#সম্পর্কের_বন্ধন
#লেখিকাঃজিন্নাত_চৌধুরী_হাবিবা
#পর্ব_১৯
তুহার ঠোঁটের বক্র হাসি দেখে তৃষা হাত ছাড়ানোর জন্য ছটপট করে উঠলো।
তুহাকে দুহাতে ধাক্কা দেওয়ার সাথে সাথেই তুহা সিটকে নিচে পড়ে গেলো। তৃষা দেরি না করেই পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলো।
দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে কিছুদূর গিয়ে শামিমকে কল দিলো। শুধু এতটুকুই বলল,’ আমি বি’প’দে আছি। হেল্প করো আমায়। আমি অফিস থেকে বেরিয়েছি।
“আমি কাছাকাছি আছি। তোমার অফিসের দিকেই আসছি। তুমি একটু নিজেকে সেইভ করো। কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি আসছি।”বলেই শামিম লাইন কে’টে দিলো।
পেছনে তাকিয়ে বেশ দূরত্বে ইভান আর তুহাকে দেখা যাচ্ছে। তৃষা নিজেকে আড়াল করার জন্য একটা বিল্ডিং এর পেছনে লুকিয়ে পড়ে।
ফ্লোরে সিটকে পড়ায় তুহা হাতে বেশ খানিকটা ব্যথা পেয়েছে। ইভান এসে তুহাকে তুলতেই তুহা জানালো,’তৃষা পালিয়ে গেছে।’
দুজনে মিলে বেরিয়ে পড়ে তৃষাকে খুঁজতে।
এতক্ষণ তৃষার হালকা অবয়ব দেখা গেলেও এখন আশেপাশে কোথাও তৃষাকে দেখা যাচ্ছে না।
ইভান, তুহা দুজনেই দাঁড়িয়ে গেলো। আশেপাশে চোখ বুলিয়ে তৃষাকে খোঁজার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়ে গেলো।
পুলিশের গাড়ির শব্দ কানে যেতেই তৃষা চমকে উঠে। গলা শুকিয়ে কাঠ। ঠোঁট জোড়ার পানি শুকিয়ে চামড়া ভারী হয়ে আছে। পুলিশের হাতে ধরা পড়লে কয়েক বছরের জেল হয়ে যাবে। মনে মনে খুব করে শামিমকে চাইছে। এই মুহূর্তে শামিমকে সবচেয়ে আপন মনে হচ্ছে তৃষার।
পুলিশের গাড়ি অফিসের দিকে যাওয়ার আগেই ইভান তাদেরকে থামিয়ে দিয়ে জানালো তৃষা পালিয়েছে।
তারা আশেপাশে ফোর্স লাগিয়ে দিয়েছে তৃষাকে খোঁজার জন্য। পুলিশের গাড়ির পর আরও একটি গাড়ির আওয়াজ শোনা গেলো।
কেউ সেদিকে পাত্তা দিলোনা।
শামিম গাড়ির ভেতর থেকে তৃষাকে ফোন লাগিয়ে জিজ্ঞেস করলো,’ কোথায় আছো তুমি?’
এখানে ইভান তুহাকে পুলিশের সাথে দেখা যাচ্ছে। তুমি কোথায়?
তৃষা ফিসফিসিয়ে বলল,’ আমি তাদের চেয়ে প্রায় ত্রিশ গজ দূরে যে বিল্ডিং আছে তার পেছন দিকে।
শামিম গাড়ি টেনে সেদিকে গিয়ে ফোন কানে রেখেই বলল,’ বেরিয়ে আসো।’
পুলিশ তীক্ষ্ণ চোখে গাড়িটি পরখ করে সেদিকে এগিয়ে যেতেই দেখলো একটি মেয়ে বিল্ডিং এর পেছন দিক থেকে বেরিয়ে আসছে।
পুলিশ ইভানের দিকে তাকিয়ে ইশারা করলো,’এটাই তৃষা কিনা?’
ইভানের সম্মতি পেয়ে কাছাকাছি যাওয়ার আগেই তৃষা শামিমের গাড়িতে উঠে পড়ে। শামিম দ্রুত ড্রাইভ করে গাড়ি নিয়ে ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে যায়। পুলিশ পেছনে গাড়ি নিয়ে ছুটে।
কিছু পথ অতিক্রম করার পর চারটা গলি একসাথে মিলিত হয়েছে এমন একটা রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে শামিম।
পুলিশ সেই পথে না গিয়ে অন্য পথ ধরে গাড়ি নিয়ে যায়। যেনো শামিমের গাড়ি সামনে থেকে আটকাতে পারে।
পেছন থেকে পুলিশের গাড়ি না দেখে তৃষা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। সিটে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো।
শামিম একবার তৃষাকে পরখ করে আবারও গাড়ি চালানোতে মনযোগ দেয়। পুলিশ যে অন্য রাস্তায় গিয়ে তাড়া করবেনা এটা ভাবাটা বোকামি।
আজ একবার দেশ ছাড়তে পারলেই হলো।
তৃষা চোখ খুলে সোজা হয়ে বসে। মৃদুস্বরে বলল,’ থ্যাংকস শামিম।’
শামিম ক্ষীণ হেসে বলল,’ ভালোবাসি।’
তৃষাও হাসলো। চাপাস্বরে সেও বলল,’ ভালোবাসি।’ তৃষা জানেনা সে সত্যিই কখনে শামিমকে ভালোবাসতে পেরেছে কিনা? কিন্তু আজ কেনো জানিনা শামিমকে ভালোবাসি বলতে ইচ্ছে হলো। তাই আর দেরি করলো না। অবশ্য তার মন যা চায় সে সেটাই করে। তবে আজ কেনো মনের বিরুদ্ধে যাবে?
শামিম দুর্বোধ্য হাসলো তৃষার মি’থ্যে ভালোবাসি শুনে।
হঠাৎ গাড়ির সামনে কিছু একটার উপর নজর যেতেই তৃষা হাত বাড়িয়ে সেটা হাতে নেয়। খুলে নিজের পাসপোর্ট দেখে অবাক হয়। বিষ্মিত নজরে শামিমের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,’ আমিতো পাসপোর্ট তৈরি করিনি। তবে এটা আসলো কোথা থেকে?’
শামিম ঠোঁট কামড়ে হাসলো। একহাতে থুতনি চুলকে বলল,’ আমি তৈরি করেছি। কারণ আজ আমরা দেশ ছেড়ে যাচ্ছি। সব ব্যবস্থা আমি আগে থেকেই করে রেখেছি।
ভেবেছি আজ তোমাকে নিয়ে চলে যাবো দেশের বাইরে। হয়তো তোমাকে অফিস থেকে বের করে আনতে আমার কাঠখড় পোহাতে হতো। কিন্তু এখন দেখছি তুমি নিজেই আমাকে কল করে বললে তোমার হেল্প লাগবে। আমার কাজটা সহজ হয়ে গেলো। তোমার কাছ থেকে আর লুকিয়ে লাভ নেই। আমরা আর দেশে ফিরবোনা।
তৃষা বিস্ফোরিত নেত্রে তাকালো শামিমের অভিমুখে। স্তব্ধ,হতবিহ্বল তার চাহনি। কি হতে যাচ্ছে এটা মস্তিষ্কে খেলে যেতেই তৃষা চিৎ’কার করে বলল,’ আমি যাবো না তোমার সাথে। কি ভেবেছো তুমি? তুমি চাইলেই আমাকে নিয়ে যেতে পারবে? সব কিছু এত সহজভাবে নিও না।’
শামিম নির্বিকার ভাবে হাসলো। রা করলো না।
তৃষা খনে খনে অশান্ত হয়ে উঠছে। শামিমকে যেভাবেই হোক থামাতে হবে। নয়তো শামিম সাথে করে তাকে নিয়ে যাবে। আর কখনো দেশে ফিরতে দেবেনা। শামিম যে ওকে নিজের বন্দিনী করার জন্যই বিদেশে নিতে চাচ্ছে সেটা তৃষার অজানা নয়।
পুলিশের গাড়ি সামনে এসে থামার আগেই শামিম তাদের ওভারটেক করে সামনে এগিয়ে যায়। তৃষা শামিমের হাত ধরে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করে।
এতে করে শামিমের ড্রাইভিং এ সমস্যা তৈরি হয়। গাড়ি এদিক ওদিক হেলে যায়। গাড়ির ভেতর দুজনের হাতাহাতি লেগে যায়। সামনে থেকে একটা মালবাহী ট্রাক এসে পড়ায় দুটো গাড়িতে সংঘর্ষ লেগে দুর্ঘ’টনা ঘটে।
গাড়ির ভেতরে শামিম, তৃষা বা’জে’ভা’বে জ’খ’ম হয়।
পুলিশ গাড়ি থেকে নেমে ট্রাক চালককে আটক করে। বাকিরা শামিম আর তৃষাকে হসপিটালে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
পিচ ঢালা কালো রাস্তা টকটকে লাল তরলে রঞ্জিত। চুরমার হয়ে ভেঙে যাওয়া সাদা রঙের গাড়িটি দাড়ানো। তার ভেতর থেকে বের করে আনা হচ্ছে দুটো র’ক্তা’ক্ত শরীর।
———————————————————————
হাসপাতালের করিডোরে বসে আহাজারি করছে পরিবারের সবাই। আয়না মেয়ের এমন অবস্থা দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।
তুহা, ইভান আর রাদিফ সবাইকে সামলাতে ব্যস্ত।
তৃষা আর শামিম দুজনের পরিবারের লোকই এখানে উপস্থিত।
ডাক্তার এসে জিজ্ঞেস করলেন,’ পেশেন্ট শামিমের পরিবারের লোকজন কারা?’
শামিমের ভাই এগিয়ে গিয়ে বলল,’ জি আমি শামিমের বড় ভাই।’
ডাক্তার অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানালেন,’ আপনাদের রোগী আর বেঁ’চে নেই।’
সাথে সাথে শামিমের মা চিৎ’কার করে ওঠেন। সবাই স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো সেদিকে। ছেলের অকাল মৃ/ত্যু/র শোক সামলাতে না পেরে শামিমের মা স্ট্রো’ক করে বসলেন।
ডাক্তার তৃষার পরিবারের কাছে গিয়ে জানলেন,’ রোগীর অবস্থা খুব একটা ভালোনা। একটা পা কে’টে ফেলা হয়েছে। এখন জ্ঞান আছে। বাড়ির লোক দেখা করতে চাইলে যেতে পারে।’
তৃষার কথা শুনে বাড়ির সবাই আৎকে উঠে। মেয়েটার এমন করুণ পরিণতি কেউ চায় নি।
তৃষার বাবা যতই রা’গের বশে মেয়েকে অস্বীকার করুক না কেনো, উনার চোখে আজ জলভর্তি।
তৃষা হসপিটালের সাদা বেডে শুয়ে আছে। বাতাসের ঝাপটানোতে জানালার সাদা পর্দাগুলো মৃদু দুলছে। অক্সিজেন মাস্ক পরিহিত তৃষার বন্ধ চোখের কার্ণিশ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
“তৃষা!”
মায়ের কাঁপা কন্ঠস্বর শুনে পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায় তৃষা।
“কেনো এমন করলি মা? তুহা তো তোর বোন তাইনা? তাহলে ওর উপর ক্ষো’ভ মেটাতে গিয়ে নিজের এতবড় ক্ষতি করে বসলি?”বলতে বলতে ডুকরে কেঁদে উঠলেন আয়না।
তৃষার চোখে অনবরত নোনতা বৃষ্টি ঝরছে। নেত্রপল্লব জুড়ে অপরাধী,অনুশোচনার ছাপ।
ধীরে ধীরে দুহাত জড়ো করে ইশারায় ক্ষমা চাইলো সবার কাছে।
সবার চোখেই পানি। তৃষা আস্তে করে মুখের অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেললো। তুহা চোখ বড় বড় করে তৃষার অক্সিজেন মাস্ক পড়িয়ে দিতে গেলেই তৃষা হাত দিয়ে সরিয়ে দিলে। রুদ্ধশ্বাসে অস্পষ্ট স্বরে বলল,
” আমাকে ক্ষমা করে দিস। আমার রা’গ, হি’ং’সা, জে’দের কারণে আমার পতন হলো দেখ। যেকোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে যেগুলো বর্জন করা দরকার আমার মধ্যে সেগুলোই বেশি। একে অপরের প্রতি আস্থা,বিশ্বাস সম্পর্কে খুবই জরুরি। আশাকরি ভবিষ্যতে ও এভাবে তোরা একে অপরের পাশে থাকবি।
সবার কাছে হাত জোড় করে আরও একবার ক্ষমা চেয়ে নিলো তৃষা।
বাবার দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে বলল,’ বাবা!’
তুমি তো আমাকে মেয়ে হিসেবে মানোনা। শেষ বারের মতো একবার মা বলে ডাকবে? আগে যেভাবে ডাকতে? আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দেবে? সত্যি বলছি এরপর আমি একদম ভালোমেয়ে হয়ে যাবো। আল্লাহ আমাকে নিয়ে গেলে আর কাউকে জালাতন করবোনা। ডাকবে একবার মা? মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে?
তৃষার বাবা শব্দ করে কেঁদে উঠে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে অস্পষ্ট স্বরে ডাকলেন,’মা”
তৃষার চোখে জ্বল ঠোঁটে হাসি। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাচ্ছে। আর শ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না। রাদিফ দ্রুত অক্সিজেন মাস্ক পড়িয়ে দিলো।
ডাক্তার এসে তাড়া দিলেন এবার সবাই কে বেরিয়ে যেতে। এমনিতেই রোগীর অবস্থা খুব একটা ভালো না। এভাবে কান্নাকাটি করলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।
হসপিটালে আসার পর যখন সবাই জিজ্ঞেস করেছিলো তৃষার এই অবস্থা কি করে হয়েছে তখন তুহা কিচ্ছু লুকোয় নি। যা যা হয়েছে সব বলে দিয়েছে সবাইকে। যদিও বলার ইচ্ছে ছিলোনা। কিন্তু না বললেও সবাই আজীবন ইভানকে ভুল বুঝে যেতো।
ইভান আর তুহার পরিবারের মধ্য সমঝোতা শেষে সবাই আবার এক হলো।
ভোরের আলো ফোঁটার সাথে সাথে নিয়ে আসে জীবনের নতুন একটি দিন। কারো জন্য সুখের আর কারো জন্য দুঃখের।
তুহাদের পরিবারের জন্য দিনটি শোকের ছায়া বয়ে এনেছে। গতকাল রাত্রেই তৃষা মৃ/ত্যু বরণ করেছে।
তার দা’ফ’ন কার্য সম্পন্ন করা হয়েছে কুমিল্লায়। পুরো পরিবার কুমিল্লায় চলে এসেছে।
আকাশে অর্ধচন্দ্র। চারপাশে অসংখ্য তারা,নক্ষত্র মিটিমিটি জ্বলছে। বারান্দায় টুল পেতে বসে আছে তুহা। মাস দু’য়েক আগের তৃষার মৃ/ত্যুর কথাটাই ভাবছিলো।
তুহা চেয়েছিলো তৃষা শা’স্তি পাক। তারপর নিজেকে শুধরে নিক। সে চায়নি তৃষার এমন নিদারুণ মৃ/ত্যু।
কথাগুলো ভেবেই তুহা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
ইভান কয়েকদিন হলো একটা চাকরিতে জয়েন করেছে। অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পড়েছিলো।
ঘুম ভাঙতেই তুহাকে না দেখে বারান্দায় পা বাড়ালো। তুহার পাশের খালি টুল টেনে নিজেও পাশে বসলো।
তুহা ইভানের দিকে একবার তাকিয়ে পূনরায় অদূরে তাকালো।
ইভান তুহার হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে বলল,’ এখানে একা বসে কি করছো? আমাকে ডাকলেও পারতে।’
তুহা মৃদুস্বরে বলল,’ ঘুমাচ্ছিলেন আপনি। তাই বিরক্ত করিনি।
কিয়দংশ সময় চুপ থেকে ইভান কোমল,নমনীয়, আকুল কন্ঠে বলল,’ জানো পুতুল আমার বড্ড অপছন্দের ছিলো। কিন্তু আমার ঘরে যে পুতুলটা আছে সে আমার বড্ড পছন্দের। তুমি আমাকে আরেকটা পুতুল এনে দেবে? মেয়ে পুতুল!
তুহা মুচকি হাসলো। ইভানের ডানহাত নিজের পেটে রেখে বলল,’ আসছে আরও একটা পুতুল। মেয়ে পুতুল নাকি ছেলে পুতুল তা আমি জানিনা। তবে আসছে আরও একটি পুতুল।
ইভানের চোখেমুখে উচ্ছ্বাস। প্রবল আনন্দে তার চোখের কোনে পানি চিকচিক করছে। টুল থেকে নেমে নিচু হলো ইভান।
তুহা টের পেলো তার উদরে একজোড়া অধরের উষ্ণ পরশ।
তুহার বন্ধ নেত্র,ঠোঁটে প্রাণবন্ত হাসি ঢেউ খেলে যাচ্ছে।
সে ও মা হবে আর ইভান বাবা। ছোট্ট একটা পিচ্চু এসে তাদের সম্পর্কটাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তুহা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে একটা সম্পর্কে সবার আগে জরুরি হলো বিশ্বাস। এরপর একে অপরের প্রতি ভরসা,শ্রদ্ধা, সম্মান,ধৈর্য সব মিলিয়েই সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হয়। কাউকে বিশ্বাস করুন তবে অন্ধবিশ্বাস নয়। সেদিন তুহার মনে প্রথমে সন্দেহের বীজ বপন হয়েছিলো। সে মনেপ্রাণে চেয়েছে ইভানকে বিশ্বাস করতে। তাই বারবার ভিডিওটি দেখে গিয়েছে। যদি কোন একটা ক্লু এর ভিত্তিতে ইভানের প্রতি বিশ্বাস রাখা যায়।
অবশেষে সে সফল ও হয়েছে।
তুহা ছয়তলার একটা বাচ্চাকে টিউশন পড়ায়। যেদিন ইভানকে জিজ্ঞেস করেছিলো বাচ্চাটাকে পড়াবো কিনা?
সেদিন ইভান বলেছিলো,’তোমার ইচ্ছে হলে পড়াতে পারো। ব্যাপারটা সম্পুর্ন তোমার উপর।
তুহার উত্তর ছিলো,’স্বাধীন ভাবে বাঁচতে চাই,অবাধ্য হয়ে নয়!’
তুহার উত্তরে বরাবরের মতোই ইভান তার মুখশ্রীর চমৎকার হাসি দিয়ে ঘায়েল করেছিলো তুহাকে।
একহাতে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলল,’ তুমি আমার অর্ধাঙ্গিনী, বন্দিনী নও। অর্ধাঙ্গিনীরা স্বাধীন হয়। অবাধ্য তো বন্দিনীরা হয়।
বেঁচে থাকুক সকল সম্পর্ক। সেটা হোক স্বামী-স্ত্রী, হোক বাবা-মেয়ে, হোক বাবা-ছেলে। মা,ভাই-বোন, বন্ধু-বান্ধব সকল সম্পর্কই টিকে থাকুক অটুট ভাবে।
#সমাপ্ত।