মনের মহারাণী পর্ব ২

0
1545

গল্প:-#মনের_মহারাণী
লেখিকা:-#Sohani_Simu
পর্ব:-০২

জ্ঞান ফিরতেই তাকিয়ে দেখি আমি ড্রইংরুমের সোফায় শুয়ে আছি।কয়েকটা ছেলে-মেয়ে আমাকে ঘিরে ধরে আছে।ধবধবে ফর্সা দেখতে একটা সুন্দর মেয়ে আমার প্রেশার চেক করছে।আমি মেয়েটার মুখের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছি।মেয়েটার চোখে চিকন ফ্রেমের চশমা,গালে কুচকুচে কালো একটা তিল,গোলাপি ঠোঁটের নিচেও ছোট্ট আরেকটা তিল আছে,তরতরে নাক,কপালের কিছু চুল ছোট করে কাঁটা,চুলগুলো খুব সিল্কি।আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মেয়েটা মুচকি হেসে বলল,

‘কি দেখছিস?চিনিস আমাকে?বোন হই,তোর বড়াব্বুর মেয়ে আমি।আমার নাম উর্মি।’

তখনই পাশ থেকে একটা লম্বা আর শ্যামলা দেখতে ছেলে বলল,

‘উহুম শুধু উর্মি নয়,ডক্টর উর্মি।’

আমি কিছু বললাম না। ভ্রু কুচকে মিনির দিকে তাকালাম।মিনি ছেলেটার কোলে চড়ে চকলেট খাচ্ছে।আমি বাম হাতে সোফা ধরে উঠে বসতেই উর্মি আপু বললেন,

‘ওয়েট ওয়েট উঠিস না।একটা ইন্জেকশন করতে হবে।’

আমি আতংকিত হয়ে ডান হাতটা উর্মি আপুর হাতের মধ্যে থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে কাঁপা কন্ঠে বললাম,

‘নাাা!কককেন?নননো ননীড।’

উমান ভাইয়া আমার পেছনেই সোফার হ্যান্ডেলে বসে ছিলেন আমি খেয়াল করিনি।উনি হ্যান্ডেল থেকে নেমে আমার পাশে বসে বললেন,

‘এই তুই কি তোতলা?সবসময় এমন তু তু তু করিস কেন?এই আপু কি করতে হবে তাড়াতাড়ি করতো।’

আমি সোফার উপর লাফিয়ে উঠে দুই হাত পেছনে নিয়ে ভীত কন্ঠে বললাম,

‘আআমি ইইইন্জেকশন করব না।’

উর্মি আপু সিরিন্জে মেডিসিন তুলতে তুলতে বলল,

‘করতে হবে,প্রবলেম আছে।আয়নায় দেখেছিস নিজেকে? ডার্ক সার্কেল পরে গেছে তোর।কয়দিন ঘুমাসনি?বুলবুল চাচ্চু… ‘

আর কিছু বলার আগেই উমান ভাইয়া উর্মি আপুকে থামিয়ে দিলেন।বাবার নাম শুনেই আমার ভেতরে ধক করে উঠলো।মাথা নিচু করে কান্না করতে লাগলাম।উমান ভাইয়া আমার হাত ধরে সোফায় বসিয়ে দিলেন।আমাকে আলতো করে একপাশ থেকে জরিয়ে ধরে মলিন কন্ঠে বললেন,

‘প্লিজ স্টপ।যা হবার হয়ে গিয়েছে আর কাঁদিস না প্লিজ।আমরা সবাই আছি তো।দেখ তো এদের চিনিস তুই?এরা কিন্তু সব তোর কাজিন।এই তোরা কথা বল মিতির সাথে।আপু? ইন্জেকশনটা এখন থাক, আগে কিছু খাবার খাইয়ে দে।’

আমি উমান ভাইয়ার হাত আমার কাঁধ থেকে সরিয়ে দিয়ে একটু দূরে গিয়ে বসার আগেই উনার পকেটে ফোন বেজে উঠলো। উনি নিজেই একটু দূরে গিয়ে ফোন রিসিভ করলেন।উনি যেতেই সবাই আমার সাথে কথা বলতে লাগলো।সবার সাথে কথা বলে জানতে পারলাম আমার বাবারা দুই ভাই এক বোন।ভাই-বোনদের মধ্যে আমার বাবা সবার ছোট।উমান ভাইয়ার বাবা সবার বড়।উমান ভাইয়া আর উর্মি আপু দুই-ভাইবোন।উর্মি আপু উমান ভাইয়ার তিনবছরের বড়।উর্মি আপু মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে গাইনি ডক্টর হয়ে বের হয়েছে আর উমান ভাইয়া কানাডা থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করে দেশে এসে দাদুর বিশাল বিজনেসের দেখাশুনা করছেন।মিনি যেই ছেলের কোলে আছে উনি আমার ফুফাতো ভাই।উনার নাম শিপন,শিপন ভাইয়া উমান ভাইয়ার সাথে পড়াশুনা করে এসে বিজনেসে ঢুকেছেন আর উনার পাশে সুন্দরি দেখতে ফর্সা মেয়েটি শিপন ভাইয়ার বোন, তার নাম প্রীতি।প্রীতি আপু রাজশাহীতেই কোন এক প্রাইভেট ভার্সিটিতে বাংলা নিয়ে অনার্স করছে।সব ভাই-বোনদেরই দেখা হল শুধু প্রীতি আপুর সাথে কথা হলনা।প্রীতি আপু মনে হয় একটু অহংকারী, আমাকে পছন্দ করছেনা বুঝতেই পারছি।

উর্মি আপু আমাকে নিয়ে নিজের রুমে আসলো।বিশাল রুম।মেঝেতে সাদা টাইলস বসানো,রুমের দেয়ালে বেবি পিংক কালার রঙ করা।বড় বড় দুটো কাচের জানালা,জানালাতে কোনো গ্রীল নেই,সাদা পর্দা টানানো আছে ,ব্যালকনি খোলা মেলা আর ফুলের গাছ আছে।রাত হওয়ায় আমি সেদিকে গেলাম না।চুপচাপ সোফায় গিয়ে বসলাম।রুম আমার খুব পছন্দ হয়েছে।রুমটা আগেকার রাজকুমারীদের রুমের মতোই কিন্তু আধুনিকতার ছোয়া পেয়ে আরও সুন্দর হয়েছে।শিপন ভাইয়া মিনিকে একহাতে কোলে নিয়ে অন্যহাতে আমার লাগেজ নিয়ে উর্মি আপুর রুমে আসলেন।উর্মি আপু আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

‘এটা আমার রুম ছিল এখন থেকে তোর রুম।’

আমি মলিন হেসে বললাম,

‘তুমি কোথায় থাকবা?’

শিপন ভাইয়া মিনিকে বিছানায় নামিয়ে দিয়ে বললেন,

‘আমাদের উর্মিমালা আপা শশুর বাড়িতে থাকে।দুদিন হলো ঘুরতে এসেছে এখানে।’

আমি উর্মি আপুর দিকে তাকিয়ে বললাম,

‘বিয়ে হয়েছে তোমার?’

উর্মি আপু আলমিরা খুলতে খুলতে বলল,

‘হুম।বাবুও হবে,চারমাস চলছে।তোর দুলাভাইও ডক্টর। লাভ ম্যারেজ করেছি।আমার শশুরের ছেলের সাথে কালই তোর দেখা করিয়ে দিব।’

আমি উর্মি আপুর পেটের দিকে তাকালাম।দেখে মনে হচ্ছে না প্রেগন্যান্ট।আমি কিছু বলার জন্য মুখ খুলেছি তখনই উমান ভাইয়া ঘরে আসলেন।উনাকে কেমন যেন খুশি খুশি লাগছে।উনার বিষন্ন মুখে হঠাৎ হাসি দেখে খুব ভাল লাগলো।উনি মুচকি হেসে উর্মি আপুর দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘আম্মু তোকে দাদির রুমে ডাকছে।আর শিপন তোকেও বাবা ডাকছে।ফু্প্পি চলে এসেছে,কাঁদছে যা একটু দেখ।’

উনার কথা শুনে উর্মি আপু আর শিপন ভাইয়া রুম থেকে চলে গেল।মিনি উমান ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে বলল,

‘উম ভাইয়া আলো চকি খাব।’

আমি ভ্রু কুচকে রাগী কন্ঠে বললাম,

‘না আর নয়,আজ অনেক খেয়েছো মিনি।’

মিনি বিছানা থেকে নেমে উমান ভাইয়ার হাত ধরে বলল,

‘আমাল উম ভাইয়া আছে,শুনবোনা তোমাল কথা আল।’

মিনির কথা শুনে আমার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল।আমার লুকানো আমি সত্তা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে পর্দার আড়াল থেকে বেড়িয়ে আসলো।হাতের কাছে টি টেবিলের উপর কাচের শোপিচ রাখা ছিল তুলে নিয়ে মেঝেতে আছাড় দিলাম।শোপিচ ভেঙ্গে কুটি কুটি হয়ে গেল।মিনি ভয় পেয়ে উমান ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরলো।আমি মিনির দিকে তাকিয়ে রাগী কন্ঠে বললাম,

‘শুনবি না আমার কথা?’

মিনি ভয়ে হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো।উমান ভাইয়া মিনির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন,

‘তুই তো দাদির লেটেস্ট ভার্সন দেখছি।ভাল,খুব ভাল।তা আমাকে চিনিস তো?’

মিনিকে ওখানে রেখে উনি আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলেন।আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গিয়ে মাথা নিচু করে বললাম,

‘সসরি,ওটা ভেঙ্গে গেল।কককিনে দিব।’

উমান ভাইয়া আমার একদম সামনে এসে একহাতে আমার গাল টিপে ধরে আমার চোখের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে চোখমুখ শক্ত করে বললেন,

‘সৈয়দা আনারকলি বেগমের মতো ত্যাড়াবাঁকা হয়েছিস না?থাপ্পড় দিয়ে তোর সব ত্যাড়ামি ছুটিয়ে দিব।ভাল করে শুনে রাখ,আমি উমান ঘৃণা করি সৈয়দা আনারকলি বেগমকে।আই হেট হার অ্যান্ড ইউ ডোন্ট ট্রাই টু বি আনারকলি বেগম।’

কথা শেষ করে উনি আমার গালে ছোট ছোট ব্যাথাহীন দুটো থাপ্পড় দিলেন।আমি শুকনো ঢোক গিলে বললাম,

‘মমমিনি ককথা শুনে না।চকলেট খাওয়ার জজন্য সব দাঁতে পোকা ধরেছে।’

উমান ভাইয়া আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছেন।আমি মাথা নিচু করে এদিক-ওদিক তাকালাম।উনি এখনও তাকিয়ে আছেন।কি দেখছেন এমন করে কে জানে!কিছুক্ষণ পর উনি আমার কানের কাছে মুখ এনে ফিসফিস করে বললেন,

‘খেয়ে ঘুমিয়ে পরবি,কাল সকালে তোকে নিয়ে ঢাকা যাব।চাচ্চুও বেঁচে আছে আর মোহনা অ্যান্টিও।কাউকে বলিস না।আর প্লিজ এরকম প্যান প্যান করে কান্নাকাটি করিস না।একদম সহ্য হচ্ছেনা।’

বাবা আর আম্মু বেঁচে আছে!!এটা কি বলছেন উনি?আমি নিজে আম্মুকে মর্গে দেখেছি আর বাবাকে শেষ ওটি রুমে দেখেছিলাম।উমান ভাইয়ার কথা শুনে নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছে।চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।এটা দুঃখের কান্না নয়,আনন্দের কান্না।উমান ভাইয়া মনে হয় বুঝতে পেরেছেন আমি চিৎকার চেঁচামেচি করব তাই উনি আমার মুখ চেপে ধরলেন।মিনির দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘মিনি বড়াম্মু ডাকছে যাও শুনে আসো?’

মিনির এক কথা সে চকি খাবে।চকি না দিলে সে কোথাও যাবেনা।মিনি মেঝেতে বসে আমার হ্যান্ড ব্যাগের চেইন খুলে চকলেট নিচ্ছে।উমান ভাইয়া সেদিকে পাত্তা না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে নরম কন্ঠে বললেন,

‘যদি বাবা-মাকে ফেরত চাস চুপ থাক মিতি।ইমরুল আঙ্কেল কল করেছিল।অনেক বড় ষড়যন্ত্র চলছে।একদম মুখ বন্ধ রাখবি।আমি ছাড়া কারও সাথে চাচ্চুর কোন কথা বলবিনা বুঝেছিস?’

আমি তড়িৎ বেগে মাথা নাড়ালাম যার অর্থ খুব ভাল করে বুঝেছি।উমান ভাইয়া আমার মুখ ছেড়ে দিলেন।সঙ্গে সঙ্গে আমি বাবা বাবা করতে করতে চিৎকার করে কান্না শুরু করলাম।আমার গলা ফাঁটা চিৎকার শুনে উমান ভাইয়া চোখমুখ কুচকে ফেললেন।আমি মেঝেতে বসে পরেছি একসময় শুয়েও পরেছি।আমার খুব আনন্দ হচ্ছে,কোন কষ্ট নেই তাও চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে।আমার কান্নার ধরণ দেখে উমান ভাইয়া সোফায় বসে মনোযোগ দিয়ে আমার কান্না করা দেখতে লাগলেন।মিনি ভয় পেয়ে চকলেট খাওয়া বন্ধ করে ঘরের এক কোনায় গিয়ে দাঁড়ালো।এদিকে কান্নার আওয়াজ পেয়ে দাদিকে ফেলে সবাই আমার কাছে চলে এসেছে।উমান ভাইয়ার বাবা-মা মানে বড়াব্বু আর বড়াম্মু আমার দুইপাশে মেঝেতে বসে আমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছে।ফুপ্পিও দেখলাম আমার মাথার কাছে এসে বসলো।ফুপ্পিকে আগে কখনও দেখিনি তাও কেন যেন দেখেই চিনতে পারলাম।বড়াব্বু একদম আমার বাবার মতো দেখতে।আমি লাফ দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসে বড়াব্বুর হাত ধরে ভাঙ্গা গলায় বললাম,

‘বাবার কাছে যাব,আমাকে বাবার কাছে নিয়ে চলো।’

গলার অবস্থা দেখে আমি গলায় হাত দিলাম।কথা বলছি জোরেই কিন্ত আওয়াজ আসছে খুবই আস্তে।এত চিৎকার চেঁচামেচি করার জন্য গলার স্বর ডেবে গিয়েছে।আবার ঠাস করে মেঝেতে শুয়ে খ্যাস খেসে গলায় বললাম,

‘বাবার কাছে যাব।’

সবার চোখে পানি।ফুপ্পি তো একদম ভেঙ্গে পরেছে ।উমান ভাইয়া সোফা থেকে উঠে আমার কাছে আসলেন।আমি চোখ বন্ধ করে দুই-পা মেঝেতে সটান করে মেলে দিলাম।উমান ভাইয়া সবাইকে কান্না থামাতে বললেন।আমার দুই হাত ধরে আমাকে মেঝে থেকে তুলতে তুলতে বললেন,

‘তুই দাদির থেকেও ডেন্জারাস হয়েছিস।চল দুটোকে এক সাথে রাখবো।’

উনি আমাকে কোলে নিয়ে হন হন করে হাঁটতে লাগনেন।আমি হাত-পা ছুড়তে ছুড়তে বললাম,

‘ছাড়ুন,নামান আমাকে।’

উনি আমাকে নামালেন না।নিচের একটা ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে দিলেন।আমি অন্যপাশে তাকাতেই দেখি দাদিও শুয়ে আছে।দাদির হাতে স্যালাইন করা।ছেলের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়ার পর থেকে এই তেজী আর অহংকারী মহিলা অসুস্থ হয়ে গিয়েছে।আমি দাদিকে দেখতে দেখতে হঠাৎ হাতে ব্যথা পেলাম।তাকিয়ে দেখি উমান ভাইয়া আমার হাত ধরে আছেন আর উর্মি আপু ইন্জেকশন পুশ করছে।আমি রাগী কন্ঠে বললাম,

‘একবার বাবা আসুক,দেখে নিব তোদের।’

উমান ভাইয়া হাত ছেড়ে দিয়ে আবার আমার গাল টিপে ধরে আমার দিকে ঝুকে বললেন,

‘আগেও বলেছি এখনও বলছি,একদম ত্যাড়ামি করবিনা।আর কখনও তুই তাকারি করলে মুখ ভেঙ্গে দিব তোর।’

উর্মি আপু আমার গাল থেকে উনার হাত সরিয়ে দিল।উমান ভাইয়া আমার উপর রেগে গিয়েছেন।উনি রাগ কমানোর চেষ্টা করতে করতে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেন।আমি নাকমুখ ফুলিয়ে উঠে বসলাম।খুব রাগ হচ্ছে।এই মুহূর্তে মাথায় পানি ঢালতে হবে।আমার আবার যখন তখন রাগ উঠে।আমাকে কেউ কন্ট্রোল করবে এটা আমি মানতে পারিনা কিন্তু আমি খুব ভীতুও।ভয় পেলে তোতলা হয়ে যাই আর ছোট খাটো ব্যাপারেই বেশি ভয় পেয়ে যাই।মেয়ে আমি খুব একটা ভাল নয়।হয়তো সত্যি সত্যি দাদির মতো হয়েছি।নাহলে উমান ভাইয়া বার বার এক কথা কেন বলছে!

উর্মি আপু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে খাবার আনার নাম করে চলে যেতেই আমি বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে ওয়াশরুমে গেলাম।শাওয়ার অন করে ইচ্ছে মত ভিজতে লাগলাম।কিছুক্ষণ পরই খুব ঘুম পাচ্ছে জন্য ওয়াশরুমের দরজা খুলতেই উমান ভাইয়াকে দেখতে পেলাম।উনি চোখ মুখ লাল করে ভয়ানক রেগে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।আমি ভারী চোখের পলক ফেলে উনাকে ছাপিয়ে উর্মি আপুর দিকে তাকালাম।আপু দাদির স্যালাইন চেক করছে।উমান ভাইয়া রাগী কন্ঠে বললেন,

‘তোকে এভাবে ভিজতে কে বলেছে?’

আমার মাথা ঠিক নেই।ঘোরের মধ্যে চলে গিয়েছি।বাবার-মার চিন্তায় আমি যেন পাগল হয়ে গিয়েছি। ভেজা শরীরেই উমান ভাইয়াকে জড়িয়ে ধরে ভ্যা ভ্যা করে কান্না করতে করতে কি যেন বলছিলাম।হয়তো বাবার কথা বলেছি।বাবার বেঁচে থাকার কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা।এত কিছুর পর শুনছি বাবা-মা নাকি বেঁচে আছে। কি হচ্ছে এসব আমার সাথে!!

চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here