#মনের_অন্দরমহলে
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৫
নিজের চুল চেপে ধরে আছে আয়াশ। মাথাটা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। কাঁপছে তার পুরো শরীর। কি করলে তার মনটা শান্ত হবে বুঝতে পারছে না। মাথার মধ্যে অসহ্যকর যন্ত্রণা হচ্ছে তার। যদিও এটা নতুন কিছু নয়। হঠাৎ করেই যখন রাগটা বাড়ে এক অদ্ভুত মাথাব্যাথা জাগে। এটা আয়াশের কাছে অসহনীয়। এদিক ওদিক হাঁটতে হাঁটতে অস্থির হয়ে আশেপাশের সব জিনিস ছুঁড়ে মারে আয়াশ। কাঁচের শোকেসে লাথি মেরে ভেঙে ফেলে। এতে তার পায়েই আঘাত লাগে না। স্যান্ডেল পড়ে থাকায় কাঁচ তার পা স্পর্শ করতে পারে না।
–“আমার আবার কেন যন্ত্রণা হচ্ছে? সহ্য হচ্ছে না। ইচ্ছে মাথা কেটে ফেলতে। কি করে এই যন্ত্রণা কমাবো? কি করব?”
চোখমুখ খিঁচে কিছুক্ষণ দেওয়াল ধরে দাঁড়িয়ে থাকে আয়াশ। কপাল বেয়ে দরদর করে ঘাম বেয়ে পড়ে। একটা সময় চোখ মেলে সে। ছুটে যায় কাবার্ডের ড্রয়ারের দিকে। ড্রয়ার খুলে এদিক ওদিক জিনিস এদিক ওদিক করতে থাকে আর প্রলাপ বকতে থাকে।
–“ওই ইনজেকশন! কোথায় গেল ওটা? আমার মাথা যন্ত্রণা কমাতে পারে ওটা। কিন্তু কোথায়?”
অস্থির হয়ে কথাগুলো বলতে বলতে ওর হাতে আসে একটা ইনজেকশনের সিরিজ। বাম হাত দেখে ইনজেকশনের নিজে নিজেই পুস করে ফেলে আয়াশ। তারপর ফেলে দেয় ডাস্টবিনে সেটা। অতঃপর মাথা চেপে ধরে। ইনজেকশন নিলেও যন্ত্রণা কমতে দেরি লাগবে। এতোক্ষণ মাথাব্যাথা সহ্য করলে মরেই যাবে আয়াশ। সে নিজের হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে অজান্তেই তার হাতের কাছে থাকা মাটির ফুলদানি তুলে নিজের কপালে আঘাত করে বসে। সঙ্গে সঙ্গে ফুলদানি ফেলে দিয়ে দীর্ঘ নিশ্বাস নেয়। তার কপাল ফেটে রক্ত বের হচ্ছে তার কোনো খেয়ালই নেই। একসময় চোখটা বন্ধ হয়ে আসে ওপর। দেওয়ালের সাথে ঘেঁষে হাত-পা ছিটিয়ে পড়ে যায় সে। বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে থাকে সেখানেই।
বেডের ওপর বসে থেকে নীলাদ্রের কথা ভাবছিলাম আমি। নীলাদ্রের সঙ্গে কি করে কথা বলা যেতে পারে সেই বিষয়ে ভাবতে মগ্ন ছিলাম। আচমকা বিকট শব্দ কানে এলো আমার। কান খাঁড়া করতেই আরো অনেক শব্দ পেলাম। মনে হচ্ছে পাশের ঘরেই কেউ একেবারে ইচ্ছেমতো জিনিসপত্র ভাংচুর করে চলেছে। আন্দাজও করলাম মানুষটা কে হতে পারে! ঝড়ের গতিতে উঠে হাতড়ে দরজা পর্যন্ত গেলাম। ধাক্কাতে লাগলাম দরজা।
–“কেউ আছেন? প্লিজ দরজাটা খুলে দিন।”
আমার কথা যেন কারো কানেই গেল না। এই বাড়িতে কি আয়াশ একা থাকেন? তা কি করে হয়? উনার বাবা-মাও তো আছেন। এই ভেবে আবারও চিৎকার করে ডাকলাম আমি।
–“কেউ থাকলে দরজাটা খুলে দিন প্লিজ! আমি বাইরে যাব।”
দরজা ধরে হাত দিয়ে শব্দ করতেই থাকলাম। কিছুক্ষণ পরেই খুলে গেল দরজা। দুইধাপ পিছিয়ে গেলাম আমি।
–“ক…কে?”
–“আমি। মালিহা রায়হান।”
মেয়েলি কন্ঠে আশ্বস্ত হলাম আমি। উনিই তো আয়াশের মা। মুখে হাসি ফুটিয়ে ধন্যবাদ জানালাম উনাকে। কিন্তু উনি আমার কথার কোনো উত্তর দিলেন না। ভাবলাম হয়ত চলে গেছে। কিন্তু আমাকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে উনার কন্ঠে আবারও শুনতে পেলাম।
–“পালাতে তো পারলে না। আয়াশের অত্যাচার তো সইতে হবেই। আমি তো ওকে ছোট থেকে জানি! ও তোমাকে মানুষ নয় নিজের প্রিয় জিনিস মনে করছে। আর ও নিজের প্রিয় জিনিসগুলো কখনোই কাউকে দেখতে অবধি দেয় না। তোমার ভালোর জন্যই বিয়ে করতে না করেছিলাম।”
–“আমি জানি। কিন্তু আমারও বিয়ে করার কোনো ইচ্ছে নেই বিশ্বাস করুন। আমি চাই না উনাকে বিয়ে করতে। উনি তো আমাকে পারলে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখবেন। আমি এখানে একা কি করব? (একটু থেমে) আচ্ছা, একটু আগে জিনিস ভাংচুর করার শব্দ আসছিল। আপনি পেয়েছেন?”
আয়াশের মা খুব স্বাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলেন…..
–“হ্যাঁ পেয়েছি। নিশ্চয় তোমার হবু বর মাথা গরম করে আবার ঘর এলোমেলো করছে। সবে তো বাড়িতে এলে। আরো ওর কত রুপ দেখবে…! আমি ওর ঘরের দিকেই যাচ্ছি। মনে হচ্ছে নিজের কোনো ক্ষতি করে বসেছে নইলে শান্ত হয়ে ঘরে বসে থাকত না।”
আকাশ থেকে পড়লাম আমি। নিজের ক্ষতি করেছে মানেটা ঠিক মেলাতে পারলাম না। বিস্ফোরিত কন্ঠে বললাম….
–“মানে? নিজের ক্ষতি করবেন কেন উনি?”
–“তা কি করে বলব? আয়াশই ভালো বলতে পারবে।”
নিজের অজান্তেই অস্থিরতা বাড়তে থাকল আমার মনে। সেই অস্থিরতা লুকোতে গিয়েও পারলাম না। হম্বিতম্বি করে বললাম…..
–“দয়া করে আমাকেও উনার ঘরে নিয়ে যাবেন।”
–“বাবাহ! যে তোমার বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করছে, তোমায় অত্যাচার করছে তার প্রতি এতো দরদ? নাকি বড় বাড়ি-গাড়ি আর টাকার দরদ?”
কথাগুলো উদ্ভট আর যুক্তিহীন লাগলো আমার কাছে। অদ্ভুত মহিলা তো উনি….! নিজের ছেলের এই অবস্থা আর আমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে দিব্যি আমাকে যাচ্ছেতাই বলে চলেছেন। যদিও সৎমা কিন্তু শেষমেশ ‘মা’ শব্দটা তো জড়িয়েই আছে। আবারও উনি বললেন…..
–“দেখো, আমার কাছ থেকে বেশি কিছু আশা করবে না। পারলে কোনো কাজের লোকের সাহায্য নিয়ে এসো আয়াশের ঘরে। আমি যাচ্ছি।”
পায়ে হাঁটার শব্দ পেলাম। কিছু বলার ভাষা না পেয়ে থম মেরে দাঁড়িয়ে থাকলাম। সবটা বিরক্ত লাগছে আমার। এই বাড়ির কোনো সদস্যের ব্যবহার স্বাভাবিক নয়।
–“ম্যাম, আপনি কি ছোট স্যারের ঘরে যাবেন?”
অপরিচিত মেয়েলি কন্ঠে মাথা তুলে এদিক সেদিক করলাম। ছোট্ট করে বললাম….
–“কে?”
–“আমি ফুলকি। বাড়ির একজন স্টাফ। বলছিলাম যে স্যারের ঘরে যাবেন? আমি পৌঁছে দিই?”
–“হ্যাঁ, হ্যাঁ। নিয়ে চলো।”
সময় নষ্ট না করেই জবাব দিলাম আমি। মেয়েটা আমার হাত ধরল। আমি হাঁটতে শুরু করলাম। নতুন জায়গা। কারো সাহায্য না নিয়ে একা চলা মুশকিল! মনের আকুলতা তড়তড় করে বেড়ে চলেছে। থামাথামির কোনো নাম নেই। যে দিয়েছে এতো ব্যাথা তার জন্য কেন মনে এতো আকুলতা তার কারণ জানা নেই। হয়ত একসময় উনার কারণে আমার প্রাণ বেঁচেছে, আমার সম্মান বেঁচেছে সেকারণেই মনটা আয়াশকেও তার প্রতিদান দিতে ঠেলে দেয়!
একসময় আমায় থামালো ফুলকি। চিন্তিত কন্ঠে বলল….
–“ম্যাম আর আগে যাওয়া যাবে না। স্যারের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। ভেতরে কাঁচের টুকরো পড়ে আছে। আপনি গেলে পায়ে লাগতে পারে।”
–“আর আয়াশ? উনি ওই ঘরে নেই?”
–“উনার কথা আর জিজ্ঞেস করিয়েন না। দুজন স্টাফ উনাকে টেনে তুলছেন। মাথা রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। মনে হচ্ছে নিজেই নিজের মাথায় মেরেছেন।”
ভ্রুযুগল কুঁচকে এলো আমার। সঙ্গে বেশ অবাকও হলাম। এ কার পাল্লায় পড়েছি জানি না! যে নিজেকে ভালো রাখতে জানে না সে আমাকে কি করে ভালো রাখবে? সঙ্গে দ্বিগুন বাড়লো আমার চিন্তা।
–“ওকে বিছানায় শুইয়ে দাও। আর কাঁচ সরিয়ে ফেলো। পরিষ্কার করো। যত্তসব ঝামেলা। কিন্তু কি করার? এসবের একমাত্র অধিকারী কিনা! যত্নে তো রাখতেই হবে।”
প্রবল আক্রোশ নিয়ে বলা কথাগুলো বললেন আয়াশের মা। উনাকে প্রথম থেকেই দেখছি। হয়তবা মানুষকে আঘাত দিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেন। মিনিট দশেক পর ফুলকি আবারও বলে উঠল…..
–“সব পরিষ্কার করা হয়ে গেছে। আপনি কি স্যারের ঘরে যাবেন?”
চিন্তার পড়ে গেলাম। একবার ইচ্ছে করছে একবার ঘরে গিয়ে বসে উনার খবরটা নিতে। আবার উনি আমার সঙ্গে যা যা করেছেন তা নিয়ে চূড়ান্ত রাগ হচ্ছে। দোটানায় ভাবতে ভাবতে আমি মাথা ঝাঁকিয়ে বললাম…..
–“নিয়ে চলো।”
আমায় ঘরে নিয়ে এসে আয়াশের পাশে বসিয়ে দিল ফুলকি। হাত তুলে হাতিয়ে উনার ওপর হাত রাখতেই মনে হলো উনার গালে হাত পড়ল আমার। উনার গালে কোনো তরল পদার্থ আমার হাতে লেগে গেল। তৎক্ষনাৎ ফুলকি বলে উঠল…..
–“ওটা রক্ত ম্যাম। স্যারের কপাল ফেটে গেছে।”
আঁতকে উঠে হাত সরিয়ে নিলাম। ভীতি সুরে জিজ্ঞেস করলাম…..
–“ড…ডক্টর কে কল করা হয়েছে?”
–“মনে হয় না। মালিহা ম্যাডাম এবার হয়ত ডক্টরকে কল করবেন না।”
–“করবে না মানে? তাহলে উনি কি এভাবেই পড়ে থাকবেন?” (অস্ফুটস্বরে)
–“এর আগে অনেক কয়েকবার মালিহা ম্যাডাম ডক্টরকে কল করেছিলেন। কিন্তু আয়াশ স্যারের জ্ঞান এলেই যা চিৎকার চেঁচামেচি করতেন মালিহা ম্যাডামের ওপরে। তাই তো ম্যাডাম বলেছেন আর স্যারের কোনো ভালো করতে আসবেন না।”
থ মেরে বসে রইলাম। উনাকে এভাবে ফেলে রাখা যায় না। কোনো অচেনা মানুষ হলেও উনাকে নিশ্চয় এভাবে ফেলে যাবে না। আমি তড়িৎ গতিতে বললাম…..
–“আচ্ছা তুমি উনাকে ব্যান্ডেজ টুকু করে দিতে পারবে না?”
–“না না। আমি ওসব করতে গেলে স্যার আমার অবস্থা খারাপ করে দেবেন।”
–“উফফ….আয়াশকে কে জানাবে কাজটা তুমি করেছো? উনার তো জ্ঞান নেই। মনে হচ্ছে রক্তপাত হয়েই চলেছে। কোনোরকমে ব্যান্ডেজ তো করাতে হবে নাকি! তুমি ব্যান্ডেজ করে দাও কেউ জানবে না কাজটা তুমি করেছো। তাড়াতাড়ি করো!”
আমার কথায় রাজি হয় ফুলকি। ভয়ে ভয়ে করিয়ে দেয় ব্যান্ডেজ। আমি স্বস্তির শ্বাস নিই। তারপর হাতে পানি নিয়ে উনার চোখমুখের ওপর দিই। ফুলকি তা দেখে ভয়ে ভয়ে বলে….
–“স্যারের জ্ঞান ফিরছে।”
আয়াশ আমার হাত চেপে ধরতেই নড়েচড়ে বসলাম আমি। হাত ছাড়িয়ে নিতে চাইতেই আরো জোরে চেপে ধরলেন আমার হাত। আর বৃথা চেষ্টা করলাম না আমি। কম্পিত সুরে প্রশ্ন করলাম…..
–“কে…কেমন লাগছে আপনার এখন?”
অনুভব করলাম আয়াশ উঠে বসছেন। উঠে বসেই আমার ঘাড়ে নিজের মাথা রাখলেন আয়াশ। নিজের মুখ রাখলেন আমার গলার সোজাসুজি। উনার নিশ্বাসের উত্তাপ পড়ছে আমার গলায়। ঢক গিলে চোখ বন্ধ করলাম আমি। হয়তবা ফুলকি এখনো ঘরে আছে। তার সামনেই এমন অসভ্যের মতো আচরণ করতে শুরু করেছেন উনি? ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ঘাড় একটু নাড়ালাম। অস্বস্তি নিয়ে বললাম…..
–“একটু দূরে সরে বসুন!”
–“কেন?”
আয়াশের থমথমে গলা শুনে জবাব দেওয়ার সাহস হলো না। অন্য প্রসঙ্গ টেনে বললাম…..
–“নিজের কপালে আঘাত করেছিলেন কেন?”
উনি আমার ঘাড় থেকে মাথা উঠালেন। আমি দুম করে পা রেখে নামতেই আমার হাত টেনে ধরলেন। টেনে উনার পাশেই বসালেন।
–“আমি নিজেকে আঘাত করেছি? কখন?”
–“মনে নেই আপনার?”
অবিশ্বাস্য কন্ঠে বললাম আমি। আয়াশ শান্ত গলায় বললেন…..
–“না তো! কিন্তু আমার মাথার ব্যান্ডেজ দেখে মনে হচ্ছে সত্যি মেরেছি নিজেকে। আমি নিজেকে মেরেছি নাকি অন্য কেউ? এই বাড়িতে তো শত্রুর অভাব নেই আমার।”
–“কিন্তু আপনি এই ঘরের জিনিসপত্র ভাংচুর করেছেন। ভালো করে ঘরটা দেখুন।”
–“হুমম। কাঁচের জিনিসগুলো তো নেই। হয়তবা তোমার কথা ঠিক। কিন্তু আমার ব্যান্ডেজ করে কে দিয়েছে? মালিহা রায়হান কি ডক্টর ডেকেছিলেন নাকি?”
ফিচেল গলায় প্রশ্নটা আমার দিকে ছুঁড়ে দিল আয়াশ।
–“আ…আমি করেছি।”
স্বাভাবিক ভাবে বলতে চাইলেও কন্ঠস্বর কেঁপে উঠল আমার। আয়াশ হয়তবা তবুও বিশ্বাস করলেন না।
–“তুমি কি করে? লেট ইট গো। এই তুমি তো অনেকক্ষণ ধরে না খেয়ে আছো না? সিট! আমার বাড়িতে আমার হবু বউ না খেয়ে আছে। আমি কি করে ভুলতে পারলাম এটা? নিশাপাখি, আমাকে জাস্ট দুই মিনিট সময় দাও আমি এরমধ্যেই খাবার তোমার সামনে হাজির করব প্রমিস।”
বলেই তাড়াহুড়ো করে উঠে গেলেন উনি। শুনতে পেলাম দরজা লাগিয়ে দিয়ে যাওয়ার শব্দ। আবারও দরজা লক করে দিলেন? আমাকে তো দেখছি বিশ্বাসই করতে পারেন না। যেখানে বিশ্বাসই ভালোবাসার মূল ভিত। সেখানে যদি বিশ্বাসই না থাকে তাহলে কি করে উনি আমায় ভালোবাসলেন। অবশ্য আমিও কি ভাবছি! আয়াশের ভালোবাসাতে আমার কি যায় আসে?
দুই মিনিট যেতে না যেতেই দরজা খোলারও শব্দ পেলাম। সঙ্গে আয়াশের কন্ঠও ভেসে এলো।
–“চলে এসেছি খাবারের সঙ্গে। এখনো দুই মিনিট হতে দশ সেকেন্ড বাকি আছে নিশাপাখি!”
কথাগুলো বলতে বলতে উনি হাঁপাচ্ছেন। যেন দৌড়ে গেছেন আর দৌড়ে এসেছেন। এমনিতেও আমার খিদে পেয়েছে বটে। কাল রাত থেকে মুখে কিছুই দিইনি।
–“হা করো।”
আয়াশ আমায় হা করতে বলায় আমি হকচকিয়ে বললাম…..
–“আমি খেতে পারব। প্লেট আমার কাছে এগিয়ে দিন। তাহলেই হবে।”
–“আমি বললাম হা করো। তোমায় খাওয়াতে খুব ভালো লাগবে আমার। হা করো!”
ধমক দিতেই মুখ খুলে ফেললাম। আয়াশের কথা মেনে চলায় আমার পক্ষে ভালো। নয়ত হিতে বিপরীত হলে সমস্যা রয়েছে। কাল বিয়ে আটকাতে হবে আমায়। এর জন্য উনার কথা মেনেও চলতে হবে।
আমার মুখে ভাতের বদলে অন্যকিছু আসতেই চোখমুখ জড়িয়ে ফেললাম। এসব কি খাওয়াচ্ছেন আমায় আয়াশ?
–“এসব কি?”
–“কেন? ভেজিটেবল স্যালাদ। আমার পছন্দের খাবার। ভাবলাম তোমারও তাই হবে।”
–“কিন্তু আমি তো এসব খাই না। কাঁচা জিনিস কি করে খাব? এসব আগে কখনো খাইনি।”
–“আমি বলেছি মানে তোমায় খেতে হবে। খেতেই হবে।”
কথাগুলো হালকা রাগের সঙ্গে বললেন আয়াশ। উপায়ন্তর না পেয়ে তাই মেনে নিলাম। ঠোঁট উল্টে ভ্রু কুঁচকে রইলাম। এটা কোন মুসিবত!!
চলবে……
[বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]