#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন
৯.
গভীর রাত। আদ্রিশ কাজ করতে করতে ড্রয়িংরুমে ঘুমিয়ে পড়েছে। হঠাৎ কিছু পড়ার শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। ড্রয়িংরুমে আলো জ্বলছে। শব্দটা কোথায় থেকে আসল বোঝার চেষ্টা করছে। দাঁড়িয়ে কান খাড়া করল। হঠাৎ করেই আলো নিভে গেল। আদ্রিশ বুঝতে পারছে কিছু একটা হচ্ছে। মোবাইলের টর্চ জ্বালিয়ে সিড়ি বেয়ে উপরে যাচ্ছে। আদ্রিশ অতি সাবধানে কদম রাখছে।
কারো ছায়া চোখে পড়ল। ছায়াটা এপাশ থেকে ওপাশে চলে গেল।
আদ্রিশ উচ্চস্বরে জিজ্ঞেস করল,
“কে ওখানে? বেরিয়ে এসো বলছি।”
আদ্রিশ ছায়াটা আর দেখতে পাচ্ছে না। পুরো বাড়িতে হুলস্থুল পড়ে গেছে। আদ্রিশ চেঁচিয়ে সব গার্ডকে ডেকে এলার্ট হতে বলল। মেইন সুইচ অন করে সবাইকে চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে বলল। কোনভাবেই যেন লোকটা পালাতে না পারে। আদ্রিশ রিভলবার নিয়ে উপরে খুঁজে না পেয়ে সিড়ি বেয়ে কয়েক পা নিচে নামতেই থমকে গেল। তারপর রুশার রুমে গেল। দরজা খোলার শব্দে রুশা নড়ে-চড়ে উঠে আবারও ঘুমিয়ে পড়ল। আদ্রিশ ওকে ধাক্কা দিচ্ছে আর বলছে,
“রুশা, এই রুশা। উঠো।”
রুশা ঘুমঘুম চোখে ওর দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করল,
“সকাল হয়ে গেছে?”
“না, বাড়িতে একজন আগন্তুক ঢুকেছে। ওর খোঁজ চলছে। তুমি সাবধানে থেকো। দরজা ভেতরে থেকে লক করে রাখো।”
মুহুর্তেই রুশার ঘুম উবে গেল। উঠে বসে জিজ্ঞেস করল,
“খুন করতে আসেনি তো? আমার ভয় লাগছে।”
“ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তুমি নিশ্চিন্তে থাকো। দরজা বন্ধ করে বসে থাকো। আমি দুজন গার্ডকে তোমার পাহারায় পাঠাচ্ছি।”
রুশা আদ্রিশের হাত চেপে ধরে বলল,
“এই না না, আমাকে এখানে একা ফেলে যাবেন না। আমার খুব ভয় লাগছে। আপনি এখানে বসে থাকুন।”
“কিন্তু আমার বাইরে যাওয়াটা জরুরি। বোঝার চেষ্টা করো।”
“তাহলে আমাকে নিয়ে যান। আমি একা থাকতে পারব না। আমাকে একা পেয়ে যদি মারতে আসে?”
আদ্রিশ না পেরে ওকে সাথে নিয়ে গেল। আদ্রিশের হাত ধরে ওর সাথে সাথে হাঁটছে। আদ্রিশ চারদিকে খুঁজছে আর গার্ডকে জিজ্ঞেস করছে।
“ওই আগন্তুক দেখতে কেমন?”
“হুডি পরা ছিল।”
“যখন দেখলেন তখন গুলি করে দিলেই তো হতো।”
“আমার হাতে রিভলবার ছিল না। তাছাড়া আমি ওকে স্পষ্ট দেখিনি।”
রুশা আদ্রিশের সাথে চিপকে আছে। আর চারদিকে ভয়ে ভয়ে দেখছে।
পুরো বাড়ি তন্নতন্ন করে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। লোকটা অত্যন্ত চালাক। ঠিক সুযোগ বুঝে এতগুলো লোকের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়েছে। আদ্রিশ গার্ডদের উপর কিছুক্ষণ চেঁচামেচি করল।
আদ্রিশ শুয়ে পড়লেও রুশা বিছানায় বসে আছে। ওর চোখে মুখে ভয় স্পষ্ট। আদ্রিশ ধমক দিয়ে বলল,
“এখনো বসে আছো কেন? বললাম তো চলে গেছে।”
“যদি বাড়িতেই থেকে থাকে। ধরুন কোথাও লুকিয়ে আছে। সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পরে বের হয়ে আমাদের রুমে চলে আসল, তখন?”
আদ্রিশ কিছুক্ষণ রুশার মুখের দিকে চেয়ে থেকে ওকে এক টানে নিজের বুকে ফেলে দিল। রুশা হুমড়ি খেয়ে পড়ল। ও কিছু বুঝে উঠার আগেই আদ্রিশ ওকে নিচে ফেলে ওর উপর শরীরের ভার ছেড়ে দিল। রুশা হকচকিয়ে গেল। আদ্রিশ ওর গাল ঠেকিয়ে বালিশে মুখ গুজে বলল,
“তুমি এখন নিরাপদ স্থানে আছো। তোমার উপর আঁচড় আসার আগে আমার মৃত্যু হবে। নিশ্চিন্তে ঘুমাও।”
রুশা হতবাক হয়ে গেল ওর কথা শুনে। আদ্রিশ রুশার হৃদপিণ্ডের ধুকধুকানি স্পষ্ট অনুভব করতে পারছে। রুশার গালে আদ্রিশের চুলগুলো সুরসুরি দিচ্ছে। রুশা সত্যিই নিরাপদ অনুভব করছে। নিজের অজান্তেই এক হাত আদ্রিশের পিঠে রাখতে গিয়েও সরিয়ে ফেলল।
সকালে ঘুম ভেঙে রুশা আদ্রিশকে দেখেনি। বিছানা ফাঁকা। ঘড়িতে সাড়ে সাতটা বাজে। রুশা উঠে বসল। ওয়াশরুমের দরজা খোলা।রুশা ফ্রেশ হয়ে এসে নিচে গেল। সেজান এসেছে। আদ্রিশ ওর সাথে কথা বলছে। অন্য কোনো দিকে ওর খেয়াল নেই। নিশ্চয়ই গতকাল রাতের ঘটনা নিয়ে কথা বলছে। রুশার ঘাড় ব্যথা করছে। রুশা ঘাড় নাড়াতে নাড়াতে বাইরে গিয়ে দাঁড়াল। বাগানে একটু হাঁটা যাক। রুশা একমনে হাঁটছে। হঠাৎ দেয়ালের কাছে কালো কিছু একটা পড়ে থাকতে দেখল। রুশা সেটা হাতে তুলে নিল। একটা বড় হুডি। রুশা সেটা নিয়ে দ্রুত বাড়িতে ঢুকল। আদ্রিশের সামনে যেতেই ওর হাতের দিকে চমকে চেয়ে রইল।
“তোমার হাতে এই হুডি? তোমার হাতে কি করে এলো? কোথায় পেল?”
রুশা কিছুটা ঘাবড়ে গেল।
“বাগানের কর্ণারে দেয়ালের কাছে পেয়েছি।”
সেজান রুশার হাত থেকে নিয়ে আদ্রিশের দিকে তাকাল। আদ্রিশ বলল,
“হুম এটাই। সেজান বাড়ির সিকিউরিটি আরো কড়া করো।”
“জি ভাই। সব ব্যবস্থা করছি।” সেজান বাইরে চলে গেল।
আদ্রিশ দাঁড়িয়ে হুডিটা হাতে নিল। আদ্রিশের মনে হচ্ছে কেউ ওকে বার বার হারিয়ে দিচ্ছে। এর আগে এভাবে কখনো হারে নি।
রুশা আদ্রিশের দিকে চেয়ে আছে। আদ্রিশ গভীরভাবে হুডিটা দেখছে।
****
কথা আশ্রমের জন্য কেনাকাটা করছে। টাকা মিটিয়ে ব্যাগটা তুলে ওর চোখ বড়বড় হয়ে গেল। এত ভারী ব্যাগ। তাড়াতাড়ি নিচে রেখে দিল। হাতের দিকে তাকাল। ফর্সা হাত মুহুর্তেই লাল হয়ে গেছে।
“এ তো দেখছি অনেক ভারী। আমি তো তুলতেই পারছি না। নেব কি করে? কিন্তু কিছু করার নেই। নিতে তো হবেই।”
কথা আবারও ব্যাগ তুলতে যায় তার আগেই অন্য কেউ ওর ব্যাগ তুলে নেয়।
কথা ঘুরে সেজানকে দেখে হা করে রইল।
“আপনি এখানে?”
সেজান ভ্রু কুঁচকে বলল,
“কেন ভূত দেখলে না-কি? না আমার এখানে আসা নিষেধ?”
“আপনার মতো হাইফাই মানুষ এখানে আশা করা যায় না তাই।”
“শাট আপ! কোথায় নিতে হবে তাই বলো।”
কথার খেয়াল হলো ও ভারী ব্যাগটা ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
“নামিয়ে রাখুন।”
“কোথায় নিতে হবে তাই বলো।”
“আপনি কেন নিবেন? আমি নিতে পারব। আপনি রেখে দিন।”
সেজান তাচ্ছিল্য হেসে বলল,
“এই দুই কেজি ওজনের শরীর নিয়ে এই ব্যাগ তুলবে?”
কথার কপাল কুঁচকে এলো। ওর স্বাস্থ্য নিয়ে মজা করল। ওর খুব রাগ হচ্ছে।
“রাখুন, ব্যাগ রাখুন বলছি। এখানে আপনার গুণ্ডামি চলবে না। আমি নিজেই নিতে পারব।”
“মারব একটা থাপ্পড়। এত ভারী একটা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি চোখে পড়ছে না। কোথায় নিতে হবে তাড়াতাড়ি বলো।”
কথা রাস্তা দেখিয়ে বলল,
“ওখানে সিএনজি দাঁড় করিয়ে রেখেছি।”
সেজান আর কথা সেখানে গিয়ে কোনো সিএনজি দেখতে পেল না।
সেজান ওর দিকে রাগী মুখ করে তাকাতেই কথা বলল,
“এখানেই দাঁড় করিয়ে রেখে গিয়েছিলাম। ব্যাটা শয়তান চলে গেছে। ওকে পাই একবার নাক ফাটিয়ে দেব। না, এতে উনার দোষ নেই। একচুয়েলি দোষ আপনার। আপনি বকবক করে আমার দেরি করিয়ে ফেলেছেন তাই চলে গেছে। সব দোষ আপনার। আপনার জন্য সিএনজি চলে গেছে। এখন আমাকে অপেক্ষা করে বসে থাকতে হবে। এখন আমি কি করব?”
“তুমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বকবক করো। মাথা খেয়ে ফেলছে। ফলো মি।”
সেজান, কথাকে নিজের গাড়ির কাছে নিয়ে ব্যাগ রেখে বলল,
“উঠো, আমি তোমাকে পৌঁছে দেব।”
“ভাড়া কত?”
সেজান অবাক হয়ে বলল,
“আমাকে তোমার টেক্সি ড্রাইভার মনে হচ্ছে?”
কথা আমতা আমতা করে বলল,
“আসলে তা নয়, আমি আপনার সাথে যাব না।”
“কিন্তু কেন?”
কথা মাথা নিচু করে মিনমিন করে বলল,
“কারণ আপনি গুণ্ডা, আপনাকে আমার ভয় লাগে। আপনার সাথে আমি যাব না।”
সেজান অবাক হয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে। কথা চোখ তুলে একবার সেজানকে দেখল। সেজান ওর দিকেই চেয়ে আছে। তারপর হঠাৎ করে গাড়ির দরজা খুলে ওর হাত ধরে টেনে গাড়িতে বসাল।
তারপর নিজেও বসল। কথা কিছু বলতে গেলে সেজান চোখ পাকিয়ে তাকাল।
“চুপ করে বসে থাকো।”
কথা পুরো রাস্তায় ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বসে রইল। শ্বাস যেন আঁটকে আছে। যদি উল্টো পালটা কোথায় নিয়ে যায়, কিছু করে বসে। কথা রাস্তার দিকে তাকাল। গাড়িটা আশ্রমের দিকেই যাচ্ছে। কথা তবুও স্বস্তি পাচ্ছে না। গাড়িটা আশ্রমের কাছে আসতে দেখে কথা উৎফুল্ল হয়ে পড়ল। গাড়ি থামতে না থামতেই সিট বেল্ট খুলে নেমেই দৌড় দিল ভেতরে। সেজান অবাক হয়ে চেয়ে রইল।
“আরে, ব্যাগটা কি আবারও আমাকে টেনে ভেতরে নিয়ে যেতে হবে? আমি কি সার্ভিস ম্যান? কেন যে উপকার করতে গেলাম!”
.
দুদিন পর।
আদ্রিশ নিজের কেবিনে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে। জিএম স্যার, সিনিয়র ম্যানেজার,ওয়াচ ম্যান, গার্ডরা সবাই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। গতকাল রাতে কেউ একজন ওদের টেকনোলজি রুমে ঢুকে কম্পিউটার ব্যবহার করে সব ডাটা ডিলিট করে দিয়েছে। অফিসের প্রয়োজনীয় সব ডাটাবেজ হাতছাড়া হয়ে গেছে। আদ্রিশ প্রচন্ড ক্ষেপে গেছে। তাই চিৎকার চেঁচামেচি করছে।
এতবড় অফিসে এই সিকিউরিটি ব্যবস্থা! সবাই নিজের কাজে গাফলতি করছে। আদ্রিশ সবাইকে ধমকাচ্ছে আর হুমকি দিচ্ছে চাকরি থেকে সব কয়টাকে ছাটাই করবে।
আদ্রিশ হাইপার হয়ে বাড়িতে ঢুকছে। ওর পেছনে পেছনে সেজান। রুশা ডাইনিং টেবিলে বসে খাচ্ছিল। আদ্রিশকে এমন দেখে সেজানকে ডাকল।
“সেজান ভাই, উনার কি হয়েছে? মনে হচ্ছে রেগে আছেন।”
“হ্যা, ভাবি। ভাই খুব রেগে গেছেন।”
“কিছু হয়েছে?”
“হ্যা, আমাদের কোম্পানির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।”
রুশা ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,
“ক্ষতি! কি হয়েছে?”
“আসলে কেউ একজন আমাদের অফিসে ঢুকে আমাদের কম্পিউটার ব্যবহার করে অফিসের প্রত্যেক কর্মীর কম্পিউটার ডাটাবেজ ডিলিট করে দিয়েছে।”
“কিন্তু কে করল এটা? অফিসের এত ভালো সিকিউরিটি ব্যবস্থা।”
“এত ভালো সিকিউরিটির মধ্য দিয়েও হুডি পরা লোকটা ঢুকে পড়েছে।”
“হুডি পরা! সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছেন? সেখানে …
” হ্যা ভাবি আমরা চেক করেছি কিন্তু হুডি পরা লোকটার মুখ ঢাকা ছিল। এমনকি ওর হাত, পা শরীরের প্রতিটা অংশ ঢাকা ছিল। সিসিটিভিতে কিছুই ধরা পড়েনি। মাত্র এক ঘন্টা সময় নিয়েছেন। এক ঘন্টায় সব ডাটাবেজ ডিলিট করে দিয়েছে।”
“পাসওয়ার্ড? পাসওয়ার্ড কি করে জানল? আর এত অল্প সময়ে কি করে কি করল?”
“যতটুকু বুঝলাম তিনি একজন হ্যাকার।”
“হ্যাকার! আমাদের বাড়িতে যে ঢুকেছিল সে কি হ্যাকার ছিল?”
“হয়তো অথবা এক টিমের লোক ওরা। যারা সবাই হুডি ব্যবহার করে। ভাবি আপনি সাবধানে থাকবেন। ভাইয়ের মন মেজাজ ভালো না। রেগে গেলে কি করে বুঝতে পারে না। ভাইয়ের মেজাজ মর্জি বুঝে কথা বলবেন। আপনাকে এটা বলার জন্যই এসেছি।”
রুশা আলতো হেসে বলল,
“জি সেজান ভাই। আপনি চিন্তা করবেন না।”
সেজান চলে গেল। রুশার সেজানকে ভালো মানুষ মনে হয়। কতটা কেয়ারিং। ওর জন্য চিন্তা করে বাড়ি পর্যন্ত বলতে চলে এসেছে।
রুশা ঘরে গিয়ে আদ্রিশকে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখল। এখনো চেঞ্জ করেনি।
রুশা এক গ্লাস পানি নিয়ে ভয়ে ভয়ে ওর সামনে রাখল। আদ্রিশ চোখ তুলে একবার দেখে আবারো চুপ করে রইল। রুশা দাঁড়িয়ে আছে। কিছু বলার চেষ্টা করছে। কিন্তু পারছে না। আদ্রিশ গ্লাসটা নিয়ে পানি খেয়ে নিল। তারপর বলল,
“কি হচ্ছে এ-সব আমার সাথে? একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে কিন্তু আমি কোনো ক্লু পাচ্ছি না। কে করছে, কেন করছে কিছুই বুঝতে পারছি না। এই প্রথম এমন হচ্ছে আমার সাথে। আমি পদে পদে হেরে যাচ্ছি। এভাবে চলতে থাকলে একদিন আমি ধ্বংস হয়ে যাব।”
রুশা ওর পাশে বসে বলল,
“এভাবে বলছেন কেন? আপনি একটু চেষ্টা করুন সব আগের মতো হয়ে যাবে। হার মেনে বসে থাকলে চলবে না। আপনার প্রথমত ওই কালপিটকে খুঁজে বের করতে হবে। আপনার সব সমস্যার সমাধান সে-ই দেবে।”
“তাকেই তো ধরতে পারছি না। মনে হচ্ছে অলৌকিক কোনো শক্তি এ-সব করে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে।”
“আমি আপনার জন্য শুভ না। আমি আসার পর থেকেই তো একের পর এক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কি ঠিক না?”
আদ্রিশ ওর দিকে চেয়ে আছে। রুশাও চেয়ে আছে। ওর চোখ ছলছল করছে।
“রুশা,পড়াশোনা জানা মেয়ে তুমি। এ-সব কি বলছো? যাই হয়ে যাক তুমি সব সময় আমার কাছে থাকবে। তোমাকে আমি রাণীর হালে রাখব। অনেক সুখে রাখব। শুধু আমাকে ধোঁকা দিও না। কারণ যে আমাকে ধোঁকা দেয় সে বেঁচে থাকে না।”
রুশা ওর কথা শুনে আলতো হেসে বলল,
“আমি আপনাকে ধোঁকা দেব কেন? আপনার ক্ষতি মানেই আমার ক্ষতি।”
আদ্রিশ রুশার হাত ধরল। রুশা হাতের দিকে তাকাল। আদ্রিশ রুশার আরো কাছে এলো। রুশা সরছে না। স্থির হয়ে আছে। আদ্রিশ রুশার গালে দু আঙুল দিয়ে স্লাইড করলে রুশা চোখ বন্ধ করে নেয়। আদ্রিশ ওর ঠোঁটের দিকে এগিয়ে গেলে দরজায় কড়া পড়ে। রুশা ছিটকে দূরে সরে যায়। ঘন ঘন ঢোক গিলে উঠে গেল। দরজা খুলে দেয়।
একজন সার্ভেন্ট আদ্রিশকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“জিএম স্যার এসেছেন। আপনার সাথে কথা বলতে চায়।”
আদ্রিশ দ্রুত উঠে গেল। ওর চোখ চকচক করছে।
চলবে……