মায়াবতী পর্ব ২৯+৩০

0
781

#মায়াবতী
#পর্ব:২৯
#তানিশা সুলতানা

বাবা যদি হয় বন্ধু মতো তাহলে তার জীবনটা সুন্দর হতে বাধ্য। এই যে অর্ণবের বাবা অর্ণবের বন্ধু। ছোট বেলা থেকেই অর্ণব চঞ্চল স্বভাবের। সারাক্ষণ দৌড়াদৌড়ি করা তার স্বভাব। মা*রা*মা*রিতে এক্সপার্ট। ছোট বেলায় মা*রা*মা*রি করে বাড়ি ফিরে সবার আগে বাবাকে বলতো। আনোয়ার বুক ফুলিয়ে তাদের বলতো “আমার ছেলে এমনটা করে নি” প্রভাবশালি মানুষ হওয়াতে কেউ আর তার মুখের ওপর কথা বলার সাহস পেতো না।
এই দুরন্তপনার জন্যই সে ছেলেকে দূর প্রবাসে পাঠিয়েছিলো। পড়ালেখায় সে বরাবরই খারাপ ছিলো। তাই ভালো রেজাল্ট কখনোই তার থেকে আশা করে নি আনোয়ার। তবে এতেই সে খুশি।

অর্ণব বাড়ি ফেরার পরে তাকে ডেকে ডিরেক্ট রুমে নিয়ে গেছে। আর দরজা বন্ধ করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে

“তন্নির সাথে তোমার কি সম্পর্ক?

অর্ণবও ভনিতা ছাড়া বলে দেয়।

” পাপা আমার মায়াবতীকে ভালো লাগে। তো আমি মায়াবতীর অগোচরে তাকে দিয়ে রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করিয়ে নিয়েছি।

আনোয়ার হা হয়ে যায়। তার ছেলে এতোটা ধুরন্ধর? মানা যায়? আরও এগিয়ে যায় নি তো? এখন আবার বলে বলবে না তো “পাপা নাতী নাতীর মুখ দেখতে চলেছো। শুকনো ঢোক গিলে আনোয়ার। খাটে বসে রিনরিনিয়ে জিজ্ঞেস করে

“না মানে এই পর্যন্তই না কি আরও এগিয়েছো?

অর্ণব বাবার পাশে বসে।

” এগোতে তো চাই ই আমি। অথৈয়ের তন্নি এগোয় না। সে যে কি পরিমাণ লাজুক পাপা তোমাকে কি বলবো।
কিছু দিন আগে আমি জাস্ট ওর গলার লাল তিলটাতে কিস করেছিলাম। জাস্ট একটু ছু্ঁয়েছি। আর অথৈকে বলে দিয়েছে।

আনোয়ার কেশে উঠে। অর্ণব পানি গ্লাস এগিয়ে দেয়। ঠকঠক করে পুরো গ্লাস শেষ করে আনোয়ার।

“আমি তোমার পাপা হই।

“তুমি না বলেছিলে ” অর্ণব আমি তোমার বন্ধুর মতো। নিরদ্বিধায় সব বলবা আমায়।
সেটাই করছি।

আনোয়ার হাত জোর করে তাকায় অর্নবের দিকে

“আমার ঘাট হয়েছে। এরকম আর বলবো না। তুই প্লিজ সর এখান থেকে৷

” তাড়িয়ে দিচ্ছো?

“হ্যাঁ
যাওয়ার আগে একটা কথা বলে যা।
নিধির বেপার?

“সেটা সারপ্রাইজ। জাস্ট ওয়েট এন্ড সী পাপা।

বলে আনোয়ারের গালে টুপ করে চুমু দিয়ে চলে যায় অর্ণব। আনোয়ার দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। এটাকে ছেলে বলে?

অথৈ আর আর্থি তন্নিকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। তন্নি কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে কি দেখছে দুই বোন মিলে?
অথৈ বলে ওঠে

” পাকনা হয়ে গেছিস? নাক ফুটো করবি আমাকে জানালি না পর্যন্ত? পর হয়ে গেছি আমি?

তন্নি ভেবাচেকা খেয়ে যায়। অর্ণব যখন বললো “অথৈ মেনেজ করে নিবে” তন্নি ভেবেছিলো অথৈ জানে সব। কিন্তু এখনতো মনে হচ্ছে কিছুই জানে না। তন্নি কি বলবে এবার?

আর্থি বলে ওঠে

“সত্যি করে বলবি তন্নি। কি হয়েছে? হঠাৎ নাক ফুটো কেনো? সত্যি করে বল।

তন্নি মিথ্যে বলতে পারে না। কিন্তু সত্যিটা বলবে কি করে? ভয়ে হাত পা কাঁপছে তন্নির। ঘাম ছেড়েছে শরীরে।
অথৈ বুঝতে পারে তন্নির অবস্থা। তাই সে দেরি না করে চটপট বলে ওঠে

” তন্নির মা করিয়েছে। বেচারা তো মায়ের কথা ফেলতে পারে না। জানোই তো তুমি।

আর্থি বিশ্বাস করে নেয়। তন্নি হাঁফ ছেড়ে বাঁচে৷

“তন্নি কিছু খেয়েছিস বলে তো মনে হয় না। আপি রুমে খাবার নিয়ে আয় তো। আম্মু তো বাসায় নেই।

আর্থি খাবার আনতে চলে যায়। তন্নি বুকে হাত দিয়ে লম্বা শ্বাস টানে।

“অথৈ তোর ভাই কবে জানি আমার হার্ট অ্যাটাক করিয়ে ছাড়বে।

অথৈ তন্নির পাশে বসে।

” তুই বোকা কেনো?
তুই ভাইয়াকে নাকানিচুবানি খাওয়াবি।

“কি করে?

” বলছি

অথৈ তন্নিকে কিছু বলে। তন্নি হেসে ফেলে।
আর্থি খাবার নিয়ে চলে আসে। তিনজন মিলে খেয়ে নেয়।

রাতে আশা এতগুলো জামাকাপড় নিয়ে আসে। সবই অর্ণবের জন্য। দামি দামি শার্ট জিন্স। অথৈ আর আর্থি সব দেখছে। তন্নি এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মনটা তার খারাপ।
অর্ণবের সাথে কি আর তাকে মানাবে?
এই তো পাচশো টাকার থ্রী পিছ পড়ে আছে তাও রঙচটা।

অর্ণব ফোন টিপতে টিপতে বের হয়। তন্নির পেছন দিয়ে আসার সময় তন্নির মাথায় গাট্টা মেরে চলে আসে বোনদের কাছে।
তন্নি মুচকি হেসে চলে যায় ওখান থেকে৷ বিষয়টা খেয়াল করে অর্ণব।
অর্ণবের খালামনি আসে আয়েশা। এই সময়ে তাকে কেউ আশা করে নি।
তিনি এসে অথৈকে জড়িয়ে ধরে। মেয়ে নেই তার। দুই ছেলে। অথৈ আর আর্থিকে ভীষণ ভালোবাসে সে।
দুই বোনকে আদর করা শেষে অর্ণবের কাছে আসে। ভালো মন্দ কুশল বিনিময় করতে থাকে।
এরই ফাঁকে অর্ণব উঠে চলে যায়।

তন্নি অথৈয়ের রুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিলো। সন্ধা হয়েছে কিছুখন আগে। চারদিকে আবছা অন্ধকার। সারাদিনের কাঠফাটা রোদের পরে এখন একটু ঠান্ডা হাওয়া বইছে। এই হাওয়া মন প্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে।
তন্নি বুক ভরে শ্বাস টানে।

অর্ণব পেছন থেকে এসে তন্নি মুখোমুখি দাঁড়ায়।

“কি রে ফকিন্নি মন খারাপ কেনো?

তন্নি অর্ণবের দিকে এক পলক তাকিয়ে বলে

” আপনার টিশার্টে দাম কতো?

“জানি না। মাম্মা কিনেছে।

” জুতো?

“হাজার মেবি

” ঘড়ি?

“দুই হাজার

” বাকি গুলো বাদই দিলাম। এক হাজার টাকায় আমাদের এক মাস সংসার চলে। আপনাকে আর আমাকে কখনোই মানাবে না।
আমাকে দেখুন রঙচটা একটা পাঁচশত টাকা দামের কামিজ পড়ে আছি।

অর্ণব ফোঁস করে শ্বাস টানে।

“আর জামাকাপড় ছাড়া?
বাকি সব কিছু দাম আমার আকাশের থেকেও বেশি। সো জাস্ট সাট আপ।
আজাইরা চিন্তাভাবনা।

তন্নি ভেংচি কেটে চলে যায়। অর্ণব মুচকি হেসে দাঁড়িয়ে থাকে। বাতাস অনুভব করে।

আশা বেগমের সাথে তন্নি হেল্প করছে। উনি বারবার না করছে তবুও তন্নি শুনছে না। আয়েশা দেখছে তন্নিকে। তার বেশ লেগেছে। মেয়েটার চোখ মুখ মায়ায় ভরা।
রান্না শেষের দিকে তন্নি ফ্রেশ হতে যায়।
তখন আয়েশা আশাকে বলে

” আশা মেয়েটা কে রে?

“অথৈয়ের বন্ধু। খুব ভালো মেয়ে।

” আমাদের মাহিমের সাথে বেশ মানাবে বল?

“মেয়েটার ফ্যামেলির অবস্থা ভালো না।

” আমি মেয়ে নিবো তার ফ্যামেলি দিয়ে কি করবো?

“তাহলে মাহিমকে আসতে বলো। আমি তারেক ভাইয়ের সাথে রাতেই কথা বলবো। কালকেই আংটি পড়িয়ে রাখবে।
এটা হলে মেয়েটার সৎ মা আর তার ওপর অত্যাচার করবে না। (শর্টকাটে তন্নির ফ্যামেলির কথা বলে আশা)

” ঠিক আছে তাই কর।

অর্ণব সবটা শুনতে পায়। রাগে তার শরীর কাঁপছে।
কাচের ডাইনিং টেবিলে জোরে ঘু*ষি মারে অর্ণব।মুহুর্তেই ভে*ঙে গুড়িয়ে যায়। হাত কে*টে মুহুর্তেই র*ক্তে লাল হয়ে যায়। কোঁপে ওঠে আশেয়া আর আশা।
এতেই ক্ষান্ত হয় না অর্ণব আশেপাশে যত ফুলদানি আসবাবপত্র আসে সব ভে*ঙে গুড়িয়ে দিতে থাকে।
তাকে দেখতে ভীষণ ভয়ংকর লাগছে।

ভয়ে আতস্থ হয়ে ওঠে আশা আর আয়েশা। তন্নি অথৈ আর্থি দৌড়ে বেরিয়ে আসে।

চলবে

#মায়াবতী
#পর্ব:৩০
#তানিশা সুলতানা

তন্নি চলে গেছে শুনে আব্দুল্লাহ ভীষণ ভেঙে পড়ে। নাতনির মধ্যে মেয়েকে খুঁজে নিয়েছিলো তিনি। ভেবেছিলো যে কয়দিন বাঁচে এই মুখটা দেখে কাটিয়ে দেবে।
বয়সকালে খুব দাপট ছিলো তার। বংশের অহংকার ছিলো। গর্ব করে বলতো সে খান বংশ। সমাজে তাদের একটা নামডাক ছিলো। সেই খান বংশের একমাত্র মেয়ে একটা ছোটজাতের ছেলের সাথে পালিয়ে গেছিলো। মল্লিকদের তারা বরাবরই হেনা করে এসেছে। লজ্জায় তিনি মুখ দেখাতে পারতো না।
সমাজের দাপট রক্ষা করতে মেয়েকে মেনে নেয় নি। মুখটা পর্যন্ত দেখে নি মেয়ের।
উনি বুঝতেই পারে নি জাত বংশ এসবে কিচ্ছু এসে যায় না। মনুষ্যত্বটাই বড় বিষয়।
এখন বুঝতে পারে।
মল্লিক জাতের একটা মেয়ের সাথে ওনার বড় ছেলে সাইদুলের বিয়ের কথা বলেছিলো একজন। মেয়েটা ভালো। আব্দুল্লাহ দাপটের সাথে তাকে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলো। ছোট জাত বলে অপমান করেছিলো।

এসব কথা মনে হতেই তার বুকটা পুরতে থাকে। চোখ দিয়ে পানি গড়াতে থাকে। সেদিন যদি এতোটা কঠোর না হতো মেয়েটাকে আগলে নিতো তাহলে আজকে তার মেয়ে পৃথিবী ছাড়া হতো না ছোট্ট নাতনীটা মা হারা হতো না। তাকে এভাবে পুরতে হতো না।

__

সোফায় বসে জোরে জোরে শ্বাস টানছে অর্ণব। তন্নিকে দেখে সে থেমে গেছে। তন্নি যে ভীষণ রেগে গেছে বুঝতে পেরেছে। আয়েশা একজন নার্স সে ফাস্ট এইচ বক্স আনতে বলে অথৈকে। অথৈ দৌড়ে চলে যায়। আশা অর্ণবের পাশে বসে আঁচলে মুখ ঢেকে কান্না করছে। তন্নি বুকে হাত গুঁজে অর্ণবের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আর্থি চুপচাপ বসে আছে।

আয়েশা যত্ন করে অর্ণবের হাত পরিষ্কার করে দিতে থাকে।

অথৈ অর্ণবের মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করে

“ভাইয়া কেনো রেগে গেছিলে? আমরা কি কিছু করেছি?

তন্নি বলে ওঠে

” এমন ভাবে কেনো বলছিস অথৈ? তোরা কিছু করলেও রেগে কেনো যাবে? কেমন রাগ এটা? যে রাগে প্রিয় জনদের কাঁদায়। ওনার কাছে নত কেনো হচ্ছিস?
কিসের এতো দরদ?
ওনার তো কোনো দরদ নেই।

তন্নির ঝাঁঝালো গলার কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়। কারণ তন্নি কখনোই এভাবে কথা বলে না। আশার কান্না থেমে যায়। অর্ণব মাথা চুলকায়। মহারানী যে ভীষণ রেগে গেছে বুঝতে পারে।

তন্নি সবার দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে যায়। অথৈ ঠোঁট কামড়ে হাসে। আর্থির ঘোর এখনো কাটছে না। সে হা করে তাকিয়েই আছে। আয়েশা ইমপ্রেস হয়। এরকম মেয়েই সে খুঁজছে। তার ছেলের জন্য পারফেক্ট।

অর্ণব সবাইকে সরি বলে। আশার সামনে দাঁড়িয়ে কান ধরে উঠবস করে সরি বলে। আর কখনো সে এমনটা করবে না বলে প্রতিজ্ঞা করে।

আজকে অর্ণব খাবে না। বিকেলে বাইরে থেকে খেয়েছে পেট ভরা বলে কাটিয়ে চলে যায় রুমে। সে জানে তন্নি তার জন্য খাবার নিয়ে আসবেই। আর আজকে সে তন্নির হাতে খাবে।

তন্নি সবার সাথে বসেছে ডিনার করতে। আনোয়ার ব্যবসায়ের কাজে বেরিয়েছে।
খেতে খেতে আশেয়া তন্নির বাবার পুরো নাম জিজ্ঞেস করে।
তন্নিও সরল গলায় বলে

“তারেক মল্লিক

আয়েশার মুখখানা চুপসে যায়। অসন্তুষ্ট হয় আশাও। মল্লিক কেনো হলো?
আশা আগে কখনো জিজ্ঞেস করেনি পুরো নাম আজকেই শুনলো।

খাওয়া শেষে তন্নি চলে আসে অথৈয়ের রুমে। অথৈকে পাঠিয়েছে খাবার আনতে। পুরো বিকেল অর্ণব তন্নির সাথে ছিলো। কোথাও কিছু খায় নি। তবুও সে মিথ্যে বললো খেয়েছি?
মিথ্যুক একটা। আজকে কিছু কড়া কথা শুনিয়েই দিবে। সব সময় মজা পছন্দ না তন্নির।

অথৈয়ের ফোন বেজে ওঠে। স্কিনে সাগর নামটা ভেসে ওঠে। তন্নি মুচকি হেসে ফোন তুলে হেলো বলে। এই সময় তন্নির গলা শুনতে পাবে স্বপ্নেও ভাবে নি সাগর। তার কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়। ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে।

” তন্নি?

“জ্বী ভাইয়া কেমন আছেন?

” আলহামদুলিল্লাহ
তুমি?

“আমিও ভালো

সাগর এখন কি বলবে খুঁজে পাছে না। নার্ভাস লাগছে তার। গলায় কথা আটকে আটকে যাচ্ছে। খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করছে।

” ভাইয়া?

“হ্যাঁ তন্নি

“অথৈ খাবার আনতে গেছে তার ভাইয়ের জন্য আসলে বলবো আপনি কল করেছিলেন।

” ঠিক আছে

তন্নি কল কেটে বিছানায় রাখে।
সাগর ফোনটা বুকের সাথে চেপে ধরে বিরবির করে বলে “মানুষ সৌন্দর্যের কথা বলে
আর আমার তো তার ভয়েস শুনলেই কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়”

একটু পরেই অথৈ থালা ভর্তি ভাত নিয়ে চলে আসে।
তন্নির হাতে প্লেটটা দিয়ে বলে

” তোদের প্রেম দেখে আমার বিয়ে করতে ইচ্ছে করছে।

“কর না করছে কে?

” ছেলেই তো পাই না। তোর নাহয় বান্ধবীর ভাই ছিলো পটিয়ে নিলি। আমার তো আর তা নেই। পুরা কপাল।

“এতো ঢং কেমনে করে মানুষ?

” এমনে করে।

“সাগর ভাইয়া কল করেছিলো।
অথৈ দৌড়ে ফোনের কাছে চলে যায়।

তন্নি ভেংচি কেটে চলে যায় অর্ণবের রুমে। অর্ণব বসে বসে ফোন ঘাটছিলো। ধুপধাপ পা ফেলে তন্নিকে ঢুকতে দেখে ফোন রেখে সোজা হয়ে বসে। তন্নি গিয়ে অর্ণবের পাশে বসে।
কথাবার্তা ছাড়া তরকারি দিয়ে ভাত মাখতে থাকে। অর্ণব মুচকি হাসে।
চুপচাপ পুরো প্লেট ভাত খাইয়ে দেয় অর্ণবকে। অর্ণবও তৃপ্তি নিয়ে খায়। যদিও তার খেতে একটু অসুবিধা হচ্ছিলো। কারণ সে মাখোমাখো খাবার খায় না। আর তন্নি ভাতকে ইচ্ছে মতো মাখছে আর অর্ণবের মুখে ঢুকাচ্ছে। আর তন্নির হাত একটুখানি। ভাতও একটুখানি মুখে দিচ্ছে। অর্ণবের চিঁবানোর প্রয়োজন পড়ছে না। এমনিতেই গিলে ফেলছে। একবার বলতে চেয়েছিলো বড় করে দিতে কিন্তু পরে চিন্তা করলো একটুখানি হাত। আর কতো বড় করে লোকমা দিবে?

খাওয়া শেষে তন্নি বেসিনে গিয়ে হাত ধুয়ে প্লেট রেখে এসে অর্ণবের মুখোমুখি বসে চোখ মুখ শক্ত করে বলে

“পবলেম কি আপনার? কেনো এমনটা করলেন?

অর্ণব তন্নির দিকে খানিকটা এগিয়ে যায়। তন্নি পিছিয়ে যায়।

” can i kiss you?

তন্নি বড়বড় চোখ করে তাকিয়ে দুই হাতে নিজের ঠোঁট আটকে ধরে। অর্ণব হেসে ফেলে।

“সো সুইট মাই ডেয়ার জান

ঠোঁট বাঁকিয়ে তন্নির কোমর জড়িয়ে নিজের কোলে বসিয়ে দেয়। তন্নি পড়ে যাওয়ার ভয়ে দুই হাতে অর্ণবের শার্ট খামচে ধরে।
তন্নি চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে আছে। সে এই মুহূর্তে কোথায় আছে জানা নাই তার।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here