ভয়_আছে_পথ_হারাবার পর্ব 3

0
1636

#ভয়_আছে_পথ_হারাবার
ফারিশতা রাদওয়া (ছদ্মনাম)

০৩..

তিলো পেছনে ফিরে সিনিয়রদের দলটাকে দেখে ঘাবড়ে গেলো। আজ কি ওরও ছাড় নেই? এই কয়েকদিন তো লুকিয়ে চুরিয়ে বেঁচে গিয়েছে। এই বিষয়টায় ওর মাঝে একটা হেজিটেশন কাজ করে। ও সবসময়ই ঝামেলামুক্ত থাকতে পছন্দ করে। তা সে ঘরে হোক বা বাইরে। যদি ঝামেলা আর কারো ঘাড়ের উপর থেকে চালানো যায় তো ও সেটাই করে। এখনো নিজেকে ছোট মনে করে, যার বড়দের আলোচনার মাঝে থাকতে নেই। তাই তো তুলির বিষয়ে ও একদমই নাক গলাচ্ছে না।

তিলোর গায়ের বর্ণ কালো। তাই বলে তাকে দাঁড়কাক উপমা দেওয়ার কি আছে? ও মানুষ। ওরও আত্মসম্মান আছে। ছোটবেলায় বেশ লাঞ্ছনার শিকার হয়েছে ও, যখন আসলে বন্ধুরা কিছু বুঝতো না। কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ওর পাশে কেউ বসতে চাইতো না। টিচারদের থেকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না পেলেও ওর ক্লাসমেইটগুলো সেসময় ভীষণ পাঁজী ছিলো। ও যদি সামনের বেঞ্চেও বসতো, ওরা কেউই বসতো না। ওকে বরাবরই একা থাকতে হতো। কালো বলে ওর স্পর্শও কেউ পছন্দ করতোনা। (আমার ভাইয়ের কিন্ডারগার্টেনেই আমি এমন একটা ঘটনা বাস্তবে ঘটতে দেখেছি।) ধীরে ধীরে বড় হতে হতে যখন আশেপাশের মানুষগুলো ওকে মানিয়ে নিতে শুরু করলো, তখন থেকে ও কিছু বন্ধু জুটিয়ে নিতে সক্ষম হলো। এখন তো ভার্সিটিতে বেশ কিছু বন্ধু ওর আছে।

সিনিয়রদের দলটা ওর বেশ কাছে এগিয়ে এলো। তাদের মধ্যে একটা মেয়ে বললো,
-তো মিস কাকতাড়ুয়া, এতোদিন কোথায় ছিলেন আপনি? আমরা তো আপনাকে খুঁজেই পাইনি। অবশ্য পাবোই বা কি করে? আপনাকে তো আসলে দেখাই যায়না। অন্ধকার শুধু না দিনের আলোতেও তো আপনাকে দেখা যায়না।

মেয়েটা বলেই হেসে দিলো। তার সাথে আরো কয়েকজন তাল মিলিয়ে হাসলো। তিলো এমন কথা ওর দাদী আর চাচীর মুখে শুনেছে। চাচা চাচী থাকেন রাজশাহীতে। চাচার সরকারি চাকরির ট্রান্সফার এখন সেখানে। দাদীও তাদের সাথেই থাকে। কথাগুলো আগেও শুনে থাকলে নতুন করে এখন অন্য কারো মুখে সবার সামনে দাঁড়িয়ে শুনতে তিলো অপ্রস্তুত হয়ে পড়ার পাশাপাশি ওর বেশ লজ্জাও লাগছে। তিলো হাত মুঠ করে আসমানী রঙের থ্রিপিছটার একটা মাথা খামচে ধরে রেখেছে। চোখজোড়া মাটিতে আবদ্ধ করে রেখেছে। মনে মনে প্রার্থনা করে যাচ্ছে, আল্লাহ যেন ওর বন্ধুগুলো অন্তত ওকে এখানে দেখতে পায় আর কিছু একটা উপায় বের করে এই লজ্জাজনক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করে।

-তাহলে মিস আপনি এতোদিন লুকিয়ে থাকায় আপনার শাস্তি সুদে আসলে বাড়লো। আপনি এক কাজ করুন …

মেয়েটা কথাটা শেষ হওয়ার আগেই একটা ছেলে বললো,

-তুমি কেবল একটা গান শোনাও।

তিলো চকিতে মাথা উঁচু করে তাকালো সামনে। কন্ঠের অধিকারীকে দেখে তিলো একটা ছোটখাটো ধাক্কা খেলো। তিলোর সাথে সাথে বাকিরাও তাকালো সেদিকে। এটা একটা পুরুষের কন্ঠ। খানিক দূরে দাঁড়িয়ে থাকা পুরুষ মূর্তিটি তিলোর পরিচিত। অরিক। অরিক আহসান। তিলোর চাচাতো ভাই। তিলো জানতো সে পড়াশোনা শেষ করে একটা ভার্সিটিতে প্রফেসর পদে নিয়োগ দেবে। ওর বাবার মুখে অন্তত সেদিন দুপুরে খাবার টেবিলে বসে এটুকুই শুনেছিলো। ও ভাবেনি এখানেই অরিকের সাথে ওর দেখা হতে পারে। ও তো আত্মীয় স্বজন কারো সাথে কথাই বলেনা প্রায়। সবার থেকেই নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পছন্দ করে ও। প্রায় প্রত্যেকেরই কি রাজকীয় রং গায়ের! বেশি চাপা হলে, উজ্জ্বল শ্যামলা। কিন্তু তিলোর মতো এতো চাপা রঙের কেউ নেই। বাড়িতে বাবা-মা, ভাই আর বোনের মধ্যে এটা নিয়ে একদমই কথা ওঠেনা এখনো পর্যন্ত বলে ও সেখানে মুখর। তবে তিলো জানে, এসুখ বেশি দিন আর স্থায়ী হবে না। মা ইতিমধ্যে ওর বিয়ের কথা বলতে শুরু করেছে। ওকে যখন পাত্রপক্ষ একের পর এক রিজেক্ট করবে, তখন ওকে বাড়িতেও শুনতে হবে গায়ের বর্ণ নিয়ে।

অরিক মৃদু হেসে ওর দিকে এগিয়ে এসে বললো,
-একটা গান শোনাও আর চলে যাও। গুণের ভেতর তো এই একটাই আছে তোমার। তাই না?

অরিকের কথায় ব্যঙ্গ স্পষ্ট। আরে বাহ্! চমৎকার। তিলোর তো কোনো ধারণাই ছিলো না অরিকের ওর গানের প্রতি আগ্রহ থাকতে পারে। কিন্তু না। একে আগ্রহ বলা যায়না। এটা অতি ছোট্ট সহানুভূতি, যা হয়তো যেকারো প্রাপ্য এমন একটা পরিস্থিতিতে একজন দ্বায়িত্বশীল প্রফেসরের পক্ষ থেকে। আর তাছাড়া অরিক শুধু ওর কৌতুকই করেছে।
সিনিয়রদের দলটা এবার অরিকের উপরই তেতে উঠলো। ওরা হয়তো এখনো ওকে চেনে না। একটা ছেলে তো ক্রুদ্ধ চেহারা নিয়ে ওর কলার চেপে ধরলো।
-শালা, ভার্সিটিতে পা রাখতে না রাখতে নিজেকে কি মনে করিস? চিনিস আমাদের? আমাদের কাজের মাঝে নাক গলাতে আসছিস! নাকই থাকবে না।

ছেলেটা অরিকের নাক বরাবর ঘুষি দিতে নিতেই অরিক ওর হাত ধরে ফেলে। ছেলেটার চোখে রাগ আরো স্পষ্ট হলো। তবে তা প্রকাশের আগেই ওর পাশে দাঁড়ানো আরেকটা ছেলে ওকে ছাড়িয়ে নিতে নিতে কানে কানে কিছু ফিসফিস করলো। ছেলেটা যেমন আচমকা অরিকের কলার ধরেছিলো, তেমনি আচমকাই ছেড়ে দিলো। তিলো বুঝতে পারলো, সে নিশ্চয়ই অরিকের পরিচয় তাকে বলেছে। ইতিমধ্যে আশেপাশে উপস্থিত অধিকাংশের নজরই এদিকে। তিলোর বন্ধু গ্রুপ এগিয়ে এসেছে।

বেপরোয়া ছেলেটা মাথা নিচু করে মৃদুস্বরে বললো,
-সরি প্রফেসর।

ব্যাস! এর বেশি কিছু বললো না। হয়তো তার ইগোতে লাগছে। তিলোর কোনোপ্রকার অনুভূতি নেই। ও জানে অরিক রগচটা ধরনের। এখনো কিভাবে শান্ত হয়ে আছে, এটা তিলোকে সামান্য ভাবাচ্ছে। কিন্তু এই ঘটনা যে আরো এগিয়ে যাবে, এবিষয়ে তিলো নিশ্চিত।

অরিক ছেলেটার কথার কোনো প্রত্যুত্তর না করে একবার তিলোর দিকে তাকিয়ে আশেপাশে জমে যাওয়া ভিড় ঠেলে এগিয়ে গেলো। অরিকের যাওয়ার দিকে অনেকেই তাকিয়ে আছে। অরিক প্রশাসনিক ভবনে ঢুকলো। অরিকের গন্তব্য সকলের কাছেই স্পষ্ট। সে প্রিন্সিপালের কাছে গিয়েছে।

তিলো বেপরোয়া ছেলেটার দিকে তাকিয়ে দেখলো, সে একেবারে শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে যে নিজের কবর নিজেই খুঁড়েছে, সেই বোধ তার হচ্ছে। এখন শুধু কবরে ওর শরীরটার ডেলিভারি বাকি। তার চোখে মুখে আফসোস প্রকাশ পেলেও সে ছিলো নির্বিকার।

ধীরে ধীরে সেখানকার জটলা পাতলা হয়ে যে যার অবস্থানে ফিরে গেলো।

তিলো ক্লাসে মন বসাতে পারছে না। আশেপাশে অনবরত ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোতে ওর মন বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। তিলো হাতের কলমটা একবার আঙুলের ফাঁকাগুলোর মধ্যে থেকে গলিয়ে নিয়ে দীর্ঘ একটা নিশ্বাস ফেলে জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো, যেন ক্লাসে প্রফেসরের উপস্থিতি তার জন্য কোনো বিষয়ই না। বিপত্তিটা তখনই ঘটলো। চকচকে টাক মাথার প্রফেসর ওর দিকেই তখন চোখ ফেলে গর্জে উঠলেন। ফলস্বরূপ, ক্লাস থেকে আউট।

তিলো বেরিয়ে যাওয়ায় ওর বন্ধুরাও একে একে বেরিয়ে গেলো। ভার্সিটি মাঠে একটা গাছের তলায় গোল হয়ে বসে তারা আড্ডার প্রস্তুতি নিলো। তিলো তখনও উদাস।
অনি সামান্য কেশে গলাটা পরিষ্কার করে বললো,
-এই তিল। তুই কি এখনো ছ্যাঁকা খেয়ে এভাবেই পড়ে থাকবি? আরে দোস্ত, জীবনে কতো ফাহাদ আসবে যাবে। একজনের জন্য নিজের সময়টা নষ্ট করার কোনো মানে হয়? আমি তো আজও গেলাম।

তিলো ভ্রু কুঁচকে বললো,
-আজও গেলি মানে?

প্রত্যুত্তরে অনি কেবল মুচকি হাসলো। তৌকির ফোঁড়ন কেটে বললো,
-জনগণস তোরা বুঝোস নাই? আমাদের কথায় কথায় ক্রাশ খাওয়া কুইন আজও খাইছে৷

অনির দিকে তাকিয়ে তৌকির আবারও বললো,
-আজ তো ভার্সিটি নতুন একজনই আসছে।

তিলো বিষয়টা বুঝতে পেরে একেবারেই চুপ হয়ে গেলো। এই মেয়েকে বিশ্বাস নেই। অরিক ওর কাজিন জানতে পারলে, ওর সাথে অরিকের যে আসলে কথাই হয়না বিশ্বাস করলেও ওর পেছনেই হয়তো হাত ধুয়ে লেগে পড়বে।
আজকে আহান ভার্সিটিতে আসেনি। সেই সাথে রিয়াও। দুজনের মাঝে প্রেমের একটা সম্পর্ক আছে, সেটা ওরা সবাই জানে। ওরা মাঝে মাঝেই ক্লাস না করে ঘুরে বেড়ায়। অনিকেত গিটার হাতে নিয়ে সুর তোলার চেষ্টায় ব্যস্ত। মিরা ফোনে কার সাথে যেন চ্যাট করছে আর মুচকি মুচকি হাসছে। রিপা অনির সাথে গল্প করে যাচ্ছে আর ফিরোজ গিয়েছে সবার জন্য চা কিনে আনতে। মোটামুটি এই কয়েকজনই আছে তিলোদের ফ্রেন্ড সার্কেলে।

উদাস দৃষ্টিতে তিলো মেঘে ঢাকা আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,
-আমার পরিবারের মতো পরিবারে কুৎসিত হয়ে জন্মানোটা একপ্রকার আশির্বাদ।

ঝড় হয়েছে দুতিনদিন হলো। এখন আবারও আকাশে কালো মেঘ জমেছে। প্রকৃতিতে এখন কোনো নিয়মই সুস্থিতি নেই। অনি স্বাভাবিক কন্ঠেই বললো,
-কেন রে?

-আপুটা সুন্দরী হওয়ায় আগে আগে বিয়ে হয়ে গেলো। আর আমাকে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। রূপ নেই। তাই এদিক থেকে স্ট্রং হওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। আপুর ভাগ্যটা দেখ, ইমন ভাইয়া একবারও এই কয়েকদিনে ফোন করে নিজের অসুস্থ ছেলেটার খোঁজও নিলো না।

-তোর দুলাভাই একটা খবিশ, হারা*, জানো**।
মিরা তেতে উঠে বললো।

অনিকেত ওদের ভেতরকার কথা শুনে বললো,
-এই তোরা থাম। এখন কিন্তু ক্লাস ফাঁকি দেওয়ার পুরো মজাটাই নষ্ট হয়ে যাবে পরিবেশ ভারী করলে। তিল একটা গান ধর।

-হ্যাঁ রে তিল। আজকে একটা গান গা।

তিলো প্রথমে না চাইলেও ওদের জোরাজোরিতে রাজি হয়ে গেলো। ততক্ষণে ফিরোজও ফিরে এসেছে। অনিকেত গিটার বাজাচ্ছে আর তিলো গান গাচ্ছে, এরপর ওরাও একসাথে গলা মেলালো,

আকাশ এতো মেঘলা যেও নাকো একলা
এখনি নামবে অন্ধকার

ঝড়ের জল-তরঙ্গে নাচবে নটি রঙ্গে
ভয় আছে পথ হারাবার (×২)

গল্প করার এই তো দিন
মেঘ কালো হোক মন রঙিন (×২)

সময় দিয়ে হৃদয়টাকে বাঁধবো নাকো আর
…………………………………………….

তিলো বাড়ি ফিরে দেখতে পায়, নাসিরা পারভীন তুলিকে খুব যত্ন করে দুপুরের খাবার খাওয়াচ্ছেন। মাঝে মাঝে মমতা মাখা গলায়, হা হুতাশের শব্দ করছেন। সাথে ইমনকে মনপ্রাণ খুলে গালাগাল করছেন।
‘আহারে, সোনাটা আমার কতোটা শুকিয়ে গিয়েছে। ওই শয়তানটা তোর কি হাল করেছে! আমাদেরই ভুল তোকে ওমন একটা হারা* হাতে তুলে দেওয়া। ……
ইত্যাদি, ইত্যাদি।

তিলো দীর্ঘ একটা নিশ্বাস ফেললো। আসলেই মানবমস্তি্স্ক বড়ই অদ্ভুত! ঘটনা কিছুটা এমন, যেমন-
ছেলেমেয়ে পরীক্ষায় আশাতীত ফলাফল করতে না পারায় বাড়িতে বকাবকি করা হয়েছে। এরপর সে দুএকদিন জেদ করে না খেয়ে, নিজের গাফিলতির জন্য অনুতপ্ত হয়ে এবং ভবিষ্যতে আরো সতর্ক থাকার প্রত্যাশা দেওয়ায় বাবা মা যেমন এই দুএকদিনের আদরের অভাব পূরণ করতে একটু বেশি আহ্লাদী হয়ে পড়েন, কিছুটা তেমন হয়েছে তুলির ক্ষেত্রে আচরণটা। এরপর সেই সন্তানের পূনরায় গাফিলতিতে মাঝে মাঝেই এই কথা তুলে বকাঝকা বা খোঁটা দেওয়া হয়, তিলো নিশ্চিত তুলির ক্ষেত্রেও তেমনি ঘটবে।

তিলো নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে এসে বসলো। বাইরে বৃষ্টি নেমেছে। নাসিরা পারভীন ওকে খেতে দিতে দিতে বললেন,
-তিল, তোমার বোন আবারও পড়াশোনা শুরু করবে। ইশানকে আমি সামলে নেবো। তোমার কলেজেই ওর এডমিশনের জন্য আবেদন করি। তুমি কি বলো?

তিলো যেন এই কথারই প্রত্যাশায় ছিলো। হাসি মুখে বললো,
-আমার মতামত নেওয়ার কি আছে। বাবাকে ব্যবস্থা করতে বলো। ওহ, অরিক ভাইয়া কিন্তু আমাদের ভার্সিটিতেই জয়েন করেছে। তুমি তাকেও বলতে পারো।

-অরিক তোমার ভার্সিটিতে?

-তেমনই তো বললাম।

নাসিরা পারভীন আর কথা বাড়ালেন না। তিলোকে খাবার গুছিয়ে দিয়ে তুলির রুমে চলে আসলেন। তুষার কোচিং এ থাকে এইসময়। আর আনিস সাহেব অফিসে থাকেন।

পরদিন কলেজে এসে সেই সিনিয়র দলটাকে ওরা আর দেখতে পেলোনা। কলেজ চলাকালীন সময়েই খবর ভেসে বেড়াচ্ছে, ওই বেপরোয়া ছেলেটাকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে আর বাকিদের কয়েকদিনের জন্য কলেজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। সাথে কিছু জরিমানাও হয়েছে। এতে অনেকেই খুশি হয়েছে।

রিয়া আজকেও প্রথম থেকে ক্লাস করেনি। ওরা আজও ক্লাস ফাঁকি দিয়ে সেই গাছের তলায় বসেছে। তিলো মাঝে মাঝে ভাবে, ভার্সিটিতে ওরা কেন আসে? ক্লাস বাদ দিয়ে আড্ডাই যেন বেশি চলে। পড়াশোনার যে কি হবে! একেকজনের থেকে নোট ধার করেই ওদের চলে। মাঝে মাঝে ওদের ভেতর একেকজন ক্লাস করে সবাইকে পরে বুঝিয়ে দেয়। বন্ধুত্ব এতো সুন্দর কেন? তিলো শুধুই ভাবে।
ওদের আড্ডার মাঝেই রিয়া উপস্থিত হয়ে আচমকা আহানকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আহান অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে। সবার সামনে এটা ও আশা করেনি। রিয়া ফুপিয়ে কেঁদে দিয়ে বললো,
-আহান, আব্বু আমাদের ব্যাপারে সব জেনে গিয়েছে। আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।

রিয়ার কথায় আহান চমকে উঠলো। আর বাকিরাও বেশ অবাক হয়ে গেলো।

#চলবে

**আগামী দুদিন গল্প দিতে পারবোনা। এজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here