#শ্রেয়সী
#পর্ব_১৩
#লেখনীতে_নাদিয়া_সিনহা
সকাল বেলায় ঘুম ভাঙ্গতেই মাথায় অসহ্য অসহনীয় যন্ত্রণা অনুভব করি। শ্বাস নিতেও বেশ কষ্ট হচ্ছে। বেশ বুঝতে পারছি কাল রাতে আইসক্রিম খাওয়ার ফল সব। রোদ্দুর বুদ্ধি তাহলে কাজে দিয়েছে। মনে মনে বেশ খুশীও হচ্ছি। যাক তাহলে বেঁচে গেলাম। সম্মুখে দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই দেখি নুসু আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে গভীর কিছু পরখ করছে৷ আমি ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করি,”এভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?”
নুসু আমার ইশারা বুঝতে পেরে দ্রুত পায়ে আমার পাশে এসে বসে। কন্ধ বাঁকিয়ে বিভিন্ন এঙ্গেলে পরখ করে জিজ্ঞেস করে,
-“কিরে তোকে তো দেখি একদম ফিটফাইন দেখাচ্ছে। এই তোর না অসুস্থ থাকার কথা? তাহলে তুই সুস্থ কেনো?”
কিছু বলতে যাব তখনই অনুভব হয় গলায় কেমন চাপা ব্যথা করছে। ঢোঁক গিলতেও কষ্ট হচ্ছে। বড় বড় চোখ করে নুসুর দিকে তাকিয়ে ইশারায় বোঝাই আমি কথা বলতে পারছি না। নুসুও মাথা নাড়িয়ে ইশারায় বোঝায় গলা ভেঙেছে কি না? আমি দ্রুত মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দেই। নুসু বসা থেকে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে,
-“ইয়েএএএ! আল্লাহ বাঁচিয়েছে রে শ্রেয়ু। তোকে দিয়ে গান কেনো কথাও বলাতে পারবে না কেউ। অনুষ্ঠান শেষ হওয়া পর্যন্ত তুই মিউট থাকবি।”
নুসুর দিকে তাকিয়ে আমিও মিটমিট হাসছি। ওয়াশরুমের দরজা ঢেলে বিরবির করতে করতে রোদ্দু বেরিয়ে আসে। আমাদের দিকে একবার তাকিয়ে বিছানায় বসে পরে। বিরক্তিকর দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আমার পানে। চিবিয়ে চিবিয়ে বলে,
-“ফালতু হোস্টেল। তোর জন্য ফেঁসে গেছি। তোর থাকার হলে থাক। আমি আর থাকব না।”
নুসু ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করে,
-“কেনো? তোকে আবার কোন জ্বী’ন কামড়ছে?”
-“আশ্চর্য জ্বী’ন কেনো কামড়াতে যাবে?”
-“ওয়াশরুম থেকে বের হলি তো তাই। ওখানে তো জ্বী’নের বসবাস।”
রোদ্দু অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে নুসুর পানে। আমি ওষ্ঠদ্বয় চেপে হাসছি। নুসুও দাঁত কেলিয়ে দিব্যি হাসছে। তা দেখে রোদ্দু নুসুর দিকে তেড়ে এসে বলে,
-“ফা’জি’ল, ব’দের হা’ড্ডি আমার চোখের সামনে থেকে দূর হো।”
-“কি এমন বললাম যে চলে যেতে বলছিস।”
-“তোর মাথা। আমার মন মেজাজ খারাপ প্লিজ মজা করিস না।”
আমি ইশারায় জিজ্ঞেস করলাম, “কি হয়েছে?”
রোদ্দু আমার দিলে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে শক্ত দুরূহ কন্ঠে বলে,
-“ভোর সকালে গেছিলাম গোসল করতে। যেই না সাবান মাখিয়ে পানি ঢালতে যাব ওমনি পানি শেষ। এত চেঁচালাম কেউ শুনলো না। তোরাও ম’রা’র মত পরে পরে ঘুমাচ্ছিলি। প্রায় দেড় ঘন্টা ওভাবেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। না পানির কোনো খোঁজ ছিলো আর না তোদের। বিভীষণের বংশের দল!”
এতক্ষণ আমি আর নুসু দুগালে হাত দিয়ে নিরব শ্রোতা হয়ে মনোযোগ দিয়ে পুরো কথা শুনছিলাম। রোদ্দু যেই না কথা শেষ করলো ওমনি নুসু উচ্চস্বরে হেসে দেয়। সাথে আমিও হেসে দেই৷ রোদ্দু এবার রেগেমেগো নুসুর গলা চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
-“বে’য়া’দ’ব মহিলা হাসবি না একদম। আমি জানি তুই আমার চিৎকার শুনেছিস ইচ্ছে করে আসিসনি।”
নুসুর হাসি থামছেই না। অটো হয়ে গেছে যেনো। আর রোদ্দু রাগে-দুঃখের আরও জোরে গলা চেপে ধরে ঝাঁকাচ্ছে। আমি হাত দিয়ে ইশারা করার পরও থামছে না। খানিকক্ষণ বাদে রোদ্দু নুসুকে জোরে ধাক্কা দিয়ে খাট থেকে ফেলে দেয়। নুসুর হাসতে হাসতে চোখ দিয়ে পানি চলে এসেছে তবুও হাসছে। আমি রোদ্দু কে ইশারা করে গলা চেপে বলি,”কাজ হয়ে গেছে।”
রোদ্দু জোরে একটা শ্বাস নিয়ে ভাব দেখিয়ে বলে,
-“দেখতে হবে না প্লান টা কার রোদ্দু দ্যা রৌদ্রসীর। রোদ্দুর কোনো প্লান কখনও বিফলে যায় না।”
ফ্লোর থেকে নুসু লাভ দিয়ে উঠে উত্তেজিত কন্ঠে বলে,
-“তোর মাথায় যখন এতই বুদ্ধি তাহলে আমাকেও একটা উপায় বল যেনো নাচ না করতে হয়।”
রোদ্দু নুসুর দিকে ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে বলে,
-“কোনো বিভীষণের উপকার রোদ্দু করে না। সামনে থেকে সর।”
-“রোদ্দু প্লিজ আমাকেও শ্রেয়ুর মতো এই যাত্রায় বাঁচিয়ে দে। তুই যা বলবি তাই করব।”
-“তোকে তো উপায় করেই দিচ্ছিলাম কিন্তু তুই কি বললি? আমার থেকে হেল্প নেওয়ার থেকে নাচ করাই শ্রেয়।”
নুসু বিষ্ময়কর চাহনি নিক্ষেপ করে রোদ্দুর পানে অবাক হয়ে বলে,
-“তোকে আমি কখন এটা বললাম? আমি তো বলেছি তোর থেকে মা’র খাওয়ার চেয়ে নাচ করা শ্রেয়।”
-“ওই একই কথা।”
-“রোদ্দু প্লিজ হেল্পটা কর না।”
-“যা বলব তাই করবি?”
নুসু কিছু না ভেবেই মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে দেয়। রোদ্দু নুসু দিকে তাকিয়ে বলে,
-“রেডি হয়ে নে আমরা হসপিটাল যাচ্ছি।”
-“হসপিটালে কেনো?”
রোদ্দু আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
-“ভয় পাস না। তোর ট্রিটমেন্ট করাতে নয় নুসু মেন্টালের ট্রিটমেন্ট করাতে নিয়ে যাব।”
-“কিহ? তুই আমাকে মেন্টাল বললি। তোকে আমি….”
-“হেল্প চাই, কি চাই না?”
-“চাই চাই।”
-“তাহলে চুপচাপ থাকবি। আমি যা যা করব তা তা মেনে নিবি। ওকে?”
ভয়ার্ত কন্ঠে নুসু ‘ওকে’ বলে সম্মতি দেয়। রোদ্দু আমাকে আর নুসু কে রেডি করিয়ে হসপিটালে উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। পুরো রাস্তা নুসু অসহায় মুখ করে ছিলো। আর রোদ্দু ছিলো ভাবলেশহীন। যেনো কিছুই হয়নি। হসপিটালে প্রবেশ করেই রোদ্দু ড্রেসিংরুমের দিকে হাঁটা শুরু করে। সব কিছু যেনো আমার আর নুসুর মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। চুপচাপ রোদ্দুর পিছু পিছু যাচ্ছি৷ ড্রেসিংরুমে ভিতরে গিয়ে রোদ্দু নুসু কে বলে বেডে বসতে। নুসুও চুপচাপ রোদ্দুর কথা মতো গিয়ে বেডে বসে পরে। কিছুক্ষণ পর একজন লোক এসে রোদ্দু কে জিজ্ঞেস করে,
-“কেমন আছো রৌদ্রসী?”
-“এই তো ভালো আছি। আপনি?”
-“বেশ ভালো। তা হঠাৎ এখানে এলে যে? কারো কিছু হয়েছে?”
-“হ্যাঁ! আসলে আমার বান্ধবী নুসাইবা ওর পা মুচড়ে গেছে। তাই ব্যান্ডেজ করাতে নিয়ে এলাম।”
নুসু রোদ্দুর দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে বলে,
-“কি আজেবাজে কথা বলছিস? আল্লাহ রহমতে আমার পা থেকে মাথা অব্দি সব কিছু ঠিক আছে।”
-“নুসুর বাচ্চা চুপচাপ বসে থাক। না হয় তোর কোনো হেল্প আমি করব না।”
রোদ্দুর কথায় নুসু দমে যায়। চুপ করে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে। পাশে থাকা লোকটা রোদ্দুর কথা মতো ওর পায়ে মোটা ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে দেয়। আর একটা ক্রাচ হাতে ধরিয়ে দেয়। নুসু বেচারিকে অসহায় লাগছে। মাসুম বাচ্চাদের মতো মুখ করে আমার দিকেই তাকিয়ে। আমি চোখের ইশারায় আশ্বাস দেই শান্ত হয়ে বসতে। রোদ্দু লোকটার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে আমাদের নিয়ে বেরিয়ে পরে। নুসুর হাঁটতে বেশ অসুবিধা হচ্ছে। আমি আর চেপে রাখতে না পেরে ভাঙ্গা কন্ঠে রোদ্দু কে প্রশ্ন করেই ফেলি,
-“শুধু শুধু এসব করতে গেলি কেনো?”
-“ওমা এখনও বুঝিসনি? অবশ্য তোদের মতো মাথা মোটার মাথায় এসব ঢুকবে কি করে বল?”
নুসু বিরক্ত হয়ে বলে,
-“একদম হেয়ালি করবি না রোদ্দু বল এমনটা কেনো করলি?”
-“এখন আমরা কলেজে যাব। তারপর যাব সিনিয়রদের কাছে। গিয়ে বলব তোর নাম লিস্ট থেকে কেটে দিতে। তোর পা ভেঙে গেছে নাচ করতে পারবি না।”
পরক্ষণেই নুসুর চোখে মুখে উল্লাস দেখা দেয়। উত্তেজিত হয়ে চিৎকার দিয়ে উঠে। রোদ্দু গুরুর মতো হাত উঠিয়ে বলে,
-“নুসু বাছা জিতে রাহো রোদ্দু গুরুর আশীর্বাদে।”
নুসু রোদ্দুর দিকে তাকিয়ে বলে,
-“এই রোদ্দু আমি আর শ্রেয়ু তো বেঁচে গেলাম তুই কি করবি?”
-“কি করবো?”
-“তোর বিতর্কের কি হবে? তুই তো টপিক পাল্টে ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলবি।”
-“তোদের মতো ভীতু এই রোদ্দু না। ওই সাজ্জাদ দ্যা ব’জ্জা’ত’কে বিতর্কে যদি না হারিয়েছি আমিও রোদ্দু না।”
-“রোদ্দু একটা কথা বলবি? সত্যি করে বলবি কিন্তু।”
-“রৌদ্রসী মিথ্যা বলে না বাছা। যা বলার বলে দে।”
নুসু মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বলে,
-“তুই কি সাজ্জাদ ভাই কে পছন্দ করিস?”
নুসুর প্রশ্ন রোদ্দু আশ্চর্য হয়ে ওর দিকে তাকায়,
-“কিহ বললি? আমি তাও সাজ্জাদের প্রেমে! অসম্ভব। ম’রে গেলেও না।”
-“এত উত্তেজিত হচ্ছিস কেনো? জিজ্ঞেসই তো করলাম মাত্র।”
-“তোর বোঝা উচিত তুই কেমন অযৌক্তিক প্রশ্ন করেছিস। এবার চল কলেজে যাওয়া যাক।”
এতক্ষণ আমি নির্বাক শ্রোতা হয়ে সবটা শুনেছি শুধু। কথাও বলতে পারছি না তাই চুপ থাকা ছাড়া উপায়ও নেই। মনে মনে কয়েকবার ভেবে নিয়েছি আমাকে এই অবস্থায় দেখে আরাবীর হাল কেমন হবে। আরাবী কথা মনে পরতেই কেমন অনুভূতি হয়। অনুভূতিটা খারাপ নয়। সুপ্ত স্নিগ্ধ, বিশুদ্ধ অনুভূতি।
_____________________
ক্রাচ হাতে নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটছে নুসু। তা দেখে হেসে কুটিকুটি হয়ে যাচ্ছে রোদ্দু। রোদ্দুর বেশ মজা লাগছে ব্যাপারটা। আমিও মিটমিট করে হেসেই যাচ্ছি। আমরা তিনজনই কলেজ রিহার্সাল রুমে চলে আসি। ক্লাসের ফাঁকেই ডেকে পাঠিয়েছে রিহার্সালের জন্য। মনে মনে আমি বেশ উৎসাহিত। কারণ আজ একটা ধামা হবেই হবে।
রিহার্সাল রুমে এসে আমরা তিনজন এক কোনে দাঁড়িয়ে রই। আমাদের আসার একটু পরই আরাবীরা চলে আসে। আরাবী আমার দিকে একবার তাকিয়ে সামনে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আসিফ ভাইয়া এসে আমাকে বলে,
-“শ্রেয়সী তোমার নাম গানে দেওয়া হয়েছে। তুমি গান করবে আর তোমার পার্টনার আরাবী।”
পাশ থেকে রোদ্দু আফসোসের স্বরে বলে,
-“ও গান করবে কি করে? বেচারির ঠান্ডা লেগে গেছে। গলাটাও বসে গেছে একদম।”
আসিফ ভাইয়া কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে চলে যায়। আসিফ ভাইয়া যাওয়ার খানিক্ষন বাদে আগমন ঘটে আরাবী। এসেই তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছুঁড়ে দেয় আমার পানে। আমি ভয়ে চোখ নামিয়ে নেই। আরাবী কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলে,
-“ঠান্ডা লেগেছে কি করে?”
আমার হয়ে রোদ্দু বলে,
-“আহা! দেখছেন না সিজন পাল্টাচ্ছে। তাই ঠান্ডা লেগে গেছে।”
-“সব সময় তুমি উত্তর দেও কেনো? তোমাকে কি শ্রেয়সী তাঁবেদারি করতে রেখেছে?”
আরাবী কথায় রোদ্দু রেগেমেগে ব’ম হয়ে যায়। রাগে রি রি করছে আমার দিকে তাকাতেই আমি অসহায় ভরা দৃষ্টিতে তাকাই। রোদ্দু তো চুপ থাকতেই পারে না তাই আরাবীর বলার পরও চুপ হয়নি।
-“আপনি কি? নি’র্ল’জ্জ লোক সব সময় শ্রেয়ুর পিছু পিছু আসেন। আর কোনে কাজ নেই নাকি?”
-“মিস.রোদ্রসী চুপ করে থাকুন। আমাকে রাগাবেন না। আমি খুব ভালো করে জানি শ্রেয়সীর অসুস্থ হওয়ার পেছনে আপনার হাত আছে।”
-“কি বলতে চান হ্যাঁ? আমার বান্ধবী কে আমি অসুস্থ করেছি।”
-“অযথা তর্কে আমি যেতে চাই না। শ্রেয়সী চলো আমার সাথে।”
-“শ্রেয়ু কোথাও যাবে না।”
-“আমি যখন নিয়ে যাব তখন তাকে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেতে হবে। সাজ্জাদ এদের সামলা। ঝামেলা করলে মাঠে নিয়ে কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখবি।”
সাজ্জাদ ভাই আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে,
-“কিরে এই ড্রামাবাজের আবার কি হলো? এমন লেঙ্গরার মতো দাঁড়িয়ে আছে কেনো?”
সাজ্জাদ ভাইয়ের কথায় নুসু বলে,
-“দেখছেন না? অন্ধ নাকি আপনি?”
রোদ্দু বিদ্রু কন্ঠে বলে,
-“আজকে জানলি অন্ধ? আমি তো সেই প্রথম দিন থেকে একে অন্ধ বলেই জানি?”
সাজ্জাদ ভাই খানিকটা কঠোর স্বরে নুসু কে জিজ্ঞেস করে,
-“পায়ে কি হয়েছে?”
নুসু আর কি উত্তর দেবে আমতাআমতা করতে করতে তার সকল ভাষা হারিয়ে ফেলছে। তাই এবারও রোদ্দুই জবাব দেয়,
-“আসলে হয়েছে কি রাস্তা পার হওয়ার সময় হঠাৎ করেই নুসুর পা মুচড়ে যায়।”
রোদ্দুর কথায় সাজ্জাদ ভাই সহ উপস্থিত সকলে হেসে দেয়। একমাত্র আরাবীর মুখশ্রীতে হাসি নেই। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার প্রেয়সীর দিকে। সাজ্জাদ ভাই হাসতে হাসতে আরাবী কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলে,
-“একজন আসছে গলা ভেঙে। আরেকজন আসছে পা ভেঙে। (রোদ্দু কে দেখিয়ে) এখন এটার ব্যবস্থা আমরা করি? কি বলিস?”
আরাবী আমার দিকে তাকিয়েই জবাব দেয়,
-“হুম ব্যবস্তা তো একটা করাই যায়। তুই এদের ব্যবস্থা কর আর আমি (শ্রেয়সী) এর করছি।
আমি ভয়ে ভয়ে নাক টেনে আরাবী কে বলি,
-“দেখুন এখন আমি কোথাও যাব না। নুসুর অবস্থাও ভালো নেই। রোদ্দু একা পারবে না।”
-“তার জন্য সাজ্জাদ আছে তুমি আমার সাথে চলো।”
আমাকে আর বলার সুযোগ না দিয়ে হাত ধরে টানতে শুরু করে। আমি মনে মনে সকল দোয়া দরুদ পড়া শুরু করে দিয়েছি। আল্লাহই জানে আজ আমার কি হয়। নির্ঘাত আরাবী আমাকে কোনো না কোনো শাস্তি দিবেই। তার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। প্রস্তুত হবো কি? ভয়ে আমার আ’ত্মা শুকিয়ে কাঠ।
~চলবে….