রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#বোনাস_পার্ট_৮_৯
রুবাইদা_হৃদি(sheikh ridy rahman)
কাজী অফিসে বসে আছি আমি আর কাব্য ভাইয়া৷ উনি আমার একহাত শক্ত করে ধরে রেখেছেন৷ আমার কান্নার শব্দ গুলো উনার কান অবধি পৌঁছাতে পারছে কিনা সেই জানে৷ উনি অন্য হাতে তার চুল টেনে ধরে আছেন৷ চোখ গুলো র”ক্ত’লাল৷ হাত এতো শক্ত করে ধরেছেন মনে হচ্ছে এখুনি খুলে পড়ে যাবে৷ আমার মো’চ’ড়া’মু’চ’ড়ি দেখে একবার আমার দিকে তাকাতেই আমি চুপ হয়ে যাই৷ উনাকে আগে এইভাবে রা’গতে দেখি নি৷ ভয়ে ক’লিজা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে আমার৷ আমার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে একবার ঘড়ি দেখলেন আবার বাইরের দিকে তাকালেন৷ আফসোসের সুরে বললেন,
— ‘ড্যা”ম ইট!প্রয়োজনের সময় কাওকে পাওয়া যায় না৷’
সাদা পাঞ্জাবি,কালো টুপি সাথে মুখে দাড়ি আর পান খেতে খেতে একজন লোক চেয়ার টেনে বসতেই কাব্য ভাই নড়েচড়ে বসলেন৷ উনার হাবভাব দেখে কাজী লাগছে৷ উনাকে দেখে আমি এইবার জোরে কান্না করে দিলাম৷ শেষ আশাও আজ শেষ! কা’জী দাত গুলো বের করে হে হে করে হেসে বললেন,
–‘উ’ঠিয়ে নিয়ে আসছেন নাকি ভাইজান?হয় এমন হয়!কতো করাইছি এমন বিয়া তার হিসাব নাই।তা আপনাগো সা’ক্ষী কই? আমার এইখানে মেলা সা’ক্ষী আছে লাগলে কন ডাইকা দেই৷’
–‘স্ট’প!আর একটা কথা বললে আপনার দাঁ’ত ভেঙে গু’ড়িয়ে দিবো৷’
উনার ধ’মক শুনে কাজী সাহেব চুপ হয়ে গেলেন৷ আমি উনার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে বললাম,
–‘আপনি এখন বেশী বেশী করছেন কাব্য ভাই৷ তখন চুপ ছিলাম তবে আজ চুপ থাকবো না৷ আমি এইখান থেকে পু”লিশের কাছে যাবো৷’
উনি আমার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,
–‘যা তোকে মানা করেছে কে? অধিকারের কথা বলেছিলি না!এখন সত্যিকারে অধিকার নিবো তোর৷’
কাঁদতে কাঁদতে হেচকি উঠে গেছে আমার৷ এতোটা খারাপ কেন এই লোকটা৷ সব সময় আমার উপর জো’র দেখায়৷ কাঁদার ফলে কোনো কথাই বলতে পারছি না৷ কিছুক্ষণ পর রাহুল ভাইয়া আর মোস্তাকিম ভাইয়া আসতেই ভয়ে গলা শু’কিয়ে যায়৷ এইবার মনে হয় সত্যি সত্যি বিয়ে হয়েই যাবে। আমাকে কাঁদতে দেখে রাহুল ভাইয়া বললেন,
–‘কাব্য ও কাঁদছে কেন এইভাবে?’
–‘আমি ম’রে গেছি এইজন্য কেঁদে কেঁদে শো”ক পালন করছে৷’
রাহুল ভাইয়া ভে”বাচেকা খেয়ে গেলেন উনার কথা শুনে৷ মোস্তাকিম ভাইয়া কাকে যেন ফোন করলেন৷ শুধু বললেন,
–‘জলদি আয় তোরা আমারা অপেক্ষা করছি৷’
কার আসার কথা বলছেন আর?সবাই তো এসেই গেছে৷ আল্লাহ বাচাও আমায়৷ একটু পর তমা আপু আসতেই কাব্য ভাইয়া উঠে দাঁড়ায়৷
–‘মাহিম আর তোদের ফ্যামিলির সবাই কোথায়?তোদের সকাল নয়টায় বের হতে বলেছিলাম৷’
কাব্য ভাইয়ের কথা শুনে একটা ছেলে আর ভেতরে ঢুকতে ঢুকতে বলল,
–‘এই যে আমি৷ আপনার ফ্রেন্ড বাসা থেকে বের হতে দু ঘন্টা লাগিয়েছে৷’
তার কথা শুনে তমা আপু উনার পেটে গু”তা দিয়ে বললেন,
–‘বেশি কথা বললে সোজা এইখানে থেকে বাসায় চলে যাবো৷’
তমা আপু আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
–‘এইটা নীতু না? ও কাদছে কেন এইভাবে!’
পাশে অনেক গুলো অচেনা মুখ আমার দিকে চেয়ে আছে৷ আমি কাব্য ভাইয়ার পিছনে আর একটু সরে দাড়ালাম৷ আমাকে হাত ধরে সামনে এনে বললেন,
–‘নতুন বিয়ে করেছি তো তাই লজ্জায় তোদের দেখে কান্না করছে৷’
তমা আপুর ফ্যামিলি সাথে সবাই কাব্য ভাইয়ার মুখের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে৷ একবার আমাকে দেখছেন আরেকবার তাকে। মোস্তাকিম আর রাহুল ভাইয়াও অবাক হয়েছেন৷ আমি উনার হাত নিজে থেকে খা”মচে ধরি৷ উনি আমার দিকে তাকিয়ে সবাইকে তাড়া দিয়ে বললেন,
–‘আমাকে আসতে বলেছিলি এসেছি!এইবার জলদি বিয়ে কর আমায় যেতে হবে৷ তোদের প্যা”ন’প্যা”নানির জন্য আমি আর নীতু না খেয়েই বেরিয়ে এসেছি৷’
উনার কথা শুনে সবাই বিয়ের দিকে মনোযোগ দেন৷ আমার আত্মায় পানি এসেছে এখন। তারমানে আজ তমা আপুর বিয়ে ছিলো। উনি আমাকে টেনে নিজের কাছে এনে নিচু হয়ে ফিসফিস করে বলেন,
–‘আবার কাঁদা শুরু কর। কারণ ওদের পর তোর আমার আর তোর রেজি’স্ট্রি হবে। ওয়েট এন্ড সি।’
———————————
রৌদ্র তপ্ত দুপুরে আমি ঘেমে চিপচিপে হয়ে গেছি। কাজী অফিস থেকে বেরিয়ে আমাকে নিয়ে পার্কে এসে বসেছেন উনি। গরমে জান যায় যায় অবস্থা। আর ড্রেসের দিকে তাকালে আরো কান্না পাচ্ছে আমার। শ”য়’তান লোক একটা আমাকে ইচ্ছা করে ভয় দেখিয়েছে। তবে রা’গ ছিলো অধিকার নিয়ে বলার জন্য। হুহ! রা’গ আমারও আছে শুধু বের হয় না মিস্টার কাব্য। একদিন আমার রা’গে আপনি ভয়ে গু’টিয়ে থাকবেন। উনি আমার এক বেঞ্চিতে বসিয়ে রেখে কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছেন। বির’ক্ত লাগে! অস’হ্য মানুষ একটা। কাব্য ভাইয়া হুট করে যেমন গিয়েছিলেন তেমন হুট করে এসে আমার কোলে মাথা দিয়ে সটান হয়ে শুয়ে পড়ে আর বলেন,
–‘বিরবির করে বকা হয়ে গেলে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দে।’
আমি অবাকের শেষ চূড়ায় গিয়ে বসে আছি । একে তো পাবলিক প্লেস তার উপর আমার অনুমতি না নিয়ে শুয়ে পড়লেন। আমি উনার মাথা ঠেলে উঠিয়ে দেওয়ায় চেষ্টায় লেগে আছি। আর উনি মাথা ঘুরিয়ে আমার পেটে মুখ গুজে শুয়ে রইলেন। উনার গরম নিশ্বাস আমার উপর পড়ছে।অস্বস্তি তে আমার ভেতর কেঁপে উঠছে। আমার নড়াচড়া দেখে উনি নাক ঘষে বললেন,
–‘সাইলেন্ট মুডে বসে থেকে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দে। আর বেশি ভাইব্রে”ট করলে পাবলিক প্লেসে চুম্মা দিবো।আর আমি যা বলি তার থেকে বেশি করি।’
উনার কথা শুনে আমি একদম মূ”র্তির মতো বসে রইলাম। এই লোকের কাজ সম্পর্কে ধারণা হয়ে গেছে। উনি এইবার মাথা উঠিয়ে বললেন,
–‘হাত কি নেই তোর? চুল গুলো টেনে দে আমার। নিজে তো শান্তি মতো ঘুমাস আমার ঘুম হা’রা’ম করে। এখন আমায় ঘুমাতে দে না হলে…
আমি মনে মনে হাজার খানিক বকা দিয়ে উনার কথা মতো চুল টেনে দিতে থাকলাম। ইচ্ছা হচ্ছে সব গুলো চুল টেনে ছি’ড়ে ফেলি। আস্ত একটা রা”ক্ষস কেও হার মানাবে এই ছেলে। উনি আবার বিরবির করে বললেন,
–‘আমার অনাগত বাচ্চারা কেমন আছে রে নীতু?তাদের যত্নের হেরফের হলে তোকে উঠিয়ে ফেলে দিবো আমি।’
উনার নিশ্বাস ভারী হচ্ছে। ঘুমিয়ে গেলো। এইটুকু জায়গায় উনার মতো হা”তির জায়গা হলো কি করে?হাও পসিবল!
টানা দেড় ঘন্টা ঘুমিয়ে উঠেছেন মহাশয়। উঠেই এটি”টিউড শুরু হয়ে গেছে উনার। আমার পা ব্যা’থায় ভারী হয়ে গেছে। উনি উঠেই সামনের দিকে এগিয়ে যায়। প্রচন্ড রাগ লাগলো আমার। আমি দাঁড়াতে পারছি না উনার জন্য আর উনার কোনো হুশ নেই?
–‘আমাকে কি আপনার চোখে পড়ে না। আমি উঠতে পারছি না আর আপনি নিজে একা একাই হেটে চলে যাচ্ছেন। এমন কেন আপনি?’
উনি আমার সামনে এসে কোনো কথা না বলেই কোলে উঠিয়ে নিলেন । আচমকা এমন হওয়ায় ভয় পেয়ে উনার গলা জড়িয়ে ধরি। আর উনি দ্রু বাকা করে তাকিয়ে বললেন,
–‘আজ থেকে কম খাবি তুই। দিনে দিনে হা”তির বাচ্চা হয়ে যাচ্ছে। আমার কোমর শেষ আল্লাহ! এর চেয়ে হা”তি কোলে নিলেও হতো।’
উনার কথা শুনে রাগে আমার কান্না পেয়ে যাচ্ছে। এতো অস”ভ্য কেন উনি?ইচ্ছা হচ্ছে এখুনি কোলে থেকে লাফিয়ে নেমে পড়ি।
গাড়িতে বসার পর আর একটাও কথা বলেন নি উনি । মুখ আবার গো”মড়া করে গাড়ি চালাচ্ছেন । আর এমনটা হয়েছে একটা ফোন আসার পর থেকে। আমি রাগের জন্য কারণ জিজ্ঞেস না করেই বাইরের দিকে তাকিয়ে বসে আছি। উনার যা ইচ্ছা হোক তাকে আমার কি? বাড়িতে পৌছে ফুঁপির থমথমে মুখ দেখে ভয় পেয়ে যাই। সাথে কাব্য ভাইয়াও মুখ ভার করে বাসায় ঢুকলেন। আমি উনার পিছে পিছে ড্রয়িং রুমে যেতেই ভয়ে কাব্য ভাইয়ের পিছে লুকাই। এতোটা সময় সব তো ঠিক ছিলো তাহলে এখন……….
চলবে….
(বোনাস পার্ট চাইছিলেন দিয়েছি অনেক কষ্টে।আপনারা সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন এর খুশীতে?)
রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#পার্টঃ৮
রুবাইদা_হৃদি(sheikh ridy rahman)
সবার সামনে কাব্য ভাইয়া একহাতে জড়িয়ে রেখেছেন আমায়৷ ড্রয়িং রুমের পরিবেশ ঠান্ডা৷ কারো মুখে কথা নেই কোনো৷ যাকে বলে পি’ন ড্র’প সাইলেন্ট৷ ফুঁপি আর রেদুয়ান আঙ্কেল আমাদের তিনজনের মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন৷ কাব্য ভাইয়ার চোখে-মুখে রাগ স্পষ্ট৷ সে আমাকে অনেকটা শক্ত করে ধরে রেখেছেন৷ মনে হচ্ছে,সে যদি ছেড়ে দেয় কেও আমাকে নিয়ে যাবে৷”আমির”
আমার সামনে এসে দাঁড়াতে কাব্য ভাইয়া আমাকে আরো মিশিয়ে নেয়৷ আমির তা দেখে মুচকি হাসে৷ আমির নামক মানুষটাকে আমার কোনো কালেই ভালো লাগে নি৷ দেখতে অনেক সুন্দর কিন্তু ভালো লাগে না৷ আর এই ভালো না লাগাটা এখন অস্বস্তি তে পরিণত হয়েছে৷ মনের মাঝে আরেকটা কথা ঘুরছে,আমির যদি জানেন আমার আর কাব্য ভাইয়ের বিয়ে হয় নি তখন সে যদি আমায় নিয়ে যায়?
–‘কেমন আছেন আপনারা?’
পি”নপ”তন নীরবতা ঠেলে আমিরের প্রশ্ন শুনে উত্তর দেওয়ার সাহস যোগাতে পারলাম না আমি৷ কিন্তু কাব্য ভাইয়া বললেন,
–‘আলহামদুলিল্লাহ!তা আপনি এখানে কিসের জন্য এসেছেন? আমাদের সংসার দেখতে বুঝি৷’
আমির মুখে হাসি বজায় রেখে বললেন,
–‘কোথায় গিয়েছিলে নীতু৷’
–‘বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী আর কোথায় যাবে মি.আমির৷ আমরা কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করতে গিয়েছিলাম৷’
কাব্য ভাইয়ার কথা শুনে উনি কিছু একটা ভেবে হা হা করে হেসে বললেন,
–‘ফ”লস পেপার আর রি”পোর্ট অহরহ পাওয়া যায় মি.কাব্য৷’
উনার কথা শুনে কাব্য ভাইয়ার মুখের ভাব পরিবর্তন হয়েছে৷ এতোক্ষণ মুখে রাগী ভাব থাকলেও সেটা এখন হাসিতে পরিণত হয়েছে৷ উনি আমাকে নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে যেতে বললেন,
–‘তো?’
–‘আমি নীতুকে আমার বা”গ’দ’ত্তা হিসেবে নিয়ে যেতে পারি সেটা কি আপনি জানেন?’
কাব্য ভাইয়া হা হা করে হেসে বললেন,
–‘আমার বউকে আপনি বা’গ’দ’ত্তা হিসেবে নিবেন৷ হাও ফানি৷’
–‘ওইটা ভু”য়া রেজি’ষ্ট্রি পেপার৷ তাই আপনার কোনো জোর নীতুর উপর নেই৷’
কাব্য ভাইয়া আমাকে ছেড়ে দিয়ে পকেটে হাত গুজে আমিরের মুখের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন,
–‘চেষ্টা করে দেখতে পারেন ওকে নিয়ে যেতে পারেন কিনা৷।আর জো’রের কথা বললেন রাইট?আপনার তো চুল পরিমাণেরও জো’র নেই ওর উপর৷ আর তার উপর ওর সাথে আমার রেজি”ষ্ট্রি হয়ে গেছে তাই না আব্বু?’
রেদুয়ান আঙ্কেলের মুখের দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি পেপার নিয়ে সোফায় বসে পড়লেন৷ চশমা ঠিক করে পড়ায় মনোযোগ দিতে দিতে বললেন,
–‘এতো কথা বলার দরকার নেই বাইরের কাওকে৷ আর হ্যাঁ! আপনাকে আমার বাড়ির আশেপাশে যেন না দেখি৷’
রেদুয়ান আঙ্কেলের কথা শুনে যতটা অবাক আমি হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক কাব্য ভাইয়া হয়েছেন৷ উনি হা করে তাকিয়ে আছেন৷ নিজেকে সামলিয়ে আবারও তী’ক্ষ্ণ কন্ঠে বললেন,
–‘আপনি আর একটাও বা”জে কথা বললে পু”লিশ ডাকতে বাধ্য হবো৷ আপনি রীতিমতো হ্যা”রা”স”মেন্ট করছেন বাড়ি বয়ে এসে৷ যতসব বড়লোক থা”র্ডক্লাস মানুষ৷’
আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি৷ আমির সবার কথা শুনে কিছু না বলেই আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললেন,
–‘তোমার জন্য সবসময় অপেক্ষায় থাকবো নীতু৷’
আমি উনার কথা শুনে কাব্য ভাইয়ার মুখের দিকে তাকালাম৷ আমিরের কথা শুনে রা’গ লাগলো প্রচুর৷ আমি কা’ট’কা’ট ভাবে জবাব দিলাম,
–‘আপনার অপেক্ষা আপনার কাছেই রাখুন৷ এই আপনার জন্য আমার জীবনটা দোটানায় আছে৷’
আমির আমার কথা শুনে আর কিছু না বলেই চলে যায়৷ এই লোকের ঝা’মেলা না হলে আজ জীবনের মোড় অন্য হতো আমার। যে যেখানে পারে অধিকার আদায় করতে চলে আসে৷ নিজেকে অধিকারের রাণী লাগছে৷ উফ!বির”ক্তিকর৷
_______________________
কাব্য ভাইয়া আবার চুপ হয়ে গেছেন৷ আমাকে দেখলে অন্যদিকে চলে যান৷ খাবারের সময় দেখা হলে বাহানা দিয়ে উঠে চলে যান। আমিও যথাসম্ভব নিজেকে পড়াশোনায় ব্যস্ত রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছি৷ কিন্তু ঘুরেফিরে তার ই’গ্নর টা বড্ড লাগছে আমার৷ সব কিছু কেমন অগোছালো লাগছে৷ কাল নতুন ভার্সিটি তে ভর্তি করাতে নিয়ে যাবে রেদুয়ান আঙ্কেল৷ সব আবার নতুন করে শুরু করতে হবে ভেবেই ঘুম পাচ্ছে৷ ভার্সিটিতে উঠার পর তিন চারদিন ক্লাস করেছি তার মধ্যে এতোশত ঝা’মেলা৷ নিজের ভবিষ্যৎ যেখানে সবাই গোছানোর চেষ্টায় মত্ত সেখানে আমি নিজের জীবনের হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছি৷ সব কিছু মেনে নেওয়া এতোটা সহজ?উহু না! যে পরিস্থিতিতে সবাই থাকে সেই পরিস্থিতি মানিয়ে নিতে হয় নিজের প্রয়োজনের খাতিরে৷ আমিও মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় আছি হয়তো ভালো কিছু হবে এইভেবে৷ বাইরে বাবার কন্ঠের আওয়াজ পেতেই চমকে উঠি । বাবা আমার নাম ধরে উচ্চস্বরে ডাকছে৷ এক মূহুর্তের জন্য সব ভুলে এক দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি বাবা হাসি মুখে দাঁড়িয়ে কাব্য ভাইয়া আর রেদুয়ান আঙ্কেলের সাথে কুশল বিনিময় করছে৷ আমাকে দেখে বাবা এগিয়ে এলেন৷ তাকে দেখে আমার কান্না গুলো উপচে বেড়িয়ে এলো৷ একছুটে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দেই৷ বাবা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আদুরে সুরে বলল,
–‘কান্নাকাটি থামিয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করবি না আমি কেমন আছি?’
–‘তু…মি আমায় বিশ্বাস করো আব্বু৷ আমি সত্যিই কিছু জানি না৷ সব কাব্য ভাইয়ার মি”থ্যা না’টক৷’
কান্নার জন্য কথা আটকিয়ে আসছে আমার৷ কাব্য ভাইয়া সরু চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন৷ আমি তাকে পাত্তা না দিয়ে আবার বললাম,
–‘আমাকে ফুঁপি কিছু কিছু বলেছে তাই বলে এমন না করলেও পারতে তোমরা৷’
আব্বু আমাকে উঠিয়ে চোখ মুছে দিয়ে বললেন,
–‘যা হয় সেটা ভালোর জন্য হয়৷ সব কিছু ভুলে পড়াশোনায় মনোযোগ দাও তুমি৷’
এমন কথা শুনে বড্ড অ’ভিমান হলো আমার৷ আমি বুঝি ফে’লনা? আমি অভিমানের সুরে বললাম,
–‘তুমি মেনে নিয়েছো সব এতো সহজে?তাহলে সেদিন সবার সামনে এমন না করলেই পারতে তোমরা৷’
–‘কাব্য আর তোর বিয়ের রেজিষ্ট্রি যেখানে আগেই হয়ে গেছে আর কি বলার থাকতে পারে৷ আমিরের ভেজা”লটা ছিলো বলেই এতো সহজে মেনে নিতে হয়েছে৷’
আমি অবাক চোখে কাব্য ভাইয়ের দিকে তাকাতেই সে ম”শা তাড়ানোর মতো হাত নাড়ে৷ আব্বু আমার দিক থেকে ঘুরে কাব্য ভাইয়ার সামনে গিয়ে বললেন,
–‘তোর যাওয়ার ডেট কবে?’
–‘আর দু সপ্তাহ পরেই মামু৷’
আব্বু আর রেদুয়ান আঙ্কেল সামনের দিকে এগিয়ে যায়৷ উনি কোথায় যাবেন দু সপ্তাহ পরে? উনি দেয়ালে পিঠ ঠে’কিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন৷ আমি উনার সামনে দাঁড়িয়ে বললাম,
–‘আমিরের জন্য না হয় বাবা আমাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছিলো৷ কিন্তু আপনি এতো মি”থ্যা কেন বলেছেন?’
–‘তোর বাবা মানে আমার মামুর ঝো”লা ভ’রা শ”র্ত শুনে তাকে জ্বা”লানোর জন্য ওই না”টক করেছি৷ ভালো ভাবে তোকে দিয়ে দিলে তোর এতো ঝা”মেলা পোহাতে হতো না৷’
আমি উনাকে অনুনয় করে বললাম,
–‘তাহলে কিসের শ’র্ত?’
–‘তোর থেকে দূরে থাকার শ’র্ত৷’
আমি অবাক চোখে উনার দিকে তাকিয়ে আছি৷ উনার বাসায় পাঠিয়ে আবার উনার থেকে দূরে থাকার শ’র্ত? উনি আমার দিকে এক পা এগিয়ে বললেন,
–‘তোর ছোট মাথায় এতো কিছু ঢুকবে না৷’
আমি গভীর ভাবে সব ভাবছি আর এর মাঝে উনি হুট করে আমার কপালে উষ্ণ পরশ দিয়ে আমাকে টেনে তার রুমের বারন্দায় নিয়ে গেলেন৷ আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
–‘নীতু আমাকে দুটো দিন তোর সময় দিবি?যেখানে কোনো প্রশ্ন থাকবে না৷ শুধু তুই আর আমি থাকবো৷ চলে যাওয়ার আগে দুটো দিন চাই তোর কাছে৷ সত্যি বলছি দুটোদিন তোর কাছে সব স্পেশাল হবে৷ তারপর তুই মু’ক্ত!প্লিজ দিবি আমাকে দুটো দিন?
উনার আবেগমাখা কন্ঠে আমি বি’মোহিত হয়ে গেছি৷ এতো সুন্দর করেও উনি বলতে পারেন বুঝি? তাকে কি দেওয়া উচিৎ দুটো দিন?
চলবে……
রৌদ্দুরে_প্রেমের_বৃষ্টি
#পার্টঃ৯
রুবাইদা_হৃদি(sheikh ridy rahman)
কাব্য ভাইয়া পিছন থেকে শক্ত করে আমায় জড়িয়ে ধরে তার থুতনি আমার ঘাড়ে গুজে রেখেছেন৷ তার এহেন কাজে আমার শরীরে ঠান্ডা শীতল স্রোত বয়ে যাচ্ছে৷ উনার ভারী নিশ্বাস আমার উপর পড়ছে৷ চারদিকে চাঁদের আলোর ছুটোছুটি চলছে৷ পূর্ণ চাদের আলোয় বারান্দায় অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশ খেলা করছে৷ সেই অদ্ভুত সুন্দর পরিবেশের সাথে নতুন এক ভালোলাগার সাথে পরিচিত হচ্ছে আমার মন৷ আজ কাব্য ভাইয়াকে দূরে ঠেলতে ইচ্ছা হচ্ছে না৷ বরং মনে হচ্ছে,উনি এইভাবেই আঁ”কড়ে রাখুক আমাকে৷ যেখানে তার সাথে আমার প্রত্যেকটা সুন্দর মূহুর্ত থাকবে এই ভরা সুন্দর সন্ধ্যার মতো৷ ঘাড়ে কিছু একটার নরম স্পর্শ পেতেই কেঁপে উঠলাম৷ হুট করে মনে হলো,যা হচ্ছে কিছুতেই ভালো হচ্ছে না৷ উনার ঠোঁটের স্পর্শ এইবার গভীর হতেই তার হাতের বাঁধন থেকে ছুটতে চেষ্টা করি৷ আমতা আমতা করে বললাম,
–‘ছাড়ু…ন কাব্য ভা..ইয়া!
–‘উহু,ছাড়বো না৷’
উনি আরো আঁ’কড়ে ধরলেন আমায়৷ ঘোরলাগা কন্ঠে বললেন,
–‘তুই যদি আমাকে সময় না দিস তবে আমি জো’র করে নিবো বুঝেছিস৷’
এই অস্ব’তি থেকে মুক্ত পেতে তাড়াহুড়ো করে বললাম,
–‘আমি দিবো আপনাকে দুটো দিন৷ প্লিজ ছাড়ুন আমার অস্ব’স্তি হচ্ছে৷’
উনি নিজের মুখ এগিয়ে আমার গালে চুমু দিয়ে জলদি সরে দাঁড়ান৷ তার এহেন কাজে আমি ফ্রি’জড হয়ে দাঁড়িয়ে আছি৷ প্রথমে ঘাড়ে আবার গালে? গালে হাত দিয়ে মুছতেই উনি তড়িৎ গতিতে এসে আবার চুমু দিয়ে দেয়ালে ঠে’স দিয়ে দাঁড়ান৷ মুখে মুচকি হাসি টেনে বললেন,
–‘যত বার মুছতে চেষ্টা করবি আমি আবার ডাবল দিবো৷ এতে আমারই লাভ৷ তুই মুছে ফেল৷ এইবার ডাবলের ডাবল পড়বে৷’
আমি দুই হাত গালে দিয়ে মুখ অন্যদিকে ঘুরে বললাম,
–‘আপনি প্রচুর অস’ভ্য কাব্য ভাই৷ যাকে বলে মা”এাতিরিক্ত অস”ভ্য৷ আপনার এই রুপ অন্য কেও দেখলে নিশ্চয়ই হা”র্ট অ্যা”টাক করবে৷’
–‘তুই ছাড়া হা”র্ট অ্যা”টাক আর কে করবে৷’
উনার দিকে তাকিয়ে দেখি সে ঠোঁট কা’মড়ে হাসছে৷ ছিঃ কতো নোং”রা হয়ে গেছেন উনি ৷ উনার এমন রুপ দেখলে উনাকে যারা আইডল হিসেবে দেখেন তারা নিশ্চিত দুদিন অ”ঙ্গান থাকবে৷ আমার দিকে এগিয়ে এসে আবার ফিসফিস করে বললেন,
–‘আম্মুর কাছে থেকে কাল সকালে ইমিডিয়েটলি দুদিনের জন্য কোথাও যাবি সেটা বলবি৷ ফারদার মুখ ফ”সকে একটা উল্টাপাল্টা কিছু বললে তোকে উঠিয়ে দশতলা থেকে ছু”ড়ে ফেলে দিবো৷ আর ভুলেএ যেন তোর বাপ মানে আমার হি”টলার মামু এইসব টের না পায়৷ তাহলে কে”লেং”কারী হতে একচুলও বাকি থাকবে না৷’
–‘কিন্তু যাবেন কো….
আর কিছু বলার আগেই উনি আবারও গালে চুমু দিয়ে শ”য়তানী হাসি দিয়ে চুলে হাত বুলিয়ে চলে যান৷ আমি “থ” হয়ে দাঁড়িয়ে আছি৷ গালে হাত দিয়ে মুছতে যাবো তখুনি দেখি সে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন৷ আমি আবারও দু গালে হাত দিয়ে ঘুরে বিরবির করে বললাম,’তোর শান্তি নেই নীতু! একদম শান্তি নেই৷ এই কাব্য নামক ভ’দ্র মানুষের মুখো’শ পড়ে থাকা অভদ্র মানুষ তোর জীবন তে’জ’পাতা করে ভা’জা ভা’জা করে ফেলবে!!
______________________________
ফুঁপির রুমের সামনে পায়চারি করছি আধঘন্টা যাবৎ৷ কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছি না৷ কাল সারারাত ভাবতে ভাবতে ঘুমাতে পারি নি৷ ফা”লতু লোক একটা আ”জা”ইরা ভেজা”লে আমায় ফাঁ”সিয়ে দিয়ে নিজে আরামসে ঘুমাচ্ছেন৷ ইচ্ছা হচ্ছে,ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়ে আসি উনার উপর৷ কি ভাবে কি বলবো সব গুছিয়ে নিয়ে রুমে উঁকি দিয়ে দেখি ফুঁপি জায়নামাজ উঠাচ্ছে৷ বুকের মাঝে ফুঁ দিয়ে নক করলাম৷ ফুঁপি আমার দিকে তাকিয়ে ভেতরে আসতে বলে বলল,
–‘এতো সকালে হঠাৎ ফুঁপিকে মনে পড়লো কেন?’
আমি বেডের উপর বসে চারদিকে চোখ বুলিয়ে বললাম,
–‘আঙ্কেল কোথায় ফুঁপি?’
ফুঁপি আমার পাশে বসে বললেন,
–‘তার তো সকালে সেই এককাজ উঠেই রাস্তার মোড়ে চা খেতে চলে যাওয়া৷ ও হ্যাঁ!একটু পর রেডি থাকিস তোকে আজ ভর্তি করাতে নিয়ে যাবে তোর আঙ্কেল৷ কাল বড় ভাইয়া তোর ট্রা”ন্স”ফার সার্টিফিকেট দিয়ে গেছেন৷’
আমি কিছুক্ষণ চুপ থেকে শ্বাস টেনে নিয়ে আমতা আমতা করে বললাম,
–‘ইয়ে মানে ফুঁপি,আসলে ফুঁপি..
–‘তুই তোতলানো শুরু করলি কবে থেকে নীতু? আম্মু তোমার ভাইয়ের এই তোতলা মেয়েকে কেও বিয়ে করবে না৷’
কাব্য ভাইয়া মোবাইল চালাতে চালাতে রুমে ঢুকে উক্ত কথা বললেন৷ আমি তেঁ’তে উঠে বললাম,
–‘ফুঁপিইইই..তোমার ছেলে সব সময় আমার সাথে মিস”বিহেভ করে৷ উনাকে কিছু বলো তা না হলে উনার চুল সব কয়টা ছি’ড়ে ফেলবো আমি৷’
আমার কথা শুনে আমাকে জোরে একটা ধ”মক দিয়ে উনি আবার মোবাইলের দিকে মনোযোগ দিয়ে ফুঁপির কোলে মাথা রেখে আমার কোলের উপর পা দিয়ে শুয়ে পড়েন৷ ফুঁপি উনার চুল জোরে টান দিয়ে শা”সনের সুরে বলল,
–‘মেয়েটা যা বলছিলো তা বলতে না দিয়ে এতো ওর পিছে লাগিস কেন তুই৷ ফা”জিল ছেলে ওর পিছে আবার লাগলে তোর চুল নীতুর সাথে মিলে আমিও ছি’ড়বো৷ তোর বাপ আর তুই চা”ন্দি ছি’লা হয়ে যাবি৷’
–‘তারমানে তুমি আব্বুর চুল ছি’ড়ে এতো সুন্দর টা’ক বানিয়েছো৷ আহা!আমার বে’চারা বাপ৷’
উনার কথা শুনে ফুঁপি আবারও উনার চুল জোরে টান দিয়ে হেসে উঠে৷ তাদের মা-ছেলের মাঝে আমাকে কা”বাব মে হা”ড্ডি মনে হচ্ছে৷ আমি তাদের হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে সমস্ত কিছু ভুলে গেছি৷ কাব্য ভাইয়া তার পা দিয়ে আমার পেটের উপর আলতো ধা”ক্কা দিতেই চ’মকে উঠি৷ উনি আমাকে তাকাতে দেখেই চোখের ইশারায় বলতে বলে আবারও মোবাইল চালাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন৷ এই যাএায় আমার কেটে বের হওয়ার উপায় না দেখে কান্না পাচ্ছে আমার৷ আমাকে চুপ থাকতে দেখে উনি নিজের পা উঠিয়ে বললেন,
–‘তোর মহা মূল্যবান কথা বলার সময় আমার পা টি’পে দিতেই পারিস৷ আর জলদি কি বলবি বল৷ না হলে আজ সারাদিন তোকে দিয়ে পা টে’পাবো৷’
উনার এমন কথা শুনে আমি অনুনয়ের চোখে তাকালাম৷ উনি আমাকে পাত্তা না দিয়ে ফুঁপিকে দিয়ে চুল টানাতে ব্যস্ত৷ আমি সাহস নিয়ে বললাম,
–‘ফুঁপি,আমি দুইদিনের জন্য ঐশী দের বাসায় যেতে চাই৷ আমার অনেক নোটস ওর কাছে আছে৷ আর আমি কোথায় আছি ও জানে না৷ অনেক দরকারি নোটস আমার ইমি”ডিয়েটলি লাগবেই লাগবে৷ প্লিজ তুমি মানা করো না৷ আর আজ ভর্তি হতে যাবো না৷ ওদের বাসা থেকে এসে একবারে ভর্তি হবো৷’
আমি একদমে কথা গুলো বলে হাফ ছাড়লাম৷ কাব্য ভাইয়া বি”স্ফো’রিত চোখে তাকিয়ে আছেন৷
–‘কিন্তু….
ফুঁপিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে কাব্য ভাইয়া উঠে বসে বললেন,
–‘কোনো কিন্তু নয় আম্মু!ও যদি যেতে চায় যেতে দেও ওকে৷ আর ভর্তির ব্যাপার টা আব্বু চলে গেলে আমি নাহয় সামলিয়ে নিবো৷ সত্যি ওর রি’ফ্রেশ’মেন্টের দরকার তাই আর মানা করো না৷ আর হ্যাঁ আমি যাওয়ার আগে ফ্রেন্ডদের সাথে রা”তা’র’গুল ঘুরতে যাবো আজ৷ ওদের বারণ করেছিলাম বাট শুনে নি৷ ওরা বললো,জার্মান যাওয়ার আগে আমাদের সাথে কিছুটা টাইম স্পেন্ড করে যা৷ ওদের কথা ফেলতে পারি নি৷ তাই আর মানা করো না৷ লেখিকা,রুবাইদা হৃদি আর আমি যাওয়ার আগে না হয় নীতুকে ঐশীদের বাসায় ড্র’প করে দিয়ে যাবো৷’
উনি তারমানে জার্মান চলে যাবেন? এইকথা মনে হতেই কেমন খারাপ লাগলো একটু৷ এমন কেন উনি?আমাকে একটুও বললেন না৷ ফুঁপি উনার কথা শুনে মু’চকি হাসলেন৷বলল,
–‘তুই যখন এগ্রি করেছিস, এইখানে আমার বলার আর কিছুই নেই৷ আর রা’তা’রগুল যাবি এই সময়?এই কয়েকটা দিন বাসায় থাকলে কি হবে তোর৷’
উনি ফুঁপির হাত ধরে বাচ্চাদের মতো বললেন,
–‘প্লিজ আম্মু মন খারাপ করো না৷ আমি কথা দিচ্ছি জাস্ট দুটো দিন লেখিকা রুবাইদা হৃদি ঘুরবো দেন যে কয়টা দিন আছি তোমার পিছু ছাড়বো না৷ প্লিজজজ..
উনার কথা শুনে ফুঁপি রাজি হতেই আবার গম্ভীর মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
–‘যেতে চাইলে বিকেলে রেডি হয়ে থাকবি৷ আর একফোটা দেরি হলে তোকে রেখে চলে যাবো৷’
উনি বলেই যেভাবে এসেছিলেন সেইভাবে চলে গেলেন৷ আমি কি বলবো ভাষা খুজে পেলাম না৷ উনার ভাব দেখে মনে হচ্ছে আমি উনায় জো’র করে নিয়ে যাচ্ছি৷ কিন্তু এখানে কাহিনি তো পুরো উল্টো৷
.
.
বিকেলের হালকা রোদের ঝলকানি সুন্দর লাগছে৷ হালকা হাওয়া শরীরে ছুতেই শিরশির করে উঠছে৷ একটু আগে বৃষ্টি তার নিজস্ব সত্তায় আকাশ ভেদ করে আ’ছড়ে পড়েছে৷ বৃষ্টির পর ঠান্ডা মৃদু হাওয়ার মতো আমার মন উত্তাল লেখিকা,রুবাইদা হৃদি ভাবে বইছে৷ হঠাৎ প্রচন্ড মন খারাপ এসে ভীড় করছে৷ যাওয়ার জন্য রাজী হওয়ার জন্য এখন নিজেকে নিজের কাছে ছোট মনে হচ্ছে৷ কেন!কেন? উনার পা”গলামি তে রাজী হলাম? হলে তো উনার এই রুপ দেখতে হতো না৷ নিজে থেকে সব করবে আর কষ্টে পু”ড়াবে আমায়৷ পাশেই উনি একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলতে ব্যস্ত৷ মেয়েটা কয়েকবার উনার শরীরের উপর এসে পড়ছে৷ কিন্তু উনি কিছু না বলেই মেয়েটার সাথে হাসতে ব্যস্ত৷ আর আমি বাসস্ট্যান্ডের বেঞ্চিতে বসে উনাদের তা’মাশা দেখতে ব্যস্ত…
চলবে…
(কাব্য আবার ব’কা খাবে৷ আরেকটা কথা,কাব্য কেন দূরে যাবে সেটা আগামী পর্বে ক্লিয়ার করবো৷ কাব্য এমন একটা চরিএ তার ভেতর রহ’স্য শেষ হয়েও হবে না৷ তবে সব শেষ করবো আমি আপনাদের চেয়ে আমি বেশি অস্থির হয়ে গেছি কবে শেষ করবো এইভেবে৷ আর কেমন হয়েছে জানাতে ভুলবেন না৷ ভুল গুলো ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷)