ভালোবাসি_প্রিয়
পর্ব_৩০
#সুলতানা_সিমা
লারার কথা শুনে অরিন আঁতকে উঠল। এসব কী বলছে লারা তাহলে সে লুপার মাকে খুন করে দিবে? এমনটা হলে তো লুপা এতিম হয়ে যাবে, মা ছাড়া বেঁচে থাকার স্বাদ কতটা তেতো হয় এটা অরিন জানে, সে কিছুতেই চায়না লুপা এতিম হোক। অরিন কিঞ্চিৎ গলা উঁচিয়ে লারাকে বলল”
_আপু মিহান ভাই কিভাবে খুন হয়েছে সেটা পুরোপুরি ভাবে না জেনে তুমি উনার গায়ের ফুলের টুকাও দিবানা।” অরিনের কথা লারা কিঞ্চিৎ কপাল কুঁচকে তাকাল। তারপর ঠোঁটে বিদ্রুপের হাসি নিয়ে বলল”
_তুমি খুব বোকা অরিন। তবে হ্যাঁ তোমার কথাই থাকল আমি আগে মিহানের মিত্যুর আসল কারণ জানবো। আপাতত এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার এই মুখোশধারী উনি নাকি অন্য কেউ, তবে তার আগে তোমার সাহায্য লাগবে।
_আমার সাহায্য?
_হুম তোমার সাহায্য। তুমি শুধু আমাকে বলেছ এই বাড়িতে আসার কারণ, বিয়ে করার কারণটা এখনো জানাওনি। যদি তুমি সবটা না জানাও তাহলে আমি কিভাবে সব আন্দাজ করব।” লারার কথাটা অরিনের কাছে ঠিক মনে হলো আসলে লারাকে সব না জানালে কীভাবে সে এই খেলাড়ীর হিসাব মিলাবে।
_আমার সৎ বোন তানভী, ও সৎ হলেও কখনো আমি তাকে সৎ ভাবিনি। সব সময় মায়ের পেটের বোনের চোখে দেখেছি। আমি জানতাম ও প্রেম করে কার সাথে করে ছেলে কেমন তা জানতাম না। আর জানলেও আমি কিছু করতে পারতাম না কারণ ওদের নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার নেই। কিন্তু ভালোবাসার অধিকার তো আছে। আমি চাইলেও ওদের সৎ ভাবতে পারিনা। একদিন হঠাৎ করে আমার হোয়াটসঅ্যাপে একটা ভিডিও আসে,ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায় তানভী একটা ছেলের সাথে অন্তরঙ্গ মেলামেশা করছে। আমি তানভীকে দেখাই ভিডিওটা, তানভী আমার হাতে পায়ে ধরে কান্না করে বলে আমি যেন এসব মাকে না দেখাই আর একটা কিছু করি। যতই হোক তানভীর শরীরে আমার বাবার রক্ত বইছে। ওর সম্মান মানে তো আমারও সম্মান। ভিডিওটা কোনোভাবে ছড়িয়ে পরলে আবার মৃত বাবার নামে মানুষ নানা কথা বলবে। হোক আমার বাবা খুনি সন্ত্রাসী কিন্তু সে আমার বাবা তো। আমি ওই নাম্বারে কল দেই একটা মেয়েলী গলা ভেসে আসে। ফোনের ওপাশ থেকে বলে দেখা করতে আমি দেখা করি, দেখা করার পরে আমাকে দিহানের একটা ছবি দিয়ে বলে আমি যেন একে বিয়ে করে শুধু কাবিননামাটা এনে দেই আর কিছু না। আমার মামাতো বোন মহীনি আপুকে ফোন দিয়ে সবটা জানাই আপু আমায় নিষেধ করে এমনটা করতে। কিন্তু আমি শুনিনি ভাবলাম এইটুকুই তো এর তো বেশি কিছুনা তাহলে করেই নেই। তারপর ওইদিনই আমি দিহানকে ফলো করি। দিহানের কথার জালে তাকে ফাঁসিয়ে তাকে বিয়ে করি। বিয়ের পরে জানতে পারি সে লুপার ভাই। দিহানের সাথে আমার একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমি বুঝতে পারলাম এভাবে এগুনো আমার ঠিক হচ্ছেনা আমি ব্ল্যাকমেইলারকে বললাম আমি আর এসব করতে পারবো না। সে আমাকে আমার আর দিহানের ভিডিও দেখিয়ে হুমকি দেয় আমি তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে চললে সে এই ভিডিও আমার পরিবারের মানুষদের দেখিয়ে দিয়ে বলবে আমি কলেজের নাম করে বাইরে পুরুষ নিয়ে ঘুরি। আমি ভয় পেয়ে যাই কারণ এটা মা দেখলে আমায় বিয়ে দিয়ে দিত আমার লেখাপড়া,স্বপ্ন সব শেষ হয়ে যেত। তারপর ও আমায় একটা কাগজ দেয় কাগজটায় লেখা দিহান চাইলেও আগামী তিন বছরে আমায় ডিভোর্স দিতে পারবে না। আমি কাগজটায় দিহানের সাইন নেই। কিছুদিন পরে আবার এসে বলে আমি যেন এই বাড়িতে এসে আমার অধিকার চাই আমি না বলি না বলার কারণে আমাকে অনেক টর্চার করে। তারপর দিহানকে খুন করে দিবে বলে হুমকি দেয়। ”
এইটুকু বলে কেঁদে দেয় অরিন। লারা বুক ছিড়ে আসা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে অরিনের চোখের পানিটা মুছে দিয়ে বলল”
_ভালোবাসো দিহানকে?” অরিন ছলছল চোখে লারার চোখের দিকে তাকিয়ে উপর নিচ মাথা নাড়ায়। সত্যিই সে অনেক ভালোবেসে ফেলেছে দিহানকে। আজকাল দিহান চোখের আড়াল হলে তার মনে হয় এই বুঝি সে দিহানকে হারিয়ে ফেলল। দিহানকে ছাড়া তার সবকিছু শূন্য হয়ে যায়। লারা অরিনকে জড়িয়ে ধরে বলল।
_কেঁদনা অরিন, সব ঠিক হয়ে যাবে। তোমায় বলতে ভুলে গেছি, বাবাকে ওই কালপ্রিট ছেড়ে দিয়েছে।” অরিন লারাকে ছেড়ে লারার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল”
_সত্যি?
_হুম। কিন্তু বাবা আমাকে ভুল বুঝতেছে অরিন। তোমাকে সব কিছু পরে বলবো। এখন যাও নিচে যাও। আমি একটু পরে আসছি।” অরিন দাঁড়িয়ে থাকল। লারা বলল” কী হলো যাও।”
অরিন চলে আসলো। কিন্তু তার ভয় হচ্ছে লারা যদি সত্যি সত্যি লুপার মাকে মেরে দেয়। অরিনের সব থেকে বেশি ভয় হচ্ছে দিহানকে নিয়ে। যদি কোনোদিন দিহানকে হারিয়ে ফেলে। ভালোবাসা যত গভীর হয় হারানোর ভয় ততই তীব্র হয়। তাই হয়তো এই ভয়টা আজকাল তাকে ভালো থাকতে দেয়না। অরিন রুমে এসে দেখল দিহান ফোনে কার সাথে কথা বলছে। কথা বলছে বললে ভুল হবে গালাগালি করছে। দিহানের এই স্বভাবটা অরিনের খারাপ লাগে। এমনি রাগ করেনা হঠাৎ রেগে গেলে অশিক্ষিতদের মতো হয়ে যায়। খারাপ ভাষায় কথা বলে। অরিনকে দেখে দিহান ফোন কেটে দেয়। অরিন দিহানকে বলে”
_কার সাথে কথা বললেন?” দিহান চুপ থাকল কিছু বলল না। রাগে দিহান ফোঁস ফোঁস করছে। দিহানকে দেখে অরিন কিঞ্চিৎ ভয় পেয়ে যায় তাই সে চুপচাপ পাশে বসে থাকে। কিছুক্ষণ পরে দিহান শুয়ে পড়ে। তারপর টান দিয়ে অরিনকে বুকের উপর ফেলে দিল। অরিন নিজেকে ছাড়াতে ছটফট করে বলল”
_আরে দরজা খোলা কী করছেন ছাড়ুন।” দিহান অরিনকে দু’হাতের বেড়িতে বেঁধে নিয়ে বলল”
_স্বামী রাগ থাকলে বউরা আদর করে রাগ ভাঙ্গায়,কেমন বউ গো তুমি স্বামীর রাগ না ভাঙ্গিয়ে চুপ থাকছো?
_স্বামী রেগে গেলে চুপ থাকতে হয় এটাই আমি জানি। [একটু থেমে] কে ফোন দিছে বলুন না প্লিজ।
_তন্দ্রা।” অরিনের মুখটা কালো হয়ে গেল। দিহান অরিনের থুতনি ধরে মুখটা তোলে বলল” মন খারাপ করো কেন? আমাদের পবিত্র সম্পর্ক এখানে কারো বাধা কাজ করবে না। তন্দ্রা কেন,একমাত্র উপরওয়ালা ছাড়া কারোরই শক্তি নেই আমার থেকে তোমাকে আলাদা করার। তুমি ভেবনা কখনো তোমাকে ছেড়ে দিব। আমার সর্বোচ্ছ দিয়ে আমি তোমাকে আগলে রাখবো।
_কখনো যদি জানতে পারেন আমি খুব খারাপ তখনও ছেড়ে দিবেন না?
_কলিজাকে ছেড়ে দিলে বুঝি মানুষ বাঁচতে পারে?” অরিনের মুখটা এখনো কালো। দিহান অরিনকে আদুরে গলায় বলল” বউটার মন খারাপ কেন? স্বামীর যে খুব খারাপ লাগছে তা কী বুঝেনা বউ?”
_আপনার আম্মু কী কোনোদিন আমায় মেনে নিবেন। আমার খুব খারাপ লাগে যখন উনি বলেন আমি আপনার যোগ্য নই উনি আমায় মানবেন না।
_মেনে নিবে, আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের ঘর আলো করে একটা বেবি আসুক দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছে। আম্মু কিন্তু বেবি খুব পছন্দ করে।” দিহান অরিনকে ঘুরিয়ে খাটের মাঝামাঝি শুয়ে দিয়ে তার নাকে অরিনের নাক ছুঁয়ে বলল”
_একটু আদর করি?
_উঁহু।
_প্লিজজজজজজ।
_দেখুন আমার কাজ আছে ছাড়ুন আমায়।
_যদি না ছাড়ি?” বলতে বলতে দিহান অরিনের দিকে একটু ঝুঁকে পড়ে। অরিন কিঞ্চিৎ ধমক দিয়ে বলে।
_পাগল নাকি দরজা খোলা দেখছেন না?” দিহান ওঠে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আসে। তবুও শুনেনা অরিনের কথা। শুনবে কী করে অরিন নামক নেশা যে তাকে সব সময় মাতাল করে রাখে।
______________
আজকাল লুপা কেমন জানি মন মরা হয়ে থাকে। সব সময় নিজের ঘরে বন্ধি হয়ে থাকে। সায়রা প্রথমে ভেবেছিলেন বাড়ির ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে হয়তো কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছে। কিন্তু না এখন তার মাঝে আরো বেশি পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। মেয়ের রুমে এসে ঢুকলেন সায়রা,দরজা খোলা ছিলো। রুমটা ঘুটঘুটে অন্ধকার,সায়রা লাইট জ্বালালেন। লুপা মূর্তির মতো ফ্লোরে বসে আছে। সায়রা তড়িঘড়ি করে মেয়ের পাশে বসলেন, ব্যথিত গলায় জিজ্ঞেস করলেন”
_লুপা কী হয়েছে রে মা তোর। এভাবে বসে আছিস কেন? আম্মুকে বল।” লুপা রক্তলাল চোখে মায়ের দিকে তাকালো। কাঁদতে কাঁদতে চোখ লাল হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে চোখ থেকে জল নয় রক্ত ঝরে পরবে। চোখের চারপাশ ফুলে আছে। ঠোঁট শুষ্ক হয়ে আছে। লুপা তার মাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। বুকের ভেতর দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে তার। সায়রা ঘাবড়ে গেলেন মেয়ের এমন কান্ডে। মেয়ের মুখ তুলে ধরে চোখের পানি মুছে জিজ্ঞেস করলেন। ”
_কীরে কী হয়েছে আমায় বল। কেন কাঁদছিস তুই। আম্মুকে বল? কী হইছে তোর বল মা?
_আ আ আম্মু আমাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দাও আম্মু প্লিজ।” কাঁদতে কাঁদতে বলল লুপা। সায়রা বুঝতে পারছেন না হঠাৎ মেয়েটার হলো কী। সেদিন শাড়ী পরে সেজেগুজে বাইরে বের হলো। সেই থেকে এসে যে মেয়েটা মন মরা হয়ে থাকে, না ভালো ভাবে খায় না কারও সামনে যায়। আচ্ছা এমন তো নয় লুপা কোনো ছেলেকে ভালোবাসে ওইদিন ওই ছেলের সাথে দেখা করতে গেছিলো। ভাবতেই ভেতরটা ধুক করে ওঠে সায়রার। লুপার মাথায় হাত বুলিয়ে মোলায়েম গলায় বললেন”
_কাউকে ভালোবাসিস?” লুপা ভেজা চোখে মায়ের দিকে তাকালো। তারপর ঝটপট চোখের পানিটা মুছে না সম্মতি মাথা নাড়িয়ে বলল”
_না বাসিনা ভালো। তুমি আমাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দাও আম্মু প্লিজ। আব্বুর সাথে কথা বলো আম্মু প্লিজ আমাকে তুমি বাঁচতে দাও আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
_কী হইছে বলনা রে মা।
_আম্মু প্লিজ যাও আমি একা থাকতে চাই।” সায়রা চৌধুরী আর কথা বাড়ালেন না চলে গেলেন রুম থেকে। একেরপর এক সন্তান হারিয়ে এই দুই সন্তানকে নিয়ে বেঁচে আছেন তিনি। দুটো বাচ্চা ছোট বেলায় মারা গেছে। তাদের ভুলে যেতে পারলেও মিহানকে ভুলতে পারেন না। মিহানের মৃত্যুর কষ্ট টা লুপা আর রুহানের দিকে চেয়ে ভুলে যান তিনি। আর এই দুই সন্তান যদি ভালো না থাকে তিনি নিজেই বা কীভাবে ভালো থাকবেন। সারাদিন মুখে প্লাস্টিকের হাসি নিয়ে ঘুরলেও একমাত্র রাতের আকাশের চাঁদ আর মাথার নিচের বালিশ জানে, উনি আসলে কতটা কষ্টে থাকেন। সারাটা রাত পার করেন অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে। রাত পোহালে আবার শুরু করেন ভালো থাকার অভিনয়।
_________________
নীল ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে দেখল শামু তার বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পা উপরে তুলে দুলাচ্ছে আর একটা বইয়ের পৃষ্টা ওলট-পালট করছে। নীল কিঞ্চিৎ কপাল কুঁচকে ফেলে। শামু খুব ছোট একটা স্কার্ট পরে আছে। উরু পর্যন্ত উন্মুক্ত হয়ে আছে। উপুড় হয়ে শুয়ায় বুকের অর্ধেক উন্মুক্ত হয়ে আছে। নীলের ইচ্ছে করছে শামুকে কড়া কয়েকটা কথা শুনাতে। এভাবে নিজের দেহ দেখিয়ে দেখিয়ে হাঁটার মানেটা কী সে বুঝেনা। মুসলিমের ঘরে জন্ম নিয়ে এভাবে চলাফেরা করে, নীলের তা একদমই ভালো লাগেনা। আপাতত নীল নিজের রাগ দমিয়ে চুল মুছতে মুছতে শামুকে বলল”
_কী ব্যাপার শামু আমার রুমে যে,কোনো দরকারে এসেছো?” শামু ওঠে বসে বলল”
_হুম। আমি একটু শপিংয়ে যাবো।
_তো যাও আমাকে বলছো কেন?
_তোমাকে নিয়ে যাবো।
_তুমি আম্মুকে নিয়ে যাও। আমার কাজ আছে। এখন যাও।” শামুর মুখে অন্ধকার নেমে আসলো। নীল এসবে পাত্তা দিলোনা। শামু চলে যেতে লাগলো দরজার সামনে থেকে আবার ফিরে এসে বলল”
_আচ্ছা তোমার ফোনে চাশমিজ নামে কার নাম্বার সেভ করা।” নীলের বুকটা ধুক করে ওঠল। চাশমিজ নামে সে লুপার নাম্বার সেভ করে রাখছে। নীল কিছুটা বিচলিত হয়ে বলল”
_কেন কী হয়েছে?” শামু দুহাত সামনে বেঁধে বলল”
_কল দিয়েছিল। দুই-তিনটা দেওয়ার পরে ভাবলাম ধরে বলে দেই তুমি শাওয়ার নিচ্ছো। ওমা আমি হ্যালো বলার সাথে সাথে আমাকে বলে,এই মেয়ে কে তুমি? তোমার কাছে এই ফোন কেন?
_ওকে যাও তুমি।
_আমি কী উত্তর দিছি জান?
_কী?
_আমি নীলের বউ কাল আমাদের বিয়ে হয়েছে ফুলসজ্জা হয়েছে এখন নীল শাওয়ার নিচ্ছে।”
শামুর কথা বলা শেষ হওয়ার সাথে সাথে নীল শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে শামুর গালে একটা থাপ্পড় দিল। শামুর এই সীমাহীন বাড়াবাড়ি তার একদমই সয্য হয়নি। শামু গালে হাত দিয়ে ছলছল চোখে নীলের দিকে তাকাল। দিল রক্তিম চোখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। রাগে শরীর কাঁপছে তার। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে চেঁচিয়ে বলে ওঠল”
_তুমি জান তুমি কার কাছে কী বলেছো?” দাঁতে দাঁত চেপে মাথা চেপে ধরল। নিজেকে কিছুটা স্বাভাবিক করে বলল” গেট আউট। ” শামু দাঁড়িয়ে থাকল নীল চেঁচিয়ে বলল” কথা কানে যায়না।” শামু চোখের পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
নীল নিজে নিজের চুল টেনে ধরলো। রাগে ইচ্ছে করছে শামুকে খুন করে ফেলতে। হাতের টাওয়েলটা ছুঁড়ে ফেলে ফোন নিয়ে লুপার নাম্বারে ডায়েল করল। লুপার ফোন বন্ধ দেখাচ্ছে। নীল রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে জামা কাপড় পরে বেরিয়ে গেল বাসা থেকে। শাওনকে ফোন দিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে আসতে বলল শাওনের সাথে তার ব্যাপারটা শেয়ার করবে। লুপাকে সে ভালোবাসে কিন্তু লুপার উপর জমে থাকা অভিমান লুপা দিহানের বোন সব বাধা থাকে এগুতে দেয়না। শাওনের সাথে শেয়ার করলে হয়তো শাওন তাকে কোনো বুদ্ধি দিবে। লুপাকে ছাড়া যে সে থাকতে পারবে না এটা সে বুঝে গেছে। তার জীবনে ভালো থাকতে হলে লুপার বড্ড প্রয়োজন।
শাওন তড়িঘড়ি করে বাইরে বের হচ্ছে দেখে তার মা তাকে জিজ্ঞেস করলেন”
_কিরে কই যাস?
_নীল ফোন দিছে আম্মু আমি যাচ্ছি আর আসছি।
_হুম তাড়াতাড়ি আসবি।” শাওন বাসা থেকে বেরিয়ে বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দিলো। লুপাকে প্রপোজ করার জন্য অনেক গুলা প্ল্যান করেছে। আজ সে নীলের সাথে সব শেয়ার করবে নীল যেটা বেস্ট বলবে সে ভাবেই লুপাকে প্রপোজ করবে।
চলবে…….।
আমি জানি অনেকে প্রচুর বিরক্ত হচ্ছেন। রেসপন্স কমে যাচ্ছে কেন? কিন্তু আমি কী করবো বলুন প্রতিদিন চাই রহস্য খোলে দিব বাট পারিনা। আপনারা বিরক্ত হলে সরি। আগামী তিন-চার পর্বে ইনশাআল্লাহ সব খোলাসা হয়ে যাবে?