রঙিন খামে বিষাদের চিঠি পর্ব ২০

0
244

#রঙিন_খামে_বিষাদের_চিঠি
#পর্বঃ২০
#আর্শিয়া_ইসলাম_উর্মি

৪৪,
ক্লিনিকের ওয়েটিং স্পেসে রায়াদকে দেখে চমকালো রিয়ানা। এই লোক সকালেই ফোন দিলো। আবার এখন চোখের সামনে! বিষয়-টা মাথায় ঢুকছেনা রিয়ানার। সে আয়াতের হাত চেপে রায়াদের দিকে সন্দিগ্ধ চাহনীতে তাকিয়ে এগোলো সেদিকে। আয়াতকে প্রশ্ন করলো,

“রায়াদ ভাই এখানে কি করে?”

“আমিও তোর মতোই আসলাম মাত্র। কি করে বুঝবো?”

“খবর দিলো কে আসার জন্য? এই ক্লিনিকেই বা কি করে?”

“এগোয় ওনার দিকে! এরপর না জানবো?”

আয়াতের জবাব পেতেই রিয়ানা চুপ হয়ে গেলো। তখনই পেছন থেকে সাজ্জাদ আয়াতের পাশাপাশি হাঁটতে হাঁটতে শুধালো,

“কি হয়েছে? দু’জনকে-ই চিন্তিত লাগছে যে?”

“ও কিছু না সাজ্জাদ ভাই। এমনিই পরিচিত মানুষ-কে দেখে তার কথা-ই বলছিলাম।”

আয়াত জবাব দিলো। রিয়ানা বরাবরের মতো নিরব। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে সবার সাথে কুশলাদি বিনিময় করে খাওয়া দাওয়া করে সাজ্জাদের সাথে হাসপাতালে এসেছে দুবোন। বাড়িতে পুরুষ বলতে এক সাজ্জাদ-ই ছিলো। সাজ্জাদের বাবা আরিফ হোসাইন ক্লিনিকে ভাইয়ের কাছে আছেন। বাসায় সাজ্জাদের মা এবং স্ত্রী উপস্থিত ছিলো। তারা-ই আপ্যায়ন করেছে দু’বোনকে। এরপর এসেছে বাবাকে দেখার জন্য। সোজাসুজি ক্লিনিকে-ই আসতে চেয়েছিলো আয়াত। কিন্তু সাজ্জাদের কাছে বাবার অবস্থা জানার জন্য কল করার পর সে জানিয়েছিলো, যেন বাড়িতে একবার যাওয়া হয়। তার কথা মতো-ই বাড়িতে গিয়ে ঘুরে আসা। সাজ্জাদ গাড়ি পার্ক করে রিসিপশনে ফর্মালিটি কমপ্লিট করতে পেছনে পরেছিলো। এসে দু’বোনের পাশাপাশি হাঁটতে ধরে ফিসফিস করে কথা বলতে দেখে প্রশ্ন করে সে। আয়াতের জবাবে সাজ্জাদ ফের প্রশ্ন করলো,

“কাকে দেখেছো?”

আয়াত উত্তর দিলো, বললো,

“আব্বুর বেস্টফ্রেন্ডের ছেলে, রায়াদ ভাই।”

“ওহহ।”

সাজ্জাদ ছোট্ট জবাব দিয়ে চুপচাপ হাঁটতে লাগলো। করিডোর পেরিয়ে ওয়েটিং স্পেসে গিয়ে রায়াদের সামনে দাড়ালো তিনজন। ওয়েটিং স্পেসের পাশে-ই সিড়ি+লিফট। সেজন্য ওদিকে এমনিই যাওয়া দরকার ছিলো। রায়াদকে দেখে আরও একটু এগিয়ে গেলো ওরা। রায়াদ ওদের দেখে বসা থেকে উঠে দাড়ালো। বোকা হেসে প্রশ্ন করলো,

“আয়াত, রিয়ানা, আপনারা এখানে?”

“সেইম কুয়েশ্চন আপনাকে-ও করা যায় রায়াদ ভাই।”

আয়াত আলতো হেঁসে জবাব দিলো। এই কথার মাঝেই সেখানে উপস্থিত হলো জুবায়ের। ব্যতিব্যস্ত দেখালো তাকে। সামনে উপস্থিত মানুষ গুলোকে খেয়াল না করেই বললো,

“দাদুভাই চার তলায় আছে রায়াদ। চল চার তলায় যাবো।”

কথা-টা বলে ঘাড় ঘুরাতেই আয়াত, রিয়ানা সহ সাজ্জাদকে দেখলো জুবায়ের। সাজ্জাদকে সে চেনে। বেশ ক’বার আগেও সাজ্জাদের বাবার সাথে তাকে দেখেছে। অপ্রত্যাশিত ভাবে তাদের দেখে সে-ও বোকা বোকা চাহনীতে তাকিয়ে বললো,

“আপনারা এখানে?”

“এই ক্লিনিকে-ই বাবা আছেন। তার কাছে এসেছি।”

আয়াত বললো। জুবায়ের আয়াতের জবাবে হাসার চেষ্টা করলো। বললো,

“আমার দাদু-ও এই ক্লিনিকে এডমিট। হার্টের প্রবলেম আছে উনার। সেটা-ই প্রবল ভাবে দেখা দিয়েছে৷ এজন্য এখানে এডমিট করা হয়েছে।এটাই এই জেলার বেস্ট ক্লিনিক তো! এজন্য কারোর কিছু হলে এখানে-ই বোধ হয় এখানে সবার আসা হয়।”

জুবায়েরের উত্তরে বোঝার বাকি রইলোনা রায়াদের উপস্থিতি কেন এখানে! আয়াত জুবায়েরের কথা পিঠে বললো,

“আমার বাবার-ও হার্টে সমস্যা। মিনি এট্যাক এসে পরেছিলো। এখানেই এডমিট করেছে বড় চাচ্চু। একই ইউনিটে আছে তবে। চলুন একসাথে যাওয়া যাক!”

জুবায়ের মাথা এদিক-ওদিক করে সম্মতি দিলো। জুবায়ের, রায়াদ, আয়াত, সাজ্জাদ একসাথে আগে আগে হাঁটা ধরলো। তাদের পিছনে রিয়ানা আস্তে ধীরেই হাঁটছে। সাজ্জাদের উপস্থিতি তাকে অসস্তি অনুভব করাচ্ছে। সাজ্জাদের জন্য দূর থেকে যতটা অনুভূতি অনুভব হয়, মুখোমুখি হলে যেন তা ফিকে হয়ে যায় রিয়ানার। সবাই লিফটের সামনপ এসে সিরিয়ালের এমন অবস্থা দেখলো যে এরথেকে ভালো সিড়ি বেয়ে উঠা ভালো। জুবায়ের এমতাবস্থায় বললো,

“এখানে ওয়েট করার মতো ধৈর্য আমার নেই। সিড়ি দিয়েই উঠে যাবো। আপনারা কি অপেক্ষা করবেন এখানে?”

“না, চলুন সিড়ি দিয়ে-ই যাওয়া যাক। চার তলা-ই তো। বেশি উঁচু নয় যে সিড়ি বয়ে উঠতে সমস্যা হবে।”

৪৫,
আয়াত জবাব দিলো। সবাই আস্তেধীরে সিড়ি বেয়ে উঠতে শুরু করলো। রায়াদ এবং জুবায়ের আগে আগে সিড়ি টপকে উঠতে শুরু করেছে। আয়াত ধীরেসুস্থে-ই উঠছে। তার পিছনে রিয়ানা। সাজ্জাদ কেউ যদি স্লিপ কেটে পরে যায়! প্রটেকশন দিতে-ই সে পিছনে পিছনে যাচ্ছে। সাবধানের তো মার নেই। এজন্য পিছনে সে। আচমকা-ই সে রিয়ানার পাশে সিড়ি বেয়ে উঠতে ধরলো। রিয়ানা এক পলক দেখলো। কিছু বললোনা। নিজ গতিতে সে যাচ্ছে। সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। গলার স্বর খাদে নামিয়ে বললো,

“সেই এটিটিউড, সেই তেজ, সেই জেদ। সবই একই আছে রিয়ানা হোসাইন। আসার পর একটা কথা-ও বললেন না। কেমন আছি শুধালেন-ও না। এট লিস্ট কাজিন হিসেবে ২-৪টা কথা বলা-ই যায়।”ঔো

“পুরুষ মানুষের প্রতি এমনি আমার এট্রাকশন কম। তারমাঝে আবার অন্য নারীর স্বামী। যে একসময় আমায় ভালোবাসি বলতো। কথা বলার যুক্তিযুক্ত কারণ দেখিনি।”

সাজ্জাদ বিস্তর হাসি ফুটিয়ে তুললো ওষ্ঠাধরে। তাচ্ছিল্য মাখা হাসি। হেসেই বললো,

“রিয়ানা হোসাইনের বোধ শক্তি দিনদিন তবে তুখোড় হয়েছে। তবে সে হয়তো শুধু আমাকে বুঝতেই ব্যর্থ ছিলো।”

“স্ত্রী-কে নিয়ে সুখেই আছেন সাজ্জাদ ভাই। এসব কথা আর সাজে না।”

“সুখে আছি! হয়তো তাই তবে। আপনি যখন বলেছেন তবে সুখে-ই আছি। শুধু হুট করে ঘুমাতে ঘুমাতে মাঝ রাত্তিরে ঘুম ভাঙলে হাঁসফাঁস লাগে। পাশে স্ত্রী-র চেহারা দেখলে মনে হয়, এখানে আপনি থাকলেও পারতেন। আপনি আমার একবুক দীর্ঘশ্বাসের কারণ। যাকে আমার মন প্রথমবার ভালোবেসেছিলো। হয়তো আজ-ও মনের কোনো কোণায় আপনাকে যত্নে লুকিয়ে রেখেছে। লুকিয়ে রেখে হঠাৎ হঠাৎ দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে আসে। অদ্ভুত না! যে আমায় একবিন্দু পরিমাণ মায়া দয়া করেও ভালোবাসেনি! সে-ই আমার দীর্ঘশ্বাস হয়ে যন্ত্রণা দিতে ভুলে না।”

“এটা ক্লিনিক। আপনার পার্সোনাল লাইফের রাফখাতা না যে ফালতু কথা বলতে শুরু করেছেন। আপনি এখম একজন নারীর স্বামী। মনের পুরো-টা তাকে দিতেই শিখুন। পরনারীকে মনে রেখে আবার তাকেই এসব জানিয়ে কিসের জানান দিচ্ছেন! একজন নারীকে ঠকাচ্ছেন সেই ঘটনা? মিঃ সাজ্জাদ হোসাইন, আপনাকে রিয়ানা হোসাইন গুণাক্ষরেও মনে রাখেনি। জায়গা দেয়নি। আপনারও উচিত তাকে এরকম দীর্ঘশ্বাসের কারণে পরিণত না করে যাকে বিয়ে করেছেন! তাকে সুখের কারণ বানানো। যত্তসব থার্ড ক্লাস কথাবার্তা। ঘৃণা করি এমন পুরুষকে, যে মনে একজনকে রেখে অন্য একজনকে নিয়ে সংসার করার পরও তাকে ভালোবাসতে পারে না পুরো-টা দিয়ে। মেয়ে-টা আপনার ভরসায় এসেছে। তার ভরসার মান রাখা আপনার দায়িত্ব। আর দায়িত্ব থেকে টান, ভালোবাসা এসে পরে। মনের পুরো-টা স্ত্রীর খেয়ালে লাগিয়ে দিন। নেক্সট টাইম আমার কাছে এমন ফালতু কথা বললে! গালে থাপ্পড় বসাতেও কুণ্ঠাবোধ করবোনা। আপনি আমায় ভালো মতো-ই জানেন আমি রিয়ানা হোসাইন ঠিক কোন জাতের ঘাড়ত্যাড়া আর জেদি। যা মুখ দিয়ে বের করি, করে তবে ছাড়ি। মাথায় রাখবেন কথাগুলো।”

রিয়ানা রাগের সহিত সাজ্জাদকে জবাব দিয়ে হনহনিয়ে উপর দিকে উঠতে থাকলো। একবার পিছন ফিরে সাজ্জাদকে দেখে আবারও সামনের দিকে মনোযোগ দিলো। মনে মনে ভাবলো, ‘আপনি জানতেও পারবেন না সাজ্জাদ ভাই, আপনার না হওয়া এটিটিউড কুইন-টাও আপনার অনুপস্থিতিতে পুড়ে পুড়ে ছাই হয়ে মায়ায় উড়েছে। তার মায়া আর খুজে পাওয়া যাবেনা। আপনার স্ত্রী আছে। সব পিছুটান ছেড়ে এবার তাকে ভালোবাসা উচিত আপনার। আর আমি এবার সেই চেষ্টাই করবো।’ রিয়ানা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। সাজ্জাদের সাথে কথার চক্করে সবার থেকে পিছিয়ে পরেছিলো সে আর সাজ্জাদ। রিয়ানা চলে যেতে-ই সাজ্জাদ-ও হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিলো। আনমনে হেসে ভাবলো,

“এই এটিটিউড আমায় ঘায়েল করেছিলো। যার ক্ষত আজও তাজা। বাবা মায়ের কথায় অন্য নারীকে বিয়ে তো করেছি। তার প্রতি দায়িত্ব ভালোবাসা যথাযথ ভাবে পূরণ করার চেষ্টা করছি। তবুও আপনার প্রতি যে টান আমি অনুভব করেছিলাম! তা আমার স্ত্রী-র প্রতি বিয়ের আড়াই বছর পার করতেও অনুভব হলো না। সেজন্য হয়তো মানুষ বলে, জীবনের প্রথম প্রেম ভুলে যাওয়া সবথেকে কঠিন কাজ। আপনাকেও সময়ের স্রোতে ভুলে যাবো হয়তো। কিন্তু সত্যি পারবো তো ভুলতে! ভুলতেই বসেছিলাম, আর এতোগুলো মাস বাদে আবারও আপনাকে চোখের সামনে দেখে ভেতর-টায় ঝড় বইছে রিয়ানা হোসাইন। আপনি আগে সুযোগ থাকতেও বোঝেননি। এখন তো সুযোগ নেই, বুঝার তো প্রশ্ন-ই আসেনা।”

৪৬,
রাতের বেলায় জুবায়েরের রুমের জানালা ঘেষে দাড়িয়ে আছে রায়াদ। একহাতে সিগারেট। অন্য হাতে রিয়ানার ডায়েরী। সিগারেট সে কখনও সেভাবে খায় না। কিন্তু অতিরিক্ত চিন্তায় পরলে ২-১টা সিগারেটে টান দেয় সে। ক্লিনিক থেকে ফেরার সময় জুবায়েরের অলক্ষ্যে কিনে এনেছে সে৷ জুবায়ের সিগারেট দেখতেই পারেনা। দেখলেই রাগ করবে নিশ্চিত। কিন্তু আজ অতিরিক্ত টেনশনে সিগারেট না টেনে থাকতে পারলোনা রায়াদ। জুবায়েরকে নিচে পরিবারের সবার মাঝে বসে থাকতে দেখে সে খাওয়া দাওয়া সেরে উপরে এসে সিগারেটে আগুন ধরিয়ে টানছে। ডায়েরীর প্রথম পেইজ-টা সে পরেছে সকালেই। পরার পর যত চিন্তা সব ঘিরে ধরেছে তাকে। জুবায়ের সবে পরিবারের সবাইকে মানিয়ে রুমে পা ফেলে। তার পরিবারে দাদু, বাবা, সৎ মা, সৎ মায়ের পক্ষের এক ভাই দুবোন আছে তার। তার দাদুর অবস্থা তেমন গুরুতর নয় বলে চেকাপ করে মেডিসিন দিয়েই ডাক্তার রিলিজ করে দিয়েছে। দাদুর অসুস্থতার খবর বাবার মাধ্যমে পেতেই রায়াদকপ সাথে নিয়ে বাইকে করে ছুটে এসেছে জুবায়ের। পরিবারের মাঝে এই একটা মানুষের টানেই সে ঘরে ফিরে। বাকিদের জন্য তার মায়ার টান বড্ড নড়বড়ে। রায়াদকে যদিও বা সে আনতে চায়নি! কিন্তু রায়াদ জেদ করে এসেছে। সকালের পর আর বাসাতেও ফেরেনি। জুবায়েরের শার্ট প্যান্ট রায়াদের শরীরে সুন্দর মতো ফিট করে যায়। সেজন্য বাসায় যাওয়ার তাগিদ বোধ করেনি রায়াদ। জুবায়ের একবার-ও পরেনি এমন শার্টপ্যান্ট পরে নিয়ে চলে এসেছে। জুবায়েরের ব্যাগপ্যাকে ডায়েরী-টাও যত্নে তুলে এনেছে রায়াদ। জুবায়ের নিজের ঘরে পা দিতেই রিয়াদে হাতে সিগারেটের বাড়তি অংশ দেখে যথারিতী ক্ষিপ্ত হয়ে গেলো। দ্রুত পদে গিয়ে রায়াদের হাত থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে জানালা দিয়ে ছুড়ে মারলো। রায়াদ তা দেখে হাসলো। জানতো এমন কিছু হবে। এজন্য অবাক হলো না৷ জুবায়ের ক্ষিপ্ত স্বরে বললো,

“তোর পিছনে হকিস্টিকের বারি মেরে কি এই বদ অভ্যাস ছাড়াতে হবে?”

রায়াদের হাসি প্রশস্ত হলো তার ওষ্ঠাধরে। জানালার গ্রীলে হাত রেখে অন্ধকার আকাশে দৃষ্টি মেলে নিস্তেজ স্বরে জুবায়েরকে বললো,

“কোনো রহস্যময়ীকে জানার লোভে বুদ হয়ে পরলাম জুবায়ের। তবে কি এই আগ্রহ কোনোদিন মায়া, আবেগের সৃষ্টি করবে? তবে আমি দমে যাবো। তুই বলেছিলিস ভালোবাসা ভয়ংকর সুন্দর। আমি এই ভয়ংকর সুন্দর বিষয়-টায় জড়াতে ইচ্ছুক না জুবায়ের।”

জুবায়ের অবাক হলো রায়াদের কথায়। সে রায়াদের পাশে দাড়িয়ে রায়াদের দৃষ্টি লক্ষ্য করে শূণ্যে দৃষ্টি মেলে বললো,

“ভালোবাসা ভয়ংকর সুন্দর ভুল মানুষের জন্য। সঠিক মানুষকে ভালোবাসলে এটা সুখকর। কিন্তু সবথেকে অবাক করা বিষয় কি জানিস? আমরা কিছু মানুষ জীবনে প্রথম ভালোবাসি একটা ভুল মানুষকে। তার থেকে আঘাত পেয়ে ২য় বার আর কারোর প্রতি ভরসা করতে মন সায় দেয় না। কিন্তু যখন ভরসা করেই ফেলি, তখন বুঝতে পারি ভালোবাসা বিষয়-টা সুন্দর।”

রায়াদ একহাতে মাথা চুলকালো। বললো,

“এসব কঠিন বিষয় আমার মাঝে ধারণ করা সম্ভব না। ভালোবাসার কথা ভাবিওনি। এত বুঝিও না ভালোবাসা কি!”

“হ তুমি তো নাদান বাচ্চা। কি বুঝবা আর। শালা হারামি।”

“আমার বোনকে আমি তোর সাথে বিয়ে দিইনি জুবায়ের। যে শালা বলিস।”

জুবায়ের দুম করে কিল বসিয়ে দিলো রায়াদের পিঠে। ক্ষিপ্ত হয়ে বললো,

“তোর বোন আমার বোনের মতো না বোন বুঝছিস। তাই বিয়ের কথা ভুলেও মুখে আনবিনা। এখন বল এই রহস্যময়ী কে? ঘটনা কি?”

রায়াদ উত্তর দিলো না। শুধু রিয়ানার ডায়েরী এগিয়ে দিয়ে বললো,

“নিজেই পড়ে দেখ।”

জুবায়ের কথা বাড়ালো না। ডায়েরী হাতে নিয়ে পাতা মলাট উল্টালো জুবায়ের। প্রথম পাতায় উপরে লেখা একটা দিনের তারিখ৷ ২৪মে, ২০১৮৷ শুরুতে হেডলাইন লেখা,

“রঙিন খামে বিষাদের চিঠি-র ডাকবাক্স।”

জুবায়ের হাত বুলালো লেখাগুলোয়। পড়তে আরম্ভ করলো রিয়ানার কলমে সাজানো গুটিগুটি লেখাগুলো।

চলবে?

ভুলত্রুটি মার্জনীয়, নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কাজের জন্য হয়তে একটু ইরিগুলার হবো। একটু মানিয়ে নেবার অনুরোধ রইলো।আসসালামু আলাইকুম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here