#মেঘের_পালক_চাঁদের_নোলক
#পর্ব_০৩
#অধির_রায়
মহান আল্লাহ তায়ালা সবত্র ধৈর্যশীলদের পাশে থাকেন৷ বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে হবে৷ কন্ঠে আল্লাহর পবিত্র বাণী ধ্বনিত্ব হচ্ছে। ❝ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন।❞ বিপদের সময় এই আয়াত পড়তে হয়৷ যখন নিধি সকাল বেলায় কুরআন পড়ার জন্য মাদ্রাসায় যেত তখন হুজুর বলেছিলেন বিপদে ইউনুস সূরা পাঠ করতে৷ আল্লাহর নাম নিয়ে নিধি ইউনুস সূরা পাঠ করতে থাকল৷ কন্ঠে ধ্বনিত্ব হচ্ছে আল্লাহর পবিত্র বাণী আর পা দিয়ে গাড়ির ডিপিতে আঘাত করছে৷ এক সময় ক্লান্ত হয়ে আঘাত করা বন্ধ করে৷ যেখানে শেষ সেখান থেকেই শুরু৷ শেষ বারের মতো নিধি ডিপিতে আঘাত করল৷ সাথে সাথে ডিপি খুলে গেল৷ আঁখি বন্ধ করে দীর্ঘ শ্বাস নিল৷ আল্লাহকে হাজার হাজার শুকরিয়া জানাল৷ আঁখি মেলে তাকাতেই চকিত হয়ে যায়৷ তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে রাতের সেই ধাক্কা দেওয়া লোকটি৷ লোকটি তাকে চিনে ফেলেনি তো৷ অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিধির দিকে। নিধির প্রান যায় যায় অবস্থা। তবে অন্তরে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে৷ সে নিষিদ্ধ পল্লীর বাহিরে৷ ডিপি থেকে নেমে বলল,
“আমাকে সাহায্য করার জন্য আপনার কাছে আমি কৃতজ্ঞ।”
নিধির দিকে অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ নেত্রদ্বয় লাল বর্ণ ধারণ না করলেও বুঝা যাচ্ছে ভীষণ রেগে আছে৷ আঁখি ছুঁই ছুঁই কিছু চুল৷ খুঁচা খুঁচা দাঁড়ি৷ তবে ভয়ে নিধি উনার দিকে তাকাতে পারছে না৷ লোকটি নিধির দিকে এক কদম এগিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“এই মেয়ে! তুমি আমার গাড়িতে কি করছো? আমি গাড়ি ভেঙে ফেলবে নাকি?”
নিধির কান্না পাচ্ছে। ছোট্ট কিশোরী মন কোন উত্তর পাচ্ছে না৷ উনি কি আমায় চিনতে পারছে না? রাতেই তো উনার সাথে নিষিদ্ধ পল্লীতে ধাক্কা লাগল৷ নিষিদ্ধ পল্লীর কথা মনে পড়তেই ঘৃণায় গা ঘিনঘিন করে উঠল৷ ঘৃণায়, ভয়ে কান্না করে দিল৷ লোকটি ঘাবড়ে যায়৷ চকিত হয়ে বলল,
“কান্না করার কি আছে? তুমি আমার গাড়িতে কি করছিলে? ওকে বলতে হবে না৷ এটা বলো তোমার বাসা কই?”
এবার আরও কান্নায় ভেঙে পড়ে নিধি৷ দু’দিন নিধির উপর দিয়ে যা বয়ে গেছে তার মনে করতে চাচ্ছে না৷ তবুও ভেজা গলায় বলল,
“আমার নাম তাসফিয়া নিধি৷ আমার গ্রাম থেকে এসেছি৷ আমাকে খারাপ লোকদের কাছে বিক্রি করে দেয়৷ আমি তাদের কাছ থেকে কোন রকম পালিয়ে চলে আসি৷ বিশ্বাস করেন আমি চু’র নয়৷”
নিধি অঝোরে কান্না করতে থাকে৷ নিধির প্রতি লোকটির খুব মায়া হয়৷ শান্ত কন্ঠে প্রশ্ন করল,
“ঢাকায় তোমার কোন রিলেটিভ আছে?”
নিধি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল, ঢাকায় তার কোন রিলেটিভ নেই৷ নিধির মাথা নিচু করে আছে৷ কোথায় যাবে জানা নেই৷ লোকটি নিধির মাথা তুলে বলল,
“আমার নাম মাহির আহমেদ মুগ্ধ। তুমি আমাদের বাসায় থাকতে পারবে তবে একটা শর্তে?”
নিধি আশার আলো দেখতে পেল৷ ঠোঁট কোণা কিঞ্চিৎ প্রসারিত হলো। চোখের জল মুছে বলল,
“আমি আপনার যেকোন শর্তে রাজি। আমি সব কাজই পারি৷ আমাকে যে কাজই দিবেন আমি সেই কাজ করব৷”
“আমার সাথে বাসায় আসো৷ দেখে মনে হচ্ছে উদরে কিছু পড়েনি৷ কিছু খেয়ে নাও৷ তারপর তোমার কাজ বুঝিয়ে দিব৷”
নিধি মুগ্ধকে অনুসরণ করে পিছু পিছু চলতে থাকে৷ বিশাল বড় এরিয়া জুড়ে মুগ্ধদের বাড়ি৷ তিনতলা বিশিষ্ট বাসাটা খুব সুন্দর। বাড়ির সামনে বাহারি রকমের ফুলের সমাহার। সেখানে দোলনার ব্যবস্থাও আছে৷ অন্যপাশে ছোট একটা সুইমিংপুল। নিধি প্রথম সুইমিং পুল দেখছে৷ ছবিতে দেখেছে সুইমিংপুলের পানি নীল৷ আজ বাস্তবে দেখল সুইমিংপুলের পানি নীল৷ আধও কি নীল তা বুঝতে পারছে? অবাধ্য হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছা করছে৷ নিজের অবুঝ ইচ্ছা ধমিয়ে রাখল৷ মুগ্ধ দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করল৷ সাথে নিধি ভিতরে প্রবেশ করল৷ নিধির চোখ আটকে যায় সিঁড়ির উপর৷ হুট করেই মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“ওই লোকটা এখানে কি করছে? লোকটা আমাকে মে’রে ফেলবে। আমাকে বাঁচান৷”
নিধি মুগ্ধকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে৷ মুগ্ধর মনে শীতল হাওয়া বয়ে গেল৷ লুকিয়ে থাকা সুপ্ত অনুভূতি জেগে উঠল মুগ্ধর মনে৷ মুগ্ধ সামনে তাকিয়ে দেখে শাওন সিঁড়ি দিয়ে নামছে৷ ততক্ষণে শাওন তাদের সামনে এসে দাঁড়াল৷ নিধি অনবরত ভেজা গলায় বলছে,
“শাওন চৌধুরী আমায় মে’রে ফেলবে৷”
শাওন চৌধুরী গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“এই মেয়ে এসব কি বলছো? আমি তোমায় মা’র’তে যাব কেন?”
নিধিকে মুগ্ধকে জড়িয়ে ধরেই বলল,
“আপনি দূরে যান৷ কাছে আসবেন না৷ আপনি খুব খারাপ। আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না৷”
মুগ্ধ নিধিকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
“নিধি ভয়ের কিছু নেই৷ শাওন তোমার কোন ক্ষতি করবে না৷ আমি আছি তোমার পাশে। তুমি শাওনকে কিভাবে চিনো?”
নিধি নিজেকে শান্ত করতে পারছে না৷ সেই থাপ্পড়ের কথা মনে পড়ছে বারং বার৷ সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল৷ আল্লাহ সহায় ছিল বলে বেঁচে গেছে৷ নিধি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল৷ যার অর্থ সে শাওন চৌধুরীকে চিনে৷ শাওন চকিত হয়ে বলল,
“তুমি আমায় কিভাবে চিন? তোমার সাথে কি আগে কখনও দেখা হয়েছে? আমার মনে পড়ছে তোমার সাথে দেখা হয়েছে৷”
নিধি এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করল৷ মুগ্ধ নিধির দিকে এক গ্লাস পানি এগিয়ে দিয়ে বলল,
“শান্ত হয়ে বসো৷ তোমার সাথে কি খারাপ কিছু হয়েছে? শাওন আমার জমজ ভাই৷ এজন্য আমাদের চেহারার অনেক মিল আছে। অনেকে ভুল করে৷ কিন্তু তুমি চিনে ফেলছো৷ তোমার বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়৷”
নিধি ঠকঠক করে পানি শেষ করল৷ উত্তেজিত কন্ঠে বলল,
“শাওন চৌধুরী ডিংক্স সেবন করলে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে৷ আমি উনাকে গতকাল রাতেই দেখেছি৷ গতকাল রাতে আমাকে মে’রে ফেলতে চেয়েছিলেন৷ আমি উনার কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম বাঁচার জন্য৷ উনি আমাকে সাহায্য না করে আমাকে… ”
নিধি আর কিছু বলতে পারল না৷ কান্নায় ভেঙে পড়ল৷ নিধি উপলব্ধি করতে পারল সে অনবরত মিথ্যা বলে যাচ্ছে৷ তার মিথ্যা কেউ ধরতে পারছে না৷ একটা সময় সৎ মায়ের অত্যচার থেকে বাঁচার জন্য মিথ্যা বলত৷ তবে কখন বাঁচতে পারেনি৷ বাঁচতে পেরেছে তিতিরের মাধ্যমে৷ তিতির তাকে বাঁচিয়েছে মায়ের অত্যচার থেকে৷ বাবা সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে ছিলেন৷ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে পুরানো কথা স্মরণ করল৷ শাওন চৌধুরী নিধির কাছে মাথা নত করে বলল,
“আমার মাথা ঠিক থাকে না৷ আমার তখন কি হয়ে যায় ভাবতেই পারিনা৷ ঠিক ভুলের পার্থক্য করতে পারিনা৷ আমি নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করব৷ আমার দ্বারা পরবর্তীতে তোমার কোন ক্ষতি হবে না৷”
নিধি ভয়ে শাওনের দিকে তাকাচ্ছে না৷ মুগ্ধর ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা। যেন এখানে কোন সিনেমাটিক কথা চলছে৷ তবে নিধি বুঝে নিল দুই ভাই নারীর প্রতি আসক্ত। সেজন্য তাদের আনাগোনা লেগে থাকে নিষিদ্ধ পল্লীতে৷ আমার উপর হিংস্র পশুর মতো ঝাঁপিয়ে পড়বে না তো? মুখ দেখে মানুষ চেনার উপায় নেই৷ মুখ দেখে তো বুঝতেই পারিনি হাফিজ, মাসুদকে৷ মুগ্ধ একজন সার্ভেন্টকে ডেকে বলল,
“নিধিকে খাবার দাও৷ নিধি খাবার শেষ করে আমার রুমে আসো৷ তোমাকে তোমার কাজ বুঝিয়ে দিব৷”
নিধি ছোট করে জবাব দিল,
“ঠিক আছে৷”
মুগ্ধ নিধির দিকে এক পলক তাকিয়ে উপরে চলে গেল৷ শাওন চৌধুরী নিধির দিকে তাকিয়ে আছে মুগ্ধ দৃষ্টিতে৷ দু নয়নের তৃপ্তি নিয়ে নিধিকে দেখতে ব্যস্ত৷ চোখের পলক ফেলছে না৷ নিধি নিজেকে গুটিয়ে নিল৷ আমতা আমতা করে বলল,
“কিছু বলবেন?”
নিধির কথায় শাওনের ঘোর কাটে৷ বুঝতে পারে সে বে’হা’য়া’র মতো নিধির দিকে তাকে ছিল৷ কি আছে এই ছোট মেয়ের মধ্যে? যার দিকে তাকালে সবকিছু ভুলে যায়৷ চোখের তৃপ্তি মিটবে না হাজার বছর তাকিয়ে থাকলেও৷ শাওনকে অফিসের পোশাকে দারুণ লাগছে৷ শাওন অপ্রস্তুতভাবে বলল,
“তোমায় দেখছি৷”
পরক্ষণেই বুঝতে পেয়ে বলল,
“আমি খুবই অনুতপ্ত। কিভাবে একটা নিষ্পাপ মেয়ের সাথে খারাপ আচরণ করলাম? যাকে দেখে মনের কোণে সুপ্ত অনুভূতি জেগে উঠে৷ শীতল হাওয়া বয়ে যায়৷ তার সাথে কিভাবে আমি খারাপ ব্যবহার করলাম?”
নিধি অবাক চোখ শাওনের দিকে তাকায়৷ মায়া জড়ানোর ভেজা গলায় বলল,
“আপনার কিছুই মনে নেই। আপনি রাতে আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছেন৷ আমি পর পর আমায় দুইটা থা’প্পড় দিছেন৷ আল্লাহ সহায় ছিল বলেই আমি বেঁচে ফিরতে পারছি৷”
বলেই নিধি কান্না করে দিল৷ শাওনের বুকের চিনচিন ব্যথা তীব্র ব্যথায় পরিণত হলো৷ বুঝতে পারল খুব খারাপ কাজ করতে চেয়েছিল মেয়েটার সাথে৷ নিধির দিকে তাকিয়ে অপরাধী কন্ঠে বলল,
“আমি তোমার সাথে কোন অন্যায় করে থাকলে আমায় ক্ষমা করে দাও৷ আমার দ্বারা তোমার কোন ক্ষতি হবে না৷”
শাওন চৌধুরীকে রাতে যতটা খারাপ ভাবছিল তিনি ততটা খারাপ নয়৷ একদম বাচ্চাদের মতো করে ক্ষমা চাচ্ছেন৷ যেন ক্ষমা না করলেই এখনই কান্না করবে৷ নিধির খুব মায়া হলো৷ ঠোঁটের কোণে হাসি নেই৷ তবুও বৃথা চেষ্টা করল ঠোঁট প্রসারিত করতে৷ কোমল কন্ঠে বলল,
“আপনাকে এক শর্তে আমি ক্ষমা করতে পারি। আমার শর্তে রাজি হলে আপনাকে ক্ষমা করে দিব৷”
“বাচ্চা মেয়ের আবার শর্ত! তোমার কি শর্ত থাকতে পারে? তবে কথা দিচ্ছি তোমার শর্ত মেনে নেওয়ার চেষ্টা করব৷”
নিধির মনে আরও একটা আশার আলো দেখা দিল৷ মুগ্ধ বিধিকে কি কাজ দিবে? কাজটার কথা মাথার রেখে বলল,
“আমি সময় মতো বলব৷ আপনার লেট হয়ে যাচ্ছে৷”
তাদের কথা মধ্যেই সার্ভেন্ট নিধির জন্য খাবার নিয়ে আসে৷ শাওন বসা থেকে দাঁড়িয়ে বলল,
“নিধির যা লাগে সবকিছুর ব্যবস্থা করো৷ নিধি আমাদের গেস্ট। তার যেন কোন প্রকার অযত্ন না হয়৷”
সার্ভেন্ট বিনয়ের সহিত বলল,
“জ্বি স্যার৷ কোন সমস্যা হবে না৷ ম্যাম খাবার খেয়ে নেন৷”
শাওন নিধির দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে গেল৷ নিধিকে রেখে যেতে ইচ্ছা করছে না৷ নিধির কাছেই মন রয়ে গেছে৷ ৩০ বছর মন ছোট নিধির কাছে আটকা পড়ে গেল৷ কখনও কেউ শাওনের মনে জায়গা করে নিতে পারেনি৷ শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য ছিল নিষিদ্ধ পল্লী৷ কিন্তু নিধিকে দেখে মনের ভালো বাসনা উঁকি দিল৷ মুচকি হেঁসে রুম থেকে চলে গেল৷
ক্ষুধায় পেট ইঁদুর দৌড়াচ্ছে৷ নিধি সামনে অনেক খারাব দেখে ইচ্ছা করছে সবকিছু একসাথে খেয়ে ফেলতে৷ কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখল৷ এক লোকমা খাবার মুখে দিয়ে সার্ভেন্টকে উদ্দেশ্যে করে বলল,
“আপু আপনার নাম কি? আপনি দেখতে অনেক সুন্দর।”
মুচকি হেঁসে জবাব দিল,
“আমার নাম তিথি৷ সবাই আমাকে তিথি বলেই ডাকে৷”
তিথি নাম শুনেই নিধি বিষম খেল৷ তিতির নামের সাথে মিল আছে৷ পানি পান করে বলল,
“আমি আপনাকে আপু বলে ডাকতে পারি? আমার নাম নিধি। আমি আপনাকে আপু বলেই ডাকব৷ আমার আপুর নামের সাথে আপনার নামের মিল আছে৷ আমার আপুর নাম তিতির৷”
তিথি হেঁসে জবাব দিল,
“আমার ছোট বোনের নাম তিতির৷ আমার নামের সাথে মিল রেখে বাবা তার নাম তিতির রেখেছেন৷ আমাকে আপু বলে ডাকলে কোন সমস্যা নেই। কেউ কিছু মনে করবে না৷”
“আপু এই বাসায় শাওন আর মুগ্ধ ছাড়া কেউ থাকে না৷ কাউকে তো দেখতে পারছি না৷”
তিথির মুখ চুপসে গেল৷ মলিন কন্ঠে বলল,
“শায়লা চৌধুরী থাকেন৷ শাওন স্যার, মুগ্ধ স্যারের মা৷ উনার পা ভেঙে গেছে৷ ডাক্তার উনাকে বেড রেস্টে থাকতে বলছেন৷ প্রায় ছয় মাস হলো এখনও হাঁটতে পারছেন না৷ ডাক্তার উনাকে হাঁটতে বলছেন৷ কিন্তু উনি হাঁটার চেষ্টা করে না৷”
“উনার বাবা কই?”
তিথি ফিসফিস করে বলল,
“বাবার কথা কখনও জানতে যাবে না৷ জানতে চাইলে দু’ভাই খুব রেগে যান৷ আমরাও কিছু জানি না৷”
কথা বলার মাঝেই নিধির খাবার শেষ হয়ে যায়৷ নিধিও শাওনের বাবা সম্পর্কে কিছু জানতে চাইল না৷ নিধি বেসিন থেকে হাত ধুয়ে এসে বলল,
“মুগ্ধ রুমটা কোনদিকে৷ আমাকে মুগ্ধর রুমে একটু নিয়ে যাবে আপু৷ আমি এই বাড়িতে এর আগে কখনও আসিনি৷”
তিথি নিধিকে নিয়ে মুগ্ধর রুমের সামনে এসে বলল,
“তুমি মুগ্ধ স্যারের সাথে কথা বলো৷ আমি রুমে যেতে পারব না৷ অনুমতি ছাড়া উনার রুমে আমাদের যাওয়া নিষেধ।”
তিথি চলে গেল৷ নিধি চিন্তায় পড়ল৷ একটা পরপুরুষের ঘরে কিভাবে যাবে? একটা যেতে মন সাঁড়া দিচ্ছে না৷ কারুকাজ করা কপাটে হাত দিতেই কপাট খুলে গেল। যেন নিধির জন্য খুলে রেখেছে৷ উঁকি দিয়ে দেখল কেউ নেই৷ ধীর পায়ে মুগ্ধর রুমে প্রবেশ করল৷
চলবে…..
মাথায় দু/ষ্টু বুদ্ধি ঘুরছে৷ বানান বা বাক্য চয়ণ ভুল হলে সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করবেন৷