ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-২২

0
539

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_Jahan
#part_22

নেশাঃ মানে

ইশানঃ আমার এইসব চাই নাহ।

নেশাঃ???

ইশানঃ আই এম সরি নেশা আমাকে তুই ক্ষমা করে দে

নেশা দুরে সরে গেল। কারন ইশান তার পায়ের সামনে বসে কথাটা বলেছে।।
(জি সব পাঠক দের মতো নেশাও ভাবছে ইশান নাটক করছে।।কিন্তু ইশান তো নাটক করছে নাহ৷ সে এইবার সত্যি বলছে)

নেশাঃ কিসব বলছেন আপনি!

ইশানঃ আমার এই সম্পত্তি চাই নাহ নেশা।।আমার কিছু চাই নাহ।।বরং তোর সাথে এতো যে সব অন্যায় করেছি তারজন্য আমি তোর কাছে ক্ষমা চাইছি।।জানি আমি যা করেছি তা ক্ষমা অযোগ্য।। কিন্তু নেশা আমার দিক দিয়ে একটু ভেবে দেখ।।ছোট বেলা থেকে আমি বাবা মার থেকে একা থেকেছি কারন তোর সাথে আমার মিলতো নাহ বলে।।তারা চাইলেই তো আমাকে বুঝিয়ে নিজেদের কাছে রাখতে পারতো।।ধীরে ধীরে হয়তো আমিও বুঝতে পারতাম।।কিন্তু তারা আমাকে দুরে সরিয়ে দেয়।।মা বাবা ছাড়া আমি একা বিদেশে কিভাবে থেকেছি তা না হয় নাই বলি।।এমন একটা দিন যেত নাহ মা বাবার কথা মনে নাহ পড়তো।।আর সব রাগ গিয়ে পরে তোর উপর।।যদিও এতে তোর কোন দোষ ছিলো নাহ।।কিন্তু সেই সময় আমাকে খারাপ ভালো বুঝানোর ও কেউ ছিলো নাহ নেশা।।নিজে যেটা ভাবতাম তাই করতাম।।সেই রাগ টা এখনো আমার রয়ে গেছিলো।।আর তাই তোর সাথে??।প্লিজ আমাকে মাফ করে দে।।আচ্ছা মাফ করতে হবে নাহ তুই বরং আমাকে শাস্তি দে।।তাহলেই হবে।

নেশা কি করনে এখন।।তার জায়গায় সে সঠিক আর ইশানের জায়গায় ইশান সঠিক।। সত্যিই তো যদি ইশানের বাবা মা ইশান কে বুঝিয়ে বলতো হয়তো প্রথম নাহ বুঝলেও ধীরে ধীরে বুঝে যেত।।কিন্তু তারা তো ইশান কে বরং নিজেদের থেকে আলাদা করে দেয়।নিজের শৈশব টা বাবা মাকে ছেড়ে কাটিয়েছে ইশান।।কিছুটা হলেও তো নেশা তার পিছনে দায়ী। কি করবে এখন নেশা তাহলে

ইশানঃ প্লিজ নেশা এইবার যাস্ট।।কথা দিচ্ছি আর কখনো তোর সাথে এমন করবো নাহ।।আর আরেকটা কথা আমার সম্পত্তি ও চাই নাহ।।আমি ভুল ছিলাম।।তুই এই সব রাখ।।আমার কিছুই চাই নাহ।।শুধু

নেশাঃ শুধু?!!!!!!

এক সপ্তাহ পর

নেশা আর নীড় একটা রিসোর্টে এসেছে।।নীড় মুলত এসেছে নেশাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বাট জানে যে নেশা রাজি হবে নাহ তাই বলেছে একটা ক্লাইন্ট আসবে এখানে।

নেশাঃ কোথায় উনি সেই কখন থেকে ওয়েট করছি আর কে আসবে কিছুঅ তো বলছেন নাহ।

নীড়ঃ ওয়েট দেখছি আমি।।

নীড় একটু দুরে গিয়ে ফোন করার ভান করে একটু পরে আবার ফিরে আসলো।

নেশাঃ??

নীড়ঃ উনি নাকি আজ আসতে পারবেন নাহ।।খুব বিজি আছে

নেশাঃ রটা কোন কথা হলো আমাদের এতোক্ষণ বসেইয়ে রেখে এখন বলছে আসতে পারবে নাহ।

নীড়ঃ বাদ দাও নাহ।

নেশাঃ ওকে তো চলুন অফিসে ফিরা যাক

নীড়ঃ আরে দাড়াও দাড়াও।। এতো দুর এসেছি যখন লাঞ্চ টা করে যাই?

নেশাঃ ?

নীড়ঃ আরে খুদা লেগেছে তো তাই বললাম।।না হলে কি তোমায় নয়ে এখানে বসে থাকতাম নাকি।।অফিসে কতো কাজ?

নেশাঃ ??

নীড়ঃ আর ভাবা ভাবি করতে হবে নাহ ভিতরে চলো।।

নেশাঃ হুহ চলুন

নেশা আর নীড় খেতে বসলো।। রিসোর্ট টার একপাশে সাজানো হচ্ছে।।হয়তো কেউ কাউকে প্রোপজ করবে তাই সাজাচ্ছে।

নীড়ঃ কি সুন্দর করে সাজাচ্ছে তাই নাহ

নেশাঃ হুম

নীড়ঃ যাকে প্রোপজ করবে সে তো এক্সেপ্ট না করে পারবেই নাহ

নেশাঃ কেন

নীড়ঃ আরে এতো সুন্দর করে সাজাচ্ছে এক্সেপ্ট নাহ করে যাবে কোথায়

নেশাঃ ?

নীড়ঃ হাসছো কেন তুমি!!

নেশাঃ ভালোবাসা কি এইসব জিনিস এর উপর ডিপেন্ড করে নাকি

নীড়ঃ এগুলার উপর একটু হলেও ডিপেন্ড করে।।কারন যদি সাজানো তে মেয়েটা ইমপ্রেস হয়ে যায় তাহলে খুশিতে এক্সেপ্ট করে দিবে

নেশাঃ তাহলে সেটা ছেলের উপর খুশি হয়ে নাহ বরং জায়গায়র উপর খুশি হয়ে এক্সেপ্ট করবে।।

নীড়ঃ ?

নেশাঃ ভালোবাসা এইসব জাকঝমকের উপর নির্ভর করে নাহ।।নির্ভর করে তার উপর যে মেয়েটাকে তার ভালোবাসার কথা বলছে।।সে যদি তার মনের সব টুকু দিয়ে মেয়েটাকে বুঝাতে পারে যে সে তাকে কতোটা ভালোবাসে তাহলেই হবে।। তার জন্য এতো সাজসজ্জার প্রয়োজন নেই।

নীড়ঃ তো তুমি বলছো তোমাকে নরমাল ভাবেই প্রোপজ করতাম?

নেশাঃ প্রোপজ করবেন মানে?

নীড়ঃ নাহ মানে যে করবে আরকি তার কথা বলছিলাম

নেশাঃ আপ….

হঠাৎ নেশার মোবাইলে একটা ফোন আসলো।

নেশাঃ এই সময়ে আম্মু ফোন দিয়েছে!

নেশাঃ হ্যালো আম্মু কি হয়েছে এই সময় ফোন দিলে

অপরপাশেঃ………..

নেশাঃ কিহহহহহ?।।আআমি আসসছি একখনি।।কোথায় ববলো

অপরপাশেঃ……………..

নেশা ফোনটা রেখে তারাহুরো করে বেরিয়ে যেতে লাগলো।

নীড়ঃ কি হয়েছে কোথায় যাচ্ছো

নেশাঃ নননীড় আমমাকে হসপিটাল যযেতে হবে।।

নীড়ঃ কার কি হয়েছে।।আর তুমি কাদছো কেন

নেশা কিছু না বলে বেরিয়ে গেল।।

নীড় ও পিছু পিছু গেল।

নীড়ঃ দাও আমি ড্রাইভ করছি।।

নেশা কিছু বললো নাহ।।

দুইজন মিলে হসপিটালে পৌছালো।

নেশা এসেই দৌড়ে রিসেপশনিস্ট এ গেল।।নীড় ও পিছে পিছে গেল।।

নেশাঃ পেসেন্ট নেম ইশান চৌধুরী।। রুম নাম্বার টা প্লিজ বলুন।

নীড়ঃ হোয়াট??

রিসেপশনিস্টঃ ওয়েট ম্যাম

রিসেপশনিস্টঃ কেবিন নাম্বার-১২।। আর উনি এখন আইসিউ তে।

নেশাঃ ওকে ধন্যবাদ।।

নেশা দৌড়ে গেল।।নীড় তো সেখানে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে।।এমনটা তো কথা ছিলো নাহ।।কাপা কাপা হাতে কাউকে ফোন দিলো।

নীড়ঃ ইইশানে এক্সিডেন্ট হয়েছে

অপরপাশে কি বললো তা শোনা গেল নাহ।।নীড় ফোনটা রেখে ধীরে ধীরে নেশার কাছে গেল।।
নেশা পাগলের মতো কাদছে তার মাকে জড়িয়ে।ইশানকে যে নেশা কতোটা ভালোবাসে তা নীড় বেস বুঝতে পারছে।।এতো কিছুর পরও কিভাবে ইশানকে ভালোবাসে নেশা।।সত্যি কি #ভালোবাসা_এমনও_হয়।।

ইশানের জন্য নীড়ের একটু খারাপ লাগলেও নেশার এই কান্নাকাটি কেন যেন নীড়ের সহ্য হচ্ছে নাহ।।।

একটু পর নীড় যাকে ফোন করলো সে হসপিটালে চলে আসলো।।তাকে দেখে নীড়ের আগে নেশা দৌড়ে আসলো।।

নেশাঃ কিভাবে এসব হলো ঈশা

(জি জি এটা আর কেউ নাহ ঈশা?।।আচ্ছা ঘটনাটা কি হয়েছে বুঝেন নাই তাই তো।।বুঝবেন বুঝবেন।।বাট রাতে।।কারন আরেকটা পার্ট দিবো রাতে।।সেটাতেই সব খুলো বলবো।।আপাদত আপনারা ভাবতে থাকুন কি হয়েছিল মাঝখানে কয়দিন।।পার্ট ছোট ইচ্ছা করেই দিছি কারন রাতে আরেকটা দিবো।।আসলে আপনাদের টেনশনে রাখতে খুব মজা লাগে আরকি?)

(আচ্ছা আরেক কথা ইশানকে কি মেরে ফেলবো???)

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here