শূন্যতায় পূর্ণতা পর্ব ৮

0
497

#শূন্যতায়_পূর্ণতা
#হীর_এহতেশাম

||পর্ব-৮||

★ফ্ল্যাশব্যাক..

এই প্রথম আরশ বাবার সাথে কারো ইনভাইটেশনে যাচ্ছে। নিজেই ড্রাইভ করলো। কাদের শিকদার পুরো রাস্তা শুধু আরশকেই দেখছিলো। গুনগুনিয়ে গান করতে করতে প্রফুল্লচিত্তে সে ড্রাইভ করছে। কাদের শিকদার বুঝতে পারছেনা কিসের এত আনন্দ। ফারহিনের বিয়ে কিছুদিন পর, যদি আরশ ফারহিন কে পছন্দ করেই থাকে তাহলে কেন তার এত আনন্দ? ছেলের ভাবসাব ভালো ঠেকলো না। হর্ণ দিতেই দারোয়ান গেইট খুলে দিলো। আরশ গাড়ি পার্কিং করে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো। পরনের স্যুট ঠিক করে ঘুরে দাঁড়ালো। পুরো বাড়ি ডেকোরেশন করা। জমকালো সাজ বাড়ির। বাবার ইশারায় আরশ সামনে পা বাড়ালো। বাবা ছেলে একসাথেই বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো। প্রবেশের সময় আরশ এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলো। হয়তো তার দৃষ্টি ফারহিন কে খুঁজছে। এদিক ওদিক তাকানোর খেয়ালে আরশের পা কার্পেটে আটকে গেল। আরশ উপুড় হয়ে পড়ে যাওয়ার আগেই কেউ একজন হাত টেনে ধরলো। আরশ দ্রুত পেছনে ফিরে তাকাতেই দেখলো ফারহিন। আরশের দেওয়া ব্রাউন রঙের গাউনটাই পরেছে। আরশ সোজা হয়ে দাঁড়ালো। একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো ফারহিনের দিকে। ফারহিন হালকা হাসলো, বলল-
“-কোনদিকে তাকিয়ে হাটছিলেন?
“-কোনোদিকেই না।
“-দেখে শুনে চলুন। ভরা মজলিসে নাহলে বেইজ্জতি হয়ে যাবে।
“-আচ্ছা।

ফারহিন চলে গেল। আরশ ফারহিনের যাওয়ার দিকেই তাকিয়ে রইলো। কাদের শিকদার ধীর গতিতে এসে দাঁড়ালো পাশে। আরশের চোখ যেন কথা বলে। হয়তো সে চেয়েছিলো ফারহিন থাকুক চলে না যাক। কাদের শিকদার এই প্রথম আরশের চোখের ভাষা বুঝলো। ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে বলল-
“-এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি আলাপ ও করবে?
“-চলো। আরশ পা বাড়াতেই আরশের ফোন বেজে উঠলো। আরশ বলল-
‘-তুমি যাও আমি আসছি।
আরশ বাড়ির বাহিরে চলে এলো। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ম্যানেজার বলল-
“-স্যার আমি এহমাদ।
“-জি বলো?
“-স্যার মিটিংয়ের ডিটেইলস আর পেপারস মেইল করেছি আপনি চেক করে নিয়েন।
“-ওকে..
ফোন রেখে ফিরতেই ফারহানার মুখোমুখি হলো আরশ।
“-হাই ভাইয়া!
“-হাই!! কেমন আছো?
“-অনেক ভালো। আপনি?
“-এইতো ভালো।
“-ভাইয়া আপনাকে দারুণ লাগছে।
“-থ্যাংক ইউ। তুমি কি আজ রাত এখানেই থাকবে?
“-হ্যাঁ। ফারহিনের বিয়ে তো সামনে তো আমি কয়েকদিন এখানেই থাকবো।
আরশের মুখ মলিন হয়ে গেল। তবুও মুখে হাসি রাখার চেষ্টা চালালো বলল-
“-ওহ্! তা তোমার ফ্রেন্ডের হবু হাসবেন্ড এর ছবি নেই?
“-আছে তো ওয়েট দেখাচ্ছি।
বলেই ফারহানা ফোনের লক খুলল। হঠাৎ গাড়ির হর্ণ শুনে ফারহানা তাকালো। গাড়ি থামতেই গাড়ি থেকে তীব্র নেমে এলো। তীব্র কে দেখে ফারহানা বলল-
“-ছবি দেখতে হবেনা সরাসরিই দেখে নিন। ওইযে ওটা ফারহিনের উডবি।
আরশ ফারহানার হাত অনুসরণ করে তাকাতেই চরম বিস্ময়ে পৌঁছে গেল। অস্ফুটস্বরে মুখ থেকে বেরিয়ে এলো-
“-তীব্র!!

★তীব্র কে দেখার পরপরই আরশ চলে এসেছে। তীব্র কে দেখা দেয়নি। তীব্র ফারহিনকে পছন্দ করে, ফারহিনের সাথেই ওর বিয়ে ঠিক হয়েছে এই একটা ব্যাপার আরশ মেনে নিতে পারছে না। দ্রুত গাড়ির ব্রেক করলো। গাড়ি থেকে বের হয়ে দাঁড়ালো। রাগে থরথর করে কাঁপছে সে। নির্জন রাস্তায় আরশ গগন কাঁপিয়ে চিৎকার দিলো। গাড়ির গ্লাসেই প্রচন্ড জোরে ঘুষি বসালো। একের পর এক আঘাতে গাড়ির গ্লাস ভেঙে চুরমার হয়ে গেল। কাঁচের টুকরো আরশের হাতে বিধে গেছে। আরশ ঘুরে দাঁড়িয়ে গাড়ির সাথে পিঠ ঠেকিয়ে রাস্তায় বসে পড়লো। হাত থেকে অঝোর ঝারায় রক্ত ঝরছে। ডান হাতটা চোখের সামনে ধরতেই হাতের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে আরশ রক্তে মাখা হাতেই নিজের মাথার দুপাশ চেপে ধরলো। মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা করছে। এই মুহুর্তে সে কিছুতেই ড্রাইভ করতে পারবেনা। এমন উত্তপ্ত মেজাজে সে কিছুতেই ড্রাইভ করতে পারবেনা বলেই রাস্তাতেই বসে রইলো৷ রক্ত যেন বাধা মানছে না। নিজ গতিতে গড়িয়ে পড়ছে। রাস্তায় রক্তের দাগ, কোর্ট শার্ট রক্তে ভিজে একাকার। চোখে ঝাপসা দেখছে আরশ। চারপাশ ঘোলা লাগছে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। চোখের সামনে আবারো হাতটি তুলে ধরলো। হাতের করুন দশা দেখে আরশ হেসে উঠলো, বলল-

“-আমি কিছু চাইনি। এই প্রথম কিছু চাইলাম তাও কিনা অন্যের হয়ে যাবে? আমার ভাগ্য এতটা খালি করে আমাকে কেন দুনিয়াতে পাঠালে আল্লাহ? আমার তো কেউ নেই। বাবা থেকেও ছিলো না। আর মা তাকে তো আমি দেখিও নি। তাহলে কেন আজ এই দিন দেখালে? কেন এমন একটা পরিস্থিতিতে এনে দাঁড় করালে? আমার জিনিস, আমার সুখ তুমি অন্যকে দিয়ে কি শান্তি পাও? আমার কথাটা কখনো ভাবলে না তুমি? আমি কি নিয়ে থাকবো, কিভাবে আমার জীবন চলবে আমায় নিয়ে ভাবোনি? কেন আমার প্রতি তুমি এত উদাসীন? কেন?

আরশ থামলো। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া পানি মুছে বলল-
“-ইম্পসিবল। তীব্রের কাছে সব আছে। মা, বাবা সব। আমার কাছে নেই। আমি কখনোই আমার কাছ থেকে ফারহিনকে দূরে যেতে দেব না। তাতে যদি আমায় তীব্রের কাছ থেকে ওকে কেড়ে নিতে হয় আমি তাই করবো। আমি এতটা দয়ালু না। আমি আমার জিনিস, আমার জায়গা কখনো অন্য কারো জন্য ছেড়ে দেব না। ফারহিন শুধু আমার। ফারহিন আমার! আমি কিছুতেই এই বিয়ে হতে দেব না। এতে যা করার প্রয়োজন আমি করবো। আমি অনেকদিন তোমার উপর ভরসা করে ছিলাম, আর না। তুমি কখনো আমার সঙ্গ দাওনি, তুমি সবসময় আমাকে এক পাশে সরিয়ে অন্য কাউকে নিয়ে ভেবেছো। কিন্তু এবার তা হবেনা। এবার আমি আমাকে নিয়েই ভাববো। ফারহিনের জন্য যদি সবাইকে ত্যাগ দিতে হয় আমি তাই দেব। আমার ওকেই লাগবে, পুরোপুরিভাবেই। তীব্রকে সরে যেতেই হবে। হয় নিজ ইচ্ছায়, নাহলে সরানোর মাধ্যম আমার জানা আছে।

আরশ উঠে দাঁড়ালো। গাড়ির দরজা খুলে বসে পড়লো। রক্তাক্ত হাতে স্টিয়ারিং ধরতেই হাতে চাপ পড়লো। রক্ত আরো জোরে ছিটকে বেরিয়ে এলো। আরশ স্টিয়ারিং এ শক্ত করে চাপ দিতেই রক্ত প্রচন্ড ধারায় বইছে। স্টিয়ারিং চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছে। আরশ গাড়ি স্টার্ট দিলো, খুব স্পীডে।

★কাদের শিকদার এর ফোন বেজে উঠলো। দিদার হাসানের সাথে কথা বলা বন্ধ করে ফোনটা রিসিভ করলো৷ ওপাশ থেকে উত্তেজিত কন্ঠস্বর ভেসে এলো,
“-হ্যালো কে বলছেন?
“-কে বলছি মানে? এটা তো আমার ছেলের ফোন আপনি কোথায় পেলেন?
“-স্যার এখানে একটা গাড়ির এক্সিডেন্ট হয়েছে। আমি ট্রাফিকে ডিউটিরত পুলিশ বলছি। আপনার ছেলের খুবই বাজে অবস্থা দ্রুত চলে আসুন। তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
“-আমি আসছি। আপনি এড্রেস আমায় মেসেজ করে দিন।
কাদের শিকদার হন্তদন্ত হয়ে উঠে দাঁড়ালো। দিদার হাসান এমন অস্থিরতা দেখে প্রশ্ন করলো-
“-কি হলো? আপসেট দেখাচ্ছে কেন এত?
“-আরশের এক্সিডেন্ট হয়েছে। আমায় যেতে হবে।
“-গড! চল আমিও সাথে যাবো।
“-পার্টি ছেড়ে?
“-পার্টি পরেও পাওয়া যাবে কিন্তু ছেলে পাওয়া যাবেনা। চল!
দুজনেই বেরিয়ে পড়লো হাসপাতালের উদ্দেশ্য। কাদের শিকদার বুঝলো না আরশের কি হলো। এখানে আসার সময় তো ভালোই হাসিখুশি ছিলো, হুট করে কি এমন হলো যে আরশ না বলে চলে গেল। আর এমন অঘটন ঘটলো কীভাবে? দুশ্চিন্তাগ্রস্ত কাদের শিকদারের অস্থিরতা কমাতে দিদার হাসান বললেন-
“-কিছু হবে না আরশের।
কাদের শিকদার তাকালো। নিজেকে অসহায় লাগে তার খুব। ছেলের বেহাল দশা, এমন বার বার আঘাত মেনে নিতে পারে বা তিনি।

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আরশ ড্রাইভ করতে করতেই সেন্সলেস হয়ে পড়েছিলো৷ গাড়ি ব্রেইক ফেল করে এক্সিডেন্ট হতে হতে বাঁচলো। কেবিনের বাহির থেকে ছেলের দিকে তাকিয়ে রইল কাদের শিকদার। সেন্স এখনো ফেরেনি তার। মুখে অক্সিজেন মাস্ক, এক হাতে ব্যান্ডেজ, স্যালাইন, ব্লাড চলছে। হাতে ক্যানুলা লাগানো। চোখ থেকে নিজের অজান্তেই পানি গড়িয়ে পড়লো কাদের শিকদার এর। নিজেকে সবচেয়ে বড় অপরাধী মনে হয় তার। টাকার পেছনে ছুটতে ছুটতে কখনো আরশ কেমন আছে সে জানতেই চায়নি। আর আজ তার একমাত্র ছেলের জীবন এমন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। দিদার হাসান ডাকলো-
“-সুস্থ হয়ে যাবে। চিন্তা করিস না।
“-নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবোনা। ওর আর আমার মধ্যে অনেক বড় দেওয়াল দিদার। যা আমি নিজের হাতে বানিয়েছি। আমি কখনো ওর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করিনি৷ কখনো ওকে বোঝার নুন্যতম আগ্রহ দেখাই নি। আমার ছেলেকে আমিই আজীবন একাকিত্বের অতলে ঠেলে দিলাম।
“-কাদের! এসব ভেবে লাভ নেই। ওর খেয়াল রাখ তুই। ওকে এভাবেই ছেড়ে দিস না। আগে পারিস নি। এখন তো পারবি, এখন সময় দে।
“-কিছু কিছু দূরত্বের অবসান হয়না।

★ছাদের এক পাশে রেলিং নেই। সেখানে পা ঝুলিয়ে বসে আছে ফারহিন আর ফারহানা। তীব্র ছাদে গিয়ে ফারহিন কে দেখে ধীর পায়ে এগিয়ে গেল। দুজনের পেছনে দাঁড়িয়ে বলল-
“-আমি একটু বসতে পারি?
ফারহানা দ্রুত উঠে দাঁড়ালো৷
“-আরে ভাইয়া কেন নয়? বসুন না প্লিজ।
তীব্রকে বসতে দিয়ে ফারহানা চলে গেল। ফারহিন কিছু বলার সুযোগ ও পেল না। ফারহানা চকে যাওয়ার পর ফারহিন উঠে দাঁড়ানোর জন্য উদ্যত হলে তীব্র আটকালো।
“-একটু থাকো? যেও না।
“-কেন? বেইজ্জতি বাকি আছে?
“-আমি তোমাকে কোনো বেইজ্জতি করতে চাইনি ফারহিন। আমি সেদিন তোমার প্রপোজাল এক্সেপ্ট করিনি রিজেক্ট করেছি আমি জানি। তোমার এসএসসি পরীক্ষা চলছিলো। শুধু তাই না আমি সত্যিই সেদিন ভেবেছিলাম বয়সের প্রভাবে, আবেগে এসব হয়েছে।
ফারহিন ঘুরে তাকালো দ্রুত। তীব্র আবারও বলল-
“-সেদিন তোমার ওই কান্না ভেজা চোখ আমার চোখের ঘুম হারাম করে নিয়েছিলো, আমি চুপচাপ সহ্য করেছি সেই অস্থিরতা। নিজের ভেতর কেন এত অস্থিরতা হচ্ছিলো আমি বুঝতে পারিনি। আমি কোনো মেয়ের সাথে নিজের জীবন জড়াইনি। নিজেকে আলাদা রেখেছি। কেন তাও জানিনা। কারো মাঝে আগ্রহ পাইনি কেন তাও জানিনা। পরে বুঝতে পারলাম আমি তাকে ভালোবাসি যাকে আমি দূরে ঠেলে দিয়েছিলাম। আমি তোমার মায়ায় জড়িয়ে পড়েছিলাম নিজ অজান্তে। আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ছাড়া আমি..
“-আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না তীব্র। কারণ আপনিই বলেছিলেন আপনার মুড চেঞ্জ হয়। মনে আছে? জানিনা এই মুড টা কখন আবার চেঞ্জ হয়ে যাবে। কখন আবার মনে হবে ফারহিন আপনার জন্য যোগ্য না।
তীব্র ফারহিনের ঠোঁটে আঙুল ঠেকালো। আর বলতে দিলো না। এক হাতের এক আঙুল ঠেকিয়ে অন্য হাত উচু করে একটা লকেট দেখালো। ফারহিন লকেটের দিকে তাকালো। লকেটে গোলাকার একটা আয়না আছে। সেই আয়নাটা বক্স সিস্টেম। তীব্র সেটা সরাতেই দেখলো ওখানে দুটি এলফাবেট। একটা ‘T’ অন্যটা ”F’। ফারহিন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। তীব্র লকেট টা ফারহিনের গলায় পরাতে পরাতে বলল-
“-এটা কেন আড়ালে দিয়েছি জানো? কারণ আমিও এতদিন আড়ালে থেকেই তোমাকে ভালোবেসেছিলাম।
কথাটা তীব্র একদম ফারহিনের কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল। ফারহিন সরে যেতে চাইলো কিন্তু পারলো না। তীব্র ফারহিনের অনেকটা কাছেই চলে এসেছে। হঠাৎ তীব্রের ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো। তীব্র স্তম্ভিত ফিরে পেল। দ্রুত সরে গেল। ফোন রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে কি বলল ফারহিন শুনতে পেল না। তীব্র ফোন রেখে হন্তদন্ত হয়ে উঠে দাঁড়ালো। ফারহিন কে বলল-
“-আমার বেস্টফ্রেন্ড হসপিটালে এডমিট, আজ আসি! অন্যদিন কথা হবে।

ফারহিন কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই তীব্র স্থান ত্যাগ করলো। ফারহিন ছাদ থেকে তীব্রের গাড়ির দিকে তাকিয়ে রইলো। বার বার লকেটটা নিজ হাতে স্পর্শ করছে। গাড়ি দ্রুত বেগে বের হয়ে গেল।

চলমান….

||ভুল ক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ||

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here