শালুক ফুলের লাজ নাই(১৯)

0
1108

#শালুক_ফুলের_লাজ_নাই (১৯)

আকাশ আজ অত্যধিক নীল লাগছে।বর্ষাকালের আকাশ হয় মেঘে ঢাকা, মুখ গোমড়া করে থাকে। কিন্তু আজকের আকাশ ভীষণ সুন্দর। মন ভালো করে দেওয়ার মতো সুন্দর লাগছে। ঠান্ডা হাওয়া বইছে।

আশা ছাদে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে।আজকে আশার বাবা মা আসবে বিয়ের কথা পাকা করতে।
আশার মন আজকে ভীষণ ভালো। ফুরফুরে মেজাজে হাটছে ছাদে।হাটতে হাটতে একবার শালুকের রাজ্যের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
কিছুটা মন খারাপ হলো আশার।
ধ্রুব আর শালুক বাড়ি থেকে চলে গিয়েছে আজ ১৮ দিন হলো।
এরমধ্যে একবার ও আশা ধ্রুবর সাথে কন্টাক্ট করতে পারে নি। বার বার ধ্রুবর ফোন বন্ধ পেয়েছে।
ধ্রুব ও কোনো রকম যোগাযোগ করে নি।

অবশ্য ভালো করেছে যোগাযোগ না করে। সে তো আর এই বাড়িতে ফিরে আসবে না। এই বাড়ির মানুষদের যতো দ্রুত ভুলে যাওয়া সম্ভব ভুলে যাক ওরা।তাহলে নিজেরা ভালো থাকবে।

আদনান রেলিং এ পা ঝুলিয়ে বসে সিগারেট টানছে।উদাসীন দেখাচ্ছে তাকে খুব।তবে মনের মধ্যে একটা সুক্ষ্ম আনন্দের অনুভূতি সে টের পাচ্ছে। তাদের বিয়েটা হয়ে গেলে খুব দ্রুত আদনান ওখানকার সিটিজেনশিপ পেয়ে যাবে।একটা বিন্দাস লাইফ আদনানের জন্য অপেক্ষা করে আছে।
আশা এগিয়ে গিয়ে আদনানের আধখাওয়া সিগারেট নিলো।তারপর নির্দ্বিধায় খেতে লাগলো।

তার মন একটু বেশি খুশি। কি কারণে এতো বেশি খুশি আশা এখনো ব্যাপারটা ধরতে পারছে না। আদনানের সাথে বিয়ে ফাইনাল কথা হবে এটা একটা কারণ হতে পারে।
আশা পনিটেইল করে বাঁধা চুলগুলো খুলে দিলো। বাতাসে চুলগুলো আশার মুখমণ্ডল ঢেকে দিচ্ছে। চুল সরানোর চেষ্টা করছে না আশা।

আদনান মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো আশার দিকে। তার মনে হলো ওখানে যেনো শালুক দাঁড়িয়ে আছে। ওই যে শালুকের ঘাড় সমান ছোট করে কেটে ফেলা চুল।

আদনান নেমে এলো রেলিং থেকে। আশার মুখের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে গুঁজে দিলো কানের পেছনে। একটা ফুল গুঁজে দিলো কানের পেছনে। আশা পা সামান্য উঁচু করে আদনানকে একটা চুমু খেলো।

সেই মুহুর্তেই হঠাৎ করেই আবার মনে পড়ে গেলো এই আশা।শালুক নয়।শালুক নেই।হারিয়ে গেছে তার শালুক। কোথায় গেছে তা আদনান জানে না।
সবচেয়ে কষ্টকর বিষয় হচ্ছে বাকিটা জীবন শালুক হয়তো আদনানের সাথে কথা বলবে না যদি কখনো দেখা হয়ে যায়।

আদনানের বুকের ভেতর ভারী হয়ে গেলো। নিজের জীবনটা গুছিয়ে নেয়ার জন্য যেমন আশাকে দরকার ছিলো অপশন হিসেবে তেমনই আজীবন সংসার করতে শালুককে দরকার ছিলো।
শালুককে আর কোথায় পাবে আদনান!
সে তো কোহিনুর হিরার চাইতে ও দামী কিছু।কে জানে ধ্রুব তাকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছে। ধ্রুবকে আদনান চেনে ভালো করে। আত্মসম্মানী ধ্রুব কিছুতেই এই বাড়ি ফিরে আসবে না যেখানে তাকে আর শালুককে অপমান করা হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই ও তো ওর প্রবল আত্মসম্মানবোধ।

আদনান ঠিক করলো, আশাকে ছেড়ে দেওয়ার পর বিয়ে করবে শালুক নামের কাউকে।যেই আশার জন্য এতো কান্ড ঘটে গেলো তাকে আদনান নিজের স্বার্থ সিদ্ধির পর কিছুতেই জীবনে রাখবে না।আশার পশ্চাতে দুই লা/থি মেরে আদনান তাকে বের করে দিবে জীবন থেকে। লা/থি দেয়ার স্টাইল ও আদনান ভেবে রেখেছে।
তারপর খুঁজে বের করবে শালুক নামের একটা মেয়েকে।দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করবে আদনান।

এসব ভাবতেই আদনানের মন ভালো হয়ে গেলো।

আশা ঝুঁকে নিচের দিকে তাকিয়ে বললো, “আফিফারা চলে এসেছে, চলো আমরা নিচে যাই।”

আদনান দ্বিধান্বিত হলো। বিয়ের পর থেকে আফিফা তাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করে যাচ্ছে। সে যে আফিফার আপন বড় ভাই তা যেনো আফিফা ভুলেই গেছে।মানুষ শত্রুর সাথে ও দেখা হলে মুচকি হাসে।আফিফা তাও করছে না।কেমন চোখ মুখ শক্ত করে রাখে আদনান আশেপাশে গেলেই।

আফিফার স্বামীর সাথে হ্যান্ডশেক করলো আদনান। লোকটা আফিফার চাইতে একটু খাটো। মাথায় চুল ও কম।অথচ আফিফা সুন্দরী। দুজনকে যেনো মানাচ্ছে না।আশা কিছুক্ষণ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আফিফার স্বামীর দিকে।আশাকে এভাবে তাকাতে দেখে লোকটা আশার দিকে তাকিয়ে রইলো নির্নিমেষে।
আশার হঠাৎ করেই মনে হলো এই লোকটা আফিফাকে ভীষণ ভালো রাখবে।এদের বাহ্যিক দিক থেকে অমিল মনে হলেও মনের দিক থেকে যথেষ্ট মিল হবে।

আফিফা বিয়ের পর এই তৃতীয় বারের মতো বাবার বাড়ি এসেছে। অথচ তার মনে হচ্ছে যেনো যুগ যুগ ধরে বাবার বাড়ি আসে না সে।বুকের ভেতর কাঁপছে আফিফার।জহির ভাই নিশ্চয় আর বাড়িতে আসে নি।পুরো বাড়ি কেমন খাঁখাঁ করছে।
মা চাচীকে ধরে আফিফা কান্নায় ভেঙে পড়লো। কেমন দমবন্ধ করা অনুভূতি হচ্ছে আফিফার।এখনো তার বিশ্বাস হচ্ছে না তার বিয়ে হয়ে গেছে অন্য কারো সাথে। এই অনুভূতি এতো বিশ্রী কেনো আফিফা জানে না।
গভীর রাতে যখন স্বামী স্ত্রী একান্তে সময় কাটাতে যায় সেই মুহুর্তে আফিফার মনে হয় একটা বিষাক্ত তীর তার হৃৎপিণ্ড এফোড় ওফোড় করে দিচ্ছে।

খুব যত্নে নিজের অনুভূতি লুকিয়ে রাখে আফিফা।এই দমবন্ধ করা কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে কবে?এই যন্ত্রণা ফিঁকে হবে কবে?
যদি পারতো তবে মন থেকে জহির ভাইয়ের নামটাই মুছে দিতো সে।

সবার সাথে কথা শেষ করে আফিফা চুপিচুপি জহিরের রুমে গেলো। একটা খাট,একটা টেবিল আর একটা আলমারি ছাড়া এই ঘরে আসবাবপত্র বলতে আর কিছুই নেই।দেয়ালে জহির,আদনান আর ধ্রুবর একটা ছবি আছে শুধু।
আফিফা ছবিটির দিকে অশ্রুসজল নয়নে তাকালো।লাজুক চোখে তাকিয়ে আছে জহির ভাই তার দিকে। ফিসফিস করে আফিফা বললো, “কেনো আমার হলে না তুমি? আমার আজীবনের আক্ষেপ রয়ে যাবে তোমাকে না পাওয়া। একটা জীবন শেষ হয়ে যাবে এই তুমি নামক যন্ত্রণা নিয়ে।জীবনের শেষ দিনে দাঁড়িয়ে ও আমার তোমার কাছে প্রশ্ন থাকবে কি এমন ক্ষতি হতো আমাকে আপন করে নিলে।তুমি আমার জীবনের এমন এক অপূর্ণতা যেই অপূর্ণতা পৃথিবীর সব কিছু দিয়ে ও পূর্ণ হবে না।আমি তোমায় সত্যি ভালোবেসেছি।”

আফিফা আসার খবর পেয়ে শাপলা ছুটে এলো। খুঁজতে খুঁজতে জহিরের রুমে পেয়ে গেলো আফিফাকে।এসেই আফিফার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো শাপলা।বহু বছর পর যেনো দুই বোনের দেখা হয়েছে। কান্নার জন্য কেউ কারো সাথে কথা বলতে পারছে না।কথা বলছে তাদের দুজনের চোখের নোনাজল।

শাপলা কাঁদতে কাঁদতে বললো, “শাড়িতে তোকে খুব সুন্দর লাগছে আপা।একেবারে বউ বউ লাগছে।”

আফিফা নিজের চোখ মুছে বললো, “কেমন আছিস তুই শাপলা?এতো শুকিয়ে গেছিস কেনো?”

শাপলা মুখ কালো করে বললো, “আমার কিছু ভালো লাগে না আপা।এই বাড়িতে থাকতে আমার মোটেও ইচ্ছে করে না।তুই নেই,শালুক নেই,ধ্রুব ভাই নেই,নয়না আপা নেই,জহির ভাই নেই।মনে হয় যেনো কোনো পোড়াবাড়িতে বাস করছি।এখন আর নাশতার টেবিলে গল্পের আসর জমে না আপা।সন্ধ্যায় চা,ঝালমুড়ির টেবিলটা কেমন নিষ্প্রাণ হয়ে থাকে।কেউ হাতাহাতি করে না মুড়ির বড় ডিশ নিয়ে।
শেষের কয়েক মুঠো মুড়ি খাবার জন্য মুখ ফুলিয়ে,ঠোঁট বাঁকিয়ে কান্না করা সেই শালুক এখন আর নেই।জানিস আপা,এই কয়েকদিনে আমাদের বাড়িতে যতোবার মুরগি রান্না হয়েছে, লেগপিসগুলো অবহেলায় বাটিতে পড়ে রয়েছে। কেউ সাহস করে প্লেটে তুলে নেয় নি।কে খাবে বল?
কারো কি সাধ্য ছিলো না-কি এগুলোর দিকে চোখ তুলে তাকাবার? অথচ এখন পড়ে থাকে তাও কেউ খেতে পারে না।

পরশু শুঁটকি রান্না করতে গিয়ে মেজো চাচী কান্না করে দিয়েছে। বল তো, কি এক অবস্থা!
এই শুঁটকি রান্না নিয়ে সে কি ঝগড়া করতো শালুক।খাবার খেতোই না নিচে এসে সেদিন।মেজো চাচী কাঁদতে কাঁদতে আবার শুঁটকি তুলে রেখেছে। বড় চাচী বলে দিয়েছে এই বাড়িতে শুঁটকি রান্না একেবারে নিষিদ্ধ।

একটা মানুষ চলে গেলো, অথচ তার স্মৃতি এমনভাবে রেখে গেলো যে কেউ-ই ভুলতে পারছে না।
আমার ব্যাগে প্রায় ৫০০ টাকা জমেছে আপা।আমি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে চেক করে দেখি কতো টাকা আছে।যখন দেখি সব টাকা ঠিকঠাক আছে আমার বুক ভেঙে যায় যন্ত্রণায়। কণ্ঠ অবরুদ্ধ হয়ে যায় কান্নায়।
কেনো ব্যাগে টাকা থাকে আপা বল তো!
শালুক কেনো আমার ব্যাগ থেকে টাকা নেয় না?আমি প্রতি রাতে ঘুমাতে গেলে বলি তুই সব টাকা নিয়ে নে শালুক,আমি টুঁ শব্দ ও করবো না।তবুও শালুক আসে না আপা।কতোদিন শালুক আমার সাথে ঘুমায় না।আমার ভীষণ একা লাগে,রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠি,মনে হয় শালুক যেনো ডেকে বলছে আপা উঠ না,টয়লেটে যেতে ভয় করছে।খাটের নিচে মনে হয় কেউ আছে।

আমি তাকিয়ে দেখি আমার বিছানা ফাঁকা।আমার ছোট বোনটা আমার পাশে নেই আপা।কোথায় গেলে শালুককে পাবো আপা?
কেনো এতো অন্তর পুড়ে যায় শালুকের জন্য?”

আফিফা কি জবাব দিবে জানে না।তার নিজেরই বুক কাঁপছে শালুকের জন্য।
শালুক একটা টুনটুনি পাখির মতো ছিলো। যে সারাদিন লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে বেড়াতো। সবচেয়ে চঞ্চল আর দুষ্ট ছিলো।
কোথায় আছে সেই শালুক এখন?এখনো কি আগের মতো উড়া উড়ি করছে শালুক?
ধ্রুব কি শালুককে সামলাতে পারছে?
শালুককে ভালোবাসে না এরকম কেউ নেই এই বাড়িতে।

শাপলা একটু থেমে বললো, “জানিস আপা,কাল ভিক্ষা চাইবার জন্য এক মহিলা এলো।আমি গিয়ে চাল দিয়ে আসতেই জিজ্ঞেস করলো শালুক মা নাই বাড়িতে।আমি তো অবাক হয়ে গেলাম ওনার মুখে শালুকের নাম শুনে। উনি হেসে বললেন,শালুক না-কি সবার আড়ালে ওনাকে বড় মগে করে এক মগ মগ চাল দিতো।ওনার একটা ছোট নাতি আছে।নাতিকে রেখে ওনার মেয়ে মারা গেছে। সেই নাতির জন্য না-কি শালুক খেলনা কিনে দিতো।বাড়ি থেকে ফলমূল যা পেতো সব লুকিয়ে দিয়ে দিতো ওনাকে।
শুনে আমার এতো কান্না এলো। আমার বোনটা এতো ভালো ছিলো কেনো আপা?
এতোই যখন ভালো ছিলো ওর সাথে এরকম বাজে কাজ কেনো হলো আপা?আমি জীবনে ও আদনান ভাইকে ক্ষমা করবো না আমার ছোট্ট পরীর মতো বোনটির জীবন নষ্ট করার জন্য।”

আফিফা বললো, “করিস না ক্ষমা।আল্লাহর কাছে হাত তুলে নাম ধরে বদদোয়া দিবি ওকে।যেমন আমি দিই প্রতি ওয়াক্ত নামাজ পড়ে। ও আমার ভাই না।ও একটা জানোয়ার। বনের পশু ও ওর চাইতে ভালো আছে।”

আশার মা,বাবা,মামা,খালারা এলো দুপুরের সময়। খাওয়ার পর সবাই মিলে বসলো বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে। আদনানের উপর রাগ থাকলেও আদনানের দুই চাচা চাচী ও উপস্থিত থাকলো এই আলোচনায়।বাড়ির সবাই উপস্থিত থাকলো।

আশার বাবা ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় বললেন,”খুব তাড়াতাড়ি বিয়ের কাজ সেরে ফেলতে চান তিনি।”

তাকে থামিয়ে দিয়ে আশার মা কথা বলতে লাগলো। আশা তখন সিতারা বেগমের রুমে গিয়ে একটা পান বানিয়ে নিয়ে এলো।সেই পান মুখে পুরে চিবুতে চিবুতে বসার ঘরের দিকে আসতেই শুনলো বিয়ের কথা হচ্ছে। আদনান একটা লাল পাঞ্জাবি পরে বরের মতো লাজুক ভঙ্গিতে বসে আছে। আশার ভীষণ হাসি পেলো।

আগেও কয়েকবার সিতারা বেগমের থেকে পান নিয়ে খেয়েছে আশা,কিন্তু এটার টেস্ট আসলে কেমন তা বুঝতে পারছে না। তাই আজ আবারও খাচ্ছে।
পানের রস পড়ে আশার হলুদ টি-শার্ট লাল হয়ে গেলো। আশা এগিয়ে এসে তার বাবার পাশে বসলো। তারপর বাবাকে ফিসফিস করে কিছু বললো। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বললো, “সরি আন্টি।আমি আদনানকে বিয়ে করতে পারবো না। ”

আদনানের মাথায় যেনো আকাশ ভেঙে পড়লো মুহুর্তেই।আশা কি বলছে এসব!

আশা আগের মতো স্বাভাবিক। আদনানের কাছে গিয়ে বললো, “আমাকে আরেকটু পান দিতে পারবে?আজকে দাদীর কৌটো থেকে চুন খেয়েছি পানের সাথে এখন মুখের ভেতর কোথাও লেগে গেছে মনে হচ্ছে। ”

আদনান কথা বলার শক্তি ও পাচ্ছে না। এই মেয়ে তাকে বিয়ের জন্য রিজেক্ট করে দিয়ে কি অবলীলায় কথা বলে যাচ্ছে তার সাথে!

আদনানের বাবা জিজ্ঞেস করলেন, “সমস্যা কোথায় আশা মা?”

আশা একটু ভেবে বললো, “আমি আদনান কে আমেরিকা থেকে অবজার্ভ করছি আংকেল। ওর চোখে আমি কখনো আমার জন্য ভালোবাসা বা সম্মান দেখি নি।দেখেছি লোভ।নিজের ভাইয়ের সাথে ও নিজে কি বাজে একটা কাজ করেছে।ও ভীষণ সেলফিশ মানুষ। নিজের চাওয়া পূরণ হলে আমাকে ছেড়ে দিতে ও এক মুহূর্ত ও দেরি করবে না।আমি জানি আমাদের কালচারে এসব ছাড়াছাড়ি কোনো ব্যাপার না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে আমি জানি এই মানুষটা একটা সময় আমাকে ছেড়ে যাবে।সে যা করছে সব অভিনয়। আগে থেকেই যখন এটা বুঝতে পেরে যায় কেউ যে তার বিপরীতে থাকা মানুষটি তার সাথে অভিনয় করে যাচ্ছে, তখন তার পক্ষে আসলেও সম্ভব হয় না সেই মানুষের সাথে থাকা। তার আন্তরিকতা ও তখন মেকি মনে হয়। আমাদের কালচার আর যেমন হোক,ভান করতে জানে না।কারো ভান মেনে নিতেও পারি না আমরা জেনেশুনে। আর এখানে আমি জানি যখন ওর পুরোটা ভান তখন লাইফ পার্টনার করা অসম্ভব। ”

কেউ কিছু বলতে পারলো না আশার কথার জবাবে। কি বলবে?
আশা তো মিথ্যা কিছু বলে নি।

হঠাৎ করেই আশা ধরতে পারলো তার মন সকাল থেকে এতো ভালো কেনো।এই যে আদনানকে এভাবে রিজেক্ট করে দিবে তা তার অবচেতন মন আগেই জানতো।তাই তো এতো আনন্দিত লাগছিলো আশার।

চলবে……..

রাজিয়া রহমান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here