মনের মহারাণী পর্ব ৭+৮

0
1000

গল্প:-#মনের_মহারানী
লেখিকা:-#Sohani_Simu
পর্ব:-7+8

‘মিতি?মিতি?এই মহারাণী?উঠ না।কত ঘুমাবি আর?দেখ,তাকা আমার দিকে।মিতি?’

উমান ভাইয়া ক্রমাগত ডাকতেই আছেন আমাকে।আমি শুনতে পাচ্ছি কিন্তু তাকাতে পারছিনা।পুরো শরীর ব্যথা করছে।খুব শীত করছে।একটু পর কপালে ভেজা কাপড়ের উপস্থিতি টের পেলাম।পুরো শরীর যেন শিউরে উঠলো।আমি শীতে কাঁপছি।মনে হচ্ছে শরীরে ভারী কিছু চাপা দিলে কাঁপুনি কমবে।আমি চোখ বন্ধ করেই গায়ের উপর দেওয়া কম্বলটা খামচে ধরলাম।হঠাৎ উমান ভাইয়া কপালের ভেজা কাপড় তুলে নিলেন।আমার গালে হাত দিয়ে বললেন,

‘শীত করছে?একটু উঠ,একটা মেডিসিন খেলেই ঠিক হয়ে যাবি।প্লিজ উঠ।’

আমি ধীরে ধীরে চোখ খুললাম।উমান ভাইয়া!অনেক বিদ্ধস্ত দেখাচ্ছে উনাকে।উনি আমার চোখের কোনা দিয়ে গড়িয়ে পরা অশ্রু মুছে দিয়ে আমার মাথার পেছনে হাত দিয়ে আমাকে বিছানা থেকে একটু উচু করে আমার মুখে প্রায় তিন-চারটে ট্যাবলেট দিয়ে পানি দিলেন।আমি মেডিসিন খেয়ে বালিশে মাথা রেখে চোখবন্ধ করলাম।উমান ভাইয়া আমার মাথায় হাত বুলিয়ে নরম কন্ঠে বললেন,

‘খুব ব্যথা করছে?এই সৌম্য দেখ না একটু?’

আরেকটা লোকের কন্ঠ শুনতে পেলাম।উনি বললেন,

‘আরে তুই থাম এবার।এত কথা বলছিস কেন?জ্বর এসেছে ওর,তাকাতেও পারছেনা আর তুই শুরু করেছেসিস বক বক।এই তুলো গুলো আগে সরা ইয়ার।ডক্টর হলেও এসব ব্লাড টাড একদম দেখতে ইচ্ছে করেনা।’

মুখের উপর গরম নিঃশ্বাস পরছে।বুঝতে পারছি উমান ভাইয়া আমার মুখের উপর ঝুকে আছেন।কিছুক্ষণ এভাবে থাকার পর কপালে উনার গালের ছোয়া পেলাম।উনি আমার কপালে গাল ঠেকিয়ে জ্বর চেক করছেন।আম্মুও আগে এমন করে জ্বর চেক করতো।আমি বিরবির করে আম্মুর কথা বলতেই উনি আমার কপালে কিস করে বললেন,

‘তুই আজ এখানেই থাক।ওর যদি কোন প্রবলেম হয়।জ্বর তো কমছেই না।’

‘প্রবলেম আর হবেনা।মেডিসিন যখন খেয়েছে একঘন্টার মধ্যে জ্বর চলে যাবে।আর এই ব্যথাও কমে যাবে।ডোন্ট ওরি।আমি আজ থাকতে পারবোনা।আমার রাতের ডিউটি দোস্ত।কাল একবার এসে দেখে যাব।আর প্রবলেম হলে আমাকে ফোন দিস।’

এরপর কিছু শব্দ পেলাম।তারপর পায়ের শব্দ পেলাম।ধীরে ধীরে শব্দগুলো ক্ষীণ হয়ে আসলো।আমি বিরবির করে উমান ভাইয়াকে ডাকছি কিন্তু কোন সাড়াশব্দ নেই।একসময় ঘুমিয়ে গেলাম।

আমার ঘুম ভাঙলো দুপুর বারোটায়।মাথার উপর ফ্যান ঘুরছেনা তাই গরম লাগছে।গায়ের উপর থেকে মোটা কম্বলটা সরিয়ে দিয়ে কম্বলের উপর পা তুলে দিলাম। ওয়াশরুম থেকে পানি পরার আওয়াজ আসছে।উমান ভাইয়া মনে হয় ভেতরে আছেন।আমি ধীরে ধীরে উঠে বালিশে হেলান দিয়ে বসলাম।গলা,কাঁধ চিনচিন করছে আর পেটে জ্বলছে।ডান হাতের অবস্থাও ভাল নয়।আমি ভ্রু কুচকে পরনে থাকা টিশার্টের দিকে তাকালাম।টিশার্টটা অনেক ঢোলা,মনে হচ্ছে কিছুই পরে নেই।এটা উমান ভাইয়ার টিশার্ট।কালই শপিংয়ে গিয়ে কিনেছিলেন।কিন্তু কথা হল আমি তো এটা পরিনি তাহলে কে পরিয়ে দিল?উমান ভাইয়া?ছিঃ…..না।এটা যেন না হয়।আগের বারের মতো উমান ভাইয়ার কোনো মেয়ে ফ্রেন্ড যেন পরিয়ে দেয়,প্লিজ আল্লাহ্‌ প্লিজ!

বলতে বলতেই ওয়াশরুমের দরজা খুলে উমান ভাইয়া বেরিয়ে আসলেন।আমি উনাকে দেখে হা।এত স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে উনাকে!উনি শুধু একটা থ্রি কোয়াটার প্যান্ট পরে আছেন।এই প্রথম উনাকে শার্ট বা টিশার্ট ছাড়া দেখলাম।এত ফর্সা উনি,আল্লাহ্!সেজন্যই উনি আমাকে কালো দেখেন।উনার পাশে আমি শুধু কালো নয় একদম পেত্নি।উনি কাঁধের উপর সাদা টাওয়াল নিয়ে মাথা মুছছেন।উনার একহাতে কিছু ভেজা ড্রেস।আমাকে দেখেই খুশি হয়ে আমার কাছে আসলেন।ভেজা ড্রেস গুলো বিছানায় রেখেই আমার গালে কপালে হাত দিয়ে বললেন,

‘এখন কেমন লাগছে?’

আমি উনার হাত সরিয়ে দিলাম।থমথমে মুখ করে বললাম,

‘ফ্যান ছাড়ুন,গরম লাগছে।আর আপনি চলে যান এখান থেকে।ভাল লাগছেনা আপনাকে।’

উনি ফ্যানেরর সুইচ অন করে সোজা ব্যালকনিতে গিয়ে ভেজা ড্রেস গুলো শুকোতে দিয়ে তাড়াহুড়ো করে রুমে আসলেন।আমার পাশে বসে আবার আমার গালে কপালে হাত দিয়ে বললেন,

‘ব্যথা করছে?আগের চেয়ে কমেছে?’

আমি গাল থেকে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে বললাম,

‘কালকের ওই লোকটা কে ছিল উমান ভাইয়া?’

উনি নরম কন্ঠে বললেন,

‘দিস ইজ উম ফর ইউ।চল ফ্রেশ হবি।’

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘লোকটা কে?বাবা কোথায়?ফোন দিন ইমরুল আঙ্কেলের সাথে কথা বলবো।’

উনি আমার কপালের চুল কানে গুজে দিয়ে বললেন,

‘আগে ফ্রেশ হয়ে খাবি তারপর সব বলবো।’

ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার শুলাম।টিশার্টের সাথে ঘর্ষণ লেগে পেটের দিকটা একদম জ্বলে যাচ্ছে।উমান ভাইয়া না থাকলে টিশার্ট পেটের উপরে তুলে রাখতাম।আমি শুয়ে থেকে উমান ভাইয়ার দিকে তাকালাম।উনি বিছানার কোনায় বসে খাচ্ছেন আর ফোনে কথা বলছেন।একটু পর উনার খাওয়া শেষ হল আর কথা বলাও।উনি প্লেট নিয়ে বাহিরে যেতেই আমি উঠে বসে পেট থেকে টিশার্ট সরিয়ে দেখতে লাগলাম।গজ কাটা জায়গা থেকে সরে গিয়ে জরে উঠেছে সেজন্যই এভাবে জ্বলছে।আমি একহাতে গজ ঠিক করতে লাগলাম।উমান ভাইয়ার পায়ের আওয়াজ পেয়েই টিশার্ট নামিয়ে দরজার দিকে তাকালাম।উনি দরজা দিয়ে ঢুকে ডাকদিকে ঘুরে ওয়্যারড্রপের উপর থেকে ফাস্টএইড বক্স নিয়ে এসে আমার পাশে বসে বক্স খুলতে খুলতে বললেন,

‘ঘুম পাচ্ছে?’

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘না।আপনি আগে বলুন ওই লোকটা কে?কিসের সিডস?কিসের ফর্মুলা?’

উনি বক্স থেকে তুলো,গজ আর এ্যান্টিসেপ্টিক বের করে বললেন,

‘তোকে এসব জানতে হবেনা।’

‘হবে,আপনি বলুন।’

জেদ ধরে বললাম আমি।উনি তুলোই এ্যান্টিসেপ্টিক লাগিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘তোকে কেন বলবো?আমার লাভ?’

‘একশো টাকা দিব।আপনি তো টাকার জন্য সব করতে পারেন।একশোতে হবে নাকি আরও লাগবে?’

উনি হু হা করে হেসে দিলেন।আমি রেগে বললাম,

‘এই একদম হাসবেন না।আপনাকে আমার চেনা হয়ে গেছে।লোভী একটা!!এখন বুঝতে পারছি দেনমোহর পাঁচটাকা কেন!এমন লোভী আর কৃপণ মানুষ আমি জীবনেও দেখিনি।’

উনি হাসি থামিয়ে আমার আরও কাছে এগিয়ে আসলেন।মুচকি হেসে আমার গালে হাত দিয়ে বললেন,

‘সেই নগদ পাঁচটাকাও তো তুই ফেলে দিয়েছিস।এখানে ব্যথা করছে?’

আমি রেগে গাল থেকে উনার হাত সরিয়ে দিলাম।উনি আমার হাত টেনে নিয়ে গজ খুলতে খুলতে বললেন,

‘এমন করে রাগবি নাতো,দাদির মতো ডাইনি ডাইনি লাগে।আচ্ছা তুই দাদির মতো হয়েছিস কিভাবে বলতো?দাদিকে তো কাছে পাসনি কখনও।কিভাবে তার মতো হলি?’

আমি মুখ ফুলিয়ে বললাম,

‘আমি আম্মুর মতো হয়েছি।’

উনি হাত থেকে গজ খুলে কাটা জায়গায় এ্যান্টিসেপ্টিক লাগাতে লাগাতে বললেন,

‘আম্মুর মতো হয়েছিস তাহলে দাদির মতো রেগে যাস কেন?অহংকারে তো পা মাটিতে পরেইনা।কিসের এত অহংকার তোর,দেখতে তে পুরো পেত্নীর মতো।’

আমি উনার এসব ফালতু কথাকে পাত্তা না দিয়ে ভ্রু কুচকে বললাম,

‘সাদ কে উম ভ..’

উনি আমার মুখ চেপে ধরে আমার দিকে চোখ গরম করে তাকালেন।আমি মুখ থেকে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে মেজাজ নিয়ে বললাম,

‘ভাইয়া,ভাইয়া,ভ..’

উনি আবার আমার মুখ চেপে ধরলেন।রাগী কন্ঠে বললেন,

‘আর একবার ভাইয়া বললে থাপ্পড় দিয়ে গাল বাঁকা করে দিব।’

আমি মুখ থেকে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে বললাম,

‘এই শুনুন আমি আপনাকে ভয় পাইনা।আমার একটা পুলিশ ভাইয়া আছে,ভাইয়াকে বলে আপনাকে জেলে ঢুকিয়ে দিব।’

উনি ভ্রু কুচকে আমার গলায় তুলো ঠেকিয়ে বললেন,

‘আমার অপরাধ?’

আমি একহাত উনার হাতের উপর রেখে সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে বললাম,

‘আপনি একটা লোভী।টাকার জন্য আমাকে বিয়ে করেছেন।আমার তো বিয়ের বয়সই হয়নি।ঘুষ দিয়ে বিয়ে করছে।আপনি কতগুলে ক্রাইম করেছেন,আল্লাহ্‌!আর আপনি একটা গুন্ডা,আপনার কাছে অস্ত্র থাকে।সব বলে দিব আমি নাসির ভাইয়াকে।’

উনি চুপচাপ আমার ড্রেসিং করছেন আর আমি বকবক করছি।একটা কথাও বের করতে পারছিনা উনার মুখ থেকে।এই লোক ভীষণ চাপা।গলা কাঁধ আর হাতের ড্রেসিং শেষ করে উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘পেটের টাও করে দিই?’

আমি চোখ বড় বড় করে বললাম,

‘না।’

উনি উনার হাতে নতুন গজ পেচাতে পেচাতে বললেন,

‘নাহ করে দিই,করতে হবে।’

আমি তাড়াহুড়ো করে কম্বল গায়ে জড়িয়ে বিছানায় হেলান দিয়ে তুতলিয়ে বললাম,

‘হহবে ননা।আআপনি এএখন যান।’

উনি সবকিছু বক্সে তুলে বক্স নিয়ে উঠে যেতে যেতে বললেন,

‘ওকে ঘুমা,আমি ল্যাবে আছি।’

উনি ওয়্যারড্রপের উপর বক্স রেখে দরজার কাছে যেতেই আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘ল্যাবে থাকেন কেন এত?বাবাকে বলে দিব।বাবা আমাকেই কখনও যেতে দেয়নি ওখানে আর আপনি কেন যাবেন?বাবার ইম্পরট্যান্ট ডকুমেন্ট থাকতে পারে,আপনি যাবেন না ওখানে।’

উনি পেছনে ঘুরে দাঁতে দাঁত চেপে বললেন,

‘চুপচাপ ঘুমিয়ে যা।’

আমি বিছানা থেকে নামতে নামতে বললাম,

‘ঘুম পাচ্ছেনা আমার।আমিও যাব।আপনাকে বিশ্বাস নেই,ইম্পরট্যান্ট কিছু চুরিও করতে পারেন।চোর একটা!!’

উনি আমার দিকে তেড়ে আসলেন।আমি পেটে হাত দিয়ে অপ্রস্তুত হেসে বললাম,

‘সরি,চোর নয় গ্রীডি।গ্রীডি ম্যান।’

উনি ডিরেক্ট আমাকে কোলে তুলে নিলেন।পেটে লাগায় আমি চোখমুখ খিচে আহ্ বলে উঠলাম।উনি আমাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে আমার পাশে শুলেন।আমি অন্যপাশ দিয়ে উঠে যাব সেই সুযোগও আমাকে দিলেন না।আবার আমার পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে আলতো করে আমার পেট জড়িয়ে ধরলেন।কনুইয়ে ভর দিয়ে আমার মুখের উপর ঝুকে মুচকি হেসে বললেন,

‘না ঘুমালে ছাড়বোনা।’

আমি মুখ ফুলিয়ে নিজের অবস্থান দেখে নিয়ে মিনমিন করে বললাম,

‘কালকের ওই লোকটার কথা না বললে ঘুমাবোনা।’

উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।উনার নিঃশ্বাস আমার মুখে পরে কপালের ছোট চুলগুলো কেঁপে উঠলো।উনি কয়েকসেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন,

‘বলছি,চোখ বন্ধ কর।’

আমি কৌতূহলি হয়ে চোখ বন্ধ করলাম।উনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

‘সাদ আমার বেস্টফ্রেন্ড।’

আমি চোখ খুলে বললাম,

‘আপনার বেস্টফ্রেন্ড?এখনও?’

উনি মুখ মলিন করে বললেন,

‘হুম এখনও আর সারাজীবন থাকবে।’

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘আপনি ওই খারাপ লোকটাকে এখনও বেস্টফ্রেন্ড ভাবেন?’

উনার চোখ ছলছল করে উঠলো।ধীরে ধীরে আমার গলার মধ্যে মুখ গুজে থেমে থেমে ধরা গলায় বললেন,

‘পনেরো দিন আগে।তোকে স্কুলে নিতে গিয়েছিল।জানতে পেরে ওরা ওকে নিয়ে চলে গেল।’

‘আমি কিছু বুঝতে পারছিনা।কি বলছেন আপনি এসব?’

উনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।গলায় পানির অস্থিত্ব টের পেলাম।কাঁদছেন উনি!!কেন?উনিও চুপ করে আছেন আমিও চুপ করে আছি।আর কিছু জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করছেনা।নিশ্চয় অনেক খারাপ কিছু সেজন্য উনি কাঁদছেন।আমি মুখ মলিন করে উনার হাতের উপর হাত রেখে উনাকে সান্ত্বনা দিলাম।

প্রায় আধ ঘন্টা ধরে উনি একইভাবে আমার গলার মধ্যে মুখ গুজে আছেন।কান্না টান্না আর কিছু বুঝতে পারছিনা।ঘুমিয়ে গেলেন নাকি!!আমি উনার হাতে পিঠে হাত দিচ্ছি,টিশার্ট খুটলাচ্ছি তাও উঠছেন না।আমাকে ঘুম পাড়াতে এসে লোভী লোকটা নিজেই ঘুমিয়ে গেছেন।আমি ধীরে ধীরে পা দিয়ে উনার পা সরানোর চেষ্টা করতেই উনি একটু নড়েচড়ে পাশের বালিশে চিৎ হয়ে শুলেন।আমি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।নিঃশব্দে বিছানা থেকে নেমে ধীরে ধীরে হেঁটে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।বাবার ল্যাবের দিকে পা বারালাম।ল্যাবে এমন কি আছে সেটায় আমি দেখতে চাই।

বাবার ল্যাবে ঢুকে আমি ঠোঁট উল্টে এদিক ওদিক তাকাচ্ছি। রুমের মেঝেতে সিলভার কালার একটা ল্যাপটপ ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছেনা।এর নাম ল্যাব?হাউ ফানি!ল্যাপটপটা নিয়ে খোলার চেষ্টা করলাম কিন্তু স্ট্রং পাসওয়ার্ড দেওয়া আছে তাই খুলতে পারলাম না।ল্যাপটপ ছাড়া যেহেতু রুমে আর কিছু নেই তারমানে সবকিছু এই ল্যাপটপেই আছে।আমি ল্যাপটপ নিয়ে এসে আমার রুমে লুকিয়ে রাখলাম।উমান ভাইয়া এখনও ঘুমোচ্ছেন।বিছানার উপর উনার ফোন পরে থাকতে দেখে আমি ফোন নিয়ে ব্যালকনিতে চলে আসলাম।ফোনও লক করা আছে।কি এক ঝামেলা!ডিসপ্লে পিকচারে আমার ছবি দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।আমার ফোনেই আমি নিজের ছবি দিইনা আর এই বদমাইশ লোক উনার ফোনে আমার ছবি দিয়ে রেখেছেন।বাই দ্যা ওয়ে,এই ছবি উনি কোথায় পেলেন?এমন ছবি তো আমি কখনও তুলিনি!আমি ঠোঁট উল্টিয়ে ইমার্জেন্সি কল চাপলাম।পাঁচটা নাম্বার ইমার্জেন্সিতে সেইভ করা আছে।দুটো স্যার ওয়ান,স্যার টু দিয়ে,একটা চাচ্চু দিয়ে,একটা শিপন আর একটা সাদ দিয়ে।আমি কোনকিছু না ভেবেই চাচ্চু অর্থাৎ আমার বাবার নাম্বারে ফোন দিলাম।জানি কল রিসিভ হবেনা তাই ফোন কানে ধরে মন খারাপ করে আকাশের দিকে তাকালাম।আমাকে অবাক করে দিয়ে কেউ ফোন রিসিভ করলো।

‘হ্যালো উমান?’

বাবার কন্ঠ।আমি হন্ত দন্ত হয়ে বললাম,

‘বাবা?বাবা তুমি,বাবা?কোথায় তুমি?কিহল কথা বলছোনা কেন?বাবা?বাবা?হ্যালো বাবা?’

কল কেটে গিয়েছে।কাঁপা হাতে একের পর এক কল দিতে থাকলাম।প্রতিবারই নট রিচেবল বলছে।চিন্তায় আমার গলা শুকিয়ে গিয়েছে।খুব অস্বস্তি হচ্ছে,হাত-পা কাঁপছে,গা গুলাচ্ছে।কোনরকম ওঠে ওয়াশরুমে গিয়েই বমি করে দিলাম।চোখে মুখে পানি দিয়ে একটু সুস্থির হয়ে আবার বাবাকে কল দেয়ার জন্য বাইরে আসলাম।হাত এত বেশি কাঁপছে যে ফোনটা হাত থেকে পরেই গেল।উমান ভাইয়া শব্দ পেয়ে নড়ে চড়ে অন্যপাশ ফিরে শুলেন।আমি ফোন তুলে নিয়ে এলোমেলো পা ফেলে ড্রইং রুমে আসতেই মাথা ঘুরে পরে গেলাম।

চলবে………………

গল্প:-#মনের_মহারাণী
লেখিকা:-#Sohani_Simu
পর্ব:-০৮

চোখ খুলে দেখি দিনের আলো ফুরিয়ে এসেছে তাই রুমের মধ্যে অন্ধকার অন্ধকার ভাব।উঠে বসার চেষ্টা করতেই খেয়াল করলাম হাতে স্যালাইন লাগানো।ডানহাতটা নড়াতেই পারছিনা।এমনিতেই কাটা ছিল তারউপর দেখছি কব্জির কাছে ফুলে উঠেছে।ব্যথা করছে অনেক।শুয়ে থাকতে একটুও ইচ্ছে করছেনা তাই অনেক কষ্টে উঠে বসলাম।দরজার দিকে তাকিয়ে মিনমিন করে কয়েকবার উমান ভাইয়াকে ডাকলাম।কোনো সাড়াশব্দ নেই।কিছুক্ষণ থমথমে মুখ করে বসে থেকেই কান্না করতে লাগলাম।কিছু ভাল লাগছেনা।বাবা-মা কোথায় আছে,কি হচ্ছে এসব আমাদের সাথে কিছুই বুঝতে পারছিনা।মিনির সাথেও তিনদিন ধরে কথা নেই।ছোট বোনটা উমান ভাইয়াদের বাসায় অতগুলো অপরিচিত মানুষের সাথে একা আছে।খুব কাঁদছে হয়তো।এসব ভেবে নিজেকে খুব অসহায় লাগছে।

চোখ মুছে হাত থেকে স্যালাইন খুলবো তখনই উমান ভাইয়া রুমে আসলেন।উনার হাতে একবক্স চকলেট।উনি মুখ মলিন করে আমার পাশে এসে বসে আমার হাতে চকলেটের বক্স দিয়ে বললেন,

‘রাতে কি খাবি?’

আমি নাক টেনে বললাম,

‘বাবা কথা বলেছিল তখন।’

উনি ভ্রু কুচকে তাকিয়ে থাকলেন আমার দিকে।আমি উনাকে সব খুলে বললাম।উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার কাছে আর একটু এগিয়ে এসে আমাকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বললেন,

‘তুই এত চাপ কেন নিচ্ছিস বলতো?কেন বুঝতে পারছিস না।’

আমি রেগে চেঁচিয়ে বললাম,

‘বুঝিয়ে বলছেন না কেন?না বললে বুঝবো কি করে?’

উনি একটা ছোট্ট শ্বাস ফেলে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলেন।হঠাৎ এভাবে জড়িয়ে ধরায় আমি হতভম্ব হয়ে গিয়েছি।উনি আমার কাঁধে থুতনি রেখে বিরবির করে বললেন,

‘বলতে হবে কেন?তোর অনুভূতি নেই?কি করে থাকবে, তুই তো ভালোবাসতে শিখিসনি।একটা কথা জানিস?দ্যা মোর বিলিভ,দ্যা মোর লাভ।একটু বিলিভ করে দ্যাখ সব বুঝতে পারবি।ভালোবাসায় জীবন ভরে যাবে।’

আমি উনার কথা কিছুই বুঝতে পারলাম না।উনার পিঠে হাত রেখে ভ্রু কুচকে বললাম,

‘আমি কিছু বুঝতে পারছিনা উম ভাইয়া।বাবা মারা যায়নি আমি জানি,আমাকে সব খুলে বলছেননা কেন?’

উনি আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কানে কানে বললেন,

‘তোর পেটে তো কথা থাকেনা।এসব বললে নিশ্চয় বাইরে গিয়ে ঢোল পিটিয়ে সবাইকে জানাবি।সবার আগে ব্যালকনিতে যেয়ে বলবি শান্ত ভাইয়া জানো?আমার বাবা বেঁচে আছে।তুই তো কথাটা বলে হালকা হবি আর আমরা ফেসে যাব।’

আমি চেঁচিয়ে বললাম,

‘উফ্ বলুন না,কাউকে বলবোনা।’

উনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে ভ্রু কুচকে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘সত্যি তো?প্রমিস?’

আমি কৌতূহলি হয়ে বললাম,

‘হুম হুম প্রমিস বলুন তাড়াতাড়ি।’

উনি আমার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরলেন।সূচ ফুটানো হাতটা উনার বুকের উপর নিয়ে বললেন,

‘বেশি প্যাচের কথা আমার ভাল লাগেনা।সোজাভাবে বলছি ওকে?’

আমি আগ্রহী হয়ে বললাম,
‘ওকে।’

উনি মুচকি হেসে আমার হাত বুকে চেপে ধরে বললেন,

‘আমি তোকে ভালোবাসি।বুঝেছিস?’

আমার গাল লাল হয়ে গেল।এই লোক বলে কি!আমি একটু নড়ে চড়ে উঠতেই উনি আমার নাক টেনে মুচকি হেসে বললেন,

‘আমার লাইফে একটাই মোটিভ।তোকে ভালোবাসা।বাট আমি তো বেশিদিন বাঁচবোনা।এখন আছি কয়েকমিনিট পর নাও থাকতে পারি।’

ভেতরে ধক করে উঠলো।মুখ কালো করে কিছু বলব উনি দুই আঙুল দিয়ে আমার ঠোঁট চেপে ধরে বললেন,

‘চুপ থাক।আমি আগে গল্পটা সাজিয়ে বলি।তুই এখন কথা বললে সব উল্টা পাল্টা হয়ে যাবে।’

আমি ভ্রু কুচকে উনার দিকে তাকিয়ে আছি।উনি আমার বাম হাত টেনে নিয়ে নিজের মাথায় রেখে বললেন,

‘কানাডা থাকতে আমি,সাদ আর শিপন ল্যাবে প্রাকটিস করতে করতে একেবারে ফালতু একটা গমের বীজ আবিষ্কার করলাম।ফর্মুলা টুকে নেওয়া হয়নি।তিনজনার কারোই তেমনভাবে মনে ছিলনা।ব্যস পাঠিয়ে দিলাম চাচ্চুর কাছে।চাচ্চু দেড় বছর পরিশ্রম করে বের করলো আরো উন্নত বীজ।আমরা তো চাচ্চুর প্রশংসায় পঞ্চমুখ।ঢোল পিটিয়ে সবাইকে বলে দিলাম।শত্রুরা জেনে গেল।ওরা দেশে এসে চাচ্চুকে খুঁজতে লাগলো।পড়াশুনা শেষ করে আমরাও চলে আসলাম।চাচ্চুর সাথে মিটিং করে গমের বীজ গুলো এক কোটি টাকা দিয়ে আফ্রিকানদের কাছে বেচে দিলাম।ওরা হাভাতা মানুষ,সারাবছর অভাব অনটনে থাকে তাই ওরাই নিল।কথা হল গম তো শীতকালীন ফসল তাহলে ওরা মরুভূমিতে কিভাবে চাস করবে?বল?’

আমি চিন্তিত হয়ে বললাম,

‘তাই তো।ওরা ওটা কেন নিল?আফ্রিকাতে তো মরুভূমি আর গরম।ওখানে গম চাষ কিভাবে হবে?’

উমান ভাইয়া আমার নাক টেনে আমার মাথা নিচে নিয়ে এসে শব্দ করে আমার গালে কিস করলেন।তারপর আমার নাক ছেড়ে দিয়ে হুহা করে হেসে বললেন,

‘মরুভূমিতে রাতের বেলা অনেক শীত পরে।একদম হার কাঁপানো।দিনে গ্রীন হাউজের ব্যবস্থা করলেই হয়ে যাবে।’

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘কাচের ঘর বানাতে হবে?’

উমান ভাইয়া চোখবন্ধ করে বললেন,

‘সেটা ওদের ব্যাপার।আগে আমার কথা শোন।আমরা ওটা বিক্রি করে দিয়েছি কারন বড় একটা এনিমি হয়ে গিয়েছে।বিক্রি করে দেওয়ার পর ছয়মাস খুব ভাল গিয়েছে।তারপর হঠাৎ একদিন আমেরিকান কিছু লোক আসলো।ওদের দেশে ওটার চাষ আরো ভাল হবে।ওরা এসে ঝামেলা করতে লাগলো।চাচ্চু ইচ্ছে করলে নতুন বীজ ওদের দিতে পারবে কিন্তু এটা করলে আফ্রিকানরা এসে আবার ঝামেলা করবে।ওরা তো বিজনেসের জন্য এত টাকা দিয়ে ওটা নিয়েছে।আমেরিকানরা আমাদের ধুয়ে দিয়েছে একদম তারপর আফ্রিকানদের সাথেও লেগেছে।এরমধ্যে আমি আবার ব্লান্ডার করে বসে আছি।মানে নকল বীজগুলো বিক্রি করে আসল গুলো তোদের বাসার ছাদে রোপণ করেছি।সফল হলে বাংলাদেশ হবে।জয় বাংলা।ওই বেটা আফ্রিকানটাকে ঠকাতাম না বাট ওতো আমেরিকানদের সাথে হাত মিলিয়ে চাচ্চুকে আর আমাদের সবাইকে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছে যাতে আর কেউ কোনদিন ওই বীজ তৈরী করতে না পারে।ওরা চায় সবাই জানুক এটা ওদের আবিষ্কার।ওদের চাওয়া-পাওয়ার মধ্যে আমরা পরে গিয়েছি উভয় সংকটে।জলে কুমির ডাঙ্গায় বাঘ।আমাদের উপর যে কতবার এ্যাটাক হয়েছে তার কোন হিসেব নেই।তুই যেদিন লাস্ট স্কুলে গিয়েছিস সেদিন তোদের স্কুলের বাইরে ঝামেলা হয়েছিল।তুই তো কিছুই জানিস না।তোকে বাঁচাতে গিয়ে সাদ ফেসে গেল।মেরে দিল ওরা ওকে।’

উনি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘সাদ ইমরুল আঙ্কেলের ছেলে ছিল।ইমরুল আঙ্কেল কে জানিস?’

আমি মাথা নাড়ালাম।উনি সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘আমাদের একমাত্র ফুফা।শিপন,সাদ আর প্রীতি তিন ভাইবোন আর রাজশাহীতে যেই ফুফা আছে ওটা কেউনা।ওটাকে কেউ চিনেও না।কেউ কখনও দেখেওনি।’

আমি চিন্তিত হয়ে বললাম,

‘তাহলে রাতে ওই লোকটা কে এসেছিল?’

উমান ভাইয়া মুচকি হেসে বললেন,

‘সাদের ভূত।ওরা আমার সোনা বন্ধুটাকে ভূত বানিয়ে দিয়েছে।’

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘আমি এখনও কিছু বুঝতে পারছিনা।মানুষ মারা গেলে ভূত হয়?সাদ ভাইয়া আমাকে এভাবে মারতে পারলো?সাদ ভাইয়া সত্যি মারা গেছে?’

উমান ভাইয়া উঠে বসলেন রহস্য হেসে বললেন,

‘চাচ্চুর মারা যাওয়া আর সাদের বেঁচে থাকা ওরা খুব সিরিয়াসলি নিয়েছে।সত্যিটা তো ভিন্ন।যাইহোক সব ক্লিয়ার করে বলেছি।আর কোন চাপ নিবিনা।এখন রেস্ট নে আমি কিচেনে আছি।’

আমি উমান ভাইয়ার একহাত ধরে বললাম,

‘এই না দাঁড়াও,আমি কিছু বুঝিনি,তুমি এত মিথ্যে কথা বলছো কেন?’

উনি খুশি হয়ে বললেন,

‘বাহ! তুমিটা অনেক সুন্দর লাগছে।তুই এখন থেকে আমাকে তুমি আর উম বলে ডাকবি,ওকে?’

আমি অপ্রস্তুত হয়ে বললাম,
‘না মানে সরি,ভুল করে বলে ফেলেছি।কিন্তু আপনি আগে বলুন এসব মিথ্যে কথা বলছেন কেন?’সাদ ভাইয়া বেঁচে আছে আমি জানি।রাতে যেই লোকটা এসেছিল সেটা অন্য লোক।আপনি কিছুই বলছেননা আমাকে।’

উমান ভাইয়া হতাশ হয়ে আমার হাত থেকে স্যালাইন খুলতে খুলতে বললেন,

‘যা শুনেছিস এসবই বিশ্বাস করে নে,এটাই তোর জন্য ভাল হবে।’

আমি ভ্রু কুচকে বললাম,

‘তারমানে এসব সত্যি নয়?’

উমান ভাইয়া ফাঁকা স্যালাইনেরর বোতল নিয়ে গিয়ে রুমের ঝুড়িতে রেখে দিয়ে আমার কাছে এসে বসলেন।কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে আমার হাত নাড়াচারা করে বললেন,

‘সব সত্যি নয়।আমি তোকে ভালোবাসি এটা সত্যি।আর বাকি গুলো সাজানো সত্যি।ওটা মিথ্যে হলেও সবাই বিশ্বাস করে,তুইও বিশ্বাস করে নে।’

আমি বিছানায় হেলান দিয়ে ক্লান্ত আর অসহায় মুখ করে বললাম,

‘এসব আর ভাল লাগছেনা।আপনি পেপার রেডি করুন,সবকিছু কিছু আপনার নামে করে দিয়ে চলে যাব কোথাও।’

উমান ভাইয়া রাগী কন্ঠে বললেন,

‘আমাকে কি তোর ভিক্ষারি মনে হয়?কি করে দিবি আমার নামে?কি আছে তোর?শুনেছিস টাকা আছে কিন্তু দেখেছিস কখনও চোখে?তোর শুধু তুই ছিলি সেটা আমি আমার নামে করে নিয়েছি।তুই আমার,বুঝেছিস?’

আমিও রেগে বললাম,

‘হ্যা বুঝেছি,পাগল আপনি একটা।’

‘তোর মাথা,ডাফার কোথাকার!’

বলে উনি হন হন করে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন।আমি অনুভূতি শূন্য হয়ে বিছানায় শুয়ে আছি।বাইরে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে।জানালা গুলো এখনও খুলে রাখা আছে।কিছুক্ষণ জানালার দিকে উদাস চোখে তাকিয়ে থেকে উমান ভাইয়ার দেওয়া চকলেটের বক্স খুলে চকলেট খেতে শুরু করলাম।খেতে খেতে হঠাৎ খেয়াল করলাম আমি অন্য টিশার্ট পরে আছি।অ্যাশ কালার টিশার্ট আর গোলাপি প্লাজু পরে ছিলাম এখন দেখছি কালো গ্যাবাডিং আর সাদা টিশার্ট পরে আছি।টিশার্ট তুলে দেখি পেটেও নতুন গজ পেচানো।সব দেখে ফেলেছে ওই গ্রীডিম্যানটা…এ্যা এ্যা।

মাথা আমার পুরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে আমি পাগল হয়ে গিয়েছি।মহারাণী থেকে ডিরেক্ট পাগল রাণী।না না,মহারাণী নই।আমি আনম্যারিড,বাবার দ্যা প্রিন্সেস হু।আই হেট উম পাগল!ওই পাগলের বউ আমি কখনও হবনা।এসব ভেবেই আমি মনে মনে হাসলাম।

চলবে………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here