বিচ্ছেদ হবে তাকে দেবে ভেবে রূপার জ্বর জ্বর অনুভূত হচ্ছে৷
তারপর তারা ঢুকল জুয়েলারি দোকানে। সেখানে ফাইয়াজ নিজে পছন্দ করল এক সেট গহনা। স্বর্ণের মতো জ্বলজ্বল করা সিম্পল গহনাটি অসম্ভব সুন্দর। প্রথমবারের মতো রূপার কোনো গহনা ভালো লেগেছে৷ সে বলেই ফেলল, “এটা ভীষণ সুন্দর।”
ফাইয়াজ বলল, “পরে দেখবে?”
রূপা থতমত খেয়ে গেল, “আমি? না।”
সে লজ্জা পেয়েছে।
ফাইয়াজ একজন কর্মচারীকে ডেকে বলে রূপাকে গহনাটি পরিয়ে দিতে। রূপা প্রতিবাদ করে বলল, “না স্যার। আমি তো এমনি বলেছি।”
ফাইয়াজ বলল, “পরলে মেয়ে মানুষকে কেমন লাগে দেখে নিয়ে যাই। আপু, আপনি পরিয়ে দিন।”
মেয়েটি রূপাকে বলল, “আপু, শার্টের বোতাম খুলুন৷ প্রথম দুটো।”
শপের সবাই উৎসুক হয়ে তাকিয়ে আছে৷ রূপা ফাইয়াজকে এক পলক দেখলে, ফাইয়াজ ইশারা করে যা বলেছে শুনতে৷ রূপা অনুগতের মতো শার্টের দুটো বোতাম খুলল।
মেয়েটি রূপার গলায় হারটি পরিয়ে দেয়। কানে দুল পরাতে গিয়ে দেখে ছিদ্র নেই!
রূপা হালকা হেসে বলল, “কান ফোঁড়ানো হয়নি।”
মেয়েটি বলল, “যদি ইমার্জেন্সি হয় তাহলে হারটি পরে চুল খোলা রাখতে পারেন৷ দুল ছাড়াই ভালো লাগবে।”
রূপা কিছু বলার আগে পিছন থেকে ফাইয়াজ বলল, “চুল খুলে দেখিয়ে দিন।”
মেয়েটি চুল খুলতে গেলে রূপা ফাইয়াজের দিকে তাকিয়ে বলল, “স্যার — ”
“এতো কথা বলো কেন তুমি? যা বলছে শুনো।”
মেয়েটি রূপার চুল খুলে হেয়ার ব্যান্ড পাশে রাখে৷ সোজা চুল পিঠময় ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু শার্টের জন্য গহনাতে মোটেও ভালো লাগছে না। তবুও মেয়েটি বলল, “এবার ভালো লাগছে।”
রূপা আয়নায় তাকিয়ে বিরক্তিতে কপাল কুঞ্চন করল৷ খুব বিশ্রী দেখাচ্ছে। পরনেও একটা পুরনো শার্ট!
ফাইয়াজ সবার অগোচরে রূপার হেয়ার ব্যান্ডটি লুকিয়ে ফেলে; যেন রূপা চুল বাঁধতে না পারে।
গহনা প্যাকিং করার পর রূপা আর মেয়েটি এদিক-ওদিক খুঁজেও ব্যান্ডের হদিশ পায় না৷ মেয়েটি নিজের ব্যান্ড দিতে চাইলে ফাইয়াজ রূপার হাতে ধরে ভারিক্কি গলায় বলল, “সামান্য ব্যান্ডই তো। এর জন্য জরিমানা দিতে হবে না।”
বাহিরে এসে রূপা চুল হাত খোঁপা করে নেয়৷ ফাইয়াজ রূপার পায়ের মাপে দুই জোড়া কেডস ক্রয় করে।
রূপা যখন প্রশ্ন করে, “আমার পায়ের মাপে কেন নিচ্ছেন?”
তখন ফাইয়াজ বলল, “তোমার পায়ের মতোই ওর পা।”
ফেরার পথে হুট করেই সোনালি পাড়ের একটি লাল সুতি শাড়ি ফাইয়াজের খুব চোখে লাগে৷ অদ্ভুতভাবে রূপারও শাড়িটি খুব পছন্দ হয়। কী স্নিগ্ধ! নতুন বউদের কী যে ভালো লাগবে!
ফাইয়াজ এই শাড়িটিও সংগ্রহে নিলো। শাড়িটির ব্লাউজ পিস না থাকায় সে ব্লাউজের দোকানে রূপাকে নিয়ে ঢুকে৷ সুতোর কাজ করা একটি লাল ব্লাউজ রূপার পছন্দ হয়। ফাইয়াজকে ডেকে বলল, “স্যার, এটা ভালো। নিতে পারেন।”
ফাইয়াজ ব্লাউজটি দিতে বললে শপের মালিক বলল, “ম্যামের সাইজ?”
ফাইয়াজ সঙ্গে সঙ্গে বলল, “ছত্রিশ।”
রূপা ঠোঁট উল্টে ভাবে, “প্রেমিকার সাইজও জানে!”
কেনাকাটার সমাপ্তি টেনে রূপার হাতে সব ব্যাগ দিয়ে ফাইয়াজ বাইকে উঠে বসে৷ রূপা পিছনে বসে দুজনের মাঝে ব্যাগগুলো রাখল।
রাত বাজে বারোটা। দ্রুতই তাদের কেনাকাটা হয়েছে। এই কেনাকাটাগুলো অরুনিকাকে নিয়ে করলে হাঁটতে হাঁটতে জান বেরিয়ে যেত।
রাতের বাতাস বইছে৷ এখন যে গভীর রাত, চারপাশ দেখে বোঝার জোঁ নেই৷ একদিন পর রোজা তাই মানুষের সমাগম আগের থেকেও বেশি।
বাতাসের সাঁ সাঁ ধ্বনি কানে লাগছে। রূপাকে দুই হাতে ব্যাগগুলো ধরে রাখতে হচ্ছে, তাই খোঁপা খুলে গেলেও আর হাত খোঁপা করা সম্ভব হয় না৷ তীব্র বাতাসে লম্বা চুল উড়তে থাকে ঝড়ের মতো। বিপরীত দিক থেকে বাতাস আসলে সব চুল ফাইয়াজের পিঠ, ঘাড়, চোখমুখ স্পর্শ করে৷ রূপা কিছু দেখতে পাচ্ছে না৷ সে বাইক থামাতে বলল, “স্যার, একটু থামুন। চুল ঠিক করব৷ কিছু দেখছি না।”
ফাইয়াজ অবহেলার সুরে বলল, “রাত হয়ে গেছে৷ এখন থামানো যাবে না৷ চুপচাপ বসে থাকো।”
রূপার মনে হচ্ছে সে এখুনি মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে। সে মাথা ঝাঁকায় চুল ঠিক করতে। ফাইয়াজ বাইকের গতি বাড়ায়৷ বেড়ে যায় বাতাসের বেগও। চুল উন্মত্ত হয়ে উড়ছে৷ রূপা প্রাণের ভয়ে বাধ্য হয়ে এক হাতে ফাইয়াজের পেট আঁকড়ে ধরে। তাৎক্ষণিক একটা তীব্র সূচালো অস্বস্তি তার সারা শরীরে জাঁকিয়ে বসে৷
গলিতে এসে বাইকের গতি হ্রাস পায়। রূপার চুল স্থির হয়৷ সে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে। ফাইয়াজকে ছেড়ে দেয়৷ বাড়ির সামনে এসে থামল বাইক৷ রূপা নেমে ব্যাগগুলো বাড়িয়ে দিলে ফাইয়াজ তাকে অবাক করে দিয়ে বলল, “আমার কোনো বান্ধবী নেই৷ এগুলো তোমার। আগামীকাল পরো।”
কথা শেষ করেই ফাইয়াজ নিজের বাড়িতে প্রবেশ করে, গেইট বন্ধ করে দেয়৷ তার দৃষ্টি অস্থির। বুকের ভেতর কীসের যেন উগ্রতা, ছোটাছুটি! রূপার স্পর্শ জাদুর মতো তার অস্তিত্বকে ছুঁয়ে দিয়েছে। ফাইয়াজ ড্রয়িংরুমে প্রবেশ করে দেখে জেসমিন ইশতেহারকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে৷
জেসমিন ফাইয়াজকে দেখে প্রশ্ন করলেন, “কেনাকাটা করতে যাসনি? হাতে কিছু নেই কেন?”
ফাইয়াজ কোনো জবাব না দিয়ে রুমে চলে গেল।
ইশতেহার বললেন, “ওর আবার কী হলো। যাও গিয়ে দেখো।”
জেসমিন গ্লাসে পানি ঢেলে দিয়ে ফাইয়াজের রুমে গিয়ে দেখেন, ফাইয়াজ সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে৷ বাতি জ্বালায়নি। লঘু হলুদ আলোয় রুম তলিয়ে আছে। জেসমিন তার সামনে গিয়ে বললেন, “কী হয়েছে? তোকে না বললাম রূপার জন্য কেনাকাটা করতে।”
ফাইয়াজ জেসমিনকে টেনে পাশে বসায়। তার কোলে মাথা রেখে বলে, “করেছি।”
“ব্যাগপত্র কোথায়?”
“রূপার কাছে?”
“কখন দিলি?”
“আমরা একসঙ্গে সানমাদে গিয়েছিলাম।”
জেসমিন চমৎকৃত হয়ে বললেন, “রূপা গিয়েছিল!”
রূপা সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে কী যেন ভেবে আবার নিচে নেমে আসল। ধীর পায়ে সুমনার রুমে গিয়ে দেখল, সুমনা শুয়ে পড়েছেন। বারেক এখনো আসেনি। রূপা ডাকল, “আম্মা?”
সুমনা মাথা তুলে তাকালেন। রূপা শপিং ব্যাগগুলো আশিক-আরমানের পড়ার টেবিলের উপর রেখে বলল, “ওই বাড়ি থেকে পাঠিয়েছে।”
অন্যবেলা হলে পাত্রের বাড়ি থেকে কী কী দিয়েছে তা আগ্রহ নিয়ে দেখতেন সুমনা। হয়তো রুমির জন্য রেখেও দিতেন৷ কিন্তু এখন আর দেয়ার মতো কেউ নেই, মনেও কোনো আগ্রহ নেই৷
তিনি আবার শুয়ে পড়লেন। বললেন, “নিজের রুমে নিয়ে রেখে দে।”
রূপা ঠায় দাঁড়িয়ে রইল। কিছুক্ষণ পর ধীরে ধীরে সুমনার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল। সুমনা কিছু বললেন না। রূপা আচমকা সুমনাকে জড়িয়ে ধরে বলল, “আমি কী করেছি আম্মা? আমার প্রতি কেন তোমার এতো অবহেলা?”
বলতে বলতে তার দুই চোখ ভিজে উঠে। সুমনা কিছু বললেন না। রূপা আবার বলল, “আমাকে কেন ভালোবাসো না? আমি কি তোমার মেয়ে না?”
সুমনা কঠিন সুরে বললেন, “না, তুই আমার মেয়ে না।”
“আমিতো তোমারই মেয়ে৷ কেন এভাবে বলছো? আমার কি কষ্ট হয় না? তোমার ব্যবহার আমাকে ভেঙে দেয়। আমার উঠে দাঁড়াতে খুব কষ্ট হয়।”
সুমনা রূপার থেকে ছোটার চেষ্টা করেন। রূপা জাপটে ধরে রেখেছে। জন্মদাত্রীর অবহেলা আর সহ্য হচ্ছে না। এই দিনগুলোতে মায়েদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি থাকে৷ আর তার মা নিশ্চল, নিশ্চুপ!
সুমনা তেঁতে উঠলেন, “রূপা, ছাড় আমাকে। এসব জড়াজড়ি ভালো লাগছে না। ছাড় বলছি।”
রূপা তাও ছাড়ল না। সুমনার পিঠে মুখ লুকিয়ে চাপাস্বরে কাঁদতে থাকল। সুমনা নড়াচড়া বন্ধ করে দিলেন৷ রূপা ভেজা কণ্ঠে বলল, “ও আম্মা, বলো না, কী করলে আমার প্রতি তোমার যে রাগ সেটা চলে যাবে। আমি তাই করব। আমি কি ভুল করেছি একবার বলো, শুধরে নেব।”
রুমি চলে যাওয়ার পর যে কান্না সুমনা চেপে রেখেছিলেন, রূপার জোর করে ভালোবাসা নেয়ার চেষ্টায় সেটি বেরিয়ে আসে। তিনি হুহু করে কেঁদে উঠলেন। রূপা আরো শক্ত করে সুমনাকে জড়িয়ে ধরল। সুমনা রূপার দিকে ফিরে তাকে দুই হাতে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে বললেন, “তুই কখনো কোনো ভুল করিসনি, কক্ষনো না। তুই আমার সোনার টুকরো মেয়ে।”
ইশতেহারের বুকে তেল মালিশ করে দিতে দিতে জেসমিন বললেন, “শুনছো?
ইশতেহার চোখ খুলে বললেন, “বলো।”
“ফাইয়াজ, রূপার কাবিনটা আগে করে ফেললে কেমন হয়? রূপার বাবা যখন চাইছে, অনুষ্ঠান করতে পরে করুক। শরীয়া মোতাবেক বিয়েটা পরিয়ে দেই।”
“কাবিন করিয়ে তো বাড়িতে আনতে পারবে না।”
“সে তো জানি। তবুও একটা শক্ত খুঁটি হলো। ওরা দুজন একসঙ্গে কেনাকাটা করতে গিয়েছিল। ফেরার পর থেকে কেমন ঝিমিয়ে আছে ফাইয়াজ৷ তুমিতো জানো, অনেক খুশি হলে এরকম করে ও। বিয়েটা হলে অধিকারবোধটা থাকত। আমার মন বার বার বলছে, এই মুহূর্তে বিয়েটা হলে ফাইয়াজ অনেক খুশি হবে।”
“আমি আগামীকাল চাচাকে বলব। এখন ঘুমাও।”
জেসমিন তেলের বোতল রেখে ইশতেহারের বাহুতে মাথা রেখে বললেন, “রূপাকে তোমার কেমন লাগে?”
“ওর চোখে আগুন আছে।”
“কীরকম?”
“বুঝাতে পারব না৷ অন্য সব মেয়ে থেকে আলাদা। ছেলেদের জামাকাপড় পরলেও, উগ্র বা উশৃংখল নয়। নৈতিকতা আছে৷ কী যেন একটা সম্মোহনী ছাপ আছে! ধরতে পারছি না।”
চলবে…