#ভালোবাসি_প্রিয়
পর্ব_২৬
#সুলতানা_সিমা
যে বাড়িতে কখনো তর্কাতর্কিই হতনা, সে বাড়িতে এখন গালাগালি,মারামারি পর্যন্ত নেমে গেছে। স্বপ্নের মতো সুন্দর ছিল এই পরিবার। দিহানের দাদা স্বর্গের সুখ খুঁজে পেতেন এই বাড়িতে, তাই এই বাড়ির নাম দিয়েছিলেন শান্তি নীড়। ঝগড়া বিবাদ কী সেটা এই বাড়িতে থাকা সন্তানরা কখনো সামনে থেকে দেখেনি। ছোট থেকে বড় হয়েছে সুখের রাজ্যে। দিহানের মা চাচিরা তাদের সন্তানদের যেভাবে আদর করতেন তা দেখে বাইরের মানুষজন অবাক হয়ে যেতেন, কে কার সন্তান তা বুঝত না মানুষ। কতই না সুন্দর ছিল সে দিন গুলো, যে দিন গুলোতে কেউ একটা ভুল করলেও পরিবারের সবাই তাকে অপরাধী না বলে বুঝিয়ে বলতেন, কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। আর আজ? আজ সামন্য একটা বিষয় নিয়ে তাঁরা এভাবে ঝগড়া করছে। সামন্যই তো। মিহানের মৃত্যুর মতো বিষয়টা যদি সবাই চুপ করে মেনে নিতে পারে তাহলে দিহানের বিয়েটা আর কী এমন অপরাধের?
দিশা কেঁদে কেঁদে দিহানকে সব কিছু বলে দিল। সব শুনে দিহানের রাগ ওঠে গেল। তবুও সবাইকে থামাতে চাইল। দিহান অনেক চেষ্টা করেও যখন ঝগড়া থামাতে পারেনি, তখন অ্যাকোরিয়াম তোলে জোরে আছাড় মেরে ফ্লোরে ফেলল। সাথে সাথেই স্তব্ধ হয়ে গেল সবাই। অ্যাকোরিয়াম ভেঙ্গে গিয়ে তার ভেতরের পানি ভেসে গেল পুরো ফ্লোর জুড়ে। গোল্ড ফিস গুলা ফ্লোরে লাফাতে লাফাতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে লাগল। দিহান চেঁচিয়ে বলে ওঠল”
_সব সমস্যা অরিনকে নিয়ে তাইতো? ওকে ফাইন তোমাদের সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছি আমি।” দিহান বড় বড় পা ফেলে উপরে চলে গেল। ক্ষানিক পরে লাগেজ নিয়ে এসে অরিনের হাত ধরে বলল”
_চলো অরিন।” অরিন অবাক হয়ে তাকাল। দিহান তাকে বাসা থেকে বের করে দিবে? সেতো এমনিতেই চলে যেতো। লারা দৌঁড়ে এগিয়ে এসে মিনতির স্বরে বলল”
_এমন কাজ করনা দিহান। এক সাথে থাকতে গেলে ঝগড়া হবে,আবার মিল হবে। এসব কী ধরে পারবা? আমি যেমন এ বাড়ির বউ ও তেমন এই বাড়ির বউ, ওকে বের করে দিয়না প্লিজ।
_আপনি কেমনে ভাবলেন ভাবী আমি অরিনকে বাসা থেকে বের করে দিবো? আর হ্যাঁ আপনি যেমন এই বাড়ির বউ অরিনও তেমনি এই বাড়ির বউ এটা আমাকে নয়, আপনার শশুড়কে বলুন। যে বাড়িতে আমার স্ত্রীর কোনো মূল্যই থাকবে না সে বাড়িতে থাকার মতো ছেলে আমি নই। চলো অরিন।”
দিহানের মা এগিয়ে এসে বললেন। “তুই কেন এই মেয়ের জন্য বাড়ি ছাড়বি? ও যেখানে যাওয়ার যাক তুই চুপচাপ রুমে যা।” দিহান তার মাকে কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল। রাগে তার শরীর কাঁপছে। কপালের রগ ফুলে উঠছে। চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরে পরছে। অরিনের হাত ধরে টেনে নিয়ে সদর দরজার বাইরে আসল। অরিন অবাক হয়ে দিহানের দিকে তাকিয়ে আছে। দিহান তাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। দিহানের মুখে আমার স্ত্রী কথাটার মাঝে যে এতো সুখ আছে তা হয়তো না শুনলে সে জানতই না। দিহান অরিনকে নিয়ে শান্তি নীড়ের গেট পেরিয়ে এল। গাড়ি নেয়নি সে, এই বাড়ির কোনো জিনিস নিবেনা সে। যেখানে অরিনের কোনো মূল্য নাই সেখানে সে অরিনকে রাখবেনা।
★
ফোনের রিংটোন শুনে ওয়াসরুম থেকে চুল মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসলো শাওন। ফোন হাতে নিয়ে দেখল দিশা কল দিছে। শাওন ফোন কেটে দিয়ে আলমারি থেকে জামা বের করতে লাগলো। ইদানীং শাওন লুপাকে নিয়ে একটু বেশিই ভাবে। নীলের বিষয় নিয়ে লুপা রোজ একবার ফোন দেয় তাকে। নীল কই আছে? কেমন আছে? যোগাযোগ হয় কিনা? আজ কথা হইছে কিনা? প্রতিদিন ফোন দিয়ে এই কথা গুলা জানতে চায় লুপা। মেয়েটা হয়তো ভেতরে ভেতরে অপরাধবোধে ভুগছে। এদিকে শাওন রোজ রোজ লুপাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে লুপার প্রতি যেন সে দূর্বল হয়ে পরছে। দিশাকে আগে তার অনেক ভালো লাগতো সব সময় সে দিশার সাথে কথা বলার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকতো। আর আজকাল দিশা তাকে কল দেয় হোয়াটসঅ্যাপে তাকে মেসেজ দেয় কিন্তু তার রিপ্লাই করতে ইচ্ছে করেনা। তাহলে কী দিশার প্রতি তার ভালোবাসা ছিলনা ওটা শুধু ক্ষনিকের মোহ ছিল? ভেবে পায়না শাওন। জামা কাপড় বের করে সেগুলো পড়ে নিল। এরই মধ্যে দিশা আরও তিন চারবার কল দিয়ে দিল তাকে। মনে হয় সিরিয়াস কিছু। শাওন এসে ফোন ধরতেই ফোনের ওপাশ থেকে দিশার কান্না ভেসে এল। হাউমাউ করে কাঁদছে দিশা। শাওনের বুকে মুছড় দিয়ে উঠে।
_দিশা কাঁদছো কেন? কী হইছে?” দিশা কাঁদতে কাঁদতে বলল ”
_ভা ভা ভাইয়া বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে।
_কই গেছে?
_জানিনা। রাগ করে বেরিয়ে গেছে।
_কিইইইইই। রাগ করে? কার সাথে রাগ করে?” দিশা একে একে সবকিছু খুলে বলল। শাওন দিশাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল”
_ঠিক আছে আমি দেখছি কই গেছে তুমি কেঁদনা বাসার সবার খেয়াল রেখ।
শাওন ফোন রেখে দিয়ে। নীলকে ফোন দিল নীলের সাথে কথা বলে সবকিছু জানাল। নীল বলল সে আজই দেশে আসবে আর এখন যেন শাওন দিহানকে খুঁজে।
______________
In India
নীল ছাঁদ থেকে দৌঁড়ে নেমে এসে নিজের ব্যাগপত্র গুছাতে লাগল। শামু বসে বসে টিভি দেখছিল এভাবে নীলকে দৌঁড়ে আসতে দেখে সে অবাক হল। শামু হচ্ছে নীলের খালাতো বোন। শামুর মা অবশ্য নীলের আপন খালা না। নীলের মায়ের মামাতো বোন দুঃসম্পর্কের আত্মীয় হলেও নীলকে তাঁরা খুব আদরযত্ন করেছে। ইন্ডিয়ায় আসার পরে নীল যখন তাদের এখানে এসেছিল দুদিন থেকে তারপর সে একটা বাসা দেখে চলে যাবে বলে। উনারা নীলকে আর যেতে দেননি।
শামু নীলের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো। খোলা দরজার মধ্যেই ঠকঠক শব্দ করে নক করল। নীল তাকাল। ব্লাক টি-শার্ট ব্লাক জিন্স পরা শামু দাঁড়িয়ে আছে। চুল গুলা খুব সুন্দর করে মাথার উপরে বেঁধে রাখছে, ছোট ছোট চুল গুলা বেল্টের চাপে খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। যে চুলগুলো বেল্টে আটকে থাকেনি ওগুলা সব কপাল জুড়ে ছড়িয়ে আছে। শামুর টানা টানা বড় বড় চোখ গুলা অনেক সুন্দর। গুল ঠোঁট গোলাপের পাপড়ির মত দেখতে। নীল মুচকি হেসে বলল”
_আরে শামু যে আসো।” শামু এসে নীলের লাগেজ গুছানো দেখে অবাক হয়ে বলল”
_কী ব্যাপার লাগেজ গুছাচ্ছো যে?
_দেশ থেকে কল এসেছে যেতে হবে আর্জেন্ট।
_সত্যিইইইইই?” শামু এমন ভাবে উত্তেজিত হওয়ায় নীল কিঞ্চিৎ অবাক হল। মনে হয় তার চলে যাওয়া নিয়ে শামু খুব খুশি। নীল মুখে হাসির রেখা টেনে বলল”
_হুম সত্যি।” শামু এক দুই না ভেবে নীলের হাত ধরে ফেলল তারপর বলল”
_নীল ভাই প্লীজ প্লীজ প্লীজ মাম্মাকে বল তোমার সাথে আমাকেও বাংলাদেশ যেতে দিতে। আমার না খুব ইচ্ছে আমি বাংলাদেশে যাবো। প্লীজ মাম্মাকে বল। প্লীইইইইইইইজ।” নীল হেসে উঠে। শামু একদম বাচ্চা একটা মেয়ে। এইবার এইচএসসি দিয়েছে তবুও তার বাচ্চামো যায়নি। নীল বলল”
_ঠিক আছে আমি আন্টিকে বলছি। দেখি উনি কী বলেন।
_মাম্মার কোনো কথা শুনতে হবেনা তোমাকে। তুমি শুধু বলেই চলে আসবা। আমি গিয়ে রেডি হচ্ছি।” শামু নাচতে নাচতে রেডি হতে চলে গেল। নীল শামুর মাকে বলল গিয়ে উনি প্রথমে না মত করলেন। নীল বলল তার মা বলছেন নিয়ে যাওয়ার জন্য, পরে কী মনে করে যেন যেতে বললেন। মায়ের মুখে হ্যাঁ শুনে যেন শামুর খুশি আরও বেড়ে গেল। খুশিতে সে নীলকে জড়িয়ে ধরে ফেলল। নীল একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল। শামু তৎক্ষণাৎ নীলকে ছেড়ে দিয়ে লাগেজ আনতে চলে গেল উপরে।
_______________
শান্তি নীড় এখন আর শান্তি নীড় নাই। অশান্তি নীড় হয়ে গেছে। একেকজন একেক জায়গায় বসে আছে। সকালের নাস্তা তো আর করাই হয়নি এর পরে মনে হয় এক গ্লাস পানিও কেউ মুখে তুলেনি। ঘড়ির কাঁটায় পাঁচটা বাজে। কেউ এখনো কিছু খায়নি। হয়তো বিষাদের সময় গুলোতে ক্ষিধেও মরে যায়। দিহানের মা এই নিয়ে চারবার অজ্ঞান হয়েছেন। লুপার বাবার প্রেশার বেড়ে গেছে। দিহানের বড় চাচ্চুর বুকে ব্যথা বেড়ে গেছে। চোখের পলকে কী থেকে কী হয়ে গেল, কেউ কোনোদিন ভাবেও নি এমন কিছু হবে।
জিহান কপালে হাত রেখে শুয়ে আছে লারা ভয়ে ভয়ে একবার জিজ্ঞেস করেছে কিছু কী খেতে দিবে। জিহান তার দিকে রক্তিম চোখে তাকিয়েছিল। যেন এই চোখ লারাকে বলছিল “ফাজলামি কর তাইনা?” লারা ভয়ে আর কিছু বলেনি। কিন্তু তার ভেতরটা কাঁদছে জিহান এক ফোঁটা পানিও খায়নি সেটা ভেবে। লারা রুম থেকে বেরিয়ে এসে সবার রুমে একেকবার গেল, সবাই যে যার মতো আছে লারা সাহস করে কাউকে কিছু বলেনি। চলে আসে। লারা লুপার রুমে যায়,লুপা কান্না করছিল,লারাকে দেখে তাড়াতাড়ি চোখ মুছে ফেলে যেন সে বুঝাতে চায় সে ভেঙ্গে পরেনি। লারা এসে লুপার সামনে বসে। কিছুক্ষণ লুপা বা লারা কোনো কথা বলেনা,চুপচাপ থাকে দুজন। নিরবতা ভেঙ্গে লারা বলে”
_তোমার কষ্টটা আমি বুঝতে পারছি লুপা। তোমার ভাই বন্ধু পরিবার কোনোটাই আজ ভালো নেই। না আমার কোনো ভাষা আছে তোমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার। ধৈর্য ধরো লুপা সব ঠিক হয়ে যাবে।” লুপা হাঁটুতে মুখ গুঁজে কান্না করছে। তার কান্নার গতি বেড়ে যাচ্ছে শরীরের ঝাঁকুনি দেখে বুঝা যাচ্ছে। লুপা নিজেকে আটকাতে চেষ্টা করছে কিন্তু পারছেনা তার ভেতর ফেটে কান্না আসছে।
লারা আর এখানে বসে থাকতে পারল না উঠে আসল সেখান থেকে। তাঁরও কান্না পাচ্ছে খুব। এখানে থাকলে সেও কেঁদে দিবে। দরজার সামনে এসেই থেমে গেল লারা। পিছন ঘুরে তাকিয়ে ড্রেসিং টেবিলের উপরে রাখা জিনিসগুলোর দিকে তাকিয়ে তাকল। কালো রংয়ের ব্রেসলেট টার দিকে তীক্ষ্ম চোখে তাকাল। লুপা তার মতো করেই কান্না করে যাচ্ছে। লারা দ্রুত পা ফেলে নিজের রুমে আসল। গ্লাসে পানি ঢেলে ঢকঢক করে পানি খেয়ে জোরে জোরে শ্বাস ফেলতে লাগলো। এই ঠান্ডার সময়েও সে ঘেমে যাচ্ছে। চোখ বন্ধ করে লারা নিজেকে শক্ত করার চেষ্টা করলো পারল না। কী হচ্ছে এসব? লারার এখন অরিনকে প্রয়োজন বড্ড প্রয়োজন কিন্তু কিভাবে পাবে সে অরিনকে?
________________________
অরিনকে কোলে নিয়ে রাস্তার মাঝকান দিয়ে হেঁটে চলছে দিহান। অনেকদূর চলে এসেছে দিহান অরিনকে নিয়ে। সে অরিনের ছায়াও আর কাউকে দেখতে দিবেনা। একটা পাহাড় অঞ্চলে ওঠেছে তাঁরা। পাহাড়ের নিচে ছোট ছোট ঘর,সেই ঘরে জ্বলছে লাল রংয়ের বাতি, দূর থেকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। গাছে গাছে একটা করে জ্বালানো হারিকেন বাঁধা। সেই গাছের নিচে বসে দু একজন গল্প করছে। কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে গোল হয়ে বসে আছে, কেউ কেউ বা গলা ছেড়ে গান গেয়ে যাচ্ছে। আকাশে এক ফালি চাঁদ দিহানের কোলে থাকা অরিনের মনে হচ্ছে চাঁদটাও তার সাথে সাথে হেঁটে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এটা কোনো স্বপ্নের দেশ স্বপ্নের সময়। অরিন দিহানের গলা জড়িয়ে আছে এক ঘন্টা হয়ে গেল দিহান কোলে নিয়ে হাঁটছে। এই মানুষটা কী ক্লান্ত হয়না? দিহানকে অরিন বলল”
_এবার নামিয়ে দিন আমি হেঁটে যেতে পারব।
_পাকনামো না করে চুপ থাকো।
_প্লিজ নামিয়ে দিন আপনার মনে হয় হাতে ব্যথা করছে।
_তোমার মতো শুটকিকে নিয়ে আমি দৌঁড় প্রতিযোগিতা করতে পারব। বডি দেখছো আমার।
_কথায় কথায় বডি দেখান কেন? আপনার মতো বডি কী আর কারও নাই?
_আছে। কিন্তু সবাই তো আর দিহান নয়।” অরিন কিঞ্চিৎ হাসলো। সত্যিই তো সবাই কী আর দিহান হয়? দিহানের মতো একটা স্বামী পাওয়া যে ভাগ্যের ব্যাপার। দিহান নিজের সবাইকে ছেড়ে দিয়েছে শুধুমাত্র তার জন্য। এই মানুষ টাকে কখনো কষ্ট দিবেনা সে কখনোই না। ওই মুখোশধারী তাকে মেরে দিলেও সে আর দিহানকে ছেড়ে যাবেনা। প্রয়োজনে মুখোশধারীকে খুন করে দিবে সে। দিহানের কপাল থেকে একফোঁটা ঘাম এসে অরিনের নাকে পরল। এই ঠান্ডার মাঝে ঘেমে গেছে দিহান। ঘামবেই না কেন সেই কখন থেকে কোলে নিয়ে হাঁটছে। নামিয়ে দেওয়ার জন্য অরিন বলল”
_আমার না বসে বসে চাঁদ দেখতে খুব ভালো লাগে।” দিহানের পা থেমে গেল। অরিনকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বলল”
_ওকে বসো।” অরিন কিঞ্চিৎ হেসে বসে পরল। সে জানত এভাবে বললে দিহান তাকে নামিয়ে দিবে। দিহানও অরিনের পাশে বসল। কিছুক্ষণ পরে দিহান অরিনের কোলে শুয়ে পরল। অরিন অবাক হয়ে বলল”
_আরে শুয়ে পরলেন কেন?
_তুমি তোমার চাঁদ দেখো আমি আমার চাঁদ দেখি।” বলতে বলতে দিহান অরিনের সামনে আসা চুল গুলা কানে গুঁজে দিল। চাঁদের আলোয় দিহানকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগছে। ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে আছে অরিনের দিকে। অরিন লজ্জায় লাল হয়ে গেল। দিহান অরিনের একটা হাত নিয়ে নিজের মাথায় রাখল,অরিন হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। দিহান চোখ সরাচ্ছেইনা অরিনের লজ্জা বেড়েই চলছে। এভাবে তাকিয়ে থাকলে কার না লজ্জা লাগে। দিহান অরিনকে মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করল”
_পিরিয়ড শেষ? “লজ্জায় এবার অরিনের ইচ্ছে করছে মাটির নিচে ঢুকে যেতে। দিহান অরিনের গাল টিপে বলল”
_ইস লজ্জাবতীর দেখছি অনেক লজ্জা। এতো লজ্জা থাকে কই গো?” অরিন কিছু বলল না। তাঁর খুব লজ্জা লাগছে। দিহান কিঞ্চিৎ হেসে চোখ বন্ধ করে নিল। অরিনকে এতো লজ্জা দেওয়া ঠিক হবেনা। কিছুক্ষণ পরে দিহানের ফোন বেজে উঠল। অরিন বলল”
_আপনার ফোন বাজতেছে।” দিহান চোখ বন্ধ রেখে বলল”
_পকেট থেকে ফোন বের করে দাও আমার ইচ্ছে করছেনা।” অরিন ভেবেছিল দু’একটা কথা শুনাবে কিন্তু শুনিয়ও লাভ নাই দিহান হলো একরোখা। নিজে যেটা বলবে সেটাই করবে। অরিন ফোন বের করল,বের করে নাম্বারটি দেখে তার মুখটা মলিন হয়ে গেল। চোখ ছলছল হয়ে ওঠল। অদৃশ্য একটা তীর এসে তাঁর কলিজায় আঘাত করল।
চলবে…..।