সবটা অন্যরকম♥
পর্ব_১০
Writer-Afnan Lara
.
দিবা জলদি করে নিজের রুমে এসে দরজা লাগিয়ে ফেললো,মনে হচ্ছে দম বন্ধ ছিলো এতক্ষণ
জোরে জোরে শ্বাস নিতে নিতে আবারও দরজা খুলে ডাইনিংয়ের কাছে আসলো দিবা
ঢকঢক করে এক জগের অর্ধেক পানি খেয়ে নিলো সে,
আহনাফ সেসময়ে বাসায় ঢুকলো,দিবাকে এরকম পেরেশান দেখে সে একটা ভেংচি কেটে বললো”সব প্ল্যান করলাম আমি,আর উনি হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ,যাও আমার জন্য ফ্রিজ থেকে পানি এনে দাও”
.
দিবা ভাবলো আহনাফ তার হেল্প করেছে,সে খাতিরে পানি এনে দেওয়া যায়,তা নাহলে এই লোকটার হেল্প করতে বয়ে গেছে আমার হুহ”
.
আহনাফ নিজের রুমে এসে গায়ের জ্যাকেট টিশার্ট সব পাল্টে শাওয়ারের নিচে গিয়ে দাঁড়ালো
ইদানিং এত গরম পড়ছে যে রাতেও গোসল করতে বাধ্য হওয়া লাগে
.
দিবা পানির গ্লাস নিয়ে আহনাফের রুমের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে
আহনাফ হয়ত চেঞ্জ করছে তা ভেবে দিবা দরজা ফাঁক দেখেও ভেতরে যায়নি
আহনাফ ভেজা শরীরে বাথরুম থেকে বেরিয়ে নিজের তোয়ালেটা খুঁজছে,,পরে ওর চোখ গেলো দরজার দিকে,দরজা ফাঁক
না জানি ঐ দিবা আবার ভেতরে চলে আসে
এই ভেবে আহনাফ কাছে আসলো দরজাটা আটকাবে বলে
দরজাটার ওপারে কারও ছায়া দেখে কৌতুহল বশত আহনাফ দরজা খুলে দেখতে গেলো কে ওখানে
দিবা আহনাফকে এমন বেশে দেখে হাতের ঠাণ্ডা পানি সব ওর গায়ে ছুঁড়ে মারলো
আহনাফ চুপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে
দিবা মুখে হাত দিয়ে কিছুক্ষন চুপ করে থেকে তারপর বললো”সরি আসলে হঠাৎ…”
.
তুমি না উদম গায়ে ছেলে দেখলে এট্রাক্ট হও না,তাহলে এখন ভয় পেলে কেন?তাও আবার হাতের পানি আমার গায়েই মেরে দিলে,এই ঠাণ্ডা পানি যদি আমি তোমার গায়ে এখন ঢালতাম?? বাড়ি তো ওলট পালট করে দিতা তুমি
.
সরি,বুঝতে পারিনি,,আর আপনিও বলিহারি!! এরকম বেশে দরজা আটকানোর জায়গায় উল্টো খুললেন কেন?
.
আমি কি জানি তুমি পানি নিয়ে সং সেজে দাঁড়িয়ে থাকবে,যাও আরেক গ্লাস আনো,আর সেই গ্লাস টেবিলের ওপর রেখে নিজের রুমে চলে যাবা,বুঝছো? নাকি পানি ঢেলে বুঝাইতাম?
.
দিবা এক দৌড়ে ফ্রিজের কাছে চলে গেলো,,পানি ঢেলে টেবিলের উপর রেখে নিজের রুমে চলে আসলো সে
আহনাফ কথায় কথায় এত হুমকি কেন দেয় বুঝি না আমি
.
আহনাফ একা একা এসে ডিনার করে আবারও শুয়ে পড়েছে
পরেরদিন ভোরবেলা দিবা রান্নাঘরে এসে হাজির,আজ খালামণির কোনো কথাই সে শুনবে না
নাস্তা সে বানাবেই
হালিমা এসে পেঁপে কুচি করা শুরু করে দিয়েছে,দিবা রুটি বানাচ্ছে
আহনাফ নামাজ কালাম শেষ করে এবার জগিং স্যুট পরছে চুপচাপ,,মিনি উঁকি দিয়ে আহনাফকে দেখছিলো অনেক সময় হলো
আহনাফের মনে হলো কেউ ওকে দেখছে,সে দরজার দিকে তাকাতেই মিনি লুকিয়ে পড়লো,কিন্তু ওর লেজখানা রয়ে গেলো
আহনাফ লেজটা দেখে এগিয়ে এসে বললো”এই আজাইরা বিড়াল,এত অপমান করি তাও আমাকে দেখতে তোমার ভাল্লাগে?তোমার বইন তোমারে ম্যানার শেখায় নাই??আমার সাথে জগিংয়ে যাওয়ার ফন্দি আঁটছো নাকি?
একদম বিড়ালের চাচা জেডার কাছে তোমায় ছেড়ে দিয়ে আসব,তখন টের পাবা কে কার বইন
.
মিনি হাতটা মুখে পুরে আহনাফের কথা শুনছে,আগামাথা কিছুই বুঝছে না সে
অথচ দিবার সব কথাবার্তা সে সঠিক ভাবে বোঝে দিবা কি বলতে চায়,কি করতে বলে ওকে সেসবকিছু
যাই হোক,বোকার মতন চেয়ে থেকে মিনি চলে গেলো দিবার কাছে
দিবা রুটি বানাতে বানাতে মিনির দিকে চেয়ে বললো”কিরে এত জলদি উঠলি?”
.
আহনাফ দরজা খুলে বেরিয়ে চলে গেছে,মিনি যখন দেখলো আহনাফ চলে যাচ্ছে সে আর দেরি না করে দিবার প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ছুটলো আহনাফের পিছু পিছু
আহনাফের থেকে একটু দূরে দূরে হাঁটছে সে,মাঝে মাঝে তাকে দৌড়াতেও হচ্ছে,আহনাফকে বুঝতে দেওয়া যাবে না সে ওকে ফলো করছে
.
আহনাফ হাঁপিয়ে গিয়ে একটু থামলো,কিন্তু মিনি তো এতক্ষণ ওরে ফলো করতে করতে রেসিং শো এর মতন দৌড়াচ্ছিলো,হুট করে আহনাফ থেমে যাবে তা সে ভাবেনি,যতক্ষনে দেখলো আহনাফ থেমে গেছে ততক্ষণে সে তার দৌড়ের গতি কাবু করতে পারেনি,একেবারে আহনাফের পায়ের সাথে ধাক্কা খেয়ে গেলো মিনি
আহনাফ চমকে পিছনে ফিরে মিনিকে দেখে চোখ কপালে তুলে বললো”আবার??আমার মধ্যে কি মাছের কাঁটা ঝুলে আছে যে সবসময় আমার সাথে চুইংগামের মতন লেগে থাকো?তুমি আসলেই আজাইরা একটা বিড়াল,যাও তোমার বোনের কাছে ফিরে যাও”
.
কে শোনে কার কথা,মিনি তো আহনাফকে ছেড়ে যাবেই না
এদিকে মিনি হলো দিবার কলিজা,এর কিছু হলে মা আহনাফকে কেলাবে তা ওর জানা আছে,দায়িত্বের খাতিরে একন মিনিকে নজরে রাখতে রাখতে আহনাফ জগিং করছে
.
দিবা সব নাস্তা টেবিলে রেখে নিজের রুমে যাওয়ার আগেই আরিফ ওকে ডাক দিলো
.
হুম বলেন ভাইয়া
.
এই বইগুলো তোমার,কাল রাতেই এনেছিলাম,টায়ার্ড ছিলাম বলে দেওয়ার সময় পাইনি,,ভাইয়ার থেকে জেনে সব বই কিনে এনেছি,খাতাও আছে,আর কিছু লাগলে বলবা
.
ধন্যবাদ ভাইয়া
.
দিবা বইগুলো নিয়ে রুমে এসে বিছানায় মেলে বসে একটা একটা করে দেখা শুরু করে দিয়েছে
পড়ালেখার প্রতি দিবার অনেক ঝোঁক,,নতুন বই পেলে তাকে আর পড়ার থেকে ওঠানোই যায় না
আহনাফ মিনিকে আড় চোখে দেখতে দেখতে বাসায় ঢুকলো
মিনি ও চোরের মতন ওর পিছু পিছু বাসায় ডুকে পড়লো
মা সকাল বেলা লেবুর শরবত খান খালি পেটে,সেটা খাওয়ার সময় দেখলেন আহনাফ আর মিনি একসাথে বাসায় ঢুকছে
মায়ের তো পেট ফাটা হাসি আসলো তা দেখে
হাসি থামিয়ে বললেন”কিরে আহনাফ,বিড়াল তোর এত পছন্দ আগে জানতাম না তো?”
.
মা!!তুমি জানো আমি যাদের লাইক করি না তারাই আমার সাথে চিপকুর মতন লেগে থাকে,এই আজাইরা বিড়ালটাও হয়েছে তেমন,ওর বইনরে বলো ওরে বেঁধে রাখতে
না জানি আমার পিছু নিতে গিয়ে ভার্সিটি পর্যন্ত চলে আসে
.
হাহা!!বস এখানে,, নাস্তা করবি,আরিফ?তুই ও আয়
.
আরিফ আর বাবা এসে বসলেন চেয়ার টেনে,খালামনি দিবাকে ডাক দিয়ে নিজেও বসলেন
আহনাফ রুটি মুখে তুলে বললো”এত নরম,,তুমি বানাইছো আজ?”
.
নাহ
.
তাহলে??হালিমা আন্টি তো এরকম রুটি বানায় না
.
দিবা বানিয়েছে
.
আহনাফ চিবানো বাদ দিয়ে চুপ করে থাকলো,এমন জানলে প্রশংসাই করতো না,চুপচাপ নাস্তা সেরে উঠে যাওয়ার সময় বললো”জলদি রেডি হয়ে নাও,ভার্সিটিতে যাব”
.
দিবা তাই ছুটলো রেডি হওয়ার জন্য,,একটা কালো রঙের লং থ্রি পিস পরে নিলো সে,মিনি বারান্দা দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে,,দিবা ওর গায়ে হাত বুলিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো ফটাফট
আহনাফ কালো রঙের টিশার্ট পরে যেই না দেখলো দিবাও কালো পরেছে এক প্রকার ঝটকা খেয়ে গেলো সে
কি ব্যাপার?সবসময় আমি যে রঙ পরি এই মেয়েটাও একই রঙ পরে??
আহনাফ কালো পাল্টে হালকা নীল রঙের একটা টিশার্ট পরে বের হলো,ওপর দিয়ে জ্যাকেট পরে দিবার সামনে দিয়ে চলে গেলো সে বাইক আনতে
দিবা তার বইগুলো হাতে নিয়ে ছুটলো
আহনাফ যখন হাঁটা ধরে তখন হাই স্পীড নিয়ে হাঁটে,মনে হয় যেন দৌড়াচ্ছে
আহনাফ বাইকে বসে সামনে চেয়ে দেখলো দিবা মাথায় ঘোমটা দিয়ে আসছে বসার জন্য
.
বাহ,এত উন্নতি??হঠাৎ?
.
প্রথম ক্লাস তো,,দেরি করতে চাই না,,আমার হাতে টাকা নাই, নাহলে রিকশা দিয়েই যেতাম
.
টাকা দেবো ও না,তোমাকে টাইট করতে হলে এমন বিহেভ করতে হবে
আমার তো মন চায় তোমায় বোরকা পরিয়ে রাখি
.
কেন কেন??এত কিসের দাপট আপনার আমার প্রতি??নিজের বউয়ের উপর এমন দাপট দেখাইয়েন,বুঝলেন?.
.
তুমি আমার আপন বোন হলে কষিয়ে চড় মেরে বোরকা পড়াইতাম,,খালাতো বোন হও তাই চড় মারার অধিকার নাই বলে আপাতত আমি চুপ আছি,,
আর রইলো কথা আমার বউয়ের,,তারে কেমন করে রাখবো সেটা আমার ব্যাপার,তোমার তা নিয়ে জাজ করার কোনো রাইট নাই
.
আমি কেমন করে চলবো না চলবো তা নিয়েও আপনার কথা বলার কোনো রাইট নাই
.
ফাইন,চুপচাপ বসো
.
দিবা বাইকে বসতেই আহনাফের ফোনে কল আসলো,,আহনাফ ততক্ষণে বাইক স্টার্ট দিয়ে দিয়েছে
তাই দিবাকে বললো ওর জ্যাকেটের পকেটে হাত ঢুকিয়ে ফোন নিয়ে কল রিসিভ করে স্পিকার অন করতে
.
দিবা হাত বাড়িয়ে পকেট থেকে ফোন নিয়ে দেখলো ইভান লিখা আছে,,মুচকি হেসে সে রিসিভ করে স্পিকারে দিলো
মনে মনে ভাবলো আহনাফের কথা শেষ হলে ভাইয়ার সাথে সেও কথা বলবে
.
কিরে আহনাফ,কেমন আছিস?
.
ভালো কোনোরকম,তুই কেমন আছিস?অফিস কেমন চলে??
.
ভালোই,,দিবার কি খবর?
.
দিবা খুব খুশি হলো এই ভেবে যে ইভান ওর খোঁজ নিচ্ছে
.
আহনাফ বললো”কেন মিস করছিস নাকি?তোর মা আই মিন খালামণি তো বলছিলো তুই নাকি ওরে সহ্য করতে পারিস না”
.
সেটা ঠিক বলেছে,ওরে আমি সহ্য করতে পারি না,কেনোই বা সহ্য করবো??কে হয় আমার
রক্তের সম্পর্ক ও তো নাই,বারতি ঝামেলা ছিলো আমাদের পরিবারে,,তোরা ওরে দিয়ে তোদের বাসার সব কাজ করিয়ে নিস,কাজে পটু,,
.
আহনাফ বাইক থামিয়ে দিবার থেকে ফোনটা নিয়ে কল হোল্ডে রেখে বললো”দেখলে??তোমার আপন খালাতো ভাই ও তো এমন বিহেভ করে না তোমার সাথে যেমনটা তোমার ভাই করে,অবশ্য এ তো সত্যি তোমার কিছু হয় না
আমারও কিছু হয় না,,ছোট থেকে খালাতো ভাই মানতে মানতে রিয়েলি মেনে নিয়েছি,আসলে ওর সাথেও কিন্তু আমার কোনো সম্পর্ক নাই
.
দিবা আরেকদিকে মুখটা ফিরিয়ে চোখ মুছে ফেললো,কিছু বললো না আর
.
আহমাফ কল আনহোল্ড করে বললো”ভাই আমি বাইকে,পরে কথা হচ্ছে”
শক্ত করে বসো,এসব কান্না অফ দাও,পরে বাইক থেকে পড়ে আরেক বিপদ আনবে,ঠিক করে ধরো আমায়
ওমন করে ধরবা না আবার,,এমন ভাবে ধরবা যেন আমার বুকের ভেতর ধুক করে না ওঠে,বুঝলা??
.
দিবা আহনাফের কাঁধে হাত রাখলো নিঃশব্দে
আহনাফ আর পথে কোনো কথা বলেনি,,ভার্সিটিতে দিবাকে নামিয়ে দিয়ে সে গেলো ক্যানটিনের দিকে,,আজ আর তার পরীক্ষা নেই,প্রথম ক্লাস বাদ দিয়ে আড্ডা দিবে সে এখন
দিবা তার ক্লাসরুমে ঢুকে পুরো রুমটায় চোখ বুলিয়ে নিলো
ছেলে মেয়ে সব একসাথে এক ক্লাসে,,দূরের এক কোণায় একটা মেয়ে একা বসে আছে,দিবা সেদিকে গিয়ে ওর পাশে বসলো
মেয়েটার চোখে ইয়া বড় চশমা,,হাতে বই নিয়ে পড়ে যাচ্ছে গড়গড় করে
দিবা তাই ওর সাথে কথা বললো না,ভাবলো পড়ায় ডিস্টার্ব হলে আবার যদি রেগে যায়
ক্লাসের সবাই যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত,,,দিবা খেয়াল করলো তার পাশের মেয়েটার পড়া শুনা যাচ্ছে না
মুখে হাসি ফুটিয়ে দিবা মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য যেই মুখটা খুলেছে ওমনি মেয়েটা বলে উঠলো”রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক কে??কত সালে এটা একটা সাবজেক্ট হিসেবে স্বীকৃত হয়?”
.
দিবা ঢোক গিলে টেবিলের উপর থেকে বইটা হাতে নিলো
.
মেয়েটা চশমা ঠিক করে বললো”এগুলো তো ইন্টারে থাওতে পড়ার কথা,তুমি বই হাতে নিলে কেন?”
.
মনে ছিলো না,ভুলে গেলাম
.
আচ্ছা মুখস্থ করে নাও,আমার ফ্রেন্ড হবে?আমি তোমার থেকে প্রতিদিন পড়া নেবো,রাজি?
.
দিবা রাজি হয়ে গেলো,,কারণ এভাবে পড়া নিলে ওর ঠিকমত পড়াও হয়ে যাবে
মেয়েটা একটু হাসি দিয়ে দিবার গায়ের সাথে ঘেঁষে বসলো
দিবা ভাবলো ওর বাসার কথা জিজ্ঞেস করবে,নাম জিজ্ঞেস করবে
কিন্তু মেয়েটা কি করলো,সে দিবার বই খুলে বললো”নাও এই পেজটা মুখস্থ করো,আমিও করতেছি,তারপর আমরা একে অপরের পড়া নেবো,ঠিক আছে?”
.
দিবা মনে মনে ভাবছে এই মেয়েটা এত পড়া পড়া করে ক্যান,,একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না?
.
কি হলো কি ভাবছো?জলদি পড়া শুরু করো,আমার আবার দেরি ভালো লাগে না
.
পাশের সিট থেকে দুটো মেয়ে ফিসফিস করে বলছে”এই কারণেই এই মেয়েটার পাশে বসি নাই,এক ঘন্টায় পাগল করে দিচ্ছিলো পড়া নিয়ে”
.
দিবার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এই ভেবে যে এই জন্যই বুঝি মেয়েটার পাশে কাউকে বসতে দেখেনি সে
চলবে♥