#সন্ধি_হৃদয়ে_হৃদয়ে
#লেখিকাঃ আসরিফা সুলতানা জেবা
#পর্ব___১৫
তূর্য বিরক্তভরা কন্ঠে বললো, ‘ তুমি তো আবার সাধু রমণী। এই যে উৎসুক চাহনি নিক্ষেপ করে বললে আমি ধূম-পান করলাম কিনা!এটা তো মুভি,উপন্যাসের পাতায় নায়িকারা করে থাকে। যখন নায়ক সিগারেট টানে তাদের কাছে মনে হয় বি-ষ গিলছে। একদম তোমার মতোন রিয়েক্ট করে। তখন নায়ক নিজের পোড়া ঠোঁট দ্বারা নায়িকার গোলাপি বর্ণের ওষ্ঠ অমৃত মনে করে শুষে নেয়। বুঝিয়ে দেয় জ্বলন্ত হলেও কিস করার জন্য পারফেক্ট। তুমিও ঠিক এমনটা চাও?’
শ্রেয়া ফ্যালফ্যাল নয়নে চেয়ে রইল অনিমেষ। নায়িকা?কোথা থেকে কোথায় পাড়ি দেয় লোকটা?বিস্মিত হলেও নিজেকে শক্ত করে বলে উঠলো,
‘ স্যার আমি তো,,’
‘ আমি ইন্টারেস্ট না। কারণ আমি নায়ক না। ‘
কথাটা বলে তূর্য প্রগাঢ় দৃষ্টিতে শ্রেয়ার পা থেকে মাথা পর্যন্ত দৃষ্টি বুলালো। নিমিষেই সমগ্র গা থরথর করে কেঁপে উঠলো শ্রেয়ার। অসাড়তা লাভ করলো। তূর্য সিগারেট টা পা দিয়ে চেপে ধরে। ভ্রুঁ উঁচিয়ে উপহাসের সুরে বলে,
‘ তুমি কিন্তু নায়িকার থেকে কম নও। চিকন,বাঁকা কোমর,স্লিম পেট,ভুবন ভুলানো রূপ,গোলাপি অধর,গাঢ় চক্ষে কাজল আঁকা,দেহের ভাঁজে ভাঁজে কম্পন ও,,,’
শ্রেয়া লজ্জায় শিউরে উঠছে। শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে যাচ্ছে শীতল স্রোত। তূর্যর থেমে যাওয়াতে থমকে গেল হৃদগতি। মনের উৎকন্ঠা, উত্তেজনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে পরবর্তী কথা শোনার জন্যে। শ্বাস ভার ভার হলো নিমেষে। তূর্য পূর্বের জায়গা ছেড়ে এগিয়ে এসেছে। উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ঢেলে দিচ্ছে শ্রেয়ার পুরো বদনে। চক্ষুদ্বয় নিমীলিত হয়ে এলো শ্রেয়ার। কাপড় গুলো শক্ত করে আঁকড়ে ধরে বুকের ধুকপুকানি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার তীব্র চেষ্টা চালাচ্ছে। তখনই রক্ত হিম করে দিল তূর্যর উচ্চারিত কয়েকটা শব্দ।
‘ ও ফিগার টা সো,,সো গরম। ‘
লহু স্বরে শ্রেয়া একটুও নড়লো না। জমে আছে,পাথরে পরিণত হয়েছে যেন। অথচ অন্দরমহলে উতালপাতাল ঝড় উঠেছে। বুকের উঠানামা তীব্র থেকে মারাত্মক রূপ ধারণ করে। চক্ষু মেলে বিনা সংকোচে অপলক চেয়ে থাকে তূর্যর পানে।
তূর্য মাঝে এক আঙুল দেখিয়ে অধর কার্নিশ বাঁকিয়ে বললো,
‘ এক আঙ্গুলের বিস্তর তফাত টা রেখে দিলাম। এটা আমার জীবনের প্রথম ধৈর্য্যের পরিচয় হিসেবে গণ্য করলে ভুল হবে না। তবে ঠিক সময়ে পূরণ করে দিব। মাঝে শূন্যস্থান থাকবে না। তোমাকে দেখার অস’ভ্য নজরও পাল্টাবে না। এটাই তো বলছো মনে মনে?আমি এমনই। চরিত্রহীন হতে পারছি তো?’
শ্রেয়া হতবিহ্বল, স্তব্ধ। এতক্ষণে তূর্যর ব্যবহার ওর মস্তিষ্ক বুঝতে সক্ষম হলো। একরাশ বিস্ময় নিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল তূর্যর দিক,
‘ আপনি?’
তূর্য ভ্রুঁক্ষেপহীন হয়ে বলে,’ আমি চরম লেভেলের অসভ্য তাই না?’
শ্রেয়ার অবাক কন্ঠস্বর–‘ অভিনয় করছিলেন?’
‘ অভিনয় কেন করবো?আমি কি অভিনেতা? তবে প্র্যাকটিস করছিলাম চরিত্রহীন হবার। ‘
‘ স্যার? ‘
‘ উড়ে যাবে পাঠকাঠি। দেখছো না ছাঁদে জোরালো বাতাস বইছে। ‘
এযাত্রায় অতীব গম্ভীর শুনালো তূর্যর কন্ঠ। এই ছেলে হয়ত গিরগিটিকে হার মানাতে পিছুপা হবে না। কেমন ক্ষণে ক্ষণে মুখের আদল,কন্ঠের স্বর পরিবর্তন করে ফেলে। শ্রেয়া কিছু না বলে কেটে পড়বে ভেবে উল্টো ঘুরে চলে যাচ্ছে। সাথে সাথেই তূর্য হাঁক ছেড়ে বললো,
‘ শুনো মেয়ে?’
অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফিরে তাকালো শ্রেয়া। চাহনি প্রশ্নবিদ্ধ। তূর্য দ্রুত পদে হেঁটে এসে ওকে পাশ কাটিয়ে ছাঁদের দরজায় গিয়ে দাঁড়াল। এহেন কান্ডে হতবাক ও। ইশারায় চলে যেতে বললো তূর্য। তাই আর মাথা না ঘামিয়ে চলে যাওয়ার মুহুর্তে কর্নকুহরে সুরসুর করে প্রবেশ করে,
‘ একদিন আমি ঠিক চরিত্রহীন হবো। তালিকায় শীর্ষে অবস্থান হবে।আর পুরুষ্কার স্বরূপ হাসিল করবো তোমাকে। ‘
শ্রেয়ার পা সিঁড়িতে আটকে গেল। মোচড় দিয়ে উঠলো পেট। তূর্য কি ওর প্রেমে পড়ে গেল?নাকি সবটাই কৌতুক, উপহাস,হেয়ালিপনা?
ছাঁদ থেকে এসে কাপড় রেখে একটা খামে পাঁচ প্লেট পানিপুড়ির দাম হিসেব করে টাকাগুলো ভরে নিল। তূর্য যেহেতু বলেছে টাকা ও দিয়েই দিবে। নতুবা খোটা দিতে একটুও কিপ্টামি করবে না মানুষ টা। এখনও শরীরটা কাঁপছে। কেন উদ্ভট নির্লজ্জ কথা বলে লোকটা?খামটা হাতে নিয়ে তূর্যর ফ্ল্যাটের সামনে এসে দাঁড়াল। কলিংবেল চাপতে গিয়েও হাত ফিরিয়ে এনে নিচে বসে ঝুঁকে খাম টা চালান করে ভিতরে দরজার নিচ দিয়ে। তূর্যর সম্মুখীন হওয়া মানে হৃদয় নিংড়ানো অনুভূতি। পেট মোচড় দিয়ে উঠা। ভারী ভারী লজ্জায় নেতিয়ে পড়া।
________________
অতিরিক্ত অনীহা যেই বিষয়ে থাকে,তাই জীবনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে। এই যে,প্রিয়ুর বিয়েতে যাবে না বলে অটল থাকে শ্রেয়া,এখন নিজের সিদ্ধান্তে নিজেই ব্যাঘাত ঘটালো। ঢাকার উদ্দেশ্যে ছুটছে আবার। পার্থক্য এবার আর পাশে প্রিয় মানুষ টা নেই। একা একাই নিজের পথ বেছে নিয়েছে। গত দু দিন আগেও কতশত স্বপ্ন বুনন করেছিল পুনর্বার। ভেবেছিল চারা রোপণ করলে দিন,মাস পেরিয়ে যেমন পুষ্প ফোটে মানুষকে প্রভাবিত করে,চাহনি মুগ্ধতায় ডুবিয়ে দেয়,আকর্ষণ করে নিজ অপরুপ চিত্রে তেমনই স্বপ্নগুলো একদিন এতটাই আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে যেন বাস্তবতায় পরিণতি লাভ করতে সার্থক হয়। কিন্তু! এক লহমায় সব শেষ। প্রিয়ু কল করে জানিয়েছে
“তোর একলা পথে আর কেউ হাঁটবে না রে শ্রেয়া। পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আকস্মিক তোর হাতটাও বাঁধবে না নিজের হাতের মুঠোয়।”
তার স্বামীর বিয়ে। প্রিয়ুর বিয়ের দিনই বিয়ের সময় ধার্য করা হয়েছে। প্রিয়ুর একটাই কথা ও যদি না যায় তাহলে আজীবনের জন্য ভুলে যাবে বান্ধবী কখনও আপন হয়। এত বড় একটা কথা শ্রেয়ার অন্তঃস্থল নাড়িয়ে দিয়েছে। ও জানে প্রত্যেকটা অক্ষরে অক্ষরে মিশে আছে প্রিয়ুর প্রচন্ড ক্ষোভ, অভিমান। চোখে জ্বলছে ভীষণ। আত্ম/হত্যা বৈধ হলে সেটা নির্দ্বিধায় বেছে নিত শ্রেয়া। তূর্য বিয়ের জন্য হ্যাঁ বলে দিয়েছে। তারই বা কি দোষ? সে তো অজ্ঞাত অতীত সম্পর্কে।
একটা সিএনজি ধরে গন্তব্যে এসে নামল শ্রেয়া। প্রিয়ু হয়ত ওরই অপেক্ষায় মরিয়া হয়েছিল। গেটের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ওকে দেখেই দিকবিদিকশুন্য হয়ে ঝাপটে ধরলো। অশ্রুসিক্ত কন্ঠে আওড়াতে থাকে,
‘ দু’টো দিন দেখি না তোকে। মন চাইছিল সব ছেড়েছুরে চলে যাই। কেমন আছিস?’
শ্রেয়া হাসে। দুঃখের ভার বেশি থেকে বেশি হলে ঠোঁটের কোণে যেই হাসি টা ফোটে ঠিক তা-ই প্রতীয়মান হলো। ক্ষীণ স্বরে বললো,
‘ নিয়তি যেমন রেখেছে। তোর কি খবর?বাড়ি ছেড়ে হঠাৎ এখানে?’
প্রিয়ু সরে এসে গাঢ় দৃষ্টি তাক করলো। নিষ্প্রভ স্বরে উত্তর দেয়,
‘ দুই পরিবার মিলে ঠিক করলো এখানে বিয়ের সকল অনুষ্ঠান হবে একসাথে। খারাপ লাগছে তোর?’
‘ একদমই না। তোর খুশিতে আমি খুশি। ‘
অথচ আখিঁদ্বয় জলে পরিপূর্ণ। গড়িয়ে যাওয়ার অনুমতির প্রতীক্ষায় অশ্রুকণারা। কিন্তু শ্রেয়া দিবে না। কঠোর হবে। আগের জীবনে ফিরে যাবে। এতিমের উপর কারো ছায়া দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কেউ করুণা করে, কেউ মায়া দেখায়। ভালো কেউ বাসে না। প্রিয়ুর হাত টা চেপে ধরে শক্তি জুগিয়ে পুনরায় বলে উঠলো,
‘ তূর্য স্যার এসেছেন? ওনার বাসায় দেখলাম তালা ঝুলছে। ‘
‘ হ্যাঁ। গত রাতেই এসেছেন। ‘
এক ফোঁটা অশ্রু বিসর্জন দিল। কান্না সংবরণ করে মৃদু হেসে বলে, ‘ সত্যিই বিয়ে করবেন?’
এবার রাগে,আক্রোশে ফেটে পড়ে প্রিয়ু। কর্কশ গলায় চিল্লিয়ে উঠে- ‘ কেন করবেন না?ওনার মতে,উনি অবিবাহিত। বিয়ে করতে আপত্তি কোথায়?তাছাড়া অহমিকা ওনার এক সময়ের ভালোবাসা। পুরোনো ভালোবাসা জাগ্রত হতে কতক্ষণ?’
প্রিয়ু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে কেঁদে উঠলো। ওর নিজেরই কলিজা ছিঁড়ে যাচ্ছে। নরম মনের এই মেয়েটা সহ্য করছে কেমন করে?সহ্যশক্তি কি বেশি?অতীব?শ্রেয়ার দিকে সিক্ত নেত্র মেলে বললো,
‘ চল না তূর্য ভাইয়ার কাছে। সব বলে দিবি আজ। ঘৃ*ণা করলে করবে,অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে তো করবে না। চল প্লিজ। আর আমাদের আটকাস না। ওই দিকে আয়ুশ,আয়ুশী,ত্রিহা আন্টি বিয়েটা আটকানোর চেষ্টা করছে প্রাণপণে। কিন্তু তূর্য স্যারের ‘হ্যাঁ ‘ শব্দ টার জন্য পেরে উঠছে না মেহরিমা আন্টির সাথে। উনি বলেছেন তূর্য স্যার একবার রাজি হয়েছে মানে কেউ যদি ওনার বিরুদ্ধে যায় তাহলে উনি বি-ষ খাবেন। ‘
শ্রেয়া আর কিছু না বলে গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকল। কোন খেলায় মেতে উঠলেন মেহরিমা চৌধুরী? ও কি এতটাই অপছন্দের? কিশোরী জীবনে ভুলটা কি ক্ষমা যোগ্য হয় না?ছোট থেকে একলা জীবন টা একটু একটু করে বেড়েছে। অবুঝ ছিল,ভয়ংকর স্মৃতি ছিল। সব ফেলে কিশোরী জীবনে পদার্পণ করে। হঠাৎ তুফানের ন্যায় আসে প্রণয়, আবেগ,অনুভূতি। সাথে যোগ হয় স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন, হুট করে নেওয়া সিদ্ধান্তই জীবনের মোড় পাল্টে দেয়। মানুষের জীবনের মিল যেন প্রকৃতির সঙ্গে। ঝড় আসবে প্রকৃতিকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে চলে যাবে। তখন প্রকৃতি নিরবে সবটা সইয়ে নতুন উদ্যমে নিজেকে গোছাতে লেগে যাবে। তবে পুরোনো রূপ টা আর পাবে না ফিরে। কখনও না। যেমনটা পায় না শ্রেয়া।
শ্রেয়া আজ আর ভয় করলো না। লুকিয়ে রাখল না নিজেকে। চৌধুরী পরিবারের সবাই বিশাল বড় ড্রইং রুমে বসে। ফাতেমা চৌধুরী চোখ গোল গোল করে চাইলেন। রহিমার হাত টা টেনে মাথায় রেখে চাপা স্বরে বলে উঠলেন,
‘ রহিমা রে এ আমি কারে দেখতেছি?পালায় যাওন্না মাইয়াডা না?’
রহিমা চমকে গেল শ্রেয়াকে দেখে। কন্ঠে অবাকতা ধরে রেখেই সম্মতি দিয়ে বললো,
‘ হু আম্মা। এ তো নতুন বধূ। ‘
মেহরিমা দাঁতে দাঁত চেপে শাশুড়ি ও রহিমাকে বললেন,
‘ চুপ করেন। এই মেয়ে প্রিয়ুর বান্ধবী। ভুলেও নতুন বধূ কিংবা অন্য কিছু বলবেন না। তূর্য শুনলে সবকিছু জলে ভেস্তে যাবে। তাছাড়া আপনার ছেলেও কিন্তু এসব জানে না আম্মা। জানলে আপনার রক্ষে নেই। ‘
ফাতেমা চৌধুরী তূর্যর বাবার দিকে তাকালেন। উনি ছেলের বিয়ের ব্যাপারে অবগত নয়। বিজনেসের সুবাদে বিভিন্ন দেশে যাতায়াত লেগেই থাকে। বিয়ে,পালিয়ে যাওনা সকল রটনা বহু কষ্টে ধামাচাপা দিয়েছেন যেন আর কারো কান অব্দি না পৌঁছায়। অত্যন্ত শক্ত ধাঁচের লোক নুরুল চৌধুরী। যদি জানেন ছেলের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটা মেয়েকে বউ করে নিয়ে এসেছিল এবং মেয়েটা পরেরদিন মুখে চুন কালি মাখিয়ে পালিয়েছে তাহলে মে’রেই ফেলবে সবাইকে। সবার আগে ক্রোধ ঝারবে মেহরিমার উপর। ওনার একটা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ছেলে ও ছেলের বউয়ের সম্পর্কে ফাটল চান না। এমনিতেই তোহাশের ব্যাপারটা এখনও শূণ্যতেই আটকে রয়েছে। অনেক চেয়েও এ বাড়িতে আনতে পারছেন না তাকে।
ফাতেমা ভয়ে ভয়ে মেহরিমার কাছ ঘেঁষে জিজ্ঞেস করলেন,
‘ এই মেয়ে বলে দিলে?’
‘ বলবে না আম্মা। সেই সুযোগ আমি দিব না। ‘– মেহরিমার নির্লিপ্ত জবাব।
শ্রেয়া প্রিয়ুর বাবা-মা,দাদির সাথে কুশলাদি বিনিময় করে রুমে আসল। একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে চিন্তায় মশগুল হলো। অনেক ভেবে মুচকি হেসে হাঁটা ধরলো তূর্যকে খোঁজার জন্য। প্রিয়ু পিছন থেকে ডাকল,
‘ কোথায় যাচ্ছিস?’
‘ জামাই কে আঁচলে বাঁধতে। ‘
থেমে না থেকে দীর্ঘ করিডোরে ধীরস্থির গতিতে হাঁটতে শুরু করে শ্রেয়া। সেই সাথে ভিতরে ভিতরে সাহস জোগাচ্ছে। প্রিয়ুর কাছ থেকে শুনেছে তূর্যর রুম টা একদম শেষ মাথায় ও কর্ণারে। সেই মোতাবেক চলছে পা। কিন্তু বাঁধ সাধল মেহরিমা। কব্জি ধরে টেনে ওকে রুমে নিয়ে এলো। দেখল একটা মেয়ে জানালার ধারে দাঁড়িয়ে। শ্রেয়া কিছুই বুঝতে পারছে না। কব্জি ছাড়িয়ে কঠিন স্বরে বললো,
‘ কি করছেন আপনি? এভাবে টেনে এনেছেন কেন?’
রাগান্বিত চক্ষে তাকালেন মেহরিমা। মেয়েটাকে কেন্দ্র করে বললেন,
‘ ডিভোর্স পেপার টা বের করো অহমিকা। তোমাকে বললাম না এই মেয়ে আসবে?চলে এসেছে। এখন আর দেরি করা ঠিক হবে না। ‘
অত্যধিক সুন্দর একটা মেয়ে। চোখ দুটো টানা টানা। চাউনি তীক্ষ্ণ। ঠোঁটে আলতো হাসি ঝুলিয়ে বললো,
‘ সাইন করবে তো আন্টি?’
শ্রেয়ার কন্ঠস্বর রোধ হয়ে এলো সঙ্গে সঙ্গে। আত্মচিৎকারে মনোনিবেশ করলো অন্তর। তবুও শক্ত চোখে চেয়ে তেজী কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ সাইন করবো না আমি মিস অহমিকা ও শাশুড়ী আম্মা। ‘
#চলবে,,!
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।)