#ভ্রমণ
#পর্বঃ৩
লিখাঃসামিয়া খান
মেরুন রঙের একটা শার্ট এবং গ্রে ড্যানিম প্যান্ট পরিধান করে এক হাতে স্কচ ভর্তি গ্লাস নিয়ে অন্য হাত কপালে ঠেকিয়ে আরাম ভঙিতে কাউচে বসে রয়েছেন ইয়াদ।পায়ের উপর পা তুলে।এবং ডান পা একটু একটু করে দুলাচ্ছেন।বিছানায় বসে তা গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখছেন তরু।পরণের বস্ত্র খানিকটা অস্থিতিশীল তরুর।কারণ কিছুসময় আগে ইয়াদ আর সে শারীরিক খেলায় মত্ত্ব ছিলেন।তরুর বয়স ত্রিশের কোঠায়।কিন্তু তাকে দেখে কখনো তা মনে হয়না।যেমন সুশ্রী দেখতে তেমন গুণবতী।দেখতে কিছুটা টলিউড অভিনেত্রী পাওলির মতো।ইয়াদের ডান হাত বলতে গেলে তরুলতা সেন।তার সমস্ত কাজ এবং লিগ্যাল এডভাইজার হিসেবে বেশ কাছের মানুষ তরু।বিছানা থেকে এক দৃষ্টিতে ইয়াদের দিকে দৃষ্টিপাত করে রেখেছেন তরু।চুলে নিজের ডান হাতের অঙুলি প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে বললেন–
“ইয়াদ!আপনি কি জানেন আপনি দিন দিন সুন্দর থেকে সুন্দরতর হচ্ছেন?”
তরুর কথা শুনে মুচকি হাসলেন ইয়াদ।
“নতুন কিছু বলেন তরু।এটা পুরোনো কথা।”
শাড়ীর আঁচল কাঁধে ভালো করে টেনে নিলেন তরু।স্লিভলেস ব্লাউজ হওয়ায় খুব বেশী শালীনতা বজায় থাকলো না।
“উফ!আমি যদি মুসলমান হতাম অবশ্যই আপনাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতাম ইয়াদ স্যার।”
কপাল থেকে হাত সরালেন ইয়াদ।গম্ভীর ভাব মুখে।এক চুমুকে পুরো স্কচ শেষ করে ফেললেন সে।
“তরু!আপনি কালকের আগের দিন রাতে কোথায় ছিলেন?”
“কেন?”
“আমি প্রশ্ন করেছি তরু।তার জবাব প্রদান করেন।
ইয়াদের বজ্রকন্ঠে একটু বিচলিত হলেন তরু।
“আমি তো নিজের বাসায় ছিলাম ইয়াদ।”
“মিথ্যা!”
“আরে না। আমি নিজের বাসায় ছিলাম।আপনি এসব কেন জিজ্ঞেস করছেন?”
“আমার কাছে এক খবর এসেছে।আপনি নাকী তাওয়াফ খানের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন?”
ভূত দেখার মতো চমকে উঠলেন তরু।এ ব্যাপারে ইয়াদ জানার কথা নয়। কারণ ইয়াদের ডান হাতই হচ্ছেন সে।এ সমস্ত সকল খবর ইয়াদকে সে নিজে জানাতো।অন্য কারো উপর ইয়াদ তো নির্ভর নয়।
“এটা ভুল ইয়াদ।একদম ভুল।”
ইয়াদ আর কোন জবাব দিলেন না।কাউচ থেকে উঠে ধীরে ধাীরে বিছানার দিকে এগিয়ে আসলেন।তরুর চোখমুখে বেশ ভয় দেখা যাচ্ছে কারণ সে ইয়াদের এ দৃষ্টি সম্পর্কে অবগত।তরুর কাছে এসে তার পাশে বসলেন ইয়াদ।ডান হাত গালে ঠেকিয়ে দিলেন তরুর।
“সঠিক বা ভুল তার বিচার করার আমরা কেউ না তরুলতা।এই দেখেন আপনার বয়স কিন্তু আমার থেকে অনেক বেশী।তাহলে আপনার সাথে শারীরিক খেলায় মত্ত্ব হওয়া কি ঠিক?এটা ভুল।কিন্তু তবুও আপনার থেকে আমি সজীবতার গন্ধ পাই।আপনাকে আমি সেজন্য দুবছর ধরে নিজের কাছে রেখেছিলাম।কি দেয়নি আপনাকে তা বলেন? শারীরিক, আর্থিক সমস্ত প্লেজার।আপনাকে সবসময় আমার মনে হতো টালিউড নায়িকা পাওলির মতো।এজন্য তার মতো করেই সাজসজ্জা করে থাকেন।কী সুন্দর লাগে আপনাকে।মনে হয় সারা সময় বুকের ভেতর ভরে রাখি।”
কথাগুলো বলে তরুর মাথা নিজের বুকে টেনে নিলেন ইয়াদ।এক হাত দিয়ে মাথায় হাত বুলাচ্ছে।আর অন্য হাত দিয়ে পকেট থেকে গ্লাভস বের করে তা হাতে পড়ছেন।
“নোহ ইয়াদ। নোহ।”
তরু এটা বলছে এবং ইয়াদের হাতে ধাক্কা দিচ্ছে।তার থেকে নিজেকে সরানোর চেষ্টায় রয়েছে।কিন্তু ইয়াদ এমনভাবে ধরেছে যে পেরে উঠতে পারছেনা।
“আই লাভ মাই তরুলতা।কিন্তু দুঃখিত আমি সহজে কাউকে মাফ করিনা।”
ধাক্কা দিয়ে তরুকে বিছানায় ফেলে দিলেন ইয়াদ।তার উপর উঠে তার দুহাতকে নিজের হাঁটু সন্ধি দ্বারা চেপে ধরলো।কোনোভাবে তরু নড়তে পারছেনা।চিৎকার করতে যাবে তখন ইয়াদ তার মুখ চেপে ধরলো এক হাত দিয়ে এবং অন্য হাত দিয়ে গলা।অতি সন্তপর্ণে ধীরে ধীরে তরুর ঘাড়ের এক রক্তনালীতে চাপ দিলেন। এতে অবশ হয়ে আসলেন তরুর শরীর।বাকীটা গলায় চেপে ধরাতেই হলো। তরু শুধু শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার আগে দেখলেন তার প্রাণ হরণকারী সেই ব্যক্তির মুখ যার সাথে একটু আগে দৈহিক সুখে ছিলেন।কাঁটা মুরগীর মতো ছটপট করছে সে।
“তরু তোমার প্রিয় সংখ্যা তের ছিল তাই নাহ?তুমি আনলাকি থার্টিন কে লাকি থার্টিন বলতে।দেখো আমার তের তম মার্ডার হচ্ছো তুমি।দারুণ না?”
তরুর কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারলো না।তার আগেই তার প্রাণ প্রদীপ শেষ হয়ে গেলো।
তরুর মৃত্যু ঘটেছে তা নিশ্চিত হয়ে তার থেকে উঠে আসলেন ইয়াদ।এখনও তরুর চোখগুলো খোলা।যেখানে এখনও ইয়াদের জন্য ভয় বিদ্যমান।
“তোমাকে প্রচুর মিস করবো তরুলতা!অনেক। বিশেষ করে বিছানায়।”
আধখাওয়া স্কচ গ্লাসটকে বাথরুমে ফ্ল্যাশ করে দিলেন ইয়াদ।ময়লার ঝুঁড়িতে পড়ে থাকা কন্ডোমও তার সাথে দিয়ে ফ্ল্যাশ করে দিলেন।আস্তে করে দরজার নব ঘুরিয়ে বাহির হয়ে পড়লেন।গাড়ীতে ঢুকে প্রথমে গ্লালভস খুললেন তারপর হাতের তালু থেকে প্লাস্টিকের কাগজ।জুতার নিচ থেকেও খুললেন।ফ্রন্ট মিরর থেকে নিজের উস্কোখুস্কো চুলগুলো ঠিক করে নিলেন।মিরর সরিয়ে ফেসবুকে ঢুকলেন।সাইরাহ্ ম্যাসেজ করেছেন।
“আপনি কি খেতে পছন্দ করেন ইয়াদ স্যার?”
“রক্ত।”
সাথে সাথে ও পাশ থেকে জবাব আসলো।
“আমি মজা করছিনা।”
“আমিও না।”
“উহু!বলেন।ভাইয়া বলেছে জিজ্ঞেস করতে।”
ইয়াদের এতে বেশ বিরক্ত লাগলো।আজ তারেক তার রুমে এসেছিলেন। তখন ইয়াদ সাইরাহকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন।সে থেকে তারেক মনে হয় পারলে দশবার কল করেন।
“আমার কিছুই পছন্দ না সাইরাহ্।আমি এমনি দেখা করতে আসবো আপনার সাথে।শুধু আপনার হাতের এক গ্লাস ঠান্ডা ঠান্ডা পানি খাবো।আর কিছুনা।”
“উহু!তা হয় নাকী?”
“হয়তো।কেবল একটা প্রাণ নিয়ে আসলাম।আপনার থেকেই তো এখন এনার্জি নিবো।”
“প্রাণ মানে?আর কেন আমি কি এনার্জি বালব? ”
“নাহ!আমার ভবিষ্যত আপনি।”
চলবে,,
#ছবিয়াল_আয়াত
লিংক কমেন্টে।আর কালকে বড় করে দেবো।