রঙিন খামে বিষাদের চিঠি পর্ব ৩৩

0
220

#রঙিন_খামে_বিষাদের_চিঠি
#পর্বঃ৩৩
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

৮৫,
লিভিং রুমে চিন্তিত ভঙ্গিতে হাঁটুতে ভর দিয়ে গালে হাত দিয়ে বসে আছে আয়াত। ভোর ৫টার ট্রেনে চড়ে বোনের বাসায় এসে হাজির সে। কিন্তু এসে বোন বা রায়াদ কাউকে পেলো না। উল্টে ভ্লাদ আর মাদালিনাকে দেখলো সে। দুজনকে একটুও পছন্দ নয় আয়াতের। এদের সঙ্গদোষে রিয়ানা আজ উচ্ছন্নে। অবশ্য ওদের সঙ্গ রিয়ানা তাদের দোষেই নিয়েছে। এটা তার আর বাবার ব্যর্থতা। এদের আর কি দোষ দেওয়া যায়? মাদালিনা আর ভ্লাদ দুই পাশের দুই সিঙ্গেল সোফায় বসে আছে। জুনায়েরও আয়াতের সাথে এসেছে৷ কিন্তু রায়াদ আর রিয়ানাকে না পেয়ে সে বেরিয়ে পরেছে খুঁজতে। আয়াত মানা করেও তাকে থামাতে পারেনি। সে নিজে যেতে চাইলেও যেতে দেয়নি জুবায়ের। কয়েকদিনের জার্নিতে আয়াত একদম নেতিয়ে পরেছে। আগের মতো জার্নি করা হয়না তার। হুট করে ২-৩দিনে এত ছুটোছুটি করে তার অবস্থা খারাপ। অথচ বাসায় বসেও যে চিন্তায় মাথা ফেঁটে যাবার যোগার হয়েছে! তার বেলায়? আয়াত আর স্থির থাকতে পারলো না। বেলা গড়িয়ে বিকেলের পথে। অথচ কারোর হদিস নেই। ভ্লাদ আর মাদালিনা দুই পাশের দুই সিঙ্গেল সোফায় বসে আছে। আয়াত একবার মুখ উঁচিয়ে তাকালো মাদালিনার দিকে। রিনরিনে স্বরে ওদের ভাষায় বললো,

“তোমার কোনো আইডিয়া আছে! কোথায় যেতে পারে?”

“ওর আইডিয়া কি করে থাকবে সিস? সেই লোক-টা বেরিয়ে যাওয়ার পরপর-ই তো রিয়া গেলো। লিনা আমার পরে এসেছে এখানে।”

বললো ভ্লাদ। আয়াত একটু বিস্মিত হলো। সে আসার পর মাদালিনা আর ভ্লাদকে একসাথে দেখেছে। তাহলে মাদালিনা পরে আসছে মানে? সে ভ্লাদকে জিগাসা করলো,

“পুরো বিষয়-টা আমায় একটু এক্সপ্লেইন করবে?”

ভ্লাদ সে আসার পর যা যা ঘটেছে সবই বললো। এরপর বললো রিয়ানা বেরিয়ে যাওয়ার ১০-১৫মিনিট পর মাদালিনা এসেছে। আয়াতের নিস্তেজ ভঙ্গিতে সোফায় গা এলিয়ে দেয়। বুঝে যায় সে, নিশ্চিত রায়াদকে সময় না দিয়ে রিয়ানা ভ্লাদের সাথে আড্ডা দিতে বসেছিলো। যার ফলাফল রায়াদ রেগে কোথাও গেছে। আর রিয়ানা তার পিছুপিছু। অবশ্য সব-টা তার আন্দাজ। বাকি-টা রায়াদের সাথে কথা বললেই বোঝা যাবে। আয়াতের এই অপেক্ষার মাঝে-ই জুবায়ের বাসায় ফিরলো। কাঁধের উপর তার ব্লেজার ঝুলছে। একহাতে তা ধরে ধীর পায়ে হেঁটে আসছে জুবায়ের। তাকে দেখে আয়াত উঠে দাড়িয়ে এগিয়ে গেলো। ব্যস্ত ভঙ্গিতে শুধালো,

“খোঁজ পেলেন?”

জুবায়ের মাথা কাত করে বোঝালো না। আয়াত ফোঁস করে দম ফেললো। সোফার সামনে টি-টেবিল থেকে ফোন-টা তুলে কল লাগালো বাবার কাছে। হানিফ হোসাইন কল রিসিভ করতেই সব খুলে বললো আয়াত। সব শুনে হানিফ হোসাইন বললেন,

“কি করবো আমি? লোকজন পাঠাবো? খোঁজ করতে বলবো?”

“তো কি করবে? দুজন-ই নিরুদ্দেশ বাবা। তোমার যতটুকু সোর্স! যতটুকু পাওয়ার। কাজে লাগাও। আমার চিন্তা হচ্ছে খুব।”

“তোর বাবার দৌড় এই ভিনদেশে শুধু বড় মানুষদের সাহায্য নেওয়া। দেখছি আমি বিষয়-টা। তুই শান্ত থাক আম্মু।”

“শান্ত-ই আছি। আগামীকাল সকাল অব্দি অপেক্ষা করবো। এরপর পুলিশের কাছে যাবল। তুমি আগেই কিছু করো না।”

“তবে আমি আমার মতো খোঁজার চেষ্টা করি।”

“যেটা ভালো মনে হয়।”

হানিফ হোসাইন কল কাটলেন আয়াতের জবাবে। আয়াত সোফায় বসে মাদালিনার দিকে তাকিয়ে বললো,

“তোমরা বাসায় যাবে?”

“না সিস। রিয়ার জন্য চিন্তা হচ্ছে।”

মাদালিনা উত্তর দিলো। আয়াত জবাব দিলো না। জুবায়ের দরজার পাশে কাঁচের জানালার সামনে দাড়িয়ে দৃষ্টি ফেলে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। আয়াত উঠে তার পাশে এসে দাড়ালো। কাঁধে হাত রেখে বললো,

“চিন্তা হচ্ছে খুব?”

“রায়াদের জন্য। রিয়ানা সব চিনে, বুঝে। তাই ওর ভয় পাচ্ছি না আমি।”

“আমিও।”

৮৬,
আয়াত নিষ্প্রভ মলিন ভাবে হাসার চেষ্টা করে বললো। জুবায়ের তার পানে একবার তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। ঘড়ির কাটার সময় সন্ধ্যা ৬টার ঘরে ছুঁই ছুঁই। অথচ তারা এসেছে সকাল ৯টায়। এখনও দুজনের একজনেরও দেখা পেলো না। আয়াত চিন্তিত হয়ে উপর তলায় চলে আসে। ঘর টা পরিপাটি। অথচ তার বোন অগোছালো এক মেয়ে। সময় কি মানুষকে পরিবর্তন করে এভাবেই? নাকি অভ্যাসগুলোকে পরিবর্তন করে? আসলে ঠিক কোন-টা হয়! বুঝতে পারলো না আয়াত। মানুষ-টা তো একই থাকে। বদলায় শুধু অভ্যাস। এইজন্য হয়তো তার অগোছালো বোন-টা গোছালো হলো। বিছানার এক কোণায় রিয়ানার ফোন পরে আছে। সাথে রায়াদের ফোনও। একজনও ফোন নেয়নি। নিলে হয়তো এমন হতো না। কল করে অন্তত খোঁজ নেওয়া যেত। আয়াত চোখ বন্ধ করে নিলো। তার ভালো লাগছেনা কিছু। এরমাঝেই জুবায়ের রুমে আসলো। ব্লেজার সোফায় ছুড়ে শার্টের উপরের বোতাম দু’টো খুলে হাতা গোটাতে গোটাতে আয়াতের পাশে বসলো। ঘাড় খিঁচে আসায় নিজ এক হাতে চেপে ধরে বললো,

“সারাদিন মনে হয় না কিছু খেয়েছো৷ বাইরে চলো। কিছু খেয়ে আসা যাক। নিচে ছেলে মেয়ে দু’টো ঠায় বসে আছে রিয়ানার অপেক্ষায়। ওদেরও তো খিদে পেয়েছে। ওরা তো বাচ্চা নয়৷ এত টেনশন করছো কেন?”

“টেনশন করছিনা। আমি ভাবছি।”

আয়াত চোখ বন্ধ করেই জবাব দিলো। জুবায়ের আয়াতের পাশে ধপ করে শুয়ে পরলো। আয়াতকে হেঁচকা টানে বুকে টেনে চুলে বিলি কেটে দিতে শুরু করলো। কপালে আলতো ম্যাসাজ করে দিতে দিতে বললো,

“কি ভাবছো? যে ওরা একে অপরের সাথে ঝগড়া করছে?”

“ভরসা নেই। কেউ কাউকে সহ্য করতেই তো পারে না। কি বলবো আর?”

আয়াত আবেশে চোখ আরও একটু জুবায়েরে বুকে সিধিয়ে গেলো। জুবায়ের বুঝলো কি করে তার মাথা ব্যথা করছে! কি সুন্দর বুকে আগলে নিলো। টেনশনের সময় ভালোবাসার মানুষের ছোট্ট এই কেয়ারগুলো এত শান্তি দেয়! ইশশশ। আয়াত স্মিত হাসলো। দুহাতে জুবায়েরকে জড়িয়ে ধরে লেপ্টে রইলো তার বুকের মাঝে। জুবায়ের আলতো হাসলো। রায়াদ যদি রিয়ানার সাথে থাকে! তবে তার চিন্তা নেই। কিন্তু বাসায় আসছে না কেন? এটাই চিন্তা। কিন্তু বাসায় আরও দুজন মানুষ আছে। তাদের বসিয়ে রেখে দুজনে এভাবে রুমে শুয়ে আছে। বিষয়টা শোভনীয় নয়। জুবায়ের আয়াতের কপালে চুমু দিয়ে আদুরে স্বরে ডাকলো,

“আয়াত এই আয়াত!”

“হু বলুন।”

আয়াত আবেশ জড়ানো কণ্ঠে জবাব দেয়। জুবায়ের আয়াতকে শান্তি পেতে দেখে আর উঠাতে চাইলো। কপালে, চোখের পাতায় গালে সবশেষে ঠোঁটে দীর্ঘ সময় নিয়ে চুমু দিয়ে বললো,

“একটু রেস্ট করো। আমি খাবারের ব্যবস্থা করি৷ নিচে আরও দুজন আছে। এভাবে ওদের রেখে দুজন শুয়ে আছি। আরও দুজন মিসিং। খবর নেই। এই সময়ে এমন বউ নিয়ে শুয়ে থাকা মানাচ্ছে না।”

জুবায়ের একটু হেসেই বললো শেষের কথা। আয়াত জুবায়েরের বুকে কিল দিয়ে বললো,

“বাবাকে জানিয়েছি না? ওদের খোঁজ বা দেখা যাবে ওরা-ই আসবে। প্রথমে চিন্তায়৷ নিজেকে পাগল পাগল লাগলেও এখন চিন্তা কমে এসেছে। দুইটা-ই ঘাড়ত্যাড়া। নিশ্চিত কোনো সমস্যায় আঁটকে ঝগড়া করতে শুরু করেছে। একজন বাসায় আসবেনা। আরেক জন হয়তো দেখো নিয়ে আসার জন্য জিদ ধরে বসে আছে। ওরা ফিরলে দেখবে এটাই শুনতে পারবো।”

জুবায়ের হাসলো আয়াতের কথায়। আলগোছে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে নিচে আসলো। ভ্লাদকে সোফাতেই ঘুমাতে দেখে মাদালিনার দিকে তাকালো সে। মাদালিনা গালে হাত দিয়ে অন্য হাতে ফোন দেখছে। সে তার উদ্দেশ্যে ধীর গলায় ইংলিশে বললো,

“তোমরা খাবেনা কি? রাত হয়ে আসলো। মনে তো হয়না আসার পর থেকে কিছু খেয়েছো!”

মাদালিনা মাথা তুললো। রিয়ানার কাছে ওদের ব্যাপারে শুনেছে। ছবিও দেখেছে। আবার আসার পর আয়াতের সাথে দেখা হলে জুবায়েরের সাথে পরিচয় করিয়েও দিয়েছে আয়াত। এজন্য সেও জুবায়ের যেন বুঝতে পারে! সেভাবেই ইংলিশে বললো,

“আমরা কিছু খাবো না ভাইয়া। রিয়া আসুক। আমরা বাসায় যাবো। বাসায় প্যারেন্টস টেনশন করছে।”

“কিন্তু আমার সাথে একটু আশেপাশে কোনো রেস্টুরেন্ট থাকলে চলো তো। আমাদের খিদে পেয়েছে। আমাদের খেতে হবে।”

মাদালিনা উঠে দাড়ালো জুবায়েরের কথা কানে যেতেই। এরপর ভ্লাদের দিকে একবার তাকিয়ে জুবায়েরকে বললো,

“লেট’স গো।”

৮৭,
একটা এপার্টমেন্টের ৭নম্বর ফ্লোরে এক বান্ধবীর বাসার ড্রইং রুমে বসে আছে রিয়ানা। সামনে তার বাঙালি বান্ধবী তাহিয়া ব্যস্ত ভঙ্গিতে একবার এ মাথা তো একবার ও মাথা পায়চারি করছে। রিয়ানা বেশ ক’বার তাহিয়াকে খেয়াল করে এবার বিরক্ত হয়ে বললো,

“থামবি তুই? কি শুরু করছিস?”

তাহিয়া থামলো। কোমড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে বললো,

“ছেলে-টার এখনও ঘুম ভাঙেনি। বিষয়-টা সিরিয়াস। আমার চিন্তা হচ্ছে।”

“রাস্তায় দেখেশুনে গাড়ি ড্রাইভ করতে পারিসনি?”

“বইন এটা তো বিডি না যে জ্যাম থাকবে! আমি ভয় করবো। সিগনাল মেনেই ড্রাইভ করেছি। মাঝখানে এই লোক এসে জীবন দিতে আগ্রহ প্রকাশ করবে? এটা আমি জানতাম নাকি?”

তাহিয়ার কথায় বিরক্তির রেশ কয়েক দফা বাড়লো রিয়ানার। মেজাজের খেই হারিয়ে বললো,

“ঘুম ভাঙলে নিয়ে বিদায় হবো। এত পায়চারি করার কি হয়েছে?”

“আমার বেডরুমে আমার বেডে একটা ছেলে শুয়ে আছে। বিষয়-টা আমায় ভাবাচ্ছে।”

“চুপ, একদম চুপ। আর একটা কথাও বলবিনা। তোকে পাকনামি করে বাসায় এনে খাবারের পর ঘুমের ইনজেকশন দিতে কে বলেছিলো?”

“ছেলে-টা কষ্টে কাতরাচ্ছিল। এজন্য ভাবলাম ইনজেক্ট করি! একটু ঘুমিয়ে নিক। কিন্তু সময়ের রেশ ছাড়িয়ে মাত্রারিক্ত ঘুমাবে! এটা কে জানতো? ”

“বোকামির একটা লিমিট থাকে। সব ছাড়ায় গেছিস। সর চোখের সামনে থেকে। বললাম আমার বাসায় দিয়ে আয়! না, তার গাড়ির সামনে পরেছলো বলে! সুস্থ না হওয়া অব্দি এখানে রাখবে। যত্তসব৷”

“আরে এখানে পুলিশি ঝামেলাও আছে। ভুলে কেন যাস?”

“চুপ। কফি বানিয়ে আন যা। আমার মাথা ধরে যাচ্ছে।”

তাহিয়া মুখ ফুলিয়ে ফেলে রিয়ানার ধমকে। রিয়ানার কথামতো চলে যায় কফি বানাতে। রিয়ানা সোফায় গা এলিয়ে বসে। তাহিয়া মেয়ে-টা এ বছরের উইন্টার সীজনে তার সাথে ভার্সিটিতে এডমিট হয়েছে। একই বিভাগ হয়ে একপ্রকার সে নিজেই আগ বাড়িয়ে রিয়ানার সাথে একটা বন্ডিং তৈরি করে। রিয়ানা প্রথম দিকে পাত্তা না দিলেও তাহিয়ার পাগলামি দেখে মেনে নেয় ফ্রেন্ডশিপ করার কথা। তাহিয়া এসেছিলো সে বাঙালি বুঝে ফ্রেন্ডশিপ করতে। তাদের ডিপার্টমেন্টে বাঙালি স্টুডেন্ট তেমন নেই বললেই চলে। এজন্য একটু কমফোর্ট জোন রাখতে রিয়ানা নিজ স্বার্থেই ফ্রেন্ডশিপ স্বীকার করে। সকালে রায়াদের খোঁজে বের হওয়ার পর হন্তদন্ত হয়ে সেন্টারের কাছাকাছি আসতেই দেখে রাস্তায় রায়াদ পরে আছে। আর তাহিয়া এই ঘটনায় কান্না করে দিয়েছে প্রায়। পরে তাহিয়ার থেকে জানতে পারে ড্রাইভ করতে করতে সিগনাল রেখে মেইন রোডে রায়াদ রোড ক্রস করতে ধরেছিলো। সিগনাল না থাকায় তাহিয়া নিশ্চিন্তে ড্রাইভ করছিলো। রায়াদকে খেয়াল করে ব্রেক করতে করতেও ধাক্কা লেগে যায়। তাতে বড়সড় আঘাত না পেলেও কপাল ফেটেছে। কোমড় সহ হাতেও বেশ কিছু জায়গায় ব্যথা পেয়েছে। জার্মানিতে এই ছোট্ট ঘটনা বড় ইস্যু। তাহিয়াকে পুলিশের কাছে বড় জরিমানা গুণতে হয়েছে। দোষ না করেও দোষ তার হলো। এরপর রায়াদকে হাসপাতালে নিয়ে ট্রিটমেন্ট যা করার করে নিয়ে বাসায় ফিরতে চেয়েছিলো রিয়ানা। কিন্তু তাহিয়া জিদ ধরে তার বাসায় আনে। বলে রিয়ানা একা সামলাতে পারবেনা। কারণ তখনও রায়াদের অবস্থা বেঁহাল। রিয়ানা ওর পাগলামির সামনে টিকতে না পেরে এখানে এসেছে। আয়াত এখানে এসে কোন নাম্বার নিয়েছে! তার জানা নেই। ফোন-টাও বাসায়। নয়তো ফোন দিতো। অথবা নাম্বার জানা থাকলে ফোন দিতে পারতো তাহিয়ার ফোন দিয়ে। কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে তাহিয়া বাসায় এনে মেডিসিনের মাঝে ঘুমের ইনজেকশন দেখে পাকনামি করে রায়াদকে পুশ করে দিয়েছে। রায়াদ এমনি শরীরের ব্যথায় নড়তে পারছিলো না। তারমাঝে ঘুমের ওষুধ। বেঘোরে পরে পরে ঘুমাচ্ছে সে। বাসায় যেতে হবে। সকালে ভ্লাদকে রেখেই বেরিয়ে এসেছিলো। কি যে একটা বাজে সিচুয়েশনে আঁটকে গেলো সে! কারোর নাম্বার মুখস্ত রাখেনা রিয়ানা। নয়তো কল করা যেত। ধ্যাত! ভালো লাগছেনা কিছু। রিয়ানা নিজের উপর বিরক্ত হয়ে উঠে দাড়ালো। তার থেকে বেশি বিরক্ত লাগছে রায়াদকে। অসভ্য ছেলে একটা! এভাবে বেরিয়ে আসতে কে বলেছিলো। কোনো নিয়মকানুন জানেনা। আর বাঁধিয়ে বসলো এক বিপত্তি। কে বলেছিলো রোড পার হওয়া তাকে দেখে। তাড়াহুড়ো দেখানো না তাকে! ঠিক হোক একটু। মজা দেখাবে সে। এরমাঝেই তাহিয়া কফি বানিয়ে নিয়ে আসে। রিয়ানার দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,

“এখনও বললি না ছেলে-টা কে? তোর সাথে কিসের সম্পর্ক? ওর এমন বাজে সিচুয়েশন দেখে এত চিন্তিত কেন তুই? কোনো ছেলের জন্য তো এই একবছরে দেখলাম না এত চিন্তিত! অস্থির চিত্তে পার করতে! ভালো টালো বাসিস নাকি? বাই দ্যা ওয়ে ছেলে-টা কিউট কিন্তু!”

তাহিয়া প্রশ্নগুলো খাঁমোখা মনে হলো রিয়ানার কাছে। জবাব দিলো বনা। কফির মগ হাতে নিয়ে পা বাড়ালো সেই রুমের দিকে! যেখানে রায়াদ আছে। ঘুম না ভাঙলে জোড় করে ভাঙাবে। এরপর বাসায় যেয়ে তবে দম। বে’আক্কেল ছেলে একটা। সারাটা দিন দৌড়ের উপর রাখলো তাকে।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here