ভালোবাসা এমনও হয় পর্ব-২১

0
531

#ভালোবাসা_এমনও_হয়
#Writer_Nusrat_Jahan
#part_21

(আরে ভাই সবাই একটু ওয়েট করো।।ইশান তার শাস্তি অবশ্যই পাবে।।তার জন্য ওয়েট করতে তো হইবো।।দুম কইরা তো আর শাস্তি দিতে পারবো নাহ।।ধীরে ধীরে দিয়ে হইবো তো?)

পরেরদিন
নেশা তার কেবিনে ডুকে দেখলো অন্য আরেকজন বসে আছে।।

নেশাঃ আপনি এখানে কেন?

সেই মুহুর্তে রবি ঢুকলো

রবিঃ ম্যাম আপনার রুম এটা নাহ।।আপনি স্যারের রুমে বসবেন

নেশাঃ স্যার এর রুমে বসবো মানে?

রবিঃ স্যার কেই জিজ্ঞাসা করুন ম্যাম

নেশাঃ ওকে।

নেশাঃ স্যার এইসব কি। স্যার, স্যার আপনাকে কিছু বলছি।।
নীড় ঘুরেও তাকাচ্ছে নাহ।।নেশার মনে পড়লো আসল ঘটনা

নেশাঃ মি.নীড় আপনাকে কিছু বলছি আমি

নীড়ঃ বলো

নেশাঃ এতোক্ষণ ডাকছিলাম শুনেননি কেন

নীড়ঃ তুমি বুঝি আমায় ডাকছিলে

নেশাঃ ?।নাহ।।আচ্ছা আমার রুম কোথায় আমি কোথায় বসবো

নীড়ঃ কেন ওই যে ওইখানে বসবে।(নীড়ের রুমের এক সাইডে দেখালো।।নেশা তাকালো সেদিকে।)

নেশাঃ আপনার সাথে?

নীড়ঃ হ্যা তুমি তো আমার পিএ।।তাহলে আমার সাথে বসবে নাহ কেন

নেশাঃ কিন্তু এমন নিয়ম তো আগে দেখিনি

নীড়ঃ এখন দেখে নাও।।এখন গিয়ে চুপচাপ বসো।।কথা বলো নাহ।

নেশা গিয়ে বসে নিজের কাজ করতে লাগলো।।নীড় একটু পর পর এটা ওটা বলে নেশার দিকে তাকাচ্ছে।।

লাঞ্চ টাইমে

নীড় খাবার নিয়ে নেশার সামনে দাড়ালো

নেশাঃ কি?

নীড়ঃ খাইয়ে দাও

নেশাঃ কি??

নীড়ঃ এতো রিয়েক্ট করার কি আছে।।খাইয়েই তো দিতে বলেছি যাস্ট।।

নেশাঃ আমি কেন আপনাকে খাইয়ে দিবো আপনার নিজের হাত নেই

নীড়ঃ আছে তো বাট খেতে ইচ্ছা করছে নাহ।।তাই তুমি খাইয়ে দাও

নেশাঃ আমি কি আপনার চাকর

নীড়ঃ নাহ আমার পিএ

নেশাঃ পিএর কাজ কি এগুলা

নীড়ঃ আপাদত এটাই।এখন খাইয়ে দেও চুপচাপ।। খুব খুদা লেগেছে

নেশাঃ দেখুন স্যার

নীড়ঃ দেখছি তো সারাদিনই দেখি।।দেখে মনই ভরে নাহ।

নেশাঃ ??

নীড়ঃ খাইয়ে দাও

নেশাঃ আমি পারবো নাহ

নীড়ঃ এইরকম কিন্তু কথা ছিলো নাহ।।আমি যা বলবো তা কিন্তু তুমি করতে বাধ্য

নেশাঃ মানে?

নীড়ঃ তুমি কি পেপার টা ভালো করে পড়ে নাও নি

নেশাঃ কিসের পেপার

নীড়ঃ ওয়েট

নীড় নেশাকে সেই প্রোমোশন পেপার টা দিলো

নীড়ঃ এইটা ভালো করে পড়

নেশা ভালো করে পড়লো।আর তারপর বড় বড় চোখ করে নীড়ের দিকে তাকালো

নেশাঃ এইসব কি

নীড়ঃ আমি কি জানি?

আসলে পেপারে লিখা আছে ২ বছরের জন্য নেশা নীড়ের পিএ আর পাশাপাশি নীড়ের সব কথা শুনতে হবে।।না হলে নীড়কে বিয়ে করতে হবে।?


আসলে নেশা প্রথম দিকে পিএ এর কথা শুনেই অবাক হয়ে গেছিলো।।তাই পুরো লেখাগুলো নাহ পড়েই সাইন করে দিয়েছে

নেশাঃ আপনি এমন করতে পারেন নাহ।।আর এইসব কি নিয়ম হ্যা।।আমি এইসব মানি নাহ

নীড়ঃ ওকে মেনো নাহ।।তাহলে বিয়ে করতে হবে।।সেটা আরো ভালো।

নেশাঃ ?

নীড়ঃ এখন চুপচাপ খাইয়া দাও।।না হলে কি করতে হবে মনে আছে তো

নেশাঃ কেন করছেন এইসব আপনি নীড়

নীড়ঃ জানো নাহ নাকি আমার মুখ থেকে শুনতে চাও

নেশা মাথা নিচু করে ফেললো

নীড়ঃ তুমি এতোটাও বোকা নাহ যে আমার এতো কিছুর করার পিছনের কারন গুলো বুঝতে পারছো নাহ।।বাট আমি তোমাকে তো জোর ও করছি নাহ।।তোমার সময় দরকার।।ঠিক আছে সময় নাও।।কিন্তু দিন শেষে আমার কাছে আসতে হবে

নেশাঃ এটা সম্ভব নাহ

নীড়ঃ সেটা পরে দেখা যাবে এখন খাইয়ে দাও

নেশা আর উপায় নাহ পেয়ে খাইয়ে দিতে লাগলো।

এইভাবে কেটে গেল কয়েকদিন।নীড় নেশাকে যেমন পেপারের কারনে ভয় দেখিয়ে সব কাজ করিয়ে নেয় ঈশা ও তাই।।কিন্তু এই সব কাজে নেশার মনে কোন ভালোবাসা জন্ম নাহ নিলেও ইশানের মনে ঠিকই ভালোবাসা উঁকি দিয়েছে।।কিন্তু কাজটা ঠিক হবে কিনা তা নিয়ে ইশান খুব বেশিই ভাবছে।।আজও ওর মনে নিহার জন্য একটা জায়গা আছে তা ইশান অস্বীকার করতে পারবে নাহ।।কিন্তু ঈশার প্রতি ও সে দুর্বল হয়ে পড়ছে।

হঠাৎ একদিন নিহার সাথে ইশানের দেখা হয়

নিহা এভয়েড করতে চাইলেও ইশান গিয়ে সামনে দাড়ায়।

নিহাঃ প্রবলেম কি আমাকে ফলো করছেন কেন

ইশানঃ নিহা আমি

নিহাঃ আমি আপনার থেকে কিছু শুনতে চাই নাহ।।আমি আমার লাইফ নিয়ে সুখে আছি।।আমার থেকে আপনি সব কেরে নিয়েছেন।তবুও আমি সুখে আছি।।কেন জানেন আবির আমাকে সত্যি ভালোবাসে।।ওর ভালোবাসায় আপনার মতো খাদ ছিলো নাহ।।

ইশানঃ নিহা আমি যা করেছি তা তোমাকে পাওয়ার জন্য করেছি।

নিহাঃ ওহহ তাই।।আমার অংশকে আমার থেকে দুরে সরিয়ে আপনি আমাকে নিজের করে পেতে চেয়েছেন।।এটা আপনার ভালোবাসা।।আমি তো চেয়েছিলাম আপনাকে নিয়ে বাচতে তাহলে।। তাহলে কেন তাকে মেরে ফেললেন।।কেন

ইশানঃ আমি ভেবেছিলাম তোমার যদি বেবিটা হয় তাহলে তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে।।তাই আমি?

নিহাঃ বাহ।।কি ভালোবাসা আপনার।।আচ্ছা আপনি কি সত্যি ভালোবাসা কি জানেন।।জানেন নাহ।।আপনি ভালোবাসার সংজ্ঞাই জানেন নাহ।।যদি জানতেন তাহলে আমার মাসুম বাচ্চা টাকে এই পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ দিতেন আপনি।।কিন্তু আপনি?

ইশানঃ নিহা আমি মানছি আমি ভুল করেছি।।বাট আমাকে আরেকবার সুযোগ দাও।।যাস্ট একটা বার।।আমি কথা দিচ্ছি আর এইরকম ভুল করবো নাহ।।

নিহাঃ সরি ইশান।।আমি আবিরকে নিয়ে অনেক খুশি আছি।।

ইশানঃ আমাকে একটাবার নিজের ভুল গুলো শুধরানোর সুযোগ দিবা নাহ।।

নিহাঃ আপনাকে আমি ক্ষমা ছাড়া আর কিছুই দিতে পারবো নাহ।।আর আপনাকে আমি অনেক আগেই ক্ষমা করে দিয়েছি

ইশানঃ কিন্তু আমি ক্ষমা চাই নাহ।।শাস্তি চাই।আমাকে শাস্তি দাও।।কিন্তু তুমি আমার কাছে ফিরে আসো।

নিহাঃ তা সম্ভব নাহ ইশান।আমি কখন আপনার হতে পারবো নাহ।

ইশানঃ তাহলে আমার কি হবে নিহা

নিহাঃ নতুন করে সব শুরু করুন ইশান।।নতুন করেও ভালোবাসা যায়।।আমিও আগে ভাবতাম জীবনে ভালোবাসা একবারই আসে।।বাট আমি ভুল ছিলাম।।হ্যা আমি আপনাকে ভালোবাসতাম।।কিন্তু আবিরের ভালোবাসার কাছে আপনার ভালোবাসা কিছুই ছিলো নাহ।।তাই আবিরের কাছে আমি নিজেকে সমর্পন করেছি।।আমার ভালোবাসা কে সমর্পণ করেছি।।আর দেখুন আমি সুখি আছি।।

ইশানঃ ?

নিহাঃ আমাদের সবারই তাকে ভালোবাসা উচিত যাকে আমি নাহ বরং যে আমাকে ভালোবাসে।।আই থিংক আমি কি বলছি আপনি বুঝতে পারছেন।

নিহা নেশার কথা মিন করলে ইশান বুঝলো যে নিহা ঈশার কথাই বলছে।।
আসলে নিহাও সব সত্যি জানে ইশান নেশার সাথে কি কি করেছে।।তাই সে চাইছে ইশান নেশার কাছে ফিরে যাক।।কিন্তু ইশান যে আরেকজনকে মন দিতে চাইছে তা কি আর নিহা জানে।।

নিহাঃ আমার মনে হয় ইশান আপনার তা নিয়ে ভাবা উচিত।।নিজের লাইফকে আরেকটা সুযোগ দেয়া উচিত।।বাকি টা আপনার ইচ্ছা।

নিহা কথা গুলো বলেই চলে গেল।।ইশান এখনো দাড়িয়ে আছে।।হঠাৎ পিছন থেকে ঈশা এসে ইশানকে জড়িয়ে ধরলো।

ইশানঃ রাস্তার মধ্যে এইসব কি ছাড়ো

ঈশাঃ আমি আমার জামাইকে ধরেছি কার বাপের কি হ্যা

ইশানঃ কিছু নাহ।।ছাড়ো।।যেতে হবে তো।

ঈশাঃ আমার গাড়িটা নষ্ট হয়ে গেছে।।তোমার গাড়িতে ড্রপ করে দিবে প্লিজ?

ইশানঃ ওকে চলো।।

ইশান ঈশাকে বাড়িতে দিয়ে নিজে বাড়তে ফিরে আসলো।।নিহার কথা গুলো ভাবছে সে।।সত্যি কি নতুন করে সব শুরু করা উচিত।।ঈশা যে ইশান কে ভালোবাসে তা ইশান জানে।।হয়তো একটু পাগলামো বেশি করে কিন্তু তবুও তার ভালোবাসা গুলো বুঝতে পারে ইশান।।

হঠাৎ ইশানের রুমে নেশা ঢুকলো।

ইশানঃ তুই এখানে(কারন নেশা সচারাচর ইশানের রুমে কি ইশানের সামনেই থাকে নাহ)

নেশাঃ এই যে সব ফাইল আমি সাইন করে দিয়েছি।।আজ থেকে সব আপনার।

(জি এইটাই হচ্ছে কাহিনি।। এই কয়েকদিন ইশান নেশার সাথে অভিনয় করছিলো কারন সে চেয়েছিলো নেশাকে আবার প্রেমের জালে জড়িয়ে সব সম্পত্তি নিজের নামে করাতে।কারন নিরব চৌধুরী অর্থাৎ নেশার বাবা তার সম্পত্তির ৮০% নেশার নামে লিখে দিয়েছিলো।।যেহেতু নেশা তার মেয়ে তাই এটাই স্বাভাবিক।। কিন্তু ইশান তা মেনে নিতে পারেনি।কারন তার মত্র সে নিরবের সব বিজনেস নিজে একা হাতে সামলাচ্ছে।। তো নিয়ম অনুযায়ী তার সব পাওয়ার কথা।।তাই সে এইসব মানতে পারেনি।।তার পর যা হলো তাতো সবাই জানেনই।)

নেশাঃ আপনাকে কথা দিয়েছিলাম সব আপনার নামে করে দিবো।। এই তার কাগজ

ইশানঃ কিন্তু আমার এইসব চাই নাহ নেশা


চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here