সুপ্ত বাসনা পর্ব ১

0
2557

উলঙ্গ অবস্থায় ছেলেটা নেমে এলো মেয়েটির শরীরের ওপর থেকে,ড্রয়ার থেকে টাকার বান্ডিল এনে মেয়েটির মুখের ওপরে ছুড়ে মারতেই পেছন থেকে কেউ একজন কাঁপা কাঁপা গলায় বলে ওঠে,
– “স্যার! আপনার মিটিংয়ে সময় হয়ে গেছে।” ইমান ইফরাদ খান পিছনে ফিরে মৃদু হেসে বলে,
– “আই নো,সে খেয়াল আমার আছে।কিন্তু তুমি এতো লজ্জা পাও কেন ব্রো? মাঝেমধ্যে আমার মেয়ে বলে মনে হয় তোমাকে।তোমার হাবভাব একদম মেয়েদের মতো।
আর হ্যাঁ,তুমি মেয়েদের মতোই লজ্জা পাও আমাকে নগ্ন অবস্থায় দেখে।মাঝেমধ্যে মনে হয় তুমি মেয়ে হলেই ভালো হতো ‘মিহ’ তাহলে আমি যেতাম না অন্যকারো কাছে,তোমাকেই নিজের ঘরে শোপিসের মতো সাজিয়ে রাখতাম এবং সহবাস করতাম তোমার সাথে।মিম এবার গলা খাকড়ি দিয়ে পুরুষ কণ্ঠে ইমান’কে বলে,
– ” স্যার! আপনার কি মেশিনে সমস্যা আছে? ‘গে’ টাইপ কথাবার্তা বলছেন কেন? ইলহান সাহেব অর্থাৎ আপনার বাবা আপনার জন্য খাবার নিয়ে টেবিলে বসে আছে।” ইমান হাসতে হাসতে গিয়ে বাথরুমে ঢুকে মিম’কে ডেকে বলে,
– “মিহ, আমার চেইঞ্জ গুলো দিয়ে যাও এদিকে।” মিম ইমানের শার্ট,প্যান্ট,কোট,টাই নিয়ে দরজার সামনে দাঁড়াতেই ইমান টাওয়াল গায়ে জড়িয়ে বেড়িয়ে আসে বাথরুম থেকে।তারপর হাসিমুখে মিমের হাত থেকে জিনিস গুলো নিয়ে বাঁকা ঠোঁটের হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করে,
– “তোমার কোনো গার্লফ্রেন্ড আছে?” মিম মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিতেই ইমান ঠোঁট কামড়ে ধরে জিজ্ঞেস করে,
– “কখনো কি সেক্স করেছ তার সাথে?” মিম চিবিয়ে চিবিয়ে ইমামের প্রশ্নের উত্তরে বিড়বিড় করে বলে,
– “স্যার,আমি না ‘গে’ নই; যে মেয়ে হয়ে শুয়ে পরবো আরেকটা মেয়ের সাথে।উফফ,খুব ভয় করছে এই….লোকটা যদি কোনো ভাবে আমার আসল পরিচয় জেনে যায় তখন কি হবে?” ইমান তখন হঠাৎ মিম’কে ধাক্কা মেরে আবারও জিজ্ঞেস করে,
– “কি হলো বলো? কখনো সেক্স করেছ তার সাথে?” মিম জাগতিক সব চিন্তা বাদ দিয়ে মিনমিনে বলে,
– “না স্যার,ওই…আসলে আমার মেশিনে প্রবলেম আছে।” ইমান মিনিট খানেক মিমের দিকে তাকিয়ে থাকে।মিম মনেমনে বলে,
– “হে আল্লাহ! কেন যে রাজি হয়েছিলাম মামার প্রস্তাবে? তার এই….নষ্ট ছেলের জন্য না চাইতেও নোংরা নোংরা কথা বলতে বলতে হচ্ছে আমাকে।” হঠাৎ ইমান গম্ভীর হয়ে জিজ্ঞেস করে,
– “কনসাল্ট করেছিলে ভালো কোনো ডাক্তারের সাথে?” মিম অতিরিক্ত দুঃশ্চিতা করতে করতে দাঁত দিয়ে নক কাটতে কাটতে বলে,
– “হুমম,আমার মেশিন আর কখনো ঠিক হবে না স্যার! ডক্টর বলে দিয়েছে।” ইমান এবার সামনে রাখা সেন্টার টেবিলে লাথি মেরে মিম’কে জিজ্ঞেস করে,
– “তাহলে তোমার গার্লফ্রেন্ড তোমার সাথে এখনো কি করতে আছে?” মিম এবার বিরক্ত হওয়ার চরম পর্যায়ে পৌঁছে ইমান’কে বলে,
– “স্যার,ও না ট্রু লাভ করে আমাকে।ওই…আসলে ওর মেশিনেও একটু সমস্যা,যাগগে নিচে চলুন ইলহান স্যার আপনার জন্য বসে আছে।” ইলহান সাহেব বিরক্ত তার ছেলের এই রোজকার ড্রামা দেখে,বুঝতে পারছেননা কি করে পরিস্থিতি সামাল দেবে তার মধ্যে হঠাৎ মিম’কে দেখেই তার ঠোঁটের কোণে আশার আলো জেগে ওঠে।মিম নিজের হাতে খাবার সার্ফ করে দিচ্ছে দু’জনার প্লেটে।ইলহান খান সাহেব দাঁতে দাঁত চেপে ছেলে’কে জিজ্ঞেস করে,
– “আবার কোন মেয়ে এসেছিল এই…বাড়িতে?” ইমান হাসতে হাসতে বলল,
– “কোই? কেউ না তো ড্যাড! তুমি জিজ্ঞেস করো ওর কাছে।আমি নিশ্চিত ‘মিহ’ অন্তত বানিয়ে বানিয়ে কোনো মিথ্যে বলবে না তোমাকে।” ছেলের মুখে মিথ্যে কথা শুনে ইলহান সাহেব রেগে যায় সাথে সাথে।ইমান পুরো বিষয় টা অস্বীকার করতেই ইলহান সাহেব উঠে দাঁড়িয়ে ঠাস করে দু’টো চড় মারে নিজের একমাত্র আদুরে ছেলেটা’কে।ইমান চোখের জল মুছতে মুছতে বেরিয়ে যায় বাড়ি থেকে মিম ওর পিছুপিছু যেতে নিতেই ইলহান সাহেব ভাগ্নী’কে উদ্দেশ্য করে বলে,
– “মা! একটু দেখে রাখিস আমার এই…গাধা ছেলে টাকে।জানি তুই নিজেও ওর কাছে নিরাপদ না,তবুও জেনে-বুঝেই বিপদে ফেলে দিলাম তোকে।” মিম পিছনে ফিরে ছুটে এসে ইলহান সাহেব’কে জড়িয়ে ধরে বলে,
– “তুমি চিন্তা করো না মামা! আমি ঠিক দেখে রাখবো তোমার ওই…. গাধা ছেলে টাকে,আপাতত আমি গিয়ে তোমার ওই…গাধা ছেলে’কে সামলাই? তুমি গিয়ে সামলাও আমার মামণি’কে,নাহলে এই….মা ছেলের মধ্যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ফিক্সড।তখন যে কি হবে?” ইলহান সাহেব আদুরে ভাগ্নী’র কথায় উচ্চ শব্দে হাসে।ইমান বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে এসে হুইস্কির বোতল হাতে গাড়ির বোনাটের ওপরে চেপে বসে।দূর থেকে মিম’কে আসতে দেখে কতক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে থেকে ওকে উদ্দেশ্য করে বলে,
– “মিহ! তুমি কি পারো না ছেলে থেকে মেয়েতে রুপান্তরিত হতে? না মানে আমি তাহলে তোমার সাথে একটু মস্তি করতাম,আমার খুব ভালো লাগে তোমাকে।” মিম লজ্জা পেয়ে উঠে দৌড় যেতে যেতে ইমান’কে বলে,
– “স্যার! আমার কিছু কাজ আছে।” ইমান হাসতে হাসতে হুইস্কির বোতল টা সাইডে রেখে বলে,
– “এটা কি ছেলে না মেয়ে মাঝেমধ্যেই দ্বিধায় ফেলে দেয় আমাকে,কি লজ্জা কি লজ্জা তার? পুরুষ মানুষের এতো লজ্জা দিয়ে কি হবে? আরে কেউ ওকে ধরে বুঝাও ‘লজ্জা নারীর ভূষণ,পুরুষের না ওকে?’ পুরুষ মানুষের এতো লজ্জা দিয়ে কি কাজ? আমাদের জন্য নির্লজ্জ টাই ঠিক আছে,কিন্তু এই….মেয়ে থুক্কু ছেলে আমাকে সব ভাবে দেখেই লজ্জা পাবে।আরে কি যে অবস্থা ওর? কেউ ধরে বুঝাও ওকে,ছ’মাস ধরে আমার কাছে চাকরি করছে অথচ আমি বিমোহিত,চমকিত আর পুলকিত এর লজ্জা পাওয়া দেখে,
আরে ভাই এতোই সমস্যা যখন তোর,তখন রুপান্তরিত হয়ে যা না মেয়েতে বেশি দিন নাই তোর চক্করে লোকে ‘গে’ বলে জানবে আমাকে।ড্যাডের ওপরে রাগ করবো কি? আমার হাসি পেয়ে যায় এই… ছেলের স্বভাব চরিত্র দেখে।” অতঃপর ইমান হুইস্কির বোতল টা মুখের কাছে আনতেই মিম সেটা কেড়ে নিয়ে ইমান’কে শাসনের ভঙ্গিতে বলে,
– “স্যার! আপনা’কে না আমি বারণ করেছ এসব ছাইপাঁশ খেতে?” ইমান মিটিমিটি হেসে দু’হাত কোমরে বেঁধে মিম’কে বলে,
– “তুমি আগে ‘সেক্সি শিলা’ হয়ে যাও,তারপর না হয় আমি ভালো ছেলে হয়ে যাবো মন থেকে।খোদার কসম,আমি শুধু তোমার সাথেই সব করবো নিত্য নতুন মেয়ে খুঁজে এনে দিতে হবে না আমাকে।” মিম হঠাৎ ইমানের মুখে গ্রাস তুলে দিয়ে বলে,
– “দেখুন স্যার,একদম বাজে বকবক করবেননা আমার কানের কাছে,জানেন আপনার বাবা-মা কত কষ্ট পায় আপনা’কে এভাবে দেখে?” ইমান মিমের কোলের ওপরে ওপরে শুয়ে পরে বলে,
– “জানো? আমার ছোটো বেলা টাই খুব সুন্দর ছিলো মিহ,আমি এমন ছিলাম না আগে একটা বাচ্চা মেয়ে ছিল ও না সারাক্ষণ জ্বালিয়ে মারতো আমাকে……তারপর ইমান থেমে যায় আর মিম লজ্জা পায় সেই বাচ্চা মেয়েটির কথা ভেবে।ইমান সেটা খেয়াল করে মৃদু হেসে বলে,
– ” কি হলো মিহ? তুমি আবার লজ্জা পাচ্ছ কি ভেবে? গার্লফ্রেন্ড’কে কি করে সুখী করবে? চিন্তা করো না আমি তোমাকে নিয়ে যাবো অনেক ভালো ডাক্তারের কাছে।” ইমানের এই…কথা শুনে মিম তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে ভেতর থেকে,ওর এখন খুব ইচ্ছে করছে এই…বদ ছেলে টাকে ঠেলে নিচে ফেলে দিতে,নেহাৎ সে ইখতিয়ার ওর নেই তাই দাঁতে দাঁত চেপে বসে আছে,নাহলে সে ও যে ইমান’কে এক হাত দেখে নিতো এ ইচ্ছে তার মনের মধ্যে বহুকাল ধরেই পোষণ করা আছে।

#লেখিকা_সুরিয়া_মিম
#সুপ্ত_বাসনা
পর্ব- ১

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here